এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক

  • তিব্বতে তথাগত (পর্ব ৩)

    সৈকত ভট্টাচার্য লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | ২৬ এপ্রিল ২০২০ | ১৭২৫ বার পঠিত
  • । বোদ থুবেত তিব্বত ।

    বন্দী জীবনে যখন আর করার বিশেষ কিছু থাকে না, তখন সারাদিন আপিসের কল-কলানিকেই বড় আপন মনে হতে থাকে! এই যেমন কদিন আগে অবধি ছুটি পেলেই কেমন একটা মোক্ষলাভ হওয়ার ভাব আসত মনের মধ্যে। সকালে উঠে শুভ্র সাথে কে আগে বাথরুমের দখল নেবে - সেই নিয়ে ঝগড়া করার নেই, রবি ঠাকুরকে ব্রেকফাস্টের জন্য তাড়া দেওয়ার তাড়া নেই, গিজারটা চালিয়ে দিয়ে গালে ট্রিমারটা ঘষে নেওয়ার ব্যস্ততা নেই। দশটা অবধি নাক ডাকিয়ে ঘুমুলেও সমস্যা নেই যে মানুষের জীবনে সে মানুষের মোক্ষ যে ঘরের চৌকাঠে এসে উপস্থিত হয়েছে - সেটা হলপ করে বলা যায়। এরকম ছুটির দিনে, বিশেষ করে যে সব ছুটি সপ্তাহের ঠিক মাঝখানে আসত, মোক্ষের কড়া নাড়ার শব্দে আমার ঔদার্যও বেড়ে যেত। নিজেই শুভকে খুঁচিয়ে তুলে আগে বাথরুমে পাঠিয়ে দিতাম, রবি ঠাকুরের পুরি সবজির প্রতি বেলা এগারোটা অবধি একটা ঔদাসীন্য দেখাতাম। অবিশ্যি আমাদের ঘরের তৃতীয় ব্যক্তিটির মোক্ষলাভ বোধহয় অনেক আগেই হয়ে গেছে। ছুটি হোক বা আপিস, তিনি সকাল ছটার মধ্যে বিছানা ছেড়ে একখানা বই বগলে নিয়ে ড্রয়িংরুমে বা বারান্দায় বসে যান। এই নিয়ে জয়দাকে আমরা নানা সময় প্রশ্ন করেছি, আরামের ঘুমের প্রলোভন দেখিয়েছি বারবার - কিন্তু সে একেবারে স্থিতপ্রজ্ঞমুনিপ্রবর। বললেই বলবে, "জীবনটা বড় অল্প রে। প্রচুর জানার আছে, পড়ার আছে - আধ জনম হম নিদে গমাওল জরা-শিশু কত দিন গেলা..."
    শুভ একদিন জিজ্ঞেস করেছিল,"এটার মানে কী? তুমি ঘুমের মধ্যে গোঙাও? আমার মেজ পিসী নাকি এরকম করত - শুনেছি। বাবা বলত বোবায় ধরে… তোমারও কি..."
    তারপরের কথোপকথনটা নানা বয়স্যের পাঠকের কথা মাথায় রেখে এখানে উহ্য রাখাই মঙ্গল।
    তা, এই বন্দীত্বের সময় উপলব্ধি করছি যে কর্মই মুক্তির পথ। বার দুয়েক 'গল্প হলেও সত্যি' দেখে ফেলেছি। 'যার যেখানে কাজ, তার সেখানেই মুক্তি'কে জীবনের ট্যাগলাইন বানাব ভাবছি এবার। ফলে সারাদিন আপিসের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করে রেখেছি। কিন্তু মুক্তি যে কবে পাব - সেটা এখনও মালুম হচ্ছে না। আত্মিক মুক্তির আগে এই লকডাউন থেকে মুক্তি চাই। সারাদিন কাঁহাতক বিছানারূঢ় হয়ে থাকা যায়!

    তাই, আপাতত বিকেলবেলায় আপিসের কাজ থেকে একটু ছুটি নিয়ে তিনজনে মিলে ছাদে এসে হাঁটাহাঁটি করাটা আমাদের রুটিনের মধ্যে। শুভ নাকি বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে ছটা নিজের ক্যালেন্ডার ব্লক করে রেখেছে যাতে ওর হতচ্ছাড়া ক্লায়েন্ট ওই সময় কোনও মীটিং না রাখে। জয়দা ম্যানেজার মানুষ। আপিসে কত প্রকারের লোককে ম্যানেজ করে রোজ। এই এক ঘণ্টা টাইম ম্যানেজ করাটা কোন ব্যাপারই নয় তার কাছে।
    আমাদের ছাদটা বেশ বড়-সড়। দশতলার উপর। পূব দিকে তাকালে নীল সমুদ্র দেখা যায়। মনটা ভাল হয়ে যায় বেশ। আমি সেদিকেই তাকিয়ে ফুরফুরে হাওয়ায় মন ভাল করছিলাম। একটা জাহাজ ছোট্ট সাদা একটা বিন্দুর মত ভেসে রয়েছে জলে। অন্ধকার নামলে ওটা থেকে পিড়িক পিড়িক করে আলো জ্বলতে দেখেছি। শুভ মোবাইলে মন দিয়ে কী একটা দেখছে। কানে হেডফোন গোঁজা। জয়দা ছাদের মাঝখানে একটা ফুট তিনেক উঁচু পিলারের উপর বসে একটা সিগারেট ধরিয়ে নিবিষ্ট ভাবে বায়ু দূষণ করছে।
    আমি শুভকে বললাম,"কী দেখছিস এত মন দিয়ে? সারাক্ষণ মোবাইলে গুঁজে আছিস!"
    শুভ কান থেকে হেডফোন খুলে বলল, "অ্যাঁ?"
    মোবাইলের দিকে আঙুল দেখিয়ে বললাম আবার "কী দেখছিস?"
    শুভ একগাল হেসে বলল, "রেসিপি।"
    "কেন? রবিকে ছুটি দিবি ভাবছিস?"
    "না না। ভাল ভাল খেতে ইচ্ছে করলে ইউটিউবে ভিডিও দেখে মন ভরাই।"
    "এখন কী খেতে ইচ্ছে হচ্ছে তোর?" জয়দা হাঁক পাড়ে।
    "মোমো। আহা! রাস্তার ওপারে ওই নর্থ ইস্টের ছেলেটা যে পর্ক মোমোটা বানায় না... জাস্ট অমৃত!" বলে সুড়ুত করে জিভে জল টেনে নিলো।
    "মোমো আসলে তিব্বতি খাবার, তাই না জয়দা?" আমি জিজ্ঞেস করি আমাদের এনসাইক্লোপিডিয়া অফ তিব্বতকে।
    "হুঁ। তবে এই ডামপ্লিং জাতীয় খাবার তিব্বত ছাড়াও মধ্য এশিয়াতে অনেক জায়গাতেই আছে। মোমো আমরা যে ফর্মটায় খাই - সেটা অবিশ্যি তিব্বত থেকেই এসেছিল।" জয়দা উত্তর দিল।
    "কী মজা না, তিব্বতিরা রোজ মোমো খায়!" শুভ তিব্বতি না হয়ে জন্মানোর জন্য হা-হুতাশ করবে ভাবছিল। জয়দা বলল,"না রে। মোমো ওদের উৎসবের খাবার - ফেস্টিভ্যাল ফুড। লোসারের সময় ওদের ঘরে ঘরে তৈরী হয়।"
    "লোসার?"
    "তিব্বতি নববর্ষ। অনেকে বলেন যে ঞাট্রি চানপো যেদিন রাজা হয়ে বসেন সেদিন থেকে তিব্বতিরা তাদের ক্যালেন্ডার শুরু করেন। এটা, মানে, ২০২০ সাল তিব্বতি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২১৪৭ সাল। তাহলে যদি ব্যাক ক্যালকুলেশন করিস দেখবি সাল গণনা শুরু হচ্ছে ১২৭ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে। ভারতবর্ষে মগধের সিংহাসনে তখন পুষ্যমিত্র শুঙ্গের নাতি বসুমিত্র। সেই তিব্বতি নববর্ষ পালন পরবর্তী সময়ে ওদের ফসল তোলার উৎসবের সাথে মিলে মিশে এই 'লোসার'এর জন্ম দেয়। লোসার উদযাপন করে বাড়িতে ইয়াকের মাংস দিয়ে মোমো তৈরী করে।"
    "ইয়াকের মাংসের মোমো! না জানি কী স্বর্গীয় জিনিস হবে সেটা!" শুভ ভেবেই একেবারে স্বপ্নে তিব্বত চলে গেল।
    আমি জিজ্ঞেস করলাম,"তাহলে ওদের প্রধান খাবার কী? মানে স্টেপল বলা যায় যেটাকে..."
    "ছামপা বা সামপা।"
    "সেটা কী জিনিস?"
    "যবের থেকে এক বিশেষ ভাবে তৈরী আটা। তিব্বতে তো আর এখানকার মত এত নরম ঊর্বর মাটি নেই যে ধান চাষ হবে। ওদের মূল শস্য হল যব। গমও হয়। পরিমাণে কম। সূর্যের আলোতে যব শুকিয়ে পিষে এই সামপা তৈরী হয়। এর মধ্যে পো-চা মিশিয়ে একটা পেস্ট মত বানিয়ে ওরা খায়।"
    "কী চা?" চা শুনেই কান খাড়া হয়েছে আমাদের 'চাতাল' শুভর।
    "পো-চা। তিব্বতি চা। ইয়াক বা চমরীগাইয়ের দুধের থেকে তৈরী মাখন সহযোগে তৈরী হয় এই চা।"
    "মাখন দিয়ে চা খায়!" শুভর চা-খোর সত্ত্বায় একটু আঘাত লাগল মনে হল।
    "ইয়েস! খায়! সিকিমেও পাওয়া যায়। অনেকে খায়। কেমন হয় সে বলতে পারব না। খাইনি কোনদিন। তবে এই পো-চা তৈরীর বিশেষ কিছু পদ্ধতি আছে।"
    "কীরকম?" আমি কৌতূহলী হই।
    "যে কোন চা হলে চলে না। তিব্বতের পেমাগুল অঞ্চলের চা দিয়েই এটা তৈরী করার নিয়ম। পেমাগুল চা জলে ফুটিয়ে সেই জলটা রেখে দেয়। এটাকে 'চাকু' বলে। নট 'ঘ্যাচাং ফু' চাকু। যখনই পো-চা তৈরীর জন্য জল ফোটায় - সেই জলের মধ্যে কিছুটা 'চাকু' মিশিয়ে নিতে হয়। তারপর চা বানিয়ে ইয়াক, তিব্বতি ভাষায় যাকে 'দ্রি' বলে, তার দুধের থেকে তৈরী মাখন একদলা মিশিয়ে নিয়ে তৈরি হয় পো-চা।"
    "ওরে বাবা! ওর চেয়ে আমাদের বিশুদ্ধ দুধ চা-ই ভাল!" শুভ বলল।
    "আসলে খাদ্যাভ্যাস নির্ভর করে সেই জায়গার আবহাওয়া, ভূপ্রকৃতির উপর। যেমন তুই রসম জিনিসটা খেতে পারিস না। অথচ তামিলরা সকাল রাত রসম দিয়ে থালা থালা ভাত মেরে দিচ্ছে! এখানকার গরম আবহাওয়ার জন্য উপযোগী ওটা। শরীর ভাল রাখে।"
    "তিব্বতে তো খুব ঠাণ্ডা সারাবছর, তাই না?"
    "হ্যাঁ। বিশেষ করে উত্তর তিব্বত। খোলা বিস্তৃত সমতল কিন্তু উচ্চতা গড়ে প্রায় ষোল হাজার ফুট। ফলে সারাক্ষণ শনশনিয়ে হাড় কাঁপানো হাওয়া আর সেরকম ঠাণ্ডা! দক্ষিণের দিকের হাল অপেক্ষাকৃত ভাল। উত্তরের মালভূমির চেয়ে উচ্চতা অপেক্ষাকৃত কম। বারো হাজার ফুটের আশেপাশে। লাসা এই অঞ্চলেই অবস্থিত। আর আমাদের প্রথম রাজা ঞাট্রি চানপোও এসেছিলেন এই অঞ্চলেই।"
    "তাহলে, উনি কি লাসাতেই... " আমার কথা থামিয়ে হাত নাড়িয়ে জয়দা বলে উঠল, "না না। লাসা অনেক পরে। স্রোংচেন গামপোর হাতে তৈরী। এরা মূলতঃ পশুচারণ করে জীবিকা নির্বাহ করত। এক জায়গায় বেশীদিন থাকত না। একজায়গার ঘাস শেষ হয়ে গেলে পশুর দল নিয়ে পাড়ি জমাত অন্য কোথাও। যাযাবর জীবন। তিব্বতি ভাষায় এদের 'দ্রোকপা' বলা হত।"
    "কী অদ্ভুত দেশ, তাইনা?" আমার বেশ অদ্ভুত লাগে ভারতবর্ষের লাগোয়া অথচ একেবারে অচেনা একটা দেশের অজানা গল্প শুনতে।
    "শুধু অদ্ভুত দেশ নয় - অদ্ভুত তাদের আচার, ধর্ম। সব যেন একেবারে ম্যাজিকে মোড়া দেল টোরোর সিনেমার মত। ধর, এই 'তিব্বত' নামটা। কোথা থেকে এলো? আর একটা নাম তো আগেই বলেছি - বোদ। সেটা যে কীভাবে কোথা থেকে এসেছিল জানা নেই। বিখ্যাত তিব্বতি ঐতিহাসিক গে লোচাবা ১৪৭৮ সালে 'ব্লু অ্যানালস' বলে একটা ইতিহাস বই লেখেন।"
    "ইংরিজিতে?" শুভ অবাক হয়ে প্রশ্ন করল।
    "ধুর! ইংরিজিতে কেন হবে? তিব্বতি ভাষায়। জর্জ রয়েরিখ তার অনুবাদ করেন।"
    "রয়েরিখ? মানে সেই রাশিয়ান পেইন্টার? হিমালয়ের ছবি আঁকতেন?" মনে পড়ল গত বছর মাইসোর গিয়ে জগমোহন প্যালেস আর্ট গ্যালারিতে রয়েরিখের আঁকা ছবি দেখেছিলাম। বাবা তখনই বলেছিল তার সম্পর্কে।
    "শুধু পেইন্টার নন। আর্কিওলজিস্টও ছিলেন। কিন্তু তিনি নিকোলাস রয়েরিখ। জর্জ রয়েরিখের বাবা। জর্জ রয়েরিখ ছিলেন টিবেটোলজিস্ট - তিব্বত বিশেষজ্ঞ। জর্জ রয়েরিখ বিখ্যাত তিব্বতি কবি দার্শনিক শিল্পী গেনদীন চেপেলের সাহায্য নিয়ে ওই ব্লু অ্যানালসের অনুবাদ করেন। এই গেনদীন চেপেল নিজেও একটি প্রামাণ্য গ্রন্থ লিখে গেছেন তিব্বতের ইতিহাস নিয়ে। তার নাম 'হোয়াইট অ্যানালস'। অবিশ্যি সেটা অসম্পূর্ন অবস্থায় রেখেই তিনি মারা যান। যাক, যে কথা বলছিলাম - এই ব্লু অ্যানালসে গে লোচাবা বলেছেন যে এই 'বোদ' নামটি এসেছে 'বুগ্যাল' থেকে। আরও আগে তিব্বতের নাম নাকি ওটাই ছিল। 'হোয়াইট অ্যানালস'এ চেপেল বলেছেন যে প্রাচীন ধর্ম 'বোন' থেকে 'বোদ' শব্দর উৎপত্তি। আর এই 'তিব্বত' শব্দটির উৎস সম্ভবতঃ একটি মোঙ্গলিয় শব্দ 'থুবেত'। ওখানকার অধিবাসীরা আবার 'ক্যাংচেন' বলেও ডাকতেন নিজেদের দেশকে। 'ক্যাংচেন' মানে তুষার রাজ্য।"
    "তার মানে কি কাঞ্চনজঙ্ঘা শব্দটার উৎপত্তি ওই 'ক্যাংচেন' থেকে?" শুভ মাথা চুলকে জিজ্ঞেস করল।
    "সাবাস! এই তো! ছেলের বুদ্ধি খুলেছে। হতেই পারে! যদিও 'কাঞ্চনজঙ্ঘা'র 'কাঞ্চন'কে সম্পদ হিসাবে ধরে হিন্দুরা 'কুবের'এর সাথে লিংক করে দিয়েছে। কিন্তু কে জানে কী সত্যি! সে অবিশ্যি আমাদের মাথা ব্যথার বিষয় নয়। আমরা রয়েছি তিব্বতে। হিমালয়ের সৃষ্টি কীভাবে হয়েছিল মনে আছে?"
    "সেই টেথিস সাগর থেকে।" বলে উঠি আমি।
    "একদম ঠিক। যেদিন সুনীল জলধি হইতে উঠিল জননী 'হিমালয়' - সেদিনকে তিব্বতেরও জন্ম।"
    "মানে বাই প্রোডাক্ট?" শুভ বলল।
    "এরকম বলিস না! মোমোতে পর্কের সাথে ইঁদুরের বিষ মিশিয়ে দেবে কিন্তু!" আমি সাবধান করলাম শুভকে।
    "হুহ! হিমালয়ের সাথে ফ্রিতে এসেছে - আবার ইঁদুরের বিষ নাকি!" শুভ বেশ রেলা নিয়ে জবাব দিল।
    "যেভাবেই হোক, মোদ্দা কথা হল প্লেটে প্লেটে ঠোকাঠুকি লেগে হিমালয় পর্বত আর তিব্বত মালভূমির জন্ম হল। আর সেই ব্র্যান্ড নিউ দেশের প্রথম বাসিন্দা কে ছিল বলত?"
    "কে?" সমস্বরে জিজ্ঞেস করি।
    "একটা বাঁদর।"
    "বাঁদর? কেন?"
    "মানুষের পূর্বপুরুষ হিসাবে বাঁদরের নামই আসে। কিন্তু এ বাঁদর সে বাঁদর নয় - ইনি ছিলেন অবলোকিতেশ্বরের অবতার। অবলোকিতেশ্বর কে জিজ্ঞেস করবি তো? একটু চেপে থাক। পরে বৌদ্ধ ধর্ম নিয়ে যখন বলব তক্ষণ খোলসা হবে। এটুকু জেনে রাখ যে অবলোকিতেশ্বর হলেন বৌদ্ধ ধর্ম অনুযায়ী একজন বোধিসত্ত্ব। বোধিসত্ত্বরা পৃথিবীর সকল প্রাণীর মুক্তির কথা ভেবে আবির্ভূত হন। যাই হোক, এসব আমরা পরে ডিটেইলসে জানব। এখন সেই বাঁদররূপী অবলোকিতেশ্বরের কাণ্ড শুনি। বাঁদর একা একা নিশ্চিন্তে নিজের মনে ধর্ম কর্ম করে পাহাড়ের গুহায় দিন গুজরান করছিল। এর মধ্যে এসে জুটল এক দানবী। দানবীর হঠাৎ বিয়ে করার সাধ জাগল। কিন্তু অমন জনশূন্য দেশে বর কোথায় পায়? কেঁদে কেঁদে বেড়ায় - বর চাই, বর চাই করে! একদিন সেই কান্না বানরের কানে গেল। বানর পরোপকারী। পরের দুঃখে মনটা একেবারে কেঁদে উঠল। অমনি লেজ তুলে দৌড়ে গেল দানবীর কাছে। তারপর ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি। তাদের যা সব ছানা পোনা জন্মাল তারাই নাকি তিব্বতের প্রথম অধিবাসী। বানরের সব গুণ আর দানবীর সব দোষ দিয়েই তিব্বতিরা তৈরী।"
    "সব দোষ খালি বাড়ির বৌদেরই হয় গো! লেজ তুলে দৌড়েছিল কিন্তু ও ব্যাটা বানরই... " শুভ উদাস মুখে বলল।
    "আহ! বললাম না, ওসব হল গিয়ে - 'পরোপকার'…!" বলে চোখ মটকায় জয়দা।

    (ক্রমশঃ)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ২৬ এপ্রিল ২০২০ | ১৭২৫ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    বকবকস  - Falguni Ghosh
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বিপ্লব রহমান | ২৬ এপ্রিল ২০২০ ১১:০১92692
  • এই লক ডাউনে ইয়াকের মাংস দিয়ে মোমো আর  পো-চা, মানে তিব্বতি চা ইছে করছে!  :/ 

    এতটা উস্কানি দেওয়া কী ভাল সৈকত দা?  তাপ্পর?     

  • বিপ্লব রহমান | ২৬ এপ্রিল ২০২০ ১১:০২92693
  • ** এই লক ডাউনে ইয়াকের মাংস দিয়ে মোমো আর  পো-চা, মানে তিব্বতি চা খেতে ইচ্ছে করছে!  :/ 

    এতটা উস্কানি দেওয়া কী ভাল সৈকত দা?  তাপ্পর?     

  • সৈকত ভট্টাচার্য | ২৬ এপ্রিল ২০২০ ১২:৩৫92697
  • আমার তো লিখতে গিয়েই কী বোর্ড এ জল পড়ে যাচ্ছিল। যাক গে... পরের পর্ব লিখি গে যাই... 

  • বিপ্লব রহমান | ২৬ এপ্রিল ২০২০ ১২:৪৩92698
  • সৈকত দা,

    পরের পর্ব তো চাইই।  কিন্তু লেখায়  দু একটি প্রাসংগিক ছবি কী যোগ করা যায়?

    যথা,  আমরা যারা কেওক্রাডং আর নীল গাই ছাড়া হিমালয়, কাঞ্চনজঙ্ঘা বা  ইয়াক দেখি নাই! 

    আব্দার রইল।   

  • বিপ্লব রহমান | ২৬ এপ্রিল ২০২০ ২২:৪৫92718
  • "ডি-লা গ্রান্ডি মেফিস্টোফিলিস ইয়াক ইয়াক!" :ডি 

  • Shrawanti | 141.101.98.93 | ২৭ এপ্রিল ২০২০ ০৮:৫৫92734
  • Pore felechi. Waiting for the next

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন