এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পশ্চিমবংগ নাকি বাংলা হৈছে? সমস্যা?

    বিপ্লব রহমান লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | ২৭ জুলাই ২০১৮ | ৩০৬৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বিপ্লব রহমান | ২৭ জুলাই ২০১৮ ২৩:০২377189
  • "আবার বাংলা নাম পাশ বিধানসভায়
    এই নাম বদলের নতুন প্রস্তাব ফের যাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে। সেখান থেকে সবুজ সংকেত পেলে তবেই পশ্চিমবঙ্গ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলা হবে।"

    https://bengali.indianexpress.com/politics/state/west-bengal-name-changed-bangla-new-name-23368/

    এইটা ভাল হতৈছে, না খ্রাপ হতৈছে?
    বাংলা মিশবো বাংলাদেশে?

    দুই বাংলা আবার এক হৈবো, আমরা পান্তা-ইলিশ খামু হেন্দু- মুসলমান, দমে দমে কমু, জয় বাংলা!

    গলার রগ ফুলাইয়া কৈরা কোরাসে গামুঃ

    "গঙ্গা আমার মা, পদ্মা আমার মা/ ও তার দুই চোখে দুই জলের ধারা/ মেঘনা যমুনা"...
  • বিপ্লব রহমান | ২৭ জুলাই ২০১৮ ২৩:১১377194
  • গুরুচণ্ডা৯ র ফেসবুক গ্রুপ থিকা কিছু হিরা, মুক্তা, জহরতঃ

    " এটা চর্চার ব্যাপার।
    ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে চোখে মুজিবের ছবি ভাসে।
    একাত্তরের ছবি ভাসে।
    বাংলাদেশ ছাড়া আর কিছু কল্পনায় আসে না।

    পশ্চিমবঙ্গের নতুন ‘বাংলা’ নামে আমার শুধুই মদের কথা মনে পড়ে-- বাংলা মদ!

    যারা দুই বাংলা এক হওয়ার স্বপ্ন দেখে-- তাদের অবস্থান পরিষ্কার না। তারা কি বাংলাদেশকে ইন্ডিয়ার সাথে মিশতে বলে নাকি ওই বাংলাকে ইন্ডিয়া ভেঙে বাংলাদেশে আসতে বলে?"
  • বিপ্লব রহমান | ২৭ জুলাই ২০১৮ ২৩:১৬377196
  • "বাংলার কোন পূর্ব পশ্চিম নেই, বাংলা মানেই বাংলা, পূর্ব নয় পশ্চিম নয় , বাংলা তো একটাই"

    -শতাদ্রু রায়-
  • বিপ্লব রহমান | ২৭ জুলাই ২০১৮ ২৩:১৮377197
  • "West Bengal তো Bangla হয়ে গেল।
    এখন গাড়ির নাম্বার প্লেটে WB-এর জায়গায় কী লিখা থাকবে?"

    -মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ-
  • বিপ্লব রহমান | ২৭ জুলাই ২০১৮ ২৩:২০377198
  • ""বাংলা " !!! শুধু নাম বদলালেই চলবে কি????"

    - মাসুলিনা নাথ নিলম -
  • বিপ্লব রহমান | ২৭ জুলাই ২০১৮ ২৩:২১377199
  • ""পশ্চিমবঙ্গ" সরকারী নাম ,, তবে এই বাংলার মানুষ একে পশ্চিমবাংলাও বলে।নব্য শিক্ষিত অনেকেই আবার একে ওয়েস্ট বেঙ্গলও বলে।। রাজনৈতিক নেতারা সবসময় একে বাংলাই বলতো। নাটক উপন্যাস সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সবকিছুতেই বাংলা ই ছড়াছড়ি।। তবে কখনো কখনো একে বাংলাদেশ ও বলা হয়।।। বাংলাভাগের কলঙ্ক লেগে আছে এই "পশ্চিমবাংলার" নামটার সাথে। লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তু , খুন , ধর্ষণ সবকিছুই এই পশ্চিম কথাটা জানান দিত।।। মনে মনে বাংলার ভাগটা অনেকেই মেনে নেয়নি।।। হয়ত সেই মানুষগুলো বাংলার মধ্যে তার হারিয়ে ফেলা বাংলাকে খুঁজে পাবে।। বাংলা নামটাতে অনেকেরই আপত্তি,,, তবে চমকে দেয়ার মত কথা হলো, বাংলাদেশ থেকেও আপত্তি এসেছে।। তাই বাংলাদেশের কথাও ছুঁয়ে যেতে হলো, ১৯৫৬ এর আগ পর্যন্ত পূর্বপাকিস্তানকে পূর্ববাংলাই বলা হত।। ৫৬ সালে পাকিস্তানের সংবিধান তৈরী হলে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে স্বীকৃতি দিলেও ভূমির নাম পূর্ববাংলা রাখা হয়নি,,,রাখা হয়েছিল পূর্বপাকিস্তান।। ৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রামে জয় বাংলা স্লোগান হয়ে উঠেছিল পূর্ববাংলার বাঙালীর মুক্তির মন্ত্র। এই জন্যই বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক কর্মীদের যত আপত্তি।। কিন্তু কথা হলো,,,, এই বাংলার মানুষরাও তো বাঙালী, বাংলাটা তো এদেরও মাতৃভাষা,,, বাংলাটাতো এদেরও মাতৃভূমি।।। তবে এরা কেন নিজেদেরকে বাংলা বলতে পারবে না। রবীন্দ্রনাথ নজরুল জীবনানন্দ যদি দুই বাংলার হতে পারে,,, তবে বাংলাও দুই বাংলার হতে।।। এই বাংলায় কারও কান্না কম নেই,,,, । ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লক্ষ শহীদের জীবিতদের কাছের মানুষদের একটা বড় অংশ এখনও এই বাংলায় আছে।।। এই বাংলায় এখনো মরিচঝাঁপির উদ্বাস্তুদের রক্তের দাগ লেগে আছে,,, যারা কেবল বাংলাকে ভালোবেসে এই বাংলায় থাকতে চেয়েছে,, ।। রফিক শফিক কমলা শচীন্দ্রের রক্তে ভেজা এই মাটি,,,,।।।তাই, এই মাটির নাম "বাংলা" হতেই পারে"

    - সৌগত রায় -
  • বিপ্লব রহমান | ২৭ জুলাই ২০১৮ ২৩:২৫377200
  • "রাজ্যের নাম বদল আদৌ প্রয়োজন কিনা, এতে কোন উপকার হবে কি না আমার জানা নেই, তবে মনে হয় , বদলাতে যদি হয় ই, তবে শুধু বাংলা নয়, এই প্রদেশ বা রাজ্যটির নতুন নাম হওয়া উচিৎ

    বাংলাপ্রদেশ।

    আজ যখন কোন পূৰ্ববঙ্গ নেই তখন পশ্চিমবঙ্গ কথাটা বয়ে
    বেড়ানোর কোন মানে হয় না ।

    এটা স্রেফ স্মৃতিবিলাস । ইতিহাসকে অস্বীকার করার একটা
    অক্ষম প্রচেষ্টা মাত্র!

    বাংলা এখন একটা আলাদা সাৰ্বভৌম দেশ।
    সেটা বাংলাদেশ।

    আর আমাদেরটা একটা অঙ্গরাজ্য । প্রদেশ ।

    অরুণাচলপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ এর মত।

    বদলাতেই যদি হয়, নামটা বাংলাপ্রদেশ হোক না !

    বাংলাপ্রদেশ।

    তাতে অঙ্গরাজ্যের চরিত্র আর জাতিগোষ্ঠীগত পরিচয় দুটোই বজায় থাকে।

    প্রদেশ কথাটা থাকা উচিত আজকের
    ভৌগোলিক বাস্তবতার জন্য, আর বাংলা কথাটা থাকুক জাতিসত্তা র অভিন্ন ইতিহাসের কারণে ।

    তাই, বাংলাপ্রদেশ।

    আমরা অনেক কাল বাংলার মুখ, বাংলার গান , বাংলাসাহিত্য , বাংলার রায় , এই কথাগুলোতে অভ্যস্ত ।
    কিন্তু সে সব ক্ষেত্রে বাংলা একটা ভাষার নাম।

    জীবনানন্দ আবার ফিরে আসতে চেয়েছিলেন, এই বাংলায় কিন্তু , সে বাংলা অখন্ড বাংলা ।

    সে বাংলার একটি অংশ আজ বাংলাদেশ।

    আর 'প্রদেশ' কথাটায় আমাদের দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর একটা প্ৰতিফলন ।

    তাই "বাংলাপ্রদেশ" শব্দবন্ধটাই বেশি যুক্তিযুক্ত।

    তাতে ইতিহাসকে অস্বীকার করার প্রয়োজন নেই,
    আর বাঙ্গালি জাতিসত্তার স্বীকৃতি টাও চিরস্থায়ী হয়ে থেকে যায়।

    তাই, বাংলা নয়, ইংরেজি/বাংলা/ হিন্দি সব ভাষাতেই রাজ্যের নতুন নাম বাংলাপ্রদেশ (Banglaprodesh) হোক !"

    - কৌশিক লাহিড়ী -
  • বিপ্লব রহমান | ২৭ জুলাই ২০১৮ ২৩:২৮377201
  • "বাংলা হলই যখন আমাদের ভাষা সব ভাষাতেই বাংলা লেখা হোক।ইংরাজি তে বেঙ্গলি যেন না লিখতে হয়।"

    - সুকান্ত ভট্টাচার্য -
  • বিপ্লব রহমান | ২৭ জুলাই ২০১৮ ২৩:২৯377190
  • "বাংলাদেশকে যারা কাংলাদেশ ট্যাগ দেয়, তারাই আজ বাংলাদেশের নাম ধার নিয়ে নিজ রাজ্যের নাম দিলো "বাংলা"।

    যদিও অর্থনৈতিক, সামাজিক বা মানব উন্নয়ন সূচক কোন দিক থেকেই তারা বাংলাদেশের ধারে-কাছে নাই, তবুও আমরা নাকি কাংলাদেশ!
    এ যেন এক মিসকিন তার প্রতিবেশীকে কাংলা বলে গালমন্দ করছে।
  • বিপ্লব রহমান | ২৭ জুলাই ২০১৮ ২৩:৩২377191
  • "স্কুলে, কলেজে, রুটিনে,
    পরীক্ষায়, অনার্সে, ফর্ম ফিলাপে, 'বাংলা'কে 'Bengali' বলাটা কমানো যাক এবার!"

    - সত্যাঞ্জিত গুপ্ত -
  • বিপ্লব রহমান | ৩১ জুলাই ২০১৮ ০৯:৫৩377192
  • “বঙ্গ” থেকে “বাংলা” নামকরণ আসলে বাঙ্গালীর আদিবাসী সত্তাকে অস্বীকার করার চক্রান্ত, খেলছে বিজেপিও
    শরদিন্দু উদ্দীপন, টিডিএন বাংলা:
    ~~~~

    গতকাল ২৬শে জুলাই রাজ্যের বিধানসভা অধিবেশনে “পশ্চিমবঙ্গ”এর নাম পরিবর্তন করে “বাংলা” রাখার সিদ্ধান্ত পাশ হয়ে গেল। যদিও সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় নি। কংগ্রেস এবং বামপন্থীরা এর বিরোধিতা না করলেও বিজেপি এই সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করেছে। “বাংলা” নামটি এখন কেন্দ্র সরকারের অনুমোদন পেলেই এই রাজ্যের নাম হবে বাংলা।

    এখন প্রশ্ন হল ২০১৯ এর নির্বাচনের আগে হঠাৎ রাজ্যের নাম পরিবর্তনের প্রয়োজন হল কেন? এর উত্তরে বলা হচ্ছে যে, ইংরেজী অক্ষর “W” থাকার কারণে নানা ইস্যুতে রাজ্যের প্রতিনিধিরা একেবারে শেষ দিকে বক্তব্য রাখার সময় পান যা অনেক সময় যথার্থ গুরুত্ব পায় না। তাই “বাংলা” হলে প্রতিনিধিরা প্রথম দিকেই বক্তব্য রাখার সুজোগ পাবেন এবং তা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

    ১৯৯৯ সালে বাম শাসনকালীন সময়ে সর্বসম্মতিক্রমে এই “বাংলা” নামকরণ চেয়ে কেন্দ্রের কাছে অনুমোদন চাওয়া হয়েছিল। তৎকালীন এনডিএ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অটল বিহারীর নেতৃত্বে এনডিএ সরকার ‘বাংলা” নামকরণের অনুমতি দেন নি। ২০১৬ সালের ২৯ আগস্ট রাজ্যের নাম পরিবর্তন নিয়ে বিধানসভায় প্রস্তাব আসে। সেই সময় বাংলায় রাজ্যের নাম ‘বাংলা’, হিন্দিতে ‘বঙ্গাল’ এবং ইংরেজিতে ‘বেঙ্গল’ পাশ হয়েছিল। সেই প্রস্তাবও কেন্দ্রীয় অনুমতি পায়নি। এবার তিন ভাষাতেই “বাংলা” নামের প্রস্তাব করা হল।

    রাজ্যের প্রতিনিধিরা যে বক্তব্য রাখতে চান তা জাতীয় স্তরে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠুক এটাই তো কাম্য। সে ক্ষেত্রে “বাংলা” নামকরণ না করে “বঙ্গ” রাখলেও তো সমস্যা হবার কথা ছিল না। তবে “বঙ্গ” বিসর্জন দিয়ে “বাংলা” নামকরণের যুক্তি কি? বাম সরকার থেকে মমতা ব্যানার্জীর সরকার কেন “বঙ্গ” ছেড়ে “বাংলা” নামকরণের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন?
    এই বিষয়ের উপর আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে একটু জেনে নেব। বিধান সভায় প্রস্তাব পাশ হবার পরে তিনি জানান যে “আজকের দিনটি আমাদের কাছে এক ঐতিহাসিক দিন। বাংলা নামের প্রতি আমাদের আবেগ জড়িত। তাই এই রাজ্যের নাম বাংলা হওয়ায় আমরা গর্বিত। আশা করি, রাজ্যবাসীও খুশি। তাই রাজ্যবাসীকে জানাই অভিনন্দন। বাংলা নামে আমরা আজও স্বচ্ছন্দ বোধ করি। তাই আজ এই রাজ্যবাসীর জন্য এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হলো”। তিনি আরো জানান যে যাঁরা এই নামের বিরোধিতা করেছে, তারা ফের আরও একটি ঐতিহাসিক ভুল করল। ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না। নাম বদলের বিরোধিতা সত্যিই দুঃখজনক”।
    মমতা ব্যানার্জী ইতিহাসের কতটুক খবর রাখেন আমার জানা নেই। তবে তিনি যে “বঙ্গ” নাম থেকে সরে গিয়ে “বাংলা” নামকরণের উপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তা অবশ্যই ঐতিহাসিক ব্লান্ডার।
    বঙ্গ বিভাজনের পর এই রাজ্যের কি নামকরণ হবে তা নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার নানা লেখায় “বাংলা” এবং “বঙ্গ” দুটি শব্দই ব্যবহার করেছেন। সেই ব্যবহার বঙ্গের অতীত ইতিহাসের থেকে কাব্যের প্রয়োজনে বেশী ছিল। ভাষাতাত্ত্বিকেরা “বাংলা” নামটি প্রত্যাহার করেন। প্রখ্যাত ভাষাতাত্ত্বিক এবং জাতীয় শিক্ষক সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় লিখেন; ‘পশ্চিম বঙ্গ’ (ওয়েস্ট বেঙ্গল) বলিলেই সঙ্গে সঙ্গে তাহার জবাব-রূপে ‘পূর্ব বঙ্গ’ (বা ইস্ট বেঙ্গল) নামটিও আপনা হইতেই আসিবে।সমগ্র ‘বঙ্গদেশ’ সমন্ধে এই ঐক্যবোধকে বাঁচাইয়া রাখিবার জন্যই, বঙ্গীয়-সাহিত্য পরিষদ হইতে প্রতিবাদ করা হইয়াছিল-মাঝে যে প্রস্তাব উঠিয়াছিল যে ‘পশ্চিম বঙ্গ’ (ওয়েস্ট বেঙ্গল) নামটিকে বর্জন করিয়া তাহার স্থানে কেবল ‘বঙ্গদেশ’ বা বাঙ্গালা দেশ (বেঙ্গল) বলা হউক, ভারত-সরকারও এই নাম গ্রহণ করুক, তাহা অনুচিত, অযৌক্তিক ও অনৈতিহাসিক, এবং দেশাত্ববোধের পরিপন্থী। অতএব এই প্রস্তাব পরিত্যক্ত হউক। সুখের বিষয়, পশ্চিম বঙ্গ নামটিকে বিতাড়িত করিবার প্রস্তাবটি সমন্ধে এই আপত্তি উঠায়, ইহা গৃহীত হয় নাই (সুনীতিকুমার চট্রোপাধ্যায়:গৌড় বঙ্গ, বঙ্গদর্পনে সংকলিত-পৃষ্ঠা ৬৭)।
    অতীতের সমস্ত ঐতিহাসিক দলিলে এই পূর্ব জনপদের নাম “বঙ্গ”। সংস্কৃত সাহিত্যেও এই জনপদকে “বঙ্গ” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। সিংহলে প্রাপ্ত মহাবংশ, দ্বীপবংশ, কুলবংশ প্রভৃতি গ্রন্থে বিজয় সিংহকে বঙ্গের রাজা সিংহবাহুর পুত্র হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই বিজয় ছিলেন গোতমা বুদ্ধ পূর্ব বঙ্গের রাজকুমার। যিনি পরবর্তী কালে সিংহলের (বর্তমান শ্রীলংকা) রাজা হয়েছিলেন। চর্যাপদের বিভিন্ন দোহায়ও আমরা এই জনপদের নাম “বঙ্গ” হিসেবে দেখতে পাই।
    আচার্য সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়ের The Origin and Development of the Bengali Language (ODBL) অনুসারে “বঙ্গ” শব্দটি অস্ট্রীক “বোঙ্গা” শব্দ থেকে এসেছে। এই বোঙ্গা শব্দের অর্থ হল “Spirit” যা আদিবাসীদের শিল্প, সাহিত্য, ভাষা, সংস্কৃতি এবং জীবন দর্শনের সাথে সম্পৃক্ত। বোঙ্গা এক মহান সত্তা। প্রত্যেক দৃশ্য এবং অদৃশ্য পদার্থের মধ্যেই এই সত্তা বিরাজমান। গির (জঙ্গল), বুরু (পাহাড়) এবং কি ঋতুকেও বোঙ্গা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে সাঁওতালী বিন্তিতে। তাই আদিবাসীদের প্রিয় দেশের নাম “বোঙ্গা দিশম” বা মহান সত্তার দেশ। এই বঙ্গার সাথে আলি প্রত্যয় যুক্ত করলে হয় বঙ্গালী। সুতরাং বঙ্গ শব্দটির সাথে বঙ্গালী জাতির আদিবাসী সত্তাটিও সম্পৃক্ত। আমরা চর্যাপদেও দেখতে পাই যে বুদ্ধ সহজিয়া কবি ভুসুক পদ বলছেন,
    “বাজণাব পাড়ী পউঅ্যা খালে বাহিউ।
    অদঅ বঙ্গালে ক্লেশ লুড়িউ।।
    আজি ভুসু বঙ্গালী ভইলী।
    ণিঅ ঘরিণী চন্ডালী লেলী।।

    বঙ্গালী জাতির সব থেকে নিকট জন হল কোল-সাঁওতাল জাতি। শুধু ভাষা নয় এদের জেনেটিক সম্পর্কও অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। অর্থাৎ বঙ্গালা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং জীবন দর্শনের সাথে যে জনজাতির অবদান সব থেকে বেশি “বাংলা” নামকরণ করে সেই সাঁওতাল আদিবাসীদেরই অস্বীকার করা হল।

    অন্যদিকে “বাংলা” একটি ভোট-চাইনিজ ভাষা। মূল সাঁওতালী ভাষার অনেকটা পথ পেরিয়ে এসে এই ভাষার বিকাশ ঘটেছে। বাং+লাম = বাংলা। সাঁওতালী ভাষায় এর অর্থ দাঁড়ায় বন্ধা নয় এমন দেশ। অর্থাৎ উর্বর দেশ। লেপচা ভাষায় বাং+লাম=বাংলা হল দুর্গম দেশ। অর্থাৎ এই “বাংলা” শব্দের মধ্যে জাতি সত্তার যোগাযোগ একেবারে ক্ষীণ যা “বঙ্গ” শব্দের মধ্যে বিরাজমান। তাই বাংলা নামকরণ শুধু ঐতিহাসিক ব্লান্ডার নয় একটি মহান জাতির শিকড় ছিন্ন করার নির্বুদ্ধিতাও বটে।

    এদিকে বিজেপি মনে করছে এই পশ্চিমবঙ্গ নামের পিছনে শ্যামাপ্রসাদের অবদান রয়েছে। শ্যামাপ্রসাদের লড়াইয়ের জন্য বাঙ্গালী হিন্দুরা পশ্চিমবঙ্গ নামক রাজ্য পেয়েছিল। তাই তারা বাংলা নামকরণ মানবে না।

    আমরা মনে করছি এই "বাংলা" নামকরণ নিছক লোক দেখানো নাটক। টিএমসি এবং বিজেপি দুটোই নানা কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত। ভোটের আগে এই সব কেলেংকারী থেকে মানুষের মুখ অন্যদিকে ঘোরানোর জন্যই এই নাম পরিবর্তনের বাহানা। এই বাহানায় বিজেপি এবং টিএমসি এই দুটো দলই আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে থাকবে। অর্থাৎ আরএসএসের মদতপুষ্ট দুটো দলকেই নিয়েই মানুষ আলোচনা করবে। এতে কেলেঙ্কারিগুলি ঢাকা পড়ে যাবে। কিন্তু
    আদিবাসী সত্তার প্রশ্নটি বিজেপি, তৃণমূল কেউ ভাববে না!
  • Du | 237812.58.890112.106 | ৩১ জুলাই ২০১৮ ২১:০৮377193
  • জনগণতেও নেই সেটা একটা পয়েন্ট কেউ করতেই পারে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন