এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  ভ্রমণ

  • আফ্রিকা

    যোষিতা লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | ০৫ অক্টোবর ২০২২ | ২৫৬০ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • ইদানীং মরক্কো বেড়িয়ে ফিরলাম, সেই নিয়ে লিখব।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • যোষিতা | ০৫ অক্টোবর ২০২২ ০২:৩৬738540
  • এই প্রথম আফ্রিকা যাওয়া নয়। এর আগেও গেছি। এবং যতবার যাচ্ছি, ততবার এই মহাদেশ সম্পর্কে পুঁথিগত ধারণা আমূল বদলে যাচ্ছে। টিভিতে দেখে, খবরে, সিনেমায় যে রকম ছবিটা তৈরি হয়, আফ্রিকায় আমার দেখা দেশগুলো একদম সেরকম নয়, শুধু একটা জিনিস বাদ দিয়ে। সেটা হচ্ছে রং। এই রং জিনিসটা যে কী সেটা গুছিয়ে বা বুঝিয়ে বলতে পারব না। 
    মানে, ধরো তুমি যদি আমাকে চোখে রুমাল বেঁধে কিচ্ছুটি না জানিয়ে আফ্রিকার কোনও দেশে টুপ করে ফেলে দিয়ে চোখ থেকে রুমাল খুলে নাও, আমি ঠিক ধরে ফেলব শুধু রং দেখে। একজন মানুষও থাকবে না, তবু ধরে ফেলব।
    প্রথমবারে যখন সাউফআফ্রিকা গেলাম, আগে থেকে একটা ছবি তৈরি ছিল মনে। এমনিতে তো লোকে ভয় টয় দেখায়, সেসব নয়, যে ধারণাটা নিয়ে গেছলাম, সেটা প্রায় কিছুই মিলল না, রংটুকু ছাড়া। 
    এই কদিন আগে বেড়িয়ে এলাম এক্কেবারে উত্তর আফ্রিকার মরক্কো থেকে। কোনওদিনও স্বপ্নেও ভাবিনি যে ওদেশে বেড়াতে যাব। মরক্কো কোনওকালে আমার বেড়ানোর লিস্টে ছিল না। কিন্তু দুসপ্তাহেরো কম ছুটি থাকলে কী আর করা, বেশিদূরে যাওয়া যায় না। টিকিটও সস্তায় পেলাম, প্রায় কয়েক ঘন্টার প্ল্যানে ঝপ করে মরক্কো। 
    বলতে লজ্জা করছে, এতকাল ধরে জানতাম ওদের রাজধানী কাসাব্লাঙ্কা। কাসাব্লাঙ্কা নামের একটা বিখ্যাত সিনেমা আছে। সেটা দেখবার পর একটা ধারণা হয়েছিল দেশটা সম্পর্কে যা আসলে ভুল। 
    ছাত্রাবস্থায় বেশ কয়েকজন মরোক্কান এর সংস্পর্শে এসেছি। তাদের সঙ্গে আলাপ হলেই চালবাজি করে, ওহ  তুমি মরক্কো থেকে? সেই বিখ্যাত কাসাব্লাঙ্কা সিনেমা দেখেছি, দারুণ দারুণ ... এইরকম বলতাম।
    তিন বছরের সিনিয়র একজন মরোক্কান অবশ্য আমাকে সিরিয়াসলি বলেছিল যে, সিনেমার কাসাব্লাঙ্কা আসল কাসাব্লাঙ্কা নয়। ওটা ফালতু, ভুল। 
    সেই মরোক্কান ছেলেটির নাম ছিল এল দ্রিস। যে এক ফাঁকে আমাকে নিয়ে প্যারিসে পালিয়ে যাবার প্রস্তাব দেয়। আমি সে প্রস্তাব তক্ষুনি দৃঢ়তার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করি। 
    দুজন মরোক্কান ছেলে আমাদের ক্লাসেই পড়ত। সয়িদ এবং ইব্রাহিম। এরা ছিল মানিকজোড় এবং প্রচণ্ড ধাপ্পাবাজ। সয়িদের সঙ্গে আমার একবার প্রায় মারামারি হবার উপক্রম হয়েছিল, কেন জানি না ও আমাকে "শয়তান" বলেছিল। তারপর আমাদের হোস্টেলে থাকত দুই বোন মরক্কোর, ওদেরও এড়িয়ে চলতাম। 
    দুএকজন প্রবাসীকে দেখে সম্ভবত একটা দেশ সম্পর্কে ধারণা করে নেওয়াটা বোকামি। অল্প বয়সে আমরা বড্ড জাজমেন্টাল থাকি। 
    টিকিট কাটতে গিয়ে জানলাম রাজধানীর নাম রাবাট। তারপর আরেকটু খোঁজ নেওয়া হল দেশের ম্যাপটা কম্পিউটারের স্ক্রীনে জুম করে। বাহ, সমুদ্র আছে, আবার মরুভূমিও! যাওয়া যাক। রাবাটে যাতায়াতের টিকিট কেনা হয়ে গেল। তারপর ভাবতে বসলাম আর কী কী দেখা যায়। গাইড এবং মিউজিয়াম আমার ঘোর অপছন্দের ব্যাপার। আর কোথাও যদি যেতে না পারি তাহলে ঐ রাবাটেই রোজ সমুদ্রে চান করব আর খাব দাব ঘুমোব।
     
  • যোষিতা | ০৫ অক্টোবর ২০২২ ০৪:০৬738541
  • মূল কাহিনিতে ঢোকার আগে জানিয়ে দিই, যে কোভিডের ঝঞ্ঝাট শুরু হবার ঠিক আগে বেড়িয়ে এসেছিলাম সুদূর উজবেকিস্তান থেকে। প্রায় হপ্তা তিনেকের সেই ভ্রমণ এত বেশি সুখকর এবং ঘটনাবহুল ছিল, যে সেই স্মৃতি সহজে মুছবার নয়। তারও কিছু আগে দিন দশেকের জন্য সাইপ্রাসে ঘুরে এসেছিলাম। বলা বাহুল্য দুটো সাইপ্রাসের মধ্যে টার্কি অধিকৃত সাইপ্রাস ভালো লেগেছিল বেশি। তারপর দু বছরেরও বেশি সময় ইয়োরোপের বাইরে বেড়াতে যাওয়া হয় নি। কোলকাতা যেতে হয়েছিল একটা কাজের জন্য, বেড়ানো হয় নি। তখনই টের পেয়েছিলাম টিকিটের দাম প্রচণ্ড বেড়ে গিয়েছে এবং কোভিডকালে এয়ারপোর্টে যারা কাজ করতেন তাঁদের অনেকেরই চাকরি চলে যাওয়ায় পরবর্তীতে এয়ারপোর্ট স্টাফের সংখ্যা কম। যাদের চাকরি চলে গেছল, তারা অন্য চাকরিতে বহাল হয়েছে, তারা আর এই পরিশ্রমের কাজে স্বল্প বেতনে ফিরতে আর চায় না। ফলত নতুন কর্মচারী বহাল করতে হয়েছে, এদিকে মানুষজন হুড়মুড়িয়ে মুক্তির আনন্দে বেরিয়ে পড়তে চায়, ইস্কুলের ছুটির সীজন হলে তাই ভিড় বেশি, কর্মচারীরা অনেকেই অনভিজ্ঞ , তা এই সমস্ত মিলে ইয়োরোপের এয়ারপোর্টগুলোয় বড্ড বেশি সময় লাগে লাইনে দাঁড়াতে। এখন অবশ্য ইস্কুল কলেজ খুলে গেছে, ইস্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে বাবামায়েদের ভিড়টা নেই, তবুও প্রচুর ভিড়।
    রাবাটে যাবার সরাসরি ফ্লাইট নেই, প্যারিস হয়ে যেতে হবে। শার্ল দ গল এয়ারপোর্ট। জীবনে প্রথম। নাম শুনেছি বহুবার কিন্তু এইবার প্রথম যাব।
    আমাদের চেকইন ব্যাগেজ থাকছে না, পিঠব্যাগেই সব এঁটে যাবে এবং হালকা পিঠব্যাগ থাকলে বেড়ানোর সময় লাগেজ নিয়ে হ্যাঁচোড় প্যাঁচোড়ের ঝক্কি থাকে না।
    জুরিখ এয়ারপোর্টে গিয়ে জানা গেল এয়ারফ্রঁসের ফ্লাইট ডিলেয়েড। এতটাই ডিলে করছে যে প্যারিসে ল্যান্ড করবার পরে অন্য ফ্লাইট ধরবার জন্য মিনিট পনেরো সময়ও পাওয়া যাবে না। এদিকে ফিরবার সময়ে সাড়ে ছঘন্টা প্যারিসে অপেক্ষা করতে হবে।
    শার্ল দ গলে এক বন্ধু থাকে, তাকে জানাতে সে লাফিয়ে উঠল, আমরা চাইলেই ঐ সময়টা বাইরে ঘুরে আসতে পারি। সে নাহয় ফেরার টাইমে, এখন যাবার সময়েই তো এয়ারবাস ধরতে পারবো বলে মনে হচ্ছে না। 
    যাইহোক প্যারিসে ল্যান্ড করতেই সবাই হুড়মুড় করে বের হতে লাগল। সবারই নানানরকম কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার আছে। সে কী ধাক্কাধাক্কি! তারপর উর্ধশ্বাসে দৌড় নিজ নিজ টার্মিনাল অভিমুখে। প্রায় মুখ থুবড়ে পড়ে যাবার টাইমে দেখি ইমিগ্রেশন কাউন্টার। সেখানে ভিড় নেই যদিও। তারপর দৌড়ে ফ্লাইটে ঢুকতেই দরজা বন্ধ হলো। সন্ধে অনেকক্ষণ হলো নেমে গেছে। আমরা উড়ে চললাম রাবাটের দিকে। ওদের সঙ্গে আমাদের এক ঘন্টা সময়ের পার্থক্য। প্রায় মধ্যরাতে ল্যান্ড করলাম। এখন আর তাড়া নেই। ধীরে সুস্থে ইমিগ্রেশনের লম্বা লাইন পেরিয়ে বেরোনোর পথে বড়ো হলঘরটায় একটু জিরিয়ে নেবার পালা। টাকা ভাঙাতে হবে, ট্যাক্সি নিতে হবে। এদেশের টাকার নাম দিরহাম। মোটামুটি এক ইউরো দশ দিরহাম। ট্যাক্সিতে রাবাট সালে এয়ারপোর্ট থেকে রাবাট শহরে যাবার সময়ে বুঝলাম মরক্কো সম্পর্কে আমার পূর্বনির্ধারিত ধারণাগুলো ভুল। এমনকি বিভিন্ন ব্লগে যা যা পড়েছি, তা একপেশে জাজমেন্টাল মন্তব্য। রাতের রাস্তায় হুহু করে চলেছে ট্যাক্সি। মাখনের মত মসৃণ রাস্তা। এ পাশে তিন সারি ও পাশে তিন সারি গাড়ি যেতে পারে। ইয়োরোপকে টক্কর দেবার মত রাস্তা বানিয়েছে। আর বানাবে না ই বা কেন? টুরিজম এখানে একটা বড়ো ইন্ডাস্ট্রি। মধ্যরাতেও ঝলমল করছে রাবাটের থিয়েটার হাউস, আধুনিক অথচ অপরূপ তার ভাস্কর্য, আরও কী একটা টাওয়ার যেন। মাত্র দুশো দিরহাম ভাড়া। হোটেলের দরজায় এসে পৌঁছই। শুনেছিলাম বেশ গরম হবার কথা, সে তুলনায় গরম কম লাগছে। বেড়ানোর ব্যবস্থা কিছু কিছু করে ফেলা হয়েছে বেরোনোর আগেই, বিশেষ করে ট্রেনের টিকিটগুলো কাটা আছে। তবে এত শীঘ্র নয়। দিন তিনেক রাবাটে কাটানোর পর আমরা ক্রমশ এগোতে থাকব পূবের দিকে, সাহারার দিকে।
  • একক | ০৫ অক্টোবর ২০২২ ০৪:৫৮738542
  • পড়ছি.. 
  • যোষিতা | ০৫ অক্টোবর ২০২২ ১২:৩৯738543
  • রাত্তিরে এসি চালিয়ে শুয়ে পড়লেও ভোরের দিকে নিজেদের আবিষ্কার করলাম কম্বলের ভেতরে কুণ্ডলী হয়ে থাকা অবস্থায়। ব্রেকফাস্টের জন্য নীচে আছে রেস্টুরেন্ট যার একাংশ রাস্তার পাশে ফুটপাথে। এমন জায়গায় বসে অ্যারাবিকা কফি সহযোগে মৌতাত করার লেভেলই আলাদা। কাছেই ইস্কুল। বাচ্চা থেকে টিনেজার সবরকমের ছেলে মেয়ে ইস্কুল যাচ্ছে। ইউনিফর্মের ব্যাপার নেই, যার যেমন খুশি ফ্যাশন। ফ্যাশনেবল সেল্ফ কনশাস ত্রয়োদশীর সঙ্গে গল্পে মশগুল হয়ে চলেছে ঢাকাঢুকি পোশাকে মাথায় রুমাল বাঁধা তারই ক্লাসমেট। ছোট বাচ্চারা মায়ের হাত ধরে  লাফাতে লাফাতে চলেছে। মহিলারা অনেকেই যাচ্ছে অফিস কাছারি দোকানে ব্যবসায়ে। কারোর হাতে অতিরিক্ত সময় নেই। সব দেশের রাজধানীর মত রাজা দ্বিতীয় মহম্মদের রাজত্বেও ব্যস্ততা। 
    চৌকো ছোটো পরোটা এবং নোনা অলিভ নিয়েছিলাম ব্রেকফাস্টে। নোনা অলিভ অতিশয় নোনা। পরোটা চিকেন সসেজ দিয়ে খেয়ে, আরও এক কাপ করে কফির আবদার করা হলো। 
    এখানে বসে থাকলে উঠতে ইচ্ছে করে না। এটা ছসাত মাথার মোড়। ওপাশে ট্রাম যাচ্ছে। উঠতে হবে। আসার পথে বিমানে পাশে বসা এক যুবক বলেছিল রাবাটে ট্রামে না উঠতে, ট্রাম নাকি ভালে না।  
    টিকিটের সিস্টেমটুকু জেনে নিয়ে আজই উঠব ট্রামে। ট্যাক্সের সঙ্গে তুলনা করলে অনুপাতে ট্রামে খরব বেশি, তবে লম্বা দূরত্ব গেলে ট্রামই ভালো। মোট দুটোই রুট। আমরা আশে পাশে একটু ঘুরে ব্যাংকে টাকা ভাঙিয়ে চড়ে বসলাম ট্রামে।
    ঝকঝকে ট্রাম। জুরিখের ট্রামকে গোল খাইয়ে দেবে।
     
     
     
  • পাঠক | 2401:4900:1f29:9122:cc87:263f:8dcc:7575 | ০৫ অক্টোবর ২০২২ ১৭:০৭738545
  • আপনার উজবেকিস্তান ঘোরার ভ্রমণ কাহিনী কি এখানে কোথাও আছে
  • যোষিতা | ০৫ অক্টোবর ২০২২ ১৭:৩৭738546
  • না। পরে লিখে দেব।
  • যোষিতা | ০৬ অক্টোবর ২০২২ ০১:০৪738547
  • বাইরে যতই চড়চড়ে রোদ থাকুক না কেন, ট্রামের মধ্যে এয়ার কন্ডিশনিং চলছে, শহরের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্ত চমৎকার দেখে ফেললাম। 
    মাঝেমধ্যেই  রাজা দ্বিতীয় হাসানের নামাঙ্কিত উদ্যান, বিভিন্ন জায়গার নামও ঐ দ্বিতীয় হাসানের নামে। নিশ্চয় নামকরা কেও ছিলেন এই হাসানরাজা।
    শান্ত শহর রাবাট। পাঁচবার নামাজের টাইমে আজান শোনা যায় বটে তবে জোরে মাইক বাজিয়ে নয়।
    ট্রামযাত্রা শেষ হবার পরে ঢুকে গেছি ওল্ড সিটিতে।
    মেদিনা রাবাট। এখানেও মেদিনা? মক্কার সঙ্গে মেদিনা বরাবর প্রায় একই সঙ্গে উচ্চারিত হতে শুনেছি। তাহলে এখানে মেদিনা কেন? আরবিভাষায় মেদিনা অর্থ শহর। ফরাসীতে লেখা রয়েছে রাবা ভিল (Rabat ville).
    এখানে শহর মানেই মেদিনা। অল্প স্বল্প ফরাসী জানা থাকলে শুনতে দেখতে পড়তে বুঝতে অসুবিধে হবার কথাই নয়। ইংরিজি জানা মানুষ যদিও খুবই কম। পাঁচিলে ঘেরা পুরোন মেদিনা আমাদের হোটেল থেকে তিন মিনিটের হাঁটা পথ। অনেকগুলো দরজা সেই পুরোন শহরে ঢুকবার জন্য, সে শহর শেষ হয়েছে অ্যাটলান্টিকের ধারে গিয়ে, প্রায় শখানেক ফুট নীচে অ্যাটলান্টিক। পাঁচিলে ঘেরা পুরোন মেদিনার মধ্যে ঢুকবার জন্য অনেক দরজা। ভেতরে রয়েছে মেয়েদের কলেজ। মসজিদ অন্যপাশে, প্রচুর দোকান বাজার। গালচে থেকে টুপি, রূপোর গয়না, বাসন, চামড়ার জিনিস, পোশাক, মশলা, বাদাম, খেজুর, কী নেই? আর রয়েছে খোলা উঠোন ঘিরে খাবারের দোকান। মাংসের খাবার চোখে পড়ল না, শুধু মাছ মাছ আর মাছ। মাছ ভাজা হচ্ছে, লোকে খাচ্ছেও বটে। ওসব মাছের নাম জানিনা, কোনওটা খেতে মন্দ নয়, কোনওটার স্বাদ আমার জিভে ভাল লাগে না। আর রয়েছে ফলের রস এবং দই বিক্রির ঘটা। কাঁচা মাছও বিকোচ্ছে। 
    আরবদের মধ্যেই শুধু নয়, মুসলমান অধ্যুষিত দেশগুলোয় বাজারগুলো হয় প্রকান্ড। মনে পড়ছিল ইসতানবুল শহরের সেই প্রকাণ্ড গ্র্যান্ড বাজার — মাহমুৎ পাশা। যে স্বচক্ষে দেখেনি সেই বাজার, তাকে বর্ণনা করে বোঝানো আমার সাধ্য নয়। উজবেকিস্তানেও বাজার দেখেছি। শুধু কাঁচাবাজারটুকু দেখেই মাথা ঘুরে যেতে পারে টুরিস্টদের। 
     
    নীচের ছবিতে মসজিদের বিপরীতের কলেজ থেকে তরুণী ছাত্রীরা অ্যাপ্রন পরা অবস্থাতেই বের হয়ে এসেছে। দূর থেকে একদল তরুণ শিস দিলে, তরুণীরাও মুখে আঙুল ঢুকিয়ে শিস দিল। কেও কম যায় না। মেয়েরা প্রচণ্ড স্মার্ট।
     
    মাছ ভাজা পরিবেশন করে দিয়ে গেলেন দোকানি, তিন রকমের মাছ। অত মাছ কেমন করে খাব?
  • kk | 2601:448:c400:9fe0:2107:955d:4c73:bd0a | ০৬ অক্টোবর ২০২২ ০১:১৯738548
  • কাছ থেকে তোলা খাবারের ছবি নেই?
  • kk | 2601:448:c400:9fe0:2107:955d:4c73:bd0a | ০৬ অক্টোবর ২০২২ ০২:০৬738552
  • বাঃ। মরোক্কান খাবার আমি মাঝেমাঝে বানাই এটাসেটা। কিন্তু অত অথেন্টিক কি আর হবে?
  • যোষিতা | ০৬ অক্টোবর ২০২২ ০২:২৭738553
  • পরে সবিস্তারে বিবরণ আসিবেক
  • | ০৬ অক্টোবর ২০২২ ২০:১৪738555
  • তারপর?
  • যোষিতা | ০৭ অক্টোবর ২০২২ ০১:৪৫738556
  • হঠাৎ করে কেমন মায়া পড়ে যায় না এক একজন মানুষের ওপর? বিভিন্ন মাছভাজা খেতে খেতে হাঁফিয়ে ঘেমে গেছি, আর তেমনি পেয়েছে তেষ্টা। অর্ধেকের ওপর মাছ পড়ে রইল আমাদের। দাম চুকিয়ে বের হতেই পাশে দেখি একটা দোকান। সেখানে জুস বানানোর মেশিন পড়ে রয়েছে, ঝুড়ি ভর্তি কমলা রঙের মৌসাম্বি লেবু, দোকানদার দোকানের ভেতরের দিকটায় আরও নানান পণ্যসামগ্রীর পেছনে খুটখুট করে কী যেন করছে।
    -আসসালামুআলেইকুম্!
    -ওয়ালেকুম্ আস্সালাম!
    -দো জু সিলভু প্লে
     
    বৃদ্ধ দোকানি ফল কেটে জুসার চালিয়ে দু গেলাস জুস দিয়ে আমাদের বসতে অনুরোধ করলেন। 
    চমৎকার মিষ্টি এই পানীয়। আমরা আরও দু গেলাস খেলাম। 
    সেই শুরু। রাবাটে যে কদিন থেকেছি, পুরোন মেদিনায় গেলেই বুড়োর দোকানে গিয়ে ফলের রস খাওয়া হতে লাগল। লোকটা আমাদের চিনে গেছে। দোকানের সামনে গেলেই বুঝে ফেলে যে এরা ফের এসেছে জুস খাবে আর জিরোবে।
     
    সমুদ্র দেখলেই চান করবার জন্য আঁকুপাকু করে মন। মেদিনার শেষ প্রান্তে সমুদ্র থাকলে কী হবে, বীচ অনেক নীচে। উঁচু থেকে দিব্যি দেখা যাচ্ছে প্রায় ফাঁকা সমুদ্র সৈকত। হলুদ বালি। ইতিউতি ছাতা, চেয়ার। কিছু বিদেশী বিদেশিনী সূর্যস্নান করছে। 
    হোটেল থেকে সেদিন সুইমসুট পরেই বের হয়েছে, তার ওপর আমার একমেবাদ্বিতীয়ম্ আলখাল্লাটি। নাইতে নামার আগে আলখাল্লাটি টুপ করে খুলে ফেল্লেই হবে। কিন্তু বীচে যাবার পথ আর খুঁজেই পাই না। রাশ্তা কেবলই উঁচুর দিকে চলতে থাকে। সমুদ্র তো নীচে! 
    টুরিস্ট বুঝে উটকো গাইড এসে বিপথে নিয়ে যাবার চেষ্টা করল। টেনশনে সিগারেট ধ্বংস হলেও আমি নাছোড়। জলের কাছে এসে জল ছুঁতে পারব না এমন অভাগিনী আমি? বিকেল তিনটে থেকে সাড়ে তিনটে প্রবল চেষ্টা চরিত্র করার পর খুঁজে পাওয়া গেছে পথ। 
    পাহাড়ি পথ অনেক ঘুরে ঘুরে নেমে গেছে বালুকাবেলার দিকে। শর্টকাট করা যায়, কিন্তু সেখানে বিশাল কবরখানা। কবর ডিঙিয়ে ডিঙিয়ে সমুদ্রে যাবার প্রবৃত্তি নেই। ঘুরপথে সমুদ্র সৈকতে পৌঁছতেই ছাতা চেয়ার নিয়ে ছুটে এসে পড়ল স্থানীয় লোক। ওটাই ওদের ব্যবসা। পরোয়া নেই। তবে আমি তো এখন বসতে আসি নি। জামা জুতো খুলেই দৌড় জলের দিকে। সাঁতার জানি না তো কী হয়েছে? সমুদ্রের পাশে এসে তাকে স্পর্শ না করা ঘোর পাপ। 
    সার্ফিং করছে একদল যুবক। আমি পাগলের মত এগিয়ে যেতে লাগলাম জলের ভেতরের দিকে, একটার পর একটা ব্রেকার পার হয়ে হয়ে। পেছন ফিরে দেখছি উদভ্রান্ত একটা লোক ভয়েই মোলো। হাত নেড়ে নেড়ে ডাকছে, ফিরে আসতে বলছে। আমিও হাতের ইশারায় বলছি জলে এসো। পাকা সাঁতারু, উঁচু থেকে ডাইভ মারতে জানা পাবলিক তাও জলের ভেতরে বেশি আসতে চায় না। 
    সে বনে গেল ক্যামেরাম্যান! কোনও মানে হয়?
     
     
  • kk | 2601:448:c400:9fe0:5519:6204:4a88:2e6c | ২১ অক্টোবর ২০২২ ০৬:০৩738635
  • এই গল্পটা আর এগোবে না?
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ২১ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৩৬738636
  • কি, সে-দি? ব‍্যাপারটা কি? আর কত দিন আমরা বালুকাবেলায় বসে থাকব? 
  • যোষিতা | ২১ অক্টোবর ২০২২ ১৭:১৫738637
  • চাপে আছি। প্রোচকোণ্ডো কাজ। হাগবার টাইম পাচ্ছি না। লিখব লিখব।
  • Kishore Ghosal | ২৪ অক্টোবর ২০২২ ২০:২৫738655
  • হুম। ৭ থেকে ২১ - ১৪ দিন জলেই রয়ে গেলাম, ডাঙায় উঠবো কবে? 
  • | ০৫ নভেম্বর ২০২২ ১৮:৩৫738787
  • এইটা আর  লিখবেন না? 
  • যোষিতা | ০৬ নভেম্বর ২০২২ ০৩:১১738792
  • কাল রোববার। কাল লিখব মাক্কালী। ভুলেই গেছলাম।
  • যোষিতা | ০৬ নভেম্বর ২০২২ ০৬:০৭738793
  • এরপর এলো সেই দিন যেদিন আমাদের ট্রেনে করে মার্রাকেশ যাবার পালা। দুপুর বারোটার একটু পরেই ট্রেন ছাড়বে মেদিনা রাবাট স্টেশন থেকে। হোটেল থেকে হাঁটা পথ মিনিট পনেরোর, কিন্তু পিঠে ব্যাগ নিয়ে ঐ প্রখর রোদে অতটা হাঁটা অর্থহীন, তাই হোটেলের নীচ থেকে নিলাম নীল ট্যাক্সি। 
    নীল ট্যাক্সির রং রয়্যাল ব্লু, এগুলো রাবাট শহরের ভেতরে চলাচল করে, আর আছে সাদা ট্যাক্সি যেগুলো যায় রাবাটের বাইরে, যেমনটা চেপে এয়ারপোর্ট থেকে এসেছিলাম। ভাড়া নামমাত্র, বকশিস পেয়ে ট্যাক্সিচালক অনেকবার শুক্রান বলে ফেলল। মরক্কোর আরাবিক ভাষায় শুক্রান মানে ধন্যবাদ।
    বাপ্রে! কী চমৎকার স্টেশন বানিয়েছে এরা, ছোটোখাটো কিন্তু আন্ডারগ্রাউন্ড, আর তেমনি ঝকঝকে চকচকে। এখানে সর্বত্র মার্বেলের ব্যবহার, স্টেশনের মেঝেও মার্বেলের। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ছটা স্টেশনের সবখানে। রেলের ট্র্যাক মোট তিনটি, এবং বিনা টিকিটে  নীচে যাওয়ার নিয়ম নেই। টিকিট চেক করে করে যেতে দিচ্ছে নীচে। মোট দুটি প্ল্যাটফর্ম চালু রয়েছে, একদিকে ট্রেন যাবে মার্রাকেশ অভিমুখে অন্যটায় ফেজ অভিমুখে॥ ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে ট্রেন এলো, আমরা উঠলাম, ট্রেন ছাড়ল। পুরোটাই এয়ার কন্ডিশন্ড। আমাদের সেকেন ক্লাসের টিকিট।
  • যোষিতা | ০৬ নভেম্বর ২০২২ ০৬:৩২738794
  • দুটো কথা বলে নিই। কোথাও বেড়াতে গেলে যেহেতু দেশ দেখার চেয়েও মানুষের সঙ্গে আলাপ পরিচয় করাটা আমার বেশি পছন্দের তাই ফার্স্ট ক্লাসের চেয়ে সেকেন ক্লাস বা যেসব ক্ষেত্রে সম্ভব সেখানে থার্ড ক্লাসের ট্রেনের টিকিট আমার সবচেয়ে পছন্দের। সঙ্গদোষে আমার জীবনসঙ্গীটিও এই নেশার কবলে পড়ে গেছে। তেমনি বেশি বেশি তারাখচিত হোটেলও আমাদের ভালো লাগে না। রাবাটের হোটেলে কটা তারা ছিল, বা আদৌ ছিল কিনা জানি না, তবে আদর আপ্যায়ন পেয়েছিলাম রাজকীয় এবং আন্তরিক। 
    মনে পড়ল, ঘরে সিন্দুকটা কাজ করছিল না, ফলে সমুদ্রে  যাবার আগে কাগজপত্র কেমন করে সুরক্ষিত রেখে যাব তা নিয়ে চিন্তা হচ্ছিল। রিসেপশনের ম্যানেজারটি নিরুণ তৎপরতায় মিস্তিরি ডেকে সব সারিয়ে দিল তো বটেই, আমাদের এই হেনস্থার ক্ষতিপূরণ করতে আরেক কাণ্ড করে বসল। সমুদ্র থেকে ফিরে এসে দেখি ঘরে প্রকাণ্ড থালায় হরেক রকমের ফল দিয়ে গেছে।
    যাকগে এসব কথা, ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে, ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস। কখনো সখনো থামছে কোনও কোনও স্টেশনে। আমাদের কামরায় আমরা আটজন। আমার মুখোমুখি এক বৃদ্ধ, তার হাতে অনেক কাগজ, হাসপাতালের রিপোর্ট, প্রেসক্রিপশন। কামরার একটি মেয়েকে সে পড়তে বলছে কী লেখা আছে ঐ কাগজে। অচেনা মেয়েটি তাকে পড়ে পড়ে বুঝিয়ে দিচ্ছে সব কতকটা আরাবিকে, কতকটা বারবেরিান ভাষায়, আবার ফরাসী শব্দও আছে। বৃদ্ধ সম্ভবত রাজধানীর ভালো হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফিরছেন। 
    এখানে বেড়াতে আসার আগে অনেক কিছু ব্লগে দেখেছিলাম যে মরক্কোয় অনেক বাধা নিষেধ, এই করতে নেই সেই করতে নেই। কিচ্ছু মিল পাচ্ছি না। আমরা মহানন্দে চলেছি সমুদ্র থেকে ক্রমশ দূরে, বাইরেটা পাল্টাচ্ছে, প্রকৃতি আরও রুক্ষ হচ্ছে আর একটা রং বড্ডো বেশি বাড়ছে, লাল। রাবাট ছিল নীল। বিকেল সাড়ে তিনটেয় অন্তিম স্টেশন মার্রাকেশে এসে উপস্থিত হলো ট্রেন। এখানে সব কিছু লাল। সব বাড়ি লাল। আমার সঙ্গীটি মুরুব্বির মতো বলল, এখানে লাল ট্যাক্সি।
    — কী করে জানলে?
    — ইন্টারনেটে পড়েছি।
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ০৬ নভেম্বর ২০২২ ০৬:৫৬738795
  • কি মজা, লিখলে তুমি! খুব ভালো লাগছে পড়তে। পরের কিস্তির অপেক্ষায় থাকলাম।
  • যোষিতা | ০৬ নভেম্বর ২০২২ ০৭:৩৮738796
  • দুপুরের খাবার ট্রেনে কিছু খেয়েছি, কোঁচড়ে করে স্যান্ডুইচ ফলমূল কিছু নিয়ে বেরিয়েছিলাম। এই স্টেশন টেক্কা দেয় রাবাটকে। প্রচুর দোকানপাট, রেস্টুরেন্ট। একটা কেএফসি অপেক্ষাকৃত ফাঁকা, সেখানেই কফি এবং চিংড়িভাজা খেয়ে বাইরে বেরিয়ে পা পিছলে যাবার জোগাড়। এমন চকচকে করে সব মার্বেলের মেঝে বাঁধিয়ে রেখেছে, আর তেমনি সর্বক্ষণ মুছে যাচ্ছে যে কী বলব! সিগারেট খেতেও লজ্জা করে, পাছে ছাই পড়ে সেই বিশাল চত্বরটা ময়লা হয়ে যায়। কিন্তু লাল ট্যাক্সি কোথায়? যেদিকে দুচোখ যায় সব রঙের গাড়ি চলছে, লাল গাড়ি একটাও নেই। একপাশে গোটা পঞ্চাশ সাদা ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে আছে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে। ড্রাইভারেরা গুলতানি করছে আর আড়চোখে আমাদের দুজনকে দেখছে, কীসব বলছে নিজেদের মধ্যে। ওদের মধ্যেই একজন এগিয়ে এলো আমাদের দিকে। 
    — কোথায় যাবেন?
    — পুরোন শহর, রাস্তার নাম রামিলা।
    — চলুন চলুন, ঐ তো গাড়ি
    — ভাড়া কত নেবেন?
    কথাবারতা আমিই চালাচ্ছি যেহেতু আমার ফরাসী জ্ঞানটুকুই সম্বল।
    — দুশো দিরহাম
    — ক্কীইইই? দুশো! 
    জীবনসঙ্গী পাশ থেকে আমাকে উসকে দেয়, লাল ট্যাক্সি কোথায় পাওয়া যাবে জিজ্ঞেস করো না!
    — লাল ট্যাক্সি কোথায়?
    ওরা নিপাট ভালোমানুষের মত মুখ করে আমাদের দিকে তাকায়, যেন জীবনে প্রথম এরকম অদ্ভূত কথা শুনছে।
    কিছুক্ষণ কথা চালাচালির পর বুঝলাম এদের সঙ্গে পেরে উঠব না। শেষে একশোয় রফা হয়। তারপর ট্যাক্সি চালক আমাদের সোজা বেশ কিছুটা নিয়ে যায়, তারপর নব্বই ডিগ্রি বাঁদিকে ঘুরে কিছুটা, তারপর আবার নব্বই ডিগ্রি বাঁদিকে চলতে শুরু করলে আমি হাঁ হাঁ করে তাকে দুকথা শুনিয়ে দিই, এত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে এটুকু পথ নিয়ে যাবার মানে কী?
    যাই হোক পুরোন শহরের রামিল্লায় পৌঁছে গন্তব্যের কাছাকাছি এলে আমরা নেমে যাই। 
    এটা হোটেলও বটে বাড়িও বটে, গোটা তিনতলাটা ছাদসহ বুকিং করেছি। এদের ম্যানেজার করিমের সঙ্গে হোয়াটস্যাপে কথাও বলেছিলাম। দরজায় কড়া নাড়তেই দরজা খুলে দিলেন করিম। অমায়িক ভদ্রলোক। 
    বাড়ির উঠোনে চেয়ার টেবিল পাতা, সেখানে একটু জিরিয়ে তারপর উঠব ওপরে, এ বাড়িতে লিফট নেই।
    — করিম, তোমার সঙ্গে ফোনে আলোচনা করে আমাদের মেরজুগা ট্রিপ ক্যানসেল করে দিয়েছি মনে আছে তো?
    — বিলক্ষণ। ওরা অনেক বেশি দাম নিচ্ছিল, আমি এক তৃতীয়াংশ কম দামে ব্যবস্থা করে দেব।
    — তিন দিনের ট্রিপ তো?
    — অবশ্যই
    — সাহারা মরুভূমির মধ্যে তাঁবুতে থাকার ব্যবস্থা?
    — থাকবে থাকবে
    — আর কীসব যেন, হ্যাঁ হ্যাঁ সেই যেখানে সিনেমার শুটিং হয়
    — সব থাকবে, চিন্তা নেই
    আমরা তিনতলায় চলে যাই। করিম ঘর দেখায়, ছাদ দেখায়।
    —করিম আমরা একটু পরে বাইরে বের হবো। কোথায় যাব বলো তো রাতের খাবার খেতে?
    করিম কাগজ এনে এঁকে এঁকে বুঝিয়ে দেয় এই মেদিনা মার্রাকেশের রাস্তা ঘাট।
    — আর যদি হারিয়ে যাই আমরা?
    — হারিয়ে গেলে ভয় নেই, এল কুতুবিয়া যে মিনারটা আছে ওর কাছেই এই রামিল্লা।
    — রাতের বেলায় নিরাপদ তো?
    করিম হেসে ফেলে। 
    — রাত একটা অবধি গমগম করে এই মেদিনা। 
    করিম চলে যাচ্ছিল, আবার ডাকি।
    করিম ব্যাংক কখন খুলবে কাল? টাকা ভাঙাবো।
    — ব্যাংকে কেন টাকা ভাঙাবে? ব্যাংক অনেক কমিশন নিয়ে নেবে। এল কুতুবিয়ার কাছেই আছে আলি হোটেল, চব্বিশ ঘন্টা খোলা, ওরা কমিশন কাটে না। ওখানে ভাঙিয়ে নেবে।
    — আলি হোটেল?
    — জামা-এল-ফ্নার পাশেই।
     বিদ্যুতের ঝলকের মত মনে পড়ে যায় এই নাম। জামা এল ফ্না। মার্রাকেশের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। 
    আমরা অল্প বিশ্রাম এবং স্নান করেই বেরিয়ে পড়ি সেই দিকে। পথে অনেক দোকান পাট, হোটেল রেস্টুরেন্ট, কিন্তু আমাকে ডাকছে জামা-এল-ফ্না।
    এমন করে ডাকছে যেটা আমি কারোকে বোঝাতে পারব না। নিশির ডাকের মতো।
  • kk | 2601:448:c400:9fe0:90e:dfb2:43df:144a | ০৬ নভেম্বর ২০২২ ২২:২৬738799
  • মার্রাকেশের উচ্চারণ কেমন হয়? মার-রাকেশ?
    লিখুন, পড়ছি, ভালো লাগছে।
  • যোষিতা | ০৭ নভেম্বর ২০২২ ০১:০৭738802
  •  
    সাদা জামায় করিম
     
  • যোষিতা | ০৭ নভেম্বর ২০২২ ০১:১০738803
  • হ্যাঁ "মা র্ রা কেশ"। 
    আরেকটা হচ্ছে " জা মা এ ল্ ফ্ না"
  • যোষিতা | ০৭ নভেম্বর ২০২২ ০১:১১738804
  • উঠোনের পাশে বিশ্রামের জন্য জায়গা
  • যোষিতা | ০৭ নভেম্বর ২০২২ ০১:১৩738805
  • আমাদের ঘরের সামনে ছাদ
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল প্রতিক্রিয়া দিন