এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • প্রসঙ্গ কোভিড ও ভ্যাকসিন : মাননীয় ষড়যন্ত্র-তাত্ত্বিক, আপনাকে বলছি স্যার

    Debasis Bhattacharya লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৭ জানুয়ারি ২০২২ | ১৩০৬৫ বার পঠিত | রেটিং ৪.৬ (৭ জন)
  • আন্তর্জালে ভুয়ো খবর আর ভুলভাল হাস্যকর অবান্তর কথাবার্তার প্রবাহ নিরন্তরই চলে, চলতেই থাকে। তার বেশিরভাগই চোখে পড়েনা, এবং যা চোখে পড়ে তারও প্রায় সবটাই নীরবে উপেক্ষা করা ছাড়া গত্যন্তর থাকেনা। কারণ, প্রথমত, যেসব বিচিত্র ব্যাপার নিয়ে কথা হয় তার সব কিছু বিস্তারিত ভাবে জানা থাকেনা, আর জানা থাকলেও তার পেছনে পড়ে থাকতে গেলে নাওয়া খাওয়া ভুলতে হয়। কিন্তু, মাঝে মাঝে সত্যিই কিছু না বলে আর পারা যায়না, এবং এখন বোধহয় সেই মুহূর্ত আবার এসেছে। গত বছরখানেক যাবৎ কোভিড আর তার ভ্যাকসিন নিয়ে ষড়যন্ত্র-তাত্ত্বিকদের নির্বোধ ও কুৎসিত শোরগোলে কান পাতাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    সত্যি, এ আর বাস্তবিকই নেওয়া যাচ্ছে না!

    ষড়যন্ত্র-তত্ত্ব অবশ্য, বলা বাহুল্য, একটা নয়, অনেক। এবং, শুধু অনেক নয়, অনেক ধরনের। যেমন ধরুন, (১) চিন পরিকল্পনা করে সারা পৃথিবীতে মহামারি ছড়াচ্ছে (আর আমেরিকা ইউরোপ বসে বসে চুপচাপ বুড়ো আঙুল চুষছে --- চমৎকার, তাই না?)। (২) চিন আর আমেরিকা দু পক্ষ মিলে ইচ্ছে করে মহামারি ছড়াচ্ছে (এবং ইউরোপ আর রাশিয়াকে খেলায় না নিয়ে দুধুভাতু করে রেখেছে, আর তেনারাও সাইডলাইনের বাইরে দাঁড়িয়ে চুপচাপ খেলা দেকচেন, অভিমানে কতাবাত্রা বোলচেন্নাকো)। (৩) করোনা ভাইরাস হচ্ছে উহানের ল্যাবরেটরিতে তৈরি জৈব অস্ত্র, গণহত্যার উদ্দেশ্যে বানানো (এ বাবা, ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় তবে এ ভাইরাসের ‘আরএনএ’–তে কাটাছেঁড়ার দাগ পাওয়া গেল না কেন?)। (৪) এ সবই হচ্ছে বিল গেটস সায়েবের কুকীর্তি, তিনি তিন বছর আগেই এক সেমিনারে মহামারির ঘোষণা করে রেখেছিলেন (পৃথিবীব্যাপী ষড়যন্ত্রের প্ল্যান আগেভাগেই সেমিনারে ঘোষণা করে দিচ্ছেন --- বেচারা --- ঘটে ষড়যন্ত্র-তাত্ত্বিকদের মতন তীক্ষ্ণবুদ্ধির সাপ্লাই না থাকলে কেমন দুর্দশা হতে পারে, দেকেচেন্তো?)।

    তবে, ষড়যন্ত্র-তত্ত্বের যে সংস্করণগুলো সোশাল মিডিয়ায় বাঙালি পোগোতিসিলদের মার্কেটে সবচেয়ে বেশি চলছে সেগুলো এইরকম। (১) এ হল এক ‘পুঁজিবাদী চক্রান্ত’, অর্থাৎ, বিভিন্ন দেশের সরকারগুলো নাকি বড়বড় পুঁজিপতি, উচ্চপদাসীন বিশেষজ্ঞ এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে অতিমারির ভয় দেখিয়ে লকডাউন করে গরিবের রুটিরুজি কেড়ে নিচ্ছে, যাতে করে ধনীদেরকে আরও ধনী করে তোলা যায় (কিন্তু, গরিবরা কাজকর্ম না করলে ধনীর মুনাফা হবেটা কীভাবে?)। (২) এ হল ‘বিগফার্মা’-র তরফে মহামারির ভুয়ো আতঙ্ক ছড়িয়ে ভ্যাকসিন বেচার ষড়যন্ত্র (কিন্তু, যাদের সে স্বার্থ নেই, তারা লকডাউনের বেয়াদবি সহ্য করবে কেন?)। (৩) প্রাণঘাতী ভ্যাকসিন দিয়ে দিয়ে বদমাইস কোম্পানিগুলো মানুষকে মেরে ফেলতে চাইছে (তা, পিত্থিমি শ্মশান হয়ে গেলে খাবে কী বাওয়া?)। (৪) এ রোগটি যে খালি সম্পন্ন শহুরেদের হচ্ছে, এবং শহুরে শ্রমজীবী বস্তিবাসী আর গ্রামের কৃষকদের হচ্ছেনা, তাতেই প্রমাণ, এ আসলে পরিকল্পিতভাবে ছড়ানো এক ভুয়ো আতঙ্ক মাত্র (তা, শহুরে রোগাক্রান্তরা তবে সাধ করে হাসপাতাল-ভ্রমণে যাচ্ছেন বুঝি?)। (৫) কোভিডের যেসব ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে সেগুলো কোনও কাজের নয়, কারণ, ইজরায়েলে টীকাকরণ অতিদ্রুত সম্পূর্ণ করার পরেও কোনও কাজ হয়নি (তথ্যটি সঠিক, নিশ্চিত তো?)। (৬) লকডাউন অর্থহীন, কারণ, সুইডেন তা না করেই বিন্দাস আছে (আবারও প্রশ্ন, তথ্যটি সঠিক, নিশ্চিত তো?)।

    এমন আরও আছে, যেমন আইটি আর ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি-র ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব। তবে, ষড়যন্ত্র-তত্ত্বের সম্ভাব্য সমস্ত দিক নিয়ে সবিস্তার গবেষণামূলক লেখা ও সবকটি ভুয়ো-তত্ত্বের নিষ্পত্তিমূলক খণ্ডন পেশ করাটা এখানে আমার উদ্দেশ্য নয়। বরং, ওপরের দ্বিতীয়োক্ত ষড়যন্ত্র-তত্ত্বগুচ্ছ (১-৬) নিয়ে দু-এক কথা বললেই গুজবের বহরটা খানিক অন্তত বোঝা যাবে, তাই আপাতত সেটুকুই একে একে হোক।

    (১) লকডাউন করে কর্মস্থল আর গণপরিবহন বন্ধ করে দিলে দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের যে অসীম দুর্দশা হয়, সে তো আর ব্যাখ্যা করে বলার অপেক্ষা রাখেনা। কিন্তু, জোরজার করে এইটা চাপিয়ে দিলেই যে ধনীরা আরও ধনী হবে, এ দাবির অর্থ কী? দরিদ্র লোককে স্রেফ না খেয়ে বসিয়ে রেখে রেখে তো আর ধনীরা ধনী হয়না, ধনীরা ধনী হয় তাদেরকে খাটিয়ে, তাদের শ্রমজাত মুনাফা সংগ্রহ করে। কাজেই, গায়ের জোরে আইন জারি করে তাদেরকে ঘরে বসিয়ে রেখে পুঁজিবাদের কোনও লাভ নেই, ওভাবে লাভ হলে তো ধনী ও ক্ষমতাবানেরা সব সময়েই সে চেষ্টা করত, তার জন্য অতিমারির দরকার হত না। এত দিন যে কলকারখানা স্কুল কলেজ গণপরিবহন খোলা ছিল, সে তো আর সমাজতন্ত্রের জন্য নয়, পুঁজিবাদের স্বার্থেই। সরকারি ভরতুকি দেওয়া সস্তার লোকাল ট্রেনে চড়ে মফস্বলের শ্রমিকটি যে সাতসকালে কলকাতা এসে পৌঁছতেন হন্তদন্ত হয়ে, সেটা নিশ্চয়ই ‘ক্ষমতা অনুযায়ী সমাজকে দিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী নেবার’ জন্য নয়, বরং এই পুঁজিবাদী ব্যবস্থার মধ্যেই সারাদিন নিজেকে নিংড়ে দিয়ে পরিবার পালনের জন্য দিনান্তে (বা মাসান্তে) যৎসামান্য রসদ সংগ্রহের জন্য। সেটা বন্ধ হলে শ্রমিকের বিপদ তো বটেই, কিন্তু মালিকের লাভটা কী? অবশ্য, যদি বলেন, সঙ্কটের মুহূর্তে দরিদ্র শ্রমজীবীর প্রতি এই নিষ্ঠুর অবহেলাটাও পুঁজিবাদেরই অঙ্গ, তাতে আমার খুব বেশি আপত্তি নেই। কিন্তু, ওইভাবে এবং ওই অর্থে যদি পুঁজিবাদকে দায়ী করতে চান, তো অভিযোগের বর্শামুখটা ষড়যন্ত্রের দিক থেকে সরকারি দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও অসংবেদনশীলতার দিকে ঘুরিয়ে দিতে হবে, আর তার জন্য প্রথমেই বিসর্জন দিতে হবে জলজ্যান্ত অতিমারিকে অস্বীকার করবার নির্বোধ সুখটিকে।

    এবং, লকডাউনের উল্টোপিঠটাও এখানে দেখতে হয়। এতে যে শুধু প্রচুর মানুষ কাজ হারিয়েছেন, তাইই নয়, বেশ কিছু মানুষ আবার বাড়ি বসে বসে দিনের পর দিন বেতনও পেয়েছেন, সংখ্যায় অনেক অল্প হলেও। এই ঘটনাটিকে আবার বৃহৎ পুঁজির সঙ্গে মধ্যবিত্তের একাত্মতার প্রমাণ হিসেবে কেউ কেউ পেশ করতে চান, কিন্তু আসলে তারও কোনও মানে হয়না। পুঁজিবাদ খামোখা কারুকে বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াতে চাইবে কেন? লকডাউনের ফলে সমস্ত কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গেলে, প্রচুর লোককে বসিয়ে মাইনে দিতে হলে, প্রচুর লোক মারা গেলে বা হাসপাতালে গেলে বা অসুস্থ অক্ষম হয়ে বাড়ি বসে রইলে পুঁজিবাদের মোটেই কোনও লাভ নেই, বরং চূড়ান্ত ক্ষতি। এসব করে পুঁজিবাদ নিজেই নিজের সর্বনাশ করবে কেন? যাঁরা এসব বলছেন তাঁরা কোভিড অতিমারি কতটা বোঝেন তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও, পুঁজিবাদ কী বস্তু সেটা যে মোটেই বোঝেন না, তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।

    (২) এবার আসুন বিগফার্মার ষড়যন্ত্রের গল্পে। ভ্যাকসিন বানাবার কোম্পানিগুলো শুধুমাত্র ভ্যাকসিন বেচার স্বার্থে অতিমারির ভুয়ো আতঙ্ক ছড়িয়ে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থা, চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীকুল এবং প্রত্যেকটি দেশের সরকারকে হাত করে, গোটা পৃথিবী জুড়ে লকডাউন ঘটিয়ে দিচ্ছে --- এ অভিযোগ যে কতটা উদ্ভট অবাস্তব হাস্যকর হতে পারে, সে ব্যাপারে আপনার কোনও ধারণা আছে কি? না, পৃথিবী জুড়ে এতগুলো লোককে এইভাবে একসাথে সম্পূর্ণ বশংবদ বানিয়ে এতবড় চক্রান্ত আদৌ কার্যকর করা যায় কিনা সে প্রশ্নে আমি যাচ্ছিই না (সেটা অতি সঙ্গত প্রশ্ন ছিল যদিও), আমি শুধু এর অর্থনৈতিক অবাস্তবতার কথাটা বলতে চাইছি। ভাল করে ভেবে দেখুন।

    প্যান্ডেমিক-এ গোটা পৃথিবীর জিডিপি কমেছে মহাজাগতিক অঙ্কে --- ৫ ট্রিলিয়ন ডলার! সেখানে, ভ্যাকসিন-নির্মাতা ফার্মা কোম্পানিগুলোর মুনাফা সব মিলিয়ে বেড়েছে পঞ্চাশ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, দাবিটা এই রকম দাঁড়াচ্ছে যে, কেউ বা কাহারা ষড়যন্ত্র করে গোটা অর্থনীতিকে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার হারাতে বাধ্য করেছিল, শুধুমাত্র বিশেষ কিছু ব্যবসায়িক উদ্যোগের মুনাফা মাত্র পঞ্চাশ বিলিয়ন ডলার বাড়তে দেবে বলে! পুঁজিবাদের হত্তাকত্তাদের মাথা খারাপ হয়েছে বলে মনে হয় বুঝি আপনার?

    এখন গোটা পৃথিবীর জিডিপি ধরুন ৮৫ ট্রিলিয়ন ডলার মত, আর তার মধ্যে ফার্মা-দের ভাগ হল ৫০০ বিলিয়ন, মানে আধ শতাংশের একটু বেশি। আর, এদের মধ্যে যারা কোভিড ভ্যাকসিন বানিয়ে সবচেয়ে বেশি লাভ করেছে তাদের মোট মুনাফা ৫০ বিলিয়ন, মানে তারও দশ শতাংশ। অর্থাৎ, ভ্যাকসিন ব্যবসার মুনাফা হচ্ছে গোটা পৃথিবীর অর্থনীতির .০৫ শতাংশ। তো এই ক্ষমতা নিয়ে ভ্যাকসিন নির্মাতা কোম্পানিগুলো নাকি গোটা পৃথিবীর অর্থনীতিকে স্তব্ধ করে দেবে, আর অর্থনীতির বাকি ৯৯.৯৫ শতাংশের দাবিদাররা তাতে বাধা না দিয়ে তা বসে বসে দেখবে আর বুড়ো আঙুল চুষবে --- ষড়যন্ত্র-তাত্ত্বিকদের আবদারটা এইরকম! এই সঙ্কটের মুহূর্তে এইসব অবান্তর উদ্ভট কথাবার্তা নিয়ে চ্যাঁচামেচি করাটা যে একটা ভয়ঙ্কর দায়িত্বজ্ঞানহীন বোকামো হচ্ছে, তাতে কোনও সংশয় থাকতে পারে কি?

    (৩) এও শোনা যাচ্ছে, প্রাণঘাতী ভ্যাকসিন দিয়ে দিয়ে বদমাইস কোম্পানিগুলো নাকি মানুষকে মেরে ফেলতে চাইছে। মানে, শিব্রামের সন্দেশের ব্যবসার প্ল্যান আর কি! তাঁর এক অসামান্য গল্পে শিব্রাম চেয়েছিলেন, তিনি রোজ প্রচুর সন্দেশ বানিয়ে নিজেই কিনে খেয়ে নেবেন, এবং বিক্রির মুনাফা দিয়ে রোজই আরও আরও সন্দেশ বানিয়েই চলবেন। তাতে করে নিয়মিত সন্দেশও খাওয়া হবে, আর ব্যবসারও শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে। ষড়যন্ত্র-তাত্ত্বিকদের বক্তব্য মোতাবেক, এখানে ফার্মা-দের পরিকল্পনাও সম্ভবত সেটাই --- করোনা আর ভ্যাকসিন দিয়ে সব লোকজনকে মেরে দিয়ে পৃথিবীটাকে এট্টু ঠাণ্ডা করে নিয়ে তারপর শান্তিতে মনে সুখে ওষুধপত্তর বানাবেন, আর নিজেদের বানানো ওষুধ নিজেরাই কিনে খেয়ে খেয়ে মুনাফার পাহাড় গড়বেন! ওষুধ খেয়ে শরীলটাও ঠাণ্ডা থাকবে, আর ব্যবসাটাও জমবে!

    (৪) কেউ কেউ এ যুক্তিও দিচ্ছেন যে, এই যে এ দেশে শুধু শহুরে সম্পন্নরা কোভিডের কবলে পড়ছেন, এবং দরিদ্র শহুরে শ্রমজীবী ও গ্রামীণ কৃষকেরা অনাক্রান্ত থাকছেন, এইটাই নাকি অকাট্যভাবে প্রমাণ করে যে, কোভিড অতিমারি এক বানানো গল্প (আর, বানানো অতিমারির ভ্যাকসিনও যে বানানো গল্প হবে, তাতে আর আশ্চর্য কী!)। কিন্তু, যাঁরা এসব বলছেন তাঁরা আরেকটু ভাল করে খোঁজ নিলে জানতে পারতেন, সংক্রমণের প্রথম ঢেউয়ে অতিমারি শহরাঞ্চলে আবদ্ধ থাকলেও, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ঢেউয়ে তা আর শহরে আবদ্ধ থাকেনি আদৌ। গ্রামে তা ঠিক কতটা ছড়িয়েছে, সেটা পুরোপুরি বোঝা যায়নি যদিও, নির্ভরযোগ্য সরকারি তথ্যের অভাবে। বস্তুত, অতিমারির দুই বছরে (২০২০ ও ২০২১) দেশে মোট মৃত্যু কত হয়েছে, আর কোভিডে মৃত্যুই বা ঠিক কত, সে ব্যাপারে সরকারি তথ্য নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যুর যে তথ্য রোজই গণমাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে, সেগুলো সবই প্রতিষ্ঠিত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল ও ল্যাবরেটরি থেকে পাওয়া। কিন্তু গ্রামে প্রচুর রোগি এসব ব্যবস্থার আওতার বাইরে, এবং তাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন ও মারা যাচ্ছেন অপরীক্ষিত ও অচিকিৎসিত অবস্থায়, যা সরকারি ব্যবস্থায় আদৌ নথিভুক্ত হচ্ছে না, এবং তা সরকারি তথ্যেও প্রতিফলিত হচ্ছেনা। এখন পাঠক অবশ্যই জানতে চাইবেন, জানা যদি না-ই যায়, তো আমরাই বা তবে জানলাম কীভাবে? হ্যাঁ, এ নিয়ে নির্ভরযোগ্য গবেষণা ও বিশ্লেষণ হয়েছে। অতি সম্প্রতি এক প্রামাণ্য গবেষণাপত্রে তিনটি স্বতন্ত্র উৎস থেকে পাওয়া পরোক্ষ তথ্যগুচ্ছ ব্যবহার করে দেখানো হয়েছে, আসলে এই দুই অতিমারিময় বছরে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি তথ্যে প্রকাশিত সংখ্যার ছয় থেকে সাত গুণ পর্যন্ত হতে পারে! অবিশ্বাস্য লাগছে, তাই না? কিন্তু, মৃত্যুর কারণ হিসেবে 'ডেঙ্গু' লেখার জন্য সরকারি চিকিৎসক অরুণাচল দত্ত চৌধুরিকে কীভাবে বরখাস্ত হতে হয়েছিল সে সংবাদ যদি আপনার স্মরণে থাকে, এবং অতিমারিতে মৃত ও গণ-চিতায় অর্ধদগ্ধ রোগিদের লাশ কীভাবে দলে দলে গঙ্গায় ভেসে এসেছিল সে স্মৃতি যদি আপনাকে কিছুমাত্রও বিচলিত করে থাকে, তবে এ গবেষণাপত্রের সিদ্ধান্ত আপনার তত অসম্ভব বলে মনে না-ও হতে পারে।

    আচ্ছা, বাদ দিন। গ্রামের গরিবেরা কোভিডে মরেছে কি মরেনি, সে তর্ক ছেড়েই দিন না হয়। মনে করুন না কেন, এ অতিমারিতে সত্যিই তারা সম্পূর্ণ অনাক্রান্ত আছে। যদি তা হয়, সে তো পরম সুখের কথা। কিন্তু, যদি তাইই হত, তাতেও কি এ কথা প্রমাণ হত যে, কোভিড অতিমারি একটি ভুয়ো গুজব মাত্র? ভাল করে ভেবে দেখুন একটু। শহরের সম্পন্ন ব্যক্তি ছাড়া আর কেউ আক্রান্ত হননি, অতএব কোভিড আসলে তৈরি করা আতঙ্ক --- এ অভিযোগের প্রকৃত অর্থ কী? শহুরে রোগিরা বিল গেটসের ষড়যন্ত্রে এমনই সাথ দিচ্ছেন যে, তার চাপে শরীরে জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট এসে যাচ্ছে, এবং তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে লাখ টাকা খুইয়ে আসছেন? মানে কী, এ সব কথার? আপনারা নিজেরা পাগল হয়েছেন, না কি আমাদেরকে পাগল ভাবছেন, সেটা ভেঙে বলবেন একটু?

    (৫) অভিযোগ উঠেছে, করোনা-ভ্যাকসিন একটি অপরীক্ষিত ভুয়ো ওষুধ, মানুষকে ভয় দেখিয়ে এ ভ্যাকসিন নিতে বাধ্য করা হচ্ছে, যাতে বড় বড় ওষুধ কোম্পানিরা মুনাফা লুটতে পারে। বলা হচ্ছে, ভ্যাকসিন নিয়ে আদৌ যে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কমে, এর নাকি কোনও প্রমাণ নেই। এর প্রমাণ হিসেবে আসছে ইজরায়েলের নাম, যেখানে নাকি সবার আগে ভ্যাকসিনেশন করেও ফল হয়নি। কথাটা কি সত্যি? দেখা যাক। গোটা পৃথিবীতে ইজরায়েলই সর্বপ্রথম গণটিকাকরণ শুরু করে, এবং সবচেয়ে দ্রুত তা রূপায়িত করে। ২০২০-র মে মাসেই ইজরায়েল সরকার ভ্যাকসিন কেনার চুক্তি করে ফেলে, এবং ওই বছর ডিসেম্বরে ভ্যাকসিনেশন শুরু হয়ে যায়। টিকার প্রথম প্রাপক ছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানইয়াহু, যাঁর টিকা নেওয়ার ঘটনাটি লাইভ সম্প্রচারিত হয়। পরের বছর মার্চের মধ্যেই গোটা জনসংখ্যার পঞ্চাশ শতাংশ ভ্যাকসিনের দুটি ডোজই পেয়ে যায়, এবং পঞ্চাশোর্ধ্বদের মধ্যে মাত্র লাখ খানেক মানুষ বাকি থাকেন। এর পর থেকে হুহু করে কমতে থাকে সংক্রমণ ও মৃত্যু উভয়েরই হার, তবে এত আগে থেকে নিয়ে নেওয়ার ফলে অনেকের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কমে আসে। দ্বিতীয় ঢেউয়ে যথারীতি সংক্রমণ ও মৃত্যু আবারও কিছু বেড়েছিল, যদিও প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে অনেক কম, এবং সেটাও নেমে যায় অতি দ্রুত। অনেককে তৃতীয় ডোজ দেওয়া হয়, এবং বয়স্ক ও ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদেরকে চতুর্থ ডোজও। তৃতীয় ঢেউতেও সংক্রমণ বেড়েছে, কিন্তু অন্য দেশের চেয়ে অনেক কম, এবং মৃত্যু প্রায় নেই। কাজেই, ইজরায়েলে টিকা ব্যর্থ হবার গল্পটি এক অত্যন্ত বাজে মিথ্যে গল্প।

    এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার প্রশ্নে বাকি পৃথিবীর সঙ্গে ইজরায়েলের অভিজ্ঞতা মেলে কি? ভ্যাকসিন-নির্মাতারা টিকার যে কার্যকারিতা দাবি করেছেন, আদৌ গণ-টিকাকরণের পরে বাস্তব ফলাফল কি তাই পাওয়া যাচ্ছে? এর উত্তর পেতে গেলে সমস্ত পৃথিবীর অভিজ্ঞতা এক জায়গায় করে ঠিকঠাক তুলনা করতে হবে। বিভিন্ন দেশে পরিস্থিতির প্রকট বিভিন্নতার কারণে সেটা বেশ কঠিন কাজ, যার জন্য এতদিন উপযুক্ত প্রামাণ্য গবেষণা পাওয়া কঠিন হচ্ছিল, প্রতিটি দেশের তথ্য আলাদা করে হাতড়াতে হচ্ছিল। সুখের বিষয়, সে পরিস্থিতি কেটে যাচ্ছে, এবং সুবিধাজনক ও প্রামাণ্য গবেষণার ফলাফল একটু একটু করে সামনে আসছে। এ রকম একটি সাম্প্রতিকতম গবেষণার কথা বলি। ‘ইন্টান্যাশনাল জার্নাল অফ ইনফেকশাস ডিজিসেস’ পত্রিকার জানুয়ারি ২০২২ সংখ্যায় কতিপয় চৈনিক গবেষক টিকাকরণ সংক্রান্ত বহু সংখ্যক তথ্যগুচ্ছকে এক জায়গায় করে একটি মোদ্দা বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছেন, যাকে পরিভাষায় বলে ‘মেটা-অ্যানালিসিস’। কী বোঝা গেছে তাতে? বোঝা গেছে এই যে, ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা মোট সংক্রমণের ক্ষেত্রে ৮৯.১%, হাসপাতালে ভর্তি হবার ব্যাপারে ৯৭.২%, আইসিইউ-তে ঢোকার প্রশ্নে ৯৭.৪%, এবং মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৯৯%। কী অর্থ এ সব সংখ্যার? হ্যাঁ, গোল পাকানো হচ্ছে তা নিয়েও। ‘অমুক ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা অমুক শতাংশ’ বললেই ভ্যাকসিন-বিরোধী ষড়যন্ত্র-তাত্ত্বিক হাঁহাঁ করে তেড়ে এসে বলছেন, আরে, তার মানে তো সংক্রমণ এগারো শতাংশ, হাসপাতালে ভর্তি তিন শতাংশ আর মৃত্যুহার এক শতাংশ। তা, সে তো ভ্যাকসিন-ট্যাকসিন না নিয়েই সংক্রমণ, হাসপাতাল-গমন, মৃত্যু ইত্যাদির হার এমনিতেই ওর চেয়ে কম, তাহলে ভ্যাকসিন নিয়ে কি ছাই লাভটা হচ্ছে? এখানে সমস্যাটা হচ্ছে, মাননীয় ষড়যন্ত্র-তাত্ত্বিক মহাশয় বিল গেটস সায়েবের গোপন মনোবাসনাটি জেনে ফেললেও, ‘ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা’ বস্তুটি কী সেটাই এখনও জেনে উঠতে পারেন নি, মোট সংক্রমণ ও মৃত্যুর হারের সঙ্গে তাকে গুলিয়ে বসে আছেন। অনেকেই ভাবছেন, একটা ভ্যাকসিনের ‘এফিকেসি’ বা ‘কার্যকারিতা’ ৮০ শতাংশ মানে হচ্ছে, একশো জনকে ওই ভ্যাকসিন দিলে আশি জনের সংক্রমণ হবে না, বাকি কুড়ি জনের হবে। সেটা হলে খুব খারাপ ব্যাপার, সন্দেহ নেই, কিন্তু ব্যাপারটা আসলে আদৌ তা নয় তো! ‘কার্যকারিতা’ ৮০ শতাংশ হবার মানে হচ্ছে, ভ্যাকসিন আদৌ না নিলে কোনও একটি নির্দিষ্ট জনসংখ্যায় যতটা সংক্রমণ হত, ওই ভ্যাকসিন-টা নিলে তার চেয়ে আশি শতাংশ কম হবে। সংক্রমণ বা মৃত্যুর মোট হারের সঙ্গে তার ধারণা ও পরিমাণ --- এ দুয়েরই আকাশ-পাতাল ফারাক।

    ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে যাঁরা সোশাল মিডিয়াতে এইসব ভুলভাল বলছেন, তাঁদের মধ্যে সবাই কিন্তু অজ্ঞ আনপড় নন। অত্যন্ত দুঃখের ও লজ্জার বিষয়, এবং আতঙ্কেরও, যে কিছু অভিজ্ঞ চিকিৎসকও এ ব্যাপারে মানুষকে ভুল বোঝানোর কাজে লিপ্ত হয়েছেন।

    একটা তথ্য দিয়ে এ প্রসঙ্গ শেষ করি। যখন ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা শুরু হয়, তখন বিজ্ঞানীরা স্বয়ং এর কার্যকারিতা কতদূর হবে সে নিয়ে সংশয়ী ছিলেন, এবং খুবই বিনয়ী অবস্থানে ছিলেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছিল, ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা যদি অন্তত ৫০% হয় সেটাও চলতে পারে, এবং ৭০% হলে সেটা খুবই ভাল। অথচ, সব প্রত্যাশা ও সংশয় ছাপিয়ে প্রায় সমস্ত ভ্যাকসিনেরই কার্যকারিতা এখন ঘোরাফেরা করছে ৮০% থেকে ৯০% সীমার মধ্যে। একে নিছক সাফল্য বললে হবে না, অভাবনীয় সাফল্যই বলতে হবে। কাজেই, আপনি যদি একে ‘ষড়যন্ত্র’ বলেন, এবং আপনি যদি অজ্ঞ না হন, তো আপনি অকৃতজ্ঞ আচরণ করছেন কিনা, একটু ভেবে দেখবেন।

    (৬) সুইডেনের লকডাউন না করার সিদ্ধান্তও এক উত্তপ্ত চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে, যদিও, আসলে তত উত্তাপের বিশেষ কিছুই নেই। বলা হচ্ছে, সুইডেন অতিমারির প্রেক্ষিতে আদৌ লকডাউন করেনি, এবং সুইডিশরা তাতে নাকি চমৎকার আছে, কোনও অসুবিধে হয়নি, বা অন্তত লকডাউন করা দেশগুলোর থেকে বেশি অসুবিধে হয়নি। এখানে যা বলা হচ্ছে না, সেটা তবে এবার বলি একটু।

    সুইডেনে প্রথম কোভিড কেস ধরা পড়ে ২০২০-র জানুয়ারিতে, এবং অন্য দেশ থেকে সংক্রমণের খবরও আসতে থাকে ক্রমশ বেশি বেশি করে। সুইডেনের সরকার কঠোরভাবে সিদ্ধান্ত নেয়, লকডাউন করা হবেনা, এবং সমস্ত কাজকর্ম চালু রাখা হবে, এবং এমন কি মাস্ক-ও পরার দরকার নেই। তাদের ধারণা ছিল, ব্যাপারটা অল্প কিছু জ্বরজারির ওপর দিয়ে যাবে, এর জন্য সব কিছু বন্ধ করে দেবার দরকার নেই। কিন্তু, স্পষ্টতই এ ভাবনা ছিল ভুল। সংক্রমণ ও মৃত্যু হুহু করে বাড়তে থাকে, এবং বছরখানেক পরে সংক্রমণ হার গিয়ে দাঁড়ায় সমতুল্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রদের দশ গুণ। হাসপাতালে ভর্তি হবার হিড়িকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট-গুলোর সমস্ত বিছানা ভর্তি হয়ে যায়। এমন কি, এতে করে অর্থনীতি বাঁচবে বলে যে ধারণা করা হয়েছিল তা-ও ভুল বলে প্রমাণিত হয়, এবং জাতীয় আয় প্রায় নয় শতাংশ নেমে যায় ও বেকারি প্রায় দশ শতাংশে গিয়ে ঠেকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশটি যদি সুইডেনের মত একটি অত্যন্ত কম জনসংখ্যা ও উন্নত স্বাস্থ্যব্যবস্থার দেশ না হত, তো এ হেন সিদ্ধান্ত গণহত্যার সামিল হয়ে দাঁড়াতে পারত। ফলত, শেষে ২০২০-র ডিসেম্বরে সরকার লকডাউন নামাতে বাধ্য হয়। অবশ্য, ২০২১-এর মে মাস থেকে গণটিকাকরণ সুষ্ঠুভাবে চালু হলে আবার লকডাউন তুলে নেওয়া হয়। কী বোঝা গেল এ সব তথ্য থেকে? না, সুইডেন লকডাউনের অকার্যকারিতার দৃষ্টান্ত নয়, বরং ঠিক উল্টো। সুইডেনের ঘটনা দেখিয়ে দিয়েছে, পোক্ত ও সুশৃঙ্খল স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং মানবোন্নয়নের সুদীর্ঘ উজ্জ্বল ইতিহাস-ওয়ালা একটি অত্যন্ত উন্নত দেশেও কোভিড বিধি অমান্য করলে কী ভয়ঙ্কর পরিণতি হতে পারে।

    এর অর্থ কি এই যে, আমাদের দেশে যেভাবে লকডাউন করা হয়েছে তার মধ্যে কোনও গণ্ডগোল নেই, বা তার সমালোচনা হতে পারেনা? না, তা অবশ্যই হতে পারে এবং হওয়া উচিত। কিন্তু, লকডাউন ব্যাপারটাই একটা লোক ঠকানো ষড়যন্ত্র --- এভাবে ভাবাটা বোধহয় নিছকই পাগলামি। লকডাউন করাটা যদি ‘পুঁজিবাদী চক্রান্ত’ হয়, তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প আর জাইর বোলসোনারো যেভাবে সংক্রমণ ও মৃত্যুর তোয়াক্কা না করে লকডাউনের বিরোধিতা করেছেন তাকে কী বলব --- পুঁজিবাদ বিরোধী সংগ্রাম? অনুগ্রহ করে একটু ভেবে দেখবেন।

    যাই হোক, খেপে গিয়ে অনেক কথাই বলে ফেললাম, এবার তাহলে গুটিয়ে আনা যাক।

    একট অভূতপূর্ব অতিমারির সম্মুখীন হয়েছি আমরা। তাতে মৃত্যু তো হচ্ছেই, এবং তার চেয়েও অনেক বেশি হচ্ছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া, সঙ্কটকালীন চিকিৎসার সম্মুখীন হয়ে প্রচুর অর্থ খরচ হয়ে যাওয়া, দীর্ঘদিন ধরে তার জের হিসেবে শরীর দুর্বল অশক্ত হয়ে থাকা, নানা বিচিত্র উপসর্গ, কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়া। এর সমাধান ছিল অজানা। বিজ্ঞানীরা খুঁজছেন সমাধান, কিন্তু কোনও সমাধানই হাতের মোয়া নয় --- প্রয়োজন স্থৈর্য, প্রয়োজন ধৈর্য, প্রয়োজন কঠোর যুক্তিসম্মত অনুসন্ধান, প্রয়োজন সৃজনশীলতা, প্রয়োজন সারা পৃথিবীর বিজ্ঞানী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অবাধ সহযোগিতা ও আদানপ্রদান। সরকারগুলোর তরফে প্রয়োজন জরুরি ভিত্তিতে যথেষ্ট অর্থ সংস্থান করে যুক্তিসম্মত ও সংবেদনশীল পদক্ষেপ, এবং অতিমারি সংক্রান্ত তথ্যাবলী বিষয়ে যথোপযুক্ত সংরক্ষণ, সহজপ্রাপ্যতা ও স্বচ্ছতার সুব্যবস্থা। এবং, আমাদের মত আমজনতার তরফে প্রয়োজন এ বিষয়ে সচেতনতা, এবং অন্যকে সচেতন থাকতে সাহায্য করা। কিন্তু, অবান্তর আজগুবি সব অভিযোগ তুলে ভুয়ো খবর ও গুজব ছড়াতে থাকলে তাতে কার লাভ?

    হ্যাঁ, অজানা বিপদের সামনে দাঁড়িয়ে বিভ্রান্তি ও ভুলভ্রান্তি স্বাভাবিক বইকি, যেমনটি স্বাভাবিক নিরন্তর সমালোচনাও --- সেটা কাঙ্ক্ষিতও বটে। কিন্তু সে সমালোচনা যৌক্তিক ও বৈজ্ঞানিক হওয়া চাই। বিজ্ঞানীরা যা এখনও জানতে পারেননি তা নিয়ে বিভ্রান্তি থাকবেই, কিন্তু যা ইতিমধ্যে জানা গেছে সেটা একটু কষ্ট করে জেনে নিলেই হয়, মনে মনে কালনেমির লঙ্কাভাগ করা অর্থহীন। এবং, আজকাল নেটে যা পাওয়া যায়, তাতে বিভ্রান্তি খুব বেশি থাকার কথা না, যদি কী খুঁজতে হবে এবং কোথায় খুঁজতে হবে সেটা জানা থাকে। সেটা জেনে নেওয়াটাও কঠিন না, যদি জানার ইচ্ছেটা থাকে, এবং, 'জানা' কাকে বলে সে বিষয়ে একটা ধারণা থাকে। কিন্তু, দুঃখের বিষয়, সে ধারণাটুকু অনেকেই রাখেন না। ফলত, সকলেই নেটে ঠিক সেটাই খুঁজে পাচ্ছেন, যা পেলে তাঁরা খুশি হন। আর, সেটাই সোশাল মিডিয়াতে ক্রমাগত শেয়ার করে যাচ্ছেন, গণপরিসর বানভাসি হয়ে যাচ্ছে বর্জ্যপদার্থে। সবিস্ময়ে দেখছি, বাম র‍্যাডিক্যালদের একাংশ সোৎসাহে ও নির্বিচারে গিলছেন আমেরিকার কট্টর দক্ষিণপন্থী অ্যান্টি-ভ্যাকসারদের বানানো সব ভুয়ো খবর, আর প্রবল কর্তব্যবোধ সহকারে তা বমি করে দিচ্ছেন সোশাল মিডিয়ায়, অবশ্যই তার সঙ্গে ‘সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন’, ‘পুঁজিবাদী চক্রান্ত’, ‘মুনাফালোভী বহুজাতিক’ জাতীয় কিছু পরিচিত বাম-বুলি এবড়োখেবড়োভাবে মিশিয়ে। কেন যে এমন করছেন সে ব্যাখ্যা তাঁরা নিজেরাই সবচেয়ে ভাল দিতে পারবেন, তবে তাঁদের কীর্তিকলাপ দেখে মনে হচ্ছে, সঙ্কটের মুহূর্তে স্বাভাবিক যুক্তি-বুদ্ধি সবই বুঝি জলাঞ্জলি দিয়ে বসে আছেন।

    তাঁদের কাছে আমার সবিনয় নিবেদন, লকডাউনে মানুষের বিপন্নতা নিয়ে অবশ্যই সোচ্চার হোন, কিন্তু অনুগ্রহ করে অযৌক্তিক সন্দেহ আর ভুয়ো খবর ছড়াবেন না, আর কোভিড বিধি অমান্য করতে অন্যকে প্ররোচনাও দেবেন না। একটু মনে রাখবেন, দুর্ঘটনায় আপনার হাত-পা ভাঙলে তা সারাবেন কি সারাবেন না সেটা আপনার ব্যক্তিগত অধিকার হতে পারে, কারণ সেটা ছোঁয়াচে নয়, কিন্তু ভ্যাকসিন নেওয়া আর মাস্ক পরার ব্যাপারটা মোটেই ও রকম না। ভ্যাকসিন দেবার লক্ষ্য ব্যক্তিকে বাঁচানো নয়, একটি গোটা জনগোষ্ঠীকে বাঁচানো। ভ্যাকসিন দেবার পরেও নানা কারণে ব্যক্তিবিশেষের সংক্রমণ ও মৃত্যু হতে পারে --- বিরল হলেও --- যে কোনও ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেই, শুধু কোভিডের ক্ষেত্রে নয়। কিন্তু, ভ্যাকসিন দেবার পরে একটি বিশেষ জনসংখ্যায় সংক্রমণ ও মৃত্যু অনেকখানি কমে যায়, সেটুকুই লাভ। তাতে ব্যক্তিবিশেষ হিসেবে আপনি বাঁচবেন কিনা সে প্রশ্ন বাতুলতা, বরং আপনার দেশ ও সমাজের আরও কিছু বেশি মানুষ যে বাঁচবে, এটুকু আশ্বাসই যথেষ্ট। কাজেই, ভ্যাকসিন নেওয়া ও মাস্ক পরাটা যতটা না ব্যক্তির লাভ-ক্ষতির প্রশ্ন, তার চেয়েও বেশি যৌথ দায়িত্বের প্রশ্ন। আপনি যদি ভ্যাকসিন না নেন এবং মাস্ক না পরেন, তাহলে আপনার কোনও ক্ষতি নাও হতে পারে, কিন্তু সংক্রমণটা যাকে দিলেন তার অপূরণীয় ক্ষতি হতে পারে। আর, খুব বেশি লোক যদি এইটা করেন, তাতে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে গোটা জাতি, যেমনটি ঘটেছে আমেরিকা ব্রাজিল সুইডেনে।

    মুখ ঢাকতে আর ছুঁচ ফোটাতে ভাল লাগেনা বলে অবাধে চলাফেরা করতে দিয়ে সংক্রমণ ছড়াতে দেওয়া হোক, এইটা যদি ষড়যন্ত্র-তাত্ত্বিক ভ্যাকসিন-বিরোধীদের দাবি হতে পারে, তাহলে ওই একই কারণে ভ্যাকসিন-পন্থীরাও পাল্টা দাবি করতে পারেন, যিনি মাস্ক পরবেন না এবং ভ্যাকসিন নেবেন না, তাঁকে অবরুদ্ধ করা হোক। দুটোর কোনওটিই কাম্য নয়, কিন্তু একটির অস্তিত্ব অন্যটিকে ন্যায়সঙ্গত করে তুলতে পারে। ‘মাই বডি মাই রাইট’ শ্লোগান যদি ভ্যাকসিন-বিরোধীদের আশ্রয় হতে পারে, তো ওই একই কারণে তো তা ভ্যাকসিন-পন্থীরও আশ্রয় হয়ে উঠতে পারে।

    পারে না? বলুন!

    সাহায্যকারী তথ্যসূত্র

    1) https://www.gavi.org/vaccineswork/how-effective-are-covid-19-vaccines-real-world
    2) https://www.science.org/doi/10.1126/science.abm5154
    3) https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S1201971221008572
    4) https://www.who.int/news-room/feature-stories/detail/vaccine-efficacy-effectiveness-and-protection
    5) https://www.healthdata.org/covid/covid-19-vaccine-efficacy-summary
    6) https://en.wikipedia.org/wiki/COVID-19_pandemic_in_Sweden
    7) https://www.businessinsider.in/science/news/a-year-and-a-half-after-sweden-decided-not-to-lock-down-its-covid-19-death-rate-is-up-to-10-times-higher-than-its-neighbors/articleshow/85514410.cms
    8) https://www.worldometers.info/coronavirus/country/sweden/
    9) https://en.wikipedia.org/wiki/COVID-19_vaccination_in_Israel
    10) https://www.worldometers.info/coronavirus/country/israel
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৭ জানুয়ারি ২০২২ | ১৩০৬৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • π | ২২ জানুয়ারি ২০২২ ২১:০৪502983
  •  Data filed by states in the Supreme Court shows that the number of Covid compensation claims received by some of them far exceed their official count of deaths. In Gujarat and Telangana, it’s as high as almost nine and seven times, respectively, while in absolute numbers, the gap between the official toll and compensation claims is the largest in Maharashtra.
     
    In Telangana, compared to the official figure of 3,993 deaths, around 29,000 claims have been received, of which 15,270 have been approved. For Maharashtra, claims add up to 2.13 lakh against the official toll of 1.41 lakh.
     

    The number of claims is generally expected to be higher than the official toll because of the SC’s guidelines, which are seen as broader and more liberal in their definition — mandating that all fatalities, including those by suicide, recorded within 30 days of a person testing positive be treated as 

    Covid deaths

    . Still, the gap is exceptionally high in a few states.

     
     
  • অভীক | 45.112.242.201 | ২৩ জানুয়ারি ২০২২ ১২:২৯503024
  • কে এই বালটা? পেশা কি? মাইনে কত পায় মাসে? কে দেয়?
  • π | ২৩ জানুয়ারি ২০২২ ১২:৩৮503025
  • আপনিই বা কে?  এত অসভ্যের মত কথাবার্তা বলছেন কেন?  
  • অনামী | 2409:4060:e80:9121:6643:1522:f67e:3860 | ২৩ জানুয়ারি ২০২২ ১৬:০৭503030
  • Depopulation theory টা উড়িয়ে দেওয়ার মত নয়। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যে আয় দরকার সেটা ক্রমশ কমে চলেছে, অন্যদিকে ব্যয় বেড়েই চলেছে। Elite সমাজ (top 1 percent) ছাড়া বাকিরা ভুক্তভুগী। উন্নত চিকিৎসা শিক্ষা ইত্যাদি ক্রমশ বেশি বেশি মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এই কারণে একটা steady depopulation হচ্ছেই। এর সাথে covid যুক্ত হওয়ায় capitalism বৈষম্য আরো অনেক গুণ বাড়াতে পেরেছে। Neoliberal প্রবক্তা রা এটাই চায় কারণ capitalism পরিবেশএর ক্ষতি না করে এত মানুষের জীবনযাত্রা উন্নয়ন ঘটাতে অপারগ।
     
    "The potential of capital-labour substitution and the new ecosystem of software/AI/automation-mediated work will upend 100-year-old ideas of work and employment. The ILO warns that the future may not hold enough jobs for everyone and 428 million workers in low middle-income countries like India may not find new jobs.
     
    In 5-10 years, 10 per cent of human jobs will be substitutable and 50-70 per cent of jobs could be partially automated. Two-thirds of jobs in developing countries including India are susceptible to automation. India is enmeshed in the gig economy of digitally-enabled part-time, freelance, zero hour, flexible and temporary work in global digital factories and marketplaces. Long-term employment or spatially-bound infrastructure is being replaced, creating “digital day-labourers”. "
     
     
     
  • Alokmay Datta | ২৪ জানুয়ারি ২০২২ ১৬:২৬503063
  • আপনি নিজেই বরং তথ্যগুলো আরেকবার ভাল করে দেখুন। এমনকি সরকারের নিজের প্রচুর জল মেশানো তথ্য থেকেই দেখা যাচ্ছে অতিমারীতে এক গৌতম আদানিই আটগুণ বড়লোক হয়েছেন।
  • SD | 2409:4041:2e1b:e6bd:edb:d157:b82f:70af | ২৫ জানুয়ারি ২০২২ ১৭:২৩503090


  • Interesting এবং relevant discussion, specially Dr. Sanjay Rai @1:39:00
  • সৈকত রায় মহাশয় | ২৫ জানুয়ারি ২০২২ ১৮:০৫503093
  • সুইডেনের লকডাউন সংক্রান্ত তথ্যাদি একবার ভেরিফাই করে নেবেন? 
     
    "ফলত, শেষে ২০২০-র ডিসেম্বরে সরকার লকডাউন নামাতে বাধ্য হয়। অবশ্য, ২০২১-এর মে মাস থেকে গণটিকাকরণ সুষ্ঠুভাবে চালু হলে আবার লকডাউন তুলে নেওয়া হয়।"

    এই তথ্য ঠিক নয়। আমি সুইডেনে থাকি(পশ্চিম সুইডেনের ত্রোলহ্যাত্তান শহরে)। এদেশে এখনও পর্যন্ত বাধ্যতামূলক লকডাউন হয় নি। ২০২০ ক্রিসমাস নাগাদ যা হয়েছিল তা হল নানারকমের রেকমেন্ডেশন। সুইডেন সরকারের এই সাইটে  গেলে বিস্তারিত পাওয়া যাবে। এইখানে দেখবেন নানারকমের বিধিবিষেধের তালিকা আছে। উদাহরণস্বরূপ, হোটেল-রেস্তোরাঁ খোলা কিন্তু এক টেবিলে চারজন বসা বারণ। একে কি আপনি লকডাউন বলবেন? 
     
    সুইডেন আগাগোড়া লকডাউন ছাড়া কোভিড-১৯ সামলিয়েছে। কিন্তু তার জন্য যে ব্যাবস্থা এখানে নেওয়া হয়েছে যার কথা কেউ বলছে না তা হল কেউ অসুস্থতার কারণে কাজে যেতে না পারলে প্রথম দিন থেকে তার মাইনে দিয়ে দেওয়া (অবশ্যই একটা উচ্চসীমা অবধি)। কাজ হারানোর ভয়ে বা স্রেফ লস-অফ-পে এর ভয়ে যাতে কোনো অসুস্থ মানুষকে কাজে বেরোতে না হয় সুইডেন সরকার তার ব্যবস্থাটুকু করেছিল। 
     
    দ্বিতীয়তঃ - হাসপাতালে ভর্তি হবার হিড়িকে সুইডেনের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট-গুলোর সমস্ত বিছানা ভর্তি হয়ে যায় নি। সবথেকে খারাপ সময়েও আইসিইউ খালি ছিল বলেই টিভিতে শুনেছি। এইখানে আইসিইউতে কবে কত মানুষ ছিলেন তার নিরিখ পাওয়া যাবে। প্রথম ধাক্কার মত চাপ পরের ঢেউগুলিতে পড়ে নি। আর এইখানে পাওয়া যাবে প্রথম ধাক্কার সময়কার সরকারী পিডিয়েফ । এ্যাভেইলেবল আইসিইউ বেড আর ভর্তি রুগীর সংখ্যা মিলিয়ে নিন। তবে হাসপাতালগুলো বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিল এ কথা সত্যি।
     
    সুইডেনের নো-লকডাউন পলিসি সর্বৈব ব্যর্থ এরকম একটা ন্যারেটিভ সুকৌশলে চালানো হচ্ছে। কেন জানি না। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সুইডেনের নো-লকডাউন আর অন্যান্য দেশের প্রো-লকডাউনে আখেরে তেমন কোনো তফাৎ হয় নি। না সুইডেন সকলের থেকে ভালো কিছু ফল দেখাতে পেরেছে, না সকলের থেকে খারাপ। 
  • Imroz Nawaz Reza | ২৬ জানুয়ারি ২০২২ ১৮:৪৬503134
  • খুব চমৎকার লিখেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
  • | 43.239.80.148 | ২৭ জানুয়ারি ২০২২ ০০:০৪503146
  • ডাক্তারদের ভিডিও টিডিও এসে গেলে আবার যুক্তিবাদের আগামাথা ঘেঁটে যায়। তখন ডাক্তারদের অযৌক্তিক বলার ঢোক গেলার পরিস্থিতিও এসে পড়ে।
  • রামকৃষ্ণ | 2409:4061:2d3d:dcf9:e72:1013:d568:cb6f | ২৮ জানুয়ারি ২০২২ ১০:১২503182
  • লকডাউন না করে সুইডেনে বেশি করোনাক্রান্ত হয়েছে বা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বস মৃত্যু হয়েছে তেমন তথ্য কই?
  • নিও-কোভ | 103.76.82.167 | ৩০ জানুয়ারি ২০২২ ০০:১৭503253
  • পরের ফিয়ার সাইকোসিস সিমুলেটরটি এসে গেছে তো সাউথ আফ্রিকাতে? 
     
    What is Neo-Cov?
    In a new research paper that is yet to be peer-reviewed, Chinese researchers have warned of Neo-Cov, a new kind of coronavirus, from South Africa which apparently has a high death and transmission rate. It is associated with the MERS-Coronavirus, a similar type of virus-like SARS-CoV-2, and was first identified in Saudi Arabia in 2012. According to the research, Neo-Cov may carry the high mortality rate of  MERS-coronavirus (one in three deaths) with the high transmission rate of SAS-CoV-2, making it a potentially deadly outbreak. as per the World Health Organisation (WHO), MERS-Cov belongs to the large family of coronaviruses that can cause a multitude of diseases including common cold and SARS (Severe Acute Respiratory Syndrome). The new research carried out by scientists at Wuhan University and the Chinese Academy of Sciences’ Institute of Biophysics studied NeoCov - which emerged along with MERS-Cov and found in bats in South Africa.
  • ডেল্টাক্রন | 103.76.82.167 | ৩০ জানুয়ারি ২০২২ ০০:২৬503254
  •  
    A strain of Covid-19 that combines delta and omicron was found in Cyprus, according to Leondios Kostrikis, professor of biological sciences at the University of Cyprus and head of the Laboratory of Biotechnology and Molecular Virology.
    "There are currently omicron and delta co-infections and we found this strain that is a combination of these two," Kostrikis said in an interview with Sigma TV Friday. The discovery was named "deltacron" due to the identification of omicron-like genetic signatures within the delta genomes, he said.
    Kostrikis and his team have identified 25 such cases and the statistical analysis shows that the relative frequency of the combined infection is higher among patients hospitalized due to Covid-19 as compared to non-hospitalized patients. The sequences of the 25 deltacron cases were sent to GISAID, the international database that tracks changes in the virus, on Jan. 7. "We will see in the future if this strain is more pathological or more contagious or if it will prevail" over delta and omicron, he said.
     
    আচ্ছা, এই যে ফ্লু হয়ে থাকে, এতদিনের মানবেতিহাসে, যেজন্য আমেরিকায় ফ্লু-শট নেওয়া হত, হয়, এবং এখন ভারতেও ডাক্তারেরা রেকমেন্ড করছেন, তার কারণ কোন্‌ কোন্‌ ভাইরাস আর সেগুলোর বাৎসরিক মিউটেশনের ফলে উৎপন্ন স্ট্রেইনগুলির ইতিহাস জানা আছে কারো? 
  • স্টীলথ ওমিক্রন | 103.76.82.167 | ৩০ জানুয়ারি ২০২২ ০০:৩৪503257
  •  
     
    As we were just getting used to the Omicron variant, another sub-strain of the variant of concern has emerged. The newly discovered subvariant of the COVID's Omicron variant, called Stealth Omicron or BA.2, has been reported in about 40 countries including India, Denmark, United Kingdom, Sweden, Singapore and many more. What's worse? Some experts believe this new subtype may be difficult to detect.
     
    What is stealth Omicron?

    Stealth Omicron or BA.2 is a sub-lineage of the highly infectious Omicron variant, with possibly more mutations than its parent strain. It is currently a ‘variant under investigation’. The UK Health Service Agency (UKHSA) said that it is one level below the status of ‘variant of concern’ given by the World Health Organization (WHO).
    While England has reported around 400 cases of stealth Omicron, Denmark has been listed as the most affected country with about 79% of the cases detected so far. India is also one of the countries impacted by the sub-strain.
     
    How is it different from the original Omicron variant? What makes it concerning?

    Although the new sub-variant is said to be mild just like the original Omicron, the factor that separates it from Omicron and makes it more concerning is its ability to avoid detection.
    Experts have come to the fore and said that the stealth Omicron lacks a mutation, which is integral to the detecting process. It is what made the original strain to be detected in the COVID PCR tests.
    As is known, an RT-PCR test identifies the spike gene, which is the protein that tells us whether it is the variant of the COVID-19 or not. According to the U.K. Health Security Agency, COVID's Omicron variant contains a a genetic deletion in the “S” spike gene that helps healthcare providers to easily detect it. However, in the stealth Omicron, there is no S gene drop out, making it difficult to track and to to confirm if it is BA.2 or some other variant.
  • ইহু | 103.76.82.167 | ৩০ জানুয়ারি ২০২২ ০০:৩৮503259
  •  
    Known as ‘IHU’, the new variant of Coronavirus has been reported by researchers in at least 12 cases in France and has been linked to travel to African country Cameroon. The emergence of the new variant, which probably originated in Cameroon, as per the study, harbours both substitutions N501Y and E484K in the spike protein.

    “The mutation set and phylogenetic position of the genomes obtained here indicate based on our previous definition a new variant we named IHU,” the authors of the study said.
    The B.1.640.2 has not been spotted in other countries or labelled a variant under investigation by the World Health Organization (WHO).

    According to a paper posted on medRxiv, the genomes were obtained by next-generation sequencing with Oxford Nanopore Technologies on GridION instruments.

    “Fourteen amino acid substitutions, including N501Y and E484K, and 9 deletions are located in the spike protein. This genotype pattern led to create a new Pangolin lineage named B.1.640.2, which is a phylogenetic sister group to the old B.1.640 lineage renamed B.1.640.1,” the research paper said.
     
  • Madhu Sen | 115.187.40.176 | ৩০ জানুয়ারি ২০২২ ১৩:৪৩503281
  • ভ্যাকসিন নেওয়া ব্যক্তি আর সংক্রমণ ছড়াবেন না, এই গুপ্ততথ্য কোথা  থেকে পেলেন? গুগল বিশ্ববিদ্যালয়? আপনাদের অতি আদরের পত্রিকা 'ল্যানসেট' জানুয়ারি ২০২২-এ বলছে কোভিড আক্রান্ত টিকা নেওয়া ও টিকা না-নেওয়া ব্যক্তির নাক-গলায় ভাইরাল লোড সমান। অর্থাৎ দু'জনেই একই ভাবে অন্যদের সংক্রমিত করতে পারেন। তাই কেউ টিকা না-নিলে বাকিদের সুরক্ষা কমে না।
    টিকা যদি এতই কার্যকরী হবে তবে টিকা নির্মাতাদের সাম্প্রতিকতম 'ফ্যাক্ট শিটে' কেন লেখা টিকাগুলির ট্রায়াল চলছে? গর্ভবতী বা স্তন্যদায়িনীদের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের সুরক্ষা ও কার্যকারীতা নিয়ে নির্মাতাদের কাছে তথ্য নেই, অথচ পাড়ার ডাক্তার আশাকর্মীদের কাছে রয়েছে। 
    "ভ্যাকসিন দেবার পরেও নানা কারণে ব্যক্তিবিশেষের সংক্রমণ ও মৃত্যু হতে পারে --- বিরল হলেও --- যে কোনও ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেই, শুধু কোভিডের ক্ষেত্রে নয়। কিন্তু, ভ্যাকসিন দেবার পরে একটি বিশেষ জনসংখ্যায় সংক্রমণ ও মৃত্যু অনেকখানি কমে যায়, সেটুকুই লাভ। তাতে ব্যক্তিবিশেষ হিসেবে আপনি বাঁচবেন কিনা সে প্রশ্ন বাতুলতা, বরং আপনার দেশ ও সমাজের আরও কিছু বেশি মানুষ যে বাঁচবে, এটুকু আশ্বাসই যথেষ্ট।" এটা লেখক বলছেন। অর্থাৎ অল্পসংখ্যক সুস্থ মানুষকে বাকিদের বাঁচানোর আশ্বাস দিয়ে ( খেয়াল করুন, কেবল আশ্বাস দিয়ে কোনও প্রমাণ দিয়ে নয়!) রাষ্ট্র ব্যক্তির ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাকে নিকেশ করে দিতেই পারে। এই ধরনের নব্য নাৎসিবাদী চিন্তা কী ভাবে সমাজের ভালো করেছে তার সাক্ষ্য ইতিহাসেই রয়েছে।
    অতিমারির গোড়ার দিকে সংক্রমণের গতি কমাতে (সুরক্ষা দিতে নয়) মাস্ক ব্যবহারের কথা বলা হয়েছিল। দু'বছর পরে যখন প্রায় সকলের শরীরে জ্ঞাত/অজ্ঞাতসারে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে তখন মাস্ক ব্যবহারের পিছনে ততটাই বিজ্ঞান রয়েছে ঠিক যতটা রয়েছে 'জলপড়া'য়।
    টিকা মৃত্যু অনেক মৃত্যু আটকেছে, এই তথ্যও কারসাজিতে পূর্ণ।  আবারও অতি আদরের পত্রিকা 'ল্যানসেট'-এর  জুলাই ২০২১-এর মন্তব্য বিভাগ। যেখানে বলা হচ্ছে 'এফিকেসি' RRR- এর ভিত্তিতে ৮৫-৯৫% হলেও ARR-এর ভিত্তিতে মাত্র ১.৩ %-এর বেশি নয়। গণটিকাকরণের ক্ষেত্রে দ্বিতীয়টি প্রয়োজনীয় হলেও কেন প্রথমটিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে তার উত্তর দেবে কে? 
    "মুখ ঢাকতে আর ছুঁচ ফোটাতে ভাল লাগেনা বলে অবাধে চলাফেরা করতে দিয়ে সংক্রমণ ছড়াতে দেওয়া হোক, এইটা যদি ষড়যন্ত্র-তাত্ত্বিক ভ্যাকসিন-বিরোধীদের দাবি হতে পারে, তাহলে ওই একই কারণে ভ্যাকসিন-পন্থীরাও পাল্টা দাবি করতে পারেন, যিনি মাস্ক পরবেন না এবং ভ্যাকসিন নেবেন না, তাঁকে অবরুদ্ধ করা হোক। দুটোর কোনওটিই কাম্য নয়, কিন্তু একটির অস্তিত্ব অন্যটিকে ন্যায়সঙ্গত করে তুলতে পারে।" 
    অর্থাৎ টিকা না-নিলে কাউকে চলাফেরা করতে দেবেন না, এই তো।এ আর নতুন কথা কী? রাষ্ট্রশক্তি বিশ্বজুড়ে এটাই চালাচ্ছে। তাদের এজেন্টদের কাছে এর বেশি আর কীসেরই বা আশা! 
     
  • ঋদ্ধিমান | 103.52.247.107 | ৩০ জানুয়ারি ২০২২ ১৪:৩৭503283
  • আপনারা লোকজনকে এমন ষড়যন্ত্র তাত্বিক বলে দাগিয়ে দিলে, সেই লোকজনও আপনাদের আত্মতুষ্টি তাত্বিক (Complacency Theorist) বলে দাগিয়ে দিতেই পারে। কারন আপনাদের মেন্সট্রিম ন্যারেটিভ, ফার্মা লবি, গ্লোবাল এলিটদের উপর অগাধ বিশ্বাস  এতদিনেও কোনকিছুতেই খটকা লাগেনা। 
    যাই হোক যে লেখাটার দিচ্ছি নিচে, ডঃ গৌতম দাস এর লেখা। সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন, রীতিমতো তথ্যসূত্র সহকারে।
  • তথ্যসূত্র | 2603:8000:b101:f400:4489:8453:c9ff:433e | ৩০ জানুয়ারি ২০২২ ১৫:১৮503284
  • @ঋদ্ধিমান টিপিকাল এন্টিভ্যাক্স  দের মতো লেখা ত। সেই বস্তা পচা যুক্তি টেনেছেন। ডাক্তার  বলে সবজান্তা নাকি? এরা মর্ডান ভ্যাকসিন সম্পর্কে বিশেষ কিছু বোঝেন বলে তো মনে হলো না। আর ক্যান্সার এর সম্ভাবনা বাড়ানো সংক্রান্ত যে রেফারেন্স গুলো দেওয়া সে স্টাডি গুলো তো ইনকমপ্লিট। কোনো অনভ্যাকসিনেটেড কন্ট্রোল নেই। স্টাটিস্টিক্যালি টেস্টেড ও নয়। 
  • lcm | ৩০ জানুয়ারি ২০২২ ১৫:৫৮503287
  • এই, কাইল বিটি-র (Kyle Beattie) পেপারটি তো বিতর্কিত, অলরেডি এটা নিয়ে লেখালেখি হয়েছে।

    ইনি এই পেপারে এক সাংঘাতিক দাবী করেছেন, যে, ভ্যাকসিন নেওয়ার ফলে কোভিড মৃত্যু বেড়ে গেছে। 
     
    কাইল ঠিক এই লাইনের লোকও নন, মানে মেডিক্যাল সায়েন্স বা ডেটা অ্যানালিসিসের নন, ইনি ইউনিভার্সিটি অফ অ্যালবার্টা তে পলিটিক্যাল সায়েন্সের রিসার্চার।

    রয়টার্সে এটা নিয়ে লিখছে,
    A personal, non-peer-reviewed study claiming to reveal the global COVID-19 vaccine rollout has increased deaths and cases of the disease has been cited in some social media posts as comprehensive analysis. However, Reuters presented the piece to data experts, who highlighted several major limitations.

    কাইল তার এই পেপারে কন্ট্রোল গ্রুপে মাত্র আফ্রিকার ৪ টি দেশের ডেটা নিয়েছেন -
    He compared data from a control group of four countries with low vaccination rates – Burkina Faso, Chad, the Democratic Republic of Congo (DRC) and South Sudan – to others where vaccine rollouts were far more widespread.

    যথারীতি, এটি বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে কন্সপিরেসি গ্রুপ লুফে নিয়েছে, এই পলিটিক্যাল সায়েন্সের স্টুডেন্টের লেখাটিকে, খেয়াল করুন ইনফোওয়ার্স আছে এতে -
    One tweet with over 7,000 likes described the analysis as “exhaustive” while Infowars, a conspiracy-theory website and channel, highlighted it in a video segment

    আর যিনি লিখেছেন,
    The paper was written by Kyle Beattie, a doctoral student in international relations and comparative politics at the University of Alberta, Canada

    এত কিছু টাইপ করলাম ঐ একটাই কারণে - বিভিন্ন জায়গায় যে রেফারেন্স দেখছি তার অনেক কিছুই ঠিক নির্ভরযোগ্য সূত্র নয়।

    ওপরে চার নম্বর প্লাটফর্মের যে লেখাটির লিংক দেওয়া হয়েছে, তার রেফারেন্স লিস্টেও এরকম কিছু সাইটের রেফারেন্স দেখলাম।
  • অ্যান্টি-ভ্যাক্স | 43.239.80.148 | ৩০ জানুয়ারি ২০২২ ১৮:৫৭503293
  • lcm, ২৫ জানুয়ারি ২০২২ ১৭:২৩ এর ভিডিও আলোচনাটা নিয়ে কিছু বলবেন? 
    বা, ২২ জানুয়ারি ২০২২ ০১:২২ এর প্রথম লিংকটা নিয়েও কিছু বলবেন 'টিপিকাল' বাদে?
  • lcm | ৩১ জানুয়ারি ২০২২ ০০:২০503306
  • ভিডিওটা ২ ঘন্টা ২৭ মিনিটের - ওটা ধৈর্য ধরে শুনতে সময় লাগবে।

    আমি বরং, ২২ জানুয়ারি ২০২২ ০১:২২ এর প্রথম লিংকটা নিয়ে --

    "... কনস্পিরেসি থিয়োরির মাদার লিংকটা আবার দিলাম
    https://principia-scientific.com/proof-that-the-pandemic-was-planned-with-purpose/ ... "

    এটি লিখেছেন ডঃ জেমস ফেটজার - অধুনাকালের কন্সপিরেসি থিওরির একজন ফাদার ফিগার।

    ইনি মেডিক্যাল ডাক্তার নন, ইনি ১৯৭০ সালে ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি থেকে দর্শন (ফিলসফি) তে পিএইচডি করেন।

    ইনি এত কিছু ডিনাই করেছেন... যে তার লম্বা লিস্ট ... - হিটলার হলোকাস্ট, ৯১১ অ্যাটাক, আমেরিকার স্কুলে শুটিং, বোস্টন ম্যারাথন বম্বিং...

    যেমন ইনি বলেছিলেন, আমেরিকাতে স্যান্ডি হুক এলিমেন্টারি স্কুলে যে শুটিং হয় ওটার মাস্টার মাইন্ড নাকি মোসাদ (ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা)... শুধু তাই নয়... এ নিয়ে একটি বই ও লিখেছিলেন.. এই নিয়ে প্রায় হাফ মিলিয়ন ডলারের এক মামলায় ইনি হেরেও যান।

    এনার আর একটি দাবী ছিল, বিখ্যাত বিটলস সঙ্গীত গ্রুপের সদস্য পল ম্যাকার্টনি নাকি ১৯৬৬ সালেই মারা গেছিলেন।

    একই সঙ্গে এ কথা ঠিক যে, ইনি কগনিটিভ সায়েন্স নিয়ে কিছু কাজকর্ম করেছিলেন যা বিভিন্ন জায়গায় স্বীকৃতি পেয়েছে।

    কিন্তু কন্সপিরেসি থিওরিস্ট হিসেবে ইনি অনেকদিন ধরে বিভিন্ন মতবাদ প্রকাশ করে আসছেন।

    একটা ব্যাপার লক্ষ্যণীয় যে, এই যারা এখন কোভিড কন্সপিরেসি থিওরি নিয়ে প্রচারের শীর্ষে আছেন তাদের অনেকেই - চাঁদে মানুষ, হিটলার হলোকাস্ট, ৯১১... -  বিভিন্ন বিষয়ে  বিভিন্ন মতবাদ বহুদিন ধরে প্রচার করে আসছেন।

    আর একটা ব্যাপার হল, মেডিক্যাল সায়েন্স এবং ডেটা অ্যানালিটিক্স - এ জিনিসগুলো কমপ্লেক্স - খুব জটিল বিজ্ঞান - এগুলি ভাল জানেন, বোঝেন এবং বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা রাখেন, এই ডোমেইনে এক্সপার্ট না হলে কিন্তু এ নিয়ে মন্তব্য করা খুব কঠিন কাজ।

    বিগ কর্প, বিগ ফার্মা - এদের দুর্নীতি ছিল, আছে, থাকবে - এবং তা সর্বজনবিদিত। কিন্তু তা বলে - বিল গেটস সূর্যবিজ্ঞান রপ্ত করে পৃথিবীর উষ্ণায়ন করছেন, কারণ ক'বছর আগে উনি বলেছিলেন যে গ্লোবাল ওয়ার্মিং হ্যান্ডল করার কিছু উপায় ওনার জানা আছে। বিল গেটস এত কিছু নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন, প্রেডিক্ট করেছেন যে তাহলে সবকিছুর জন্য ওনাকেই দায়ী করতে হয়। এসব ফালতু।

    তো এগুলো একটু খেয়াল রাখতে হবে।
  • lcm | ৩১ জানুয়ারি ২০২২ ০০:২৯503309
  • আর একটা জিনিস, এই প্রিন্সিপিয়া সায়েন্টিফিক ইন্টারন্যাশনাল (principia Sceintific International) - এরকম গুরুগম্ভীর নাম শুনলে খুব অথেন্টিক বলে মনে হয়। এরা কিন্তু তা নয়। এরা মূলত কন্সপিরেসি থিওরি প্রচার মাধ্যম।

    Principia Scientific International (PSI) : the org is in Conspiracy-Pseudoscience category, they publish unverifiable information that is not always supported by evidence.

    These sources may be untrustworthy for credible/verifiable information; therefore, fact-checking and further investigation is recommended on every article basis when obtaining information from these sources.
  • :-) | 223.29.193.57 | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৯:৪৯503966
  • যে কোনো কেস-এ হাসপাতালে ভর্তির আগে RTPCR টেস্ট ম্যান্ডেটরি করা হয়েছে। চেনা মহলে আজ অবধি শুনিনি প্রথমবারের টেস্ট-এ কারো রেজাল্ট নেগেটিভ এসেছে, সে অন্যথায় যত সুস্থই হোক (সে প্রেগনেন্সি কেস-ই হোক কি প্রস্টেট অপারেশন)। RTPCR Test এর ফলস পজিটিভ নির্ধারণের কোনো উপায় আছে কিনা বা তা প্রমাণ হলে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যায় কিনা খোঁজ করে দেখবেন। ফলত হাসপাতালে ভর্তির এক মাস বা তারও বেশি সময়ের মধ্যে যত মৃত্যু সবই কোভিড মৃত্যু বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে। RTPCR Test পজিটিভ হলেই কোনো জিনোম সিকোয়েন্সিং না করেই ওমিক্রন ইনফেকশন দেগে দেওয়া হচ্ছে। ডাক্তারকে ফোন করে জ্বর হয়েছে বা সর্দি বা গলা ব্যথা বললেই  - "ধরেই নিন ওমিক্রন, টেস্ট করানোরও দরকার নেই" - শুনতে হচ্ছে।  নিশ্চিন্ত থাকুন রাজ্যে বা দেশে বা পৃথিবীতে এবছর যত মৃত্যু হবে সবেরই নির্ধারিত কারণ ওমিক্রন। ভয় পান, ভয় পাওয়ান - প্যানিক ও ফিয়ার সাইকোসিসের ব্যবসায় সর্বতোভাবে যোগদান করুন।
     
    অথচ দাঙ্গা সংক্রান্ত খবরের সময় ঠিক সংযম অভ্যসের অনুশীলনীগুলো মনে পড়ে। এগুলোই চয়েস - ঠিক কী করতে চান প্যানিক ছড়াতে না ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং করতে।
  • π | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২০:২১503967
  •  RT PCR জীবনে করেছেন?  ফলস পজিটিভ আসেভ কিনা,  পজিটিভ কন্ট্রোল নেগেটিভ কন্ট্রোল কাকে বলে এনিয়ে কোন আইডিয়া আছে? 
    কোভিড ১৯ এই প্রথম  RT PCR টেস্ট হল ভেবে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন, নাকি? বহু রোগ বহুদিন ধরে এই পদ্ধতিতে নির্ণীত হয়ে আসছে,  সে নিয়ে কোন ধারণা আছে?  
    আর প্রথমবার  RT পচড় নেগেটিভ এসেছে, এরকম আপনার জানা নেই, এতে আপনার জানার সীমাবদ্ধতা,  আরো আরেকটু জেনেরিকভাবে বললে আনেকডোটের সীমাবদ্ধতার কথাই বুঝিয়ে দেন। সেজন্যই ডাটা দেখতে হয়। তো, সেটা দেখেই বলছি এমন অনেক কেসই আছে। আর যদি আনেকডোটস বলেন,  তাহলে তো আছেই!  
     
     
  • ইঁদুর-বাদুড় | 103.76.82.194 | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৪:২৮504090
  • এরকম হলে তো পৃথিবীর সব মানুষের ভ্যাকসিনেশন করেও ভাইরাসের মিউটেশন আটকানো সম্ভব নয়!
     
  • & | 2a0b:f4c0:16c:13::1 | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৬:১০504094
  • সমস্ত প্রাণীকেই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, নো চাপ। কেউ ব্যাগড়া দিলে তাদের ছাল ছাড়িয়ে নেওয়া একটা প্রবন্ধ কি আমরা পাবো না? পাবো না আমরা প্রবন্ধ?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল প্রতিক্রিয়া দিন