এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • ওইখানে যেয়ো নাকো তুমি (রহস্য উপন্যাস)ঃ পর্ব ১৪

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ০৬ আগস্ট ২০২২ | ৮১১ বার পঠিত | রেটিং ৪.৩ (৪ জন)
  • “আমি জেনেশুনে বিষ করেছি পান”
    সৌরভ
    দন্তেওয়াড়া জগদলপুর থেকে ৮২ কিলোমিটার। না থেমে চলতে থাকলে মেরে কেটে দেড় ঘন্টা,  বা তার আগে পৌঁছে যাওয়া যায়। কাফিলা রওয়ানা হয়েছে মাত্র আধঘন্টা হয়েছে। এবার আমার  গাড়িতে অন্য দুটো মেয়ে এবং একটা ছেলেকে নিয়েছি। ওই তিনটে ছটফটে মেয়েকে অন্য গাড়িটায় পাঠিয়ে দিয়েছি। আমার উদ্দেশ্য দলের সকলের সঙ্গে পরিচয় করা এবং নাক কান চোখ খোলা রেখে হাওয়ায় ভাসিয়ে দেওয়া খবরের জন্যে ওৎ পেতে থাকা।
    আজকের দিনটা একেবারে কেজো দিন । সকালের জলখাবারের পর  কালেক্টর ও কমিশনারের উপস্থিতিতে কনফারেন্স রুমে ডিজি একটা প্রশাসনিক বৈঠক করলেন। আমরা বাইরের বারান্দায় বসে রইলাম। ফের উনি আমাদের এবং স্থানীয় প্রৌঢ় শিক্ষা কেন্দ্রের অ্যানিমেটরদের নিয়ে একটা পনের মিনিটের বৈঠক করলেন।
    তারপর চলো দন্তেওয়াড়া!
    ভাবছিলাম, এইসব সরকারী অনুষ্ঠানে এসে আদৌ কোন লাভ হবে কিনা। তবে দন্তেওয়াড়া খাঁটি রেড জোন এলাকা। সেখানে যাওয়ার একটা কৌতূহল এবং রোমাঞ্চ আমায় বলছে—গিয়ে দেখিই না কী হয়!
    সোনালী একটা আলাদা ছোট গাড়িতে করে আমাদের পেছন পেছন আসছে। জলখাবারের সময় আমার দিকে একটা কার্ট নড্‌-- যেন আমাকে ভাল করে চেনেই না।
    শরৎ কালের নীল আকাশে পেঁজা তুলোর মত সাদা মেঘ ভেসে যাচ্ছে। দু’ধারে ধানের ক্ষেত। সবুজ ধানগাছে শীষ গজিয়েছে। এখনও পাকে নি, তবে বেশ পুরুষ্টু। সকালের উজ্বল রোদে ঝলমল করছে চারদিক। হালকা হাওয়ায় সামান্য দুলে উঠছে ধানের কিশোরী চারাগুলো।
    এবার গাড়িতে যে দুটো মেয়ে, তারা কেউই গানটান গাইছে না। এতক্ষণ অন্য ছেলেটির সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করছিলাম যে এই ধরণের ট্যুর আগে হয়েছে কিনা। তার ফলো আপ কিছু হয় কিনা এইসব। আর আধঘন্টার মধ্যে পৌঁছে যাব দন্তেওয়াড়া।
    কাল রাত্তিরে জেগে থাকার দরুণ আমার বোধ হয় একটু ঝিমুনি এসে গেছল।
    ঝাঁকুনি দিয়ে ব্রেক কষল গাড়ি, আমি জেগে উঠলাম। গোটা কাফিলা দাঁড়িয়ে পড়েছে। খানিক আড়মোড়া ভেঙে ভাবলাম, নেমে গিয়ে একটু পায়চারি করে হাত পায়ের খিল লাগা ভাবটা ছাড়িয়ে নেব।
    হঠাৎ একটা চেঁচামেচি। কিছু একটা হয়েছে, কিন্তু কিছু বোঝা যাচ্ছে না।
    কেউ একজন একটা মেগাফোন নিয়ে হিন্দিতে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে কিছু বলছে।
    --সবাই নিজেদের গাড়ির পেছনে চলে যান। আগামী অর্ডার না পাওয়া পর্য্যন্ত আড়াল ছেড়ে বেরোবেন না। হামলা শুরু হয়েছে!
    আমি এক ঝটকায় দরজা খুলে মেয়ে দুটোকে হাত ধরে টেনে নামিয়ে বলি – চুপচাপ গাড়ির গায়ে হেলান দিয়ে মাটিতে বসে পড়। আমি যেমন করছি।
    ড্রাইভার তো কিছু বলার আগেই নেমে বুকে হেঁটে গাড়ির নীচে ঢুকে গেছে।
    আমরা যেন একে অন্যের বুকের ঢিপ ঢিপ শুনতে পাচ্ছি। সবার মুখ ফ্যাকাশে। মাওবাদী হামলা!
    কিন্তু কোন গুলির আওয়াজ নেই। আমি আস্তে আস্তে গাড়ির দেওয়ালে পিঠ লাগিয়ে উঠে দাঁড়াই। কিছু বোঝা যাচ্ছে না। উটের মত গলা বাড়িয়ে দেখি—এক গাড়ি জওয়ান ডিজি সাহেবের গাড়িকে ঘিরে অদৃশ্য শত্রুর উদ্দেশে ইনশাস রাইফেল তাক করে স্ট্যাচু হয়ে রয়েছে। সুন্দর একটা ইংরেজি সিনেমার পোস্টার যেন। আরেকটু এগিয়ে গেলাম। চোখে পড়ল অন্ততঃ একশ মিটার এগিয়ে অ্যাডভান্সড কম্যান্ডো জীপের সৈনিকেরা একই ভাবে একটা ব্যুহ রচনা করে অস্ত্র উঁচিয়ে রয়েছে। আধা মিনিট, কেউ হিন্দিতে কিছু বলল। তারপর মেগাফোনে আদেশ এল—অল ক্লিয়ার ! অল ক্লিয়ার! সবাই যে যার গাড়িতে বসে পড়। আমরা এক মিনিটের মধ্যে রওনা হচ্ছি।
    কিন্তু হলটা কী?
    ধীরে ধীরে কাফিলার মুড়ো থেকে ল্যাজা অব্দি ছড়িয়ে পড়ল এক কাহিনী। বহোত মজেদার!
    দিল্লি থেকে আসা ডায়রেক্টর মহোদয়ের পেয়েছে ছোট বাইরে। উনি গাড়ি থামিয়ে  পাশের ধান ক্ষেতের মধ্যে নেমে এগিয়ে গেলেন আড়াল খুঁজে প্রকৃতির আহ্বানে সাড়া দিতে। ওঁদের হরিয়ানায় পারিবারিক ফার্ম হাউস আছে। দু’পুরুষ আগের কিসান পরিবার। শরতের সকালে ‘সবুজ ধান দোদুল দুল, হাওয়ায় নাচে কাশের ফুল’ দেখে ওঁর মন উচাটন, চিত্ত চমৎকার! উনি মোবাইল দিয়ে ভিডিও করতে লাগলেন দিল্লিতে ছোট বোনকে পাঠাবেন বলে।
    এদিকে প্রথম কম্যান্ডো জীপ সাঁ সাঁ করে ৯০ কিলোমিটার স্পীডে এগিয়ে চলেছে। দশ কিলোমিটার এগিয়ে হঠাৎ দলের কম্যান্ডারের খেয়াল হল কাফিলা তো পেছনে আসছে না। অজানা আশংকায় ওঁর বুক কেঁপে উঠল। এইসময়ে চাই কুইক রেসপন্স , লাইটনিং স্পীডে প্রত্যাঘাত!
    সোজা অ্যাবাউট টার্ন এবং দ্রুত ফিরে এসে দেখল—পুরো কাফিলা রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে, ডিজি সাহেবের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। কী সর্বনাশ। এক সেকেন্ডের মধ্যে ওরা পজিশন নিয়ে পেছনের গাড়িকে বলল—হামলা হয়েছে, পজিশন নাও।  ওরা জুনিয়র। যথা পূর্বং তথা পরং!
    শত্রু হয়ত ধানক্ষেতে লুকিয়ে গুঁড়ি মেরে এগিয়ে আসছে। অ্যামবুশ! মেগাফোনে নির্দেশ জারি হল। এদিকে ‘ইয়ে সব সে বেখবর’ মহামহিম গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে ফিরে এসে দৃশ্য দেখে হতবাক।
    যাক গে, সব ভাল যার শেষ ভাল।

    গাড়ির গতি আবার স্লো! নাঃ , ভয়ের কিছু নেই , দন্তেওয়াড়া এখনও দশ-বারো কিলোমিটার দূরে। কিন্তু সামনে রাস্তাজুড়ে চলেছে জনা চল্লিশ মানুষ, কিন্তু ওরা চলছে বুকে হেঁটে। কাফিলা থেমে যায়। সিকিউরিটি ফোর্স ওদের কাছে গিয়ে বলে রাস্তা ছেড়ে সরে দাঁড়াতে। ব্যাপারটা কী?
     দলে মেয়ে এবং পুরুষ, মেয়েরাই বেশি। তাই সিকিউরিটি ফোর্স একটু সাবধানে কথা বলছে। কিন্তু ওরা বুকে ঘষটে চলছে কেন?
    কাছে গিয়ে জানলাম ওরা ‘দণ্ডী কাটছে’। মানে দন্তেশ্বরী দেবীর কাছে মানত করেছে যে মহাষ্টমীর আগে বুকে ঘষটে ঘষটে দন্তেওয়াড়ায় ওঁর মন্দিরে পৌঁছে পুজো দেবে!
    এখন বেলা প্রায় বারোটা, অকটোবরের প্রথম সপ্তাহ। গনগনে রোদ্দূর। পিচের রাস্তা তেতে উঠেছে।  যারা দণ্ডী কাটছে তাদের পরিবারের ক’জন সংগে চলছে চটের ছালা নিয়ে । ওরা রাস্তায় সেটা বিছিয়ে দিচ্ছে । মহিলাটি ছালার উপরে হাত-পা বুক দিয়ে ঘষটে খানিকটা যাচ্ছে। ছালা সরে গেলে থামছে।
    তখন আবার ঘরের লোকজন সেই ছালা তুলে দু’কদম আগে বিছিয়ে দিলে তবে ফের চলা। রাত্তিরে গাছের তলায় বিশ্রাম।
    মাইরি! একেই বলে শম্বুকগতি। কবে পৌঁছাবে? কাল মহাষ্টমীর সকাল নাগাদ।
    কতদূর থেকে আসছে? নানা জায়গা থেকে; বেশির ভাগ জগদলপুরের আশপাশ থেকে। সে তো আশি কিলোমিটার! তা হবে।
    কবে থেকে চলা শুরু হয়েছে? তা প্রায় দু’মাস।
    ভাবি, এক ফাঁকে সোনালীকে প্রশ্ন করে দেখব যে এমন অন্ধবিশ্বাসের জমানায় এরা বিপ্লব করবে? কিসের ভরসায়? 
    সিকিউরিটি ফোর্স রাস্তায় উঠে পড়া ছাগলের পাল সরানোর মত করে ওদের একপাশে সরিয়ে দিল।

    এবার বোধহয় এসে গেছি। পাকা বাড়িঘর দেখা যাচ্ছে। শহরে ঢোকার মুখে শংখিনী ও ডংকিনী দুটো নদীর সংগম, কাছেই দন্তেশ্বরী মন্দির। সেখানে ডিজি কাল পুজো দিয়ে ওঁর উপোস ভাঙবেন। ততক্ষণ শুধু ডাবের জল খেয়ে থাকবেন।
    সিভিল লাইন। কলেক্টর এবং সুপারিন্টেন্ডেন্ট অফ পুলিশের বাংলো। অনেক উঁচু বাউন্ডারি ওয়াল। পাঁচিলের উপর বার্বেড ওয়্যার পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে লাগানো!  এসপি অফিসের সামনে দুটো উঁচু লোহার পোস্টের গায়ে বিরাট প্ল্যাকার্ড, তাতে বড় বড় করে কিছু লেখা এবং কিছু ছবি।
    কাফিলা দাঁড়িয়ে পড়েছে। হয়ত এসপি’র গ্রীন সিগন্যাল পেলে তবে এগোবে। আমি গাড়ি থেকে নেমে উঁচু প্ল্যাকার্ডের লেখা পড়তে থাকি--আড়াআড়ি দুটো ভাগে হিন্দি ও গোণ্ডী ডায়লেক্টে লেখাঃ
    “ বস্তারের বাহাদুর ছেলেদের প্রতি আবেদনঃ নকশালপন্থীরা তোমাদের কী দিয়েছে? অনাহার, কুস্বাস্থ্য, আতংক, অশিক্ষা ও মৃত্যু।
    সরকার তোমাদের কী দিচ্ছে? খাবার, চিকিৎসা, শিক্ষা, সুরক্ষা এবং রোজগার। যারা ভুল বুঝে বিপথে গেছ, তারা ফিরে এস। অমুক অফিসে আত্মসমর্পণ কর। সরকার তোমাদের সুরক্ষার গ্যারান্টি দিচ্ছে।
     বস্তার-মাতা ডাকছে—ওরে তোরা ঘরে ফিরে আয়!”
    আচ্ছা, এরা নকশালপন্থী লিখেছে, মাওবাদী লিখছে না কেন?
    মন দিয়ে পড়ছিলাম। পিঠে এক খোঁচা, চমকে পেছনে ফিরে দেখি সোনালী। কড়া সুরে জানতে চায় এখানে কী করছি? আমি ওই বিশাল নোটিস বোর্ডের দিকে ইশারা করি। সোনালী হুঁঃ করে মুখ বেঁকিয়ে বলে চটপট গাড়িতে চড়ে বসতে। সার্কিট হাউসে সবার খাওয়ার ব্যবস্থা। তারপর কমিশনারের কনফারেন্স হলে বড়  সভা।
    সেসব চুকলে বিকেলের মধ্যে কুড়ি কিলোমিটার দূরের গীদম থানার কাছে সলওয়া জুড়ুম ক্যামপ দেখে অন্ধকার হওয়ার আগে ফিরে আসতে হবে।
    সবুজ ভেলভেট কার্পেট বিছানো হল। এত ভীড় যে আমি দাঁড়িয়ে রইলাম। সাহেব বলে যাচ্ছেন তাঁর বাঁধা গতে কী ভাবে প্রৌঢ় শিক্ষা এই এলাকায় উন্নয়নের ভিত তৈরি করবে, জনমানসে পজিটিভ চিন্তা আনবে। কমিশনার বলেন যে দন্তেওয়াড়ার বিশেষ কলেজ খোলা হয়েছে এদের বিভিন হাতের কাজের ট্রেনিং দিয়ে চাকরি দেওয়াতে। গত এক বছরে ৮০ জন চাকরি পেয়েছে।
    আমি পাশের একজন  ছোটখাটো আধিকারিককে প্রশ্ন করে জেনে নিই যে  কীরকম চাকরি? কয়েকজন বিজলি বা জলের কল সারাইয়ের কাজ শিখেছে। কেউ কেউ হয়েছে ছুতোর মিস্ত্রি, তবে বেশির ভাগই বিভিন্ন সরকারি অফিসে চাপরাশি এবং চৌকিদারের কাজ পেয়েছে।
    ঘুঙুরের একটু অন্যরকম ঝমঝম আওয়াজ শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখি  বাইসন মারিয়া আদিবাসীদের নাচের দল আসছে। ওদের মুখে রঙ মাখা, মাথায় শিংওলা মুকুট বা শিরস্ত্রাণ, হাতে লোহার লম্বা বল্লম এবং কুঠার। ওরা অফিস  প্রাঙ্গণে নাচতে শুরু করে। যুদ্ধের নাচ। মেয়ের দল নাচে অন্যরকম তালে। ওদের মাদলের বোল এবং ছন্দ আমার অচেনা।
    মিটিং ছেড়ে লোকজন হুড়মুড়িয়ে বাইরে বেরিয়ে এসেছে  মারিয়াদের নাচ দেখবে বলে।
    আমরা দুপুরের খাওয়াটা কোনরকমে সেরে রওয়ানা দিই । যাব
    সলওয়া জুড়ুম কেন্দ্রে নতুন খোলা শিক্ষা কেন্দ্রের উদ্দেশে। ডিজি উদ্বোধন করবেন। এদিকে শালের বনে শিরশিরে হাওয়া। হঠাৎ গরম কমে ঠাণ্ডা ঠান্ডা ভাব।

    সলওয়া জুড়ুম কেন্দ্রের প্রায় তিন কিলোমিটার দূর থেকে এলাকা ঘিরে কাঁটা তারের বেড়া লাগানো হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে পাকা ঘর সারি সারি। ছাদে বসানো হচ্ছে অ্যাসবেটস শীট, আর অল্প দূরে দূরে দাঁড়ানো সশস্ত্র উর্দি মনে করিয়ে দিচ্ছে আমরা কোথায় আছি।
    আমাদের অ্যাডাল্ট এডুকেশন রিসোর্স সেন্টার রায়পুরের থেকে যে দুজনকে আগে পাঠানো হয়েছিল তারা স্থানীয় শিক্ষাকর্মীদের সঙ্গে হাত লাগিয়ে কেন্দ্রটি সুন্দর করে সাজিয়েছে। চূণ সুড়কির দেয়ালে পেরেক পুঁতে দড়ি টাঙিয়ে ঝোলানো হয়েছে একগাদা পোস্টার, তাতে মেয়েদের শিক্ষা এবং তাদের ক্ষমতায়নের গল্প বলা হয়েছে। কিছু টেবিলে রাখা হয়েছে প্রৌঢ় সাক্ষরতার কিছু প্রাইমার গোছের বইপত্তর—হিন্দি এবং হল্বী ও গোন্ডী উপভাষায়।  দেয়ালের গায়ে কিছু প্লাই লাগিয়ে তাতে লাগানো হয়েছে কিছু ফোটোগ্রাফ—অনেক নব সাক্ষর পুরষ্কার নিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীকে চিনতে পারলাম।
    ডিজির চেহারায় পরিতৃপ্তির ঝলক। আমাদের ওই দুজন আমার দিকে ইশারা করে। ভাবটা –কেমন দেখছেন? ভাল সাজিয়েছি না?  গিয়ে স্যারকে আমাদের কথা বলবেন তো?
     আমি ডিজির পেছন পেছন ঘুরে বইপত্তর, ছবি দেখি। বুড়োদের রাত্তিরে অক্ষর পরিচয় করাবে যে স্কুলের ছাত্র ছাত্রীগুলি তাদের সংগে কথা বলি। একজন সিকিউরিটির উর্দি আমাকে বলে –স্যার, ওই তাক থেকে আমাকে একটা হিন্দি বই পড়তে দেবেন? যাতে কিছু গল্প আছে? আমার বারো ঘন্টা ডিউটি, পড়ে ফেরত দেব।
    আমি বিনাবাক্যবয়ে একটি বই নামিয়ে ওকে ধরিয়ে দিয়ে বলি—ফেরত দিতে হবে না, আপনি পড়ুন।
    --বাঁচালেন স্যার, আমার বারো ঘন্টা ডিউটি, সময় কাটে না। আমি ইউপির ফররুখাবাদের কলেজ থেকে বি এ পাশ করেছি।
    জনসভা শুরু হয়। আমি বাইরে বেরিয়ে হাঁটতে থাকি।
    শিক্ষা কেন্দ্রের উল্টোদিকে একটা মুদি দোকান। তার গায়ে একটা পিচবোর্ডের টুকরোয় চাল , ডাল, আটা ইত্যাদির লিস্টি টাঙানো, তবে দাম বা স্টক লেখা নেই। তবে লিস্টের নীচে বড় বড় করে লেখা—বিকেল পাঁচটায় দোকান বন্ধ হইবে।  
    আমি আর একটু এগিয়ে যাই। সামনের গাছে একটা টিনের টুকরো পেরেক দিয়ে গাঁথা। তাতে বড় বড় করে হিন্দিতে লেখা—
    চাঁদসী দাওয়াখানা
    বাঙালী ডাক্তার
    বিনা ছুরি কাঁচি অর্শ, ভগন্দর কা ইলাজ
    ডঃ মলয় কুমার বিশ্বাস
    বাঃ এখানেও বাঙালী অনুপ্রবেশ! দম হ্যায়, মানতে হবে। ফিরে গিয়ে বাবাকে বলব দেখ, তোমার ভাই-বেরাদররা  মাওবাদী এলাকায় সলওয়া জুড়ুম ক্যাম্পেও ডাক্তারখানা খুলে বসেছে।
    বড় পেচ্ছাপ পেয়েছে। ওদিকে একটু নিরিবিলি দেখে ঘন ঝোপের দিকে গিয়ে একটা বয়রা গাছের নীচে দাঁড়াই।
    আঃ কী শান্তি!
    প্যান্টের জিপ আটকানোর সময় টের পেলাম আমার পেছনে কেউ দাঁড়িয়ে।
    ফিরে দেখি একজন বেঁটে মত কালোকোলো লোক, পরনে ছাইরঙা সাফারি স্যুট। আমাদের দিকে আজকাল এধরণের পোশাক কেউ পরে না। লোকটার সামনের দিকের দুটো দাঁত সামান্য উঁচু, মুখটা পুরো বন্ধ হয় না। আমি হাতটাত মুছে ঝোপঝাড় থেকে বেরিয়ে রাস্তায় উঠতে যাব, কিন্তু লোকটা নড়ে না যে! ও ঠিক পায়ে চলা পথ আটকে দাঁড়িয়েছে।
    আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকাই, কিন্তু ও কিছু বলে না।
    --জী, কুছ কহেঙ্গে?
    --আপ কৌন?
    আমি আমার পরিচয় দিই, সৌরভ বিশ্বাস। রায়পুরের স্টেট রিসোর্স সেন্টারে কোওর্ডিনেটর। এখানে শিক্ষা কাফিলার সঙ্গে এসেছি ।
    --সো তো হ্যায়? পর আপ হ্যায় কৌন?
    এ আবার কি! আমি কে? বললাম তো!
    --নহীঁ, আপনি যদি সাচ্চা প্রৌঢ় শিক্ষার স্টাফ হতেন তো আপনাদের দিল্লি থেকে আসা বড়কর্তার সভার মাঝখানে উঠে আসতেন না। কেউ তো আসেনি? আপনি ঘুরে ঘুরে চারদিক দেখছেন, নোটিস পড়ছেন। খানিকক্ষণ আগে দেখলাম একজন পুলিশের সেপাইয়ের সঙ্গে গল্প জুড়েছেন। ব্যাপারটা কী?
    আমি হতভম্ব। এরাই কি মাওবাদী? আমাকে সন্দেহ করছে।
    আমার যা বলার একবার বলে দিয়েছি। সত্যি কথাই বলেছি। আপনি যদি বিশ্বাস না করেন তো আমি কী করতে পারি?
    --অনেক কিছুই, আপাততঃ আমার সঙ্গে চলুন।
    --কোথায়?
    --কথা বাড়াবেন না। চুপচাপ আমার সঙ্গে চলুন।
    কী করব? সঙ্গে যাব, তারপর? তাহলে পালাই? জনসভার তাঁবু বেশি দূর নয়।  ওখানে অনেক বড়  পুলিশ বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। যদি খিঁচে দৌড়ুই--, কিন্তু লোকটার কাছে কিছু আছে কিনা জানা নেই।
    --পালাবার কথা ভাববেন না। আমরা চারদিকেই আছি।
    আমি দাঁড়িয়ে পড়ি। কোত্থাও যাব না। এদের মতলবটা বোঝা যাক।
    কিন্তু লোকটা এগিয়ে এসে আমার হাত ধরে, বেশ শক্ত করে।
    --চলিয়ে। আপ সে কুছ সওয়াল পুছা যায় গা। আপনি যদি সত্যিই শিক্ষাকর্মী সাজা পুলিশের লোক  না হয়ে থাকেন তাহলে আপনার কোন ভয় নেই। এখন আমার সঙ্গে আসুন ।
    আমি ধীরে ধীরে ওর সঙ্গে চলতে থাকি; যা হয় হবে। মিনিট দুই এগিয়েছি, তারপর একটা  ধানের গোলার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সোনালী এসে রাস্তা আটকাল। যেন মাটি ফুঁড়ে উঠে এল।
    -- কমরেড মহীপাল! ছোড় দো ইনহে।
    --দিদি আপ?
    --হ্যাঁ, আমিই। একে ছেড়ে দাও। চিন্তার কিছু নেই। এ আমাদের টিমের কো-অর্ডিনেটর, রায়পুর অফিসের লোক।
    --তো নিজের কাজ ছেড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে কেন? আর পুলিশের সঙ্গে ফুসফাস?
    --আরে শহুরে ছেলে, জীবনে প্রথমবার দন্তেওয়াড়া এসেছে। ঘুরে ঘুরে দেখছে, বকবক করতে ভালবাসে।
    মহীপাল আমার চোখের দিকে সতর্ক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে, তারপর ধীরে ধীরে হাতটা আলগা করে বলে—যাইয়ে!
    সোনালী আমার হাত ধরে প্রায় হিঁচড়ে নিয়ে চলে।
    --শীগগির চলুন, নতুন কেন্দ্রের ‘উদ্ঘাটন’ হয়ে গেছে। জনসভা শেষ হতে চলল। আমরা দন্তেওয়াড়া রওনা হব।
    আমি কোন কথা না বলে চুপচাপ চলতে থাকি। ভাবতে চেষ্টা করি—সোনালী মিশ্র আসলে কে?
    কিন্তু ওকে যেন কথায় পেয়েছে। বকবকানি বেড়েই চলে।
    --বলেছিলাম না সতর্ক থাকবেন, সাবধানে চলাফেরা করবেন। যদি কিছু হয়ে যেত? আপনাকে সিকিউরিটি এজেন্সি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে।  এখন আপনাকে বাঁচাতে পুলিশ আসবে না।
    আমি মাথা নেড়ে সায় দিই। হ্যাঁ, বুঝতে পেরেছি।
    --সব বোঝেন তো এলোমেলো ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন কেন? এটা আপনার বিলাসপুর, না মানা ক্যাম্প? বিলাসপুরের ইন্সপেক্টর খানের খবরটা পেপারে পড়েন নি? গত মাসেই লোক্যাল নিউজ পেপারে বেরিয়েছিল তো!
    আমি চুপ করে থাকি। কারণ, গত মাসে আমি বিলাসপুরের চাকরি ছেড়ে রায়পুরের রিসোর্স সেন্টারে ছিলাম। বিলাসপুরের লোক্যাল নিউজ পেপার পড়তে যাব কেন?
    --শুনুন। দশ বছর আগে ইন্সপেক্টর খান সরগুজা জেলার ইন্টিরিয়রে ঝারখণ্ড বর্ডারে একটা থানায় ওসি ছিল। দুটো প্রদেশের সীমান্ত দিয়ে শাল-সেগুনের কাঠ আর বিড়িপাতা ও মহুয়ার চোরাচালানের রমরমা ব্যবসা চলত। আগের সবার মত খানও “বহতী গঙ্গা”য় হাত ধুয়ে নিত। স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে ওর সিক্কা চলত।
    পাঁচ বছর ভালভাবেই কাটছিল। খানের দুটো বাড়ি তৈরি হল—ওখানকার সুরজপুরে আর ওর আদি নিবাস বিলাসপুরে। এমন সময় খান একটা বড় ভুল করল। বখরা নিয়ে বনবিভাগের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ল। সেটাও মিটে যেত। কিন্তু অহংকারে মসমস করা খান একজন রেঞ্জারের সঙ্গে বচসার মাঝখানে গায়ে হাত তুলল।
    ব্যস , সাসপেন্ড, এনকোয়ারি। জলের মত টাকা বেরিয়ে যেতে লাগল। অবশেষে ছ’মাস আগে বেনিফিট অফ ডাউট পেয়ে কাজে বহাল হল। কিন্তু ততদিনে খান অ্যালকোহলিক হয়ে গেছে। ওকে পোস্টিং দেওয়া হল গীদম থানায়। মানে এই কেন্দ্রের কাছের থানা যেটা।  অবশ্যই পানিশমেন্ট পোস্টিং।
     কিন্তু এতদিন সাসপেন্ড থেকে আমদানী বন্ধ ; লোকের চাপা টিটকারি। এসবের ফলে খানের ভেতরে ছিল চাপা রাগ। এই থানায় এসে অধিকাংশ সময় আদিবাসীদের ঘরে তৈরি সলপি খেয়ে টুন হয়ে থাকত। জিনিস নিলে দোকানদারকে পয়সা দিত না।
    তাও একরকম চলে যেত। কিন্তু ও বড্ড মারমুখো হয়ে উঠল। থানায় কাউকে ধরে আনলে তাকে বেধড়ক পেটাত। ছেলেবুড়ো মেয়েমদ্দ –কোন বাছবিচার ছিল না। ফলে তিনমাসের মধ্যে ওর নাম মাওবাদীদের হিট লিস্টে উঠে গেল। ও খবরটা পেল। দুটো মাস সাবধানে রইল। থানা থেকে বাইরে বেরোত না।
    তারপর বোধহয় অধৈর্য হয়ে পড়েছিল। গত মাসে এক রোববারে ও গাড়ি নিয়ে গেল দন্তেওয়াড়ায়। মাসের বাজার করে হোটেলে খেয়ে দেয়ে ফিরবে। বড়রাস্তার উপর গাড়ি দাঁড় করিয়ে পায়ে হেঁটে বাজারে ঢুকল। মাছমাংস, তরিতরকারি কিনে দু’হাতে ভরা থলি নিয়ে ফিরছিল।  কিন্তু ফেরা হল না।
    বাজারের ভেতর কাদা ভরা সরু গলি। পাঁচটা ছেলে ওকে ঘিরে ধরল। ওর হাত বন্ধ, থলি ফেলে দিয়ে কোমরের খাপ থেকে পিস্তল বের করা আগেই ঘাড়ে পড়ল রামদা’র কোপ। পেটে ঢুকল গুপ্তি, প্রায় নাড়িভুড়ি বেরিয়ে যায় আর কি! ওরা গুলি চালায় নি, তাই বড়রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে বসা কেউ অনেকক্ষণ কোন কিছু টের পায় নি।
    এই এলাকায় এলে আলাভোলার মত না ঘুরে একটু চোখকান খোলা রেখে চলবেন।
    আরে, ওই দেখুন সবাই গাড়িতে উঠছে। চলুন, বাকি কথা কালকে হবে। মহাষ্টমীতে পুজো দেবেন তো বাবুমশায়? দন্তেওয়াড়ার দেবী দন্তেশ্বরী বড় জাগ্রত দেবী। ভক্তের মনোকামনা পূর্ণ করেন।
                                                                                                       (চলবে)
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ০৬ আগস্ট ২০২২ | ৮১১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • স্বাতী রায় | 117.194.35.90 | ০৭ আগস্ট ২০২২ ১৬:৫৬510842
  • এই লেখার একটা বড় সম্পদ ওই জায়গাটাকে একটু একটু দেখতে পাওয়া। বড় ভাল লাগছে। 
     
  • গোপা মুখোপাধ্যায় | 59.99.78.27 | ০৮ আগস্ট ২০২২ ১৩:০৪510870
  • সত্যিই  এই জায়গা সম্বন্ধে কিছুই জানিনা
  • বিপ্লব রহমান | ০৯ আগস্ট ২০২২ ২০:০৯510896
  • মারাত্মক। এপারে সাতের দশকে মাওবাদীরা ওইরকম চোরাগোপ্তা হামলা প্রচুর করেছে। 
     
    তারপর? 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন