এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  গপ্পো

  • বিজলিবালাদের মরণ-বাঁচন

    স্বাতী রায় লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ০১ নভেম্বর ২০২০ | ৩১৩৯ বার পঠিত | রেটিং ৪.৬ (৫ জন)
  • “তপতীইইই, তপতীইইই ” নিচের থেকে জোর হাঁক পাড়ছে মিনতিদি। “তোমার জন্য একটা খাম দিয়ে গেল ঝন্টু। বলল, কি নাকি টিকিট আছে! এইখানে ট্রেতে রেখে দিলাম। ”

    বিছানায় উপুড় হয়ে সদ্য-লেখা প্যারাগ্রাফটা পড়ছিল তপতী। ধড়মড়িয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে ব্যালকনিতে ছুটে গেল তপতী। ততক্ষণে সাইকেলের ঘন্টি চলে গেছে অনেক দূরে। গেটের সামনের মাটিতে রয়ে গেছে শুধু চাকার দাগ। তাড়া, খুব তাড়া ছেলেটার। সারাক্ষণ ছুটছে। পাড়ার রামকৃষ্ণ এজেন্সিতে কাজ করে। ওদের বহরমপুরের টিকিট কেটে দিতে বলেছিল একটা। সেটাই দিয়ে গেল মনে হয়। তো টিকিটটা দিয়ে গেলি, একটু দাঁড়িয়ে হাতে হাতে টাকাটা নিয়ে যা, তা না। আবার তপতীকে টাকা দিতে ছুটতে হবে। ধুর! তেতো মুখে ঢিলে হয়ে যাওয়া চুলের গোড়ায় ক্লাচারটা আবার টাইট করে লাগাতে লাগাতে ফের খাটে এসে বসে তপতী। লেখার প্যাডটা আবার কোলে টেনে নেয়।

    “বিকেল হতে এখনও দেরি। তার উপর আজ হাওয়া নেই মোটে। রোদের তাত এখনও যেন জমাট বাধা। জাঁক দেওয়ার মত মাটির উপর চেপে বসে আছে। ছোট্ট কুঁড়ের মধ্যে দেওয়ালে ঠেস দিয়ে বসে ছিল বিজলি। ফোলা পা-টা সামনে ছড়ানো। এখনও নাড়াতে-চাড়াতে কষ্ট হচ্ছে। ক’দিন হয়ে গেল। গোড়ার দিকে ওই শূলের মত বেদনা আর নেই বটে। তবু উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই। মন্দিরতলার মোচ্ছবে পাতা তোলার কাজটা পেয়েছিল। বাইরের মাঠে তেরপল খাটিয়ে নরনারায়ণ সেবা শুরু হয়েছে। একদিন করেও ছিল কাজটা। অ্যাত্তটি খাবার নিয়ে বাড়িও এসেছিল। কতদিন পরে দুজনে পেট ভরে খেয়েছিল। লকডাউনের বাজারে তাই বা জোটে কই! কিন্তু ওই যে! পোড়ার কপাল! পরের দিনই তো সকালে বাহ্যি সারতে গিয়ে পাটা উল্টে গেল। হাঁকার পেড়ে পেড়ে মেয়েটাকে ডাকে, ঘুমভাঙ্গা চোখে সে কোনমতে ঠাহর করে ঝোপের কাছে আসে, তবে তার উপর ভর দিয়ে ঘরে ফেরে। তারপর তো দেখতে দেখতে ফুলে ঢোল। উঠতেই পারে না, তার আর কাজে যাওয়া! সেই থেকেই দুজনের পেটেই কিল! একগাল করে মুড়ি আর জল জুটছিল খালি! সেও কাল দুপুরে শেষ।

    বিজলিবালা মাহাত। আর পুষ্পবালা। মা আর মেয়ে। "

    এই অবধিই লেখা হয়েছিল তখন। মনটা খুঁত খুঁত করছিলই। আবার পড়তে বিরক্ত লাগল। লেখার প্যাডের থেকে কাগজটা টেনে ছিঁড়ে ফেলল। গোল্লা পাকিয়ে সোজা ঘরের উল্টোদিকের কোণে। হচ্ছে না। কিছুতেই ঠিক সুরটা লাগছে না। একদম প্লাস্টিক প্লাস্টিক লাগছে। ভাষা, ভাষাটাই যত নষ্টের গোড়া। এই কলকাত্তাই শুদ্ধ বংলায় কি আর বিজলিবালাকে ফুটিয়ে তোলা যায়? না, ফোটান যায় তার রুক্ষ্ম যন্ত্রণা? রাঢ়দেশের মেয়ের কথা লেখার জন্য পুরুইল্যার বুলি লাগে। সে বচন হায় মুর্শিদাবাদের মেয়ের কলমে ফোটে না! অল্প-স্বপ্ল বোঝে এই না কত! ক’মাস সেখানে ছিল বলেই অবশ্য।

    ***
    বহরমপুরের দত্তবাড়ি। সে বাড়ির হাতায় আটকে আছে নবাবী সময়। লোকগুলোকে ঘিরে আছে মেথুশীলা আচার-বিচার। ঘোর রক্ষণশীল। প্রাচীনত্বেই তাদের গর্ব। শুধু ব্যতিক্রম তপতী। তার মনে কখন যেন বাড়ির নিয়মরীতি গভীর লজ্জা হয়ে এঁটে বসেছে। পারিবারিক ঐতিহ্যকে মনে হয় অসংস্কৃত, মেয়েমহলের কথাকে মনে হয় অশালীন। এরকম ভাবনার ফলটা এক একের জনের ক্ষেত্রে এক এক রকম। তপতী নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে। শামুকের খোলে ঢুকে গেছে। পরিজনকে দূরে ঠেলে রাখে, কিছুতেই তাদের সঙ্গে সুর মেলাতে পারে না। বাড়ির আনাচে কানাচে মান্ধাতাবুড়োর খলখল হাসি শোনে। অন্য লোকের কথা বাদ-ই দাও, নিজের মায়ের একটাও কথা মানতে পারে না। অথচ বিদ্রোহটুকু মনেই ফেনায়। বাইরে ছাপ পড়ে না। বড়দের মুখে মুখে কথা বলতে নেই। বাড়ির শিক্ষা। শুধু মনের যোগটুকু কেটে যায়। বাইরের বন্ধুত্বের বাড়ানো হাত সে দেখেও দেখে না। সবসময় আতঙ্কে থাকে। এই বুঝি মান্ধাতার গোপন অধিষ্ঠান বাইরের লোক জেনে ফেলল। সবাই যদি হাসাহাসি করে! সেই চাপে হারায় সহজ কৈশোর। যৌবনের শুরুও। নিঃসঙ্গ, নির্বান্ধব। তপতীর কলকাতায় এম এ পড়তে আসা সহজ ছিল না মোটেই। তবে গ্রহনক্ষত্র সহায়! বিয়ে দিলে কন্যার নিশ্চিত বৈধব্যযোগ। অতএব নস্যাৎ হওয়াই যে আবেদনের একমাত্র ভবিতব্য, তাতেও নিমরাজি হল অভিভাবকগণ। কাকুতি মিনতি, কান্নাকাটি হল অনুঘটক। জ্যোতিষ-শাস্ত্রের কৃপায় তপতী এম এ’টা উতরাল।

    “কিন্তু আবার পড়া কিসের? বাড়িতে মা-ঠাকুমার কাছে থাকো কটা দিন, আর কদিনই বা এ বাড়ির মেয়াদ।” এই স্পষ্ট নির্দেশটাও এড়িয়ে যেতে পেরেছিল তপতী। পড়া ছাড়ে নি। পরে স্কলারশিপ যখন পেতে শুরু করল, তখন তো বিশাল বাঁচোয়া। এরপর একটা চাকরী পেতে হবে। পড়ানোর শখ ওর অনেক দিনের। আর নিজের মত একা থাকার। ও বাড়িতে আর পাকাপাকিভাবে ফিরে যাবে না।

    এদিকে ভৃগু-মহারাজের আশীর্বাদের ছায়া সরে গেছে ততদিনে। বাড়িতে কথা শুরু হয়েছে। “জিয়াগঞ্জের মথুরাবাবু এসেছিলেন সেদিন গদিতে। ওঁর ভাইপোর জন্য মেয়ে খুঁজছেন। ছেলেটাকে দেখেছ তোমরা – সেবার রাধামাধবের পুজোয় এসেছিল, মনে আছে? কত বড় বংশের ছেলে, আর খুব উদ্যমী। ওর সঙ্গেই তো আমাদের নতুন ব্যবসা শুরু করার কথা হচ্ছে ... ” – শুনে কেঁপে ওঠে তপতী। এই ছেলেকে দেখেছে ও। এখন মনে করতে শুধু যোগাযোগের মধুসূদনবাবুকে মনে পড়ল। কলকাতা থেকে বাড়ি ফেরা কমিয়ে দেয় তপতী। পড়ার চাপের অজুহাত দেয়। শুরু হয় ফোনে নিয়মিত মা’র কান্না। “এরপর চেহারা খারাপ হয়ে যাবে, আর কেউ বিয়ে করবে না।” খাঁচায় পড়া ইঁদুরের মত নিজের মধ্যে ছটফটায় তপতী। এই বিয়ের ভয়েই ও বাড়ি ফিরবে না। দত্তবাড়িতে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া মানে ব্যবসার চাল। কোন ঘরে বিয়ে দিলে ব্যবসার কি সুবিধা হবে। মেয়েদের ভালমন্দ, ইচ্ছে-অনিচ্ছে সেখানে তুচ্ছ। বিয়ে করতে তপতীর অনিচ্ছে নেই। কিন্তু দাবার বোড়ে হয়ে ও বিয়ে করবে না! বাড়ি যাওয়া প্রায় বন্ধই করে দিল। এর মধ্যে একদিন বাড়িতে ফোনে সে জানাল, রিসার্চের কাজে পুরুলিয়া যেতে হবে। ব্যস, পরের দিন স্বয়ং মা এসে হাজির। সঙ্গে শক্ত-মুখের দাদা।

    “মেয়েছেলে একা একা বাড়ির বাইরে অচেনা অজানা জায়গায় রাত কাটাবে?!” মায়ের এক কথা। আর সেই সঙ্গে দেওয়ালে মাথা ঠোকা। আর চিৎকার, “এই দন্ডে বাড়ি ফিরে চল। নাহলে আমি রক্তগঙ্গা বইয়ে দেব। “

    পিজির অন্য কে শুনে ফেলবে তাই ভেবে লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছিল তপতীর। ছি ছি! অন্য সবার বাড়ির লোক কত মার্জিত, শোভন! শুধু ওরই কপাল খারাপ! কি করে যে সামলেছিল সেদিন মা-দাদাকে, বাড়ি ফেরত পাঠিয়েছিল সেটা একা তপতীই জানে। মা ফোঁস ফোঁস করতে করতে ফিরে গিয়েছিলেন, “ বড় বাড় বেড়েছে তোমার! বাবার কানে উঠলে কি হয় দেখো !” সেই শুনেই আরও জেদ চাপল তপতীর। সেদিন রাতের ট্রেনেই পুরুলিয়া রওনা দিয়েছিল তপতী। প্রথম বিদ্রোহ। কি করে যে পেরেছিল! তারপর এত দিন কেটে গেল! সম্পর্কটা আবার জোড়া লেগেছে বটে, তবে চিরটুকু এখনও বেশ স্পষ্ট।

    আচ্ছা, বিজলিবালাকে দেখলে মা কি বলত? বেবুশ্যে, বাজারের মেয়ে? শব্দগুলো উচ্চারণের সময় ঘেন্নায় মুখটা কতখানি বেঁকে যেত? তার ঝুপড়িতে মেয়ে পা রেখেছে শুনলে? গঙ্গায় কটা ডুব দেওয়া নির্দিষ্ট হত তার জন্যে? বিজলিবালার মুখটা মনে পড়ে যায় তপতীর। আবার নতুন করে বিজলিবালার গল্প লিখতে শুরু করে।

    ***

    “ শরতকে চাঁদ হেরি মগন চকোর সখি
    মগন চকোর
    পিয়া নাহি গৃহ মোর রে উমোরিয়া থোর
    কমলে গুঞ্জরে ভৌরা মধু রসে ভোর, সখি
    দিয়ে পবন ঝিকর রে শিহরে অঙ্গ মোর
    ফুল বিধে হিয়া মোর মদন কঠোর সখি।
    মদন কঠোর।

    গান গেয়েই চলেছে। সঙ্গে মঞ্চ জুড়ে ঘুরে ঘুরে নাচ। নাচনি নাচের আসর। ঝমঝমিয়ে বাজছে মাদল, করতাল, হারমোনিয়াম, বাঁশি। পরনের ঘাঘরা নাচের দমকে দুলে দুলে উঠছে, চুমকির থেকে ছিটকে ছিটকে উঠছে আলো, সেই আলোয় চোখে পড়ছে ঘাম-চিকচিকে টানটান কোমর। নাচছে বিজলিবালা। ছাতাপরবের মেলায়। এখনও হাওসী মঞ্চে ওঠে নি। সে উঠলে গান বদলে যাবে। কড়া রসের গান চালু হবে।

    “আড় নয়নে ভালিস না ধন
    মন মানে না কাঁচা যৌবন
    আড় নয়নে ভাললে আমার উধকে উঠে মন
    তোমার রূপে পাগল হয়ে দিবা নিশি ঝুরে মন

    মেলাতলার জোর আলোর খানিকটা আভাস চোখে পড়ে বিজলিবালার ঘরের দাওয়া থেকেও। সেই দিকে তাকিয়ে মন উচাটন করে বিজলির। পুরোন কথা মনে পড়ে। সেজেগুজে মঞ্চে ওঠা। একবার নাচতে লাগলে বাকী জগত ভুলে যাওয়া। সেই লোহার বাসরেও ছিদ্দির ছিল গো! হারান মাঝির সঙ্গে প্রথম আলাপ ওই নাচের আসরেই। ওর স্যাঙ্গাতরা এসে পিন দিয়ে টাকা লাগিয়ে দিচ্ছিল টাইট ব্লাউজে। সেই ছুতোয় বুক ছুঁয়ে যাওয়া। হারান শুধু দূরে দাঁড়িয়ে দেখে। ”

    আবার কলম থেমে যায় তপতীর। এসব ঘটনা তো অনেক পরে শোনা। বিজলিবালার টুকরো টুকরো কথা। শুনে শুনে ছবি সম্পূর্ণ করা। হারানকে বেঁচে থাকতে দেখে নি তপতী। হারান মারা যাওয়ার পরে ওর ঝুপড়িতে পা রাখে। বিজলির সঙ্গে প্রথম দেখা। ততদিনে বিজলির নামে ঢি ঢি পড়ে গেছে সে-দিগরে।

    “তুই হলি নাচনী, রসিকের পয়সা-দিয়ে কেনা ধন। তখন তো তোর নাক দিয়ে ঝরঝরিয়ে সিকনি গড়ায় রে। সেখান থেকে তোকে “ছুটুমুটু নাচনিটি, পিঠ ভত্তি চুইল রে” বানাল কে? সেই তোর এত সাহস, তুই রসিককে অমান্য করিস?” – গ্রামে ঝড় ওঠে।

    অমান্য করার কথা স্বপ্নেও ভেবে উঠতে পারেনি বিজলি। মা বাপের কথা মনেও পড়ে না বিজলির। কোন ছোটবেলা থেকেই তো রসিকের কাছে। বুড়া রসিক, বুকের, কানের লোমগুলানও সাদা। মুখে পান-বিড়ি আর ভকভকানি দুর্গন্ধ, বলে নাকি মাড়ির অসুখ। তাও আর রস কমে নাই। লালাভরা মুখের চুমায় ঘেন্না করে, তবু তাকেই বিজলি সর্বস্ব বলে জানত। জীবন মানেই রসিক। রসিক বিনে আন্ধার দেখি। হারান যেন এল হড়পা বানের মত। আগল ছিঁড়ে। বাঁধন উপড়ে। রসিক ভেসে গেল সে বানের জলে! বিজলিকে হারান কেশবতী নাচনির গল্প বলে। অত যে বিখ্যাত রসিক বাউরীবন্ধু মাহাত, তাকে ছেড়ে, তার দলকে ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিল না কেশবতী, তবে? বার বার শুনে শুনে মনে বল আসে। তারপর একদিন দুজন মিলে বাসে চেপে কাশীপুর টাউন। পিছনে পড়ে রইল রসিকের পুঁজি হারানোর হাহাকার, আঙ্গুল মটকানি, অভিশাপ।

    পালালে কি হবে, সুখ সকলের ভাগ্যে সয় না। ছমাসের মধ্যেই হারান মরল। নাচনিকে নিয়ে পালিয়ে আসা ঘর-ভাঙ্গানি মরদ। তাকে পোড়াতে যাওয়ারও লোক জোটে না। দাহ করার ব্যবস্থা করছিল ক্লাবের ছেলেরা। ওরাই বলাবলি করছিল, ‘মেইয়াছেল্যাটার কাছে একটা মাইনষও নাই গ’। তপতী তখন ওখানেই মাটি কামড়ে পড়ে আছে। ফিল্ডওয়ার্ক চলছে। কথাটা কানে ওঠায় হারান-বিজলির ঝুপড়িতে গিয়েছিল তপতী। আর সেখানে এক আশ্চর্য দৃশ্য দেখেছিল। একটি সম্পুর্ণ নিঃস্ব ঘরের দাওয়ার বাঁশে ঠেসান দিয়ে বিজলি উদাস হয়ে বসে আছে। হনু-উঁচু মুখ একটু তেরচা করে উপর দিকে তোলা। তীক্ষ্ণ চোয়াল যেন হাওয়ায় গিঁথে আছে। উত্তর-না-মেলা প্রশ্নপত্রের মত। অথচ চোখ জোড়া আশ্চর্য নরম। বিন্দু বিন্দু জল গড়িয়ে পড়ছে। চোখের কোল উপছে কানের পাশ দিয়ে। শুকনো ঠোঁট বিড়বিড় করছে। কাছে গিয়ে শুনেছিল, ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায় অস্ফুটে গাইছে , “যাওয়া আসা ভবের খেলা, আড়াই দিনের তরে মেলা হে”। বার বার করে, এই কটাই কথা। ছবিটা মাথায় গেঁথে গিয়েছিল।

    ***

    “হারান চলে যাওয়ার পর বিজলি টের পেল পেটের সন্তানের কথা। ততদিনে সে ফিরে এসেছে রসিকের কাছে। রসিকও জানল সময়ে। পেট খসাতে হবে। কিন্তু বিজলি নারাজ। আগে যখন পেটে বাচ্চা এসেছে তখন এককথায় বিজলি রাজি হয়েছে। কিন্তু এ যে হারানের স্মৃতি। একে বিজলি হারাতে পারবে না। তবে? বাচ্চা পেটে নিয়ে রাতভ’র নাচবে কেমন করে? অগত্যা আবার পথে নামা। পরণের কাপড় ছাড়া হাতে কিছু নেই! অনেক কাঁদা-কাটা করেও রেশন কার্ডখানা হাতে পেল না বিজলি। রসিকের টাকার শোধ করতে হবে তো! লাইনে দাঁড়ানো ছাড়া আর কিই বা উপায়। অগত্যা বাচ্চা বিয়োনর পরে, একটু শরীরটাকে সামলে নিয়ে সে পথেই হাঁটা। ”

    আর লিখতে পারে না তপতী। মনটা ভার হয়ে যায়। ফিল্ডওয়ার্ক শেষ হওয়ার পরেও বেশ অনেকবার পুরুলিয়া গেছে তপতী। টুকরোটাকরা কাজ নিয়ে। তখনই দু-তিন বার বিজলির সঙ্গে দেখা হয়েছে। পড়ন্তবেলার রোদ্দুর মাথায় নিয়ে বিজলি এসেছে। টুকটাক কথা বলেছে। তারপর চুপ করে বসে থেকেছে। একাকীত্বের চাদর কার্তিকের হিমের মত হালকা আগলে রেখেছে দুজনকে। তারপর একসময় উঠে চলে গেছে। কেন আসত বিজলি তার কাছে? আগে কখনও ভাবে নি তপতী। কেন?

    ভাবতে ভাবতে আনমনে ঘরের উপর চোখ বোলায় তপতী। খাটের মাথায় টেবিল, তার ওপাশে জানলা, জানলায় দোলান শখের পর্দা - যদিও ধুলোয় মলিন, জং-পড়া কমপ্ল্যানের কৌটোয় নেতানো নাইন-ও-ক্লক গাছ। চেনা দুঃখ, চেনা সুখ। আদরের ঘর। নিজের ঘর। আর থাকবে না যদিও।

    পিজিটা কালই ছেড়ে দিচ্ছে তপতী। আর টানতে পারছে না। সাত মাস কাজ নেই। কলেজ টলেজ না খুললে আর কন্ট্রাক্টে লোক নেওয়া হবে না। অগত্যা। বহরমপুরেই ফিরে যেতে হবে। কালই ফোন করে জানিয়েছে। বাড়ির সবাই খুব খুশি। তারপর কি হবে আর জানা নেই তপতীর। শুধু জানে পকেট-ভরা না হলে নিজের শর্ত মত বাঁচা যায় না। আর এও জানে ও শুধু পালাতে পারে, বাড়িতে বসে বাবার কথার উপর ‘না’ বলার হিম্মত ওর এখনও হয় নি, বোধহয় এ জন্মেও হবে না। অতএব হে স্বাধীনতা, বিদায়। প্র্যাকটিক্যাল সিদ্ধান্ত। তবু একটা গ্লানিবোধ শরীরের মধ্যে গুলিয়ে উঠছে সেই থেকে। যে বাড়িকে মনে মনে ত্যাগ করেছে কবেই, বিপদে পড়তেই সুরসুর করে ল্যাজ গুটিয়ে সেই ‘বাড়ি’তেই পালাচ্ছে? শুধু শরীরে বেঁচে থাকার জন্য? এইটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে খুব। তবু না হলে কি-ই বা করত? এই সব ভাবনা নিয়েই সকাল থেকে জিনিসপত্র গোছাচ্ছিল তপতী।

    তারই মাঝে বসন্তের ফোনটা এল। পুরুলিয়া থেকে। একথা-ওকথা বলার পর বলল,
    - জানো দিদি বিজলি মারা গেছে। মা মেয়ে দুজনে বিষ খেয়েছিল।
    - সে কি! কেন?
    - লকডাউনে তো আর বাজারে আসতে পারত না। আর এলেই বা খদ্দের আসবে কোথা থেকে? যেটুকু পয়সা পেত, তাও বন্ধ হয়ে গেল যে। আমরা ক্লাবের থেকে দু এক বার টাকা-পয়সা দিয়েছি, কিন্তু সেও আর কতটুকু। আমাদেরই বা কতটুকু সাধ্য বল, সেও তো তোমাদের থেকে চেয়ে চিন্তে দেওয়া। এই তো সেদিন খবর পাঠাল, পা ভেঙ্গেছে। হাতে একটাও পয়সা ছিল না। আধ বস্তা মুড়ি কিনে পাঠালাম খালি, কি আর করব!
    - হুম, অস্ফুট একটা আওয়াজ করে তপতী।

    মনটা আরও বিষন্ন হয়ে যায়। আগে কয়েকবার সেও ওদের ক্লাবে কিছু কিছু টাকা দিয়েছিল। বেশি সামর্থ্য নেই। ওই কন্ট্রাক্টের ক্লাস করিয়ে, খাতা দেখে হাতে যেটুকু পাওয়া যায় তার থেকেই। একটা পার্মানেন্ট চাকরী তো জোগাড় হল না। অন্যকে দোষ দেয় না, নিজের না পারাটাই দেখে তপতী – মুখচোরা, ভাল করে কথা বলতে না পারা, আনইম্প্রেসিভ মেয়েকে কেই বা সেধে চাকরী দেবে! টিউশনি পড়িয়ে আর ওই যে বাবা বলে না, ‘ফুরন খেটে’, তাতে যা হয়। লকডাউনে আর কন্ট্রাক্ট রিনিউ হয় নি। টিউশনিও সব বন্ধ। ব্যাঙের আধুলি যা জমেছিল সেও খতম – এবার আর সে কিছুই দিতে পারেনি। একটা বিপন্ন অপরাধবোধ ঘিরে ধরে তপতীকে। যদি ও কটা টাকাও দিতে পারত, তাহলে কি বিজলি আরও কিছুদিন বাঁচত? ইস বিজলিরও যদি একটা বাপের ‘বাড়ি’ থাকত! আবার একটু ইর্ষাও হয়, কি সাহস মেয়েটার – মরে যেতে পারলি? তাও আবার একা না, মেয়েটাকে শুদ্ধ!

    এরই মধ্যে বসন্তের কথাগুলো কানে এসে ঢোকে।

    - শুনলাম যে গোলোকপতিকে নাকি খবর দিয়েছিল, গোলকপতি কে জান কি? সে এক উঠতি রসিক। মেয়েটাকে নাকি বিজলি বেচে দিতে চাইছিল। কি জানি, হয়ত ভেবেছিল মেয়েটা যদি অন্তত এক বেলাও খেতে পায়!
    - সেকি! মেয়েটা কত বড় রে! আট বছরও তো হয় নি বোধহয়।
    - এদিকে তো এমনই হয় দিদি। জানোই তো তুমি।
    - হুম, তা গোলোকপতি না কে বললি সে কিনে নিল?
    - না, কেনে নি। শুনলাম যে সে নাকি প্রথমে রাজি হয়েছিল, পরে অন্য একটা বাচ্চাকে কিনে নিয়েছে। তখন বিজলিকে ফুটিয়ে দিয়েছে। যে মেয়েটাকে কিনেছে, তার নাকি ধলা রং, নাচতে গাইতেও পারে একটু আধটু। এ এলাকার মেয়েই না নাকি! ক্যানিং নাকি কোথা থেকে নাকি এনেছে! এখন তো জানোই, চারদিকের যা অবস্থা, কত যে ছেলে মেয়েরা পাচার হচ্ছে!

    কথা বলা শেষ হয় একসময় । কথাগুলো কিন্তু সরে যায় না। জলভরা মেঘের মত ভাসে বাতাসে। কদিন আগেই একটা ওয়েবিনারে শুনেছিল তপতী, লকডাউনের ক’মাসে মানে মার্চ ২৪ থেকে জুনের শেষ অবধি এ রাজ্যে পাচার হয়েছে ৯৩৩ টি বাচ্চা, যার মধ্যে ৮৩৭ জনই মেয়ে। বাবা-মায়েরাই বেচে দিচ্ছে। শুনে থেকে অবধি কষ্ট হচ্ছিল। এবার গুলিয়ে যায়। কোনটা বেশি খারাপ – বিক্রি হয়ে যাওয়া? নাকি সেই সুযোগটুকুও না পেয়ে বিষ খাওয়া? যে বাচ্চাটাকে গোলোকপতি কিনে আনল, তার কাছে? বিজলিবালার কাছে?

    কোনটা বেশি ভাল – মরে বাঁচা নাকি বেঁচে মরা? তপতী নিজেই কি জানে ছাই!
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • গপ্পো | ০১ নভেম্বর ২০২০ | ৩১৩৯ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    চেকভ - Aditi Dasgupta
    আরও পড়ুন
    ইঁদুর  - Anirban M
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | ০২ নভেম্বর ২০২০ ১২:৪০99559
  • এই তপতীদের চিনি। বিজলীবালাদের ঠিক না, তবে কাছাকাছি অবস্থানের লোকেদেরও চিনি সামান্য।  বিহারের ভোটে অন্তত এদের নিয়ে কথা টথা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের ভোট তো সামনের বছরই, সেখানে বোধয় আর এসব কেউ বলবে টলবে না। 


    অনেকের কথা মনে এলো পরপর।  থ্যাঙ্কিউ স্বাতী। 

  • Ranjan Roy | ০২ নভেম্বর ২০২০ ১৫:১৩99563
  • "জং পরা কমপ্লেক্স কাটোয়ার নেতানো নাইন ও ক্লক গাছ।"


    এরকম একটা লাইন---!

  • Prativa Sarker | ০৩ নভেম্বর ২০২০ ১১:৫২99589
  • এইরকমই হয়, হচ্ছে। মনে করিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ স্বাতী। 

  • Yashodhara Raychaudhuri | ০৩ নভেম্বর ২০২০ ১২:০২99590
  • লেখার স্টাইলটা দুর্দান্ত লেগেছে। 


    ক্রোনোলজিটা। কিছুটা লিখছে আর থেমে যাচ্ছে লেখিকা। বেশ ভাল লাগা। 

  • স্বাতী রায় | ০৩ নভেম্বর ২০২০ ১২:৪১99592
  • গত দুদিন ধরে চেষ্টা করেও লেখাটা কিছুতেই এডিট করতে পারি নি। ফলে বাধ্য হয়েই কমেন্টে রেফারেন্স জুড়ে দিচ্ছি।

    বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সুভাষ চন্দ্র রায়ের গবেষণাপত্র, “পুরুলিয়ার ঝুমুরঃ উৎস বিকাশ ও পরিণতি” (http://hdl.handle.net/10603/73214) গবেষণাপত্র থেকে কবি ভবপ্রীতার লেখা "শরতকে চাঁদ হেরি মগন চকোর সখি .... মদন কঠোর" এবং  "ছূটুমুটু নাচনিটি, পিঠ ভত্তি চুইল রে"  পদগুলি নেওয়া।

    আড় নয়নে ভালিস না ধন / মন মানে না কাঁচা যৌবন” – গানটি সংগ্রহ করা সংগ্রাম মাহাত’র “পুরুলিয়া জেলার লোক উৎসবে নারী সংস্কৃতির পুনর্বীক্ষণ”  (http://hdl.handle.net/10603/275747 ) গবেষণাপত্র থেকে নেওয়া।

    “আসা যাওয়া ভবের খেলা আড়াই দিনের তরে মেলা হে” পদটি শলাবত মাহাতর লেখা।

    আরও একটি ভারি সুন্দর গবেষণাপত্রের অংশ ইন্টারনেটের থেকে পেয়েছিলাম যাতে বিভিন্ন ঝুমুর গায়ক গায়িকার জীবনের স্কেচ দেওয়া ছিল। কিন্তু সেটা কার লেখা আর পাচ্ছি না। লজ্জিত। কেশবতীর ঘটনা সেখান থেকেই পড়া। 

  • সম্বিৎ | ০৩ নভেম্বর ২০২০ ১৩:২১99593
  • লেখাটার বাঁধুনি খুব ভাল, কিন্তু শেষে মনে হল ইস্যুটা আনবি বলে গল্পটা তৈরি করেছিস। 

  • স্বাতী রায় | ০৩ নভেম্বর ২০২০ ১৭:৫৭99597
  • সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। 


    @সম্বিৎ শেষটা আরও ভাবব। 

  • শিবাংশু | ০৬ নভেম্বর ২০২০ ১০:৪৬99681
  • বিষয়, ভাষা, আঙ্গিক, আখ্যান সব কিছুর  মধ্য দিয়ে একটা ছন্দ টের পাওয়া যায়। শেষ প্যারাটার কথাগুলো গোটা ন্যারেটিভের মধ্যে ছড়িয়ে রয়েছে। আলাদা  করে দেওয়া বোধ হয় প্রয়োজন ছিলোনা। 


    ভালো লাগলো, 

  • Dibyendu Singha Roy | ০৭ নভেম্বর ২০২০ ১৬:২১99720
  • গল্পের ভিতর গল্প। 


    এ গল্পের তো শেষ নেই। এভাবেই নানা বিজলী নানা তপতীর মাঝে ফিরে ফিরে আসে। গঠনটা খুবই ভালো লাগল

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন