এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  রাজনীতি  বুলবুলভাজা

  • রবীন্দ্রনাথকে ওরা গৌণ করে দেবে

    পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়
    আলোচনা | রাজনীতি | ০৬ জানুয়ারি ২০২১ | ১১৪৭৯ বার পঠিত | রেটিং ৪.৭ (৩ জন)
  • শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিলে যত হৈচৈ হয়, তার কানাকড়িও হয় না যখন কেউ আরএসএস ছেড়ে বেরিয়ে এসে তাদের মুখোশ উন্মোচিত করতে থাকেন। প্রবাসী বাঙালি পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় শিশুকাল থেকে ছিলেন সংঘ সদস্য। যৌবনকালের কিছু সময় পর্যন্ত তিনি গেরুয়াবাহিনীকে দেখেছেন অতি নিকট থেকে। তাঁর নিজের ভাষাতেই, জ্ঞানচক্ষু খোলার পর, তিনি সংঘ ছাড়েন। এ রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে কী কী সর্বনাশ হতে পারে, সে কথা তাঁর চেয়ে বেশি করে কে-ই বা বুঝতে পারে! পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন কৃশানু ব্যানার্জি।

    প্রশ্ন: আপনি কতদিন আরএসএস-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন? আপনার ভূমিকা কী ছিল?

    আমি মোটামুটি খুবই শিশু বয়স থেকে -- ধরুন ছ’ বছর বয়স থেকে তেইশ-চব্বিশ বছর বয়স পর্যন্ত ওদের সঙ্গে ছিলাম। ধরে নিন, ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত। প্রথম দিকে, ওরা যা বলে আর কী, স্বয়ংসেবক হিসেবে আমার বাবা আমাকে নিয়ে যান। বাবা ছিলেন আরএসএস প্রচারক। গান্ধী হত্যার পরে জেল খেটেছিলেন। জিতেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। অটলবিহারী বাজপেয়ী, আডবাণী, নানাজি দেশমুখ – এদের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। খুবই উঁচু দরের এবং শ্রদ্ধেয় নেতা ছিলেন। তাঁর মাধ্যমেই আমার আরএসএস-এর সঙ্গে পরিচয়। আমি ওদের প্রত্যেকটা স্তর একটা একটা করে পার হয়েছি। এবং তারপরে ‘গঠনায়ক’, যা আসলে ‘গ্রুপ অর্গানাইজার’, তা-ই হয়েছি। তারপরে শিক্ষক, মুখ্যশিক্ষক – আমাদের উত্তর কলকাতার গোয়াবাগান শাখা – সেখান থেকে আমাকে বর্ধমান ওটিসি বা অফিসার্স ট্রেনিং ক্যাম্পে পাঠানো হয়, যেখানে ওরা প্রচারক তৈরি করে। আমি খুবই প্রমিসিং ছিলাম। জরুরি অবস্থার সময় আমি জয়প্রকাশ নারায়ণের আন্দোলনের সঙ্গে খুব যুক্ত ছিলাম। ১৯৭৫-১৯৭৭ আন্ডারগ্রাউন্ডে কাজ করেছিলাম। সেই সময়ে, আমি ওদের নেতৃস্থানীয়দের চোখে পড়ি। তাঁরা আমাকে এবিভিপি-এর অর্থাৎ বিদ্যার্থী পরিষদের ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট সেক্রেটারি মনোনীত করেন। আমি সেক্রেটারি হিসেবে কলকাতায় কাজ করতাম। বহু মিটিং করেছি, বহু কনফারেন্স করেছি, ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটিতে সুব্রহ্মন্যন স্বামীর সঙ্গে এক মঞ্চ থেকে বক্তৃতা দিয়েছি, লেখক হিসেবে নামও ছিল। এর পর আমাকে দিল্লিতে পাঠান হয় আরএসএস থেকে জনসংঘের প্রতিনিধি হিসেবে; জনতা পার্টি তৈরির সময়ে। এই হল আমার ইতিহাস।

    প্রচণ্ড খেটেছি। জরুরি অবস্থার সময়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে প্রাণ হাতে নিয়ে কাজ করেছি। যখন সব বড় বড় অনেকেই; নেতা বা নাম করা লোকেরা অদৃশ্য ছিলেন, তখন প্রাণের ঝুঁকি হাতে নিয়ে কাজ করেছিলাম। অর্থাৎ কেবলমাত্র বাইরে থেকে দেখা নয়, আমি খুব কাছ থেকে তাঁদের দেখেছি, বাবার সূত্রে এবং নিজের কাজের সূত্রে। এই হল আরএসএস-এর সঙ্গে -- এবিভিপি, বিজেপি, জনসঙ্ঘ এদের সঙ্গে আমার প্রত্যক্ষ যোগাযোগের ইতিহাস।

    প্রশ্ন: আপনি আরএসএস কেন ছাড়লেন?

    কারণ একটাই। জ্ঞানের চোখ যাকে বলে, তা যখন খুলে গেল, জ্ঞানচক্ষু উন্মীলিত হল যাকে বলে, তখন ধীরে ধীরে বুঝতে পারলাম যে এই সংগঠন আমার জন্য নয়। কারণ তাদের ভয়ানক সাম্প্রদায়িকতা, ঘৃণার রাজনীতি, পশ্চিমবঙ্গের বাঙালির চেতনার সঙ্গে … তার কোন রকম সামঞ্জস্য নেই। যখন ছোট ছিলাম তখন খেলাধুলো করতাম, প্রচুর বন্ধু-বান্ধব ছিল – এখন সেইসব বন্ধুদের খুব মিস করি। সংগঠনটাকে মিস করি না একেবারেই। কিন্তু বন্ধুদের খুব মিস করি। খুব জনপ্রিয় ছিলাম। খেলাধুলো করতাম। কিন্তু আদর্শর দিক থেকে যখন বুঝতে শিখলাম তখন দেখলাম যে এদের এই ঘৃণার রাজনীতি, বিদ্বেষের রাজনীতি, আর ভয়ঙ্কর সাম্প্রদায়িকতা, মুসলমান বিদ্বেষ, খ্রিশ্চান বিদ্বেশ, সব কিছুর মধ্যেই একটা তাদের অতিরিক্ত ভয়ঙ্কর উগ্র দেশপ্রেম, উগ্র জাতীয়তাবাদ, হিন্দু-হিন্দু; হিন্দু ছাড়া কিছু নেই, হিন্দি-হিন্দি-হিন্দি ছাড়া কিছু নেই – এই সব কিছু মিলিয়েই… তারপরে দেখলাম রবীন্দ্র-বিদ্বেষ, রবীন্দ্রনাথ সম্বন্ধে তাদের খুব গোপন একটা এজেন্ডা… সবকিছুই আমাকে প্রচণ্ড ভাবে ট্রাবল দিতে লাগল। বুঝতে সময় লেগেছিল, তারপরে ছেড়ে দিয়ে চলে এলাম। আসলে আরএসএস-এর, বা এদের যে সংগঠনগুলো আছে; বিজেপি, আগেকার বিজেএস, জনসঙ্ঘ, এবিভিপি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, এদের যে আদর্শ তার সঙ্গে বাঙালির চরিত্র, বাঙালির যে মূল্যবোধ, বাঙালির চেতনা, একেবারেই কোনোরকম তার মিল নেই। সেটা বুঝতে অনেক সময় লেগেছিল। বাঙালির যে উদারনৈতিক মনোভাব, বাঙালির রেনেসাঁসের যে সমস্ত শিক্ষা, রবীন্দ্রনাথ, সত্যজিৎ রায়, বিভূতিভূষণ, সলিল চৌধুরী থেকে লালন ফকির, ভগবান শ্রীচৈতন্য, ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংস, বিদ্যাসাগর – এঁরা যে শিক্ষা আমাদের বাঙালি হিসেবে দিয়ে গেছেন বা আধুনিক যুগের সাহিত্যিকরা, সঙ্গীতকাররা, নাট্যকাররা, চলচ্চিত্রকাররা, যাঁদের চেতনায় আমার চেতনা গড়ে উঠেছে – যখন থেকে বুঝতে পারলাম যে এঁদের প্রত্যেকেই আরএসএস-এর আর এই অতি উগ্রবাদী হিন্দুত্ববাদীদের একেবারে বিপরীত মেরুর মানুষ… আমি তো বাঙালি, বাংলা ভাষা, বাংলা সংস্কৃতি বাঙালি মূল্যবোধ, বাঙালি চেতনা, বাঙালির ইতিহাস আমার কাছে ভীষণ প্রিয় – একজন বাঙালি হিসেবে সেই চেতনাটা আস্তে আস্তে গড়ে উঠতে লাগল, তখনই বুঝলাম যে এদের সঙ্গে আমি থাকতে পারি না। তাই ছেড়ে দিয়ে চলে এলাম।

    প্রশ্ন: আরএসএস-এর রাজনীতির ক্ষতিকর দিক কী?

    রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের রাজনীতির সবচাইতে ক্ষতিকর দিক হচ্ছে এরা ফ্যাসিস্ট। ১৯২৫ সালে, এদের যে সৃষ্টি হয়েছিল, সেই সম্পূর্ণ সৃষ্টির ইতিহাসটা যদি ভালো করে দেখা যায়, তাহলে দেখা যাবে যে এরা একেবারে মুসোলিনি, হিটলার, নাৎসি এবং ফ্যাসিস্টদের আদলে একেবারে সংগঠনটাকে গড়ে তুলেছিল। তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ, তাদের প্রার্থনা, তাদের নিয়মানুবর্তিতা, তাদের এক দেশ – এক নেতা – এক ভাষা – এক ধর্ম, সমস্ত কিছু একেবারে ফ্যাসিস্টদের অনুকরণে গড়ে উঠেছিল। এবং সময়টাও ছিল একেবারে ১৯২৫, বুঝতেই পারছেন। তারপরে গোলওয়ালকারের ‘We or Our Nationhood Defined’ তাতে একেবারে স্পষ্ট ভাবে হিটলারের নাৎসিদের, ফ্যাসিস্টদের উপাসনা করা আছে, প্রশস্তি বারবার বারবার করেছে। যেটা শিবসেনাও করেছে। এইসব জিনিসগুলো তো তখন জানতাম না। ওখানে তো এইসব আলোচনা হয় না। এটা হচ্ছে একটা মারাত্মক ক্ষতিকর জিনিস। আরেকটা হচ্ছে, ওরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। বাকস্বাধীনতাতে বিশ্বাস করে না। ওরা এগুলোকে কাজে লাগাচ্ছে, ঠিক হিটলার যে ভাবে কাজে লাগিয়েছিল – ক্ষমতায় আসার জন্যে। একে কিছুতেই সমর্থন করা যায় না। গণতান্ত্রিক দেশে, আমাদের ভারতের মতো একটা দেশে, যেখানে হিন্দু-মুসলমান-খ্রিস্টান-বৈষ্ণব-শাক্ত-আস্তিক-নাস্তিক, নানা শ্রেণির মানুষ, নানা ধর্মের মানুষ, নানা ভাষাভাষী, তাদের মধ্যে এই একটা ফ্যাসিস্ট সংগঠন একেবারেই যাকে বলে সম্পূর্ণ আউট অফ সিঙ্ক। তাদের নারীবিদ্বেষ, মেয়েদের সেকেন্ড ক্লাস, থার্ড ক্লাস সিটিজেন হিসেবে দেখা… ভয়ঙ্কর পিতৃতান্ত্রিক, ফিউডাল একটা অর্গানাইজেশন। জমিদার শ্রেণির বড় বড় সব ভূ-স্বামী, এই রাজমাতা, রাজপরিবার, এরাই এর পেছনে আসল শক্তি ছিল, এবং এখনও আছে। যার জন্য পশ্চিমবঙ্গে এই যে জিনিসটা আসছে এটাকে কিছুতেই বরদাস্ত করতে দেওয়া যায় না। নারী-বিদ্বেষ মারাত্মক। মুসলমান বিদ্বেষ, নারী-বিদ্বেষ, দলিত-বিদ্বেষ ভয়ঙ্কর ধরনের। কিছু কিছু প্রচ্ছন্ন, কিছু কিছু প্রকাশ্য। আর এখন তো অনেক বেশি নগ্ন হয়ে পড়ছে সবকিছু।

    প্রশ্ন: বিজেপির সঙ্গে আরএসএস-এর সম্পর্ক আপনি কী ভাবে দেখেছেন?

    আরএসএস এবং বিজেপি-এর যে ক্ষতিকর দিক তার সঙ্গে ওই বিজেপির সম্পর্কটা ভালো করে বুঝতে হবে। কারণ বহু লোক আছে, যারা জানেই না যে বিজেপি আসলে আরএসএস-এর একটা সন্তান। আরএসএস হচ্ছে আসল চালিকা শক্তি, ড্রাইভিং ফোর্স। আরএসএস তৈরি হয়েছিল ১৯২৫-এ এবং গান্ধীহত্যার সঙ্গে নাথুরাম গডসে, সাভারকর, এরা সব যুক্ত ছিল। নাথুরাম গডসে আরএসএস-এর লোক ছিল আগে, তারপরে ছেড়ে দিয়ে হিন্দু মহাসভায় চলে যায়। বলা হয় যে যখন নাথুরাম গডসের ফাঁসি হচ্ছে, তখন সে ফাঁসির মঞ্চে ওঠার আগে, আরএসএস-এর প্রার্থনা ‘নমস্তে সদাবৎসলে মাতৃভূমে’ আবৃত্তি করছে। আর সাভারকর ছিল পেছনে কলকাঠি নাড়ার জন্যে। এরা… এখনও বহু লোক, তারা গান্ধীহত্যাকে সমর্থন করে। তাদের গান্ধীর প্রতি ভয়ঙ্কর বিদ্বেষ, রবীন্দ্রনাথের প্রতি ভয়ঙ্কর বিদ্বেষ। এটা বুঝতে হবে যে বিজেপি আসলে কিছুই না, বিজেপির পেছনে এই যে আজ দিলীপ ঘোষ, অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদী, রাজনাথ সিং, যত বড় বড় লোক আছে, সব্বাই কিন্তু আরএসএস থেকে এসেছে – অরুণ জেটলি অবধি। আরএসএস হচ্ছে আসল, তার রাজনৈতিক ফ্রন্ট হচ্ছে বিজেপি; যেটা আগে জনসঙ্ঘ ছিল, শ্যামাপ্রসাদ তৈরি করেছিলেন, তারও আগে তৈরি হয়েছে এবিভিপি বা বিদ্যার্থী পরিষদ, তারপরে হয়েছে জনসঙ্ঘ। সুতরাং, এবিভিপি কিন্তু বিজেপি বা জনসঙ্ঘের ছাত্র সংগঠন নয়, আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন। তারপরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, এগুলো হচ্ছে সব সিস্টার অর্গানাইজেশন। আবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদ থেকে তৈরি হয়েছে বজরং দল, মেয়েদের সশস্ত্র দুর্গা বাহিনী। তারপর বজরং দল, আরও হাজার মাশরুম অর্গানাইজেশন তৈরি হয়েছে। এরা সকলেই বিজেপি-এর সঙ্গে যুক্ত এবং পেছনে আসল ড্রাইভিং ফোর্স হচ্ছে নাগপুর থেকে, হেডকোয়ার্টার থেকে সমস্ত ইন্সট্রাকশন দেওয়া আরএসএস। সুতরাং বিজেপিকে বুঝতে গেলে আরএসএসকে বুঝতেই হবে। আরএসএস ফ্যাসিস্ট, আরএসএস থেকেই বিজেপি সৃষ্টি হয়েছে। অটলবিহারী বাজপেয়ী, আদবানি, এরা প্রত্যেকে আরএসএস-এর। আমার বাবাও ছিলেন আরএসএস-এর প্রচারক। প্রচারক মানে হোলটাইমার, যে সব ছেড়ে দিয়ে… আগেকার দিনে তাদের মধ্যে স্বার্থত্যাগ অনেক বেশি ছিল। এখন একটা চরম দুর্নীতিগ্রস্ত এবং হিপোক্রিটিকাল অর্গানাইজেশন হয়ে গেছে। ওরা যে যে কথাগুলো চিরকাল বলে এসছে, এখন ঠিক তার উলটো কাজ করে যাচ্ছে। ওরা স্বদেশি অর্থনীতির কথা বলে এসেছে, চিরকাল। এখন দেখা যাচ্ছে যে পুরো দেশটাকেই ওরা বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলোর হাতে তুলে দিয়েছে। সাধারণ মানুষের কথা বলে, সাধারণ মানুষের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়ে, ব্যাঙ্ক বলুন, রেলওয়ে বলুন, বিমা বলুন – ইনসিওরেন্স, বিএসএনএল, সমস্ত লাভজনক, ভালো-ভালো সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দিয়ে ওরা আম্বানি-আদানি এই সমস্ত, বিলিয়নিয়ার সমস্ত ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্টদের হাতে তুলে দিচ্ছে। দেশের অর্থনীতিকে ভেতর থেকে ধ্বংস করে চুরমার করে দিচ্ছে। একেবারে দিনে ডাকাতি। এই কথাগুলো বেশি করে আমাদেরকে লোককে বোঝাতে হবে। পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে আরএসএস। এই হল আরএসএস-বিজেপির সম্পর্ক। আর তার সঙ্গে আছে লেবার ফ্রন্ট বিএমএস। তারা চুপচাপ আছে, কারণ তারা মুশকিলে পড়ে গেছে এখন। কৃষকদের মধ্যেও ওদের আছে ‘কিসান মোর্চা’। তারাও এখন, এই কৃষক আন্দোলনের সময় লোককে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে।

    কিন্তু ঝুলি থেকে বেড়াল বেড়িয়ে পড়েছে। ওদের হিপোক্রেসিটা উলঙ্গ হয়ে গেছে। সেই হিপোক্রেসির কথাটা লোককে বোঝাতে হবে। চিরকাল আরএসএস বলে এসেছে যে তারা হচ্ছে চরিত্রগঠন করছে। তারা নীতি-নৈতিকতার ধ্বজাধারী। এদিকে দেখা যাচ্ছে যে সমস্ত যত দেশজুড়ে, যত রকমের কালো টাকার কারবারি সব এই ভোটের সময় বিজেপির পেছনে থাকছে। সমস্ত জায়গায় এমএলএ এমপি ভাঙিয়ে, সরকার ভেঙে ফেলা, সরকার তৈরি করা… পশ্চিমবঙ্গে এখন ঐ শুভেন্দু, মুকুল রায়, যারা একেকটা, মানে কিছুদিন আগে পর্যন্ত ভয়ঙ্কর দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ছিল, তৃণমূলে থাকার সময়, তারা সব এখন বিজেপিতে এসেছে। এখন বিজেপি-ও সেই দুর্নীতিগুলো নিয়ে একেবারে মুখে কুলুপ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন আর ওইগুলোর কথা তারা বলতে চায় না। ওদের পেছনে সমস্ত সংগঠন আছে, মিডিয়া আছে, বড় বড় মিডিয়া, ওদের নিজেদের আইটি সেল ভয়ঙ্কর শক্তিশালী, অ্যাক্টিভ, তারা কাজ করছে; প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। এই সমস্ত হোয়াটসঅ্যাপ, হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটি যাকে বলা হয়, ব্যাঙের ছাতার মতো হাজার ছোটো ছোটো মিডিয়া গড়ে উঠেছে। তারা সব সময় প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপির পক্ষে। আছে অর্ণব গোস্বামীরা। আর একটা কথাও বলার দরকার এই হিন্দুত্ববাদী আরএসএস, হিন্দু মহাসভা এদের সম্পর্কে, যে এরা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে সম্পূর্ণ ভাবে দূরে ছিল। শত হস্ত দূরে ছিল, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে দূরে ছিল। যখন ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল চাকী, বিনয়-বাদল-দীনেশ, বাঘাযতীন, সূর্য্য সেন, প্রীতিলতা, কল্পনা দত্ত সহ অসংখ্য মানুষ প্রাণ দিচ্ছে, জেলে যাচ্ছে, অত্যাচারিত হচ্ছে, তখন ব্রিটিশদের গুপ্তচর হিসেবে এরা অনেকে কাজ করত, এবং এরা ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সক্রিয় বিরোধিতা করেছিল। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে আরএসএস-এর অবদান একেবারে শূন্য। এই কথাটা বলা খুব দরকার, কারণ ওরা এইগুলোকে গোপন করতে চায়।

    প্রশ্ন: বিজেপি যদি পশ্চিমবঙ্গে জেতে, বাঙালির সংস্কৃতির ওপর কী প্রভাব পড়বে?

    বিজেপি যদি পশ্চিমবঙ্গে জেতে, তাহলে সবচাইতে যে ভয়ঙ্কর ক্ষতিটা হবে, তা হল, আমাদের বাঙালিত্ব ওরা চিরকালের মতো ধ্বংস করে দেবে। আমাদের বাঙালির যে নবজাগরণ হয়েছিল, রবীন্দ্রনাথ, রাজা রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগর, কেশব চন্দ্র সেন, এই মহামণীষীদের যে ক্ষমতা আমরা দেখেছি, আবার পরবর্তীকালে সত্যজিৎ রায়ের মত মানুষদের আমরা তারই আলটিমেট প্রোডাক্ট হিসেবে দেখেছি। এঁরা একটা উদারনৈতিক চেতনা আমাদের বাঙালিদের মধ্যে দিয়ে গেছেন, প্রগতিশীল জীবনযাত্রা, আধুনিক জীবনযাত্রা, নারীস্বাধীনতা, জাত-পাত নিয়ে আমরা বিন্দুমাত্র মাথা ঘামাই না।

    আমাদের ভাষার প্রতি আমাদের যে শ্রদ্ধা, আমাদের ভাষা-সংস্কৃতি-সাহিত্য-শিল্প ওরা একেবারে ধ্বংস করে দেবে। কারণ ওরা জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেবে। আজ পশ্চিমবঙ্গে যেটা দেখা যাচ্ছে যে বড় বড় শহরগুলোতে সমস্ত বাংলা মিডিয়াম স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, সেখানে সব হিন্দি মিডিয়াম, ইংরেজি মিডিয়াম, একেবারে চরম আকার ধারণ করবে। বাঙালি জাতি হিসেবে যে জাতিসত্তা, সেই জাতিসত্তাকে ওরা সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে চুরমার করে দেবে। বাঙালিকে হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের একটা ক্ষুদ্র কলোনি হিসেবে গড়ে তুলবে। যেখানে বাঙালিরা দাসের মত, তারা ওই হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের দাসের মত ভূমিকা পালন করবে।

    আর যেসব প্রতিশ্রুতি ওরা দিচ্ছে, সেগুলো একেবারে ঠুনকো, এগুলোর কোনো অর্থই হয় না। একদিন বলছে পঁচাত্তর লাখ চাকরি তৈরি হবে, তারপরের দিন ওয়েবসাইট থেকে সেটা তুলে নিচ্ছে। আর দুর্নীতির বন্যা বয়ে যাবে। এতদিন পশ্চিমবঙ্গের ভেতরে ওদের তুলনায় চুনোপুঁটিরা দুর্নীতি করেছে। এখন ওদের বাইরে থেকে বিশাল পরিমাণ কালো টাকা, পশ্চিমবঙ্গকে ছেয়ে ফেলবে। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালির আর সম্মান নিয়ে বাঁচার আর কোনো জায়গা থাকবে না। রবীন্দ্রনাথকে একেবারে একটা গৌণ একটা চেহারা দেবে। জাতীয় সঙ্গীত বদল করে ফেলার কথা ওরা অনেকবার বলেছে, রবীন্দ্রনাথের মূর্তি ভাঙ্গার চেষ্টা করেছে অনেক জায়গাতে, তার জায়গায় নাথুরাম গডসের স্ট্যাচু হবে।

    বহুকাল ধরে বাংলাতে আমরা হাজার কষ্টের মধ্যে, হাজার দাঙ্গার মধ্যে, রক্তাক্ত দেশভাগের মধ্যেও হিন্দু-মুসলমান একসঙ্গে বেঁচে থাকার চেষ্টা করেছি। আমরা সম্প্রীতির সম্পর্ক নিয়ে থাকার চেষ্টা করেছি।

    জাতপাতের ব্যাপারে আমরা সবটা ছাপিয়ে উঠতে পারিনি. সেগুলোর ব্যাপারে যাদের কাজ করার কথা ছিল করেনি, কিন্তু তা সত্ত্বেও আজ রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র অনেক জায়গার তুলনায় – উত্তরপ্রদেশের কথা ছেড়েই দিলাম – উত্তরপ্রদেশ, বিহার তো জাতপাতের ওপরেই আছে, সেইসব দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা অনেক ভাল। এখন পশ্চিমবঙ্গে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে আবার ওইসব জিনিসগুলো, ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার, বিজ্ঞানবিরোধীতা, নারী স্বাধীনতা বিরোধিতা, আধুনিকতা বিরোধিতা সব দিক থেকেই বাঙালি জাতি একেবারে চরম ধ্বংস হবে। এবং তার প্রভাব বাংলাদেশের ওপরে মারাত্মক ভাবে পড়বে। কারণ শেষ অবধি আরএসএস-এর অখণ্ড ভারতের স্বপ্নে পাকিস্তান নেই, বাংলাদেশ নেই, তারা অখণ্ড হিন্দু ভারত তৈরি করতে চায়।

    আজ আসাম, ত্রিপুরায় বিজেপি ক্ষমতায়, পশ্চিমবঙ্গে যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশকে একেবারে গলা টিপে মেরে ফেলবে সব দিক থেকে। অর্থনৈতিক দিক থেকে, সাংস্কৃতিক দিক থেকে, বাঙালি জাতির জাতিসত্তা একেবারে ধ্বংস হয়ে যাবে। এটাই হচ্ছে সবচাইতে বড় বিপদের কারণ।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৬ জানুয়ারি ২০২১ | ১১৪৭৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Sandip Datta | ০৬ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:৪৯101538
  • লেখক বাংলা বাঙালিত্বের কথা বলেছেন। কোনো রাজনৈতিক দল বাংলায় তা রক্ষা করতে পারেনি।ঐতিহাসিক কারণে বাংলাদেশে বাংলা সংস্কৃতি তে মুসলিম ঔদার্য জলাঞ্জলি গিয়ে গোঁড়া ধর্মীয় মৌলবাদী সংস্কৃতি র অনুপ্রবেশ, আর চটকল , কয়লা, খনি শ্রমিকদের কেন্দ্র করে বিহার উত্তরপ্রদেশ এর হিন্দি সংস্কৃতি র পৃষ্ঠপোষক হয়ে উঠেছে শ্রমিক দরদী বাম, অসামাজিক ক্রিয়াকর্মের দরদী দক্ষিণপন্থী তৃণমূল ও কংগ্রেস, সেই সাথে তারা ভোট রাজনীতিতে সংখ্যালঘু তোষণ করতে গিয়ে শুধু বিরিয়ানি নয় তাদের ভাষা এবং গোঁড়া ধর্মীয় প্রভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে ভাষাগতভাবে বাংলাকে অবহেলা করেছে। গঙ্গার পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের প্রায় অধিকাংশ পুরপ্রশাষক এখন বাংলা ভাষা লিখতে ও পড়তে জানে না, স্টেশনে দাঁড়ালে গুটখা, খৈনি আর হিন্দি 'আবে' র উৎপাত লেখকের নজরে আসেনি। হয়তো তাঁর বাড়িতেও বারমুডা ইংলিশ মিডিয়াম কালচার । বি জে পি বড়বাজার এ নয় , উত্তরবঙ্গেও তাই থাবা মেরেছে , বাংলাদেশে আর পূর্বের পুব বাংলায় বাঙালী কৃষ্টি সংস্কৃতি ভিটে মাটি সাম্প্রদায়িক শক্তি নয় সেখানকার ধর্মীয় সংখ্যাগুরু বঙ্গভাষী মুসলিমদের দাপটে।

  • Ranjan Roy | ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০০:১১101540
  • রবীন্দ্রনাথকে ধর্মান্ধ গোঁড়ারা সহ্য করতে পারেনা-- কি হিন্দু, কি মুসলমান!


    গুরুর পাতাতেই কয়েক বছর আগে একজন সমানে 'রবি-ঠগ' লালনের খাতা চুরি করেছে এবং মুসলিমদের পক্ষে কিছু বলেনি গোছের কথা সমানে বলতেন। এটা বেরিয়ে পড়ত যে উনি গোরা বা রবীন্দ্রনাথের হিন্দু-মুসলমান বিষয়ক প্রবন্ধগুলি পড়েননি। বাংলাদেশের একাংশ দাবি তোলে জাতীয় সংগীত 'আমার সোনার বাঙলা' বদলে কথা "আমার প্রাণের আল্লা" করে দেওয়া হোক।( ভিডিও দেখেছি) 


    হিন্দু গোঁড়াদের আরও মুশকিল। বিসর্জনের রঘুপতি কালীমূর্তি তুলে নদীতে নিক্ষেপ করেন। রথের রশি নাটকে শূদ্রের ছোঁয়া না লাগলে রথ নড়ে না। অচলায়তনের জানলা খুলে একজটা দেবীর ভয় ভেণ উড়িয়ে ধর্মের অচলায়তনের পাঁচিল ভেঙে ফেলার ডাক কী করে হজম করা যায় ?


    তাই বিবেকানন্দ নিয়ে উচ্চকিত  এবং অর্ধসত্যের প্রচার হলেও রবীন্দ্রনাথ নিয়ে এরা বেশি রা কাড়েন না। ওঁর জাতীয়তাবাদ/আন্তর্জাতিকতা ইত্যাদি বক্তব্যের কথা ছেড়েই দিলাম।


    কিন্তু বাঙালী ট্রোলরাই প্রচার করেন -- জনগণমন কিং জর্জের সম্মানে লেখা!! বদলে দেয়া হোক । আজাদ হিন্দ ফৌজ সরকারের গীতটি  নিলেই হয়। 

  • অরিন | 161.65.237.26 | ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০২:২৩101541
  • রবীন্দ্রনাথকে "গৌণ" করে দেওয়া কি এতটাই সহজ? ইনি একটি রাজনৈতিক দলকে এতটা শক্তিশালী মনে করেন যে রবীন্দ্রনাথের চিন্তা ভাবনাকে তারা জনসমাজে গৌণ করে দেবার ক্ষমতা রাখে বলে ভাবেন । বোঝা যাচ্ছে ভদ্রলোক আর এস এস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারেন, তবে মানসিকতায় এখনো ঐখানেই রয়ে গেছেন। 


    ট্রোজান হর্স?

  • &/ | 151.141.85.8 | ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৩৪101542
  • আরে লেখাটার শুরুর দিকটা !!!! রীতিমতন ষাট সত্তরের দশকে এরা ভালোরকম সক্রিয়। আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে কাজ করছে, বড় বড় নেতাদের সঙ্গে কাজ করছে।
    এইরকম ফ্যাসিস্ট বাহিনিকে স্বাধীন দেশে পিষে মারা হয় নি কেন, সেটাই তো প্রশ্ন। এরা এতটা শিকড় চারানোর সুযোগ, সময়, প্রশ্রয় পায় কেমন করে?

  • অরিন | ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:০৫101543
  • "বং অর্ধসত্যের প্রচার হলেও রবীন্দ্রনাথ নিয়ে এরা বেশি রা কাড়েন না। "


    কারণ, "বৈরাগ সাধন মুক্তি, সো হমার নেহি |"


    দেখছেন না রামছাগলের মত দাড়ি রেখেছেন একজন (তাঁর নাম করতে নেই),  বাংলার ইলেকশনে রবিঠাকুর সাজার সখ হয়েচে | 

  • &/ | 151.141.85.8 | ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:২৮101544
  • ওই দাড়িয়ালা রামছাগলটাকে যদি একেবারে ঢুকতেই না দেওয়া হত, তাহলে ভালো হত। কিন্তু ইতিমধ্যেই প্রচুর ঘেসো ছাগল কিনে নিয়েছে রামছাগলরা। আরও নেবে মনে হচ্ছে।

  • samik | 2001:8003:2307:a400:748c:fbd8:5bdd:eaf2 | ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৫৮101545
  • আমাদের যে কারণে মনে হচ্ছে যে বিজেপি আসুক সেটা হলো সিপিএম র সময় র অর্থনৈতিক অবক্ষয় যেটা কে তৃণমূল সরকার ও ঠিক করতে বিফল এখনো পর্যন্ত | কিন্তু এই বিজেপি আসলে কি কোনো সমাধান হবে ? যদি শান্তি স্থিতি না থাকে, মানবতা ও দেশপ্রেম র সংজ্ঞা গুলো সব মিলে মিশে গুলিয়ে যায় তাহলে অর্থনীতি সমাজ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কি করে উন্নত হবে ? আমি রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণ দূরের একজন মানুষ যে বাংলার ও ভারতের  সামগ্রিক উন্নতি কামনা করে | কোনো ভাবনা ই ভূল নয় যা মানুষের ভালো চায় সেটা আমার বিশ্বাস |

  • ar | 96.230.106.154 | ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৯:৪৭101547
  • "রবীন্দ্রনাথকে ওরা গৌণ করে দেবে"

    না, মানে ইয়ে ........ ওই আর কি!!!!

  • সোমা রায় | 2402:3a80:a5a:be0c:0:6f:e09:cf01 | ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ২৩:৫৫101557
  • খুব সুন্দর ভাবে বুঝিয়েছেন । আমি সহমত

  • বিপ্লব রহমান | ০৮ জানুয়ারি ২০২১ ১১:২৩101562
  • একদম ফ্যাসিবাদের মুখোশ ধরে টান। গুরুচন্ডালী এই দলিল সংযোজনে সাধুবাদ

  • santosh banerjee | ০৯ জানুয়ারি ২০২১ ২০:০৭101587
  • এই কথা যদি আমাদের বঙ্গের আপামর জনগণ একটু বুঝতে পারতো ।..যদি আমাদের কংগ্রেস ..বাম ।..ঘাস ।..দক্ষিণ... উত্তর ..সব পার্টি অনুধাবন করতো ।....যে , একটা রাজ্যের সাংস্কৃতিক ..বৌদ্ধিক আর ধর্মীয় একতার  ইতিহাস টা সবার আগে ।..তার পর রাজনীতি ।..তাহলে তো হয়েই যেত !! এখন ।..আপাতত ওই শুয়োরের বাচ্চাদের """দাড়ি ধরে মারো টান """!!!!এটি হোক আপাতত !!

  • a | 59.102.16.198 | ১০ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:৩৯101599
  • লেখাটা পড়ে খুব বেশি ফিয়ার মঙ্গারিন মনে হল যাকে বলে জুজুবাদ।


    এই যে বারবার কথা উঠছে হিন্দি চাপিএ দেওয়া হবে, এর কারণ কি তথা করে কি সুবিধা? আর হবেই বা কেন? দক্ষিণ ভারতে তো হয়নি। কর্নাটকে বিজেপির সরকার আছে বহুদিন ধরে, ব্যাঙ্গলোর কসমোপলিটান হয়েছে কিন্তু কর্নাটক হিন্দিপ্রধাণ হয়ে পড়েনি তো। তাহলে পব তে হবে কেন? 


    ফ্যাসীবাদের ব্যাপারটাও বুঝিনি। একদিকে উনি বলছেন বিজেপি নাজি চিন্তাধারায় তৈরী। তো লেখকের কি ধারণা ১৯২৫ এর চিন্তাভাবনা দিয়ে এখন ২০২১ e বিভেদ তৈরী হবে? তা তো নয়। তাহলে কিভাবে আরএসেস তথা বিজেপির স্ট্রাটেজি ওভার টাইম পাল্টেছে সেটা নিয়ে আলোচনা হলে ভালো লাগত। 


    লেখক কখন বিজেপি ছেড়েছেন সেটা খুব স্পষ্ট নয়, কিন্তু মনে হয় আশির দশকে। তো এতদিন কিভাবে পলিটিক্ষে যুকতা ছিলেন বা আছেন? শুভেন্দু মুকুলের বিরুশ্ধে ওনার আগে কি বক্তব্য ছিল? মানে যখন ওনারা তিনিতে ছিলেন? 

  • a | 59.102.16.198 | ১০ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:৩৯101598
  • লেখাটা পড়ে খুব বেশি ফিয়ার মঙ্গারিন মনে হল যাকে বলে জুজুবাদ।


    এই যে বারবার কথা উঠছে হিন্দি চাপিএ দেওয়া হবে, এর কারণ কি তথা করে কি সুবিধা? আর হবেই বা কেন? দক্ষিণ ভারতে তো হয়নি। কর্নাটকে বিজেপির সরকার আছে বহুদিন ধরে, ব্যাঙ্গলোর কসমোপলিটান হয়েছে কিন্তু কর্নাটক হিন্দিপ্রধাণ হয়ে পড়েনি তো। তাহলে পব তে হবে কেন? 


    ফ্যাসীবাদের ব্যাপারটাও বুঝিনি। একদিকে উনি বলছেন বিজেপি নাজি চিন্তাধারায় তৈরী। তো লেখকের কি ধারণা ১৯২৫ এর চিন্তাভাবনা দিয়ে এখন ২০২১ e বিভেদ তৈরী হবে? তা তো নয়। তাহলে কিভাবে আরএসেস তথা বিজেপির স্ট্রাটেজি ওভার টাইম পাল্টেছে সেটা নিয়ে আলোচনা হলে ভালো লাগত। 


    লেখক কখন বিজেপি ছেড়েছেন সেটা খুব স্পষ্ট নয়, কিন্তু মনে হয় আশির দশকে। তো এতদিন কিভাবে পলিটিক্ষে যুকতা ছিলেন বা আছেন? শুভেন্দু মুকুলের বিরুশ্ধে ওনার আগে কি বক্তব্য ছিল? মানে যখন ওনারা তিনিতে ছিলেন? 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন