এসব আলোচনা এখন হবার কোনো মানে নেই, কিন্তু সম্পাদক নিরুপায়। গুরুচণ্ডা৯তে প্রায় ১৪ বছর আগে প্রকাশিত একটি লেখা (https://www.guruchandali.com/comment.php?topic=18135) নিয়ে সম্প্রতি কোনো কোনো গোষ্ঠী নেট মাধ্যমে প্রবল হইচই সৃষ্টি করেছেন। গুরুর সম্পাদনার সঙ্গে অতীতে বা বর্তমনে সংশ্লিষ্ট লোকজনের কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে। কোনো কোনো মহলে 'ফেক নিউজ' ছড়ানোর জন্যও দায়ী করা হয়েছে। গুরুতেও বিষাণ বসু, এই লেখাটি নিয়েই একটি সমালোচনাও লিখেছেন (https://www.guruchandali.com/comment.php?topic=20571)। ১৪ বছর আগের কোনো ঘটনার, এই মুহূর্তে, আলোচনার অগ্রাধিকার পাবার কথা নয়। কিন্তু যেহেতু অভিযোগগুলি উঠেছে, ফলে সম্পাদকের দিক থেকে সংক্ষেপে উত্তর দেওয়া প্রয়োজন।
প্রথমে কয়েকটি খুচরো কথা।
১। লেখাটি ১৪ বছর আগের। আজকের গুরুর লোকজনের কাছে তার জবাবদিহি চাওয়া অর্থহীন। লেখাটি প্রকাশ করার পিছনে গুরুর বর্তমান বা অতীত টিমের কারো যদি কোনো দায় থেকে থাকে, সেটি এই শর্মার। ফলে অন্য কারো কাছে কোনোরকম ব্যাখ্যা চাওয়ার কোনো মানেই নেই।
২। 'ফেক নিউজ' কথাটিও সম্পূর্ণ ভুল। যাঁরা কথাটি ছড়াচ্ছেন, তাঁদের গুরুর সাইট তো নয়ই, উদার পরিসর বা লিবারাল স্পেস সম্পর্কেই ধারণা খুব সীমিত। অথবা জেনেবুঝেই করছেন। কোনটা জানা নেই। তাই জানিয়ে রাখা যাক, গুরু কস্মিনকালেও কোনো সংবাদপত্র নয়, তেমন কোনো দাবিও নেই। ইদানিং কিছু প্রতিবেদন বেরোয় বটে, কিন্তু যে সময়ের কথা, তখন তাও বেরোত না। যা বেরোত, তা প্রবন্ধ। সংবাদ নয়, নিবন্ধ। নিউজ নয়, ভিউজ। উল্লেখ্য লেখাটিও কোনো নিউজ নয়। যেহেতু গুরু একটি একটি উদার পরিসর, তাই সমস্ত পক্ষের লেখা প্রকাশিত হয়। এই লেখাটির সমালোচনাও প্রকাশিত হয়েছে। অন্য দৃষ্টিভঙ্গিও প্রকাশিত হয়েছে। ভবিষ্যতেও হবে। তার কোনো লেখাই নিউজ নয়, এবং লেখকের দৃষ্টিভঙ্গিজাত। নানা দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে বিরোধ থাকবে, ফলে একটি লেখা অন্যটির বিরোধিতাও করতেই পারে। পারে শুধু নয়, উদার পরিসরে সেটাই কাম্য। গুরুর একটি লেখার কিয়দংশ শেয়ার করে যাঁরা ফেক এবং নিউজ, শব্দদুটি ছড়াচ্ছেন, তাঁরা উদার পরিসর ব্যাপারটিই বুঝছেন না, বা চাইছেন না। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে ঢুকে আছে যে মৌলবাদ, গুরু সেদিনও তার বিরোধী ছিল এবং আজও।
এবার জরুরি প্রশ্নটি। যা ততটা খুচরো নয়। লেখাটি বেরিয়েছিল সম্পাদিত বিভাগে। সম্পাদকের ইচ্ছে না হলে বেরোত না। বিভিন্ন মতকে ঠিক কতটা স্থান দেওয়া যায় একটি উদার পরিসরে? এটি খুচরো কথা নয়, উদার পরিসর সম্পর্কিত যে চলমান বিতর্ক, তার অংশ। দার্শনিক আলোচনায় এখানে ঢোকা যাবেনা, শুধু ওই লেখার নির্দিষ্ট প্রেক্ষিতেই থাকা যাক। লেখা প্রকাশের সময়কাল ২০০৭। খুব সম্ভবত লেখা হয়েছিল ১৫ তারিখ রাতে। তার ঠিক একদিন আগে সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম নারকীয় একটি ঘটনা ঘটে গেছে। নন্দীগ্রামের গুলিচালনা। বাম জমানায় পুলিশের গুলিচালনা একেবারেই বিরল ঘটনা ছিলনা, কিন্তু এক্ষেত্রে সব সীমারেখাই পেরিয়ে যায়। খুব সংক্ষেপে বললে, নিরস্ত্র জমায়েতের উপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। সরকারি হিসেবে ১৪ জন মারা যান। তার কিছু অংশ পুলিশ যেদিক থেকে গুলি চালাচ্ছিল, সেদিক থেকে তোলা ঝাপসা ভিডিওয় ধরা আছে। তখনও হাতে হাতে সেলফোন আসেনি।
এরপর পুলিশ এলাকায় ঢোকে। সঙ্গে ঢোকে দলীয় কর্মীরা। তারপর সে এলাকায় কী ঘটে তার খবর আর পাওয়া যায়নি। কারণ গোটা এলাকাকে অবরুদ্ধ রেখে, সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে না দিয়ে চলছিল পুলিশি তাণ্ডব। সংবাদমাধ্যমের হাতে-গোনা যে কজন এলাকায় ছিলেন, তাঁদের বর্ণনানুযায়ীই গুলি চালনার পর তাঁরা প্রাণ হাতে পালান। সাংবাদিক সুকুমার মিত্র প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণে (https://www.guruchandali.com/comment.php?topic=20569) লিখেছেন, "শ্রীকান্ত পাইকের কথা শোনার পর আর কোনও ঝুঁকি নেওয়ার কথা ভাবিনি। চোখে যা দেখেছি, কানে যা শুনেছি তা সম্বল করে প্রাণ নিয়ে পালানো... এরপর আর পাঁচ ঘন্টা ফোনে যোগাযোগ নেই। জ্যামার লাগানো হয়েছিল। যাতে ভিতরের খবর দ্রুত না বেরোতে পারে। নন্দীগ্রামে ওইদিনও গণহত্যা চালানোর সময় এলাকার চারধারে ছিল সিপিএম ও পুলিশের কঠোর নাকাবন্দী। কাউকে এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকী সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদেরও না।"
পরদিন সকালে আনন্দবাজারের হেডলাইন ছিল "রক্তে দখল মুক্তাঞ্চল"। সেদিন এর চেয়ে বেশি খবর তারাও জোগাড় করতে পারেনি। সেদিন, অর্থাৎ ১৫ তারিখ হাইকোর্ট পুলিশের কাজকে অসাংবিধানিক আখ্যা দেয়। জ্যোতি বসু প্রশ্ন করেন পিঠে গুলি কেন? মহিলাদের গুলি কেন? সবই পরের দিনের কাগজে বেরোয়। অর্থাৎ ১৬ তারিখ। সঙ্গে প্রথম পাতায় আরেকটি হেডলাইন ছিলঃ "হাড়হিম করা ত্রাসে নন্দীগ্রাম কার্যত বোবা"। "হাড়-হিম" শব্দবন্ধটি রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধির।
এর পরের দিন, অর্থাৎ ১৭ তারিখ বেরোয় বহু আলোচিত সৌমিত্র বসুর লেখাটি। কার্যত নন্দীগ্রাম তখনও অবরুদ্ধ। সন্ত্রাস, ক্ষয়ক্ষতি, মৃত্যুর পরিমাপ বাকি পৃথিবীর মানুষ জানেননা, জানতে দেওয়া হয়নি। লেখক নন্দীগ্রামে যাননি। যাবার কোনো উপায় ছিলনা। খবর জানারও। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান হুবহু উদ্ধৃত করেছেন মাত্র। অবশ্যই উদ্ধৃতি চিহ্নের ভিতরে। সে বয়ানে সুকুমার মিত্রর কথাও আছে, যিনি প্রাণ হাতে করে পালান নন্দীগ্রাম থেকে। বয়ানে মনে হয়না কোনো কিছু বিকৃত করা হয়েছে। কারণ এর কদিন পর সরকারি অবরোধ উঠে গেলে অমিতাভ গুপ্ত এবং বোলান গঙ্গোপাধ্যায় নন্দীগ্রাম ঘুরে প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে যে কথাবার্তা বলেছিলেন, তাতেও হুবহু একই চিত্র। এপ্রিলের ৫ তারিখ, আনন্দবাজারের এক উত্তর সম্পাদকীয়তে অমিতাভ গুপ্ত লেখেন "অশীতিপর বৃদ্ধা বলতে থাকেন 'পুলিশ প্রথমে গ্যাস মারল, তারপর গুলি করল। পুকুরে বিষ দিলে দেখেছেন কীভাবে পুঁটিমাছ ভেসে ওঠে? সেরকম ভাবে গাদাগাদি করে পড়ে ছিল মানুষগুলো। মেয়েদের টেনে নিল। গাছের সঙ্গে হাত বেঁধে কাপড় খুলে নিল। ইজ্জত লুটল। তারপর বুক কেটে নিল, মাংস খুবলে নিল, খুন করল।' শুনতে শুনতে শরীরের ভিতরটা গুলিয়ে ওঠে, কিন্তু তিনি বিবরণ দিয়েই চলেন... 'গুলি লেগে একটা বউ পড়ে গেল। কোলে একটা বাচ্চা ছিল, বুকের দুধ খাচ্ছিল। মা পড়ে যাওয়ায় বাচ্চাটাও মাটিতে ছিটকে পড়ল। সেই বাচ্চাটাকে তুলে নিয়ে দুপা ধরে টেনে আড়াআড়ি ছিঁড়ে ফেলল'। স্পষ্ট বুঝতে পারি, টেলিভিশনের পর্দায় ছবি দেখে আর খবরের কাগজের রিপোর্ট পড়ে এই নৃশংসতার অনেকটাই বুঝতে পারিনি এতদিন। বোঝা সম্ভব ছিলনা... উত্তর দেন বছর চল্লিশের কৃষক 'চোখ বন্ধ করলে শুধু রক্ত দেখতে পাই। ঘুমের মধ্যে দুহাত ছিটকে ওঠে, যেভাবে ওই বাচ্চাটাকে টেনে ছিঁড়ে দিয়েছিল পুলিশ, সেই ভাবে। আরও কতগুলো বাচ্চাকে যে পা দিয়ে চেপে, টেনে মারল... ঘুম হয়না...'"।
বোলান লেখেন মেয়েদের কথা। ধর্ষিতাদের বয়ান। হ্যান্ডিক্যাম দেখলেও কেঁপে উঠছেন কেউ। কারো যৌনাঙ্গে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে লাঠি। কারও রক্তস্রাব বন্ধ হয়নি তখনও। এইসব।
এ সবেরই জায়গা হয়েছিল, খবরে নয়, উত্তর সম্পাদকীয়তে। নিবন্ধ আকারে। কারণ, খবর জানার কোনো উপায় ছিলনা। একমাত্র ভরসা ছিল প্রত্যক্ষদর্শীরা। প্রশ্ন হল, কী বলবেন, এইসব বয়ানকে? বানানো? গোটা সংবাদমাধ্যম, পুরোটাই ফেক নিউজ তৈরির ফ্যাক্টরি? শুনলে সুমিত সরকার থেকে নোয়াম চমস্কি অবধি সকলে হেসে উঠবেন।
ফলে টেকনিকালি, এই সমস্ত নিবন্ধে, আনন্দবাজার হোক, বা গুরু, কোথাও ভুল নেই। খবর তো না, এগুলো উদ্ধৃতি। কিন্তু তার পরেও অবশ্যই একটি কথা আসে। যে কথা বিষাণ বসু লিখেছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে প্রত্যক্ষদর্শীরা যা বলেন, তা মিথ্যা না হলেও, অবশ্যই নানা অতিরঞ্জন মিশে থাকে। এক্ষেত্রেও আন্দাজ করা যায় কিছু অতিরঞ্জন ছিল। টেকনিকালি উদ্ধৃতির মধ্যের বক্তব্যের সরাসরি কোনো দায় নেবার প্রয়োজন না থাকলেও (যিনি বলেছেন, সেটা তাঁর দায়), নৈতিক দায়িত্বের কিছুটা নিশ্চয়ই লেখক এবং সম্পাদকের উপর বর্তায়। সে দায়, অবশ্যই স্বীকার করা দরকার। করছিও। ভবিষ্যতে, আশা