এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  নাটক

  • ভাঙা প্রেম

    Paramita
    নাটক | ১৩ জুন ২০০৯ | ৩৫৬০৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ani | 148.87.1.171 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৫:৪৮417220
  • অতসব তো জানিনা শমীকদা :)
  • ani | 148.87.1.171 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৬:৫৯417221
  • ইয়র্কশায়ার থেকে কচিত কদাচিত মেল করতো গার্গী | সেই এক মেল-এর মাধ্যমেই জানতে পারলাম যে ওরা নাকি ফিরে আসছে কলকাতায় | ফেরার পর নতুন নম্বরটাও দিয়েছিল মেল করে | আমি আর যোগাযোগ করিনি |

    প্রায় এক বছর পর: পুজো শেষ হয়ে গেছে, আমি সবে ফিরেছি কলকাতা থেকে, অফিসে বসে বসে কি মনে হলো একটা এসএমএস করলাম - "শুভ বিজ" | সঙ্গে সঙ্গে ফোন .... "তুই!!" জানলাম এখন চাকরি করছে - আই টি কোম্পানি তে হিউমান রিসোর্স | বর বাল্টিমোর গেছে ক'দিন আগে, ওকেও নাকি যেতে হতে পারে |

    এরপর প্রায়ই ফোনে আর মেল-এ কথা হতে লাগলো ... শ্বশুরবাড়ির গল্প করতো, বরের গল্প করতো, ওরা ফ্লাট কিনবে তার কথা বলতো, ছবি পাঠাতো ... আমি ওকে আমার চাকরির গল্প করতাম |
    "তুই এবার একটা বিয়ে কর"
    "কাকে?"
    "কাকে আবার! দেখেশুনে সম্মন্ধ করে করবি"
    "নিজে আর পাকামো করতে যাসনা ... কাকিমার উপরে ছেড়ে দে"
    "আচ্ছা তুই আমাকে কাকিমার নম্বর দে ... আমিই কথা বলছি"
    দিলাম ... কথাও বললো ... কি কথা হলো জানিনা ... মাকেও জিজ্ঞেস করিনি, গার্গীকেও না |

    একদিন বললো ওর নাকি ভিসা হয়ে গেছে ... চাকরি ছেড়ে এবার বরের কাছে যাবে | টিকিট কাটতে দেবে অফিসে লাস্ট ডেট ঠিক হয়ে গেলে |

    "শোন আমি নেক্সট উইকে চলে যাচ্ছি"
    "হুম"
    "তুই আসবি আমার সাথে দেখা করতে?"
    "কোথায় আসবো?"
    "কলকাতায় আবার কোথায় - তোকে প্রায় দশ বছর দেখিনি - আসবি?"
    "এরকম হুট করে বললেই যাওয়া যায় নাকি!"
    "কলকাতায় না পারিস বম্বেতে আয় ... আমার ফ্লাইট ওখান থেকেই, আয়না প্লিস ...."
    "তোর সাথে এয়ারপোর্টএ দেখা করতে এখান থেকে বম্বে যাবো?! .... আচ্ছা দেখছি"

    খানিকক্ষণ ভাবনা চিন্তা করে, টিকিটের দাম দেখে কাটবার আগে ওকে সন্ধ্যেবেলা ফোন করলাম -
    "আমি টিকিট কাটছি তাহলে"
    "না রে তুই আসিস না" .... সেই আনপ্রেডিকটেবেল!
    "এই যে বললি তখন অতো করে?"
    "না রে তোকে আর আসতে হবে না ... আমি রাখছি এখন"

    -----------------------

    বাল্টিমোরে একদিন ফোন করেছিলাম - ঐ নম্বর দিয়ে বললো করতে | এক ঘন্টা ধরে কথা হল - ঐ বললো বেশি, আমি শুনলাম | ওখানকার লাইফ বোরিং, কিসুই করার নেই, বর বেরিয়ে যায় সকালে তারপর কেবল একা ঘরে বসে থাকে ইত্যাদি ইত্যাদি | দুএক দিন চ্যাটও করি তারপরে |

    এরপরে আমি মেল করি - বেশ কয়েকটা - কিছুদিন অন্তর অন্তর | একটারও উত্তর আসেনা | কি কারণ বুঝতে পারিনা | কারণ জানতে চেয়ে আবারও মেল করি | তারও কোনো উত্তর আসেনা | আর করিনি তারপরে |
    আমাদের বারো বছরের বন্‌ধ্‌বুত্বে বোদহয় এবার পাকাপাকি ভাবে ছেদ পরলো |

    গার্গী - thegirlwhowasmyfriend - ইতি |
  • ani | 148.87.1.171 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৭:০০417222
  • 'ভাঙ্গা' নাকি 'হলেও হতে পারতো'? ;)
  • Samik | 219.64.11.35 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৭:২২417223
  • নাহ্‌হ্‌। এটা ভাঙাই।
  • rimi | 168.26.215.135 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৮:২৫417224
  • শমীক, মনোবীণা ভৌমিক কস্মিনকালেও দুগ্গাপুরে থাকে নি, ও খড়দার মেয়ে, আমার ছোটোবেলার বন্ধু :-)))

  • Samik | 219.64.11.35 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২০:১০417225
  • দ্যাখো, কীভাবে কীসের সুতো বেরিয়ে যায়। আমার ধারণা ছিল ও দুগ্‌গাপুরের মেয়ে।

    হস্টেলের ছাতে লোডশেডিংয়ের রাত্রে উঠে আমরা পাকিস্তান বর্ডারের দিকে মুখ করে গাইতাম, সমস্বরে, এবং অবশ্যই বেসুরে :

    আন তবে বীণা আ-আ-আ-আ-আ-আ-আ-আ
    আন তবে বীণা আ-আ-আ-আ-আ-আ-আ-আ
    আন তবে বীণা আ-আ-আ-আ-আ-আ-আ-আ
    আন তবে বীণা আ-আ-আ-আ-আ-আ-আ-আ
  • rimi | 168.26.215.135 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২২:৫৯417226
  • দাঁড়াও মনোবীণাকে বলছি সব :-))
  • d | 117.195.41.70 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২৩:১৮417227
  • হ্যাঁ হ্যাঁ রিমি, মনোবীণার দিকের গল্পটা জেনে এসে লিখে দিও তো। ওরাও নিশ্চিত এইসব ক্যাবলাকাত্তিকদের কিছু নামটাম দিয়ে নিজেদের মধ্যে হাসাহাসি করত, গানটান বাঁধত। ঐটা জেনে এসে লিখে দিও প্লীজ। :))
  • tkn | 122.163.77.11 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২৩:৫০417228
  • এদিকে কেউ শমীককে একটা ভেরিগুড দিল না? সে বেচারা 8.59 থেকে বীনাআআআ বলে দম আটকে রেখেছে অনুপ জালোটা স্টাইলে। খানিক হাত্তালি না দিলে বেচারা মুখই বন্ধ করতে পারছে না তো!!!
  • Samik | 122.162.236.180 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২৩:৫১417230
  • মনোবীণাকে জিজ্ঞেস কোরো, সোদপুরের বঙ্কুভূষণ সিন্‌হা ওরফে বিক্রমভূষণ সিনহাকে চেনে কিনা। :-)

    আমি তারই ইয়ারের।
  • rimi | 24.42.203.194 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০৬:৪০417232
  • শমীক, মনোবীণা তোমাকে ভালই চেনে, তোমাকে মনে করানোর জন্যে বঙ্কুভূষণ কিম্বা তড়িৎবরণের রেফারেন্সের ওর দরকার নেই। বুঝলে? ;-)

    দ, ঠিকই ধরেছ, মনোবীণারা জোলু পুঙ্গবদের নিয়ে প্রচুর হাসাহাসি করত। হাস্যকর ছেলের সংখ্যা তো কম নয় (শুধু জোলুতে নয়, সর্বত্রই) ;-))
  • M | 59.93.202.83 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০৯:৪৩417233
  • থ্যাঙ্কু, কিন্তু সব হিব্রু লাগছে ক্যানো?
  • M | 59.93.220.217 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০৯:৫৭417234
  • না, পড়তে পারলাম। এটা আগেও পড়েছি, লেখিকা কে অত খেয়লাই নি, অবশ্য তখন তোমায় চিনতাম না।
  • aishik | 122.166.22.73 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১০:৪০417235
  • তেকেনা র এই গল্প তাও পোরলাম, বেশ ভালো।কিন্তু আরো চাই।
  • jani na | 8.4.8.12 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৮:৫৩417236
  • সবাই বেরোল একে একে, আমি যেন খুব ব্যস্ত টেস্টপেপারের মধ্যে কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের ১৯৯৪-এর বাংলার একটা ইমপর্ট্যান্ট কোশ্চেন খুঁজতে। কিংবা অন্যকিছু। মুখ না ফিরিয়েও দেখা যাচ্ছে পাশের পাঁচিলে সাইকেলের বন্ডিল হাল্কা, কেবল সে একা দাঁড়িয়ে রয়েছে। এইবার বেরোন যেতেই পারে।

    কিন্তু বেরোব কী! পা কাঁপছে প্রচন্ড। নিজের বুকের শব্দে নিজেরই কানে তালা লেগে যাচ্ছে। গলা শুকিয়ে কাঠ। একটা মেয়ে, যাকে পাবার জন্য আমি পাগল, তার সামনে দাঁড়িয়ে আসল কথাটা বলতে এত বুকের জোর লাগে? এতটা?

    মুখচোখ যথাসম্ভব নর্মাল করে সাইকেলের লক খুলে এগিয়ে গেলাম তার সামনে।

    "একটা কথা জানার ছিল আসলে ...' (হায় রে, কোথায় ভেসে গেল আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে এতদিনের প্র্যাকটিস)

    ভুরুটা কি অল্প কোঁচকালো? আসলে আমি তখন আর ওর মুখের দিকে তাকাতে পারছিলাম না সরাসরি। ওর পায়ের সুন্দর মেরুন শেডের নেলপালিশের দিকে তাকিয়ে বললাম, "তুই কি কাউকে ভালোবাসিস?' কতবার তুৎলেছিলাম এই চারটে শব্দ উচ্চারণ করতে, আজ আর মনে নেই।

    বেশ, গম্ভীর স্বরে জবাব এল, "না। কেন?'

    আর কেন! একটা সতেরো বছরের ছেলে কেন এ-কথা জিজ্ঞেস করতে পারে সতেরো বছরের তোমাকে, তা কি তুমি সত্যি বোঝো না?

    "আ-আমি যদি তোকে বলি, আ-আমি তোকে ভালোবাসি, তুৎতুই কি ...'

    মুখের কথা মুখেই রয়ে গেল। আরেকটা জোরালো "না' শুনে চোখ ভরে জল চলে এল।

    দ্বিতীয় না-টর পর সে আর অপেক্ষা করে নি, সাইকেলে উঠেই প্যাডেলে চাপ দিল। আমি, ফ্যাঁসফেঁসে গলায় পেছন থেকে শুধু এইটুকু বলতে পারলাম, (শ্রোতাবন্ধুগণ প্লিজ হাসবেন না) "কাউকে জানাস না প্লিজ।'

    গলিপথে সে তখন খানিকটা এগিয়ে গেছে। শুনতে পেল কিনা বোঝা গেল না। আমি তার চলে যাওয়া দেখলাম। যতক্ষণ দেখা যায়।

    কীভাবে পায়ে জোর ফিরিয়ে এনে সাইকেল চেপে সেদিন বাড়ি ফিরেছিলাম, সে শুধু আমিই জানি। সে লিখে বোঝানো যাবে না। মফস্‌সলের রাস্তায় বিশেষ গড়িঘোড়া চলে না, তাই নির্বিঘ্নেই ফিরতে পেরেছিলাম। মাথা কাজ করছিল না অনেকক্ষণ।

    দিনটা ছিল, তিরিশে জানুয়ারি। আমার জন্মদিনের ঠিক একদিন আগে।

    *************************************

    একটা "না'-এর জোর অনেকখানি। টের পেলাম। পরের দিন পড়তে গিয়ে তাকে দেখতে পেলাম না। কাউকে জিজ্ঞেস করতে সাহসও হল না। তার পরের দিনও না। অবশেষে জানতে পারলাম, সে ব্যাচ চেঞ্জ করে অন্য শিডিউলে আসছে। সেই শিডিউলে আমার পক্ষে আসা সম্ভব নয়। আর ব্যাচ পাল্টানোর মত যথেষ্ট পরিমাণে অজুহাতও আমার কাছে নেই, যে রিকোয়েস্ট করব স্যারের কাছে।

    বন্ধুত্বটা নষ্ট হয়ে গেল। এর পর একদিন পথচলতি রাস্তায় হঠাৎই দেখা হয়ে গেল, সে আসছিল উল্টোদিক থেকে। আমাকে বোঝাবার মতন করে সে আমার দিকে তাকালো না। পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে গেল তার সাইকেল।

    কিন্তু আরেকটা পরিবর্তন অনুভব করলাম নিজের মধ্যে। যতদিন ওকে বলব-কি-বলব না এই দোলাচলে ভুগেছি, পড়াশোনার দফারফা ঘটে গেছিল। একবার দিল-খোলকে "না' শোনার পরে নিজে থেকেই দেখলাম আর পড়তে বসে মন ডিসট্র্যাক্টেড হচ্ছে না। যদিও ইলেভেনের অ্যানুয়াল পরীক্ষার জন্য সেটা অনেক দেরি হয়ে গেছিল, এবং আমি আবারও ফেল করেছিলাম, কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে, আবারও, আমি একা ছিলাম না ফেল করার দলে। এবং ফেল করার ইতিহাসে। বছর বছর এমন অনেকেই ফেল করে ঐ ন্যাড়া চাটুজ্জের ইস্কুলে, দলে দলে, ক্লাস ইলেভেনে। কনসিডারেশনে সবাইকে টুয়েলভে তুলে দেওয়া হয়। আমাকেও দেওয়া হল।

    ঐ একটা বছরেই সমস্ত ব্যাকলগ কাটালাম, প্লাস টুয়েলভের পড়া শেষ করলাম। সত্যসাধনবাবুর কাছে টুয়েলভের গোড়ায় ঢুকেছিলাম অঙ্ক করতে। একদিন অমিতাভ মিত্রের একটা শক্ত অঙ্কে আটকে তাঁকে দেখাতেই তিনি একঘর মেয়ের সামনে (সুদেষ্ণা ছিল, যাজ্ঞসেনী ছিল, সুজাতা ছিল, স্বর্ণালী ছিল) আমাকে বল্লেন, তুমি এ-সব অঙ্ক করছো কেন? তুমি কি জয়েন্ট দেবে? তোমার বেসই ঠিক নেই, তুমি মোটামুটি পাসমার্ক পাবার জন্য চেষ্টা করো টরো। ওসব অমিতাভ মিত্র টিত্র তোমার জন্য নয়।

    প্রেস্টিজে গ্যামাক্সিন যাকে বলে। স্যারের কাছে সেই অঙ্কটার সেই মুহুর্তে সল্যুশন জানা ছিল না, এটুকুই ব্যাপার। তার জন্যে উনি মুরগি করলেন আমাকে। হজম করা ছাড়া আর কোনও রাস্তা ছিল না, কিন্তু মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, জয়েন্ট পাইয়ে আমি দেখিয়ে দেবো আপনাকে, স্যার।

    সহায় হল স্বর্ণালী। সেই-যে মেয়েটা আমার সাহিত্যকর্মের খাতায় একটা কিছু ঢুকিয়ে দিয়ে বলেছিল, বাড়ি গিয়ে দেখিস। সেদিন বাড়ি গিয়ে দেখেছিলাম অপটু ছন্দে একটা দশ লাইনের কবিতায় শুভেচ্ছাবার্তা। কবিতাটার আদ্যোপান্ত আমি আজ ভুলে গেছি, সেই খাতাটাও এখন হাতের কাছে নেই। কেবল মনে আছে, শেষে লেখা ছিল, "কোনো একটি মেয়ে।' তাতে তার একটা জবাবও দিয়েছিলাম, সেই দশ লাইনেই, একই ছন্দে, ইন ফ্যাক্ট সেটাও আমার আজ মনে নেই, কেবল লাস্ট দুটো লাইন মনে আছে :

    আমার স্বপ্নে ছোঁয়ালে নতুন যে-আলোর বর্ণালী
    তার খাতে নাও শুভেচ্ছা, শুভাকঙ্খিনী স্বর্ণালী।

    ইত্যাদি। ইত্যাদি। গল্পের সেখানেই শেষ ছিল। নতুন করে আবার জমল এই অঙ্কের ক্লাসে গ্যামাক্সিন কেসের পরে। তখনই প্রথম জানলাম, ওর বাড়ি আসলে আমার বাড়ি থেকে খুবই কাছে। হাঁটা দূরত্ব। সপ্তাহের মধ্যে একটা বিকেলই ফাঁকা ছিল।

    অমিতাভ মিত্রের পাতায় পাতায় বেড়ে উঠল দোস্তি।
  • tkn | 122.163.79.241 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৯:০৮417237
  • :-)

  • jani na | 8.4.8.12 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১৯:২৩417238
  • জয়েন্টে চান্স পেলাম। চুঁচড়ো বাসস্ট্যান্ডের মোড়ে বিনীত (Vineet) নামে একটা জামাকাপড়ের দোকান ছিল, তখনকার চুঁচড়োতে বেস্ট দোকান। সেখানে মা-বাবার সাথে গেলাম জামা কিনতে। আর কদিন পরেই হুগলি ছেড়ে চলে যাব।

    জামাকাপড় কিনে বেরিয়েছি, এইবারে রিক্সা ধরব, সেই সময়ে তাকে দেখলাম, আবার। ছ মাস পর। কালো একটা সালোয়ার কামিজ পরে মা-টাইপের কোনও এক মহিলার সঙ্গে হেঁটে আসছে উল্টোদিকের ফুটপাথ ধরে। সে আমাকে দেখতে পায় নি। আমি তাকে দেখলাম। সাথে বাবা মা আছে, তাই চুরি করে দেখলাম।

    আজ পর্যন্ত সেই শেষ দেখা। তার পরেই সেই যে বাড়ি ছাড়লাম, আর সেভাবে হুগলিতে ফেরা হয় নি। খবর পাবার একটাই সোর্স ছিল, নীলু। তা যাদবপুরে ইকোনমিক্স অনার্স পড়তে যাবার পরে সে নিজেই একটা ছেলের প্রেমে পড়ল। সে-ও সৌরভ। গরমের পুজোর ছুটিছাটায় যখন বাড়ি যেতাম, নীলুর বাড়িতে নিয়ম করে দু-চারদিন আড্ডা বসত, নীলু খালি সৌরভের গল্প শোনাত। আমি মজা করে শুনতাম।

    আমি বোধ হয় তখন থার্ড ইয়ারে। একদিন টেলিগ্রাফে খবর বেরোল, কলকাতায় একটা ছেলের সুইসাইড। কলকাতা টেলিফোনের কর্মী তাদের বাড়িতে টেলিফোন বসাতে এসে ঘুষ চেয়েছিল। বোধ হয় দুশো টাকা। তাতে সে ভেতর থেকে এমন অপমানিত হয়েছিল, অপমান মেটানোর রাস্তা হিসেবে সে বেছে নিয়েছিল সিলিং ফ্যান। করাপশানের বিরুদ্ধে জীবন দিয়ে সে প্রতিবাদ জানাল। অন্তত সুইসাইডাল নোটে তাইই লিখেছিল সে।

    ছেলেটার নাম সৌরভ। কলকাতার যে অঞ্চলে বাড়ি, যাদবপুরে যে বিষয়ের সে ছাত্র ছিল বলে টেলিগ্রাফে লিখেছিল, সমস্ত কিছু ক্লু একটা দিকেই পয়েন্ট করে।

    তখন এসটিডি এত শস্তা ছিল না। দিনে ফুল চার্জ, সন্ধ্যেয় হাফ চার্জ পেরিয়ে রাতে কোয়ার্টার চার্জে পৌঁছে যখন নীলুকে ফোন করতে গেলাম, নীলু তখন কথা বলার অবস্থায় নেই। গলা দিয়ে আর স্বর বেরোচ্ছে না। খুব ইচ্ছে হয়েছিল ওর পাশে বসার একবার। কিন্তু তখন অনেক দূর পর্যন্ত আমার আর বাড়ি ফেরার চান্স নেই।

    তারপর যা হয়, সময়ের নিয়মে সবই ফিকে হয়ে আসে। এর পরেও যতদিন ছাত্র ছিলাম, ছুটিছাটায় বাড়ি এলে দেখা টেখা হত। তারপরে আমিও বাইরে বাইরে। শেষ খবর পেয়েছিলাম, টালিগঞ্জে বিয়ে হয়েছে নীলুর। আজ আর যোগাযোগ নেই, সে অনেক অনেক বছর হল।
  • tkn | 122.161.63.38 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২১:০১417239
  • মন খারাপ...
  • Du | 65.124.26.7 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২১:১৮417241
  • হ্যাঁ। অনিরটাও তাই, পড়ে আর কিছু লিখতে মন সরলো না।
  • d | 117.195.33.254 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২১:২৪417242
  • কিন্তু শমীকের তো পরেরটাই "হয়ে গেছে প্রেম'।
  • ani | 122.169.148.21 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২১:২৮417244
  • লোকে তবে করে
    কি সুখেরই তরে
    এমন দুখেরও আশ?
  • tkn | 122.161.63.38 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২১:২৮417243
  • তাই বলে কি ব্যথা ব্যথা না!
    সাইকেল দেখছি প্রেমের জন্য মোটেই ভালো না। সাইকেলওয়ালা প্রেম ভেঙেচুরে একশা হয় :-((
  • d | 117.195.33.254 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২১:৪০417245
  • অনির জন্য মন খারাপ হল তো।
    কিন্তু গার্গীর কেসটা আমি থিক বুঝতেই পারলাম না। :( খুবই কনফিউজিং।
  • Samik | 8.4.8.12 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২১:৫২417246
  • নিরাবেগ ভাঙাপ্রেম।
  • dd | 122.167.0.130 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২১:৫৬417247
  • স্যার তেকোনা

    আপুনি কি জানতেন সৌরভের ঐ ট্র্যাজিক পরিনতি ?
  • tkn | 122.161.63.38 | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ২২:০০417248
  • এ সৌরভ সে সৌরভ নয় দাদা :-)
    অবশ্য "টোল" সৌরভের লেটেস্ট পরিণতি আমি জানিনা অবশ্য
  • a | 122.163.218.103 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০৭:৩৭417249
  • অনি র লেখাটা খুব ভালো লাগলো, মন খারাপ হয়ে যাওয়া ভালো লাগা। নিরাবেগ? আমার মনে হয় নি। খুব ভালো ল্লগলো কথোপকথনগুলো।
  • Tim | 71.62.121.158 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০৯:৩১417250
  • ভারি ভালো হচ্ছে লেখাগুলো। ইদিকে আরো যে লিখতে বলবো, ভরসা পাচ্ছিনা। এই বয়সে গুরু কি একের পর এক মহাকাব্যিক ট্র্যাজেডি সইতে পারবে? কনফিডেন্স সৌরভের গালের মত টোল খেয়ে গেছে।
  • Samik | 219.64.11.35 | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ১১:১১417253
  • আত্মজীবনী। ধুৎ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন