এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  খ্যাঁটন  খানা জানা-অজানা  খাই দাই ঘুরি ফিরি

  • রসুইঘরের রোয়াক (দ্বিতীয় ভাগ) - ২১

    স্মৃতি ভদ্র
    খ্যাঁটন | খানা জানা-অজানা | ১১ মে ২০২৩ | ৯৫৩ বার পঠিত
  • ছবি - লেখিকা


    কাতলের মরিচ পোড়া: রাঁধুনি ফোড়নে লাউ আর কাতল মাছের পাতলা ঝোল


    মধ্য আশ্বিন মানেই আকাশ থেকে নেমে আসা রোদে উঠোনে অনেকটা সময় ধরে ছায়ার আল্পনা। ওদিকে গোলেনূর দাদির সুপারি বাগানের তলায় দূর্বাঘাসের ডগায় জমে থাকা রাতের নিহার মানেও মধ্য আশ্বিন। এমনকি বাইরবাড়ির দেবদারু বাগানের তলা জামরঙের ফলে ছেয়ে থাকা, সেও তো মধ্য আশ্বিনই।

    তবে চারপাশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এত ঐশ্বর্যের মাঝেও মধ্য আশ্বিন আমাকে কাঙাল করে তোলে। বারোয়ারি পূজা শেষ হতে না হতেই আমাদের ফিরতে হবে শহরে। ফিরতে হবে আমাদের হিসেবের দিন ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই। শহরে ফিরে যাওয়ার দিনগুলোতে প্রতিবারই আমি দৈব কিছু ঘটার আশা করি। এই যেমন – তুমুল বাতাস উঠুক আর আমাদের শহরে ফেরা পিছিয়ে যাক কিংবা জরুরি কোনো কাজ এসে পড়ুক বাবার আর আমাদের শহরে ফেরা পিছিয়ে যাক।

    কিন্তু দৈব কোনোকিছুই ঘটে না, বরং সময়ের খাতায় কষে রাখা হিসেব ধরেই আমাদের ফিরতে হয় শহরে। ফিরে যেতে হয় আবার আসব খুব তাড়াতাড়ি—এমন কতশত মিথ্যে আশার ফুলঝুরি মনে মধ্যে পুষে।

    আজ এমনই একটা দিন। ভোরের আকাশকে অন্ধকারে রেখেই উঠে পড়েছে ঠাকুমা। আর উপরতলা থেকে নেমে এসেছে মনিপিসিও। বড়ঘরের অন্ধকারে যেটুকু আলো তা ওই আওসে রাখা দরজার ফাঁক ফোঁকরে ঢুকে পড়া উঠোনের টিমটিমে বাতিটার। অন্যদিন হলে এসময় দাদু পাশ ফিরে শুতো ভোরের আয়েসি ঘুমের আশায়। কিন্তু আজ তা হল না। দাদু ভোরের ঘুমে বিরতি টেনেই উঠে পড়েছে আজ। উঠেই বেরিয়ে গেল নদীর ঘাটে। সঙ্গে মালেক দাদু।

    এই মালেক দাদু মানুষটি বড় অদ্ভুত। কারণে অকারণে হা হা করে হেসে চারপাশ জমিয়ে তোলে। আবার যখন তার খুব ভাবগম্ভীর উপস্থিতির প্রয়োজন, তখন তার রাশভারী আচরণে সবাই তটস্থ হবেই। আমাদের বাড়ির সকলের কাছে মালেক দাদু হল মুশকিল আসানের একমাত্র উপায়। বাড়ির কেউ কোনো কারণে অভিমান করে আছে? বেশ, মালেক দাদুকে ডাকা হোক মান ভাঙানোর জন্য। বাড়ির বড় কোনো অনুষ্ঠানে ভালো মাছের দরকার? বেশ, মালেক দাদুকে পাঠানো হোক পোড়াদহের হাটে। আসলে মালেক দাদু—বাঘকাকুর বন্ধু কম, আমাদের বাড়ির ছেলে বেশি।

    তাই ভোরবেলা বিনয় মাস্টার একা নদীর ঘাটে গেলে তো মালেক দাদুর আসা চাই-ই। সাহাপাড়ার মসজিদ থেকে ফজরের নামাজ পড়েই মালেক দাদু এসে দাঁড়িয়েছিল বাইরবাড়ির বারান্দায়। মাস্টারমশাইকে নিয়ে ঘাটে যাবে বলে বাড়ির পাশের কলিম রিকশাওয়ালাকে ভাড়া করে রেখেছিলো কাল সন্ধ্যারাতেই। আর এত দায়িত্বশীল বলেই হয়তো দাদু বারবার বলে,

    মালেক আমার আগের জন্মের বাবা।

    অল্পবয়সী সাদাপাকা চুলের মানুষটিকে চাচা বা কাকা সম্বোধন না করে আমি প্রথম থেকেই দাদু বলে কেন ডাকি—তা অবশ্য আমার স্মরণে নেই। তবে মায়ের মুখে শুনি, আমার জন্মের দিন মালেক দাদুর প্রিয় দাদিজান মারা গিয়েছিলেন। এটার যোগসূত্রেই কিনা জানি না, মালেক দাদু আমাকে দিদি ডাকে আমার জন্মের দিন থেকেই।

    উঠোনের ছড়াজল পড়তেই ঠাকুমা গিয়ে ঢুকল কলতলা। স্নান সেরে বাড়ির ফুলেই আজ নিত্যপূজা সারা হবে। বড় বৌমা উনুনে আঁচ দিয়ে দিল ভোরের আকাশ পরিষ্কার হওয়ার আগেই। এর মধ্যেই উপরতলা থেকে একে একে নেমেছে মুড়ি-মুড়কি ভরা টিন, ডানোদুধের কৌটা ভরা তিলের কটকটি, ঢ্যাঁপের মোয়া, কলাপাতায় জড়ানো তিলপিঠা আর শুকনো বরই গুঁড়ো করা মিষ্টি আচার।

    এ সবকিছু আমাদের সঙ্গে শহরে যাবে। কারণে অকারণে এসব হাতে নিয়ে খাওয়ার ছলে আমি ঘ্রাণ নেবো বাড়ির। ঘ্রাণ নেবো ঠাকুমার।

    ও দিদি, মুখটা অমন শুকনো লাগছে কেন? কিছু খাবে?

    ঠাকুমা তো জানে না—এগিয়ে চলা প্রতিটি মুহূর্ত আমার বুকের ভেতর দামামা বাজাচ্ছে। বুঝতে পারছি সব আকুতি বিফল হয়ে আমাদের আরেকটু পরেই শহরে ফিরে যেতে হবে। এমন সময়গুলোতে আমার কিচ্ছু ভালো লাগে না। এসব সময়ে আমি শুধু দেখি আমার বাড়িটাকে, দেখি বাড়ির মানুষগুলোকে, এমনকি উঠোনে দুলতে থাকা গাছের ছায়াগুলোকেও। শহরের বাসায় রোদতপ্ত নিরিবিলি দুপুরে মা যখন ভাতঘুম দেয়, তখন নির্ঘুম আমি মায়ের পাশে শুয়ে এসব আবার দেখি খোলা চোখের অন্দর পেরিয়ে বুকের কোঠর থেকে।

    ঠাকুমা হয়তো কিছু একটা বোঝে, তাই জলে ভেজা হাত দু-খানা দিয়ে আমার মাথা বুলিয়ে দেয়,

    ও দিদি, আজ প্রসাদে গুড়ের কদমা দেবো?

    আমাকে উত্তর দিতে হয় না। ঠাকুমা জানে এই পৃথিবীর সব মন্ডা-মিঠাই আমি ভুলে যাই গুড়ের কদমা পেলে।

    সকালের উঠোনে রোদের আল্পনা পড়েছে এরই মধ্যে। বরইগাছ থেকে ডেকে উঠছে খঞ্জন পাখি একটু পরপর। রান্নাঘরের উনুন থেকে নামলো ভাতের হাঁড়ি। এবার সেখানে বসলো পাঁচডাল সেদ্ধ হতে।

    কপাল আর নাকে তেলক পড়ে ঠাকুমা নিত্যপূজায় বসে গেছে। লালবারান্দায় কেরোসিনের স্টোভে মনিপিসি চড়িয়েছে চায়ের জল। পূর্ণির মা চায়ের কাপ আর গ্লাস ধুতে বসে গেছে পেয়ারা গাছের তলায়।

    এসবই এ বাড়ির নিত্যকাজ, তবুও কোথায় যেন সবকিছুতেই একটা সুরছেঁড়া আলসেমি।

    মায়ের গোছগাছ সব শেষ। এখন শুধু ভাঁড়ারের কতক জিনিস কৌটায় ভরাভরি হচ্ছে। অন্যদিন হলে আমি এতক্ষণে একবার পাড়া বেড়াতে চলে যেতাম। কিন্তু আজ আমার কিছুতেই মন টানছে না। আর এজন্যই হয়তো শুক্লা আর ইতু চলে এসেছে বাইরবাড়ির।

    মনি, আবার কবে আসবি? বার্ষিক পরীক্ষার পর আসবি না?

    শুক্লা ওর মাটির পুতুল আমার দিকে এগিয়ে দেয়। রথের মেলায় কেনা শুক্লার এই পুতুলটার জন্য বায়না ধরেছিলাম খুব।

    নিয়ে যা, এবার আমি ছেলে পুতুল কিনে রাখবো। তুই আবার এলে পুতুলের বিয়ে দেবো আমরা।

    চলে যাবার আগেই ফিরে আসার এইসব অজুহাত মাঝের সময়গুলোকে হালকা করে দেয়, আমিও সেসব অজুহাতে আরও প্রত্যাশা মিশিয়ে বুঝিয়ে দেই যাওয়া সে তো ক্ষণিকের, আমি তো আসলে ফিরে আসতেই বারবার যাই,

    আমি শহর থেকে পুতুলের শাড়ি আর পুতির গয়না কিনে আনবো, ওখানে ফেরিওয়ালা আসে প্রতিদিন জানিস!

    আমাদের দেওয়ানেওয়া ফুরিয়ে যায় মালেক দাদুর হাঁকে,
    দিদি, কি মাছ আনিছি দেখ।করোতোয়ার জলের মতো মিষ্টি হবিনি এই মাছ,

    মালেক দাদু বাইরবাড়ির বারান্দায় ব্যাগ থেকে ঢেলে দিল তড়বড়া একটা কাতল। লেজ নাড়া এমন কাতল আমি সত্যিই কখনো দেখিনি।

    আমাদের অবাক হওয়া তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করতে করতেই মালেক দাদুর বয়ান,
    করোতোয়ায় এমন মাছ জালে বাঁধে না দিদি এমনিতে, তয় আব্দুল মালেক গেলি মাছগুলার মান না রাখলি চলে না….
    কথা শেষ হওয়ার আগেই মালেক দাদুর অট্টহাসি।

    ওদিকে লাল বারান্দায় স্টোভ থেকে নেমেছে গুড়ের চা। দাদু আর মালেক দাদুর জন্য বড় ঘরে চা পৌঁছালো সাথে কাঁসার জামবাটি ভরা মুড়ি-মুড়কি। ওদিকে রান্নাঘরের উনুনে সেদ্ধ পাঁচডালে এখন ফোড়ন পড়ছে।

    পাকা কাতলে মরিচ পোড়া ভালো হয়….

    দাদুর কথাগুলো ঠিকঠিক পৌঁছে যায় লাল বারান্দায় গুড়ের কদমা প্রসাদ হাতে নিয়ে দাঁড়ানো ঠাকুমার কাছে,
    ও দিদি, প্রসাদ নাও তাড়াতাড়ি। বাগানে যেতে হবে আমাকে।

    গুড়ের কদমা হাতে নিয়েই আমি পিছু নিই ঠাকুমার।

    বাইরবাড়ির দেবদারু বাগানের তলা ছাড়িয়ে তাঁতঘরের সামনে আসতেই চোখে পড়ে গামছায় বাঁধা ভাত একপাশে রেখে মাকুরে হাত লাগাচ্ছে তাঁতিরা। আবছা আলোর তাঁতঘরে টিমটিম করে জ্বলছে কতগুলো ইলেকট্রিক বাতি। সেই আলোতেই আমি দেখে ফেলি হাতে গোনা পাঁচ তাঁত কমে চার হয়ে গেছে। আবার কমে গেল তাঁত?

    ও ঠাকুমা…..

    আমার প্রশ্ন অগাহ্য হয়ে যায় ঠাকুমার তাড়াহুড়োয়। এরমধ্যেই ঠাকুমা তাঁতঘর পেরিয়ে ছোট্ট পুকুরটার পাশে পৌঁছে গেছে। প্রায় বুজে আসা পুকুরটার ধার বেয়েই ঠাকুমার বাগান। নতুন ডগা ছেড়েছে লাউ গাছ। লাউয়ের মাচানে ঝুলছে একটা দুটো কচি লাউ। ঠাকুমা বেছে বেছে একটা ছোট্ট লাউ কেটে নিল,
    ও দিদি, লাউ বাত্তি হলে দুধলাউ বানাবো যখন তুমি বার্ষিক পরীক্ষা শেষে আসবে।

    ঠাকুমার কথাতেও আমার ফিরে আসার কাতর অজুহাত।




    রান্নাঘরের উনুনে বসে গেছে তেলের কড়াই। তাতে হবে আলুর ঝুরি ভাজি। আর উঠোনে কাতল মাছ কাটতে বসে গেছে পূর্ণির মা।

    ঠাকুমা আর দেরি করে না। পা চালিয়ে ভেতর বাড়িতে ঢুকেই গিয়ে ওঠে রান্নাঘরে। আর নষ্ট করার মতো সময় নেই। বেলার গায়ে লেগে গেছে আশ্বিনের রোদ। এই রোদ মানেই বেলা গড়িয়ে যাবে হুশ করে।

    কোটা-ধোয়া পাকা কাতল রান্নাঘরে আসতেই তাতে হলুদ আর লবণ মাখিয়ে নিল ঠাকুমা। মাছের কড়াই উঠল উনুনে। তাতে ঝাঁঝালো সর্ষের তেল। তেল তেতে ধোঁয়া উঠতেই কড়াইয়ে পড়ল কাতলের টুকরো। এপিঠ ওপিঠ করে ভেজে নিল ঠাকুমা।

    মা কুচিয়ে দিল ঠাকুমার বাগানের কচি লাউ।

    ওদিকে বড়ঘরে আরেকবার পৌঁছে গেছে চা। মালেক দাদুর অট্টহাসি ভেসে আসছে একটু পরপর। তাঁত মাকুর খটাস খটাস আওয়াজে পুরো পাড়া এখন জমজমাট।

    উনুনের কড়াই থেকে নামল কাতলের ভাজা শেষ টুকরো। কড়াইয়ে পড়ল আরোও খানিক সর্ষের তেল। সেই তেলে অনেকগুলো শুকনোমরিচ কালো করে পুরিয়ে নিল ঠাকুমা। এরপর তেজপাতা আর খানিক রাঁধুনি পড়ল ফোড়নে।

    দেরি না করে তাতে কুচিয়ে রাখা লাউ ঢেলে দিল ঠাকুমা। তাতে লবণ আর হলুদ পড়তেই জল ছেড়ে কড়াই ভরে গেল। কড়াইয়ে ঢাকনা দিয়ে উনুন গনগনে একটা খড়ি টেনে বের করে নিল ঠাকুমা।

    অল্প আঁচে রাঁধতে হয় কাতলের মরিচপোড়া।

    মা স্নান সেরে তৈরি হয়ে গেছে এরমধ্যেই। আমাকেও ডাকছে বারবার তৈরি হওয়ার জন্য। কিন্তু আমার যে ঠাকুমার পাশ থেকে সরতেই ইচ্ছে করে না। আর কতক্ষণই বা দেখতে পাবো ঠাকুমাকে। আমি রান্নাঘরে কড়ইকাঠের পিঁড়িটা এগিয়ে বসি ঠাকুমার কাছে।

    কড়াইয়ের ঢাকনা উঠল। জল মরে সেদ্ধ হয়ে গেছে কুচানো লাউ। এবার তাতে পড়ল ঝোলের জল। সঙ্গে অল্প একটু রাঁধুনি-বাটা।

    অল্প আঁচে রয়েসয়ে ফুটে উঠল ঝোল। রাঁধুনি মেশানো লাউয়ের ঘ্রাণ ধোঁয়ায় ভর করে ঢুকে পড়ছে রান্নাঘরের আনাচকানাচে। ঠাকুমা ভেজে রাখা মাছগুলো ঝোলে ফেলতেই আমার বায়না,
    আমাকে স্নান করিয়ে দেবে তুমি ঠাকুমা?

    রোসো দিদি, ঝোলে পিটুলি দিয়েই কলতলা নিয়ে যাচ্ছি…

    চালের গুঁড়ো জলে মিশিয়ে ঠাকুমা পিটুলি মিশিয়ে দেয় মরিচপোড়া ঝোলে। ঢাকনা দিয়ে উনুনের শেষ খড়িটাও টেনে বের করে নেয় ঠাকুমা। এখন পোড়া খড়ির জমে থাকা কয়লার ঢিমে আঁচে ফুটবে কাতলের মরিচপোড়া।

    বেলার গায়ে আগবেলার ফুরিয়ে যাওয়া রোদ। লালবারান্দায় আজ পাত পড়েছে সবাই। আমার পাত পড়েছে মাঝখানে। একপাশে মালেক দাদু আরেকপাশে আমার দাদু। পাতে ভাতের উপর ঘোষবাড়ি থেকে আনা কড়া জ্বালের ঘি আর ঝুড়ি আলু ভাজি।

    ও গিন্নি, ঘি আর আলুভাজি ভাতের সাথে মাখিয়ে খাও।

    তবে সে সুযোগ আসার আগেই ঠাকুমা আমার ভাত মাখিয়ে একটা গ্রাস মুখের সামনে ধরল,
    দিদি, পেট ভরে খেয়ে নাও, কোন বেলা বাসায় পৌঁছাবে কে জানে…

    আমার মন পুরে ওঠে। আমি চোখ নামিয়ে নিই পাতের দিকে। পাতে মনিপিসি তুলে দিল এক টুকরো মরিচ পোড়া কাতল। কচি লাউয়ের কুচি জড়িয়ে রেখেছে টুকরোকে। আমার নাকে ধাক্কা দেয় রাধুনি আর শুকনো মরিচের ঘ্রাণ।

    উঠোনের রোদে এবার জায়গা করে নিল বাইরবাড়ির দেবদারু গাছের লম্বা ছায়া। উঠোনে মেলে রাখা ধোয়া কাপড়ের গায়ে ঝিরঝিরে বাতাস লেপ্টে যাচ্ছে খানিক পরপর। ডালিম গাছে খয়েরি শালিকগুলো একসঙ্গে কিচিরমিচির করছে নিয়ম মেনে।

    বাইরবাড়ি এসে থামল রিকশা। রাশিয়ে থেকে আসা দেয়াল ঘড়িটা ঢং ঢং করে জানাচ্ছে দিন এখন পড়ল বারবেলায়।

    ঠাকুমার হাতে ধরা শেষ ভাতের গ্রাস কেমন আবছা হয়ে গেল আমার কাছে।


    ক্রমশ...

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • খ্যাঁটন | ১১ মে ২০২৩ | ৯৫৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দীপঙ্কর দাশগুপ্ত | 2405:201:8008:c017:7d3b:fa6:8e4b:9089 | ১১ মে ২০২৩ ০৯:৫৫519654
  • অপূর্ব! এই মেদুরতা অনন্য।   
  • kk | 2601:14a:502:e060:4ab1:4486:eccb:c0ac | ১১ মে ২০২৩ ১৯:০১519667
  • দীপঙ্কর বাবুর সাথে পুরোপুরি একমত। এই লেখার জন্য অপেক্ষা করে থাকি।
  • | ১১ মে ২০২৩ ১৯:৫৩519672
  • অপূর্ব 
  • শক্তি দত্ত রায় | ১২ মে ২০২৩ ০৭:২৫519708
  • মন অদেখা রসুইঘরের মায়ায় জড়িয়ে গেল। স্মৃতিমেদুর
  • R.K | 120.20.43.243 | ১৩ মে ২০২৩ ১১:১৪519740
  • অসাধারণ আপনার বর্ননা ,ছবির মতো। 
  • Reeta Bandyopadhyay | ২৭ মে ২০২৩ ১৮:৪৮520070
  • কি তীব্র আবেগ জড়িয়ে আছে প্রতিটি অক্ষরে, মনকে আচ্ছন্ন করে রাখে বহুক্ষণ ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় প্রতিক্রিয়া দিন