করি, যুদ্ধপরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না, হলে, অবশ্যই এই শিক্ষা কাজে লাগবে। কিন্তু একই সঙ্গে এটুকুও মাথায় রাখতে হবে, যে, পরিস্থিতিটি যুদ্ধক্ষেত্রেরই ছিল। ক্ষয়ক্ষতি, খুন-জখম, মানবিকতার বিরুদ্ধে অপরাধ, সব মিলিয়েই। যে সরকারি দল যুদ্ধক্ষেত্রের হত্যালীলার মধ্যে ঠেলে দিয়েছিল নিজের রাজ্যের অধিবাসীদের, তারও সেই ভয়াবহ অপরাধ স্বীকার করার সময় হয়েছে। এই লেখাটির যাঁরা সমালোচনা করেছেন, তাঁরা এই প্রসঙ্গটি পুনরুত্থাপন করেছেন যখন, তখন আশা করি, এই বিষয়টিও মাথায় রাখবেন।
প্রসঙ্গটি যখন উঠেছেই, তখন আরও একটি কথা এখানে বলে রাখা জরুরি। এই যুদ্ধাপরাধের বিচার এখনও হয়নি। অন্যান্য অনেক কিছুর মতই (কাশীপুর-বরানগর, ৭২-৭৭ এর খুন-জখম, মরিচঝাঁপি) সেদিনের ঘটনার পূর্ণ তদন্ত হয়নি। সেদিনের অপরাধী যাঁরা, তাঁদেরও কোনো তদন্ত বা বিচার আদৌ হবে কিনা সন্দেহ। কারণ এর মধ্যে যুযুধান দুই শিবিরের দুই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতাই, লক্ষ্মণ শেঠ এবং শুভেন্দু অধিকারী, এক এক করে কেন্দ্রীয় সরকারি দলে যোগ দিয়ে দিয়েছেন, তারপর সমীকরণ আরও বদলেছে, বদলাচ্ছেও, পুলিশ আধিকারিকদের পদোন্নতি হয়েছে। চেপে দেওয়ার খেলা যে দিগন্তপ্রসারী, সে নিয়ে সন্দেহের বিশেষ কোনো অবকাশ নেই। তা সত্ত্বেও দাবিটি রেখে যেতে হবে। কারণ, সেটাই গণতন্ত্র।
"চেপে দেওয়ার খেলা যে দিগন্তপ্রসারী, সে নিয়ে সন্দেহের বিশেষ কোনো অবকাশ নেই। তা সত্ত্বেও দাবিটি রেখে যেতে হবে। কারণ, সেটাই গণতন্ত্র।"- তো গত দশ বছরে বুজিদের প্রাণের প্রিয় রানীমার কাছে এসব সত্যি টা উন্মোচন করার জন্যে ঠিক কি কি দাবি , কোথায় কোথায় রাখা হয়েছে , গণতন্ত্রের খাতিরে সেটা নিয়েও একটু আলোচনা হোক না ? নাকি ওনার মুখ ফস্কানোর আশায় বসে ছিলেন এদ্দিন সব সুশীল সমাজ ?
তবে কিনা ভোটের আতঙ্কে মমব্যানের মুখের ফোয়ারা যা ছুটছে, এবার জ্ঞানেশ্বরী নিয়েও কেঁচো খুঁড়তে সাপ না বেরিয়ে পড়ে। পা ভাঙার নাটকের চাইতে তেনার মুখে ফোস্কা পড়ার নাটক করলে এর চেয়ে বেটার হতো হয়তো , এতো সেম সাইড গোল খেতে হতনা।
মজা লাগে দেখে যে এককালের আগুন ঝরানো সুশীল সমাজ , "যে আসে আসুক বামেরা যাক" হুঙ্কার তোলা সুশীল সমাজের দশ বছর পরে এমনই হাড়ির হাল যে সোজাসুজি রাণীমাকে ভোট দিতে বলার মতো মেরুদন্ডটাও নেই। বদলে এসব নো ভোট টু বিজেপির এর মতো সস্তা তামাশার আড়ালে মুখ লোকাতে হচ্ছে।
পাপ বাপকেও ছাড়ে না। মমতাকে ছাড়বেনা, শুভেন্দুকে ছাড়বেনা, আর গুলচন্ডালী /ঢপচন্ডালীকেও ছাড়বে না। সবকা টাইম আয়েগা। তখন এইসব কাঁদুনি লিখে ছাড়া পাওয়া যাবে না। তাপসী মালিক থেকে দ্বিপান্বীতা জানা - সকলের হত্যার হিসেব হবে। একটু ধৈর্য ধরুন সৈকতবাবু। টাইম উইল কাম এন্ড জাস্টিস উইল বি ডেলিভার্ড!
নন্দীগ্রামের অনেক টা তিয়েন আন মেন স্কোয়ারে র প্রপাগান্ডা এর সাথে মিল আছে। তখন প্রপাগান্ডা হয়েছে আর আজ মৃদুস্বরে বলা হচ্ছে ' ইতি গজ '
https://www.liberationnews.org/tiananmen-the-massacre-that-wasnt/
পাকা হাতে নন্দীগ্রাম কান্ড কে পরিচালনা করেছিল তা আর জানা যাবে না। যিনি বলতে পারতেন সেই জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ কে জেল এ পচানো হচ্ছে
"নানা দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে বিরোধ থাকবে, ফলে একটি লেখা অন্যটির বিরোধিতাও করতেই পারে।"
গত দেড় দশক ধরে গুরুর পাতায় নন্দীগ্রাম নিয়ে যে বিতর্ক চালু আছে তার বেশীর ভাগটাই "তথ্য" সংক্রান্ত - "দৃষ্টিভঙ্গী" সংক্রান্ত নয়। তাই এই ঘেঁটে যাওয়া ঋতুতে ইস্যুটাকে গুলিয়ে দেওয়ার জন্য সম্পাদকের স্বলিখিত আরেকটি প্রবন্ধ নামানোর বিশেষ প্রয়োজন ছিল বলেই মনে হয়!!!
নিজের সম্পাদকীয় অবস্থান বাঁচানোর জন্য সম্পাদক একটি মার্কামারা বাম- বিরোধী (যে কোন বাম) কাগজে প্রকাশিত "খবর" কোট করছেন। তারা news নাকি views ছাপায় তা নিয়েও একদা বিস্তর তক্ক হয়েছিল। আবাপ-র এই "খবর" গুলোর সঙ্গে সংহতি নামক সে সময়কার বিপ্লবীদের গুরুগ্রন্থে প্রকাশিত "খবরের" বিস্তর মিল আছে। সেসব তুলনা করে পড়লে মনে হতেই পারে যে কোন একটি উৎস থেকে সেই সব "খবর" কাল্টিভেট করা হচ্ছিল।
সম্পাদক কোন তথ্য cross-check না করেই বিতর্কিত লেখাটি প্রকাশ করেছিলেন। কাজেই অর্ধসত্য বা অসত্য তথ্য পরিবেশনের দায় তাঁর ওপরেও খানিক বর্তায়। সেসব বাক্য যতই "উদ্ধৃতি" বলে চালানো হোক না কেন। আর বেশীর ভাগ উদ্ধৃতিগুলো কোন দৃষ্টিভঙ্গীর ব্যাপার নয় - "আঁখো দেখা হাল"। উদাঃ "সেই বাচ্চাটাকে তুলে নিয়ে দুপা ধরে টেনে আড়াআড়ি ছিঁড়ে ফেলল"। কোন লেখক, সাংবাদিক বা সম্পাদক যখন এই তথ্য চোখ বুঁজে পরিবেশন করেন তখন তাঁদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে কোনই সংশয় থাকেনা।
তো মার্কামারা আবাপকে যদি রক্ষাকবচ হিসেবে ব্যবহার করা যায় তাহলে মার্কামারা আনিন্দিতা সর্বাধিকারী কোট করতে বাধা কেন? সম্পাদককে অনুরোধ যে ঐ প্রবন্ধের লেখককে অনুরোধ করুন যে অধুনা প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নিজের লেখাকেই পুনর্মুল্যায়্ন করে আরেকটি প্রবন্ধ লিখতে। তাহলে হয়ত মিথ্যে তথ্য পরিবেশন করার পাপ থেকে লেখক ও সম্পাদক আংশিক হলেও মুক্তি পেতে পারেন।
সারদা নারদা কেসে কটা পোবোন্দো বের করেছেন শুনি?
মিঠুন দা, নাচুন না?
মাইরি বলছি, ওয়েট করে ছিলাম এই হ্যাজের জন্য
অ্যাই BJPM, নাম ভাঁড়াচ্ছেন কেন?
সৈকতদা, ইট ওয়ান অ্যান এডিটিং ব্লান্ডার। সেটা হতেই পারে। প্রথমত তখন অনেকের মতন আপনারও এক্সপিরিয়েন্স কম। তাছাড়া সবাই পলিটিকালি খুব চার্জড হয়ে ছিল। সেইসময় এইধরনের একটা প্রবন্ধ পেলে ছাপাতে মন চাইবেই, বিশেষ করে যদি পলিটিকাল লোকজন হয়।
কিন্তু কতগুলো পয়েন্টার ছিল, বিশেষ করে ঐসব কুমীর হাঙরের গল্পটা। একটা কুমীদের কত ওজন হয়, কি ধরনের যন্ত্র লাগে কুমীর তুলতে সেগুলো একটু চেক করতে হয়। যতই আপনি নিবন্ধ বলুন না কেন, লেখক বলছেন যে তিনি ইতিহাস লিখছেন। লেখার বেশিরভাগটা জুড়েই ফ্যাক্ট বা প্রত্যক্ষদর্শীদের কথা, ভিউজ খুব সামান্যই। নিবন্ধের নাম দিয়ে সেসব আড়াল করা যায়না। নিয়ম হল এইসব ক্ষেত্রে, যেখানে এইধরনের মারাত্মক দোষারোপ করা হচ্ছে, প্রচুর সতর্ক থাকতে হয়। জার্নালিস্টদের চেকলিস্ট থাকে। কেউ কিছু বলে দিলেই ছপিয়ে দেয়্না, অন্য সোর্স দিয়ে চেক করা হয়, অনেক ডেলিবারেশানের পর ছাপানো হয়।
নইলে একদিন মিথ্যা ধরা পড়ে যায়। আর তখন এইধরনের জাস্টিফিকেশান লিখেও সেই ক্রেডিবিলিটি ফেরত আনা যায় না। যে সমস্যার মধ্যে, বিশেষ করে দিদির স্বীকারোক্তির পর, আজকে এই সাইটকে যেতে হল।
গুরুর একটা খুব খারাপ স্বভাব দেখেছিঃ চটজলদি কাজ করে ফেলা, প্রচন্ড রিয়্যাকটিভ। তাহলে হোয়াট্সাপ ফরোয়ার্ড আর এই সাইটের মধ্যে পার্থক্য কি থাকলো। ভেবে দেখবেন।
অমিতদা কে থামসআপ।
এসের সাথে সহমত। ওই কুমীরের লেখাটা ডেঞ্জারাস ক্ষতি করে দিয়েছে গুরুচণ্ডালীর। আমি মাঝে মাঝেই গুরুর প্রকাশিত লেখা টেখা দিয়ে লোকের সাথে আলোচনায় যাই। আমি কিন্তু রিসেন্টলি বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে পুশব্যাক পেয়েছি।
"নন্দীগ্রামে পুলিশ গুলি চালায়নি, শুভেন্দু অধিকারীর পোষা গুন্ডারা পুলিশের ড্রেস পরে গুলি চালিয়েছিল"
.........মমতা ব্যানার্জী
"পুরো প্ল্যানটা ছিল মমতা ব্যানার্জীর, তাই তো ক্ষমতায় এসে অভিযুক্ত পুলিশদের উঁচু পদে বসায় মমতা"
.........শিশির অধিকারী
"আমার মেয়েকে সিপিএম মারেনি, সে তৃণমূলের রাজনীতির শিকার"
...........তাপসী মালিকের বাবা
"এটা বিরাট বড় একটা নোংরা রাজনীতি, মানুষ ১০ বছর পর ঠিক বুঝতে পারবে"
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য(১০ বছর আগে স্টার আনন্দে দেওয়া সাক্ষাতকার)
আজ ১০ বছর পর সব জলের মতো পরিষ্কার। কিন্তু এই ১০ বছরে একটা প্রজন্ম শেষ হয়ে গেল।আপনি জিতে গেলেন স্যার. কিন্তু এই নোংরা খেলায় আমরা হেরে গেলাম।
এটা কোথায় বলেছেন কোন লিনক অডিও ভিডিও দেবেন?
যত এসব দিচ্ছে, গাদাগাদা লোক আবার দেখছে, সিপিএম কত মিথ্যাবাদী।
"নন্দীগ্রামে পুলিশ গুলি চালায়নি, শুভেন্দু অধিকারীর পোষা গুন্ডারা পুলিশের ড্রেস পরে গুলি চালিয়েছিল"
.........মমতা ব্যানার্জী
যাঁরা সামনে অসহায় মানুষকে রেখে পেছন থেকে ক্ষমতা দখল করতে চেয়েছিলেন এই মৃত্যুর জন্য তাঁরা দায়ী। আর যাঁরা ফোকটে বিপ্লব করতে গিয়েছিলেন তাঁরা এইসব আজগুবি খবর ছড়িয়েছিল।
কী লিখেছিলো গুরু!! উফফ !!
"পাশেই হরিপুর সাবডিভিশান। যেটা নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য চিহ্নিত। সেখানেও প্রতিবাদ হয়েছে। সেখানকার লোকেরা মূলত: মাছ ধরে। তাদের মাছ ধরা এখন বন্ধ করতে হয়েছে দুটো কারণে। এক, খাঁড়ি আর সমুদ্র মৃতদেহে ভরে আছে। দুই, আরও খারাপ যেটা, হাঙর, কুমীর আর ঘড়িয়ালরা তাজা রক্তের লোভে সুন্দরবন থেকে এইদিকে চলে আসছে। এরা মানুষের শরীর তো খাচ্ছেই, সঙ্গে সমস্ত মাছও খেয়ে নেবে এরকম একটা আশঙ্কা। মাছ ধরতে গেলে জালে কুমীর আর হাঙর উঠে আসছে।"
এহেহেহে, রাম রাম, থুড়ি রাম বাম! আবার প্রমাণিত হল, এরা কতবড় মিথ্যাবাদী!! না জেনে ভুল বা ভুয়ো তথ্য ছড়ানো একরকম, জেনেশুনে ছড়ালে? যাঁরা সেটা করলেন, তাঁরা কী?
মমতা তো শুনি বারবার বলছেন, সিপিএম এর সঙ্গে যোগসাজোশের কথা। যারা গুলি মেরেছিল, সিপিএম এর লোকজন, হার্মাদ লোকজন, সিপিএম এর ক্যাডাররা পুলিশের ড্রেস পরে, হাওয়াই চটি পরে গুলি চালিয়েছিল, সেই কথা বলেছেন। সে কথা তো অনেকদিন ধরেই বলে আসছেন হার্মাদবাহিনী মেরেছে। আর জুড়েছেন, সেই লোকজনকে অধিকারীরা ঢুকতে দিয়েছিল। সিপিএম কে শুভেন্দু অধিকারী ডেকে এনেছিল। পুলিশকে ডেকে এনেছিল। সাজানো পুলিশদের ঢুকতে দিয়েছিল। শুভেন্দু কোন আন্দোলনই তখন করেনি, সেটা বলেছেন। সেইজন্য সিপিএম আর সবার বিরুদ্ধে কেস দিয়েছিল, শুভেন্দুদের বিরুদ্ধে একটিও কেস দেয়নি।
সেটা বুদ্ধবাবু জানতেন, সেকথাও বলেছেন। উনি এখন রাজ্যের সিএম, কোথায় কী হচ্ছে জানেন, সিএম কি জানতে পারেন সেটা বলেছেন।
আরো নানা জায়গায় অধিকারীর সঙ্গে সিপিএম সেটিং এর কথা বলছেন।
কেন কেস করা যায়নি, সিবিয়াই আসায়, তাও বলছেন।
আনন্দবাজারের রিপোর্টিং ও ঠিক নেই।
নিন, যাঁরাই এখানে আসবেন, ভাল করে শুনে নিন নিজেদের কানে। সিপিএম এর এইসব লোকজনের মিথ্যাচার আরেকবার নিজের কানে শুনুন, নিজের চোখে দেখুন!
https://www.facebook.com/watch/?v=558809755038084
এখানেও শুনুন,
https://www.facebook.com/MamataBanerjeeOfficial/videos/472297554182832/
তা দিদি শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কেস দিলেন না কেন? উল্টে তাদেরকে এমপি-এমেলে বানালেন। এতদিন চুপ করে থাকলেন।
অ্যাই, কালকের ভেদিও দ্যাখ। এদিক ওদিক আলবাল না পোস্টিয়ে।
আপনার কি আরবিট তুইতোকারির অভ্যাস আছে নাকি? নয়তো খুব রেগে গেছেন? রেগে না গেলে দুইটি লিনকে ক্লিক করলেই দেখতে পেতেন, সেগুলো কালকেরই ভিডিও! একটি আবার লাইভ।
নাকি আপনি অন্যের পোস্টের বক্তব্য না পড়েই তাকে পড়াশুনা করতে বলে থাকেন?
তবে যা মনে হচ্ছে যাঁরা এসব লিখছেন তাঁরা হয়তো কেউউ ভিডিওর কথা ভাল করে না শুনেই বা একেবারেই না শুনে নিজেদের কোন নেতা সদস্য কমরেডদের কথা শুনে হুক্কাহুয়া করছেন।
আপনার কি আরবিট তুইতোকারির অভ্যাস আছে নাকি? নয়তো খুব রেগে গেছেন? রেগে না গেলে দুইটি লিনকে ক্লিক করলেই দেখতে পেতেন, সেগুলো কালকেরই ভিডিও! একটি আবার লাইভ।
নাকি আপনি অন্যের পোস্টের বক্তব্য না পড়েই তাকে পড়াশুনা করতে বলে থাকেন?
তবে যা মনে হচ্ছে যাঁরা এসব লিখছেন তাঁরা হয়তো কেউউ ভিডিওর কথা ভাল করে না শুনেই বা একেবারেই না শুনে নিজেদের কোন নেতা সদস্য কমরেডদের কথা শুনে হুক্কাহুয়া করছেন।
কালকের ভিডিওতে এগজ্যাক্টলি কি বলেছেন সেটা একটু লিখুন না কোটেশানের মধ্যে।
হ্যাঁ, খুব রেগে গেচি।
কেন, নিজের কান নেই?
নাকি চিলে কান নিয়ে গেছে বললে তার পিছন পিছন ছুটে চলেছেন?
এছাড়াও, সবই লেখা আছে। নিজের কানে শুনে মিলিয়ে নিন। (যদি চিল কানটা ফেরত দেয়।)
দিদি তাহলে সত্যি কথা বলছেন? সেটা ধরবো কি? অন্তত এইটা বলে দিন।
দিদির কথা সত্যি বা মিথ্যে কোনটা হলেই সিপিএম এত কিছু নাচার মত থাকেনা। কালকের বলা কথা সত্যি হলে সিপিরম অধিকারীর সাথে হাত মিলিয়ে করেছে, মিথ্যে হলে একা করেছে। সিপিএম করায়নি, বুদ্ধবাবুর দায় ছিল না এমন কোন কথাই বলেননি। কালকের কথা সত্যি হলে যেটা হতে পারে, বুদ্ধবাবুকে সিপিএম লোকেরাই সাবোতাজ করেছে। এই অধিকারী সিপিএম এর হাত মেলানো হয়ত উনি তখন জানতেন না, যেটা হয়ত উনি পরে জেনেছেন। সিএম হিসেবে জানার কথা বলে দিদি যেটা বলেছেন।
যা বলেছেন সত্য বলেছেন বলে আপনারাই তো নাচছেন, সত্যি হলে মানেটা য্য দাঁড়াচ্ছে সেটা শুনলেই বলবেন মিথ্যা বলেছে। সত্যিই সেলুকাস! কী বিচিত্র এই সিপিএম!
আমি ভদ্রলোক তাই এতোদিন চুপ করে ছিলাম
আর যা যা বলেছেন তার মোদ্দা কথা অধিকারিদের হাওয়াই চটিপড়া লোক পুলিশের উর্দি পড়ে গুলি চালিয়েছে। লোক মেরেছে।
মোদ্দাকথা এক্স্যাক্টলি এটা বলেছেন, সিপিএম এর হার্মাদরা পুলিস সেজে গুলি করে মেরেছে আর অধিকারীরা তাদের ঢুকতে দিয়েছে। সেইজন্যই সিপিএম অধিকারীদের নামে কোন কেস দেয়নি। সিপিএম এর সাথে অধিকারীর সেটিংস ছিল।
ওদিকে অধিকারীও এখন বুদ্ধদেবের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
সিপিএমের নন্দীগ্রামের প্রথম 'শহীদ' শংকর সামন্ত, যার ঘর থেকে প্রথম আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চলে ৭ই মার্চ এবং তিনজন মারা যায়, যে শংকর সামন্তকে ঐদিনই গ্রামবাসীরা জ্বালিয়ে দেয় ঘরসমেত, সেই 'শহীদ' পরিবারেরই আরেক মক্কেল নব সামন্ত এখন শুনলাম বিজেপির অন্যতম স্থানীয় নেতা এবং নির্বাচনে শুভেন্দুর ডানহাত। ঢপ হলেও, মমতা খুব ভেবেচিন্তেই এই সিপিএম-শুভেন্দু-বিজেপি আঁতাতের ন্যারেটিভ বাজরে ছেড়েছে। এর পরের প্রতিটা সভায় এটা আরও জোর দিয়ে বলছে। কোনো পাসিং রিমার্ক হিসেবে না।
৭ই জানুয়ারি
https://www.facebook.com/311289306449241/videos/499286144777734/
ডেভিডের গল্প শুনুন