এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  গপ্পো

  • প্রাগৈতিহাসিক

    সম্বিৎ লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ২৯ জুলাই ২০২২ | ১৬০৮ বার পঠিত
  • ক্যাফেটেরিয়ায় "ফ্রায়েড পটেটো" চাইতে দেখেই সন্দেহ হয়েছিল। দুপুরে মাঙ্কি-ক্যাপ চড়াতে দেখে নিঃসন্দেহ হয়ে গেলাম যে ভদ্রলোক বাঙালি। তা নইলে কে আর পঁয়ষট্টি ডিগ্রি ফারেনহাইটে মাঙ্কি ক্যাপ চাপাবে। তারপরে বাইরে পাতা বেঞ্চিতে একা একা বসে আলুভাজা আর কোকাকোলা খাচ্ছেন দেখে গিয়ে আলাপ করলাম। সুবিমল রায়চৌধুরী। এই প্রথম অ্যামেরিকায় এসেছেন। একাই এসেছেন  ইয়েলোস্টোন ন্যাশানাল পার্কে। এতদিন পরে বাংলা বলতে পেয়ে যেন হাতে চাঁদ পেলেন। বললেনও সে কথা।

    এনারা সাবর্ণ রায়চৌধুরীদের একটা ফ্যাকড়া। সেই সাবর্ণ রায়চৌধুরী যাদের থেকে চার্নক-সাহেব গ্রাম কলকাতার পাট্টা পেয়েছিলেন। সুবিমলবাবু পৈতৃকসূত্রে নয়-নয় করেও কলকাতা শহরের ওপর কয়েকটি বাড়ি ও একটি বাজারের মালিকানা পেয়ে বেশ আরামেই দিন কাটিয়েছেন। পয়সাকড়ির চিন্তা ছিল না। বিয়ে-থা করেননি। কাজ করতেন বিড়লাদের কোম্পানিতে। কিছু থোক টাকার বিনিময়ে মেয়াদের আগে রিটায়ারমেন্ট নিয়ে এখন দেশবিদেশ ঘুরে বেড়ান। অ্যামেরিকায় এসেছেন ভাগ্নি-জামাইয়ের কাছে। তারা থাকে কানেক্টিকটে। সবে বাচ্চা হয়েছে বলে মামাকে সঙ্গ দিতে ইয়েলোস্টোনে আসতে পারেনি। "বুঝলেন, এখানে দেখলাম বাচ্চা মানুষ করা খুব সোজা। অয়েলক্লথের ঝামেলা নেই, কাঁথা পাল্টানো নেই, ঝিনুকে দুধ খাওয়ান নেই ... তাই বললাম আমাকে একটা ট্রেনে চাপিয়ে দে, দেশটা ঘুরে দেখি। জামাই বলল, 'ট্রেন না মামা, বাস।' বলে গ্রেহাউন্ড বাসে তুলে দিল, সেই চেপে চলে এসেছি সল্ট লেকে। সেখান থেকে এই কন্ডাক্টেড টুর নিয়ে ইয়েলোস্টোন। জামাই আমার, বুঝলেন, প্রেসিডেন্সিতে জিওলজি পড়ে এখানে এসে ডক্টরেট করেছে। সে বলল, ইয়েলোস্টোনে নাকি খুব জাগ্রত প্রকৃতি। তাই চলে এলাম।"

    লাঞ্চের পরে সুবিমলবাবু বাসের দিকে যাবার উদ্যোগ নিতে আমিই বললাম, "আপনার আপত্তি না থাকলে আপনি আমার সঙ্গে আসতে পারেন। আমার সঙ্গে গাড়ি আছে। আমি সন্ধেবেলা আপনাকে হোটেলে নাবিয়ে দেব।" দেখা গেল আমি আর সুবিমলবাবু পার্কের ভেতরে একই লজে উঠেছি। সেদিন ভেবেছিলাম লামার ভ্যালি দেখে আসব। সুবিমলবাবু বললেন, "যেখানে নিয়ে যাবেন সেখানেই যাব। আমার কাছে তো সবই নতুন।" তারপরে একটু থেমে বললেন, "কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার কী জানেন, সকালে বাসে আসার সময়ে মাঝে মাঝে এক একটা জায়গা দেখেই মনে হচ্ছিল এ জায়গাটা আগে যেন দেখেছি।" আমি হেসে বললাম," ডেজা ভু?" সুবিমলবাবু জিগেস করলেন, "সে আবার কী?" আমি বললাম, "একটা নতুন জায়গায় গিয়ে যখন মনে হয় এ জায়গায় আমি আগেও এসেছি, সেটাই ডেজা ভু। আজ আপনার যা হয়েছে। নিউরোসায়েন্সেও শুনছি এ নিয়ে রিসার্চ চলছে।" ভদ্রলোক বললেন, "তাজ্জব।" তারপরে বললেন, "এই ওল্ড ফেথফুল জিনিসটা কী বলুন তো? বাসে সবাই বলাবলি করছিল।" 

    - ওল্ড ফেথফুল এই ইয়েলোস্টোনের সবথেকে বিখ্যাত ল্যান্ডমার্ক। উষ্ণ প্রশ্রবণ বলতে পারেন, আবার গরম জলের ফোয়ারাও বলতে পারেন। ইয়েলোস্টোনের এক জায়গায় প্রতি ঘন্টায় মাটি ফুঁড়ে প্রায় পনেরো তলা সমান গরম জলের ফোয়ারা ওঠে। যবে থেকে মানুষ ইয়েলোস্টোন পার্কের সন্ধান পেয়েছে, তখন থেকেই এই ঘটনা ঘটে চলেছে।" সুবিমলবাবু আবার বললেন, "তাজ্জব! দেখতে হবে তো। বাসে বলছিল লাঞ্চের পরে ওটা দেখাতে নিয়ে যাবে। মিস হয়ে গেল।" আমি বললাম, "চিন্তা করবেন না, আমি দেখিয়ে দেব। আরও তিনদিন তো আছি।"

    লামার ভ্যালি ইয়েলোস্টোন পার্কের উত্তরের দিকে। ক্যালেন্ডারের ছবির মতন চোখজুড়নো দৃশ্য। উত্তরে পাহাড়, রকি পর্বতমালার অন্তর্ভূক্ত। পাহাড়ের ওপর দিকে এখনও সাদা-সাদা বরফ রয়ে গেছে কোথাও। পাহাড়ের গায়ে জঙ্গল। একটা পাহাড় দেখলাম ন্যাড়া, রঙও কালচে। দাবানল লেগে সব গাছ পুড়ে গেছে। পাহাড়ের নিচে লামার নদী বইছে। আর নদীর এপারে বিস্তীর্ণ ঘাসজমি। নানা রকম পশু, বাইসনই বেশি। শুনেছি লামার ভ্যালিতে গিজগিজ করছে নেকড়ে আর গ্রিজলি ভাল্লুক। আমি ক্যামেরা আনিনি। (সেলফোন ছিল না আমার। তখনও লোকের হাতে হাতে সেলফোন ওঠেনি।) একটু দূরে দেখলাম সুবিমলবাবু তন্ময় হয়ে পাহাড়ের দিকে চেয়ে আছেন। 

    লজে ফিরে ঘরে যাবার আগে সুবিমলবাবুকে বললাম, আজ আমি ঘরেই খাবার খেয়ে নেব, কাল সকালে লবিতে আটটার সময়ে দেখা হবে আবার। আসলে ক্লান্ত লাগছিল। নতুন জিনিস দেখারও একটা ধকল আছে, সেই সঙ্গে সারাদিনে প্রায় ঘন্টা ছয়েক গাড়িও চালিয়েছি। ঘরে খাবার আনিয়ে খেয়ে শুয়ে পড়েলাম তাড়াতাড়ি। ঘুম ভেঙে গেল একটা শব্দে। দেখি সাড়ে তিনটে বাজে। শব্দটা কিসের বোঝার আগেই আবার শব্দটা হল। দরজায় কেউ টোকা দিচ্ছে। আইহোল দিয়ে তাকিয়ে দেখি দরজার বাইরে সুবিমলবাবু দাঁড়িয়ে। দরজা খুলে দিলাম। উদ্ভ্রান্তের মতন চেহারা। আমাকে ঠেলে ঘরে ঢুকে বললেন, "সব মনে পড়ে গেছে। আমি জাতিস্মর।" বলেন কী! ভদ্রলোক দেখলাম দরদর করে ঘামছেন, আর অসম্ভব হাঁপাচ্ছেন। আমি ওনাকে চেয়ারে বসতে দিয়ে জলের বোতলটা এগিয়ে দিলাম। ঢকঢক করে বোতলটা শেষ করে বসে বসে হাঁপাতে লাগলেন। একটু ধাতস্থ হয়ে বললেন, "খেয়ে এসে শুতে যাবার আগে ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্ক বলে যে ম্যাগাজিনটা যে প্রত্যেক ঘরে রেখেছে, সেইটা ওল্টাচ্ছিলাম। একটা পাতায় একটা ছবি দেখে, জানেন, মাথাটা কীরকম টলে গেল। চোখের সামনে পরিস্কার দেখতে পেলাম। সিনেমার মতন।  আপনাকে সব বলছি, কিন্তু তার আগে বলুন, এই অঞ্চলে কখন প্রথম মানুষ বসতি গড়েছিল, সে সম্বন্ধে জানা আছে?" সুবিমলবাবুকে বললাম, "আগে একটু কফি খান।" ঘরের কফি মেশিনে জল আর কফি দিয়ে মেশিন চালিয়ে এই অঞ্চলের হিউম্যান মাইগ্রেশন সম্বন্ধে আমার যা জানা ছিল তাইই বললাম।

    - আজ থেকে প্রায় কুড়ি-পঁচিশ হাজার বছর আগে একদল মানুষ রাশিয়া থেকে পায়ে হেঁটে এখনকার আলাস্কা দিয়ে উত্তর অ্যামেরিকায় ঢুকেছিল। সেটা ছিল তুষার যুগ। তাই রাশিয়া আর আলাস্কার মাঝে পঞ্চাশ-পঞ্চান্ন মাইলের সমুদ্র্রর জল কমে ব্রিজের মতন ডাঙা বেরিয়ে পড়েছিল। সেই ব্রিজের ওপর দিয়ে হেঁটে হেঁটেই ওই মানুষগুলো অ্যামেরিকার ভূখন্ডে চলে এসেছিল। তারপরে আলাস্কা হয়ে এখনকার ক্যানাডার বিস্তীর্ণ ভূখন্ড পেরিয়ে এই ইয়েলোস্টোন এলাকায় আসতে তাদের লেগে গেল আরও দশ হাজার বছর। মানে হিউম্যান মাইগ্রেশন যেমন হয় আর কি! তখনও তুষার যুগ শেষ হয়নি। এসব জায়গা তখন মোটা বরফের চাদরে ঢাকা। এই  দশ হাজার বছরে দলটা বড় হয়েছে অনেক। ছোট ছোট অনেক দলেও ভেঙে গেছে। কেউ গেছে পুবে, কেউ গেছে পশ্চিমে, কেউ উত্তরে। আর অধিকাংশই গেছে দক্ষিণে। সেই দলগুলো তারপর রকি মাউন্টেন পেরিয়ে আরও দক্ষিণে যেতে যেতে একেবারে দক্ষিণ অ্যামেরিকার দক্ষিণ পর্যন্ত চলে গেছিল।"  সুবিমলবাবুর হাতে গরম কফির কাপ দিলাম।

    সুবিমলবাবু বললেন, "ঠিক বলেছেন। আমি ওইরকম দুশোজনের একটা দলের সঙ্গে ওই তুষারাবৃত পাহাড়ের উত্তরে, মানে ক্যানাডার দিকের পাহাড়ের পায়ের কাছে বাস করতাম। আমার নাম ছিল চস্কা।আমার ছিল যেমন সাহস, তেমনি গায়ে সিংহের বল। একাই একটা গাছের গুঁড়ি উপড়ে ফেলতে পারতাম, তুলে ফেলতে পারতাম জমে যাওয়া নদীর ধারের বড় বড় পাথর। দলে আমার বয়েসী আরও কয়েকটা ছেলে ছিল। তাদের মধ্যে কোকো নামের একজন ছিল, তারও দারুণ সাহস আর শক্তি। শক্তিতে কোকো আমার থেকে কিছু কম হলেও, বুদ্ধিতে কোকো ছিল আরও দড়। সবাই জানত একদিন আমি বা কোকোর মধ্যে একজন দলের প্রধান হবে। আমরাও জানতাম। তাই আমাদের মধ্যে সবসময়েই একটা চোরা রেশারেশি চলত। একবার দুবার সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতাও হয়েছিল, দলের বড়রা ব্যাপারটা বাড়তে দেয়নি।"

    "এরকম সময়ে একদিন গাঁওবুড়ো গোয়াক্লা আর দলের প্রধান ওপা আমাকে আর কোকোকে ডেকে বলল, 'চস্কা, কোকো - পাহাড়ের ওদিকে যেতে আমাদের মানা। কিন্তু এদিকে আর খাবার দাবার পাওয়া শক্ত হয়ে উঠছে। এখানকার পাট গুটোতেই হবে। তোমরা পাহাড়ে চড়ে দেখ, ওদিকে আরও পাহাড় না সমতল। যদি আরও পাহাড় হয়, তাহলে ওদিকে যাবেনা, ফিরে আসবে। যদি সমতল হয় তাহলে সেখানে গিয়ে দেখবে শিকার কীরকম পাওয়া যেতে পারে।' সেই কথা মতন আমি আর কোকো কোমরে সব থেকে চোখা পাথরের অস্ত্র বেঁধে বেরিয়ে পড়লাম। সে ছিল এক মেঘলা দিন। কয়েকদিন ধরে কয়েকটা পাহাড় পেরিয়ে শেষে একটা পাহাড়ের চুড়োয় উঠে সামনে তাকিয়ে দেখি শুধু সবুজ। কিন্তু কী আশ্চর্য! সেই সবুজের জায়গায় জায়গায় ধোঁয়া উঠছে। আর যতদূর চোখ যায় সমতল জমি, আর বহু রকম প্রাণী চরে বেড়াচ্ছে। আমরা উত্তেজিত হয়ে  ফিরে গিয়ে গোয়াক্লা আর ওপাকে জানালাম সে কথা। গাঁওবুড়ো গোয়াক্লা আর প্রধান ওপা আমার আর কোকোকে তখন ভার দিল ওপারে গিয়ে ডেরা পাতার মতন জায়গা খুঁজে বের করার। আজকাল যাকে অ্যাডভান্স পার্টি বলে। আর বলল, যেখানে ধোঁয়া দেখবে সে জায়গা এড়িয়ে চলবে। হয়ত সেখানে অপদেবতার বাস।" সুবিমলবাবু থামলেন। ওনার কথা অসংলগ্ন নয়, কিন্তু কীরকম ছাড়া-ছাড়া - যেন খেলার ধারাবিবরণী দিচ্ছেন। 

    "পাহাড় ডিঙিয়ে সমতলে নাবতে আবার কয়েক দিন সময় লাগল। প্রথম রাতটা আমরা পাহাড়ের ওপর একটা গাছে কাটালাম। সেদিন বিকেলে, আলো ফুরিয়ে আসার আগে দেখলাম কোকো তার পাথরের অস্ত্রগুলো ভাল করে শান দিচ্ছে। আমি ওর পাশে বসলাম। ও আমাকে নিজের সংগ্রহের পাথরের অস্ত্র দেখাচ্ছিল। শেষে একটা অস্ত্র দেখাল, বলল নিজে মাথা-খাটিয়ে তৈরি করেছে। একটা তেকোণা ভারি পাথর একটা বাইসনের হাড়ের একদিকে বাইসনের ল্যাজের চুল দিয়ে বাঁধা। এরকম অস্ত্র আগে দেখিনি। বুঝতে পারলাম না, এ অস্ত্র কীভাবে ব্যবহার করা যাবে। জিগেস করলাম কোকোকে। বলল, 'কাছ থেকে মারলে যেকোন প্রাণীর মাথা ফট করে ফেটে যাবে। অনেক বড় পাথর দিয়েও সেই জোর হবে না।' আমি বললাম, 'কোন প্রাণী তোমাকে অত কাছে এসে মাথায় আঘাত করতে দেবে?' কোকো কিছু না বলে একটু হাসল।

    "পাহাড় থেকে নেবে প্রথমেই এদিক ওদিক ঘুরে একটা অগভীর গুহা খুঁজে নিলাম, আমাদের প্রথম রাতের অস্তানা। তারপরে বেরিয়ে জায়গাটা ঘুরে দেখলাম। প্রচুর ঘাস-জমি, প্রচুর পশু। ছোট-বড় নানারকম। খাবারের কোন সমস্যাই নেই। একটু দূরে গিয়ে কয়েকটা জলাশয়। তার সামনেই পাথর ঘষে আগুন জ্বালালাম। আমি আর কোকো একটা ছোট পাহাড়ি ছাগল মেরেছিলাম। আগুনে ঝলসে সেটাই আমাদের খাদ্য হল। বাইরে আগুন জ্বেলে বসে আছি। প্রথম রাত কোকো ঘুমোবে, আমি পাহারা দেব। শেষ রাতে আমি ঘুমোব, কোকো পাহারায় বসবে। প্রথম রাত বলে এই সতর্কতা। আগুনের দিকে চেয়ে বসে আছি। মাঝে মাঝে আগুন উস্কে দিচ্ছি, পাশে যে কাঠ জড়ো করে রেখেছি, তার থেকে বেছে আগুনে দিচ্ছি আগুন জিইয়ে রাখতে। এই করতে করতে একটা কথা বিদ্যুতের মতন আমার মাথায় খেলে গেল। কোকোর অস্ত্রর ব্যবহার। কোন পশুর ওপর ওই অস্ত্র সে ব্যবহার করতে পারবেনা। কোন জন্তুই তাকে অত কাছে যেতে দেবে না, একমাত্র যদি না ঘুমন্ত পশু হয়। ওই অস্ত্র সে একমাত্র আমার ওপরেই প্রয়োগ করতে পারে। আর সঙ্গে সঙ্গে পরিস্কার হয়ে গেল কোকোর শয়তানী। সে আমাকে মেরে নিজের দলপতি হওয়ার পথ পরিস্কার করবে। উত্তেজনায় আমার নিশ্বাস গরম হয়ে এল। এখনই আগুনের কাঠ নিয়ে গিয়ে কোকোর ভবলীলা সাঙ্গ করে দেব কিনা ভাবতে ভাবতেই কোকোর আওয়াজ পেলাম। উঠে পড়েছে। সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেল। 

    "ভয়ে, উত্তেজনায় সে রাতে ঘুম হল না। কিন্তু শুয়ে শুয়ে আমি আমার কার্যপ্রণালী ঠিক করে ফেলেছি। দিনের বেলা যে কোন ভাবে হোক কোকোকে সরাতে হবে। আর একটা রাত কাটাবার ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। 

    "সেদিন সকালে আমরা দক্ষিণ দিকে হাঁটতে আরম্ভ করলাম। বুঝতে পারলাম জায়গাটা চারদিকে পাহাড় ঘেরা একটা মালভূমি। প্রচুর জন্তুজানোয়ার। দাঁতাল হাতি, হরিণ, বাইসন, ভাল্লুক, শেয়াল-টেয়াল প্রচুর। এখানে ডেরা বাঁধলে খাবার-দাবারের কোন অসুবিধে হবে না। আমরা হাঁটছি। আর দেখছি। মাঝে মাঝেই ছোট ছোট জলাশয়ও রয়েছে। পানীয় জলেরও অসুবিধে নেই। যত এগোচ্ছি, বুঝতে পারছি কত বড় এই মালভূমিটা। আমাদের মতন অনেকগুলো যাযাবর দল এখানে খুব সহজেই থাকতে পারবে। এইসব ভাবছি, কিন্তু মনের মধ্যে খচখচ করছে। পাশেই কোকো হাঁটছে, তার কোমরে বাঁধা আমাকে মারার জন্যে তার নিজের তৈরি করা অস্ত্র।

    "হাঁটতে হাঁটতে আমরা একটা জায়গায় এসে পড়লাম তার চারদিকে নানারকম রঙের জলাশয়। কোনটা ঘোলাটে সাদা, কোনটা উজ্জ্বল নীল, কোনটা ঘন সবজেটে নীল, কোনটার পাড় কমলা - চোখ জুড়িয়ে যাওয়া দৃশ্য। কোকো বলল, 'এখানে বিশ্রাম করা যাক। কিছু খাবারেরও ব্যবস্থা দেখি।' বলতে বলতে কোকো তার একটা অস্ত্র ছুঁড়ে পাশ দিয়ে যাওয়া একটা হরিণ ঘায়েল করে ফেলল। যাক, আজকের খাওয়ার আর চিন্তা রইলে না। আমি আর কোকো কিছুক্ষণের চেষ্টায় হরিণের ছাল ছাড়িয়ে মাংস বের করে নিলাম। কোকো বলল, 'চস্কা, তুমি আগুনের বন্দোবস্ত কর, আমি কাছে জলাশয় থেকে রাংটা ধুয়ে আনি।' আমি কোকোকে চোখের আড়াল করতে চাইছিলাম না, বললাম, 'আগুন জ্বালাতে বেশিক্ষণ লাগবে না। চল আমিও যাচ্ছি।'

    "কাছেই যে জলাশয় তার রঙ উজ্জ্বল নীল। ওপর থেকে অল্প ধোঁয়া উঠছে। আমি কোকোকে বললাম যে গাঁওবুড়ো কিন্তু ধোঁয়ার কাছে যেতে বারণ করেছে। কোকো সে কথা উড়িয়ে দিল। গাঁওবুড়ো নাকি মাটি থেকে ওঠা ধোঁয়ার কাছে যেতে বারণ করেছে, জল থেকে ওঠা নয়। আমি কিছু বললাম না। জলাশয়টার পাশে একটা চ্যাটালো লম্বা পাথর। পাথরটা লম্বালম্বিভাবে জলাশয়ের মধ্যে কিছুটা ঢুকে গেছে। পাথরের আগায় গিয়ে সহজেই জল স্পর্শ করা যায়। আমরা হরিণের রাং দুটো নিয়ে সেই পাথরটার ওপর দিয়ে আগা অব্দি গেলাম। কোকো উবু হয়ে বসে একটা রাং সেই জলে ঠেকাতেই আশ্চর্য একটা ব্যাপার হল। মাংস, হাড়-টাড় সব সেই জলে একেবারে গলে সেখান থেকে একটা ধোঁয়ার কুন্ডলি ওপরে উঠে গেল। আমরা ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি পিছিয়ে এলাম। কিন্তু আমাদের অল্প বয়েস, রক্ত গরম। কৌতুহলের কাছে ভয় পরাস্ত হল। অপদেবতা হলেও, স্পর্শ না করলে কিছু বলে না। আমরা আবার আরেকটু এগিয়ে গেলাম। আমি কোকোর হাতে অন্য রাংটা দিলাম। সেটাও জলে ছোঁয়ানো মাত্র গলে গেল। আর ঠিক তক্ষুণি আমার মাথায় বিদ্যুতের মতন চিন্তা খেলে গেল। এই সুযোগ। কোকোকে অপদেবতার কাছে উৎসর্গ করব। অপদেবতাও শান্ত হবেন, আমিও শত্রুর হাত থেকে বাঁচব। ভাবামাত্র আমি কোকোকে দিলাম এক ধাক্কা। সে জলে পড়ে মুহূর্ত্যের মধ্যে মিলিয়ে গেল। হাওয়ায় ভেসে রইল শুধু একটা ধোঁয়ার কুন্ডলি।"

    +++++++++++++++++++++++++++

    গল্প শেষ হবার পরে সুবিমলবাবু নিজের ঘরে চলে গেছিলেন। বাকি রাতটুকু আমিও ঘুমোইনি। ভোরের আলো ফুটতেই আমি আর সুবিমলবাবু গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছি। সেরকমই কথা ছিল। উদ্দেশ্য জলাশয়টা খুঁজে বের করা। আসলে সুবিমলবাবু যেগুলোকে জলাশয় বলছিলেন সেগুলো আসলে উষ্ণ প্রস্রবণ, কিন্তু তীব্র অ্যাসিডের প্রস্রবণ। এছাড়াও তীব্র ক্ষারের প্রস্রবণও আছে, আছে ক্যালসিয়াম-কার্বনেটের প্রস্রবণ। এখন সেগুলো সব খুঁজে দেখা অসম্ভব। কিন্তু সুবিমলবাবুর কৌতুহল মেটাতে কয়েকটা দেখা যেতে পারে - এইরকমই ভেবেছিলাম।  

    এমনিতেও ইচ্ছে ছিল নরিস গিজার বেসিনে যাব। সুবিমলবাবুকে সেকথা বললাম। উনি কিছু বললেন না। আজ সুবিমলবাবু খুবই চুপচাপ। অন্তর্মগ্ন। কী জানি মনের মধ্যে কী চলছে। আমাদের লজ থেকে নরিস গিজার বেসিন প্রায় আধঘন্টার ড্রাইভ। যখন পৌঁছলাম, তখন সূর্য ভালমতনই উঠে গেছে, কিন্তু টুরিস্টের দেখা নেই। আমরা অবশ্য খুবই ভোরে এসেছি। পার্কিং লটে আমাদের গাড়িটাই একমাত্র গাড়ি। ত্রিসীমানায় আর কেউ নেই। পার্কিং লট থেকে নেবে গিজারের দিকে যেতে যেতে সুবিমলবাবু দেখলাম চনমনে হয়ে উঠলেন। দু-একবার চাপা গলায় বললেন, 'এটাই, এটাই সেই জায়গা।' মিনিট দুয়েক হাঁটতেই গিজারের সামনে এসে পড়লাম। চারদিকে একটা বেড়া দেওয়া, গিজারের কাছে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞার বোর্ড টাঙান। একটু এগোতেই চ্যাটালো একটা পাথর নজরে এল। ঠিক যেরকম সুবিমলবাবু বলেছিলেন। সুবিমলবাবু বাচ্চাদের মতন চঞ্চল আর উত্তেজিত হয়ে পড়েছেন। বেড়া ডিঙিয়ে চলে গেলেন পাথরের ওপরের, একেবারে আগা অব্দি। বোর্ডে লেখা নিষেধ মানার সময় এটা নয়। পেছন পেছন আমিও গেলাম। উজ্জ্বল নীল রঙের অ্যাসিডিক গিজার থেকে হাল্কা ধোঁয়া উঠছে, ঠিক যেমন সুবিমলবাবু বলেছিলেন। উনি এখন পাথরের আগায় উবু হয়ে বসে। আর ঠিক তক্ষুণি আমার মাথায় বিদ্যুতের মতন চিন্তা খেলে গেল। এই সুযোগ। পনেরো হাজার বছরের পুরনো প্রতিশোধ। আমি চস্কাকে দিলাম এক ধাক্কা। সে জলে পড়ে মুহূর্ত্যের মধ্যে মিলিয়ে গেল। হাওয়ায় ভেসে রইল শুধু একটা ধোঁয়ার কুন্ডলি।

    আমি দ্রুত উল্টোদিকে হেঁটে একটা জায়গায় গেলাম। সেখানে স্তুপীকৃত পাথর রাখা রয়েছে। এসব জায়গা আমার সব চেনা। পাথরগুলো হাত দিয়ে সরাতে লাগলাম। খুব শক্ত হয়ে মাটির সঙ্গে আটকে গেছে। অন্য পাথর দিয়ে মেরে মেরে কোনরকমে পাথরগুলো সরিয়ে যা খুঁজছিলাম সেটা পেলাম। একটা লুকনো গহ্বর। পনেরো হাজার বছরেও যার সন্ধান আর কেউ পায়নি। হাত ঢুকিয়ে বের করে আনলাম একটা বাইসনের হাড় আর একটা ভারী তেকোনা পাথর। চস্কাকে মারব বলে যে অস্ত্র আজ থেকে পনেরো হাজার বছর আগে আমি লুকিয়ে রেখেছিলাম।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • গপ্পো | ২৯ জুলাই ২০২২ | ১৬০৮ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
     কবিতা - S S CHAUDHURI
    আরও পড়ুন
    ইঁদুর  - Anirban M
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • শঙ্খ | 203.132.214.71 | ২৯ জুলাই ২০২২ ১৫:২২510537
  • বাহ, খাসা! সেট আপ দুর্দান্ত লাগলো। সুবিমল বাবুর গল্পের শেষের দিকটায় এসে ক্লাইম্যাক্স একটু একটু আন্দাজ করছিলুম ,কিন্তু লাস্ট প্যারাটা পুরো ট্রাম্প কার্ড। সবকটা প্রপস কাজে লেগেছে। 
  • যোষিতা | ২৯ জুলাই ২০২২ ১৫:৩৬510538
  • দারুণ।
  • Ranjan Roy | ২৯ জুলাই ২০২২ ১৫:৪৮510539
  • অসাধারণ! কোন কথা হবে না। 
  • | ২৯ জুলাই ২০২২ ১৬:১৩510540
  • দারুণ দারুণ। 
  • kk | 2601:448:c400:9fe0:8035:c744:dcb5:d24 | ২৯ জুলাই ২০২২ ১৯:৩২510547
  • আরিব্বাস!!
  • dc | 2401:4900:1f2b:e6cf:3c8f:d7d5:6772:51da | ২৯ জুলাই ২০২২ ২০:১২510550
  • আমারও গল্পটা ভালো লাগলো, তবে শেষটা প্রেডিক্টেবল মনে হলো। 
  • Abhyu | 97.81.101.181 | ২৯ জুলাই ২০২২ ২০:২১510551
  • দুর্দান্ত। ন্যাড়াদার গল্পের একটা স্টাইল আছে তাই শেষটা আমিও আন্দাজ করতে পেরেছিলাম। খুব ভালো লাগল লেখাটা। বেশ একটা ঘনাদা টাইপ - হয় নি ফর শিওর, কিন্তু হওয়াটা অসম্ভব কিছু না স্টাইল।
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ২৯ জুলাই ২০২২ ২৩:১৫510557
  • নরিস গিজার বেসিনের চমৎকার ব‍্য্য্যবহার হয়েছে। গল্পে সাংকৃত‍্যায়ন এবং শরদিন্দু পাঠের একটা মিশ্র অনুভূতি হচ্ছিল। গল্প ভালো লেগেছে।
  • Ranjan Roy | ৩০ জুলাই ২০২২ ০০:১০510561
  • "গল্পে সাংকৃত‍্যায়ন এবং শরদিন্দু পাঠের একটা মিশ্র অনুভূতি হচ্ছিল।"
    --একদম। 
    হ্যাঁ, শেষটা প্রেডিক্টেবল হলেও লেখকের কলমের গুণে বেশ উতরে গেছে।
  • সম্বিৎ | ৩০ জুলাই ২০২২ ১১:১১510569
  • পরের বার গল্প লিখলে একটা খেলা খেলতে পারি আমরা। আমি থ্রি-কোয়ার্টার লিখে ছেড়ে দেব। অন্যরা সেটা শেষ করবে। তারপরে আমি আমার শেষটা পোস্ট করব। যার শেষটা আমার শেষের সঙ্গে সবথেকে বেশি মিলবে তাকে কেকে প্রাইজ দেবে।
  • যোষিতা | ৩০ জুলাই ২০২২ ১৬:১৯510575
  • ক্লাইম্যাক্সে একটি ত্রুটি ধরা পড়ল।
    কোকো ও চস্কা হরিণ মারা থেকে ছাল ছাড়ানো এবং ঐ অ্যাসিডের লেক অবধি যাওয়া পর্যন্ত কেওই কারোকে চোখের আড়াল করেনি। তো কোকো তার অস্ত্র লুকোলো কখন? কারণ লেকে যাবার পর তো কোকো মরেই গেল।
  • সুকি | 49.207.220.178 | ৩০ জুলাই ২০২২ ১৭:১৫510577
  • জমাটি হয়েছে ন্যাড়াদা - 
  • র২হ | 2601:c6:c87f:c858:f44a:3be5:578e:7338 | ৩০ জুলাই ২০২২ ১৭:৩১510578
  • আমি আবার একদমই ধরতে পারিনি। বরং ভাবছিলাম একজন লোক আরবিট ভোররাতে উঠে নিজেকে জাতিস্মর বলে দাবি করছেন আর কথক তেমন কোন প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে এতক্ষন গল্প শুনছেন, এ কী কেস? 
    ব্যাপক!
  • guru | 103.170.182.185 | ৩০ জুলাই ২০২২ ১৯:৫৪510579
  • অসম্ভব ভালো কল্পনাশক্তি | লেখককে সাধুবাদ জানাই |
  • guru | 103.170.182.185 | ৩০ জুলাই ২০২২ ১৯:৫৮510580
  • আপনার গল্পটি কোনো youtube চ্যানেল যেমন MIDNIGHT HORROR STATION বা এইরকম কেউ পেলে লুফে নেবে | অন্তত ২৫০০০ ভিউস তো হবেই আপনার গল্পটিতে |
  • kk | 2601:448:c400:9fe0:cc13:15c8:c7e8:3826 | ৩০ জুলাই ২০২২ ২১:৪৯510582
  • আমিও ধরতে পারিনি। আমি ভাবছিলাম এই কথক তো খুব ওপন মাইন্ডেড। রাতবিরেতে একজন সদ্যচেনা লোকের আনইউজুয়াল গল্প বেশ মন দিয়েই শুনলেন। কোনোভাবে রিয়াক্টও করলেন না। কী সুন্দর নন-জাজমেন্টাল।
    আমি ন্যাড়াদাকেই একটা প্রাইজ দেবো। সেটা হচ্ছে এইরকম জাতিস্মর-মার্ডার মিস্ট্রি- ইয়েলোস্টোন সম্বলিত গল্প দিয়েও উনি আমার মধ্যেকার পেটুক সত্বাকে [দামু নাম কি আর শুধুশুধুই বলেছি?]ছুঁয়ে যেতে পেরেছেন সেই কৃতিত্বের জন্য। কোকো ও চস্কা শুনে আমার কোকো পাউডার ও মাখ্ন দিয়ে তৈরী কোনো লোভনীয় খাবারের কথাই মনে হয়েছে।
  • সম্বিৎ | ৩১ জুলাই ২০২২ ১৩:৩৯510610
  • যোষিতাদির অবজার্ভেশনকে ১০০/১০০। ওটা ঢোকান উচিত ছিল। 
     
    কেকে, নামগুলো আমি পুরনো ইন্ডিয়ান নামের একটা ডিরেক্টরি থেকে বের করেছিলাম। 
     
    আর একটা কথা বলে নেওয়া ভাল। লেখাটা দুবছর আগে শুরু করেছিলাম। শেষটা লিখেছি সম্প্রতি। কিন্তু এই দু বছরে অ্যামেরিকার হিউম্যান মাইগ্রেশন নিয়ে নতুন তথ্যভিত্তিক থিওরি এসেছে যে প্রথম মানুষ হয়ত ল্যান্ড ব্রিজ ব্যবহারের সময়ে - বা আগেও হতে পারে - জলপথে অ্যামেরিকায় এসেছিল। তাতে অবশ্য গল্পের কিছু পরিবর্তন হয়না।
  • স্বাতী রায় | 117.194.38.240 | ৩১ জুলাই ২০২২ ১৬:১১510619
  • ঋতুপর্ণর সিনেমার মতন স্মুথ গল্প। সত্যজিত আর শরদিন্দুর পাঞ্চ যেন।   কিন্তু কেমন যেন জমিল না। হয়ত জাতিস্মরতাটা হজম হল না বলেই। 
  • :|: | 174.251.167.168 | ০১ আগস্ট ২০২২ ০৫:৪৪510640
  • ৩০ জুলাই ২০২২ ১১:১১-র আইডিয়াটা ভালো। লাস্ট পার্টটা লিখে রাখবেন আর অন্যরা তাদের গেস টাইপ করে একটা সাবমিট বাটন প্রেস করলেই একমাত্র সেই অংশটুকু পড়তে পারবেন। নইলে আবার সন্দ হবে আমাদের অনুমানটা পড়ে নিয়ে শেষটা বদলে দিলেন কিনা! 
     
    ভালো গল্প। জাতিস্মরের সঙ্গে একটু টেলিপ্যাথি এলে মানিকবাবুর ট্রিবিউটটা কমপ্লিট হতো। :)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে প্রতিক্রিয়া দিন