এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বিপ্লব রহমান | ০৬ জুন ২০১৮ ২১:৫৭375601
  • আমাদের ইস্কুলের গেটে ‘ঘটি গরম’ বলিয়া এক মহার্ঘ্য বস্তু মিলিত। টিফিনে দারওয়ান মামুর পারমিশন লইয়া গেটের ফাঁক গলিয়া চারি আনা বা আট আনার ‘ঘটি গরম’ খবরের কাগজের চোঙায় মিলিত। তারপর আহা! মরি মরি!

    হকার মামু টিনের চোঙ্গা ফুঁকিয়া সুর করিয়া বলিতেন, ‘এইইইই, ঘঅঅটি গাঅঅঅরম্ম, গরমা-গরম!’ তাহার ক্লাউনের মতো তালি দেওয়া পোশাক, মাথায় গাধা টুপি, পায়ের ঘৃঙুর – সবই যেন নাচিয়া উঠিত!

    বিজ্ঞজনেরা ইহাকে ‘হরিদাসের বুলবুলভাজা’ (মহারাণী ভিক্টোরিয়া, এ ভাজা খান রোজ কিনিয়া?) বলিবেন কি না জানি না। শুধু তোমারে জানি (৩), ও গো ‘ঘটি গরম’!

    এই বেলা বলিয়া রাখি, তৎকালে আনা-গণ্ডার হিসাব উঠিয়াছিল আগেই। সাতের দশকে, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে টাকা-পয়সা চালু হইয়াছিল ঠিকই। কিন্তু সাবেকী চল মানিয়া তখনো সিকিকে (গুরুর নহে) ‘চারি আনা’, আর আধুলিকে ‘আট আনা’ বলা হইতো। এমনকি ‘পাঁচ সিকা’ কথাটি তখনো চালু ছিল। আর আটের দশকেও এসএসসি (মাধ্যমিক) পরীক্ষাকে ‘মেট্রিক’ বলা হইতো সর্বত্রই!

    এখনো মনে আছে, পুরাতন ঢাকার ৪ নং র্যা ঙ্কিং স্ট্রিট, ওয়ারির দ্বিতল বাসার উল্টো দিকের মুদি দোকান হইতে প্রতি সকালে এক টাকায় এক হালি ডিম কিনিতাম।
    পরে ইঁচড়ে পাকা হইয়া হাই ইস্কুলে পড়িবারকালে প্রাইমারির সেই ‘কিশোলয় উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়’ এর শিশু শ্রেণীর সেই ‘ঘটি গরম’ ওয়ালাকে খুঁজিয়া বাহির করি। আতিপাতি করিয়া খুঁজিয়া বাহির করি তাহার ত্বত্ত্ব তালাশ!

    পের্টেবল টুলের উপর অ্যালমুনিয়ামের (তখন ইহাকে চলতি ঢাকাইয়া ভাষায় ‘সিলভার’ বলা হইতো) গামলার ভেতরে জ্বলন্ত কাঠকয়ালা-ছাই ইত্যাদির ওম জিইয়াই রাখা হইতো কাঠের গুড়া দিয়া (তুষের বিকল্প, ঢাকা শহর তখন হাফ মফস্বল হইলেও তুষ মিলিবে কোথা? তাই স’ মিলের কাঠের গুড়াই ভারসা)। মাঝখানে বসানো হইতো বিশাল কাঁসার ঘটিতে চানাচুর ভাজা। তাহাতে বাদাম, বিট লবন, হাল্কা মরিচের গুড়া (কখনো চাহিদা মত কাসুন্দি) ইত্যাদি মেশানো হইতো।

    কাঠ কয়লার ওমে চানাচুরটি সব সময়ই ‘গরমা-গরম’ থাকিত। আর চোঙ্গা-সাজপোশক-নাচন-কুদন শিশুমন ভুলাইবার নিমিত্ত মাত্র।
  • বিপ্লব রহমান | ০৬ জুন ২০১৮ ২২:০১375607
  • হট প্যাটিস!
    ---------
    সাতের দশকে শৈশবের সেই অপূর্ব স্বপ্নপুরীর ঢাকায় সন্ধ্যা নামিবা মাত্র বিচিত্র সব হকারের দল আমাদের কচিকাঁচাদের পড়াশুনা মাথায় তুলিবার জন্য যেন মরিয়া হইয়া উঠিত।

    লোডশেডিং সেই কালে অহরাত্র বিষয়। তাই বিকাল হইবামাত্র আমাদের অন্যতম ডিউটি ছিল বাসার ছোট-বড় সব হ্যারিকেনের চিমনী পরিস্কার করিয়া, সলিতা, কেরোসিন ইত্যাদি ঠিকঠাক করা।
    তখনো ঢাকায় সাপ্লইয়ের গ্যাস চালু হয় নাই। কেরোসিনের চুলাই ছিল ভরসা। কেরোসিন দুর্মূল্য হইলে নকশাল বড়ভ্রাতা (গত বছর প্রয়াত, মানব ভাই) স্টেনগান ঠেকাইয়া ব্ল্যাকারদের কাছ হইতে দুই ড্রাম কোরোসিন আনিয়াছিলেন, এখনো মনে আছে। ইহার পরেও মা জননী ব্যাক আপ হিসেবে খড়ির তোলা উনুনের বন্দোবস্ত রাখিয়াছিলেন।

    এখন এই সোলার চার্জার, ইলেক্টিক চুল্লি বা মাইক্রো অভেনের যুগে খুব রূপকথা মনে হইতেছে কী? আমার নিজেরই প্রযুক্তির এই উল্লম্ফনে ঘোর কাটে না!

    শিবের গীত অনেক হইয়াছে, এখন বিষয়ে আসি।

    একেক সন্ধ্যায় সুর করিয়া দুলিয়া দুলিয়া নামতা পড়িবার কালে লোড শেডিং আবশ্যক ছিল। সঙ্গে সঙ্গে আগে হইতে শিখা কমাইয়া রাখা হ্যারিকেন ঘরে ঘরে জ্বলিয়া উঠিত। চালু হইতো গ্রাম হইতে আনা বাহারী নকশা তালপাখা! তাহার কোনটিতে লজ্জাবনত ঘোমটা পড়া বালিকা বধূর মুখোচ্ছবি, কোনটিতে নৌকা বাইচ, কোনোটিতে ফুল-ফল-লতা-পাতা আঁকা থাকিত। পড়ায় ফাঁকি দিবার জন্য, দুষ্টুমী করিবার জন্য কতোদিন রেডিও অফিসের কেরানী মা-জননীর কাছে সেই হাতপাখার ডাঁটির বাড়ি খাইয়াছি!

    তো বিদ্যুতে বিঘ্ন ঘটিবার মাত্র হ্যারিকেন ঘিরিয়া জড়ো হইতো নানান ধরণের আলোর পোকা। উঁই পোকা উড়িয়া আসিবামাত্র মা তাহার কলিকাতার ইস্কুলের শিশুশ্রেণীর বচন কহিতেন, ‘উলি পোকার পাখা গজায়, মরিবার তরে!’

    আর আমাদিগের মন চলিয়া যাইতো জানালার বাহিরে, সেই হকার, লোড শেডিঙের ঢাকার গলিপথে গামছা বাধা আলোকোজ্বল আশ্চর্য কাঁচের বাক্স কাঁধে, মুখের কাছে হাত গোল করিয়া কেবলই হাঁকিয়া চলিয়াছে, ‘এই হট প্যাটিস! আছে হট প্যাটিস! নেবেন হট প্যাটিস?’…

    আর কিছুই না, সব্জির পুর দেওয়া মুচমুচে প্যাটিস মাত্র, ছোটগুলো টাকায় দুইটি, বড়গুলো টাকায় একটি মেলে। এই সুখাদ্যের আকর্ষণ তাহার আধার বাক্সে। কাঁচের চৌকোনা বাক্সের আলোকজ্জ্বল বাক্সখানিই ছিল আসল আকর্ষণ!

    মা জননীর আঁচল ধরিয়া, অনবরত ঘ্যানঘ্যান করিয়া, এমনকি কখনো হাতপাখার ডাঁটির বাড়ি স্বীকার করিয়া আমরা হকার ডাকিয়া খবরের কাগজের চৌকো টুকরায় কিনিতাম একেকটি বেহেশতি মেওয়া-- হট প্যাটিস! বাড়ির চায়ের কাপে হকার মামু দিতেন তেঁতুল গোলা, হালের সস বলিতে যাহা বোঝায়, তাহাই।

    আবারো কৈশরের বারান্দায় উঠিবামাত্র ডিকোড করিয়াছিলাম ‘হট প্যাটিস রহস্য’।

    সে আর কিছুই নহে, একটি আনুভৌমিক টিনের বাক্সের তিনদিক কাটিয়া কাঁচ বসানো হইতো ভেতরের খাদ্য বস্তুটিকে (হট প্যাটিস) দৃশ্যমান করিতে। প্রয়োজনে ভেতরে জ্বালানো হইতো ছোট্ট একখানি মোম। বাক্সখানির ছাদের ঘরে ছোট ছোট ঝিরি ফুটা থাকিত হাওয়া চলাচলের জন্য। আর ‘হট প্যাটিস’ সত্য সত্যই ‘হট’ রাখিবার জন্য বাক্সের তলদেশে থাকিত এক ড্রয়ার। সেই টিনের ট্রে খানিতে রাখা হইতো গনগনে কাঠকয়লা, যাহা আবার সচল রাখিতো তুষের অভাবে সেই স’মিলের কাঠের গুড়া!

    (চলিবে?)
  • বিপ্লব রহমান | 340112.231.126712.74 | ০৭ জুন ২০১৮ ১১:০১375608
  • *সংশোধনী

    ঘটি গরমের প্রযুক্তি বর্ণনায় ভুল হইয়াছে। ঘটির ভেতরে থাকিতো গনগনে কয়লা, ইহাকে বসানো হইতো চানাচুর ভর্তি এলমুনিয়াম গামলার কেন্দ্রে। ঘটির ওমে চানাচুর গরম ও মুচমুচে থাকিত।

    বাকী সব ঠিকই আছে! :)
  • paps | 340112.218.673423.94 | ০৮ জুন ২০১৮ ০২:২৪375609
  • বিপ্লবদা,
    কলকাতায় কিনতু ঘটি গরম এখনো পাওয়া যায়। অবশ্য় খোদ ঘটিদের দেশে ঘটি গরম না পাওয়া গেলে আর কোথায় পাওয়া যাবে?

    অফটপিক: মুক্তমনায় আপনার লেখা নিয়মিত পড়তাম। বিশেষ করে পাহাড়িদের নিয়ে লেখা যে সিরিজটা আপনি ওখানে লিখেছিলেন ওটা আমার খুবই ভালো লেগেছিল। অভিদার সঙ্গেই হায় মুক্তমনার সেই সোনার দিন বিদায় নিয়েছে।
  • বিপ্লব রহমান | ০৮ জুন ২০১৮ ০৭:২৪375610
  • "ঘটিদের দেশে ঘটি গরম"? হা হা হা :ডি

    জটিল কহিয়াছেন মশাই। :)

    মুক্তমনায় অধম কিন্তু এখনো লেখে। আপনার বিনীত পাঠের জন্য ধন্যবাদ। শুভ
  • paps | 340112.218.673423.226 | ০৮ জুন ২০১৮ ১৬:১৩375611
  • মুক্তমনায় যে আপনি এখনো লেখেন সেটা তো জানি। আসলে আমি বলতে চেয়েছিলাম যে অভিদার জীবদ্দশায় মুক্তমনায় যেরকম বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট আসত আর তারপর সেই পোস্ট-এর থ্রেডে যেমন তুমুল তর্কবিতর্ক হত তা আর হয় না। আর কি অসম্ভব উচ্চমানের হত সেই তর্কবিতর্ক!
  • স্বাতী রায় | ০৮ জুন ২০১৮ ২০:২১375612
  • চলিবে তো বটেই - ছুটিবে। আরও আসুক। লাল নীল কাঠি আইসক্রিম, মাথায় টিনের বাক্স করে নিয়ে আসা চাই শোও-নপাপড়ী যেটা কিনা মুখে দিতে গলে যেত, লাল শালু জড়ান কুলপি মালাই সব আসুক। ইলেক্ট্রিক কারেন্ট, কাঠির আগায় জড়ান আচার ( আমার ভারি অপছন্দের জিনিস) - সেগুলো আসলেও চলবে।
  • স্বাতী রায় | ০৮ জুন ২০১৮ ২০:৫৯375614
  • তারপরে জিভেতে জল আসিল ... টস টস টস ... এখনও পড়িতেছে ...
  • বিপ্লব রহমান | ০৯ জুন ২০১৮ ০৭:৪৩375602
  • বক্স ক্যামেরা ও গাছ তলার সেলুন লইয়া লিখিবো!

    মিনা বাজার, সাপ খেলা, বাঁদর নাচ -- সে এক রূপকথার শৈশব!

    ..."এতটা বয়স চলে গেল, তবু কী আশ্চর্য, আজও কি জানলাম, বনভূমি কেন এত ভিন্ন ভিন্ন বৃক্ষ নিয়ে তবে বনভূমি? জল কেন এত স্বচ্ছ স্রোত নিয়ে তবে স্রোতস্বিনী?"....
  • বিপ্লব রহমান | ০৯ জুন ২০১৮ ১৭:০২375603
  • সাপের খেলা, বানর নাচ
    --------------------------
    প্রাইমারীতে পড়িবারকালে একাই পথ চিনিয়া হাটিয়া বাড়ি ফিরিতাম। দুরত্ব নেহাত কম ছিল না। ছয়-সাত কিলোমিটার তো হইবেই।

    তখন ঢাকার মোহাম্মদপুর এতো ঘিঞ্জি এলাকা হয় নাই। রাশি রাশি ফ্ল্যাট বাড়ি, চকচকে দোকান, ফাস্টফুড, কফিশপ ইত্যাদি কিছুই ছিল না। এমন কি চারতলার বেশী উঁচু বাড়ি খুঁজিয়া পা্ওয়াই ছিল দুস্কর। তখনো একতলা ও লাল টালি ছাওয়া বাংলো টাইপ ঘর সেই এলাকায় প্রচুর দেখা যাইতো। আর ছিল বিপুল সংখ্যক আটকে পড়া উর্দুভাষী পাকিস্তানী, যাহাদের ‘বিহারী‘ বলিয়া ডাকা হইতো।

    তো ইস্কুল হইতে ফিরিবার সময় কাঁচা বাজার পড়িত। দুইপাশে নানান রকম দোকানের পসরা দেখিতে দেখিতে কখন রাস্তা ফুরাইয়া আসিত, টের পাইতাম না।

    বাজারের পাশেই ছিল বিশাল একখানি পরিত্যাক্ত মাঠ (এখন ‘শহীদ শাকিল পার্ক‘)। শর্টকার্ট মারিবার জন্য একেকদিন সেই পাঠ পার হইবার সময় বিশাল কৃষ্ণচূড়া গাছের নীচে থমকিয়া দাঁড়াইতাম। ‘জংলি ছাপা‘র শাড়ি পরিয়া, উঁচু খোপায় জবা ফুল গুঁজিয়া ছিপছিপে চেহারার বেদেনীরা সাপের ঝাঁপি খুলিতো।

    সাদাকালো টিভি বা সিনেমার বাইরে সেই প্রথম বেদেনীর দল, বীন বাজাইয়া সাপ খেলা, তাহাদের নানান রকম জটিবুড়ি অষুধ, মাদুলি বিক্রি ইত্যাদি দেখি।

    এখনো মনে আছে, পদ্ম গোখরা সাপ দেখিয়া এতখানি ভীত-সন্ত্রস্ত হইয়াছিলাম যে, ওই রাত্রে দুঃস্বপ্ন দেখিয়াছিলাম।

    একেকদিন ওই মাঠেই বিহারী বানরওয়ালা খেলা দেখাইতো। খেলার মধ্যে ডুগডুগির তালে বানর নাচই প্রধান।
    আরেকটি খেলা ছিল অনেকটা এই রকম: স্বামী মরিয়াছে, তাই স্ত্রী মাথা চাপড়াই আহাজারি করিতেছে। একজোড়া বানর ইহার অভিনয় করিত। পুরুষ বানরটিকে শার্ট-প্যান্ট ও মেয়ে বানরটিকে শাড়ি পরানো হইয়াছিল। বানরওয়ালার ডুগডুগির তালে উহারা মুকাভিনয় খুব খারাপ করে নাই!

    ওই বানর খেলায় প্রচুর আমোদ পাইয়াছিলাম।

    স্বীকার করি, শিকলবন্দী পশুজীবনের কষ্ট বালকমন বোঝে নাই। এমন কি ঝাঁপবন্দি সাপের কষ্ট!
  • বিপ্লব রহমান | ১৪ জুন ২০১৮ ১৯:৪১375604
  • সাইকেলবাজী-১
    ------------------
    সাতের দশকে ঢাকার মোহাম্মাদপুরে প্রাইমারি ইস্কুলে পড়ি। খুব দুষ্টু না হইলেও শান্তিশিষ্ট লেজ বিশিষ্ট ছিলাম না একেবারেই।

    মা ছিলেন রেডিও অফিসের আপার ক্লার্ক। ছুটির দিনে (তখন রোববার) অফিসের পিয়ান মামুরা সাইকেল চড়িয়া আসিতেন। তাহারা বাজার-সদাই করিয়া দিতেন, গ্রামের বাড়ি হইতে আমার জন্যে আনিতেন আম-কাঁঠাল বা মৌসুমের কোনো ফল। তাহাদের কাছে নানা আব্দার ছিল আমার।

    তবে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল পিয়ন মামুদের সাইকেল। ইয়া বড় কালো -চকচকে চায়নিজ সাইকেলের কোনটির নাম-- হারকিউলিস, কোনটির নাম--ফনিক্স।

    বালক বেলায় সিটে বসিয়া ওইসব প্রকাণ্ড সাইকেলের প্যাডেলের নাগাল পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। ব্রেক কষিয়া মাটিতে পা ঠেকাইয়া নামিবার বা ব্যালান্স করা তো দূরের কথা।

    তবু সাইকেলবাজীতে এতোটুকু বিঘ্ন ঘটে নাই। তেমন কিছুই নহে, দুইখানি হাতল ধরিয়া খানিকটা দৌড়াইয়া স্পিড তুলিয়া সাইকেলে দুই চাকার মাঝের ত্রিকোন রডের ভেতরে পা গলাইয়া হাফ প্যাডেল মারিয়া সাইকেল চালাইতাম।

    পাড়ার কোনো এক বড় ভাই বোধহয় অভিনব এই কায়দাটি শিখাইয়াছিলেন। এই কসরতে সাইকেল চালানোর সমস্যা একটাই, খুব বেশী স্পিড দেওয়া যাইতো না। আর ব্রেক কষিলে লাফাইয়া নামিতে হইতো। :)

    চোখ বুজলে মাইনাস চশমার, হাফ প্যান্ট পড়া, হাফ প্যাডেলে সেই বালকটিকে যেন এখনো দেখতে পাই!
  • বিপ্লব রহমান | ১৪ জুন ২০১৮ ১৯:৫৬375605
  • সাইকেলবাজী-২
    আরো কিছু পরে তিন চাকার বেবি সাইকেল ও বড়দের বিশাল আকৃতির সাইকেলের বাইরে মাঝারি আকৃতির রঙ-বেরঙের হাল্কা চাইনিজ সাইকেল বাজারে আসে। এ সব সাইকেলের সিট ও হাতল উঁচু-নিচু করিয়া হাইট অ্যাডজাস্ট করা হইতো।

    যখন হাই স্কুলে পড়ি, তখন অনেক সহপাঠীই এই রকম সাইকেলে চড়িয়া স্কুলে আসিত, স্বীকার করি, দেখিয়া খুব হিংসা হইতো। একেকদিন তাহাদের কারো সাইকেল ধার করিয়া কিছুটা হাত মকশ করিতাম।

    বাড়িতে অনেক বায়না করিয়াও ওই রকম একখানি সাইকেল পাই নাই। আসলে অতো দামি জিনিষ কিনিয়া দিবার সামর্থ বাবা-মার ছিল না।

    মা সৈয়দা আজগারি সিরাজী (এখন ৭৭, পুরোপুরি স্মৃতিভ্রষ্ট) ছিলেন রেডিও অফিসের কেরানী; আর বাবা আজিজ মেহের (গতবছর প্রয়াত, দেখুন, আমার বাবা আজিজ মেহের, মুক্তমনা ডটকম) ছিলেন পলাতক নকশালাইট নেতা।

    বরাবরই স্কুল-কলেজে পায়ে হাঁটিয়া যাতায়ত করিতাম। রিকশা বা বাসে চড়িবার কথা কখনো ভাবি নাই। শুধুমাত্র ফাইনাল পরীক্ষার সময় কখনো দুই-পাঁচ টাকা রিকশা ভাড়া পাইতাম।
  • বিপ্লব রহমান | ১৪ জুন ২০১৮ ১৯:৫৯375606
  • *পড়ুন: চোখ বুজিলে মাইনাস চশমার, হাফ প্যান্ট পড়া, হাফ প্যাডেলে সেই বালকটিকে যেন এখনো দেখিতে পাই!

    --সাইকেলো হইতে, ঈষৎ সংশোধিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন