এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • স্বপ্নপ্রয়াণ: ঘুমে-আধোঘুমে

    রঞ্জন রায়
    আলোচনা | বিবিধ | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০০৮ | ৫৮৯ বার পঠিত
  • এই ভ্যাপ্সা গরমে বুকে কফ জমে গিয়ে চিত্তির! শ্বাস নিতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। পুরনো ব্রংকাইটিসের ধাত। শেষে দুগ্গা বলে প্রেডনিসোলোন নামের স্টেরয়েড দুই গুলি আর একটা বাজারচলতি ব্রংকোডায়ালেটর কফ সিরাপ দুই চুমুক খেয়ে গোঁফ মুছে টিভি চালিয়ে পিঠে বালিশ আর হাতে বই নিয়ে একটু আরামে শুয়েছি কি কখন চোখ লেগে গেছে!

    স্বপ্ন দেখলাম যে আমি একটা মহান আর্ট ফিলিম বানিয়েছি। মাত্র পাঁচ মিনিটের। তাতে নাচা-গানা নেই। নায়ক-নায়িকা নেই। ঢিসুম- ঢিসুম নেই। কোন আইটেম সঙ্‌ নেই। কিন্তু সাউন্ড ট্র্যাক আছে। আর সেই জিনিসটা টালিগ্‌ঞ্জের ইন্দ্রপুরী স্টুডিওতে একটা ছোট প্রোজেকশন রুমে দেখানো হচ্ছে। ফিলিম শুরু হতেই দেখি সার্টিফিকেটে লেখা আছে যে ওটা ডিপ্লোমা ফিলিম, কোন আর্ট ফিলিম নয়। বিষম খেলাম। তারপর দেখি ফিলিমের ল্যাংগোয়েজ হিন্দি। মাইরি! আমি ফিলিমের লাইনে এয়েচি, তাও হিন্দি ফিলিমের ন্যাজ ধরে? ""এ যে শালা জ্যাকপট!'' কিন্তু, নামটা "" বাজার মেঁ বাজা'', আবার ইংরেজি সাব টাইটেলে ""ড্রামস্‌ অ্যাট বাজার''। পাশ থেকে কেউ ফিস্‌ফিস্‌ করলো--- বুঝলেন, বাজার নামে সাগর সরহদীর একটা সিনিমা আগেই হয়ে গেছে। মন্ডী নামে বেনেগাল অল্‌রেডি বানিয়েছেন। কাজেই "" ড্রামস্‌ অ্যাট বাজার'', পাবলিক খুব খাবে।
    --- ধেত্তেরি! শুরু করুন তো!
    শুরু হল। সে কি সিনেমা ? অ্যাকেবারে সারিডন।

    প্রথমে পর্দা জুড়ে একটা স্যাকরার নিক্তি, যেটা আস্তে আস্তে বাঘাযতীন বাজারের আলুওয়ালার দাঁড়িপাল্লা হয়ে গেল। সেই পাল্লা আস্তে আস্তে উঠছে আর নামছে, খানিকটে আদনান সামির "" মুঝ্‌কো ভি জরা লিফ্‌ট করা দে'' স্টাইলে। সাউন্ড ট্র্যাকে শোনা যাচ্ছে কিছু শব্দ, দাঁড়িপাল্লা ওঠানামার তালে তালে।

    ----বা--জা--র। সাপ্লাই, ডিমান্ড, নাফা-নুকসান, বা--জা---র! মোল-ভাও, গ্রাহক-খাতক, খরিদ-বিক্রি, বা--জা-র! নগদ- উধার, ডিস্কাউন্ট-প্রিমিয়াম, লেওয়ালিয়া-দিওয়ালিয়া, বাজার।
    একটা শট, রতনপুরের শনিবারের পশুবাজার। সারি সারি মোষ জাবর কাট্‌ছে আর পাগড়ি মাথায় ছাতিবগলে খরিদ্দাররা মোষের ল্যাজ তুলে দেখছে। পশুমালিক মোষের মুখ খুলিয়ে কটা দাঁত উঠেছে , দেখাচ্ছে। কাট।

    মেয়ে দেখতে আসা পাত্রপক্ষ মেয়ের চুল খুলে দেখছে, হাঁটিয়ে দেখছে। কাট।

    রায়পুরের বাবুলালগলির নগরবধূরা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে। বুড়ো এবং অল্পবয়েসি খদ্দের তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। একটি মেয়ে কায়দা করে বুকের আঁচল ফেলে দিল। কাট।

    ক্যামেরা বিলাসপুরের শনিচরি বাজারের মাঝখানে ঘুরছে। বাসনপত্রের দোকান, মুদি দোকান, মুড়িতেলেভাজার দোকান ছাড়িয়ে রাস্তায় কোদাল-ঝুড়ি-গাঁইতি নিয়ে বসে থাকা একদল মেয়েপুরুষের মুখের ওপর ক্লোজ-আপ। ওরা রোজিতে যেকোন কাজের জন্যে মজুর খাটতে যাবে। সাউন্ড ট্র্যাকে বাঁশিতে রবীন্দ্রসংগীতের সুর ,--- আমারে কে নিবি ভাই, বিকাতে চাই আপনারে। ফেড আউট। গব্বযন্তণা শেষ। ঘুম ভেঙে গেল।

    দেখি বুকের ওপর আদ্দেক পড়া বইটি নিয়ে ঘুমুচ্ছিলাম। বইটি Total Capitalism: Market Politics, Market State . লন্ডন নিবাসী লেখক কলিন লেজ নিজের পাড়ার লোক্যাল অথরিটির একটি চিঠি পেয়েছেন। আর পেয়ে ব্যোমকে গেছেন। কারণ ঐ চিঠিতে তাঁকে সম্বোধন করা হয়েছে ""কাস্টমার'' বলে। কি জ্বালা! উনি তো লোক্যাল কাউন্সিল থেকে কিছু কেনেন না। উল্টে লোক্যাল কাউন্সিলের প্রতিনিধিদের উনি ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন। শুধু তাই নয়, এনাদের দেয়া ট্যাক্সো থেকেই কাউন্সিলের খরচাপাতি চলে। তবে উনি নির্বাচক নাগরিক থেকে ""খদ্দের'' অভিধায় ভূষিত হওয়ার মত এমন কি মহা কাজ করেছেন? ভাবতে গিয়ে বুঝলেন যে সার্কুলার পাঠানো আমলার চোখে লোক্যাল কাউন্সিল ও একরকম কর্পোরেশনই বটে যে কিছু বিক্কিরি করে, হয়তো "" স্যাটিস্‌ফ্যাকশন'' বেচে। অবাক হওয়ার কিছু নেই। সমসাময়িক পুঁজিবাদের দর্শনে সবকিছুই মুনাফাকামানো সংগঠন হওয়া উচিৎ। সবকিছু। এমনকি আগে যা সরকারের কাজকম্মো বলা হত এমন অনেককিছু। বলা হয় যে ভূমন্ডলীকৃত দুনিয়ায় বিভিন্ন দেশের মধ্যে প্রতিযোগিতা দক্ষতা বাড়াবে। পাব্লিক সার্ভিস নিয়েও মার্কেট প্লেয়ারদের মধ্যে এই প্রতিযোগিতা সার্ভিসের কোয়ালিটি বাড়াবে। কাজেই যে আমলাটি সার্বভৌম নাগরিকদের কাস্টমার বলে ভাবতে শিখেছেন, তিনি আসলে ঐ দর্শনের ভাবনার শরিক হয়েছেন।

    এইবার লেখকের মাথায় টিউবলাইট জ্বলে ওঠে। গোটা সমাজের নাগরিকদের গ্রাহক হিসেবে ভাবা-- আজকের সর্বাঙ্গীন পুঁজিবাদের দর্শন-- কোথায় যেন প্রথম বিশ্বমহাযুদ্ধের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে, কেন দিচ্ছে? হ্যাঁ, কারণ সেই প্রথম শোনা গেল--সর্বাঙ্গীন যুদ্ধ। লড়ছে দুটি সৈন্যবাহিনী নয়, লড়ছে দুটি সমাজ; যুযুধান দুই দেশের সমস্ত নাগরিক।
    তবে দুই পরিস্থিতির মধ্যে তফাৎ ও বেশ মজাদার।
    সর্বাঙ্গীণ যুদ্ধের পরিস্থিতিতে সব দেশেই সিটিজেনদের আর্থিক ও নাগরিক স্বাধীনতা, অবাধ মুক্ত বাজার, এমনকি জাতীয় সার্বভৌমত্ব সবকিছুই কমবেশি একধরণের মিলিটারি সোস্যালিজমের আওতায় চলে আসতে থাকে। ওদিকে সর্বাঙ্গীণ পুঁজিবাদ বা "টোটাল ক্যাপিটালিসম'' এ হয় ঠিক উল্টোটা। বাজার হয়ে ওঠে "প্রভু'। তার আওতায় শুধু জাতীয় সার্বভৌম্‌ত্ব ও নাগরিক অধিকারই নয়, সমগ্র ব্যক্তিগত ও সামজিক জীবনই বাজারের গোলাম হয়ে পড়ে। পাবলিক ও প্রাইভেট কাজকম্মের সীমারেখা ক্রমশ:ই ধূসর হয়ে পড়ে। আর ধীরে ধীরে সরকারের নাগরিক পরিষেবা গুলি, ধরুন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, গবেষণা , দূরসঞ্চার, প্রকাশনা, বিদেশি ঋ্‌ণ, জমি, জল , শিল্পকলা এবং নাগরিকদের জন্যে নীতিনির্ধারণ এসবই , ক্রমশ:বেশি বেশি করে সরকারী ক্যাবিনেটে নেমন্তন্ন করে নিয়ে আসা প্রাইভেট এক্স্‌পার্টদের হাতে ছেড়ে দেয়া হতে থাকে। এইভাবেই সমস্ত বিষয়গুলো দ্রুত ""এফিসিয়েন্সি''র নামে "" মার্কেট-ড্রিভেন-পলিসি''র অধীনে আনা হয়। ধীরে ধীরে রাষ্টের উন্নত সমাজ গড়ার চেষ্টায় নিবেদিত এই জনসেবামূলক কাজগুলো তাদের আদি চরিত্র হারিয়ে ফেলে বেশি মুনাফার সম্ভাবনাময় কিছু প্রাইভেট ইন্‌ভেস্ট্‌মেন্ট এর চেহারা নেয়। অধ্যাপক কলিন লেজ অক্সফোর্ড, সাসেক্স ও আরও কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতিশাস্ত্র পড়িয়েছেন। বর্তমানে কানাডার কুইনস্‌ ইউনিভার্সিটিতে এমেরিটাস প্রফেসর। উনি " দ্য সোশ্যালিস্ট রেজিস্টার' নামের প্রখ্যাত বার্ষিক প্রকাশনের যুগ্ম সম্পাদক ও বটেন। আর বর্তমানে বৃটেনের ন্যাশনাল হেল্‌থ সার্ভিসের প্রাইভেটাইজেশনের বিরুদ্ধে আপ্রাণ লড়ে যাচ্ছেন। কেন? ক্রমশ: প্রকাশ্য।

    সে নাহয় হল। কিন্তু এই ""নয়া দৌড়''এর জমানার রাজনীতির চেহারাটি কেমন হবে? ওঁর কথা হল এই নিও লিবারেলিজমের জমানায় পুঁজির ওপর আর লাগাম থাকবে না। ফলে একসময়ের অত্যন্ত শক্তিশালী সার্বভৌম রাষ্টের রাজনীতিও ক্রমশ: বাজারের স্বার্থের ওপর নির্ভরশীল হবে। আর তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো আগের চেয়ে আরও বেশি করে সুপার পাওয়ারের রাজনীতির অধীন হবে। আর সেটা নাকি গণতন্ত্রের পক্ষে খুব খারাপ হবে!
    ( দূর! দূর! সেই বাঁধাবুলি। এ আমি কোলকেতায় অনেক শুনিচি। বোরিং! বই বন্ধ করে টিভি খুললাম। নিউজিল্যান্ডের ছানাপোনাদের বিরুদ্ধে সৌরভ ১৪ রান করে আউট। চ্যানেল ঘোরাতেই দেখি কন্ডেলিজা রাইস দিল্লিতে প্লেন থেকে নামছেন। আমি ভাবতে লাগলাম কন্ডেলিজাকে কোথায় কোথায় কস্‌মেটিক সার্জারি করে নাওমি ক্যাম্পবেল বানানো যায়! ইস্‌, এইবয়সে
    এসব কি বিকৃতি! আবার বই খুল্লাম।)

    আচ্ছা, উনি যদি অন্যদের মত খালি আম্রিকাকে গালি দিয়ে সস্তায় বাজিমাৎ করতে চান তাহলে আর পড়বো না। চ্যারিটি বিগিনস্‌ অ্যাট্‌ হোম। নিজেদের কতা বলুন দেখি। কত বুকের পাটা? আর কতটা ভণ্ডামি? উনি কি আমার মনের কথা জানতে পেরে গেলেন! পরের পাতা ওল্টাতেই দেখি--- আমি নিজের দেশ বৃটেনকেই আমার অধ্যয়নের ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিয়েছি। এর কারণ, ম্যাগি থ্যাচার বাজারের মহারাণী বটেন। ওনার নেতৃত্বেই বিশ্বজুড়ে সোশ্যাল ডেমোক্রাসি ছেড়ে টোটাল ক্যাপিটালিজমের গলায় বরমালা পরিয়ে দেয়ার শাঁখে ফুঁ পড়েছিলো। আর আমার এম্পিরিক্যাল এভিডেন্সের জন্যে বেছে নিলাম দুটি খুব গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক সার্ভিস্‌,--- পাবলিক সার্ভিস টেলিভিশন আর পাবলিক হেল্‌থ সার্ভিস। কি ভাবে এই দুটো ফিল্ডে পলিসির বিবর্তন ক্রমশ: জনস্বার্থের সমগ্র ধারণা থেকে সরে এসে বিশ্ববাজারের চাপের কাছে নতিস্বীকারের ইঙ্গিত দিচ্ছে তা' আমি সবাইকে খুঁটিয়ে দেখাতে চাই।
    --- কেন চান, মশাই?
    --- কেন চাই? আমি চাই পুঁজিবাদকে যেখানে ওর কোন কল্যাণ্‌কামী ভূমিকা নেই সেখান থেকে তাড়িয়ে দিতে। আমি চাই ভবিষ্যতের সামাজিক সংগঠনের জন্যে একটি অ-পুঁজিবাদী রাস্তা খুঁজে বের করতে।
    এ:, হাতি-ঘোড়া গেল তল, ভেড়া বলে কত জল? উনি মুচকি হাসলেন। বুড়ো শুনতে পেল নাকি? খেয়েছে!
    -- আরে শোন,কল্যাণকামী রাষ্ট্রের সামাজিক সেবাগুলোকে ক্রমশ: পেরাইভেট করা এই টোটাল ক্যাপিটালিজম এর একদম খাস ফিচার, আর তোমার মত তথাকথিত প্রগতিশীল সবজান্তা-বোকচন্দররা প্রথমে কিন্তু-কিন্তু করে, তারপর মেনে নেয়। খেয়ালও করেনা যে জনসেবার পেরাইভেট করা শুরু হতেই একটি মারাত্মক ক্ষতিকর চক্র ঘুরতে শুরু করে।
    ---কি আটভাট বকছেন! মারাত্মক? কার জন্যে মারাত্মক? ঝেড়ে কাসুন তো।
    --- সে তুমি দিচ্ছ কোথায়? আমি মুখ খুল্লে দুটো পয়সা পাই। তুমি পাওনা, তবু তোমার মুখ বর্ষাকালের নর্দমার মত কলকল করেই চলেছে। বলা ছেড়ে এবার একটু শোনার অভ্যেস কর। হ্যাঁ, যা বলছিলাম। গণতন্ত্রের সফল হওয়ার দুটো ইম্পর্টান্ট শর্ত হল সামাজিক ঐক্যবোধ ও নাগরিকদের বেসিক সাম্য। সোশ্যাল সার্ভিসের প্রাইভেটাইজেশন বা তোমাদের রাষ্ট্রভাষায় ''নিজীকরণ'' হলেই এই দুটো কন্সেপ্টের বাঁশ হয়ে যায়। তোমরা ব্যপারটা খেয়ালও কর না, খালি বিজ্ঞের মত মাথা নেড়ে বল- ইট ডাজন্ট্‌ ম্যাটার হু প্রোভাইডস্‌ দ্য সার্ভিস, সো লং অ্যাজ্‌ ইট ইজ পেইড্‌ ফর আউট অফ ট্যাক্সেস্‌ , বা ঐ জাতীয়কিছু প্রোফাউন্ড নন্সেন্স্‌।
    ---আচ্ছা, এই সার্ভিস গুলোর নিজিকরণের মাধ্যমে বাজারিকরণ বা বাজারে রুপান্তরের ব্যাপারটা মানে প্রক্রিয়াটা একটু বুঝিয়ে বলবেন?
    --কেন, তুমি জেনে কি করবে?
    ---আগেভাগে সতর্ক হবো। মানে এগুলো তো আমাদের দেশে বেশিদিন শুরু হয় নি।
    --বটে! রেলে করে যাতায়াত কর? বেড়াতে যাও? খেয়াল করেছ যে ক্যাটারিং ব্যাপারটা অনেকদিন পেরাইভেট হয়ে গেছে?
    --বাজারের নিয়মে দাম বেড়েছে,বেশ! কিন্তু সার্ভিসের কোয়ালিটি?
    --- আমি কি বলব? ছোটবেলায় বাবার সংগে বেড়াতে গেলে বম্বে মেলে সক্কালবেলা ডাইনিংকার থেকে আসা টি-পট, মিল্ক পট,সুগার কিউব, আর টোস্ট । দুপুরে সরুচালের ভাত আর চিকেনকারি---মনে ছবি হয়ে আছে। এখন ডেলি প্যাসেঞ্জারি করি কি বেড়াতে যাই--- ঘরের থেকে টিফিন ডাব্বা ভরে নিই।
    বুড়ো গজ্‌গজ্‌ করতে থাকে।
    --- তোমার মত আতাক্যালানে সতর্ক হবে, লোককে সতর্ক করবে? আরে আগে নিজের প্যান্টের জিপ বন্ধ কর।
    আমি অপ্রস্তুত। বুড়ো একটু নরম হয়।
    ---শোন,কোন পাবলিক সার্ভিসের বাজারু হতে গেলে আগে গোটা তিনেক শর্তপুরণ আবশ্যক।
    ( শালা! সে তো কোন মেয়ে বাজারু হতে গেলেও লাগে,যেমন ''নথ উতারনা'' উৎসব। এতা আবাল কি নতুন কতা!)
    এক, এই পাবলিক সার্ভিসের অখন্ড রূপটিকে খন্ড খন্ড করে আলাদা আলাদা ডিস্ক্রিট সার্ভিস বানাও। আর তাতে আলাদা প্রাইস ট্যাগ্‌ লাগাও। তারপর ফেলো কড়ি মাখো তেল। দাঁড়াও, রেলের হেল্‌থ সার্ভিস এখনো পেরাইভেট হয় নি। ধর রেলের কর্মচারির অসুখ হল। সে তার কার্ড নিয়ে একটি ন্যুনতম ফি দিয়ে রেল হাসপাতালে নাম রেজিস্ট্রি করালো। তখন রেল হাসপাতালের দায়িত্ব তাকে ভাল করে সুস্থ করে ডিউটিতে ফিরিয়ে দেয়া। তারজন্যে যতকিছু চেক আপ হোক, ওষুধ লাগুক, এক্স -রে করতে হোক,সিটি স্ক্যান অপারেশন করতে হোক---সব মিলে একটাই সার্ভিস, হেল্‌থ কেয়ার। তাকে আলাদা করে আর কোন পে করতে হবে না। এই ব্যপারটাই পেরাইভেট হলে এটাকে অখন্ড হেল্‌থ কেয়ার প্যাকেজ না করে সব রকম টেস্ট, সব রকম স্পেশালিস্ট চেক আপ, সার্জারি সব কিছুর আলাদা প্রাইস লিস্ট। যে যেমন মালকড়ি দেবে সে তেমন সেবা পাবে। রাষ্ট্রের সোস্যাল সার্ভিসের দিনে রোগির কোন স্পেশালিস্টকে দেখাতে হবে, সার্জারি আদৌ দরকার কি না-- এসব সিদ্ধান্ত ডাক্তার নিত; পেরাইভেট হলে নেবে রোগির পরিবারের লোকজন। আলাদা আলাদা চেক আপের বা আলাদা আলাদা ডাক্তারের প্রাইস লিস্টের দিকে টুকুর টুকুর তাকাবে আর পকেটে হাত দিয়ে মাল্লু গুনবে।

    দুই, এমন করতে হবে যাতে লোকে কোন সার্ভিস নিজের গাঁটের কড়ি ফেলে কিনতে চাইবে। সেটা করতে গেলে প্রথমে রাষ্ট্র তার ''পরামর্শদাতা'' ( আসলে বাজারের দালাল) দের কথা শুনে নন-মার্কেট সেকটরের জন্যে বাজেট প্রভিসন কম করে ফান্ড টাইট করবে যাতে সরকারি সার্ভিসটির ( আরে তোমাদের সরকারি হাসপাতাল, ইডিয়ট!) কোয়ালিটি সত্যি সত্যি মার খায়। ফলে বাধ্য হয়ে তোমার মত পাতি পাব্লিক কোন বাজার-নির্ধারিত পেরাইভেট ক্লিনিক, পলিক্লিনিক,ড্রাগ স্টোরে লাইন লাগাবে।

    তিন, বিশেষ জনসেবাটিকে সফল বাজারু সার্ভিস করতে হলে তার কর্মচারিদের মনোভঙ্গী, ওয়ার্ক এথিকস্‌ সব পাল্টাতে হবে। আগে লোককে সুস্থ করার যে সংযুক্ত লক্ষ্য এবং নীতি নিয়ে এরা কাজ করত,এখন সেসব ভুলে শুধু এমপ্লয়ারের প্রফিট বাড়ানোর জন্যে কাজ করবে। তাতে কোন কম হলে পেছনে কিক্‌ খেয়ে বাড়ি যাবে। তাই কর্মচারিদের নীতি-ফীতি ভুলে প্রফিট-
    মাইন্ডেড করার জন্যে ঐ জব্‌ ইন্‌সিকিউরিটি বা পশচাদদেশে লাথির ভয়টা খুব জরুরি।বুঝলে না? তোমাদের বিলাসপুরের অ্যাপোলো হাসপাতালের বাওয়ালিটাই দেখ। অনেকদিন ধরেই লোকে কানাঘুসো করছিল যে এখানে মরলেও ডাক্তারদের রোগির আত্মীয়স্বজনদের তক্ষুণি জানাতে দেয়া হয় না। ওপরের নির্দেশে আই সি ইউ তে আরো একদিন রেখে ডেডবডিতে ইন্‌জেকশন দেয়া, অক্সিজেন দেয়া এসব করে মোটা বিল তুলে পরের দিন পুরো বিলটা আদায় করে তবে বডি হ্যান্ড ওভার কর হয়। কিন্তু অ্যাপোলোর সঙ্গে তকরার করবে? বেড়ালের গলায় কে ঘন্টা বাঁধবে? বেশ চলছিল।
    কাল হল বিলাসপুরের মেয়র অশোক পিঙ্গলের চিকিৎসায় ঐ ফর্মূলা অ্যাপাÔই করায়। গোপনকথাটি আর গোপন রইলো না। বিজেপি'র সরকার। ভাঙ্গচুর হল। কোর্ট কেস হল। হাইকোর্টের নির্দেশে হার্ট স্পেশালিস্ট ড: জয়রাম আইয়ারকে গ্রেফতার করা হল। অ্যাপোলো বিপদ বুঝে ওদের সেরা ডাক্তারকে গলাধাক্কা দিল। হাইকোর্ট হার্ট-স্পেশালিস্ট জয়রাম আইয়ারকে জামিন দিল না। তখন জয়রাম আইয়ার স্টেট্‌মেন্ট দিলেন অ্যাপোলো ম্যানেজমেন্ট মেয়র অশোক পিঙ্গলে মারা যাওয়ার একদিন পরে ডেথ সার্টিফিকেট দিতে ওনাকে একটি রুমে ফিজিক্যালি আটকে রেখে বাধ্য করে, বেরুতে দেয় নি। কারো সঙ্গে দেখা করতে দেয় নি। কোথায় লাগে টিভি সিরিয়াল!

    চার, এতে প্রাইভেট সেকটরের প্লেয়ারের যে রিস্‌ক ইনভলভড্‌ তা সরকারকে ট্যাক্স পেয়ারের টাকায় আন্ডাররাইট করতে হবে। অমন হাঁ করে ভ্যাবাগঙ্গারামের মত তাকিয়ে আছ কেন? আরে বুশসায়েবের ৭০০বিলিয়ন ডলার বিলটি সেনেটে পাস করানোর পরও যদি এই কন্ডিশন না বুঝতে পারো তাহলে তোমার মাথায় সত্যি সত্যি গোবরপোরা। মন দিয়ে শোন। একবার যখন এই সেবা ক্রমশ: কমোডিটি বা বাজারে বিক্কিরির জন্যে তৈরি মালের রূপ ধারণ কচ্চে, তখন "এ ফার্দার ডাইনামিকস্‌ কামস্‌ ইন্টু অপারেশন'। কমিটিশনের চাপে আসে ''টেলরিজম''--- অর্থাৎ, সস্তা শ্রমকে সরিয়ে দিয়ে মাহাঙ্গা মেশিন বা গ্যাজেট। ব্যাপারটা একটা সীমার বাইরে চলে গেলে সমস্ত পার্সোনাল সার্ভিস, বা সার্ভিসের মানবিক অংশগুলো (যেমন ধর কাউন্টারের সেলস্‌গার্ল মেয়েটি বিক্রির সময় ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে তোমাকে যে পার্সোনাল স্যাটিসফ্যাকশন দিচ্ছে তা আর অর্গানাইজেশনের জন্যে ততটা প্রফিট দিতে পারে না, যতটা '' ক্যাপিটাল ক্যান আর্ন ফ্রম মাস-প্রোডিউসিং গুডস্‌''। আবার পুঁজির ধর্ম এমন যে সে গড়পড়তা লাভের চেয়ে কম কামাইওলা ক্ষেত্রে আটক থাকতে চায় না। এর ফলটা কি হয়?
    -- কি হয়?
    --আরে বুদ্ধু! সর্বত্র পার্সোনাল - সেবা- বিক্কিরির জায়গায় আসে মাস-স্কেলে প্রোডিউসড্‌ মেটিরিয়াল গুডস্‌ এর বিক্কিরি। পার্সোনাল টাচ্‌ অদৃশ্য হয়ে যায়। যতটুকু পার্সোনাল টাচ আগে ক্লায়েন্টকে দেয়া হত সেটা ক্রমশ: ক্লায়েন্টকে নিজে নিজে করতে বাধ্য করা হয়। ফের অতবড় হাঁ? কিস্‌সু হবে না। মুখ বন্ধ করে চোখটি খোল। চারদিকে তাকাও।দ্যাখ, ব্যাংক টেলারের জায়গায় এসেছে এটিএম মেশিন। পোস্টম্যানের জায়গায় কম্পুটার আর ই-মেল। নার্সের বদলে ড্রাগ এবং হার্ট মনিটর। সুপারমার্কেটে চেক-আউট স্টাফের জায়গায় চেক-আউট মেশিন। এয়ারপোর্টে চেক-ইন স্টাফের জায়গায় চেক-ইন মেশিন। এখন হোটেল খুলছে হোটেল স্টাফ ছাড়া, পড়ানো হচ্ছে টিচার ছাড়া, সিডি দিয়ে।পাবলিশিং হাউস খুলছে এডিটর না নিয়েই।

    এই প্রক্রিয়ায় সেবা ব্যাপারটা ক্রমশ: অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। এখন আর রোগি ফ্যামিলি ডাক্তারের সঙ্গে কনসাল্ট করবে না। প্রথমে রোজ আলাদা আলাদা নতুন ডাক্তারের দল দেখবে। তারপর ফলো আপ করতে নার্স বা তার সহকারীর সঙ্গে কথা বলতে হবে। শেষে মেডিক্যাল সেন্টারে ফোন করে এক কম্পুটরাইজড্‌ প্রোটোকলের মাধ্যমে কল সেন্টার স্টাফ তোমার মেডিক্যাল প্রবলেমের সমাধান বাতলাবে। বোঝো ঠ্যালা! এরপরও তুমি ''ফুল সার্ভিস'' পেতে পার, কিন্তু '' অ্যাট্‌ ডিফারেন্‌শিয়েটেড হায়ার প্রাইস্‌''। তোমার খাবারটা আলাদা হবে , তোমার কেবিনে টিভি থাকবে ইত্যাদি।

    তাহলে দাঁড়াল কি? যাদের টাকা নেই তারা বিভিন্ন গ্রেডের নিম্নমানের সার্ভিস্‌ পাবে অথবা একেবারেই পাবেনা। ওয়েলফেয়ার স্টেটে যা একসময় শুরু হয়েছিল এক '' কলেকটিভলি ডিটার্মাইন্ড্‌'' সামাজিক ও রাজনৈতিক লক্ষ্য পূর্ণ করতে, তা' আজ পর্যবসিত হয়েছে মাস-প্রডিউসড্‌ গূডস্‌ উঁচুদরে বিক্কিরির ধান্দাবাজিতে। আগে ছিল ''পাবলিক'', এক নাম-অবয়্‌বহীন সমূহ। এখন ছোট-বড় আলাদা আলাদা ব্যক্তি। নাম-অবয়বহীন পাবলিককে বাজার অদৃশ্য করে দিয়েছে। সমাজকেও দেবে। কারণ, ""Total capitalisam seeks a totally individualised population, without collective needs or universal values; for total capitalism there is, as Mrs. Thatcher put it,'' no such thing as society, only individuals and their families, spending their money in markets.''
    কিন্তু, ভেবে দেখ, গণতন্ত্র কি সমাজ ছাড়া বাঁচতে পারে?

    -- ধেত্তেরি, সমাজ আবার কোথায় যাবে? আর টেলিভিশনের গল্পটা বল্লেন না?
    -- টেলিভিশনের গপ্পো? তোমাদের নিউজ চ্যানেলগুলো দেখ। চব্বিশ ঘন্টা ধরে যা দেখায় তার মধ্যে কতটুকু নিউজ, কতটুকু অ্যাড্‌ আর কতটুকু সিনেমা স্টার, টিভি স্টার আর ক্রিকেট স্টার নিয়ে নাচানাচি? এরপর ও আছে লাফটার চ্যানেল, লাফটার সার্কাস। সবই বাজার ভগবানের আশীর্বাদ! না,না, আমি যেটা বলছি মন দিয়ে শোনো। সার্বজনিক পাবলিক হেল্‌থ সার্ভিস্‌ না থাকলে একটা আইনের চোখে সবাই সমান বা সমান সুযোগ পাচ্ছে এই অনুভূতি নাগরিকদের কেমন করে হবে?
    ---যেমন করে অ্যাদ্দিন হয়েছে।
    --- আর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কি করে টিঁকবে যদি তার পলিসি নির্ধারণ বিশাল বিশাল কর্পোরেশনের মাথায় বসা কিছু মুস্টিমেয় এলিট গ্রুপের হাতে ছেড়ে দেয়া হয়? যাদের প্রায়োরিটি হল কেবল শেয়ারহোল্ডারদের ভ্যালু বাড়ানোর জন্যে দাঁও-প্যাঁচ কষা!

    আমি এতসব জানিনে। মাপ চেয়ে ঘর থেকে বেরিয়েছি কি দেখি আমার বন্ধু রঞ্জন আসছে সঙ্গে ছোট বোন বেবিকে নিয়ে। বেবি গেল রান্নাঘরে, ওর বৌদির সঙ্গে গল্প করতে। আমি বল্লাম- আরো একটু আগে আসলে পারতি। কলিন লেজ্‌ বলে এক ইংরেজ অধ্যাপক বাজার-বাজার করে আমার মাথা খারাপ করে দিয়েছিল। বলে কি না বাজারবাদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে।
    --- দ্দুদ্দুর! ওসব বুদ্ধি করিসনি। , ভগবানের সঙ্গে কি লড়াই করা যায়?
    --- কি বাজে বকছিস-?
    ---- হ্যাঁরে, দেখনা , আজকে বোনকে দেখতে এসেছিল। রিজেক্ট করে গেছে,উল্টে জ্ঞান দিয়ে গেছে। ভাল করে খাওয়াদাওয়া করে শরীর ভাল কর, নইলে বিয়ে হবে না।
    --- মানে?
    --- মানে আর কি, বিয়ের বাজারে মেয়েরা মাংসের দরে বিক্কিরি হয়। তা' আমার বোনটি রোগা, তাই পছন্দ হল না।

    তাই বলছিলাম ভগবানের সঙ্গে কি লড়াই হয়? বাজার হল ভগবান।

    অক্টোবর ৫, ২০০৮
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০০৮ | ৫৮৯ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    ইঁদুর  - Anirban M
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে প্রতিক্রিয়া দিন