এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  স্মৃতিকথা

  • কাবুলের বইওলাঃ ১ম পর্ব 

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | স্মৃতিকথা | ০২ নভেম্বর ২০২১ | ১২৫৯ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • পর্ব ১ | পর্ব ২ | পর্ব ৩
    [এই লেখাটি বিশিষ্ট নরওয়েজিয়ান সাংবাদিক ও সাহিত্যিক Asne Seierstad এর The Bookseller of Kabul নামের বেস্টসেলার বইটির ইনগ্রিড ক্রিস্টোফারসেন এর ইংরেজি অনুবাদের বাংলা ভাষান্তর। উনি ২০০২ সালে প্রথমবার তালিবানের কাবুল থেকে সরে পড়ার সময় ওই শহরে সুলতান খান নামের এক বইবিক্রেতার পরিবারে ঘরের লোকের মত কয়েক মাস কাটিয়েছিলেন। এই বইটি সেই বিরল অভিজ্ঞতার দলিল।]

    মুখবন্ধ

    সেবার ২০০১ সালের নভেম্বর মাসে কাবুলে নেমে প্রথম হাতে গোণা যে কয়জনের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল তাদের অন্যতম হোল সুলতান খান। ইতিমধ্যে আমি নর্দান অ্যালায়েন্সের কম্যান্ডোদের সঙ্গে কাটিয়েছি ছয় সপ্তাহ -- তাজিকিস্তানের মরুভূমি, হিন্দুকুশ পাহাড়, পঞ্জশির উপত্যকা্ এবং কাবুলের উত্তরের স্তেপ অঞ্চলে। তালিবানের বিরুদ্ধে ওদের হামলার সময় আমি ছিলাম নিয়মিত দর্শক। তার জন্যে আমাকে রাত কাটাতে হয়েছে কখনও পাথরের মেঝেয়, মাটির কুটিরে, বা কখনও সোজা যুদ্ধের ময়দানে। যাতায়াত করতে হয়েছে লরির পেছনে উঠে, ফৌজি গাড়িতে, ঘোড়ার পিঠে চড়ে বা পায়ে হেঁটে।

    তালিবানের পতন হলে নর্দান অ্যালায়েন্সের সঙ্গে আমিও কাবুল রওনা দিলাম। একটা বইয়ের দোকানে দেখা হোল এক পাকাচুল সৌম্য ব্যক্তিত্বের সঙ্গে। এতদিন সপ্তাহের পর সপ্তাহ বারুদ-গন্ধ আর ধ্বংসস্তুপের মাঝে কাটিয়ে খালি যুদ্ধের রণকৌশল ও সামরিক অগ্রগতি নিয়ে বকবক শুনে এবার বইয়ের পাতা ওলটানো আর সাহিত্য ও ইতিহাসের চর্চা! কেমন তরতাজা হয়ে উঠলাম।

    সুলতান খানের তাকগুলো নানান ভাষার বইয়ের ভারে যেন নুয়ে পড়ছে; চোখে পড়ছে কাব্যসংকলন, আফগানি উপকথা, ইতিহাসের বই ও উপন্যাস। খদ্দেরকে বই গছানো ও ভালই জানে। যখন প্রথমবার ওর দোকান থেকে বেরিয়ে এলাম- আমার হাতে চিল সাত সাতটা বই। এরপর সময় পেলেই গিয়ে উঁকি মারতাম বইয়ের খোঁজে, বাড়তি আগ্রহ ছিল একজন চমৎকার বইওলার সঙ্গে গল্প করার। ও আসলে এমন এক দেশপ্রেমিক যে মনে করে ওর দেশ বার বার ওদের মত লোকজনকে হতাশ করেছে।

    ‘প্রথমে কম্যুনিস্টরা আমার বইপত্তর পোড়ালো, এরপর মুজাহিদিনের দল এসে দোকান লুঠ করল। শেষে তালিবান এসে আবার সব পুড়িয়ে দিল’।

    আমি ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থেকে ওর গল্প শুনতাম। ও বলতে থাকত বিভিন্ন শাসকের সময়ে কেমন সব সেন্সর ছিল, আর তাদের বিরুদ্ধে কীভাবে শুরু হোল ওর লড়াই। কেমন করে পুলিশের চোখে ধূলো দিত, ঠিক সময়ে বইগুলো অন্যদের কাছে পাচার করত—একবার জেলযাত্রাও বাদ পড়েনি। যখন একের পর এক একনায়কের দল দেশের সাহিত্য ও শিল্পকে ধ্বংস করতে উঠে পড়ে লেগেছিল, তখন ও হয়ে উঠল এসবের নিরলস একক রক্ষাকবচ। বুঝতে পারলামঃ আমি এখন মুখোমুখি হয়েছি আফগান সংস্কৃতির এক জীবন্ত ঐতিহ্যের, আমার সামনে দু’পায়ে জোর দিয়ে দাঁড়ানো এক মূর্তিমান ইতিহাসের।

    একদিন ও আমাকে ওর বাড়িতে রাত্তিরের খাবার খেতে ডাকল। ওর গোটা পরিবার, মানে ওর বউদের থেকে কোন একজন, ছেলেরা, ভাই-বোন, মা, দু’এক জন তুতো ভাই — সবাই মেজেতে সাজিয়ে রাখা এক বিশাল খাবারদাবারের সামনে গোল হয়ে বসেছিল।

    সুলতান কিছু পুরনো দিনের গল্প শোনাল, ছেলের দল হেসে উঠল; আরও কিছু হাসির কথা হোল। কত খোলামেলা পরিবেশ, এতদিন পাহাড়ে কম্যান্ডোদের সঙ্গে ভাগ করে খাওয়া সাদামাটা খাবারের সঙ্গে কত তফাৎ! কিন্তু শীগগিরই চোখে পড়ল যে মেয়েরা বিশেষ মুখ খুলছে না। সুলতানের সবচেয়ে ছোট কিশোরী বঊটি দাওয়ার একপাশে বাচ্চাকোলে শান্ত হয়ে বসে আছে। সেদিন ওর প্রথম বঊকে দেখিনি। খেয়াল করলাম, অন্য মেয়েরা প্রশ্ন করলে জবাব দিচ্ছিল এবং রান্নার প্রশংসা শুনে খুশি হচ্ছিল বটে, কিন্তু নিজে থেকে কোন আলোচনায় যাচ্ছিল না।

    চলে আসার সময় ভাবছিলামঃ ‘এই হোল আফগানিস্থান। এই পরিবারকে নিয়েই যদি একটা বই লিখি? - দারুণ হবে’।

    পরের দিন বইয়ের দোকানে গিয়ে সুলতানের সঙ্গে দেখা করে আমার মাথায় যে পোকা ঘুরছে সেটার কথা ওকে বললাম।

    ‘ধন্যবাদ’, ওর সংক্ষিপ্ত উত্তর।

    ‘কিন্তু এর মানে হোল আমাকে তোমার বাড়ি যেতে হবে আর তোমাদের সঙ্গে থাকতে হবে’।

    ‘স্বাগতম’।

    ‘আমি কিন্তু তোমার সঙ্গে সব ঘুরে ফিরে দেখব, তোমরা যেভাবে থাক, সেভাবেই থাকব। মানে তোমার সঙ্গে, তোমার বউ, ছেলেমেয়ে সবার সঙ্গে’।

    ‘স্বাগতম’; ওর সেই এক কথা।

    ফেব্রুয়ারি মাসের এক কুয়াশাঘেরা দিনে আমি ওদের বাড়ি চলে গেলাম। আমার সম্বল বলতে কম্পিউটার, ক’টা খাতা, আর কলম; একটা মোবাইল আর গায়ে যা চাপানো ছিল। বাকিসব চলার পথে বা উজবেকিস্তানের কোথাও, হাপিস হয়ে গেছে। আমাকে ওরা দু’হাত বাড়িয়ে আপন করে নিল। ক্রমশঃ আমি ওদের দেওয়া আফগানি পোশাকে বেশ স্বচ্ছন্দ হয়ে উঠলাম।

    আমার ঠাঁই হোল মাটিতে পাতা তোষকে, ওর ছোটবোন লায়লার পাশটিতে। আমার দেখাশুনোর সব ভার এখন ওর ওপর।

    ‘তুমি আমার ছোট্ট খুকুমণি’, উনিশ বছুরে মেয়েটি প্রথম সন্ধ্যাতেই আমাকে বলে দিল যে আমার দেখাশুনো ওই করবে। রাত্তিরে যতবার বিছানা ছেড়ে উঠেছি প্রত্যেকবার দেখি -- ও নিজেও লাফিয়ে উঠে সটান খাড়া!

    সুলতান ওর পরিবারের সবাইকে বলে দিয়েছিল যে আমি যা চাইব তা যেন পেয়ে যাই। পরে জেনেছি যে এর ব্যত্যয় হলে শাস্তি পাওয়ার ভয়ও দেখানো হয়েছিল।

    সারাদিন ধরে খালি খাবার খাও আর গরম চায়ে চুমুক দাও। ধীরে ধীরে আমি ওদের পারিবারিক জীবনে প্রবেশ পেলাম। ওরা আমাকে ওদের কিছু কিছু ব্যাপার বলতে শুরু করল, কিন্তু ওদের যখন মর্জি, আমি যখন প্রশ্ন করব তখন নয় । আমার হাতে খাতা কলম দেখলে ওদের কথা বলার ইচ্ছে উপে যেত। কথা বলত বাজার যাওয়ার পথে, বাসে চড়ে বা রাস্তায় চলতে চলতে্‌, অথবা গভীর রাতে বিছানায় শুয়ে। বেশিরভাগ তথ্য বেরিয়ে আসত স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে, সে এমন সব কথা যা নিয়ে জিজ্ঞেস করার কথা আমার মাথায় আসেই নি।

    বইটা লিখেছি একটু সাহিত্যিক ঢঙে, কিন্তু এসবের ভিত্তি হোল আমার সামনে ঘটা কিছু বাস্তব ঘটনা বা কিছু ব্যাপারে যারা অংশগ্রহণ করেছে তাদের থেকে শোনা বর্ণনা। তবে যখন কারও চিন্তা বা অনুভূতির কথা লিখছি সেটা অবশ্যি লোকে সেই সময়ে যা ভেবেছে বলে আমায় বলেছে তাই। খবরের কাগজে আমার লেখা পড়ে অনেক পাঠক জানতে চেয়েছেঃ ‘ওই পরিবারের কোন সদস্যের মাথায় কখন কী ঘুরছে সেটা তুমি কেমন করে জানলে’? না, আমি কোন সবজান্তা নই। আন্তরিক অনুভূতি ও কথাবার্তার ব্যাপারে আমায় পরিবারের যে যা বলেছে তাই লিখেছি।

    ‘দরি’ নামক ফার্সির ভাষার স্থানীয় কথ্য রূপটি আমার আয়ত্ত হয়নি। অথচ খান পরিবারের সবাই নিজেদের মধ্যে ওই ভাষাতেই কথা বলে। কিন্তু ওদের বেশ ক’জন আবার দিব্য ইংরেজি বলতে পারে। অবাক হচ্ছেন? অবাক হওয়ারই কথা। কিন্তু আমার কাবুলের গল্পটিও যে এক অবাক পরিবারের কাহিনী। যে দেশের শতকরা পঁচাত্তরজন নাগরিক লিখতে বা পড়তে শেখেনি সে দেশে এক বইবিক্রেতার পরিবার!

    এক কূটনৈতিক আধিকারিককে দরি ভাষা শেখাতে গিয়ে সুলতান শিখে ফেলেছে একধরণের বাগবাহুল্যে ভরা রঙচঙে ইংরেজির কথ্যরূপ। ছোটবোন লায়লা বলে চমৎকার ইংরেজি, শিখেছে উদ্বাস্তু হয়ে থাকার সময়ে পাকিস্তানের স্কুলে, পরে আফগানিস্থানের সান্ধ্যকালীন ক্লাসে। সুলতানের বড় ছেলে মনসুরও ইংরেজি কথাবার্তায় চোস্ত, শিখেছে কয়েক বছর ধরে, পাকিস্তানের স্কুলে। ও আমাকে ওর ভয় ও আতংক, ভালবাসা এবং ঈশ্বরের সঙ্গে বাতচিতের কথা বেশ ভালভাবে গুছিয়ে বলত। ও বর্ণনা করত কীভাবে ও এক ধার্মিক শুদ্ধিকরণ অনুষ্ঠানে নিমগ্ন হয়ে পবিত্র হতে চায়। ওর ‘মাজার’ তীর্থযাত্রায় ও আমাকে এক অদৃশ্য চতুর্থ সঙ্গী হিসেবে সঙ্গে নিয়েছে। এছাড়া পেশোয়ার ও লাহোরে ওর বিজনেস ট্রিপে আমি ওর সঙ্গী হয়েছি। আরও গেছি – আল কায়দার খোঁজে, বাজারে কেনাকাটায়, হামামে স্নানে, বিয়েতে ও বিয়ের কেনাকাটায়। বাদ পড়েনি স্কুল, শিক্ষা মন্ত্রক, থানা এবং জেল।

    বলে রাখা ভাল যে জামিলার নাটকীয় পরিণতি বা রহিমুল্লার পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আমার কোন প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল না। সোনিয়াকে সুলতানের প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনাটা আমি শুনেছি ওর যত কুশীলব, যেমন - সুলতান, সোনিয়া, ওর মা, বোন, ভাই ও শরিফার থেকে।

    সুলতান ওর পরিবারের বাইরের কোন লোককে ওর বাড়িতে থাকতে দিত না। তাই ওর বড় ছেলে মনসুর, ছোট মেয়ে লায়লা এবং ও নিজে আমার দোভাষীর কাজ করত। অবশ্য এর ফলে ওদের পারিবারিক গল্পগাছায় ওই তিনজনের প্রভাব বেশি দেখা যেত। তবে আমি সব আখ্যানগুলো দু’দু’বার করে চেক করতাম। আর ওই তিনজনকে একই প্রশ্নের গোছা কয়েকবার করে জিজ্ঞেস করে পরে মিলিয়ে নিতাম।

    গোটা পরিবার জানত যে আমি একটা বই লিখব এবং সেটাই আমার ওদের সঙ্গে থাকার উদ্দেশ্য। যখন চাইত যে অমুক কথা বা গল্পটা যেন বইয়ে না লিখি - তখন ওরা সেটা আগেভাগে বলে দিত। সে যাই হোক, আমি খান পরিবার ও অন্য যাদের উক্তি এখানে দিয়েছি তাদের চেনা নাম দিই নি। এরকম করতে কেউ আমায় বলে নি, আমার মনে হয়েছে এটাই উচিত হবে।

    আমার দিনচর্যা চলত ওদের পরিবারের রুটিন মেনে। চোখ খুলতাম বাচ্চাদের চেঁচামেচি ও পুরুষদের হুকুম কানে যেতেই। আমি বাথরুম যেতে হলে আমার পালা আসার জন্য অপেক্ষা করতাম, অথবা সবার হয়ে গেলে চুপচাপ ঢুকে পড়তাম। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে কিছু গরম জল আমার কপালে জুটত, তবে শীগগির বুঝতে পারলাম- গরম জল না হলেও যদি চোখে মুখে এক পেয়ালা ঠান্ডা জলের ছিটে দেয়া যায় তাহলেও বেশ লাগে। আমার বাকি দিনটা কাটত ঘরে মেয়েমহলে গুলতানি করে, আত্মীয়স্বজনের বাড়ি বেরিয়ে অথবা বাজার ঘুরে। নইলে রয়েছে সুলতান ও তার ছেলেদের সঙ্গে ওদের দোকানে যাওয়া, নগর ভ্রমণ ইত্যাদি। তারপর সন্ধ্যে হলে পরিবারের সঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে নেয়া এবং বিছানায় যাওয়ার আগে পর্য্যন্ত একের পর এক গ্রীন টি খেতে থাকা।

    আমি হলাম অতিথি, কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি ওদের পরিবারের একজন হয়ে গেলাম। আমাকে ওরা খুব খাতির করে রেখেছিল। পরিবারটি ছিল উদার এবং খোলামেলা। আমরা একসঙ্গে অনেক আনন্দঘন মুহুর্ত কাটিয়েছি। কিন্তু কারও সঙ্গে এত রাগ দেখাইনি যেমন খান পরিবারে দেখিয়েছি এবং কদাচিৎ এত ঝগড়া করেছি যেমনটি খান পরিবারের সঙ্গে হয়েছে। কী বলব, আগে কখনও কারও গায়ে হাত তোলার ইচ্ছে হয় নি, অথচ খান পরিবারে থাকার সময় হয়েছিল। ওদের একটা ব্যাপারই আমাকে বারবার খেপিয়ে তুলত—পরিবারে মেয়েদের সঙ্গে পুরুষদের ব্যবহার। পুরুষের শ্রেষ্ঠত্বের ব্যাপারটা ওদের মজ্জায় এমনভাবে ঢুকে রয়েছে যে এটা নিয়ে কেউ প্রশ্নও করত না।

    মনে হয় ওরা আমায় উভলিঙ্গ গোছের কিছু ভাবত। পশ্চিমী সংস্কৃতির ফলে আমি পুরুষ ও মহিলা সবার সঙ্গে সমান ভাবে মিশতাম। যদি নিখাদ পুরুষ হতাম, তো ঘরের মধ্যে মেয়েদের সঙ্গে এত ঘনিষ্ঠ হবার সুযোগই পেতাম না, চারপাশে গুজব ও কেচ্ছার বান ডাকবে যে! ওদিকে মেয়ে হলেও পুরুষদের জগতে অবলীলাক্রমে ঘুরে বেড়াতে আমার কোন বাধা ছিলনা। ভোজের সময় পুরুষ ও মেয়েদের আলাদা কামরায় খেতে দেওয়া হয়। আমিই একমাত্র ব্যতিক্রম যে স্বচ্ছন্দে দুটো দলের মধ্যে মিশে দুটো কামরায় যেতে পারতাম।

    আমাকে আফগান মেয়েদের পোশাকের কড়া অনুশাসন থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছিল এবং আমি যেখানে ইচ্ছে অবাধে যেতে পারতাম। যাইহোক, আমি অনেক সময় বুর্কা পড়ে থাকতাম যাতে কেউ আমার দিকে মনোযোগ না দেয়। কারণ, কাবুল শহরের রাস্তায় একাকী পশ্চিমা মহিলা অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত দ্রষ্টব্য হয়ে দাঁড়ায়। বুর্কার ভেতর থেকে আমি ইচ্ছেমত সবাইকে দেখতে পেতাম অথচ আমাকে কেউ দেখত না। বাইরে বেরোলে আমি আমার নিজের দিকে কারও নজর না টেনেও অন্যসব পরিবারের লোকজনকে দেখতে পারতাম । এই অনামা বা অজ্ঞাতপরিচয় হয়ে থাকা এক হিসেবে মুক্তির স্বাদ দিত; কাবুলের রাস্তায় নির্জনতা বা শান্তি সহজে মেলে না।

    আমার বুর্কা পরার পেছনে আরেকটি কারণ হোল একবার পরখ করে দেখা যে আফগান মেয়ে হলে কেমন লাগে! একটা আদ্দেক খালি বাসের মধ্যেও এক্কেবারে পেছনে শুধু মেয়েদের জন্য অল্প কয়েকটি বাঁধা সীটের ঠাসাঠাসির মধ্যে সেঁধিয়ে যেতে কেমন লাগে? আর ট্যাক্সির পেছনের ডিকির মধ্যে গুটিশুটি হয়ে ঢোকা? পেছনের সীটে একজন পুরুষ বসে রয়েছে যে! কেমন লাগে যখন সবাই তাকিয়ে দেখে একটা বেশ লম্বামত বুর্কাধারীকে এবং প্রথমবার বুর্কাপরে পথের মাঝে কোন পুরুষের তারিফ শুনতে পেলে!

    কীভাবে যেন অল্পদিনেই আমি এসব ঘেন্না করতে শুরু করলাম; আমার মাথায় এঁটে বসা জিনিসটা মাথাধরা বাড়িয়ে দিল এবং ওই সুতোর জালের ফাঁক দিয়ে কোন কিছু ঠিকমত দেখা যে কী কষ্টকর! এর মধ্যে কত কম হাওয়া ঢোকে, কত তাড়াতাড়ি তুমি ঘামতে শুরু কর, কেন তোমাকে সারাক্ষণ সতর্ক থাকতে হয় যে তুমি কিসে পা ফেলছ, কারণ তোমার পদযুগল কোথায় তুমি দেখতেই পাচ্ছ না যে! রাস্তা থেকে কত ধূলো-ময়লা আবর্জনা তোমার পোষাকে চেপে বসে! আর বাড়ি ফিরে ওটাকে খুলে ফেলার পর কী আরাম! কী আরাম!

    অবশ্য কখনও কখনও বুর্কা পরেছি সুরক্ষার কথা ভেবে -- যখন সুলতানের সঙ্গে জালালাবাদের বিপদসংকুল পথে যাত্রা করেছি; সীমান্তের কোন নোংরা স্টেশনে রাত কাটিয়েছি বা মাঝ রাতে রাস্তায় বেরিয়েছি। আফগান মেয়েরা সাধারণতঃ একগুচ্ছ ডলার এবং কম্পিউটার নিয়ে যাত্রাটাত্রা করে না। কাজেই পথে ওঁত পেতে থাকা লুঠেরাদের নজর স্বাভাবিকভাবেই কোন বুর্কা পরা একলা মহিলার দিকে পড়ত না।

    তবে একটা কথা বেশ জোর দিয়ে বলতে চাই যে এটা এক আফগান পরিবারের গল্প। এরা এক অর্ত্থে মধ্যবিত্ত, যদি ‘মধ্যবিত্ত’ শব্দটি আফগান সমাজের ব্যাপারে আদৌ বলা যায়। এদের কেউ কেউ শিক্ষিত, অনেকেই লিখতে পড়তে শিখেছে। এদের যথেষ্ট টাকাপয়সা আছে এবং এরা কখনও না খেয়ে থাকে না। কিন্তু এরা ছাড়াও কয়েক মিলিয়ন পরিবার রয়েছে, অন্যরকম পরিবার।

    যদি আমি একটি ‘টিপিক্যাল’ আফগান পরিবারের সঙ্গে থাকতে চাইতাম তাহলে আমাকে যেতে হত সুদূর গ্রাম এলাকায়। যেখানে পরিবারের আকার বিশাল, কেউ লিখতে পড়তে জানেনা এবং যাদের রোজকার দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোগাড় করাই এক বিরাট সমস্যা। আমি এই পরিবারটিকে বেছে নিয়েছি এই জন্যে নয় যে এটি আফগানিস্থানের একটি গড়পড়তা প্রতিনিধি পরিবার; আসল কারণ হোল এরা আমাকে উদ্বুদ্ধ করেছে ।

    তালিবান পালিয়ে যাওয়ার পরের বসন্তে আমি কাবুলে ছিলাম। সেই বসন্ত ছিল আশা-নিরাশার দোলাচলে ভরা। হ্যাঁ, তালিবানের পতনকে সবাই স্বাগত করেছিল। রাস্তায় রাস্তায় ধর্মের পাহারাদার নীতিপুলিশের খোঁচাখুঁচির ভয় নেই। মেয়েরা ফের শহরে একা একা ঘুরে বেড়াতে পারে, পড়াশুনো করতে পারে, স্কুলে যেতে পারে। কিন্তু গত দশকের ব্যর্থতার হতাশা বাতাসে ভেসে বেড়ায়। ফের কিছু বদলাবে? কেন বদলাবে?

    বসন্তকাল কাটলো তুলনামূলক ভাবে বেশ কিছুটা শান্তিতে। আশার অংকুর মাথা তুলল। কিছু যোজনা তৈরি হোল। মেয়ের দল বেশি বেশি করে ঘরে বুর্কা পরা বন্ধ করল। কেউ কেউ চাকরি করতে এগিয়ে এল, উদ্বাস্তুরা বাড়ি ফিরল।

    সরকার দ্বিধাগ্রস্ত, কার হাত ধরবে — প্রাচীনপন্থী নাকি আধুনিক, যুদ্ধবাজ প্রভুদের। নাকি স্থানীয় উপজাতিদের নেতা্দের? দেশের নেতা হামিদ করজাই এইসব ডামাডোলের মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করে এক রাজনৈতিক গতিপথ খুঁজতে ব্যস্ত। তিনি জনপ্রিয়, কিন্তু তাঁর না আছে ফৌজ, না আছে কোন রাজনৈতিক দল। অথচ তাঁর দেশ ভরে গেছে অগুনতি লড়াকু দলবল আর অসীমিত অস্ত্রভাণ্ডারে।

    কাবুলের পরিস্থিতি মোটামুটি শান্তিপূর্ণ বলা যায়। তবে দু’জন মন্ত্রীকে হত্যা করা হয়েছে এবং আরেকজনের উপর প্রাণঘাতী হামলা হয়েছে। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি অব্যাহত। অনেকের বিশ্বাস রাস্তায় টহলরত বিদেশি সৈন্যদের উপর। ওঁরা বলেন, "এরা না হলে অ্যাদ্দিনে ফের গৃহযুদ্ধ শুরু হত"।

    যা দেখেছি যা শুনেছি তাই লিখতে চেষ্টা করেছি। চেয়েছি ‘কাবুল বসন্ত’ নিয়ে আমার মনে যে ছবি ফুটে উঠেছিল, সেটাকে কাগজে কলমে ধরতে। তাদের কথা বলতে -- যারা চেয়েছিল শীতকাতুরে ভাব ঝেড়ে ফেলে জেগে উঠতে, বিকশিত হতে। আর তারাও রয়েছে যারা নিরুপায়, যারা লায়লার ভাষায় ‘ধুলো চাটতে’ বাধ্য।

    Asne Seierstad
    Oslo, 1 August, 2002

    অনুবাদকের পাদটীকাঃ
    সজাগ পাঠক দেখতেই পাবেন দুই দশক পরে তালিবান ফের কাবুলে ফিরে আসায় ছবিটা কত পালটে গেছে, বা কোথায় কোথায় পাল্টায় নি -- বিশেষ করে মেয়েদের জীবনে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    পর্ব ১ | পর্ব ২ | পর্ব ৩
  • ধারাবাহিক | ০২ নভেম্বর ২০২১ | ১২৫৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • হীরেন সিংহরায় | ০৩ নভেম্বর ২০২১ ০৬:৫২500623
  • দারুন ! বাংলায় আরো ভাল লাগছে পড়তে 
  • ar | 173.48.167.228 | ০৩ নভেম্বর ২০২১ ০৭:৫৬500624
  • @ রঞ্জন,
    ভাষান্তরের প্রাককথাতে নিম্নের বিতর্কগুলো থাকলে ভাল হয়।

    Controversy

    Following global critical acclaim, many of the book's descriptions were contested by Rais, whose second wife Suraia sued the author in Norway for defamation.
    On July 24, 2010, Seierstad was found guilty of defamation and “negligent journalistic practices and ordered to pay damages to Suraia Rais, wife of Shah Muhammad Rais”.[1][2]
    Seierstad won an appeal which overturned the previous ruling and cleared the author and her publisher, Cappelen Damm, of invading the privacy of the Rais family, and concluded that the facts of the book were accurate.[3]

    Effect on the Rais Family
    During a trip to Scandinavia in November 2005, Rais declared he was seeking asylum in either Norway or Sweden, as a political refugee. He felt things revealed about him in Seierstad's book had made life for him and his family unsafe in Afghanistan, where bootleg versions of the book had been published in Persian.
    Rais has published his own version of the story, Once Upon a Time There Was a Bookseller in Kabull which has been translated into English and several other languages.[4]

    Trial

    There are contradictory accounts concerning Seierstad's legal battles with Shah Muhammad Rais (the bookseller portrayed in The Bookseller of Kabul). According to The Irish Times, on 24 July 2010 Seierstad was found guilty of defamation and "negligent journalistic practices and ordered to pay damages to Suraia Rais, wife of Shah Muhammad Rais".[7] The UK's the Guardian published the same story, but later revised the tale online and in print. The revised version claims Seirstad was not found guilty of defamation or of negligence, but rather of invasion of privacy, the decision on damages would be taken later, and was finally 250,000 Norwegian kroner (£26,000). In relation to the book's influence on Rais's family members, the Guardian goes on to state, "The article also said the book's revelations of personal details caused several members of the Afghan family to move to Pakistan and Canada. We should have made clear this was an allegation made by the plaintiff's side in a case document."[8] Seierstad won her appeal of the judgment and the Supreme Court declined to review the appellate court's decision.[9]

     
  • Ranjan Roy | ০৩ নভেম্বর ২০২১ ১০:৩৮500632
  • ar,
      অনেক ধন্যবাদ। এসব কিছুই জানতাম না। আমি বোধহয় অনেক সরল দুনিয়াতে বাস করি। :)) 
    তাই বোধহয় দু'বছর আগে বইটা পড়ে আমি লেখিকাকে প্রকাশকের ইমেইলে একটা মেইল পাঠিয়েছিলেম, কোন উত্তর পাইনি। 
      এখন ভাবছি এই বইটা শেষ হলে শাহ মুহম্মদ রইসের ভার্সনটাও(Once Upon a Time There Was a Bookseller in Kabull) অনুবাদ করে  এখানে লিখব। আশা করি, অনলাইনে ওই বইটাও কেনা যাবে।
  • Ranjan Roy | ০৩ নভেম্বর ২০২১ ১১:৪২500635
  • ar,

    সেলফ পাবলিশড বইটা আউট অফ স্টক। সোনজা স্যান্টাগের অ্যামাজনের পাতায় রিভিউ দিলামঃ

    Reviewed in the United States on March 4, 2013

    Verified Purchase

    What kind of book is this? It was supposed to be a rebuttal to the international bestselling book "The Bookseller of Kabul" by Åsne Seierstad's, a Norwegian journalist who traveled to Afghanistan after 9/11, stayed with an Afghan family, and wrote an supposed exposé on the plight of Afghan women and society. I was interested in hearing his version of events, but instead Shah Muhammad Rais writes a book about Norwegian trolls visiting him in a hotel room on a business trip to Karachi to get his side of the story. He spends the next 99 pages talking about how the trolls informed him that Seierstad and her publishing company used a "black magic" spell to prevent "the truth" from getting out but somehow never does get around to telling his side of the story. A serious waste of my money! I am beginning to wonder if this book was a money-making scam as I have never read something so ludicrous and completely off topic. "Once Upon A Time..." is a fitting title. I am very unhappy with this purchase!

    তবে আমি অনুবাদের শেষে নিজের নোটস এ আপনার তুলে দেওয়া কোটস ও সোনজা স্যান্টাগের বক্তব্য তুলে দেব।
  • ar | 173.48.167.228 | ০৪ নভেম্বর ২০২১ ০৫:২৮500666
  • রঞ্জন,
    ধন্যবাদ!! দুনিয়াটা আর সরল রাখতে দিলো কই?!!

    Sonja Sandig,এর পরেই Aurzella Izmarai এর লেখাটা আছে। নামদুটো খেয়াল করবেন।

    Two sides to every story.

    Interesting rebuttal that deserve a read, especially considering that I find the original authors claims to be a bit biased and her facts/intentions to be questionable ( especially considering the events that followed the publishing of the original book).
    Although not as sophisticated as a professional writer/novelist, The bookkeeper highlights these western biases and questionable intentions in this literally rebuttal and I think it is only fair to try and understand that as we look at cultures outside of the unforgiving western lens. This book will give you more context and perspective.
     
  • Amit | 203.0.3.2 | ০৪ নভেম্বর ২০২১ ০৭:০৮500667
  • সেই আর কি। যেমন আজকাল কঙ্গনার মতো ম্যানিয়াক সতিপ্রথাকেও জাস্টিফাই করার চেষ্টা করে রামমোহন রায় কে গালাগাল দেয়। এসব তথাকথিত ডিফারেন্ট কালচারাল ​​​​​​​ভিউ​​​​​​​পয়েন্ট ​​​​​​​র নাম ​​​​​​​করে ​​​​​​​পঞ্চাশের ​​​​​​​বুড়োর ​​​​​​​পনেরো ​​​​​​​বছরের ​​​​​​​সেকেন্ড ​​​​​​​বা থার্ড ওয়াইফ ​​​​​​​বাজারে গরু ছাগলের মত কেনাকেও ​​​​​​​জাস্টিফাই ​​​​​​​করার ​​​​​​​লোকের ​​​​​​​অভাব ​​​​​​​হবে ​​​​​​​কেন ? 
     
    মজাটা হলো যে নরওয়ের লেখকের ওয়েস্টার্ন ভিউপয়েন্ট নিয়ে এতো আঁতে ঘা লাগলো যে মামলা করতে হলো, ফ্যামিলির সেফটির নাম করে পলিটিকাল এসাইলাম সেই দেশেই চাই আবার। এতো গুচ্ছ গুচ্ছ দেশ আশেপাশেই যেখানে এমন সিমিলার কালচারাল ভিউপয়েন্ট ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সেসব দেশে কিন্তু  নয়। :) :) 
     
    চক্করটা ভালোই। গাছ , তলা কিছুই বাদ যাবেনা। 
  • Ranjan Roy | ০৪ নভেম্বর ২০২১ ০৮:২৭500672
  • ভালো বলেছেন অমিত।
  • Amit | 203.0.3.2 | ০৪ নভেম্বর ২০২১ ০৮:৪৬500673
  • মিরসি এলিয়াডের "লা নুই বেঙ্গলি " আর উল্টোদিকে মৈত্রেয়ী দেবীর "ন হন্যতে" মনে পড়ে গেলো। দুপক্ষের বা দুদিকের নিজেদের মত ভার্সন। তবে ওপরের ঘটনার সাথে ওনাদের বইয়ের কোনো তুলনাই চলেনা। বিশেষ করে নরওয়েতে পলিটিকাল এসাইলাম চাওয়ার পরে শাহ মুহম্মদ রইসের বই লেখার ​​​​​​​আসল উদ্দেশ্যটা ​​​​​​​পরিষ্কার। ​​​​​​​
  • বিপ্লব রহমান | ০৭ নভেম্বর ২০২১ ০৭:৩৯500857
  • "প্রথমে কম্যুনিস্টরা আমার বইপত্তর পোড়ালো, এরপর মুজাহিদিনের দল এসে দোকান লুঠ করল। শেষে তালিবান এসে আবার সব পুড়িয়ে দিল’।"
     
    এভাবেই সম্ভাবনাময় দেশটি ক্রমাগত লুণ্ঠন হয়, হতেই থাকে। ...
     
    খুব সাবলীল লেখা, প্রথম পর্ব থেকেই শুরু করলাম।  লেখকের গ্রাহক হয়েছি আগেই। 
    #
     
    কথাটি বোধহয় উপমহাদশীয় বাংলায় "বোরখা" হবে,  মোটেই "বুর্কা" নয়। 
     
    শুভ 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন