এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  বইপত্তর

  • পুস্তকালোচনা — অদম্য ৩ — স্মরণজিৎ চক্রবর্তী

    AritraSudan Sengupta লেখকের গ্রাহক হোন
    বইপত্তর | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ৬৫৪০ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • #পুস্তকালোচনা — #অদ্যম_৩ — #স্মরণজিৎ_চক্রবর্তী



    বই = অদম্য ৩ — থ্রিলার : তিনটি উপন্যাস
    লেখক = স্মরণজিৎ চক্রবর্তী
    প্রকাশক = আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড
    পৃষ্ঠা সংখ্যা = ২৩০
    মুদ্রিত মূল্য = ২৫০ টাকা (প্রথম সংস্করণ)



    ———————————————————————————————————————

    বাংলা সাহিত্যের এক বলিষ্ঠ লেখক হলেন স্মরণজিৎ চক্রবর্তী যাঁর সম্পর্কে কয়েকজন পাঠক জানিয়েছেন যে — আধুনিক বাংলা সাহিত্যের পাঠকজগতে দুইধরনের পাঠক আছেন।
    প্রথম দলে, যারা স্মরণজিৎ চক্রবর্তীর বই পড়েন, পড়তে ভালোবাসেন। তাঁর বই না পড়লে যাদের রাতের ঘুম থেকে সকালের পায়খানা কোনটাই হয় না।
    আর অন্যদিকে, যারা স্মরণজিৎ চক্রবর্তীর বই না পড়েই নিন্দা করেন।
    কিন্তু মুশকিল হচ্ছে আমি কোনো দলেই পড়ি না।
    এই বইটিতে তিনটি Thriller উপন্যাস আছে বলে জানানো হয়েছে। তৃতীয় কাহিনীটি নিয়ে আলোচনা করছি এবং তার সাথেই পাঠানুভূতি ভাগ করে নিচ্ছি।
    ———————————————————————————————————————
    ৩) অ্যাডাম —


    এই কাহিনীতে অদম্য সেনের কলকাতায় আরেকটি চুরির কাজে এসেছে বলে দেখা যায়। তার সাথে কাহিনীতে রাজা বলে একটি চরিত্রের পরিচয় পাওয়া যেতে থেকে। কাহিনীটির বিশেষ বিশেষ অংশ দেখে নিই। বরাবরের মতো এই আলোচনাতেও Spoiler থাকছে।
    ১) কাহিনীর শুরুর দিকে পাঠকদের বুদ্ধির উপর সম্পূর্ণ ভরসা রেখে লেখক জানান যে — "নাম, ঠিকানা, বয়স এমনকি ভোটার কার্ডের জেরক্সও ম্যানেজ করে বের করে নিয়েছে এর মধ্যে।", যদিও আমাদের ভোটার কার্ডে নাম, ঠিকানা ও বয়স (এখন তো জন্মতারিখটাই থাকে যেখান থেকে বয়সটা হিসেব করা যায়) উল্লেখ থাকে। প্রয়োজন ছাড়াও এইভাবে একই জিনিস দুইবার জানানোর মাধ্যমে বিষয়টির উপর স্মরণজিৎ গুরুত্ব আরোপণ করেছেন।
    ২) এরপরেই যখন দেখি নাম জিজ্ঞেস করায় একটি চরিত্র পদবীর উল্লেখ প্রথমেই করছে, তখনই বুঝতে পারি যে আসল গল্প শুরু হতে চলেছে। কারণ নাম জিজ্ঞেস করলে লোকে সাধারণত নাম বা নাম এবং পদবীদুটোই বলে। কিন্তু অদম্যর ক্ষেত্রে বলা হয় — সেন, অদম্য সেন। অশিক্ষিত লোকজন এর সাথে জেমস বন্ডের যোগাযোগ খুঁজতে চেষ্টা করে থাকেন, কিন্তু আমার একদম মনে হয়নি যে ইয়ান ফ্লেমিং জেমস বন্ডের কাহিনী লেখার আগে অদম্যের কাহিনী পড়েছিলেন। এমনকি এটি আমার অনুপ্রেরণা হিসেবেও মনে হয় না, কারণ ইয়ান ফ্লেমিং কোনোদিন তা স্বীকার করেননি।
    ৩) এর কিছু পরে দেখা যায় যে প্লেন কলকাতার কাছাকাছি থাকার সময়ে অদম্যকে জেনি চিনতে পেরেছে, কিন্তু প্লেনে ওঠার সময় অদম্য সেটা খেয়াল করেনি কেন এটা নিয়ে লেখক বেকার শব্দ খরচ করতে যাননি।
    ৪) আরো আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে যে অদম্য এর মতো অপরাধী যে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন অপরাধ করেছে এবং তার জন্য প্রতিশোধ নিতে তার বিরুদ্ধে শত্রু লেগে থাকার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকে, সেই অদম্য কোনো ছদ্মবেশ ছাড়াই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করছে।
    ৫) বুদ্ধিমান পাঠক হয়তো জানাবেন যে, লেখক না লিখলেও অদম্য একটি ছদ্মবেশ পরেছিলো যেটি তুখোড় অপরাধীরা বুঝতে না পারলেও জেনি বুঝে গেছিলো এবং সেই ছদ্মবেশের রহস্য আর কেউ না পারুক, জেনি সেটি ভেদ করে আসল মানুষটিকে চিনে গেছিলো। কারণ জেনি অদম্যকে বার কয়েক দেখেছে, তার এটাই তার জন্য যথেষ্ট।
    বাংলা সাহিত্যের এত শক্তিশালী নারী চরিত্র "রুদ্র" (প্রখর নয়, দেবারতি মুখোপাধ্যায়ের লেখা চরিত্র)-র পরে আর পড়েছি বলে তো মনে আসছে না।
    ৬) এর কিছু পরে জেনি অদম্যকে বলে — "এটা আমার নতুন মোবাইল নাম্বার। জানি আপনার দরকার নেই। তাও, ইন কেস।... "। একটি থ্রিলারে এইভাবে আবার অপ্রয়োজনীয় কথা যোগ করার প্রতিভাটিই নতুন পাঠকদের স্মরণজিতের জাত (লেখক হিসেবে) বারবার চিনিয়ে দেয়।
    ৭) আসলে হয়তো স্মরণজিৎ এর মাধ্যমে দেখিয়েছেন যে অদম্য কোনো অতিমানব নয়, এ বি পি আনন্দের একজন রিপোর্টারের সাথে যোগাযোগ করার জন্য মোবাইল নাম্বার সে এইবার জোগাড় করতে পারবে না। যদিও এইরকম কাজ সে আগেও করেছে। কিন্তু এবার সে দুর্বল এবং এই দুর্বলতাকেই সে কাটিয়ে উঠবে।
    ৮) এর কিছু পরে কাহিনীতে দেখা যায় যে শার্দুল নামের চরিত্রের উপরে কেউ একজন গুলি ছোঁড়ে এবং তারপরে রাজা নামের একটি প্রায় আঠারো বছর বয়সী ছেলে তাকে তাড়া করে। এর থেকেই পাঠকের বোঝা উচিৎ যে, বন্দুক হাতে থাকা একজন আততায়ীকে যে খালি হাতে তাড়া করে সে কত সাহসী।
    ৯) এরপরে সেই আততায়ী একটা গুলি ছোঁড়ে কিন্তু ফট-ফট আওয়াজের সাথে দুই বার আলো ঝলসে ওঠে। আগের বার কিন্তু একটা গুলির সাথে একবার আওয়াজ হয়েছিল। বুদ্ধিমান পাঠকরা বুঝতেই পারছেন যে ঘটনার গুরুত্ব বাড়াতে লেখক এখানে আরো একটি আওয়াজ এবং আলো যোগ করেছেন। স্মরণজিৎ যে বারবার এইভাবে বিভিন্ন ঘটনার গুরুত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন এটাই এই লেখাটির এবং তার লেখক সত্তার চরম সম্পদ।
    ১০) এই বার গুলি ছোঁড়ার পরেও সেটা রাজার গায়ে লাগে না (এই জায়গায় "ফির হেরাফেরি" চলচ্চিত্রের সেই উক্তিটি মনে এলো — "ক্যা গুন্ডা বনেগা রে তু!"।)। উল্টো দিক থেকে গুলির বদলে পাথর ছোঁড়ে রাজা। এই জায়গায় দেখানো হয়েছে যে রাজা অত্যন্ত বুদ্ধিমান এবং তৎপর, তাই সে দ্রুত দৌড়াতে দৌড়াতে পিছু নেওয়ার সময় একটা পাথরও কুড়িয়ে নিয়েছিলো।
    ১১) তাড়া করার সময়ে এর আগে কখনই লোকটি রাজার চোখের আড়াল না হলেও এরপরেই একটা বাঁকের মুখে এসে লোকটি হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। বাংলা সাহিত্যের চিন্তাশীল পাঠকরা বুঝবেন যে এভাবেই স্মরণজিৎ শশধর দত্তের দস্যু মোহনকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। সাধারণ লেখক হলে হয়তো লিখতেন — "কোথা থেকে কি হইয়া গেল বোঝা গেল না, লোকটি পলাইয়া গেল।", কিন্তু না, এখানেই স্মরণজিতের মাহাত্ম্য, তার মুন্সিয়ানা। এই জায়গাটার তাৎপর্য নিয়েই ৩৩৩ শব্দের একটি অনুচ্ছেদ লেখা উচিত ছিলো কিন্তু কাহিনীর কথা মাথায় রেখে এগিয়ে চলি।
    ১২) স্মরণজিৎ এরপরে একটি নারীচরিত্র সম্পর্কে লিখেছেন — "মাখন কেটে বার করা মুখ"; মাখনের কোনো নির্দিষ্ট আকার হয় না, যে পাত্রে রাখবেন তার আকারই ধারন করবে, কাজেই এই মেয়েটিরও মুখের কোনো নির্দিষ্ট আকার ছিলো না বলে আমার ধারণা। এইভাবে স্মরণজিৎ চুপি-চুপি সাম্যবাদের সপক্ষে নিজের মত জানিয়েছেন।
    ১৩) এছাড়া মাখন সাধারণত হলুদ রঙের হয়, তাই আমার এটাও ধারণা যে মেয়েটির প্রবল জন্ডিস হয়েছিল। তবে প্রবল জন্ডিস হলেও যে বাড়ির বাইরে এইভাবে ঘোরাঘুরি করা যায়, এটা খুবই প্রয়োজনীয় জ্ঞান। তবে আবার সাদা রঙের মাখনও হয়, সেক্ষেত্রে মেয়েটিকে অ্যালবিনো ধরে নেওয়া যেতে পারে। এই ভাবে লেখক আমাদের বিভিন্ন Medical Condition সম্পর্কে সচেতন করতে চেয়েছেন।
    ১৪) আবার স্মরণজিৎ মাখন কাটার কথা বলেছেন, যার মানে এটাও হতে পারে যে মেয়েটির মুখে কোনো ফ্যাট ছিলো না বা তার মুখের চামড়া তৈলাক্ত ছিলোনা, কারণ মাখনে ফ্যাট থাকে আবার তেলেও থাকে।
    ১৫) আবার ফ্যাটকে আমরা স্নেহপদার্থ হিসেবেও জানি। কাজেই এটাও বলা যায় যে মেয়েটির মুখে স্নেহের চিহ্নমাত্রও ছিলোনা।

    সবমিলিয়ে এই একটা বাক্যাংশই বাংলা সাহিত্যের একটা আলোড়ন ফেলে দিতে পারে। স্মরণজিৎকে আমার কুর্নিশ।

    ১৬) এছাড়া এখানে আমরা দেখি যে, জীবেশ চরিত্রটি নিজের বিপদ নিয়ে আগে যথেষ্ট চিন্তিত হলেও যখন শার্দুলের সাথে বিপদ হয়,তখধ সে কোনো সঙ্গী-সাথী বা রক্ষী ছাড়াই নিজের বোনের মেয়েকে নিয়ে সরাসরি সাথে সাথে ঘটনাস্থলে চলে আসে। চরিত্রটির এই তাৎক্ষণিক পরিবর্তন আমাকে মুগ্ধ করেছে।
    ১৭) এছাড়া নিজের ভাগ্নীর সুরক্ষার প্রতি মামা হিসেবে জীবেশের অসাধারণ সচেতনতা কংস বা শকুনি মামার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। লেখক এভাবেই মহাভারতীয় সংযোগ তুলে এনেছেন। দুর্দান্ত তার কলমের জোর।
    ১৮) এরপরে পিটার বলে এক ব্যক্তি ঘটনাস্থলে একই জায়গায় বুলেটের দুটি খোল দেখতে পেয়ে বিস্মিত হয়। এটি পড়ে আমিও বিস্মিত হই, কারণ একটা গুলি ছোঁড়া হয়, দুই বার ফট-ফট আওয়াজ হয়, দুই বার আলো ঝলসে ওঠে এবং দুইটি খোল পাওয়া যায়। অর্থাৎ, এখানেও স্মরণজিৎ বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার জন্য একটি বাড়তি খোল দেখিয়েছেন।
    ১৯) অতীব বুদ্ধিমান পাঠক হয়তো জানাবেন যে প্রথমে শার্দুলকে তাগ করে একটি এবং পরে রাজাকে লক্ষ্য করে দ্বিতীয়টি গুলিটি ছোঁড়া হয়, কাজেই দুটি খোল পাওয়া স্বাভাবিক। স্মরণজিতের গুনমুগ্ধ পাঠক হিসেবে আমি জানাতে চাই যে, প্রথমে শার্দুলকে লক্ষ্য করে যেখান থেকে গুলি ছোঁড়া হয়েছিল সেখানে থেকে বেশ কিছুটা দৌড়ানোর পরেই দ্বিতীয় গুলিটি ছোঁড়া হয়। তাই দুটি খোল পাওয়া যেতেই পারে কিন্তু একসাথে এক জায়গায় দুটি খোল পাওয়া যাবে না।
    ২০) স্মরণজিৎ কিন্তু এখানে পাঠকদের জানান না যে পিটার কী দেখে বিস্মিত হয়েছিলো। সস্তা লেখকের মতো তিনি সব তথ্য পাঠককে জানিয়ে দিয়েও রহস্য তৈরী করে রাখতে চান না। বরং প্রয়োজনীয় তথ্য চেপে গিয়ে শেষ দিকে এক এক করে সব কিছু ব্যাখ্যা করে পাঠককে চমকে দিতে, তাকে Thrill দিতে চান। তার এই পরিশ্রম দেখে আমিই ক্লান্তি অনুভব করছি।
    ২১) একটু পরে দেখা যায় যে লাল বলে একটি চরিত্র তার Boss অর্থাৎ উর্ধ্বতন কর্তাকে একটা কথা বলার পরেও তার বস সেটা অগ্রাহ্য করে। স্মরণজিৎ এখানে এক Utopia তৈরী করে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন যেখানে বস অধস্তন কর্মচারীর কথায় সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। লেখক আবার একবার সাম্যবাদী মনোভাব দেখালেন। তাকে লাল সেলাম জানাই (এই লাল গল্পের চরিত্র লাল নয়)।
    ২২) এরপরে দেখা যায় যে রাজার জন নামের এক বন্ধু এর মধ্যেই কুড়ি জনের সাথে শুয়ে পড়েছে। অর্থাৎ জন একা শুতে ভয় কিন্তু রাজা পায় না। এর থেকে রাজার বীরত্ব প্রকাশ পায়। এর থেকেই বুঝতে পারলাম যে একটা সময়ে পরে মানুষ একা শুতে ভয় পায় বলেই সঙ্গী খোঁজে।
    জাতির জীবনে মানবচরিত্রের শিক্ষক হিসেবে স্মরণজিতের এই কাহিনীটির ভূমিকা অপরিসীম।
    ২৩) অসভ্য লোকেরা হয়তো বলবেন যে এর আগে "Girlfriend" - এর উল্লেখ থাকায় লেখক এখানে যৌন-সংসর্গের কথা বোঝাতে চেয়েছেন। এক্ষেত্রেও আমি বলবো যে লেখক এখানে মহান ভারতীয় জনজাতির সনাতন চরিত্রটি রক্ষা করেছেন এবং তার বিপরীতে বিদেশীদের অবাধ কামাচারী মনোবাসনাকে উলঙ্গ করে দিয়েছেন।
    ২৪) এর কিছু পরে আবার মধু চরিত্রটি (যার মামা শার্দুল) রাজাকে বলে — "যে গুলি করেছে তার পিছনে ছোটার সাহস আছে, আর একটা মেয়ের কথার জবাব দেওয়ার সাহস নেই। কাওয়ার্ড!"। কিন্তু তার আগেই রাজা তাকে জবাব দিতে শুরু করেছিলো বলে স্বয়ং স্মরণজিৎই দেখিয়েছেন। এখান থেকে আমার সন্দেহ শুরু হলো যে মধু চরিত্রটি মিথ্যাবাদী।
    ২৫) এরপরে মধু চরিত্রটি দ্রুত সাইকেল চালিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। কিন্তু এবার রাজা ওর পিছনে ছোটে না। মধু গুলি চালালে হয়তো রাজা তার পিছনে ছুটতো বলে আমার মনে হয়েছে।
    ২৬) এর পরে দেখা যায় যে নিশা বলে একটি চরিত্র কেনাকাটা একাই করে নিলেও একটা সাধারণ দিনেই তার স্বামী অতন্দ্রকে তার সাথে যেতে বলে। এমনকি তার স্বামী কাজের চাপের জন্য রাজি না হওয়ায় নিশা তাকে জোর করে আসতে বলে। আঁতেল পাঠকরা এটাকে অপ্রয়োজনীয় ভাবলেও আমার মতন পাঠকরা জানেন যে স্মরণজিতের লেখার একটি অক্ষরও বিনা প্রয়োজনে লেখা হয় না। কাজেই এখানে নিশ্চয়ই কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটবে।
    ২৭) এরপরে লেখক জানান - "অতন্দ্র সাথে নিশার বিয়েটা আচমকাই হয়"। এই লাইনটা পড়েই আমার মন খারাপ হয়ে গেলো। কারণ আমি বাইরে বেরোলে উড়ন্ত পাখি দুরন্ত ভাবে আমার গায়ে-মাথায় আচমকা হেগে দিয়ে যায়, আর এদিকে "সেন্টারে প্রভাব-প্রতিপত্তি থাকা" (এটা স্মরণজিৎ আগে নিজেই লিখেছেন, মূল বানান অপরিবর্তিত) রাজনৈতিক নেতার মেয়ে বিয়ে আচমকা হয়ে যায়। স্মরণজিতের লেখার জগত যে আমার জগতের থেকে কতটা আলাদা, সেটা এই একটি বাক্যের মোচড়েই আমার মর্মভেদ করতে সক্ষম হয়েছে।

    মন ভালো হলে বাকিটা নিয়ে লিখবো এই আশ্বাস জানিয়ে আপাতত লেখা এখানেই শেষ করছি।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • বইপত্তর | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ৬৫৪০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২৩:০৬102338
  •  :-))) 


    সীগগির শীগগির বাকীটা লিখে ফেলুন।  পিঠের ব্যাকপ্যাকে অ্যাটম বোম নিয়ে পাঁচিল টপকানো অদম্য কিত্তিকলাপের  দমদার আলোচনা আসুক ঝটপট

  • Abhyu | 47.39.151.164 | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০০:৩০102342
  • হ্যাঁ অপেক্ষায় রইলাম। খাসা হয়েছে।

  • শঙ্খ | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০০:৫১102343
  • স্মরণজিৎকে এখানে ট্যাগ করতে পারলে বেশ জমত। :D

  • Ranjan Roy | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৭:০৬102347
  • এরসঙ্গে অদম্য সেন ট্রিলজি কোথায কিনতে পাবো সেটাও বলে দিন, অবশ্যই স্মরণজিৎ শৈলীতে।

  • এই রে | 2a0b:f4c1:2::247 | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১০:৩৪102352
  • কম্ম সেরেছে! অদম্যভক্তরা আপনের মুন্ডু চাইবে।

  • Abhyu | 47.39.151.164 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৪:১২102376
  • অদম্য ভক্ত কিনা! কিছুতেই দমিয়ে রাখতে পারবেন না। এমনিতেই ভক্তদের ভয় করে চলা উচিত।

  • b | 14.139.196.16 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১১:১২102379
  • কার? অদম্য-র? 

  • অদম্যের বাবা | 185.220.103.8 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:৩৬102411
  • থ্রিলার লেখার থ্রিল

    কলকাতায় কেলেঙ্কারি

    স্মরণজিৎ চক্রবর্তী
    ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ২৩:১৮
    ছবি: সুমন চৌধুরী

    ছবি: সুমন চৌধুরী

    দু র্গাষষ্ঠীর সকাল। দিনের আলো সবে ফুটেছে। পুজো বলেই রাস্তায় লোকজন স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি। ঠিক এমন সময়ে নরেন্দ্রপুরের কাছে একটা অর্ধেক তৈরি বাড়িতে প্রচণ্ড শব্দে ফেটে পড়ল একটা বোমা। আর তার থেকে আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ল তেজস্ক্রিয় ইউরেনিয়াম। মারা গেলেন অনেকে। আহত আরও অনেক বেশি। নিমেষে সারা কলকাতায় ছড়িয়ে গেল আতঙ্ক! এমন এক উৎসবের মুখে কলকাতায় কে ফাটাল বোমা!


    প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের তো মাথায় হাত! এই নিয়ে পর পর তিন বার পুজোর মুখে সন্ত্রাসবাদীদের হাতে আক্রান্ত হল শহর। লালবাজারে এসে হাজির হলেন পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ, চিফ সেক্রেটারি সঞ্জয় মিত্র, সিভিল ডিফেন্স সেক্রেটারি পি রমেশ কুমার, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট সেক্রেটারি ইন্দিভার পান্ডে, জয়েন্ট কমিশনার অব পুলিশ পল্লবকান্তি ঘোষ, দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ উচ্চপদস্থ কর্তারা। সিএম-কে ঘিরে শুরু হল আলোচনা আর স্ট্র্যাটেজি। কে এমন একটা ডার্টি বম্ব ফাটাল শহরে? কী তার উদ্দেশ্য? কেন সে ঢুকেছে শহরে? আর বার বার কেনই বা আমাদের এই শহরটা আক্রান্ত হচ্ছে?


    আর এই আলাপ-আলোচনার মধ্যেই জানা গেল, চেক প্রজাতন্ত্র থেকে আসা এক কূটনীতিককেও অপহরণ করা হয়েছে!

     

    কেন্দ্র থেকে এসে পড়ল স্পেশাল ফোর্সের টিম। আর সিএম-এর বিশেষ অনুরোধে প্রতি বারের মতো এ বারও আনা হল মার্কোস-এর এজেন্ট আদিল-কে।


    ক্রমশ আশঙ্কার মেঘ জমতে থাকল। সবাই উদ্‌গ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছে পরবর্তী ঘটনার জন্য। আর ঠিক তখনই এল সেই ফোন! জানা গেল, ভ্লাদ নামে এক আতঙ্কবাদী ঢুকে পড়েছে শহরে। তার পর পাতাল রেল, কালীঘাট ট্রাম ডিপো, মল্লিকবাজার সেমেটারি হয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিচ্ছে সারা শহরে।


    নিরীহ শহরবাসীকে বাঁচাতে, ভ্লাদের শর্ত অনুযায়ী একে একে লালবাজারে এসে পশ্চিমবঙ্গের সি.এম-এর সঙ্গে যোগ দিতে লাগলেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সহ প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সবাই। কেউ বুঝতেও পারল না, আসলে এটা একটা প্লট। দেশের মাথাদের একসঙ্গে খতম করার চক্রান্ত!


    ঠিক তখনই ছায়ার মতো, অশরীরীর মতো, নেমে এল সেই মানুষটি। যার নাম: সেন, অদম্য সেন। আর রহস্যের পরত খুলতে শুরু করল এক এক করে।


    এর পর ভ্লাদ কি তার মিশনে সফল হল? আদিলই বা কী করল? আর অদম্য? সে কী পারল আবার তার কলকাতাকে বাঁচাতে?


    কলাকতা-কেন্দ্রিক থ্রিলারটির নাম ‘আলোর প্রতিদ্বন্দ্বী’। ২০১৪ সালের দুর্গাপুজোয় ‘এবেলা’ কাগজের ‘ওবেলা’ বিভাগে পূজাবার্ষিকীতে ছাপা হয়েছিল।


    আসলে এটা ছিল কলকাতা-কেন্দ্রিক ট্রিলজি থ্রিলার সিরিজের তৃতীয় গল্প। প্রথম দুটির নাম ছিল ‘বিস্ফোরণের উৎসবে’, আর ‘অন্ধকারের রাজপুত্র’। এই দুটোও ‘এবেলা’তেই ছাপা হয়েছিল ২০১২ ও ২০১৩ সালে। তৃতীয় গল্পটার মতো এই দুটোতেও গল্পের বিষয় ছিল কলকাতা শহরের ওপর আতঙ্কবাদীদের আক্রমণ। ছিল ক্রিমিনাল, পুলিশ আর অদম্যর ‘ইঁদুর-বেড়াল’ খেলা।


    প্রথম যখন থ্রিলার লেখার সুযোগ পাই ২০০৫ সালে, তখনই ভেবে নিয়েছিলাম, আর যা-ই লিখি না কেন, অপরাধমূলক গোয়েন্দা-ধরনের গল্প লিখতে গিয়ে কখনওই ভ্রমণকাহিনী লিখব না। আর ভেবেছিলাম, এমন কাউকে নিয়ে লিখতে হবে, যে কখনওই ছোটবেলা থেকে পড়া নানান থ্রিলারের মুখ্য চরিত্রের মতো আক্ষরিক ভাবে হিরো নয়। মনে ছিল, সে যেন কিছুতেই জটায়ুর সেই প্রখর রুদ্র না হয়ে ওঠে! সেই ছ’ফুট হাইট, ইয়া বুকের ছাতি!— এ সব যেন না হয় সে। সাধারণের মধ্যে থেকেই যেন বেরিয়ে আসে সেই মানুষটা! সবাই তো হিরোর গল্প লেখে, গোয়েন্দার গল্প লেখে, কিন্তু আমি যদি উলটো মানুষটার গল্প লিখি! যার হাইট পাঁচ ফুট পাঁচ-ছয় হবে। দেখতে সাধারণ হবে। যার একটা কষ্টের অতীত থাকবে। অনেকগুলো মনখারাপের বারান্দা থাকবে। যে অনেকটা ইনডিফারেন্ট হবে। এমন একটা মানুষ, যে টাকা রোজগারের জন্য খারাপ কাজ করে। বোমা ফাটায়, গুলি করে মানুষ মারে, চুরি করে! তবে! মনে হয়েছিল এমনই একটা লোককে ঘিরে গল্প লিখব যাকে কখনও কখনও ‘দুষ্টু লোক’-ও মনে হবে!


    মনে পড়েছিল ‘হ্যামলেট’-এর সেই লাইন:


    ‘for there is nothing either good or


    bad, but thinking makes it so.’


    ‘উনিশ কুড়ি’-র একটি থ্রিলার সংখ্যায় লিখেছিলাম প্রথম গল্প ‘বিস্ফোরণের একটু আগে’। এড্‌সের একটা ড্রাগের পেটেন্ট নিয়ে ছিল সেই গল্প। আর তার প্রোটাগনিস্ট এক জন মার্সিনারি। কথাটার আক্ষরিক অর্থ, ‘ভাড়াটে সৈন্য’। মানে, যে লোকটা— যে টাকা দেয়, তার হয়েই যুদ্ধ করে। একে সবাই চেনে অদম্য সেন হিসেবে। ডাকনাম— অ্যাডাম।


    অদম্য বাঙালি ছেলে। জন্মের সময়েই মা মারা গিয়েছিল ওর। আর বাবা মারা যায় ওর একটু বড় হওয়ার পর, সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে। তার পর দশ-বারো বছরের অসহায় অদম্যকে অন্ধকার থেকে বার করে আনেন ফাদার ফ্রান্সিস। তার পর ওকে সঙ্গে করে নিয়ে যান অস্ট্রিয়ার ফিস শহরে। সেখানে একটা চার্চের অনাথাশ্রমে বড় হয়ে ওঠে অদম্য। এর পর নানা উত্থান পতন আর ঘটনার মধ্যে দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ-চক্রে ওর হাতেখড়ি। টাকার জন্যে নানান কাজ করে ও। ওর রোজগারে দশটা অরফ্যানেজ চলে। সাদা বা কালো কোনও গণ্ডিতেই জীবনকে বাঁধে না অদম্য। ‘ধূসর’টাই ওর রং।


    শুরুর দিকে মনে হয়েছিল, অদম্যকে কখনওই শুধু কলকাতায় বেঁধে রাখব না। তার ঘটনা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে যাবে। আর সেই সুযোগে ছোট ছোট করে লেখাও যাবে সারা পৃথিবী জুড়ে কী কী বিষয় নিয়ে ক্রাইম হয়, হচ্ছে।


    এর পর আরও চারটে ছোটগল্প লিখেছিলাম অদম্যকে নিয়ে। কোনওটা ছিল রেমব্রান্ট-এর ছবি চুরি করা নিয়ে, আবার কোনওটা ছিল ড্রাগের ব্যবসার সঙ্গে আন্তর্জাতিক টেররিজ্‌মের যোগসাজশ নিয়ে। আবার কোনওটার মূল বিষয় ছিল ‘কনফ্লিক্ট’ বা ‘ব্লাড ডায়মন্ড’।


    কিন্তু এ সবই ছোটগল্প। এগুলোর কোনওটাতেই কোনও অপরাধ কলকাতায় ঘটেনি। কারণ প্রথম প্রথম তেমন কিছু ইচ্ছেও তো ছিল না। কিন্তু এর পর হঠাৎ করে ইচ্ছেটা হল।


    আসলে এগারো বছর বয়স থেকে কলকাতায় থাকি আমি। এত দিনে শহরটার বড়রাস্তা থেকে শুরু করে গলিঘুঁজি, তলপেট আর অন্ধকার মনখারাপের কিছু কিছু জায়গা নানা কারণে দেখার সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য হয়েছে আমার। তাই গড়িয়াহাট মোড়ে হাঁটতে হাঁটতে, বিদ্যাসাগর সেতু পেরোতে পেরোতে, বাবুঘাটের গঙ্গার ধারে দাঁড়িয়ে, কলেজ স্ট্রিটের ভিড়ে বই কিনতে গিয়ে কিংবা বইমেলার ভিড়ে দাঁড়িয়ে মনে হত, এখানে যদি ‘তেমন’ কিছু ঘটে?


    তেমন মানে? টুইন টাওয়ার! লন্ডন টিউব! বেসলান ম্যাসাকার! নভেম্বরের মুম্বই!


    শহরের হা-হা হি-হি ভিড়ের ভিতর দাঁড়িয়ে, মেট্রোতে হাই-তোলা সিকিয়োরিটি পেরোতে পেরোতে, শপিং মলের ভেতর ঢোকার মুখে নামমাত্র মেটাল ডিটেক্টরের ‘ব্রাশ’ দেখে, আর কলকাতার পুজো প্যান্ডেলের ওই পাগল-করা ভিড় দেখে মন কু-ডাকত: এখানে যদি... এখানে যদি...


    আর ঠিক এমন সময়ই ‘এবেলা’ পত্রিকা থেকে বলা হল, কলকাতাকে ভিত্তি করে একটা থ্রিলার নভেলা লেখার চেষ্টা করতে।


    তো, আবার অদম্য সেন। কলকাতার পুজোর মুখে এক জন প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে বোমা রেখে প্রশাসনকে ব্ল্যাকমেল করা শুরু করে। না, শুধু অর্থকরী লাভের জন্য নয়। বরং এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের জন্য, যেটা ভুল হাতে পড়লে গোটা দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। গল্পের ক্রাইসিস পয়েন্ট সপ্তমীর কলকাতা হলেও, আসলে তার ডালপালা গোটা দেশ পেরিয়ে চিন, পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের মুজাফ্ফরাবাদ থেকে শুরু করে অস্ট্রিয়ার ফিস অবধি পৌঁছে গেছে। প্রাথমিক ভাবে পাজ্‌লের মতো করে বিভিন্ন ঘটনা ছড়িয়ে থাকলেও, গল্প যত এগোয়, তত পরিষ্কার হতে থাকে পুরো ছবিটা। সাদা আর কালোয় ভাগ করা পৃথিবীর রং মিলেমিশে হয়ে ওঠে রহস্যময়! (গল্পের নাম ‘বিস্ফোরণের উৎসবে’।)


    এই গল্পগুলোয় বাস্তবের নেতা, নেত্রী ও পুলিশের উচ্চপদস্থ মানুষের উল্লেখ আছে, আবার তার সঙ্গে কল্পনা (মানে মিথ্যে) মিশে আছে পরতে পরতে। তাই কখনও মার্তোসের সৈনিক আদিল সপ্তমীর সন্ধেবেলা হেলিকপ্টার থেকে দড়ি বেয়ে নামে প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাদে! কখনও বিদ্যাসাগর সেতুর অন্ধকারে ঘনিয়ে আসে গল্পের ক্লাইম্যাক্স! আবার কখনও স্বয়ং লালবাজার হয়ে ওঠে সন্ত্রাসীদের লক্ষ্যবস্তু!


    এই থ্রিলারগুলো যেহেতু কলকাতার হয়েও আন্তর্জাতিক, তাই লিখতে গিয়ে সামান্য বইপত্তর আর নেট ঘাঁটতে হয়েছে আমায়। আর প্রতি বার প্রতিটা গল্প শেষ করে দেখেছি, একটা ঘটনার লেজ ধরে টানতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে অসংখ্য ঘটনা ও তথ্য। দেখেছি আমি নিজেই অজানা কত কিছু জেনে গেলাম!


    যেমন ফিস। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাড়ে চার হাজার ফিটের বেশি উচ্চতায় অবস্থিত এই ছোট্ট অস্ট্রিয়ান গ্রামটি বরফ আর পাহাড় দিয়ে সাজানো। এই গ্রামটিকে ইউরোপের মানুষজন ট্যুরিস্ট স্পট হিসেবেই দেখে। স্কি করার জন্য ইউরোপের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন আসে এখানে। এমন একটা ছবির মতো গ্রামেই ছোটবেলা কাটিয়েছে অদম্য। আর ওই ট্রিলজির প্রথম গল্পের একটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে এখানেই।


    এর পর মার্কোস। গল্পটা লেখার সময় অদম্যর পাশাপাশি আদ্যন্ত জেমস বন্ড ধরনের একটা চরিত্র খুঁজছিলাম। ভাবছিলাম ভারতীয় সেনাবাহিনীর কোন অংশ থেকে নেওয়া যায় এমন একটা ‘সব পারে’ ধরনের চরিত্র। খুঁজতে খুঁজতে পেয়ে গেলাম ‘মার্কোস’কে। মার্কোস মানে মেরিন কমান্ডোস! আগে এর নাম ছিল মেরিন কমান্ডো ফোর্স। শুধু ভারতের নয়, পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ সৈনিক হল এই মার্কোসের যোদ্ধারা। এরা অ্যাম্ফিবিয়ান কমব্যাট ফোর্স! জল, মাটি, আকাশ— সব জায়গাতেই যুদ্ধ করতে সমান দক্ষ। প্যারাট্রুপিং থেকে ফ্রি-ফল বা আন্ডারওয়াটার কমব্যাট! সবেতেই এরা অপ্রতিরোধ্য।


    এদের ট্রেনিংও হয় তেমনই কঠোর। যারা এই সিলেকশনে যায়, তাদের মধ্যে মাত্র দশ শতাংশের মতো নির্বাচিত হয়। ট্রেনিং-এর শেষ পাঁচ সপ্তাহকে বলা হয়: হেল’স উইক! আর এই নরকের সপ্তাহ পার করে যারা শেষ অবধি পৌঁছয়, তারা এক এক জন হয়ে ওঠে ওয়ার-মেশিন!


    আদিল এমনই এক জন মার্কোসের সৈনিক! কলকাতার বিপর্যয়ে সে প্রথম বার এসে সাহায্য করে। আর তার পরের দু’বারের ঘটনা সামলাতে সিএম নিজেই তাকে ডেকে পাঠান।


    তার পর সার্বিয়ার ভিঙ্কা শহর।


    পৃথিবীতে ভিঙ্কা শহরটির গুরুত্ব অন্য রকম। এখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য তৈরি নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর বর্তমানে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। আর তার জন্য ‘ওয়েপন গ্রেড অ্যাটমিক ফুয়েল’ প্রচুর জমা হয়ে গেছে ভিঙ্কা-য়। তা ছাড়াও আছে ব্যবহৃত ইউরেনিয়াম ফুয়েল থেকে তৈরি হওয়া প্লুটোনিয়াম। আর সত্যি বলতে কী, এ সব অ্যাটমিক ফুয়েলগুলো খুব একটা সুরক্ষিত অবস্থাতেও নেই।


    তাই ভিঙ্কা হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক উগ্রপন্থীদের কাছে এক ‘ক্যান্ডি স্টোর’! কারণ ওইখানে সহজেই মেলে তেজস্ক্রিয় পদার্থ! যা ট্রিলজির শেষ গল্পে ব্যবহার করা হয়েছে।


    এ ভাবেই কলকাতা বিষয়ক থ্রিলার ট্রিলজি লিখতে গিয়ে গোটা পৃথিবীর অনেকে নতুন নতুন জায়গা আর ঘটনা, উন্নত যন্ত্রপাতি বা ইতিহাসের ছোট ছোট অধ্যায় খুলে গেছে আমার সামনে। আসলে কোনও দিনই আমি জটায়ুর ওই ‘প্রখর রুদ্র’-মার্কা দুনিয়াটা তৈরি করতে চাইনি। চাইনি ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ কিছু তৈরি করতে। বরং প্রথম থেকেই মনে হয়েছিল, আমার গল্প হবে ‘ট্রু টু লাইফ’! ‘ইকোয়াল টু লাইফ’! সারা পৃথিবী জুড়ে ঘটে যাওয়া অপরাধের থেকেই উঠে আসবে আমার গল্প! সত্যি ঘটনার ‘এক্সটেনশন’ থেকেই তৈরি হবে আমার গল্প। সারা পৃথিবীর রাজনৈতিক ক্রাইসিসের থেকে উদ্ভুত অপরাধ প্রবণতার ও ঘটনার পরম্পরা থেকেই তৈরি হবে আমার গল্প!


    না, নিছক কোনও হিরে চুরি বা ‘সম্পত্তির জন্য খুন’ নয়। সারা পৃথিবীর অর্থনীতি ও রাজনৈতিক ঘটনার ছাপ থাকবে আমার গল্পে। আমি সচেতন ভাবেই চেষ্টা করেছি নিছক কোনও অ্যাডভেঞ্চার যেন না হয় গল্পগুলো। সচেতন ভাবে চেষ্টা করেছি, থ্রিলার বলতেই যে ‘সাহারায় শিহরন’ ধরনের গল্প মাথায় আসে, আমার গল্প যেন তার চেয়ে আলাদা হয়! তাই যতটা সম্ভব সত্য ঘটনা ও জায়গার কথা উল্লেখ করেছি।


    তবে থ্রিলার লেখার সময় আসল মজাটা হয় লজিস্টিক্স নিয়ে। গল্প সাজাতে গিয়ে এমন কিছু ঘটনার গিঁট পাকিয়ে ওঠে, যেগুলোকে না খুললে আর গল্প এগোবে না। তখনই হাত বাড়াতে হয় টেকনোলজির দিকে। খুঁজতে হয়, কী গ্যাজেট্‌স আছে, যার সাহায্যে গল্পের গিঁট খুলে তাকে আবার এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।


    সে ভাবেই খুঁজতে গিয়ে পেয়ে গিয়েছি অদ্ভুত সব জিনিসপত্তর! যেমন আরডিএক্স বা সি-ফোর ডিটেকশন যন্ত্র! সবাই জানে, সি-ফোর যেহেতু প্লাস্টিক এক্সপ্লোসিভ, তাই মেটাল ডিটেক্টরে ধরা পড়ে না। তা হলে কী ভাবে ধরা যায় এমন শক্তিশালী বিস্ফোরককে?


    খুঁজতে খুঁজতে জানতে পারলাম, কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নবিদ উইলিয়াম ডাইট্‌ল-এর কথা। উনি এবং ওঁর ছাত্রী দীপ্তি গোপালকৃষ্ণণ এমন একটা পলিমার বানিয়েছেন, যার সাহায্যে খুব দ্রুত আর নির্ভুল ভাবে বের করা যায় আরডিএক্স-এর উপস্থিতি। পলিমারটি ফ্লুরোসেন্ট। কিন্তু আরডিএক্স-এর উপস্থিতিতে সেটি নিজের ভাস্বরতা (ফ্লুরোসেন্স) হারিয়ে, নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে। গল্পে এটাও সেই গিঁট খুলতে ব্যবহার করতে হয়েছে আমায়।


    এর পর নানা ধরনের বন্দুক, ডিটোনেটর, কমিউনিকেটিং ডিভাইস, বডি-আর্মার কেভলার ইত্যাদির ব্যবহারও করেছি। যার মধ্যে প্রায় প্রত্যেকটাই বাস্তবে পাওয়া যায়, বা যেগুলোকে নিয়ে গবেষণা চলছে।


    সিএম এবং অন্যান্যদের হত্যার চক্রান্ত নিয়ে গল্পটি (‘আলোর প্রতিদ্বন্দ্বী’) লিখতে গিয়ে জানার দরকার পড়েছিল কলকাতার মাটির তলার ড্রেনেজ বা স্যুয়ার সিস্টেম সম্পর্কে। খোঁজ করে পেয়েও গেলাম তার ম্যাপ। দেখলাম কলকাতার মাটির তলা দিয়ে কী ভাবে উইয়ের বাসার মতো ছড়িয়ে রয়েছে এই ইটের তৈরি স্যুয়ার’গুলো! কোথা দিয়েই বা তারা গঙ্গায় পড়ছে। জানলাম, ১৮৭৫ সালে ব্রিটিশরা এটা তৈরি করেছিল। তখনকার দিনে লন্ডন আর হামবুর্গ ছাড়া পৃথিবীতে এর সমতুল্য নিকাশি ব্যবস্থা আর কোথাও ছিল না। আর এটা ভাবতেও অবাক লাগে যে, ওই সময় এই নিকাশি ব্যবস্থা এমন করে তৈরি হয়েছিল, যাতে এত বছর পরেও এত বেশি সংখ্যক নাগরিকের ভার সে বইতে পারে!


    এখন এই স্যুয়ারগুলো মেরামতির কাজ চলছে। গ্লাস রি-ইনফোর্সড পলিমার দিয়ে লাইনিং দেওয়া হচ্ছে। তাই রাস্তার ওপর জায়গায় জায়গায় কিছু ওপেনিং রাখা হয়েছে। এই সব তথ্যও ওই গল্পটা লিখতে আমায় সাহায্য করেছে।


    এ ভাবেই কলকাতা বিষয়ক থ্রিলার ট্রিলজি লিখতে গিয়ে গোটা পৃথিবীর অনেক নতুন নতুন জায়গা আর ঘটনা, উন্নত যন্ত্রপাতি বা ইতিহাসের ছোট ছোট অধ্যায় খুলে গেছে আমার সামনে।


    এক দিকে ফিস গ্রাম সম্পর্কে যেমন জেনেছি, তেমনই মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলান বাটোর-এর অপেরা হাউস’টি সম্পর্কেও খোঁজখবর পেয়েছি। ব্রাসেল্‌সের সকাল কেমন হয়ে জানতে পেরেছি, তেমনই জেনেছি তাইল্যান্ডের তামাকি নদীর কথা।


    গল্পের খলনায়ক বা ভিলেনদের তৈরি করার সময় আবার নতুন করে জেনেছি লুসিয়াস ডোমিটিয়াস আহেনোবারবাস-এর কথা। যাকে ইতিহাস চেনে কুখ্যাত নিরো হিসেবে। বা আবার করে খুঁজে পেয়েছি পূর্ব ইউরোপের সেই ছোট্ট রাজ্যের অধীশ্বরটিকে। প্রিন্স অব ওয়ালাশিয়া, মেম্বর অব দ্য হাউস অব ড্রাকুলেস্টি, ভ্লাদ দ্য ইমপেলার-কে! যাঁর ওপর ভিত্তি করেই লেখা হয়েছিল কাউন্ট ড্রাকুলার সেই বিখ্যাত গল্প!


    অদম্য সেনকে নিয়ে লেখা তাই আমার কাছে খুব আনন্দদায়ক ও পরিপূর্ণ অভিজ্ঞতা। লেখক হিসেবে সব সময়ই মনে হয়, যা ভাবলাম তা তো ঠিক লিখতে পারলাম না! যা মনে মনে দেখলাম, সেটা তো পুরোপুরি ফুটে উঠল না গল্পে! যে কোনও লেখকের মতো এই আপশোস ও অপূর্ণতা আমারও সঙ্গী।


    তবে এটাও সত্যি যে একটা ভাল লাগাও তৈরি হয়েছে এই গল্পগুলো লিখতে গিয়ে! ‘অদম্য’ ও ‘অদম্য ২’— এই দুটো বই মিলিয়ে যে ন’টা গল্প ও উপন্যাস লিখলাম তাতে কিছুটা হলেও ওই তথাকথিত লার্জার দ্যান লাইফ হিরো-র থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি আমি। ‘প্রখর রুদ্র’ ধরনের ক্যারেক্টার-গ্রাফের উলটো দিকে গিয়ে, আলো-ছায়ায় তৈরি আর একটা চরিত্রও ক্রমশ সামনে আনতে পেরেছি! যে আমাদের মতোই রক্ত-মাংসের মানুষ! যে আমাদের পাশের বাড়িতেও থাকতে পারে! সে যেমন ইয়েনস বলে একটি বাচ্চা ছেলেকে গিটার বাজিয়ে গান শোনাতে পারে, তেমনই ঠান্ডা মাথায় মুখোমুখি হতে পারে রিভলভারের! সে যেমন বিভিন্ন অরফ্যানেজকে টাকা দেয়, তেমন রেমব্রান্ট-এর ছবিও চুরি করতে পারে টাকার জন্য! তাই হিরো প্রোটোটাইপের বাইরে এসে দাঁড়ায় এই অদম্য!


    ‘ভাল’-র যে একঘেয়েমি আর একমুখিনতা আছে অন্য অনেক কিছুর মতো, সেটা ভাঙতে চেয়ে কিছুটা হলেও হয়তো পেরেছি। কিছুটা হলেও ‘লেয়ার’, মানে, অনেকগুলো স্তর দেওয়া গেছে অদম্যর মধ্যে! মনের ভেতরে রাম আর রাবণের সহাবস্থান বোঝানো গেছে। তাই আমি নিশ্চিত জটায়ু নিজেও অদম্যকে দেখলে বলতেন— ‘হাইলি সাসপিশাস!’ বলতেন, ‘আপনাকে তো কাল্টিভেট করতে হচ্ছে মশাই!’


    [email protected]

  • dc | 122.164.54.182 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:৪৩102414
  • সবই তো বুঝলাম, কিন্তু অদম্যবাবু পিঠে এটম বোম বেঁধে কেন ছোটেন জানা গেলনা। 

  • avi | 2409:4061:2c85:4ec8:e960:90e8:83dd:bc34 | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২১:২০102418
  •      স্মরণজিৎ মূলত জটায়ুর সাথে তুলনা করেই বইটি লিখেছেন বোঝা গেল। 

  • পিয়ালী | 2401:4900:16c7:8f16:a9b6:c1d0:fe21:90ce | ২২ মার্চ ২০২১ ২২:৪৬103963
  • manimoy sengupta | ২৩ মার্চ ২০২১ ১৬:৩৯103984
  • এ্যাতো ইয়ে কচ্ছেন ক্যানো সগ্গলে ছেলেটাকে ? মাঈরি, বেড়ে লিখছে ! বেশ সেই শ্রীস্বপনকুমারের 


    বাজপাখি সিরিজের ইয়েখাড়া করে দেওয়া গল্পগুলো মনে পড়ালো। ।

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন