এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  •  সারপ্রাইজ (ছোটো গল্প)

    Mousumi GhoshDas লেখকের গ্রাহক হোন
    ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ১২২৯ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • সারপ্রাইজ 
    মৌসুমী ঘোষ দাস 
     
    তাতুনকে চকাস করে একটা চুমু খেয়ে  ভ্যানে তুলে দিল কুহেলী। তাতুন গিয়ে নিজের সিটে বসে মায়ের দিকে তাকিয়ে রইলো। তবে এখন আর আগের মতো কান্নাকাটি করে না এই যা শান্তি। ভেতরে তখন আট-নয়-দশ বয়সীদের কলকাকলি। ভ্যানের দরজা বন্ধ করে ভ্যান রওনা দিতেই তাতুন হাত তুলল,  কুহেলীও হাত নেড়ে বাই জানালো। ভ্যানটা বাঁক নিতেই এবারে হনহনিয়ে হাঁটতে হবে কুহেলীকে, যদি কপাল ভালো থাকে তবে রিক্সা পাবে, নইলে হনহন করে হেঁটেই যেতে হবে বাস স্টপেজ পর্জন্ত।                
     
    কুহেলী মধুপুর প্রাণী সম্পদ বিকাশ কেন্দ্রে চাকরি করে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে গলি পেরিয়ে ১০ মিনিটের হাঁটা পথ। তারপর রিক্সায় আরও ১০ মিনিট লাগে বাস স্টপেজে পৌঁছুতে। বাড়িটা এমন জায়গায় যে বেরিয়েই রিক্সা পাওয়া যায় না। আবার রিক্সা স্ট্যান্ডে পৌঁছেও কপাল ভাল থাকলে কখনো রিক্সা জোটে, কখনো বা জোটে না। টোটো গাড়ি ভর্তি না করে ছাড়ে না। তার ওপর  সে সময়টা স্কুল টাইম। অগত্যা হনহনিয়ে হেঁটেই বাস স্টপেজ। খুব বিরক্ত লাগে কুহুর। সকাল থেকে শুধু যুদ্ধ আর যুদ্ধ!! 
     
     
    ওর অফিসে তেমন কোনো কাজের চাপ নেই। কিন্তু ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সঠিক সময়ে অফিসে উপস্থিত হওয়াটা বাধ্যতামূলক। তাই আজও প্রতিদিনের মত ভিড় বাসে চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে নির্দিষ্ট সময়ের একটু আগেই অফিস এসে পৌঁছে গেল। ইতিমধ্যেই অফিসে বেশ কিছু স্টাফ চলে এসেছে। তবে কাঞ্চনা এখনো এসে পৌঁছায় নি। কাঞ্চনা ওর সহকর্মী। ঠিক পাশের টেবিলটাতেই বসে। কাজের ফাঁকে টুকটাক গল্প করতে করতে ওরা বন্ধু হয়ে গেছে। কাঞ্চনা খুব মিশুকে মেয়ে। সংসারের সুখের ঝাঁপি খুলে বসে কুহুর সামনে। কুহু হাসি মুখ করে শোনে।     
     
    গতকালের অসমাপ্ত ফাইল পত্রগুলি নিয়ে টেবিলে গুছিয়ে বসল কুহু। খালি বোতলে ওয়াটার পিউরিফায়ার থেকে খানিকটা জল ভরে নিজের টেবিলে রাখল। বাড়ি থেকে জল বয়ে আনার ঝামেলা নেই। অফিসেই সে ব্যবস্থা আছে। নইলে ভিড় বাসে জলের জন্য ভারি ব্যাগ বহন করতে কষ্টই হত। কিছুদিন হল ঘাড়ে স্পন্ডেলাইটিসের ব্যথা দেখা দিয়েছে। ডাক্তারবাবু হাল্কা ব্যয়াম করতে বলেছেন, কিন্তু সারাদিনের খাটুনির পর কুহুর আর নিজের দিকে তাকাবার সময় নেই, ইচ্ছেও নেই। কোনও ভাবে জীবনটা কেটে গেলেই বাঁচে। অফিসের সবাই এসে পৌঁছে যাওয়ার আগে ফ্যানের হাওয়ায় খানিক শুকিয়ে নিতে ভেজা চুলটা খুলে দিল কুহু। আরাম করে নিজের চেয়ারে গা এলিয়ে বসল। এই সময়টুকুই ওর একান্ত নিজের।  অলস ভাবে বসে থাকতে থাকতে দুচোখ বুজে এলো।         
     
     
    “happy birth day to you, কুহু”- চমকে দেখে কাঞ্চনা হাসিমুখে দাঁড়িয়ে সামনে একটা ছোট্ট মোড়ক হাতে নিয়ে। এতক্ষণে কুহুর মনে পড়ল, আজ ওর জন্মদিন! আজকাল এই দিনটা ও প্রায় ভুলেই গেছে। আসলে ও আর মনে রাখতেও চায় না এই দিনটা। কত মানুষেরই তো জন্মদিন মনে থাকে না, তাতে কি আর তাদের জীবন চলে না! কি দরকারই বা মনে রেখে? তাতে কার কি এসে যায়! যাদের এসে যেত তারা তো আর পৃথিবীতে নেই! এই দিনটা এলে ওর খুব মা-বাবার কথা মনে পড়ে। তাঁরা যতদিন বেঁচে ছিলেন, কত ভালবাসা দিয়ে, কত যত্ন করে, আদর করে এই দিনটি পালন করতেন! অতি সাধারন নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে কুহু। তবুও বাবা-মা শুধুমাত্র ওর মনের আনন্দের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করে এই দিনটি পালন করতেন। ওর বিয়ের পরও কেক, পায়েস, সাধ্য মত ছোট খাটো উপহার পাঠাতেন। অবশ্য তার জন্য সারাদিন স্বামী বিভাসের কাছে বাঁকা বাঁকা কথা শুনতে হত, “বুড়ো বয়সে বেশি আদিখ্যেতা” ইত্যাদি ইত্যাদি। অথচ কুহু যখন স্বামী সন্তানের জন্মদিন মনে রেখে পায়েস, পঞ্চ ব্যঞ্জন রেঁধে মুখের কাছে ধরে, তখন কিন্তু বিভাসের মনেও হয় না, বুড়ো বয়সে বেশি আদিখ্যেতা হয়ে যাচ্ছে। মা-বাবা গত হওয়ার পর তেমন কেউ নেই যে কুহুর খুশীর জন্য ভাবে! ও এখন বুঝতে পারে মা- বাবার মত পৃথিবীতে আর কেউ হয় না! জীবনের কত বড় বড় ব্যাপার কত সহজেই সমাধান করে দিতেন তাঁরা! মুখ দেখে মনের কষ্ট কেমন বুঝে যেতেন! দূরে থেকেও কত উজাড় করে ভালবাসতেন! সব চেয়ে কাছের বন্ধু ছিলেন তাঁরা! বড় অসহায় একাকী মনে হয় নিজেকে! আজ সহকর্মী কাঞ্চনা ওর জন্মদিন মনে রেখেছে- ভাবতেই চোখ দুটো চিকচিক করে উঠলো।        
     
     
    মা-বাবা দেখে শুনেই বেশ বড় ঘরে বিয়ে দিয়েছিলেন। ওর স্বামী বিভাস খুব বড় ব্যবসায়ী। প্রচুর অর্থ- সম্পদ ওদের। তবে মানসিক সম্পদ একেবারেই নেই বললে চলে। বিভাস অত্যাধিক কাঠখোট্টা ও স্বার্থপর প্রকৃতির ছেলে। বড্ড গোঁয়ার। কথা বলা, পথ চলা, হাসি ঠাট্টা, জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ- সবই নাকি হিসেব করে মেপে করতে হবে। কুহু খুবই প্রান খোলা স্বভাবের  মেয়ে ছিল । এভাবে মেপে চলতে ও একেবারেই অভ্যস্ত নয়। কিন্তু এ বাড়িতে ওর নিজের কোনও ইচ্ছেই টেকে না। বিভাসের একগুঁয়েমি মেনে চলতে চলতে কুহু হাঁপিয়ে উঠেছে। আজকাল হাসতেও ভুলে গেছে। মনের দুটো কথা বলে এমন আর কেউ নেই। মাঝে মাঝে মনে হয়, ও বুঝি পাগল হয়ে যাবে!
     
    ব্যাগের মধ্যে হঠাৎ মোবাইলটা বেজে উঠল। দেবব্রত মানে দেবু ফোন করেছে,
     
    - “ শোন আজ অফিস থেকে ফেরার পথে আমার অফিসে দেখা করে যাস তো। বিশেষ দরকার আছে।” দেবু কুহুর অনেক ব্যক্তিগত কাজ করে দেয়। কারন, অফিস সেরে কুহু ব্যাঙ্ক, পোষ্টাফিসের অন্যান্য কাজ করতে সময় পায় না। সে কারনে সই সাবুদের জন্য কুহুকে মাঝে মধ্যে ওর অফিসে ডেকে পাঠায়। দেবু কুহুর স্কুলের বন্ধু। ক্লাস টেন পর্যন্ত ওরা একই স্কুলে পড়েছে। তারপর কুহুরা শিলিগুড়ি চলে গেছে। ওর বাবার ট্রান্সফারের চাকরি। সেখানেই কুহুর কলেজ, ইউনিভার্সিটি কেটেছে। তারপর কুহু বিয়ে হয়ে বহরমপুর চলে আসে। স্কুল ছেড়ে যাবার পর থেকে দেবুর সাথে আর কোন যোগাযোগ ছিল না। দেবু এখন বহরমপুর স্টেট ব্যাংকে চাকরি করে। কিছুদিন আগে ফেসবুকে আবার ওদের যোগাযোগ হয়েছে। হ্যাঁ, কুহু কিছুদিন হল বিভাসের আড়ালেই ফেসবুক করছে। অফিসের সব কলিগদের ফেসবুকে একাউন্ট আছে। ওরাই একদিন জোর করে কুহুকে একাউন্ট খুলে দিয়েছে। বাড়িতে সময় নেই, তাই অফিসেই কাজের ফাঁকে মাঝে মধ্যে ফেসবুক খোলে। আর এভাবেই একদিন দেবুর প্রোফাইলের ছবিটা চোখে পড়ে। নামের সংগে চেহারা মিলে যাওয়ায়, সাহস করে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে দেয় কুহু। দেবুও রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করে। স্কুলের সেই রোগা প্যাংলা দেবু আজ বছর চল্লিশের সুঠাম সুপুরুষ! দেবু অবশ্য কুহুকে চিনতে পারেনি। আর চিনবেই বা কি করে? স্কুলের সেই সুন্দরী প্রাণোচ্ছল মেয়েটা আজ ভেঙ্গে চুরে অকালেই বুড়িয়ে যাওয়া বছর চল্লিশের এক মহিলা। প্রথম আলাপ কুহুই শুরু করেছিল। হঠাৎ একদিন দেবুকে অন লাইনে পেয়ে জিজ্ঞেস করেছিল,
     
     
    “ আচ্ছা আপনি কি বীরনগর গুরুসদয় হাই স্কুলে পড়তেন? ১৯৮০ এর মাধ্যমিক ব্যাচ?”।
     
    “হ্যাঁ, কেন বলুন তো?”
     
    “ আমিও ঐ স্কুলে, ঐ ব্যাচেই মাধ্যমিক দিয়েছিলাম। আমি কুহু। চিনতে পারছেন?”
     
    “কুহু, মানে, আচ্ছা, সায়েন্স কি শ্যামল স্যারের ব্যাচ?”
     
    “হ্যাঁ”
     
    “আমাদের স্কুলের কুহুকে তো চিনতে পেরেছি। তবে আপনার প্রোফাইলের ছবি দেখে তো প্রাণোচ্ছল সেই স্কুলের বান্ধবী কুহুকে চেনার উপায় নেই। কি চেহারা হয়েছে আপনার, মানে তোর? আমাদের স্কুলের কুহুর সাথে যে কোন মিল নেই রে! তা কোথায় থাকিস এখন? কি করিস? বাড়িতে কে কে আছেন? ইত্যাদি”।
     
    এই ভাবেই শুরু হয়েছিল ওদের আলাপ। দেবু ফোন নাম্বার দিয়ে বলেছিল, যদি ইচ্ছে হয়, আর সুযোগ সময় হয় আমাকে ফোন করতে পারিস। তারপর থেকে কুহু ফোন করে দেবুকে। তবে বিভাসের আড়ালেই কথা বলে। বিভাসের কথায়, “একটি মেয়ের সাথে নাকি একটি ছেলের কখনই নির্ভেজাল বন্ধুত্বের সম্পর্ক হতে পারে না, কেবলমাত্র নষ্টামির সম্পর্কই গড়ে ওঠে।”
     
    দেবুর সাথে কথা বলতে ভীষণ ভাল লাগে কুহুর। খুব পজিটিভ মাইন্ডের ছেলে দেবু। এত সুন্দর মজা করে কথা বলে, কুহুর সারাদিনের ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। মনের দুঃখ যন্ত্রণা সব ভুলে যায়। ভীষণ ভাবে উজ্জীবিত মনে হয় নিজেকে। প্রথমদিকে বিভাসকে লুকিয়ে দেবুর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে একটু অপরাধবোধ হত কুহুর। একদিন এই কথা বুঝতে পেরে দেবু বলেছিল,-
     
     
    “অদ্ভুত কথা! আরে, তুই কি লুকিয়ে আমার সাথে প্রেম করছিস নাকি? না তোকে নিয়ে আমি কোথাও পালিয়ে যাচ্ছি! আমরা ছোটবেলার বন্ধু। তাছাড়া, তোর আমার সংগে কথা বলে হাল্কা লাগে তাই বলছিস। জানিস তো, সারাদিনে অন্ততঃ একবার মানুষ যদি কারো সঙ্গে দুটো কথা প্রাণ খুলে না বলে, তবে সে মানুষ ধীরে ধীরে একদিন পাগল হয়ে যায়। নানা রকম অসুখে আক্রান্ত হয়! কারন মনের সাথে শরীরের অসুখ বিসুখের একটা যোগ আছে। বেশ তো আমার সাথে না হয় কথা বলিস না! স্বামীর ইচ্ছেমত কোন স্ত্রী লিঙ্গ কারো সাথেই না হয় বন্ধুত্ব করে মনের কথা বলে হাল্কা হোস, তবে কথা বলা খুব জরুরী ।”
     
       দেবুর কথাতেই এখন কুহু একটু একটু করে সাহসী ও আত্মবিশ্বাসী হয়েছে, আগের মত প্রান খুলে হাসতে শিখেছে।
     
            অফিস ছুটির পর কুহু বাসে করে এসে বাস স্ট্যান্ডে নামল। প্রতিদিন অবশ্য এর দুটো স্টপেজ আগে নামে। নেমে রিক্সায় দশ মিনিট তারপর হেঁটে দশ মিনিট লাগে বাড়ি পৌঁছতে। কিন্তু আজ দেবু বিশেষ দরকারে ডেকেছে, তাই স্ট্যান্ডে নামা। বাস স্ট্যান্ডের প্রায় কাছেই দেবুর অফিস। এইটুকু পথ হেঁটেই যাবে বলে ঠিক করল কুহু । বাস থেকে নেমে একটু এগোতেই দেখে দেবু বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে। কুহু অবাক হয়ে বলল,- “তুই এখানে যে? আমাকে তো তোর অফিস যেতে বললি। কি দরকারে ডেকেছিস বল তাড়াতাড়ি।”
     
     
    - “নে তাড়াতাড়ি বাইকে ওঠ তো, চা খেতে খেতে বলব। আর আজ কিন্তু তুই চা খাওয়াবি। মহা চিপ্পু একটা! চাকরি করিস, অথচ কোনোদিন কিছু খাওয়াস না।”
     
    কুহু একটু ইতস্তত করে বাইকে উঠে বসল। বাইক গেল সোজা বেনুবন রেস্টুরেন্ট। দেবু দুটো মোগলাই, দুই প্লেট চিলিচিকেন, দুটো কফির অর্ডার দিয়ে বসল। কুহু খুবই অপ্রস্তুত ও অস্বস্তি বোধ করতে লাগল। নিচু হয়ে হাত ব্যাগটা খুলে দেখে নিল, খাবারের দাম দেওয়ার মত টাকা আছে তো! নইলে যে আজ কি লজ্জায় পড়তে হবে! দেবুটা কি যে বিপদে ফেলল! চা খাবে বলে কত খাবারের অর্ডার দিয়ে বসল! হাত ব্যাগে শুধুমাত্র যাতায়াতের ভাড়া ছাড়া সামান্য কটা টাকা রাখে কুহু! কি যে লজ্জায় পড়তে হবে আজ কে জানে! চিন্তিত মুখে ব্যাগ থেকে চোখ সরিয়ে সোজা তাকাতেই দেখে, দেবু পকেট থেকে ছোট একটা উপহারের বাক্স বের করে কুহুর সামনে টেবিলের ওপর রেখে বলল,
     
      - “হ্যাপি বার্থ ডে কুহু, আগামী দিন গুলি যেন তোর খুব আনন্দে কাটে, খুব ভাল থাকিস রে, ফেসবুকে তোর বার্থডেটা জানতে পারি, তখনই ভাবলাম তোকে একটা সারপ্রাইজ দেবো!”
     
     
          কুহু বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে গেল। দেবুকে ধন্যবাদ দেবার জন্য মুখে কোন ভাষা খুঁজে পেল না। গভীর আনন্দে কুহুর চোখে জল চলে এলো। মা-বাবা চলে যাওয়ার পর কত বছর পরে আজ কেউ ওর জন্মদিনটা মনে রেখে এত আন্তরিক ভাবে ওকে শুভেচ্ছা জানাল! চোখ থেকে দু ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ল কুহুর। তা দেখে দেবু স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মজা করে বলল, “সে কি রে ? আমাকে খাওয়াতে হবে বলে ভয় পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করে দিলি নাকি! ওরে না না, আজ তোর জন্মদিনে আমিই তোকে খাওয়াব রে। তোকে সারপ্রাইজ দেব বলে এভাবে ডেকেছি। একটা হাত ঘড়ি দিলাম তোকে, যদি ব্যবহার করিস, খুব ভাল লাগবে।”
     
    কুহু বুঝতে পারল, সত্যিই প্রকৃত বন্ধুর কোন লিঙ্গ হয়না। ঈশ্বর, মা, বাবা, সন্তান, পুরুষ, নারী যে কেউ বন্ধু হতে পারে। যে মন দিয়ে ধৈর্য সহকারে অপরজনের যে কোন সমস্যার কথা শোনে, যে বন্ধুর দুঃখকে অনুভব করে, যে বন্ধুর প্রতিটি খুঁটি নাটি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখে, সেই তো আসল বন্ধু! আর এক ছাদের নিচে না থেকেও যে কত আপনজন হওয়া যায়, আজ দেবু তা প্রমান করল। চোখ মুছে হাসি মুখে কৃতজ্ঞ চিত্তে তাকাল দেবুর দিকে। জানালা দিয়ে একফালি চাঁদের আলো এসে পড়ল ওদের গায়ে। অনেকদিন পর আজ কুহুর শুভজন্মদিন পালিত হল। বাইরে তখন জ্যোৎস্নায় ভেসে যাচ্ছে চারিদিক।
     
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বিপ্লব রহমান | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১১:১৬498858
  • সরল গল্প, তবু মন ছুঁয়ে গেল। এইসব পাথর চাপা কষ্টে চোখ ভিজে যায়।

    খুব ভালো। আরো লিখুন

    #

    অনুগ্রহ করে সম্পাদনার ঘরে গিয়ে শিরোনামে প্রথমে গল্পের নাম “সাপ্রাইজ” ও পরে ব্রাকেটে “ছোট গল্প” কথাটি লিখবেন? নইলে একটু বিভ্রান্তি ঠেকছে ভাই

  • Mousumi GhoshDas | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১১:২৯498859
  • অসংখ্য ধন্যবাদ বিপ্লব রহমান স্যার
  • Mousumi GhoshDas | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১১:৩০498860
  • এডিট অপশন পাচ্ছি না যে
  • lcm | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১২:২৩498862
  • লগ ইন করে --- ইউজার নেম (ওপরে ডানদিকে ) >> খাতা >> সম্পাদনা করুন 
  • Mousumi GhoshDas | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৩:৪০498866
  • Icm অসংখ্য ধন্যবাদ
  • বিপ্লব রহমান | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৫:৫২498868
  • মৌসুমী, 
     
    এই চণ্ডাল আবার "স্যার" নাকি  রে ভাই?  তাহলে তেলাপোকাও জেটপ্লেন !! হা হা হা :))
  • kk | 68.184.245.97 | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২০:২৮498874
  • যাঃ, এত ভালোবেসে হাতঘড়ি দিলো, কিন্তু কুহু কি কোনদিনই ওটা সাহস করে ব্যবহার করতে পারবে? হয়তো লুকিয়েই রেখে দেবে সারা জীবন! :-(
  • Mousumi GhoshDas | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২০:৪৩498876
  • বিপ্লব রহমান 
    "এই চণ্ডাল আবার স্যার নাকি রে ভাই, তাহলে তেলাপোকাও জেটপ্লেন " মানে ঠিক বুঝলাম না তো 
  • বিপ্লব রহমান | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২১:২৭498881
  • মৌসুমী, 
     
    সেটা একটা দুষ্টুমী,  আর যাই হোক, আমি "স্যার" নই, অতি সাধারণ। শুভ 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে প্রতিক্রিয়া দিন