এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  পরিবেশ

  • কার বোঝা কে বয়?

    স্বাতী রায়
    আলোচনা | পরিবেশ | ০৫ জুন ২০২২ | ১৯৯৬ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)

  • মিঃ হেঙ্কেল ছিলেন যশোরের ম্যাজিস্ট্রেট। কাজের খাতিরে তাঁকে কলকাতা- যশোর করতে হত। নদীপথে। সে পথের দুধারে গভীরতম জঙ্গল, জনবসতি নেই প্রায়। জিনিসপত্র মেলে না। তাহলে উপায়? সাহেবের বাচ্চা, হুকুম দিলেন, জঙ্গল কেটে বাজার বসাও। তৈরি হল হেঙ্কেলগঞ্জ, আজকের হিঙ্গলগঞ্জ। ১৭৮৪ সালে সেই সাহেবই বোর্ড অফ রেভেনিউ-এর কাছে প্রস্তাব দিলেন যে সুন্দরবনের জমিতে জঙ্গল সাফ করে চাষের কাজ করে তার থেকে খাজনা আদায় করা যাক। সেই শুরু, যদিও সেই প্রাথমিক চেষ্টা খুব সফল বলা যায় না। (১)

    ১৮১৮ সালে কোম্পানি বাহাদুর ঠিক করলেন যে গঙ্গাসাগরে বন কাটানো হবে। সেজন্য প্রতি ভাগ হাজার টাকা হিসেবে মোট আড়াইশ ভাগে জমি দেওয়া হবে। কলকাতার বাবুরা সব লাফিয়ে উঠে কিনতে গেলেন। বন পরিষ্কার করে প্রথমে তুলার চাষ হবে। এবং সেখানে জাহাজের জন্য সকল সরঞ্জাম ও খাদ্যদ্রব্যের দোকান ও মহাজনের গোলা হবে। সমুদ্রের ধারে ঘর তোলা হবে ও সমুদ্রে স্নান করার ব্যবস্থা করা হবে। টেলিগ্রাফ, পোস্ট অফিস বসানো হবে। এই জঙ্গলে এখন কেবল বাঘ ইত্যাদি জন্তু জানোয়ার থাকে আর খুবই অস্বাস্থ্যকর জঙ্গল। সে অতি রম্য জায়গা হবে।(২)

    এইসবই আধুনিক ইতিহাসের সুন্দরবনের উন্নয়নের সংগঠিত প্রচেষ্টা। সেই সঙ্গে আছে পর্যটনের প্রাথমিক ছক। সেদিনের পরে আজ দুশো বছরেরও বেশি কেটে গেছে। আজকের গঙ্গাসাগর দ্বীপ ঘন জঙ্গলহীন। গঙ্গা থেকে মাতলা নদী অবধি আগেকার সেই জঙ্গল আর নেই। সম্প্রতি হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক (৩) বিভিন্ন ম্যাপের তথ্য বিশ্লেষণ করে জানিয়েছেন যে ১৭৭৬ সালে (বর্তমান ভারতের অংশের) যে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বন ছিল প্রায় সাড়ে ছয় হাজার বর্গকিলোমিটার এখন কমতে কমতে ২০১৪ সালে সেটা দাঁড়িয়েছে সাড়ে আঠেরোশ বর্গ কিমিতে, অর্থাৎ ৭২ শতাংশ ম্যানগ্রোভ-বন স্রেফ উধাও। সরকারি হিসেব মতে, অবশ্য ভারতীয় সুন্দরবন বলতে আজও হুগলি থেকে ইছামতী -কালিন্দী -রায়মঙ্গল, উত্তরে ড্যাম্পিয়ের-হজেস লাইন থেকে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। তার একটা বড় অংশেই সুন্দরবনের সুন্দরী গাছ প্রায় স্মৃতি।

    অথচ এই সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ জঙ্গলই আয়লা, আমফানের মতন মারাত্মক সাইক্লোনের সময় কলকাতার সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়ায়। জলস্ফীতির হাত থেকে বাঁচায়। এখানকার জীববৈচিত্র্যর কথা তো সবাই জানি। ভারতে যত রকমের ম্যানগ্রোভ গাছ হয় তার ৯০ শতাংশ এখানে মেলে। সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে জানা গেছে যে এমনি সাধারণ বনভূমির তুলনায় ম্যানগ্রোভের (এবং সেই সঙ্গে উপকূলীয় ইকোসিস্টেমের) পরিবেশের থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড শুষে নেবার এবং জমিয়ে রাখার ক্ষমতা প্রায় তিন-চার গুণ বেশি। (৪) এই উপকূলীয় পরিবেশের সঞ্চিত কার্বন হল ব্লু-কার্বন। অনেক পরিবেশবিদ একে জলবায়ু বদল ঠেকানোর অন্যতম হাতিয়ার বলে ভাবছেন। পৃথিবীর প্রথম পাঁচ নীল-কার্বনের সঞ্চয়স্থলের মধ্যে আমাদের সুন্দরবন পড়ে। কাজেই একে অটুট রাখা নেহাতই দরকার।

    তবে সত্যি কথা বলতে, এসব তো কোন নতুন কথা নয়, আমরা সবাই এসব জানি। তবুও জঙ্গল কমছে। তবে আজকাল অবশ্য এর প্রধান কারণ সমুদ্র-মুখো দ্বীপের ক্ষয়। খুব সম্প্রতি ২০১৫-২০২০ সালে ম্যানগ্রোভ জঙ্গল এলাকা সামান্য বেড়েছে, আর সেটা হয়েছে মূলত মূল জঙ্গল এলাকার বাইরেই। (৫) অত্যন্ত স্বাগত বদল। পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির ফল বলা যাবে কি একে?

    তবে জঙ্গলের কমা-বাড়া চোখে দেখা যায়, তাই সেটা তবু আলোচনায় আসে। কিন্তু সুন্দরবনের সমস্যা তো এক নয়, বহু। তার কিছু দেখা যায় চোখে, কিছু আপাত অদৃশ্য। কিছু প্রাকৃতিক কারণে তৈরি, কিছু আবার মানুষের তৈরি। কিছু বিষয় নিয়ে গবেষকরা কাজ করেন, কিছু থেকে যায় তাঁদের চোখের আড়ালে। এরকমই একটা সমস্যা হল সুন্দরবনের প্লাস্টিক-দূষণ। আদ্যন্ত মানুষের তৈরি একটি সমস্যা। এবং সেই সমস্যা তৈরির মূলে যত না সুন্দরবনের মানুষ, তার থেকেও বেশি আমরা, যারা সুন্দরবনে থাকি না, কিন্তু আমাদের পাপের বোঝা তাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিই।

    আমাদের দেশে আজকের প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রি হল তিন লাখ কোটি টাকার। প্লাস্ট টইন্ডিয়ার রিপোর্ট মাফিক শুধু ২০১৮-১৯ সালেই এদেশে ব্যবহার হয়েছে ১৮৪.৫ লক্ষ মেট্রিক টন প্লাস্টিক। বছর বছর লাফিয়ে লাফিয়ে প্লাস্টিকের ব্যবহার বাড়ছে। তাল দিয়ে বাড়ছে প্লাস্টিক বর্জ্য। সরকারি তথ্য মতেই ভারতে এখন বছরে ৩৫ লক্ষ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়। পশ্চিমবঙ্গের পলিউশন কনট্রোল বোর্ডের হিসেব মত এ রাজ্যে ২০১৯-২০ সালে শুধু আর্বান লোকাল বডি থেকেই প্রায় ২.৮ লক্ষ টন প্লাস্টিক বর্জ্য বেরিয়েছে।

    ম্যাক্রো-প্লাস্টিক (> ২.৫ সেমি), মেসো-প্লাস্টিক (৫ মিমি – ২.৫ সেমি) , মাইক্রো-প্লাস্টিক (১ মাইক্রন থেকে ৫ মিমি) কত রকমের চেহারাতেই না প্লাস্টিক দূষণ ডেকে আনে। অথচ সেই প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ে আমরা যে কী ভয়ানক উদাসীন! সব রকমের প্লাস্টিক তো আর কাবাড়িওয়ালারা নেয় না। তার উপর দেশের সর্বত্র ময়লা সংগ্রহেরও ব্যবস্থা নেই। ফলে অধিকাংশ জায়গাতেই রাস্তার ধারে, গাছের তলায়, পুকুরের ধারে আর সব কিছুর সঙ্গে প্লাস্টিকের জিনিসও ডাঁই হয়ে পড়ে থাকে। শহরের দিকে অবশ্য প্লাস্টিক বা প্লাস্টিক-নয় ইত্যাদি সব রকমের বর্জ্য মিলে মিশে হাজির হয় নির্দিষ্ট জায়গায়। এদেশে মূলে বর্জ্য পৃথকীকরণ বাধ্যতামূলক নয়। এরপর প্রান্তিকতম জঞ্জাল-কুড়ানিরা হাতে হাতে সেই জঞ্জাল ঘেঁটে বিভিন্ন রকম প্লাস্টিক বেছে বেছে আলাদা করেন আর ডিলারের হাত ঘুরে সেই প্লাস্টিক হাজির হয় রিসাইকলিং ইউনিটে। তবে মোট প্লাস্টিক বর্জ্যের কম অংশই রিসাইকল হতে যায়। আজকাল অবশ্য আগের থেকে বেশি রিসাইকল করার চেষ্টা চোখে পড়ছে। ধাপায় প্লাস্টিক ওয়েস্ট রিসাইকলের জন্য প্ল্যান্ট বসেছে। সেন্ট্রাল পলিউশন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নাকি মোট ১২৬ টি প্লাস্টিক রিসাইকলিং ইউনিট আছে। (৬) যদিও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য অনুযায়ী রেজিস্টার্ড প্লাস্টিক রিসাইকল ইউনিট মাত্র ৩৬ টি। সরকার থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য মিশিয়ে রাস্তা তৈরি করাও হচ্ছে। তবু রাশি রাশি চিপস, বিস্কুট, বিভিন্ন রকমের বোতল, পানমশলার প্যাকেট, প্লাস্টিক ক্যারি ব্যাগ, সিন্থেটিক ব্যাগ ইত্যাদি ইত্যাদির জমে থাকা পাহাড় দেখলে মনে হয় কোথাও একটা কোন ঘাটতি আছে। আর সম্ভবত সেই মনে হওয়াটাই ঠিক। কারণ ২০২১ প্লাস্টিক ম্যানেজমেন্ট ইন্ডেক্স অনুসারে গভর্নেন্স, সিস্টেমিক ক্যাপাসিটি আর স্টেকহোল্ডার ম্যানেজমেন্ট সবদিক দিয়েই ভারতের অবস্থান গড় নম্বরের থেকেও বেশ নিচে।(৭) পঁচিশটি দেশের মধ্যে ভারত কুড়িতম। এদেশে গাইডলাইন আছে, হোর্ডিং-ব্যানার ইত্যাদিও আছে, কিন্তু লোকে মানে না, আর তাদের মানানোর ব্যবস্থাও নেই। না আছে মানানোর সদিচ্ছা, না আছে মানানোর মতন পরিকাঠামো।

    তাহলে ওই রিসাইকল না-হওয়া প্লাস্টিক বর্জ্যের কি হয়? জমেই থাকে পাহাড় হয়ে, কিছু হাওয়ায় উড়ে এদিক ওদিক যায়, নালা-নর্দমা বন্ধ করে, কিছু ভেসে যায় নদীর জলের সঙ্গে। ঠিক যেমন গঙ্গা ও তার শাখা-প্রশাখারা প্রতিদিন গোটা গাঙ্গেয় উপত্যকার প্লাস্টিক বর্জ্য বহন করে নিয়ে যায়। পৃথিবীর প্লাস্টিক বহনকারী নদীগুলোর মধ্যে গঙ্গা একেবারে তালিকার মাথার দিকেই। বোঝার উপর শাকের আঁটি হয়েছে সাম্প্রতিক করোনার ফলে উদ্ভূত যে রাশি রাশি মাস্ক, গ্লাভস ইত্যাদি মেডিক্যাল বর্জ্য। সব এসে পড়ে সুন্দরবনে।

    শুধু তো আর নদীবাহিত প্লাস্টিক নয়, আছে স্থানীয় প্লাস্টিক বর্জ্যও। সেজন্য অবশ্য মূলতঃ দায়ী ট্যুরিজম ইন্ড্রাস্ট্রি। এমনিতেই সুন্দরবন ট্যুরিস্টদের বেশ পছন্দের জায়গা, প্রায় বলা যায় জল-জঙ্গলের ধার দিয়ে দিয়ে যত লোকের বাস, প্রায় সমসংখ্যক লোকই এখানে বছরভ’র বেড়াতে যায়। আর ট্যুরিস্ট মানেই লক্ষ্মী। তবে সমস্যা হল ট্যুরিস্ট মানেই প্লাস্টিকের জলের বোতল, খাবারের প্যাকেজ, সাবান-শ্যাম্পুর বোতল বা স্যাশে, ডাবের জল খাওয়ার স্ট্র, সমুদ্রের ধারের প্লাস্টিকের চেয়ার ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে স্থানীয়দেরও জীবনযাত্রার মান যতই বাড়বে, ততই সংসারে প্লাস্টিকের অনুপ্রবেশ ঘটবে। টুলটা, তাকটা, চেয়ারটা – সংসারে তো জিনিস কম লাগে না, প্লাস্টিক হল দামে কম, কাজে ভালো।

    সুন্দরবনের একটা একদম অন্যরকম, অন্যত্র না-দেখা-যাওয়া সমস্যাও আছে। প্রতিবার সেখানে সাইক্লোন ইত্যাদি প্রাকৃতিক বিপর্যয় হয় আর মানবতার খাতিরে প্রচুর ব্যক্তি/ সংস্থা সেখানে ত্রাণ দিতে এগিয়ে আসেন। কিন্ত সমস্যা হল এই ত্রাণের সঙ্গে আসা প্লাস্টিক। কলকাতা সোসাইটি ফর কালচারাল হেরিটেজ নামের একটি এনজিও একটি প্রাথমিক সার্ভে করে জানিয়েছেন যে আমফান বিপর্যয়ের পরে কমপক্ষে ২৬ মেট্রিক টন প্লাস্টিক সুন্দরবনে এসে জমা হয়েছে। ইয়াসের পরেও, তুলনায় ছোট স্কেলে হলেও, এই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। বিপর্যয়ের ত্রাণ হয়ে যাচ্ছে ত্রাণের বিপর্যয়।

    আরও একটা অদ্ভুততর সমস্যার কথা বলি। আজকাল মেয়েদের শরীর-স্বাস্থ্যের দিকে একটা জোরদার সামাজিক নজর পড়েছে। দেশের কোথায় কোন বয়সের মেয়েদের মধ্যে কী ধরণের রোগ তথা মেয়েলি রোগ বেশি হয়, সেই রোগের মেডিক্যাল এবং আর্থ-সামাজিক কারণ কী, কোনটা অকুপেশনাল ডিসিস এইরকম কোন ডেটা ব্যাঙ্ক তৈরি হয়েছে বলে অবশ্য জানা নেই। সরকারও বিভিন্ন গাইডলাইন প্রকাশ করেছেন। সেইরকমই একটি সরকারি গাইডলাইনে বলা আছে, মেন্সট্রুয়াল স্বাস্থ্যের উন্নতির গ্রামের মেয়েদের মধ্যে উচ্চ মানের স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার বাড়াতে হবে এবং সেগুলো পরিবেশ-বান্ধব ভাবে ফেলার ব্যবস্থা করতে শেখাতে হবে। ফলে অনেক এনজিওই মেয়েদের উন্নতিকল্পে সমাজসেবা হিসেবে তাদের মধ্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিলি করেন। দরিদ্র সুন্দরবন কলকাতার কাছেই। তাই এখানকার গ্রামে গ্রামে দান হিসেবে বাজার চলতি ব্রান্ডেড স্যানিটারি ন্যাপকিন পৌঁছে যাচ্ছে। বিজ্ঞাপনী মহিমায় ডিসপোজেবল স্যানিটারি ন্যাপকিন এখন একটা লাইফস্টাইল আইটেমও বটে। ফলে দাতা-গ্রহীতা উভয়েই খুশি। এছাড়াও আমরা ইমার্জেন্সি শেলটারে মেয়েদের জন্য জলের ব্যবস্থা করতে না পারলে কি হবে, ত্রাণের প্যাকেটে মেয়েদের জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিন আর বাচ্চাদের জন্য প্লাস্টিকের খেলনা এখন প্রায় বাধ্যতামূলক। সমস্যা দুটো। এক, ভারতে স্যানিটারি ন্যাপকিন হল মেডিক্যাল দ্রব্য। তার ভিতরে ঠিক কি আছে না আছে তা কোম্পানি পাবলিককে জানাতে বাধ্য নয়। এদিকে স্যানিটারি ন্যাপকিনের যে সাম্প্রতিকতম সরকারি টেস্টিং প্রণালী তাতে বায়ো-ডিগ্রেডিবিলিটি তথা কম্পোস্টেবিলিটি টেস্টিং হল ঐচ্ছিক। (৮) এই সব স্যানিটারি ন্যাপকিনে প্লাস্টিক থাকে। ফলে এরা মোটেই সহজে বায়ো ডিগ্রেডেবল না। আরও সমস্যা অধিকাংশ তথাকথিত উচ্চমানের স্যানিটারি ন্যাপকিনে পেট্রলিয়াম-জাত সুপার অ্যাবজরবেন্ট পলিমার (SAP) থাকে। EDANA র ওয়েবসাইটে সামুদ্রিক বর্জ্য প্রসঙ্গে ইন্ড্রাস্ট্রির পজিশন বোঝাতে গিয়ে বলা হয়েছে SAP হল “intentionally added” মাইক্রোপ্লাস্টিক। তরল শোষণের কাজে সেটা ভাল হলেও কোন মতেই পরিবেশ-বান্ধব না। দুই আমাদের অধিকাংশ গ্রামেই কোন বর্জ্য সংগ্রহ বা তার ম্যানেজমেন্টের ন্যুনতম ব্যবস্থাও নেই। আমরা বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন গ্রামের মেয়েদের কাছে পৌঁছে দিতে পারি, কিন্তু সামাজিক বিধিনিষেধ কাটিয়ে সেই মেয়েদের পুনর্ব্যবহারযোগ্য স্যানিটারি ন্যাপকিন স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে ব্যবহার করতে শেখাতে পারি না। অথচ পরিবেশবান্ধব ডিসপোজালের বন্দোবস্তও করতে পারি না। ন্যাপকিন পোড়ানোর চুল্লি তো আর ন্যাপকিনের মতন সস্তায় মেলে না। তাহলে এই বাজার-চলতি সিঙ্গল-ইউজ ন্যাপকিন ব্যবহারের পরে যাবে কোথায়? হয় মেয়েরা লুকিয়ে চুরিয়ে কোন খালে ফেলে দেন নাহলে মাটিতে পুঁতে দেন নাহলে আদারে-পাঁদারে ফেলে দেন। একটাই বাঁচোয়া যে সুন্দরবনের সব গ্রামের সব মেয়েরা এখনও এইরকম 'উচ্চমানের ডিসপোজেবল' স্যানিটারি ন্যাপকিনের নাগাল পাননি, পেলে মোট বর্জ্যের পরিমাণ তো নেহাত কম হবে না। তখন?

    এই বিপুল পরিমাণ জমা হওয়া প্লাস্টিকের একটা বড় অংশ যায় বঙ্গোপসাগরের জলে। এছাড়াও অবশ্য সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে ফেলে আসা জালের অংশ বা বিভিন্ন মাছ ধরার যন্ত্রাদি, প্লাস্টিকের বয়া বা বিভিন্ন নৌকা-জাহাজের প্লাস্টিক বর্জ্য ইত্যাদিও জলেই ভাসে। প্লাস্টিক সমুদ্রের জলে গিয়ে পড়লে তার থেকে কী কী সমস্যা হয় তা নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। প্লাস্টিকে, বিশেষত জালে জড়িয়ে সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যু তো ঘটেই। এছাড়া প্লাস্টিকের টুকরো কীভাবে বিভিন্ন জলজ প্রাণীর শ্বাসনালীতে ঢুকে গিয়ে তাদের দম বন্ধ করে দেয় বা তাদের পেটে পৌঁছে তাদের পুষ্টিতে বিঘ্ন ঘটায় বা শরীরে বিষক্রিয়া ঘটায় সেসব বহুল প্রচারিত। প্লাস্টিকে পেট বোঝাই হয়ে তিমি মাছের বা বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যুর খবর তো মাঝে মাঝেই পাওয়া যায়। এছাড়াও মাইক্রোপ্লাস্টিক বিভিন্ন জীবাণুর বাহক হিসেবে কাজ করে, আর শরীরে ঢুকলে বিভিন্ন রকমের অনাকাঙ্খিত শারীরবৃত্তীয় বদল আনে। যার ফলে কোরাল রিফ তৈরি হওয়া ব্যাহত হওয়া জাতীয় বিভিন্ন বদল আসে। অবশ্য শুধু সামুদ্রিক প্রাণীর পেটেই না, সুন্দরবন এলাকার বেশ কিছু খাঁড়ির মাছের প্রজাতির মধ্যেও প্লাস্টিক পাওয়া গেছে। বিপন্ন হচ্ছে নদীর জলের প্রাণীদের জীবন। এমনকি পাখিরাও। আর এই সব মাছ বা সি-ফুডের মারফৎ এই মাইক্রোপ্লাস্টিক যখন মানুষের শরীরে এসে জমা হয় তখন সে বিভিন্ন অর্গানে গিয়ে জমতেই থাকে। সম্প্রতি তো মানুষের মল, মূত্র, রক্তেও মাইক্রোপ্লাস্টিক মিলেছে। মানুষের শরীরে তার প্রভাব নিয়ে আরও অনেক গবেষণা দরকার। এছাড়াও খাদ্য-শৃংখলের বিবিধ ধাপের মধ্যে দিয়ে যখন মাইক্রোপ্লাস্টিক যেতে থাকে, তখন প্রতিটি ধাপেই বিভিন্ন ধরণের জীবের উপর মাইক্রোপ্লাস্টিকের কী প্রভাব সে নিয়েও বিশদে গবেষনা হওয়া দরকার। কোন কোন প্রাণীর সন্তান-জন্মদান ক্ষমতার বদল, হরমোনের পরিবর্তন এইরকম কিছু কিছু ক্ষতিকারক সম্ভাবনার কথা গবেষনার মারফত এখনই উঠে আসছে। আমরা তো প্লাস্টিক জঞ্জালের স্তূপে ফেলেই খালাস, তার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে যদিও কেউ রেহাই পাব না, তবু সবার আগে ভুগবেন সমুদ্রের মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া প্রভৃতির উপর বেশি নির্ভরশীল উপকূলের বাসিন্দারাই।

    অবশ্য ভোগান্তি তাদের কপালে আছেই। কারণ জমা হওয়া বিশাল পরিমাণ প্লাস্টিকের সবটাই তো জল অবধি যায় না, কিছুটা থেকে যায় স্থলেই। আবার সমুদ্রের থেকে কিছুটা প্লাস্টিক বর্জ্য ঢেউয়ের সঙ্গে তীরেও ফিরে আসে। সব মিলিয়ে সুন্দরবন যেন একটা “Plastic Cesspit” হয়ে উঠছে। (৯) প্রকৃতপক্ষে আদিয়েল ২০১৭ সালের তথ্যের ভিত্তিতে ভারতীয় সুন্দরবনের উপকূল ও বিভিন্ন নদীর খাঁড়ি বরাবার প্লাস্টিক বর্জ্যের যে পরিমাণ বলেছেন সেটা আজ কী হয়েছে ভাবতেও ভয় লাগে।

    ম্যানগ্রোভ জঙ্গল কিছুটা প্লাস্টিক আটকে দেওয়ার কাজও করে। তবে ম্যানগ্রোভ জঙ্গলের শ্বাসমূল যদি প্লাস্টিকে ঢাকা পড়ে যায়, তাহলে আবার গাছের বাড়ে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। মাইক্রোপ্লাস্টিক যখন মাটির তলায় চলে যায়, তখন সে জমেই থাকে। তাতে মাটির বাঁধন আলগা হয়ে যায়। জমির জল-ধারণ ক্ষমতার পরিবর্তন হয়ে যায়। আর সেই মাইক্রোপ্লাস্টিক যখন ম্যানগ্রোভ জঙ্গল পেরিয়ে চাষের জমিতে গিয়ে জমা হয়, সে জমিতে কেঁচোদের ধরণ-ধারণ বদলে যায়, ফলে মাটির জোর কমে। বিভিন্ন রকমের ফিজিক্যাল ও কেমিক্যাল বদলের ফলে সেখানকার ফসলের গুণগত মান পড়ে যেতে পারে, ফসলের ফলন বদলে যায় । কেউ আবার বলছেন সেই জায়গার গাছে বিভিন্ন ক্ষতিকর ধাতুর উপস্থিতির হার স্বাভাবিকের থেকে বেশি হয়। তবে স্থল-অঞ্চলের প্লাস্টিক দূষণ এবং নির্দিষ্ট এলাকার পরিবেশের উপর তার প্রভাব নিয়ে এতই কম গবেষণা হয়েছে যে এখনও এ বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছুই বলা যায় না। বিশেষত সুন্দরবনের স্থল-অঞ্চলে প্লাস্টিক-দূষণের এলাকাভিত্তিক মান-নির্ধারণ, আর গাছপালা-পশু-পাখি-জলজ প্রাণী, স্থানীয় মানুষ ও তাঁদের জীবন ধারণের উপায়ের উপর সেই দূষণের প্রভাব ইত্যাদি বিষয়ে আরও অনেক গবেষণার দরকার।

    তবে এক্ষেত্রে Absence of evidence কে জোর দিয়ে evidence of absence বলা যায় না। তাই আরও গবেষণার উপর জোর দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্লাস্টিক দূষণ কমানোর চেষ্টা করাই ভাল। সেজন্য দরকার প্লাস্টিক উৎপাদনের উপর নিয়ন্ত্রণ, নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, রিসাইক্লিংয়ের বহুল ব্যবস্থা এবং যথাযথ বর্জ্যের ডিসপোজাল। সেই সঙ্গে এটাও মনে রাখার যে প্লাস্টিক কিন্তু আজীবন রিসাইকল করা যাবে না। আর বর্তমানে বাজার চলতি যেসব রিসাইকলিং এর পদ্ধতি আছে, পরিবেশবিদরা সে সেই পদ্ধতিগুলো নিয়েও খুব উচ্ছ্বসিত তা নয়। সেখানেও আরও অনেক গবেষণা দরকার। তাই উৎপাদন ও ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণই এখনও অবধি সব থেকে কার্যকরী উপায়।

    এত কিছুর মধ্যে একটাই আশার কথা, এই জুলাই মাস থেকে ভারতে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের জিনিস সম্পুর্ণ ভাবে ব্যান হচ্ছে। তালিকায় আছে ক্যান্ডি বা আইসক্রিম স্টিক, বেলুনের প্লাস্টিক স্টিক, সাজানোর জন্য থার্মোকল, প্লাস্টিক কাটলারি, প্ল্যাকিং ফিল্ম, পিভিসি ব্যানার ইত্যাদি বহু কিছু। নিয়ন্ত্রণ অ্যানা হচ্ছে ক্যারি ব্যাগের পুরুত্বের উপরও। এই বছরের পর ক্যারি ব্যাগ ১২০ মাইক্রনের বেশি পুরু হতেই হবে। (১০) খুবই ভাল উদ্যোগ। আশা করা যাক এটি ঠিকঠাক ভাবে ইমপ্লিমেন্ট করা হবে। এছাড়াও চার রকমের প্লাস্টিক প্যাকেজিং এর উৎপাদক, আমদানিকারী ও ব্রান্ডমালিক এক্সটেন্ডেড প্রোডিউসার রেস্পন্সিবিলিটি গাইডলাইনের আওতায় আসবে জুলাই মাস থেকে। রিইউজ, রিসাইকলিং, রিসাইকলড প্লাস্টিকের ব্যবহার আর সময়কাল ফুরোলে ডিসপোজাল সবই তাদের দায়িত্ব। (১১)

    তবু প্রশ্ন থাকে তাতেও কতটা সুরাহা হবে? বর্জ্য তৈরি হয় অনেকটাই জীবনযাপনের কারণে। যত বেশি জিনিস কেনা, তত বেশি ক্যারি ব্যাগ, যত আমাদের ইচ্ছেমত দিনে রাতে জোম্যাটো, সুইগিতে অর্ডার দেওয়ার স্বাধীনতা (আর সেটাকেই একটা উন্নততর জীবনযাত্রার মান বলে প্রচারের ঢক্কানিনাদ) তত বাড়িতে “ফ্রি-তে পাওয়া” প্লাস্টিকের বাটির স্তুপ ইত্যাদি থেকেই তো জঞ্জালের জন্ম। আমাদের নিজেদের অভ্যাসে বদল না আনলে কী আদৌ এই বিপুল এবং ক্রমবর্ধমান প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ আদৌ কমানো সম্ভব? নাকি রক্তের অন্তর্গত বিপন্ন বিস্ময়ের সঙ্গে সঙ্গে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি মেনে নিয়েই আমরা জীবনকে সাজাব? আর আমাদের সেই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একসুরে বাঁধা পড়ে থাকবে সুন্দরবন ও সেখানকার মানুষের ভবিষ্যৎ।


    তথ্য-তালিকা:

    ১) Hunter, W. W. (1875). A Statistical Account of Bengal Vol 1 Districts of the 24 Parganas and Sundarban. London: Trubner & Co.

    ২) বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্রজেন্দ্রনাথ (১৩৩৯). সংবাদপত্রে সেকালের কথা ঃ প্রথম খণ্ড ১৮১৮-১৮৩০. বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ মন্দির, কলকাতা

    ৩) Ghosh, Aditya & Schmidt, Susanne & Fickert, Thomas & Nüsser, Marcus. (2015). The Indian Sundarban Mangrove Forests: History, Utilization, Conservation Strategies and Local Perception. Diversity. 7. 149-169. 10.3390/d7020149.

    ৪) Nyanga, Charles. (2020). The Role of Mangroves Forests in Decarbonizing the Atmosphere. 10.5772/intechopen.92249.

    ৫) Samanta, Sourav & Hazra, Sugata & Mondal, Partho & Chanda, Abhra & Giri, Sandip & French, Jon & Nicholls, Robert. (2021). Assessment and Attribution of Mangrove Forest Changes in the Indian Sundarbans from 2000 to 2020. Remote Sensing. 13. 10.3390/rs13244957.

    ৬) Central Pollution Control Board. Plastic Recycling units in West Bengal.

    ৭) Economist Impact and Nippon Foundation. (2021). From Intention To Action: India’s Plastic Management Challenge

    ৮) Product Manual For Sanitary Napkins According To IS 5405:2019. (2020, September).

    ৯) Adyel, Tanveer & Macreadie, Peter. (2021). World's Largest Mangrove Forest Becoming Plastic Cesspit. Frontiers in Marine Science. 8. 10.3389/fmars.2021.766876.

    ১০) Notice for Prohibiting Production, Stocking, Distribution, Sale & Use of Single Use Plastic (SUP) Items. (2022, February 4).

    ১১) The Gazette of India. (2022, February 16).
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৫ জুন ২০২২ | ১৯৯৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | ০৫ জুন ২০২২ ১৪:১১508503
  • বেশ বিস্তারিতভাবে ধরা হয়েছে সমস্যাটা।  
    ১) জলবাহিত মাইক্রোপ্ল্যাস্টিকের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান সিগারেটের বাট'এর। এরপরেই সম্ভবত সফট ড্রিঙ্কসের স্ট্র। স্ট্র যদিবা কালেকশান এন্ড রিসাইকলিঙের চজ্রে আনা যায়, সিগারেটের বাট তো প্রায় সর্বত্র অমনিপ্রেজেন্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে। 
     
    ২) প্ল্যাস্টিকদূষণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ইলেকট্রিনক বর্জ্যজনিত দূষণ। অধিকাংশ জনপদে ইলেকট্রনিক বর্জ্য ও তার  দূষণ ইত্যাদি নিয়ে ধারণা নেই।  বর্জ্য সংগ্রহের  সুবিধাও তেমন নেই। 
     
    ৩) বঙ্গোপসাগর  উপকূলে ম্যানগ্রোভ বৃদ্ধির জন্য যেমন সচেষ্ট হওয়া দরকার তেমনি  সুন্দরবন অঞ্চল ও সমগ্র দক্ষিণবঙ্গ থেকেই মানুষজন কিছু সরান যায় কিনা,  কলকাতা থেকে রাজধানী সরানো নিয়েও চিন্তাভাবনা করা দরকার। 
  • স্বাতী রায় | 117.194.34.255 | ০৫ জুন ২০২২ ১৪:৪৮508510
  • এই লেখা ঈপ্সিতা পালের অনুপ্রেরণা ছাড়া লেখা হত না। করোনা কালের  পৃথিবীতে বহুগুণ বেড়ে যাওয়া প্লাস্টিক বর্জ্যের ভয়াবহ ভলিউমের দিকে ঈপ্সিতা ই প্রথম আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অনেক ধন্যবাদ ঈপ্সিতা কে। 
  • স্বাতী রায় | 117.194.34.255 | ০৫ জুন ২০২২ ১৪:৫৭508511
  • @দ একদম ঠিক। সিগারেট বাটের কথা লেখা হয়নি। কিন্তু খুবই বিপজ্জনক। । 
     
    ই ওয়েস্ট নিয়েও অনেক লেখা পত্তর হওয়া দরকার। সচেতনতা বাড়ানোর  তাছাড়া আর কী ই বা উপায়। আর সুন্দরবনের মানুষ এখন দাবার ঘুঁটি হয়ে গেছে।  কেউ না ভেবে চিন্তে পাঁচ লাখ ম্যানগ্রোভ লাগিয়ে ফেলতে বলেন, জমি আসবে  কোথা থেকে সে না ভেবেই। কেউ আবার বছর বছর ত্রাণ দেওয়াকেই মহত্তম কাজ বলে ভাবেন। কেউ ই সত্যি করে সমস্যার সমাধান চায় কিনা কে জানে ! তারই মধ্যে বিজ্ঞানী রা যখন বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ক্ষয় রোধের, ম্যানগ্রোভ লাগানোর সেই টুকুই ভাল লাগে। 
  • নিরমাল্লো | 220.158.144.40 | ০৫ জুন ২০২২ ১৭:১৮508518
  • ৭ নম্বর সাইটেশানটা দেখলুম। খুব কনভিন্সিং মনে হল না। ইন্ডিয়ায় প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রি লেভেলে তত আহামরি কিছু না হলেও, ঘরের প্লাস্টিক চট করে ফেলা যায় না। TERI এর ২০১৯ এর রিপোর্ট অনুযায়ী ৬০% প্লাস্টিক আমাদের দেশে রিসাইকল হয়। একটু পুরোনো রিপোর্ট দেখলে (২০১৪-১৫) দেখা যাবে, পার ক্যাপিটা প্লাস্টিক ইউজে ভারত কিন্তু গ্লোবাল এভারেজ (২৮ কেজি) এর থেকে ঢের নিচে আছে (১১ কেজি)। এটা সত্যি যে প্লাস্টিক ইউজ বাড়ছে, এবং বাড়বেও। একটা ষ্ট্যাণ্ডার্ড কোরিলেশান আছে জিডিপির সাথে প্লাস্টিক ব্যবহারের। সেটা অনেকটা এক্সপোনেশিয়াল কার্ভের মত বাড়ে। ভারত সেখানে অনেক পিছিয়ে আছে প্লাস্টিক ব্যবহারে।
     
    আমি বলছি না যে প্লাস্টিক ব্যবহার ভালো কিছু। এবং অহেতুক প্লাস্টিক ব্যবহার কমানোই দরকার। তবে প্লাস্টিক পলুশানে ভারত ভয়ানক কিছু কন্ট্রিবিউট করে বলে মনে হয় না। সমুদ্রে যে প্লাস্টিক যাচ্ছে তার বেশিরভাগটাই ইয়োরোপ আর আমেরিকার দান। সেটা খুবই ভয়ঙ্কর মাত্রায় বাড়ছে।
     
    আর সত্যি বলতে কি জেনারেল ইলেক্ট্রিক এবং আরো অনেক কোম্পানি প্লাস্টিক রিসাইক্লিং এর ব্যপারে প্রচুর নতুন উন্নতি এনেছে। সেগুলো ক্রমশ ইমপ্লিমেন্টও হচ্ছে। আশা করা যায় ট্রাডিশানাল রিসাইক্লিং পদ্ধতি ক্রমশ অবসোলিট হয়ে যাবে কিছু বছরের মধ্যেই। 
  • Sara Man | ০৫ জুন ২০২২ ১৯:৪১508525
  • স্বাতীদি, একদিন প্লীজ টুথব্রাশ নিয়ে লিখো। ও বস্তুটি সারা পৃথিবীতে পর্বতসমান জমে গেছে দিন দিন আরো বাড়ছে। অথচ পলিপ্যাকের মত প্রচার নেই। বাজারে কিন্তু বাঁশের টুথব্রাশ আছে, হাতে গোণা কয়েকজন সচেতন। 
  • স্বাতী রায় | 117.194.34.255 | ০৫ জুন ২০২২ ২০:২২508532
  • ঘরের প্লাস্টিক চট করে ফেলা যায় না কিরকম? নিত্য দেখছি ভাঙ্গা প্লাস্টিকের টব , বালতি, মগ, ইউজ এন্ড থ্রো পেন ইত্যাদি সবই তো জঞ্জালের সঙ্গে ফেলা হচ্ছে।  
     
    ওই  বার্ষিক প্রোডাকশনের  ৬০% প্লাস্টিক রিসাইকল এর ডেটা টা আমিও দেখেছি। তবে মূল সুত্র পাইনি আর অন্যান্য অনেক জায়গায় আরও অনেক রকম ডেটা পেয়েছি - ২০% থেকে শুরু করে। তাই কোনটা যে ঠিক  সেটা নিঃসন্দেহ হতে পারিনি।  
     
    তবে একথা একশবার সত্যি যে পার ক্যাপিটা ভার্জিন পলিমার ইউজে ভারত অনেকটাই নিচে ( ২০১৯ এ ১৩.৬ কেজি ভার্সাস গ্লোবাল এভারেজ ৩০ কেজি ) আর আমেরিকা আমাদের থেকে অনেক উপরে, প্রায় দশ গুণ বেশি। মেরিন দূষণেও আমেরিকা অনেক এগিয়ে সে কথাও একশবার সত্যি। কিন্তু সমস্যা এই যে যে কোন বিষয়ের গবেষণায় এবং সমস্যার সমাধানের জন্য প্রথম বিশ্ব যে খরচ করতে পারে, আমরা তার এক ক্ষুদ্র ভগ্নাংশও  অনেক সময় করতে পারিনা। তার উপর আমাদের যা খরচ হয় সেটার এফিসিয়েন্সিও সন্দেহাতীত নয়। মানুষের দামও আমরা কতটা দিই?  সুন্দরবনের মানুষ কোন অজানা অসুখে মরলেও , এক না যদি মহামারী হয়, তার খবরই বাইরের দুনিয়ায় এসে পৌঁছাবে কিনা কে জানে!  তাই গরীব দেশের জন্য প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিওর বলে আমার মনে হয়।  
     
    আর ভারতেও পার ক্যাপিটা কনসাম্পশন উর্ধ্বমুখী। সেই সঙ্গে মধ্যবিত্তদের মধ্যে প্রচণ্ডভাবে ইউজ এন্ড থ্রোর প্রবণতা বাড়ছে। ক্রমশঃ রিইউজ কথাটা নিম্নবিত্তের জন্য বলে ইয়ারমার্কড হওয়ার একটা প্রবণতা চোখে পড়ছে। তার উপর সরকারি টার্গেট ২৬ সালের মধ্যে  ১০ লক্ষ কোটি টাকার বাজার বানাতে হবে। এর প্রভাব কোথায় কীভাবে পড়বে কেউ জানে না।  আপনিও লিখেছেন অবশ্য যে অহেতুক প্লাস্টিক ব্যবহার কমানোই দরকার।  
     
    সেই সঙ্গে আরও একটা কথাও জরুরি মনে হয়। যে নদীগুলো সব থেকে বেশি প্লাস্টিক ক্যারি করে তাদের মধ্যে প্রথম দিকের সব কটাই এশিয়ার নদী। আর মেরিন প্লাস্টিক কিন্তু এক জায়গায় আটকে থাকে না। যেমন দেখা গেছে ভারত মহাসাগরের প্লাস্টিক আফ্রিকার তলা দিয়ে স্রোতে ভেসে গিয়ে আটলান্টিকে জমা হচ্ছে। তাই সবাই মিলেই এক যোগে সমস্যার সমাধান করাই ভাল। আমি তো নোংরা করিনি বললেও ঝামেলা এড়ানো নাও যেতে পারে।
     
    রিসাইকল ইন্ড্রাস্ট্রি নিয়ে আমার খুব ভাল ধারণা নেই। তবে যতটুকু পড়েছি তাতে মনে হয়েছে বাজার চলতি যে সকল পদ্ধতি চালু আছে সেগুলো নিয়ে পরিবেশবিদদের ভিন্ন ভিন্ন মত। আমাদের সিপিসিবি ও রিসাইকলিং নিয়ে আশাবাদী কিন্তু সেই পদ্ধতিগুলো নিয়েও অন্যরা আপত্তি তুলছেন। তাই আমার মনে হয় বিভিন্ন পদ্ধতি, তার মেরিট ডিমেরিট এবং সেই সঙ্গে ভারতে কি কি পদ্ধতি ব্যবহার হয়, এবং সর্বোপরি ভারতে রিসাইকল ইন্ড্রাস্ট্রির কি চেহারা , বিশেষত এক্স্টেন্ডেড  প্রোডিউসার রেস্পন্সিবিলিটি আর ইন্ডিপেন্ডেন্ট রিসাইকলিং ইন্ডাস্ট্রির ঠিক কি ভুমিকা এইসব কিছু নিয়ে কেউ বিশদে লিখলে খুব উপকার হয়।     
  • স্বাতী রায় | ০৫ জুন ২০২২ ২২:০০508536
  • @শারদা  বাঁশের টুথ ব্রাশ কলকাতায় কোথায় পাওয়া যায় জানো? তাহলে একটু আমাকে জানিও। 
  • kk | 2601:448:c400:9fe0:6d5f:931:20ef:2ebd | ০৫ জুন ২০২২ ২৩:৩৫508539
  • ভালো লাগলো লেখাটা। সমস্যা তো খুবই বড়, কিন্তু কেউ কেউ চেষ্টাও করছেন। সেটাও আশার কথা। বাঁশের টুথব্রাশ, বাঁশের ইউটেনসিলস। এখন অনেক খাবারের দোকানে ডেলিভারি দেন বায়ো-ডিগ্রেডেবল কার্ডবোর্ঢের বাক্সে। সঙ্গে কোনো প্লাস্টিকের ইউটেনসিলও দেননা। অনেক দোকানে ক্রেতারাও নিজেদের ছুরি-কাঁটা নিয়ে আসেন, কফির কাপ নিয়ে আসেন। সমুদ্র থেকে তোলা প্লাস্টিক দিয়ে জুতো, ঘড়ির ব্যান্ড বানানো হচ্ছে। হতে পারে সমস্যার বিশালতার তুলনায় খুবই ছোট ও ধীর সমাধানের উপায়। কিন্তু যেটুকু হয় সেইই আশার।
  • নিরমাল্লো | 220.158.144.40 | ০৬ জুন ২০২২ ০২:০৪508542
  • @স্বাতী রায়
     
    ঘরে আনা প্লাস্টিক ভারতের সাধারণ মানুষে একটু বেশিই ব্যবহার করে। যেমন প্লাস্টিকের মগের বা বালতির হাতল ভাঙার পরেও, বা শাড়ী/জামার প্যাকেট বহুবার ব্যবহার হয়। ইউজ এন্ড থ্রো সফট ড্রিঙ্কের বোতলও বেশি বার ব্যবহার হয়। ঐ TERI এর পিডিএফটাতেই পাবেন যে ডোমেস্টিক রিসাইক্লিং এও আমরা বেশ এগিয়ে আছি।
     
    আপনার কথাটা সত্যি, উচ্চ মধ্যবিত্তদের মধ্যে ইউজ এন্ড থ্রোর ব্যপারটা বাড়ছে। যেটা ফার্স্ট ওয়ার্ল্ড কান্ট্রিগুলোর মধ্যে দেখা যায়। মানে একটা গা বাঁচিয়ে সেফ থাকার চেষ্টা দেখা যায়, এই গ্রুপে। কিন্তু ভারতে এই পপুলেশান কতখানি? যতটা আরবানাইজেশান ততটাই। যাই হোক এই পয়েন্টে বেশি বলার মত ডেটা হাতে নেই। তবে কিছুদিন একটি এনজিওর সাথে পুণের মত আধা শহরে প্লাস্টিক রিসাইক্লিং নিয়ে কাজ করে আর তাদের ডেটা এনালাইজ করে মনে হয়েছে যে আমরা চট করে প্লাস্টিক ফেলে দিই না আমেরিকার মত। যেমন আমার মাকে দেখি যে দোকানের থেকে আনা আইসক্রিমের কৌটোও জমিয়ে রেখে দেয় ঘরে। 
     
    রিসাইকল ইণ্ডাস্ট্রিতে সত্যি বড় পরিবর্তন আসছে। এ নিয়ে কমেন্টে এত লেখা চাপের। ছোট করে বলি। যে প্লাস্টিক ফেলা যায় তার ৬০% হল পলিইথিলিন ও পলিপ্রপিলিন। এই দুটো জিনিস প্যাকেজিং মেটেরিয়াল হিসেবে খুব ব্যবহার হয়। এগুলো ফেলে দেবার মূল কারণ হল ভার্জিন প্লাস্টিকের খুব কম দাম হওয়া এবং রিসাইকল প্লাস্টিকের কোয়ালিটি খুব খারাপ হওয়া। দামটা বেশি হলেও এখন যে সব নতুন টেকনিক বার হচ্ছে তাতে রিসাইকল প্লাস্টিককে তার মূল মোনোমারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে। ফলে কোয়ালিটির প্রবলেম হচ্ছে না। ফ্রান্সে- আমেরিকায় অলরেডি PET এর জন্যে এই প্রসেস চালু হয়ে গেছে। বাকিদের ব্যপারেও প্রচুর রিসার্চ চলছে। আশা করা যায় খুব দ্রুতই এই ইন্ডাস্ট্রিতে পরিবর্তন আসবে। 
  • মাধুকরী কলমবাজ | ০৬ জুন ২০২২ ১১:৩৫508547
  • অত্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ এই লেখা। আমি খুব মন দিয়ে পড়লাম। খুব হতাশ লাগছে এই নিয়ে কি করে সমাধান করা যাবে।? 
  • পারমিতা | 2409:4060:e99:b4e3:72fb:fa5c:eea9:ee62 | ০৬ জুন ২০২২ ১৪:৫৩508549
  • আন্দামানের জলিবয় দ্বীপে যখন গেছিলাম বোটে ওঠার আগে জলের বোতলের জন্য 100 টাকা জমা রেখেছিল ফেরার সময় বোতল আছে দেখলে টাকা ফেরত দিয়েছিল। এভাবে সুন্দরবনে ঢোকার সময় ব্যবস্হা করা যেতে পারে।
  • মিতা ঘোষ | 103.16.31.223 | ০৬ জুন ২০২২ ১৭:১৯508550
  • আমি কোথাও একবার পড়েছিলাম, যত প্ল্যাস্টিকের প্যাকেটজাত প্রোডাক্ট আমরা কিনি, সেটা ব্যবহার করার সময় আমাদের একটা টেন্ডেন্সি থাকে তার কোণ ট্রাঙ্গেল আকারে কেটে ব্যবহার করা। দুধের প্যাকেট থেকে মশলার তাক... এটা খুব চালু একটা অভ্যেস। জেনেছি, ওই অভ্যাসটুকুতে বদল আনলেও বেশ কিছুটা বর্জ্যজনিত সমস্যা কমানো সম্ভব। খুব সুন্দর লেখা। সমস্যার জায়গাটা তুলে তো ধরেছেন, কিন্তু আমরা এর হাত থেকে যে কিভাবে রক্ষা পাব... জানা নেই।
  • স্বাতী রায় | ০৬ জুন ২০২২ ১৮:০৪508553
  • @নিরমাল্লো
     
    ওই ৬০% ফিগার নিয়ে আমি এখনও সন্দিহান।  প্লাস্ট ইন্ডিয়ার হিসেব মতে ( https://www.plastindia.org/plastic-industry-status-report )  ২০১৮-১৯ সালে এদেশে আনুমানিক ৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন প্লাস্টিক রিসাইকল হয়েছে। এইপরিমাণ সেই বছর দেশে যে পরিমাণ প্লাস্টিক কনসাম্পশন হয়েছে তার ১/৩ অংশের কম।
       
    রিসাইকল আরও ভালভাবে হলেই ভাল। শুধু সেটা করতে গিয়ে  যেন আমরা আবারও পরিবেশের আরও ক্ষতি না করে ফেলি। 
  • স্বাতী রায় | ০৬ জুন ২০২২ ১৮:১১508554
  • @kk  এই রকম ছোট ছোট বদল গুলোই তো ভরসার। 
     
     
  • স্বাতী রায় | ০৬ জুন ২০২২ ১৮:৩৩508555
  • @@দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায়, @মাধুকরী কলমবাজ , @মিতা ঘোষ  @পারমিতা ও আরও যারা যারা পড়লেন সবাইকে ধন্যবাদ।   
     
    @পারমিতা ঠিকই বলেছেন, ওই রকম কিছু ব্যবস্থা চালু করলে হয়ত আমরা সকলেই সচেতন হব।
     
    @মিতা ঘোষ, একদম ঠিক। ওই তিনকোণাটা প্যাকেট থেকে আলাদা করতে নেই।  তাতে সমস্যা বাড়ে। 
     
    কদিন আগেই বকখালি গিয়েছিলাম। একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম। সব জায়গার মতন ওখানেও ডাব বিক্রি হচ্ছে স্ট্র দিয়ে। আর ডাবের মুখটা কাটা হচ্ছে ফ্ল্যাট করে। আগে যে একটা মুখটা তুলে কাটা হত যাতে কেউ চাইলে মুখ লাগিয়ে জল খেতে পারেন, সেই ভাবে ডাবের মুখ কাটা আর দেখলাম না।  ক'বছর আগেও কিন্তু মুখটা তুলে কাটতেই দেখেছি। আমরাও বোধহয় মুখ লাগিয়ে খেতে ভুলে গেছি। এই ধরণের অভ্যাস গুলো ফিরিয়ে আনলে, দুধটা প্যাকেটের বদলে পাত্রে ভরে আনলে বা চালটা,ডালটা আটাটা প্রি-প্যাকড এর বদলে দোকানদার সৎ ভাবে মেপে ঝোলায় ভরে দিলে এইসব করলে খানিক সমস্যা কমে বইকি, কিছু বছর আগেও যেমন করা হত - তবে সেটা কতটা লাইফ স্টাইলের পরিপন্থী হবে আর কতটা সুপারমার্কেটের রোষের মুখে পড়বে তা জানা নেই। 
  • | ০৬ জুন ২০২২ ১৮:৩৫508556
  • প্ল্যস্টিক রিসাইক্লিঙের জন্য আমাদের কোম্পানির সাথে দুটো এনজিও কাজ করে। একটি এনজিও প্ল্যাস্টিক থেকে বায়ো ফুএল তৈরী করে। এরা কেবল পলিপ্যাক আর নরম বোতল নেয়। কোনওরকম হার্ড প্ল্যাস্টিক নেয় না। যেমন ভেঙ্গে যাওয়া ভিওআইপি ফোনের বডি সিপিইউএর বডি ইত্যাদি নেয় না। অন্য এনজিও প্রায় সবরকম প্ল্যাস্টিক নেয়। এরা একরকম  আধাস্বচ্ছ  জানলা দরজা বানায় যেগুলো কাএর বিকল্প হিসেবে বাড়িতে ব্যবহার করা যায়। এদের সরকারের সাথী ব্যবস্থা আছে যে যত আন্ডার প্রিভিলেজড মানুষদের বাড়ি তৈরী হবে সেখানে এইগুলো ব্যবহার হবে খর কমানোর জন্য। 
     
    কেকে যেমন বলল, জোম্যাটো আজকাল বায়ো ডিগ্রেডেবল কাটলারি দেয় খাবার ডেলিভারী করার সময়। এছাড়াও কাটলারি না নেবার জন্য উতসাহিত করে। আমি কতগুলো অর্ডারে যেন কাটলারি না নিয়ে একবার একটা অর্ডারে ১৫% অফ পেয়েছিলাম। 
     
    তবে এই বায়ো ডিগ্রেডেবল টুথ্ব্রাশ, অন্যান্য জিনিষপত্রের দাম বেশ বেশী। সরকার থেকে ভালরকম ভর্তুকি না দিলে অনেকের পক্ষেই ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। মহারাষ্ট্রে যখন পলিপ্যাক ব্যান হল তখন থেকে অনেকদিন পর্যন্ত ঐ কাপড়ের প্যাকগুলোতে রাজ্য সরকার কিছু ভর্তুকি দিত। ফলে রাস্তার ফলওয়ালা থেকে দাভেলিওয়ালা সবাই ঐগুলো ব্যবহার শুরু করল। এখন নাকি বহুল ব্যবহারের ফলে প্রোডাকশান কস্ট কমে গিয়ে দাম বেশ কমেছে শুনলাম। 
     
     
  • শিবাংশু | ০৬ জুন ২০২২ ২১:৫৪508561
  • খুবই প্রাসঙ্গিক আর বিন্যস্ত প্রতিবেদন । ভালো লাগলো। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন