এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  স্মৃতিচারণ

  • ভারতীয় কমিউনিস্টদের দৃষ্টিতে গান্ধীজি- একটি পর্যালোচনা

    Somnath Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    স্মৃতিচারণ | ৩০ জানুয়ারি ২০২২ | ১৮৬৯ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির এক প্রধান নেতা জলিমোহন কাউল ১৯৫৩ থেকে ৬৩ কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬২ সালে চিনের ভারত আক্রমণ করা এবং সেই উপলক্ষ্যে পার্টি-বিভাজনের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি কমিউনিস্ট পার্টি ত্যাগ করেন। শেষজীবনে তিনি উড়িষ্যার গান্ধিয়ান লেবার ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যুক্ত হন। তাঁর আত্মজীবনী ইন সার্চ অফ বেটার ওয়ার্ল্ড’ যেন এক বৃত্তপথে ঘুরে আসার বর্ণনা, তিনি রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে গান্ধীবাদী ছিলেন। কলেজের পড়বার সময় রজনী পাম দত্তের ‘ইন্ডিয়া টুডে’ বইটি পড়ার ফলে তাঁর মনে হয় গান্ধীজির সংগ্রামের পথ ভ্রান্ত এবং খুব দ্রুত কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হন। আবার জীবনের মধ্যপর্বে কমিউনিস্ট রাজনীতির বিভিন্ন ভ্রান্তি, বিশেষতঃ জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে পার্টির একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত দেখে তিনি পার্টি থেকে বেরিয়ে আসেন। পরে ক্রমশঃ আধ্যাত্মিক চেতনার গুরুত্ব উপলব্ধি করেন এবং শেষে ফের গান্ধীজির চিন্তাভাবনার উপরে আস্থাশীল হন। ভারতের উদারচেতা মুক্তিকামী মানুষের গান্ধী-বোধের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র শ্রী কাউলের লেখায় পাই- জাতীয়তা এবং আধ্যাত্মিকতা। এবং আমরা খেয়াল করলে দেখি, এই দুটি প্রসঙ্গে কমিউনিস্টরা সচরাচর নঞর্থক মতভাব পোষণ করেন। আমরা শ্রী কাউলের জীবনসঙ্গিনীর কথাও এই প্রসঙ্গে একবার উল্লেখ করে নিতে চাই, তিনি ছিলেন বাংলার কমিউনিস্ট আন্দোলনের এক প্রবাদপ্রতিম নেত্রী মণিকুন্তলা সেন- তেভাগা আন্দোলনের শীর্ষনায়িকাদের একজন। মণিকুন্তলা দেবীও পার্টিভাগের পর রাজনীতি থেকে বিদায় নেন। তিনি শেষজীবনে রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দধারার প্রতি অনুরক্ত হন এবং মৃত্যুর কিছুদিন আগে রামকৃষ্ণ মিশনে দীক্ষা গ্রহণ করেন।
     
    উপরের দৃষ্টান্তগুলি আমাদের মূল আলোচনায় কাজে আসবে, এইবার সেই প্রসঙ্গে ঢুকি। রজনী পাম দত্তের ইন্ডিয়া টু ডে বইটি ১৯১০-১৯৪০ পর্যায়ে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেছে। প্রশ্নাতীতভাবে, মুখ্য অংশ জুড়ে আছে গান্ধীজির কাজকর্মগুলি। ব্রিটিশ কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য রজনীপাম দত্ত গান্ধীজির প্রায় সমস্ত পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। তাঁর মতে গান্ধীজির ভূমিকা ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের এক সহযোগীর মতন। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সমস্ত অসন্তোষকে তিনি নিয়ন্ত্রণ করতেন, যাতে সেটি কখনওই বুর্জোয়াদের স্বার্থের বিরুদ্ধে বড় আকার ধারণা না করে। এইভাবে ভারতের স্বাধীনতার প্রশ্নটিকেও ব্রিটিশদের করুণার মুখাপেক্ষী করে রেখেছিলেন গান্ধীজি। আর তাই, প্রত্যেকটি গণ আন্দোলন চূড়ান্তরূপ ধারণ করার প্রাক্মুহূর্তে তিনি সেগুলিকে প্রত্যাহার করেছিলেন। আমরা জানি, আজও বামপন্থীদের গরিষ্ঠ অংশ গান্ধীজির সম্বন্ধে এই অভিমতই পোষণ করে। যদিও দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এবং মানবাধিকারের পক্ষে ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ মনীষী হিসেবে গান্ধীজিকে তাঁদের মান্যতা কিছুটা দিতে হয়। কিন্তু, রজনী পাম দত্ত বারবার দেখানোর চেষ্টা করেছেন যে গান্ধীজি মূলতঃ একজন হিন্দু ধর্মাশ্রয়ী নেতা। গান্ধীজির সমালোচনার এই ধারাটি ভারতীয় কমিউনিস্টদের মধ্যে প্রবল। সুপ্রকাশ রায়ের অনেক পরে লেখা (১৯৮৭) গান্ধীবাদের
    স্বরূপ বইয়ে হুবহু এক চিন্তাভাবনা দেখতে পাই।

    কিন্তু, কমিউনিস্টদের দুজন শীর্ষনেতা এই মত পোষণ করেন নি। তাঁরা হলে পূরণচাঁদ যোশী এবং ই এম এস নাম্বুদিরিপাদ। ১৯৪৪-৪৫ এ গান্ধীজির সঙ্গে যোশীজির দীর্ঘ পত্রবিনিময় হয়। গান্ধীজি কমিউনিস্ট পার্টির উদ্দেশ্য, কর্মপ্রণালী এবং বিশ্বযুদ্ধকে তাঁরা কেন জনযুদ্ধ বলছেন তা নিয়ে যোশীজির সঙ্গে রাজনৈতিক মতবিনিময় করেন। এই চিঠিগুলির মধ্যে পারস্পরিক সম্ভ্রমের কমতি দেখা যায় না এবং একজ্যগায় যোশীজি বলেন, গান্ধীজির রাজনৈতিক সন্তান হিসেবেই কমিউনিস্টরা ভারতের সাধারণ মানুষের হয়ে জনযুদ্ধের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। নাম্বুদিরিপাদের বইটি (বাংলা অনুবাদে মহাত্মা ও মতবাদ) খুব বিশদে, এবং তুলনায় নিরপেক্ষভাবে, গান্ধীজির বিভিন্ন পদক্ষেপের আলোচনা করেছে। তিনি গান্ধীজিকে ভারতের শ্রেষ্ঠ জননেতা হিসেবে কুণ্ঠাহীনভাবে মেনে নিয়েছেন। এছাড়াও সাম্প্রদায়িকতা ও অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে গান্ধীজির জেহাদকে তিনি মান্যতা দিয়েছেন। দেশভাগের পরে উপমহাদেশে অসাম্প্রদায়িকতার মূর্ত প্রতীক যে গান্ধীজি ছিলেন তা অস্বীকার করে ওঠার পরিস্থিতি তাঁর ছিল না, যদিও কমিউনিস্টদের একাংশ রাজনৈতিক কারণে আজও তা মেনে নিতে পারেন না। কারণ,কমিউনিস্টরা যে দরিদ্র জনগণের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছেন, সেই জনগণই অনেক বেশি প্রাণিত হয়েছে গান্ধীমতবাদের অনুশীলনে। ফলে গান্ধীবাদ বাস্তবক্ষেত্রে কমিউনিজমের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হয়ে থেকেছে। নাম্বুদিরিপাদ বলেছেন, গান্ধীবাদীদের সঙ্গে ইস্যুভিত্তিক জোট গঠন করতে হবে এবং পাশাপাশি গান্ধীবাদের বিরুদ্ধে চেতনাগত সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। রজনীপাম দত্তের মতন তিনিও লক্ষ্য করেছেন গান্ধীজি আধুনিক সভ্যতার বিশেষ কিছু অভিমুখ সম্পর্কে বিরূপ, কিন্তু তিনি একে প্রতিক্রিয়াশীলতা বলার বদলে চিহ্নিত করেছেন পরাধীন দেশের বিদেশি শাসকদের চাপিয়ে দেওয়া ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে। তিনি আরও দেখেছেন যে, তথাকথিত আধাধর্মীয় ‘মিস্টিক’ কথাবার্তাই গান্ধীজিকে জনগণের কাছে নিয়ে যাচ্ছে, যা অন্য আলোকপ্রাপ্ত নেতা পারছেন না। রজনীপাম দত্ত মন্তব্য করেছিলেন সমাজের অগ্রণী শ্রেণির বদলে পিছিয়ে পড়া শ্রেণিকে গান্ধীজি লড়াইয়ে এগিয়ে দেন। কিন্তু, নাম্বুদিরিপাদ সঠিকভাবে দেখেছেন যে ব্যাপকতর মানুষের কাছে গান্ধীজির গ্রহণযোগ্যতা বেশি, মুষ্টিমেয় কিছু লোকের কাছে কম। গান্ধীজি নিজেও বারবার বলেছেন হাতে গোণা কিছু রাজনৈতিক কর্মীর বদলে ব্যাপক জনগণের চাহিদা তাঁর কাছে বেশি গুরুত্বের। নাম্বুদিরিপাদ দেখাচ্ছেম, নিজের নেতৃত্বে চূড়ান্ত স্তরে ওঠা দুটি আন্দোলন গান্ধীজি উঠিয়ে নিচ্ছেন দুটি ভিন্ন কারণে, প্রথমটি (অসহযোগ) হিংসাশ্রয়ী পথের বিরুদ্ধে এবং দ্বিতীয়টি (আইন অমান্য) জাতিভেদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে। কংগ্রেস কর্মীরা হতাশ হচ্ছেন তা স্বত্তেও ব্যাপক মানুষের কাছে তাঁর জনপ্রিয়তায় ভাঁটা পড়ছে না। নাম্বুদিরিপাদের লেখায় ধ্রুপদী মার্ক্সীয় চিন্তাভাবনা আছে, কিন্তু এইরকম জনগণের কাছে গান্ধীজির গ্রহণযোগ্যতা কেন অটুট, তার ব্যাখা তাঁর এবং বাকি মার্ক্সবাদীদের লেখায় আসে না।

    আসলে, গান্ধীজির কাছে রাজনীতির ঊর্ধ্বে ছিল দেশের মানুষ। দেশের মানুষে যে ভাষায় কথা বলে তা তিনি জানতেন এবং সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের নিজস্ব অ্যাস্পিরেশনকে তিনি ধারণ করতেন। যাঁকে কমিউনিস্টরা যন্ত্রসভ্যতার প্রতি ঘৃণা ভাবে, তা আসলে ছিল শ্রমনিবিড়,কর্মসংস্থান বহুল সমাজব্যবস্থার প্রতি মানুষের স্বাভাবিক সমর্থন। তেমনি গান্ধীজির যে বক্তব্যগুলিকে তাঁরা আধা-ধর্মীয় বলেছেন, তা ছিল দেশের মানুষের স্বাভাবিক ধর্মবোধ, যেখানে তার ব্যক্তিগত সততা, নিজের সমাজ নিজের পরিবেশ নিজের সংস্কৃতির প্রতি আস্থা এবং বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থের প্রতি নিষ্ঠার এক বহিঃপ্রকাশ। এই আধ্যাত্মিকতা এদেশের মানুষের নিজস্ব জীবনবোধ, ভারতের জাতীয়তাও এই চেতনাই। কাউল-সেন দম্পতির উদাহরণ এইজন্য প্রাসঙ্গিক ছিল এই লেখায়। গান্ধীজি মানুষকে মানুষের সমাজকে রাজনীতির থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। গান্ধীজি বিভিন্ন আন্দোলন যখন উঠিয়ে নিয়েছেন, সেইসব পদক্ষেপ নিয়ে কংগ্রেস ও অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মীরা ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। কিন্তু, দেশবাসীর বিরাট অংশের কাছে তারপরও গান্ধীজির জনপ্রিয়তা হ্রাস হয় নি। এবং আমরা দেখতে পাই, অসহযোগ থেকে আইন অমান্য, সবকটি ক্ষেত্রেই আন্দোলন তুলে নেওয়ার কারণ রাজনৈতিক নয়, সামাজিক। রাষ্ট্রনীতি রূপায়ণের থেকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন সমাজের ক্ষমতায়নকে, সাম্যের লক্ষ্যে সমাজসংস্কারকেও। দুর্ভাগ্য যে আমাদের দেশের কমিউনিস্ট কর্মীরা সমাজতন্ত্রের বুলি আওড়েছেন, কিন্তু কয়েকটি ব্যতক্রিম বাদে রাজনীতির ক্ষমতার অলিন্দের বাইরে সমাজের ক্ষমতাকে বাড়ানোর এই দৃষ্টান্ত তাঁরা গ্রহণ করতে পারেন নি।
     
    (ন্যাশনালিস্ট পত্রিকায় প্রকাশিত)

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • স্মৃতিচারণ | ৩০ জানুয়ারি ২০২২ | ১৮৬৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • স্বাতী রায় | 117.194.38.218 | ৩০ জানুয়ারি ২০২২ ১৮:১৬503291
  • গান্ধীজীর দর্শন ভাল করে বুঝতে উৎসুক। বিশেষত আজকের দিনে যখন তথাকথিত ক্যাপিটালিস্ট অর্থনীতির ধারা দিয়ে ইনক্লুসিভ গ্রোথ বোঝাটা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে ,  তখন তাঁর অর্থনৈতিক দর্শন একটা অল্টারনেটিভ দর্শন হিসেবে বুঝে নেওয়াটা খুব জরুরী মনে হয়। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে এই বোঝার পথে মুল বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে দুটো। একেই তো তাঁর নিজের লেখা বা তাঁর ভক্ত বর্গের লেখা পড়তে গেলে হঠাৎ হঠাৎ একেকটা কথা চোখে পড়ে,যার মানে বুঝতে থই পাই না। এই যেমন নোয়াখালিতে অসুস্থ হয়ে পড়ার পরে ডাক্তারকে খবর দিতে মানা করেছিলেন, বলেছিলেন,  The real doctor is my Rama. As long as Rama needs service from me, He will keep me alive. When He does not, He will call me back to Himself.  এই ফেটালিজম কি নেহাত ব্যক্তিভাবনা নাকি  ভারতীয় আধ্যাত্মিক জাতীয় ভাবনার প্রকাশ! এই  জাতীয় ভাবনা হলে তো দেশের কোন স্বাস্থ্যনীতির ই দরকার নেই।  অবশ্য তার পরেই দেখছি বড় বড় ডাক্তাররা গ্রামে গিয়ে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছেন, সেও নাকি গান্ধীজীর অনুপ্রেরণায়। এটা একটা উদাহরণ মাত্র। এরকম অনেক আছে।  কি জানি ,হয়ত আমিই বুঝতে পারছি না ঠিকমত।  
     
    আরও বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় যখন দেখি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে যুক্তি হিসেবে আসে কত জনপ্রিয় ছিলেন তিনি আর কত বড় বড় মানুষ তাঁর ভক্ত ছিলেন। এইখানে আরও আটকে যাই। জনপ্রিয়তার নিরিখে দেখলে, অতীত থেকে  সাম্প্রতিক  ইতিহাস বোধহয় আরও দু চারজন তুমুল জনপ্রিয় নেতার সন্ধান দিয়েছে যাদের ডাকে বিপুল সংখ্যক মানুষ সাড়া দিয়েছে। সম্প্রতিক কালের ঘোর জনপ্রিয় নেতাদের ও কি তাহলে ভবিষ্যতে এইভাবেই তুলে ধরা হবে?   ক্যারিশ্মা কিভাবে মাস সাইকোলজিতে ইম্প্যাক্ট করে সেটা বোধহয় এখনও পুরো জানা যায়নি। আর আমরা এও জানি যে মোহাবিষ্ট জনপ্রিয়তা সবসময়েই নায্যতা বিচার করে হয়না। পাকিস্তানে কাক মেরে আসার পরেও একজনের জনপ্রিয়তার উর্ধমুখী গ্রাফ আমরা দেখেছি।  তাই জনপ্রিয়তার কথা ছেড়ে দিয়ে যদি সত্যি সত্যি গান্ধীর ভাবনা নিয়ে এবং সেগুলো কিভাবে আজকের প্রেক্ষিতে দেশ গঠনের কাজে লাগানো যায় বা তার সুবিধা অসুবিধা কি এইসব নিয়ে যারা তাঁর দর্শন জানেন- বোঝেন  তাঁরা আলোচনা করতেন তো বড় ভাল হত। 
  • Somnath Roy | ৩০ জানুয়ারি ২০২২ ২১:৫৬503298
  • যে কারুরই জনপ্রিয়তার কারণও অবশ্যই বোঝা দরকার। বিশেষ করে বাকি প্রতিদ্বন্দ্বী শোক্তির থেকে জনপ্রিয়তার নিরিখে একজন কেন এগিয়ে যান, গান্ধী বা মমতা, সকলের ক্ষেত্রেই তা বোঝা দরকার।
    তবে গান্ধীজির দর্শন এবং চিন্তাধারা যথেষ্ট জটিল, অন্ততঃ আজকের দিনে আমরা যেভাবে ভাবি তার তুলনায়।  নিজের ভোগবাসনার নিরিখে নিজেকে অসুস্থ করে ফেলা, ওষুধ ডাক্তারের ভরসায় থাকা - এইটার গান্ধিজি বিরোধী। আবার কুষ্ঠরোগীর চিকিৎসা নিয়ে উচ্ছ্বসিত। এই দ্বন্দ্ব হয়তো অতটাও জটিল নয়। তবে আমার মনে হয়েছে, ভারতের নিজস্ব দর্শন যে চিন্তাপরিসর তৈরি করে, সেইখানে গান্ধীজির বিভিন্ন অবস্থান বোঝা যায়। তবে, আমারও পাঠ অতি সীমিত।
  • Indra Mukherjee | ৩১ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:৩৬503327
  • গান্ধীজির জনপ্রিয়তাই কি তার সিদ্ধান্তের সঠিকতার মাপকাঠি?
  • Somnath Roy | ৩১ জানুয়ারি ২০২২ ০৯:৫৫503330
  • জনপ্রিয়তাই তাঁর সিদ্ধানতগুলিকে বৈধতা দিয়েছিল। নইলে কংগ্রেসের ভিতরে ও বাইরে বড় মাথাদের বেশিরভাগই তাঁর সিদ্ধন্তের বিরোধিতা করেছিলেন, অন্ততঃ প্রথম দিকের বছরগুলিতে। সেই জনপ্রিয়তার কারণ বোঝা দরকার।
  • এলেবেলে | ৩১ জানুয়ারি ২০২২ ১৮:২০503350
  • ১. পূরণ চাঁদ যোশীকে লেখা ১৯৪৪ সালের ৩০ জুলাই লেখা চিঠিটির সঙ্গে গান্ধী একটি এনক্লোসার জুড়ে দেন (পৃ. ৫৫)। সেখানে কমিউনিস্টদের সম্পর্কে যে অভিযোগগুলো ছিল, তার কতগুলো অভিযোগ গান্ধী প্রত্যাহার করেছিলেন?
    ২. নাম্বুদিরিপাদের বইটা সাকুল্যে ১৬০ পাতা বা ১০ ফর্মার। ওই চটি বইতে গান্ধী সম্পর্কে আলোচনা করা যায়? আর উনি এনবিএ প্রকাশিত কমিউনিস্টদের দৃষ্টিতে বিবেকানন্দ শীর্ষক বইতে একটি প্রবন্ধও লিখেছিলেন। বেশ গোলগোল, মোলায়েম। সেটাকেও কি নির্ভরযোগ্য মনে করতে হবে?
    ৩. সুনীতি ঘোষ ভারতীয়? কমিউনিস্ট? যদি দুটো উত্তরই ইতিবাচক হয় তাহলে তাঁর একটা উক্তি এখানে রেখে গেলাম ---- First, Gandhi's charisma, as we have seen, failed to work on the Muslims. Second, a large section of the scheduled castes and tribes remained untouched by his charismatic influence. Third, his ability to influence and inspire the politically-inclined youth of India was very much limited. Fourth, towards the end of his life, his charisma ceased to work on his close associates who had cherished implicit faith in him before.
     
    এটা কি গান্ধীবিদ্বেষ সঞ্জাত না ঠিকঠাক মূল্যায়ন?
  • সোমনাথ | 203.110.242.14 | ৩১ জানুয়ারি ২০২২ ১৯:১৭503353
  • তিন নম্বরটায় আমি ভীষণভাবে একমত। বাকিগুলোও কিছুটা ঠিক-ই।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন