এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • ধর্মীয় কুসংস্কার, নিপীড়ন ও প্রতারণার বিরুদ্ধে আইন কেন না হলেই নয়

    দেবাশিস্‌ ভট্টাচার্য লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১৮ নভেম্বর ২০১৮ | ৬৪৬৪ বার পঠিত
  • প্রেক্ষাপট



    একটি অসাধারণ ইংরিজি বাক্য আন্তর্জাল-পরিসরে প্রায়শই ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়, যার বাংলা তর্জমা মোটামুটি এই রকম হতে পারে - ‘ধর্ম হল অজ্ঞ জনসাধারণের কাছে পরমসত্য, জ্ঞানী পণ্ডিতের কাছে মিথ্যা কুসংস্কার, আর শাসকের কাছে শাসনের জবরদস্ত হাতিয়ার’। আজকের দিনের ভারতের রাষ্ট্র ও রাজনীতির রকমসকম যিনি লক্ষ করেছেন, তাঁকে নিশ্চয়ই কথাটার অর্থ আর বলে বোঝাতে হবে না। গুজব আছে, কথাটা নাকি বলেছিলেন প্রাচীন রোমান আইনজ্ঞ সেনেকা, কিম্বা হয়ত কবি-দার্শনিক লুক্রেশিয়াস, যদিও তাঁরা যে ওটা কোথায় বলেছিলেন সে আর কেউ বলতে পারে না। কেউ কেউ খোঁজখবর করে দেখেছেন, ও রকম একটা বাক্য আসলে আছে অষ্টাদশ শতকের ব্রিটিশ ঐতিহাসিক এডওয়ার্ড গিবন-এর ‘দ্য হিস্ট্রি অফ দ্য ডিক্লাইন অ্যান্ড ফল অফ দ্য রোমান এম্পায়ার’ নামক পৃথুল গ্রন্থে, যদিও সেটা রোমান সমাজের ধর্ম প্রসঙ্গেই বলা। তো, কথাটা যেখান থেকেই আসুক না কেন, ধর্ম বিষয়ে ওর চেয়ে সত্যি কথা বোধহয় খুব কমই আছে। মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যসিদ্ধির ব্যাপারে ধর্মের কার্যকারিতার কথা প্রাক-খ্রিস্টীয় ভারতের ‘কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র’ থেকে শুরু করে পঞ্চদশ শতকীয় ইউরোপের রাজনীতিতাত্ত্বিক মাখিয়াভেল্লির ‘দ্য প্রিন্স’ পর্যন্ত অনেক গ্রন্থেই উচ্চারিত হয়েছে। প্রতারণা, হিংস্রতা, ঘৃণা আর গুরুগম্ভীর মিথ্যাকে সম্বল করে মানুষকে বশ্যতা স্বীকার করানোর জন্য ধর্মের চেয়ে ভাল হাতিয়ার পাওয়া মুশকিল। যদিও উন্নত দেশগুলোতে ধর্ম আজ নিশ্চিতভাবেই পিছু হঠছে, কিন্তু গরিব দেশগুলোতে ধর্ম আজও জড়িয়ে রয়েছে সমাজ-রাজনীতি-প্রশাসন-সংস্কৃতির অলিতে গলিতে। আমাদের দেশের রাষ্ট্র ও সমাজের জাতীয় স্তরে যখন চলছে আশারাম-রামদেব-রামরহিমের মত ধর্মীয় রাঘব-বোয়ালদের খেলা, তখন শহরে ও গ্রামে বাবাজি-মাতাজি-তান্ত্রিক-ওঝা-গুণিন-জ্যোতিষীদের হাতে প্রতিদিনই লুণ্ঠিত হচ্ছে অসহায় বিশ্বাসী মানুষের সম্পদ, সম্মান ও নিরাপত্তা। খুব বড়সড় অপরাধ না হলে বিশ্বাসী ভক্তরা এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে চান না, জানালেও পুলিশ-প্রশাসন এদের প্রশ্রয় দেয়, বা যে সমস্ত বিরল ক্ষেত্রে তারা ব্যবস্থা নিতে চায় সে সব ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রচলিত আইন-ব্যবস্থার অপ্রতুলতা। ধর্মীয় কুসংস্কার, নিপীড়ন ও প্রতারণার বিরুদ্ধে নতুন আইন তৈরির দাবি ওঠে সেই প্রেক্ষিতেই। এ ধরনের আইন প্রণয়নের জন্য ১৯৯৫ সাল থেকে চেষ্টা করতে করতে ধর্মীয় বুজরুকদের হাতে শেষ পর্যন্ত নিহত হয়ে গেলেন মহারাষ্ট্রের যুক্তিবাদী আন্দোলনের অগ্রণী সংগঠক নরে৩ন্দ্র দাভোলকর। তবে, ২০১৩ সালে নিহত হবার কয়েক মাসের মধ্যেই জনমতের চাপে আইনটিকে অর্ডিন্যান্স হিসেবে পাশ করতে বাধ্য হয় মহারাষ্ট্রের সরকার, পরে ওই রাজ্যের বিধানসভাও তা অনুমোদন করে।

    নিষ্ক্রিয়তার কয়েকটি অজুহাত



    এই ব্যাপারে নতুন আইন তৈরির দাবিকে প্রায়শই নিরুৎসাহিত করা হয় কয়েকটি প্রশ্ন তুলে। এবং, আশ্চর্যের বিষয়, প্রায়শই এই প্রশ্নগুলো তোলেন এমন মানুষেরা, যাঁরা এ দাবির পেছনের বাস্তব সমস্যাটিকে স্বীকার করেন, বা অন্তত স্বীকার করার ভান করেন। এখানে এ রকম প্রশ্নের সবচেয়ে পরিচিত তিনটি নমুনা তুলে ধরে সেগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা যাক। প্রথম প্রশ্ন - ‘নতুন আর একটা আইন করে কীই বা ছাই হবে? বে-আইনি কাজকর্ম তো কতই হচ্ছে, দোষীরা ধরা পড়ছে কোথায়? ধর্মীয় রাঘব-বোয়ালরা সব প্রভাবশালী লোক, আইন হলেও কি আদৌ তাদের শাস্তি হবে?’ হ্যাঁ, সন্দেহ নেই, আইন হলেই যে দোষীরা সব আপনা থেকে জেলে ঢুকে গিয়ে ধর্মীয় প্রতারণা ও নিপীড়ন সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যাবে, এমন কোনও সম্ভাবনাই নেই। কিন্তু, সেভাবে ভাবলে তো খুন-ধর্ষণ-ডাকাতি-জালিয়াতি কোনও কিছুর বিরুদ্ধেই আইনের দরকার নেই, যেহেতু এই প্রত্যেকটা অপরাধই অহরহ ঘটে চলেছে, এবং অপরাধীরা মোটেই সব সময় ধরা পড়ছে না। আসলে, আইনের প্রয়োগ হোক বা না-ই হোক, আইনটি চালু হওয়ার অর্থ হল, রাষ্ট্র অন্তত নীতিগতভাবে স্বীকার করছে যে এ ধরনের কাজগুলো অন্যায়। সেটাই তো সাফল্যের প্রথম ধাপ! দ্বিতীয় প্রশ্ন - ‘একটা আইন তৈরির চেয়ে মাঠে নেমে জোরদার আন্দোলন কি অনেক বেশি কাজের নয়? আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি হলে, এবং সাধারণ মানুষ সচেতন হলে, তবেই তো এ সব কুকর্ম বন্ধ হওয়ার মত পরিস্থিতি তৈরি হবে!’ হ্যাঁ, আন্দোলন না হলে নিছক একটা আইন সৃষ্টি করে বিশেষ লাভ হবে না, এটা অতি সত্যি কথা। কিন্তু, এই সত্যি কথাটাকে এ ভাবে হাজির করার মধ্যে রয়েছে একটি লুকোনো কুযুক্তি। সেটা হচ্ছে, আইন ও আন্দোলনকে মনে মনে পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী বিকল্প ধরে নিয়ে তাদের কার্যকারিতার তুলনা করতে যাওয়া, যেন দুটো একসাথে হতে কোনও ভয়ঙ্কর নিষেধ আছে। আসলে, এরা মোটেই বিকল্প নয়, বরঞ্চ পরিপূরক। ঠিকঠাক আইন হলে আন্দোলনের দাবিগুলো সুনির্দিষ্ট অর্থ ও আকার পাবে, সরকারের ওপর বাড়বে চাপ। আর, উল্টোদিকে, জোরাল আন্দোলন থাকলে আইনটা বইয়ের পাতায় বন্দী হয়ে থাকবে না, তার বাস্তব প্রয়োগ হবে। যুক্তিবাদী আন্দোলনের কর্মীরা কাজ করতে গিয়ে প্রত্যক্ষভাবে উপলব্ধি করেছেন এ সমস্যার দুটো দিকই। তাঁরা যেমন ইচ্ছুক ও সচেতন পুলিশ অফিসারকে দেখেছেন ধর্মীয় বুজরুকির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রশ্নে জোরাল আইনের অভাব নিয়ে খেদ প্রকাশ করতে, তেমনি দেখেছেন ‘ড্রাগ্‌স্‌ অ্যান্ড ম্যাজিক রিমেডিজ অ্যাক্ট ১৯৫৪’ জাতীয় আইনকে ধারাবাহিক আন্দোলনের ফলে বিস্মৃতির অতল থেকে আবার বাস্তব প্রয়োগের জগতে ভেসে উঠতে।

    তবে, এর চেয়ে আরেকটু বিবেচনাসাপেক্ষ তৃতীয় ও শেষ প্রশ্নটি। সেটা অনেকটা এই রকম - ‘নতুন আইন আদৌ লাগবে কেন, যখন এই সমস্ত অপরাধীদের প্রচলিত আইনেই শাস্তি দেওয়া সম্ভব?’ বলা দরকার, এ প্রশ্নে কিঞ্চিত গোলমাল আছে। এখানে কুসংস্কার-বিরোধী আইনকে পশ্চিমবঙ্গে (বা কেন্দ্রীয়ভাবে) প্রচলিত কোন নির্দিষ্ট আইনটি বা আইনগুলোর সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে? এরকম তুলনা করার মত আইন আদৌ ছিল নাকি, থাকলে আর নতুন আইনের কথা উঠবে কেন? আর, যদি কেউ এ কথা বলতে চেয়ে থাকেন যে, বর্তমান ভারতীয় দণ্ডবিধি ও অন্যান্য নানা চালু আইন দিয়েই (যেমন ম্যাজিক রেমেডিজ অ্যাক্ট) কাজ চলবে, তাহলে তাঁকে আগে প্রচলিত আইনগুলোর বিষয়ে একটু ভাল করে জেনে নিতে অনুরোধ করব । এ নিয়ে আমি পত্রপত্রিকায় লিখেছি, সভা-সমিতিতে বলেছি, তাছাড়া, ২০১৬ সালে একটি আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-গবেষকদের সভাতেও এক সংক্ষিপ্ত লিখিত প্রস্তাব দিয়ে এসেছি। এই সব লেখা ও প্রস্তাব কেউ চাইলেই পেতে পারেন । এখানে আমার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেবার চেষ্টা করব। তবে, এই প্রশ্নটির জবাব অল্প দু-কথায় হবে না, একটু বিস্তারে যেতে হবে। আর তারও আগে জানতে হবে, ওই ধরনের কী কী আইনের অস্তিত্ব ইতিমধ্যেই আছে।

    চালু আইনে সমস্যাটা কোথায়



    প্রচলিত আইনে ধর্মীয় বা কুসংস্কারভিত্তিক অপরাধের বিরুদ্ধে হাতিয়ার একেবারেই নেই এমন নয়, যদিও তা হাতেগোনা, এবং যেটুকু আছে তার সীমাবদ্ধতাও খুবই প্রকট। মুশকিল হচ্ছে, এই আইনগুলো বানানো হয়েছে সাধারণ অপরাধের কথা মাথায় রেখেই, ফলে কোনও বিশেষ ধর্মীয় বা কুসংস্কারভিত্তিক অপরাধের বিরুদ্ধে সেগুলোকে প্রয়োগ করতে গেলে সেই বিশেষ অপরাধের ক্ষেত্রে এই সাধারণ আইনগুলো ভাঙা হয়েছে কিনা সেটা দেখতে হয়। যেমন, খুন, ধর্ষণ ও আর্থিক-প্রতারণা হল প্রচলিত আইনের (এ ক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধি বা ‘আই পি সি’) যথাক্রমে ৩০২, ৩৭৬ ও ৪২০ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এখন, কোনও একটি বিশেষ ঘটনার ক্ষেত্রে অপরাধী যদি এগুলো করে থাকে, তো তাকে এইসব ধারায় অভিযুক্ত করা যাবে। কিন্তু, সব সময় ব্যাপারটা অত সহজ হয় না। চালু আইনে ধর্ম বা কুসংস্কার সংক্রান্ত অত্যাচার বা প্রতারণা এসব নিয়ে কোনও কথাই নেই, সাধারণভাবে অত্যাচার বা প্রতারণা সংক্রান্ত ধারা আছে। একে তো এইসব ক্ষেত্রে পুলিশ কিছু করতেই চায় না, আর তার ওপর যদি বা কোনও সচেতন পুলিশ অফিসার ব্যবস্থা নিতে আগ্রহীও হন, তো তাঁকে ওইসব ধারায় কীভাবে কেসটাকে ফেলতে হবে সে নিয়ে অনেক ফিকির বার করতে হয়। যেমন, ওঝা যদি ভূত ঝাড়ায়, তো তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে পুলিশকে দেখতে হবে যে সে টাকা নিয়েছিল কিনা (সে ক্ষেত্রে ৪২০ ধারা চলবে) বা মারধোর করেছে কিনা (সেক্ষেত্রে হয়ত ৩২৩ ধারা দেওয়া যাবে)। কারণ, 'ভূত ছাড়ানো' ব্যাপারটাতে তো আর এমনিতে কোনও আইনি বাধা নেই! ফলে, টাকা নেওয়া বা মারধোর সেভাবে প্রমাণ না করা গেলে সেই ওঝা আইনের হাতের বাইরেই থেকে যাবে। প্রচলিত আইনের এই সীমাবদ্ধতার কারণে, এমন আইন চাই যাতে কুসংস্কারমূলক কাজগুলোকেই বিশেষভাবে বে-আইনি হিসেবে সংজ্ঞা দেওয়া হবে, শুধুমাত্র কুসংস্কারের মধ্যে দিয়ে ঘটা সাধারণ অপরাধগুলোকে নয় । মহারাষ্ট্রের যুক্তিবাদী আন্দোলনের নেতা নরেন্দ্র দাভোলকর তাঁর নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে যে আইনটি তৈরি করতে সরকারকে বাধ্য করে গেলেন ২০১৩ সালে, সেই আইনটি ঠিক এই কাজটাই করেছে।

    কিন্তু শুধু এটুকুই যথেষ্ট নয়। আসলে, মহারাষ্ট্রে যেমন একটিমাত্র কুসংস্কার-বিরোধী আইন পাশ হল (কর্ণাটকেও বোধহয় তোড়জোড় চলছে), সে রকম বিশেষ বিশেষ আইন চাই তো বটেই, সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য আইনেও যুগোপযোগী সংস্কার চাই, না হলে ভাল কাজ হবে না । প্রতারণা ও ধর্ষণের সংজ্ঞাকে ধর্ম ও কুসংস্কারের ক্ষেত্রে প্রসারিত করা প্রয়োজন, যা করতে গেলে মৌলিক সংস্কার সাধন করতে হবে ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ (সংক্ষেপে আই পি সি) বা ভারতীয় দণ্ডবিধিতে। তাছাড়া, সংশোধন করা দরকার ধর্মীয় ভাবাবেগ আঘাত সংক্রান্ত আইনগুলোও। আর সংস্কার প্রয়োজন মেডিক্যাল আইনে, অবৈজ্ঞানিক চিকিৎসাকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করবার জন্য। এ নিয়ে পরে আরেকটু বলা যাবে।

    এ ধরনের কিছু নতুন আইন



    ওপরে বলেছি, মহারাষ্ট্রে ২০১৩ সালে এ রকম একটি আইন হয়েছে, কাছাকাছি আইন বানাবার তোড়জোড় চলছে কর্নাটকেও। এই বাংলাতেও কুসংস্কারবিরোধী আন্দোলনের কিছু অগ্রণী কর্মী এ ধরনের একটি আইনের খসড়া পেশ করেছেন এ রাজ্যের আইন কমিশনের কাছে, যদিও তার পরিণতি এখনও আমরা জানি না। এই ধরনের আইনগুলোতে তন্ত্রমন্ত্র তুকতাক ইত্যাদির সাহায্যে কারুকে কিছু সুবিধে করে দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বা ক্ষতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, যৌন সংসর্গ, জড়িবুটি চিকিৎসা এইসব কীর্তিকলাপকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এবং এইসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে জেল ও জরিমানার ব্যবস্থা থাকছে। তা ছাড়া, এই আইনকে প্রয়োগ করার পরিকাঠামোটি ঠিক কেমন হবে, সে ব্যাপারেও সরকারকে নির্দিষ্ট রূপরেখা দেওয়া থাকে ওই আইনের ভেতরেই।

    এ ছাড়া এ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আছে ডাইনি-শিকারের বিরোধী আইন, অর্থাৎ, কোনও ব্যক্তিবিশেষকে এলাকার মাতব্বররা ‘ডাইনি’ বলে ঘোষণা করে তার ওপর নির্যাতন চালাচ্ছেন ও একঘরে করছেন - এ ধরনের ক্রিয়াকলাপের বিরুদ্ধে আইন। এ আইনকেও কুসংস্কারবিরোধী আইন বলা যেতে পারে। এ ধরনের আইন ওড়িশা, বিহার, ছত্তিশগড় ও আসামে আছে। আইন-গবেষকরা নাকি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছেও এ ধরনের একটি আইনের প্রস্তাব পাঠিয়েছেন বলে শুনেছি।

    চালু আইনের আরও কয়েকটি দিক



    বর্তমানে যে আইন-ব্যবস্থা চালু আছে, তাতে আই পি সি বা ভারতীয় দণ্ডবিধি ছাড়াও কিছু আইন আছে যারা এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বলে গণ্য হতে পারে। ওপরে বলেছিলাম, সে সব আইন নিয়েও একটু বলব, এইবারে সে নিয়ে কথা বলা যাক। প্রথমে ধরা যাক ‘মেডিক্যাল’ বা চিকিৎসা-সংক্রান্ত আইনের কথা। ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাক্ট’ অনুযায়ী, আইনিভাবে নথিভুক্ত একজন চিকিৎসাবিজ্ঞান-স্নাতক ছাড়া আর কেউই কোনও রুগির চিকিৎসা করতে পারেন না। ‘ড্রাগ্‌স্‌ অ্যান্ড কসমেটিক্স অ্যাক্ট, ১৯৪৫’ অনুযায়ী, নির্দিষ্ট কতকগুলো গ্রন্থ বা নথিপত্রে উল্লিখিত কিছু ওষুধপত্র ছাড়া আর কোনও কিছুকেই ‘ওষুধ’ বলে বিক্রি বা প্রয়োগ করা যায় না, এবং হাঁপানি, টাক, যৌন-অক্ষমতা ইত্যাদি রোগ সারিয়ে দেবার দাবিও করা যায় না। আর, ‘ড্রাগ্‌স্‌ অ্যান্ড ম্যাজিক রেমেডিজ (অবজেকশনেব্‌ল্‌ অ্যাডভার্টাইজমেন্ট) অ্যাক্ট, ১৯৫৪’ অনুযায়ী, তন্ত্রমন্ত্র জড়িবুটি এইসব দিয়ে রোগ সারাবার দাবি করে প্রকাশ্য বিজ্ঞাপন করা যায় না। কাজেই, বোঝা যাচ্ছে যে, এই সব আইনগুলো দিয়ে তন্ত্রমন্ত্র তুকতাক সহযোগে ভুয়ো চিকিৎসা খানিকটা আটকানো সম্ভব। কিন্তু, কুসংস্কার-নির্ভর প্রতারণা রোধে এই সব আইনের সীমাবদ্ধতাও ততোধিক। প্রথমত, এ দিয়ে শুধু চিকিৎসা-সংক্রান্ত বুজরুকিই আটকানো যাবে, অন্য বুজরুকি নয়। কেউ তুকতাক করে মামলা জিতিয়ে দেবে এমন আশ্বাস দিলে এ সব আইন আর প্রাসঙ্গিক থাকবে না। তার ওপর, বুজরুকটি যদি আদালতে এসে বলে, সে মোটেই চিকিৎসা করছিল না, সে শুধু অলৌকিক কোনও শক্তির কাছে রোগির ভালর জন্য প্রার্থনা করছিল, তাতেও সে সহজেই আইনের হাত এড়িয়ে পালাতে পারবে। আর সর্বোপরি, আমাদের আইন আধুনিক বৈজ্ঞানিক চিকিৎসার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি অবৈজ্ঞানিক চিকিৎসা-ব্যবস্থাকেও অনুমোদন দেয় (আয়ুর্বেদ হোমিওপ্যাথি হেকিমি সিদ্ধা ইত্যাদি), কাজেই বিজ্ঞান-অবিজ্ঞানের সীমারেখা সেখানে যারপরনাই পাতলা।

    যুক্তিবাদী মানসিকতা প্রসারের পথে আরেকটি বাধা হল ‘ধর্মীয় ভাবাবেগ’ রক্ষাকারী দুই আইন - ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৮ ও ২৯৫এ ধারা। প্রথমটি ব্যক্তি ও দ্বিতীয়টি গোষ্ঠীর ‘ধর্মীয় ভাবাবেগ’ রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেয়। এ ধরনের আইনের একেবারেই দরকার নেই, এমন নয়। ধর্মীয় বিদ্বেষ-ঘৃণা-হিংস্রতার অবাধ প্রচার আটকানোর জন্য এ ধরনের আইনের অবশ্যই দরকার আছে। কিন্তু এই আইনগুলোকে প্রায়শই ব্যবহার করা হচ্ছে মৌলবাদী দেশগুলোতে চালু ‘ব্ল্যাসফেমি’ আইনের কায়দায়, ধর্মের সমালোচনাকে আটকাতে। এই ধরনের অপব্যবহার আটকাবার জন্য এই আইনের ভেতরেই ধর্মের শৈল্পিক, যুক্তিবাদী ও মানবতাবাদী সমালোচনার সুরক্ষার বন্দোবস্ত করা প্রয়োজন, যে ধরনের সুরক্ষার বন্দোবস্ত রয়েছে অশ্লীলতা-বিরোধী ২৯২ ধারার মধ্যে।

    এই আইনগুলোকে সমর্থন জোগানোর জন্য কিছু পরিবর্তন হয়ত প্রয়োজন ভারতীয় দণ্ডবিধিতেও। যেমন, ধর্মীয় ভয় ও প্রভাব কাজে লাগিয়ে কোনও মহিলাকে যৌন-সংসর্গে লিপ্ত করানোকে ‘ক্রিমিন্যাল ফোর্স’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা প্রয়োজন, যাতে এই ধরনের যৌন-সংসর্গ আদালতের কাছে ধর্ষণ বলে সাব্যস্ত হতে পারে।

    আর, সেই সঙ্গে আনা উচিত আরও দুয়েকটি বিশেষ আইন, যাতে সুরক্ষিত করা হবে সংবিধান-উল্লিখিত ধর্মনিরপেক্ষ বৈজ্ঞানিক মূল্যবোধকে, সুরক্ষা ও সমর্থন জোগানো হবে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকারদের, বিশেষত মহিলা শিশু ও নিম্নবর্গের মানুষদের।

    পরিবর্তন প্রয়োজন শিক্ষাক্ষেত্রেও। আইন হওয়া উচিত, যাতে প্রথম থেকেই শিশুরা দীক্ষিত হতে পারে বিজ্ঞান ও মানবতার শিক্ষায়, তফাত করতে শেখে সত্য আর মিথ্যের, ইতিহাস ও পুরাণের।

    উপসংহার



    দাবি আমাদের অনেক, প্রত্যাশা আর স্বপ্নও তো অনেকই। আর, ঠিক ততটাই কঠোর হচ্ছে আমাদের দেশের বাস্তবতা। এ সব দাবি পূরণের থেকে আমরা এখনও বহু দূরে। তবু, দাবিটা তো উঠুক কম সে কম। মানুষ তো অন্তত জানুন, এগুলোও চাইবার ছিল। এটা তো ঠিকই যে, পরাক্রান্ত সব মিথ্যেই একদিন ইতিহাসের কাছে তামাদি হয়ে যায়, “শিশুপাঠ্য কাহিনিতে থাকে মুখ ঢাকি”। পড়ে থাকে, বেঁচে থাকে শুধু সত্যের একান্ত নির্যাসটুকু। এক্ষেত্রেও যে একদিন তাইই হবে তাতে সন্দেহ নেই। এ তো শুধু কিছু ধর্মীয় অপরাধীকে জেলে পোরার ব্যাপার নয়, কিছু নিপীড়িতকে নিছক স্বস্তি ও সুবিচার দেওয়ার প্রশ্নও নয়। এ লড়াই আসলে উৎসারিত হচ্ছে সত্য ও ন্যায়ের জন্য মানুষের চিরকালীন আকাঙ্ক্ষা থেকে, আমাদের অস্তিত্ব ও ইতিহাসের সেরা অর্জনগুলোর থেকে, আমাদের সংবিধানের সারবস্তুর সেরা অংশটি থেকে।

    সঠিক দাবিগুলো কে করছে তাতে কিচ্ছুই যায় আসে না। তার কিছু নিজস্ব নৈর্ব্যক্তিক শক্তি থাকে, জানেন তো?


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৮ নভেম্বর ২০১৮ | ৬৪৬৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Debasis Bhattacharya | 015612.129.5667.238 (*) | ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:৩৬84150
  • sm, আমার মতো সাবস্ট্যান্ডার্ড তার্কিক আপনি খুব কম 'দেখেছেন' বলছেন, এবং সেটা আমার খুবই বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়েছে ।

    আপনি বাস্তবিকই অনেক কিছু কম কম 'দেখেন' । যেমন ধরুন, চিকিৎসা-বিজ্ঞানের কোর্সে যে অ্যানাটমি ফিজিওলজি বায়োকেমিস্ট্রি ফার্মাকোলজি মাইক্রোবায়োলজি থাকে, এটা আপনি দেখেননি । হোমিও চিকিৎসার সপক্ষে যে একটিও প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তাও আপনি দেখেননি । এমন কি, আপনার নিজের তর্কের 'স্ট্যান্ডা‌র্ড'-টা ঠিক কেমন হচ্ছে, সেটা পর্যন্ত নজর করে দেখেন নি ।

    তা, তাতেও সমস্যা ছিল না । অনেকেই তো কম দেখে, সেটা কিছু না । কিন্তু, বড় গলা করে হুমোপাখি আর বুজরুকি-চিকিৎসার পক্ষে 'স্ট্যাটিস্টিক্স' ফাটাবেন, আর ভাণ্ডাফোড় হয়ে গেলে কম কম দেখবেন আর লোককে গালি পাড়বেন, এর মধ্যে কিঞ্চিৎ প্রতারণা আছে । যে সব বুজরুকিকে সমর্থন করতে এখানে পণ্ডশ্রম করছেন, তাদের সঙ্গে আপনার এই প্রবৃত্তিটি বেশ মেলে ।

    আমাকে 'সাবস্ট্যান্ডার্ড' বলে গালি পাড়লেই যে নিজে অ-বুজরুক বলে প্রমাণিত হবেন, ব্যাপারটা বোধহয় অতখানি সরল নয়, তাই না ?

    প্রতিটি ওষুধ ও চিকিৎসা-পদ্ধতিরই কার্যকারিতার পরিসংখ্যান নেওয়া হয়, তার ফলাফলের বিশ্লেষণও করা হয় নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে, ঠিকই তো । কিন্তু, এই ওষুধ ও চিকিৎসা-পদ্ধতিগুলো আসে কোত্থেকে বলুন তো ? রুগিকে গাছ-পাথর-মাটি যা পারি খাইয়ে দিলুম, কিম্বা তার চোখ-মুখ-নাক যা পারি দমাদ্দম কেটে দিলুম, তার পর গম্ভীরভাবে লক্ষ করতে লাগলুম যে রোগ সারছে কিনা --- ব্যাপারটা কিন্তু ঠিক এই রকম নয়, জানেন তো ? ওই যে ওপরে কয়েকটি বিদ্যার নাম করলুম --- অ্যানাটমি ফিজিওলজি বায়োকেমিস্ট্রি ফার্মাকোলজি মাইক্রোবায়োলজি, ওই সব চর্চা থেকে পাওয়া জ্ঞান দিয়ে আন্দাজ করতে হয়, রুগির শরীরে ঠিক কী ঘটছে বা ঘটে থাকতে পারে, এবং তার পর আন্দাজ করতে হয়, কোন পথে চিকিৎসা এগোনো যেতে পারে । এত বিচার-বিবেচনার পর তবেই চিকিৎসা-সংক্রান্ত পরীক্ষানিরীক্ষায় নামা, এবং এতগুলো ধাপ পেরোলে তবেই তথ্য সংগ্রহ ও পরিসংখ্যায়নিক বিশ্লেষণের প্রশ্ন । ফলাফল থেকে যদি কার্যকারিতা প্রমাণ হয়, তাহলেও বিজ্ঞানের কাজ থামে না । তখন আসে কেন ওই ওষুধ বা চিকিতসা-পদ্ধতি কার্যকরী হল তার ব্যাখ্যার প্রশ্ন, এবং সেখানেও ওইসব বিদ্যাই ভরসা । বিজ্ঞান থেকে বুজরুকিকে আলাদা করতে হলে আগে তো আপনাকে এই প্রাথমিক কথাগুলো জানতে হবে !

    কেমোথেরাপি-র ব্যাপারে PT চমৎকার ব্যাখ্যা করলেন, তাতে আপনার খুব বেশি সুবিধে হল না দেখলাম ।

    না নিজে কিছু জানবেন, না অন্যের থেকে কিছু জানার চেষ্টা করবেন --- কথা বলতে আসেন কেন বলুন তো ? লোককে বিরক্ত করে ভাল আলোচনার বারোটা বাজানো, আর অকারণ কথাবার্তা বলে নিজেই সর্বসমক্ষে বোকা সাব্যস্ত হওয়া, এ দুটো ছাড়া তো আপনার আর কোনও উদ্দেশ্য খুঁজে পেলাম না ।
  • Debasis Bhattacharya | 015612.129.5667.238 (*) | ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:৫৯84151
  • এলেবেলে, ফাটাফাটি বাক্যি সাপ্লাই দিয়েছেন । কপিরাইট নেই যখন, জায়গামত ঝেড়ে দিতে কসুর করব না । তা, কাঁঠাল থেকে কফি পর্যন্ত বিশ্লেষণ করা তবু এক রকম, কিন্তু কাঁঠালের বিচি নিজের গলায় আটকালে সেই রাগে অন্যকে 'সাবস্ট্যান্ডা‌র্ড' বলা --- এটা কিন্তু ইউনিক ফেনোমেনন । সিমপ্লি ।
  • দোবেড়ের চ্যাং | 5690012.176.34.20 (*) | ২১ নভেম্বর ২০১৮ ১২:৫০84115
  • সেই কে যেন কয়েছিল- আপন বিশ্বাসের পক্ষে অজুহাতকেই যুক্তি বলা হয়।
  • PT | 340123.110.234523.10 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৩৯84182
  • "বিজ্ঞান যে দূষণ সৃষ্টি করছে"
    বিজ্ঞান মানুষ নহে তাই বিজ্ঞান দূষণ সৃষ্টি করিতে পারে না। মানুষ বিজ্ঞানের অপব্যবহার করিয়া দূষণ সৃষ্টি করে।

    পরমাণু শক্তি, রাইফেল, নার্ভ গ্যাস ইত্যাদি প্রভৃতি আবিষ্কারের পুর্বেও মানুষ পরস্পরকে হত্যা করিয়া আনন্দ লাভ করিয়াছে। কেষ্টা ব্যাটা কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শুরুর পূর্বেই সকলকে মারিয়া রাখিয়াছিলেন এবং তাহা স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে অর্জুনকে দেখাইয়াও দিয়াছিলেন। আরো অনেক পরে অজাতশত্রু রাজা হইয়া "পিতার ধর্ম শোণিতের স্রোতে" মুছিয়া ফেলিয়াছিলেন। অবিশ্যি সেসব কর্মকান্ডের জন্যে তৎকালের তরবারি-বিজ্ঞানীদের দায়ী করা যায় কিনা তাহা লইয়া একটি নবীন ন্যুরেম্বার্গ ট্রায়ালের ব্যব্স্থা করা যাইতে পারে।
  • sm | 2345.110.674512.236 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৪১84183
  • ভালো যাত্রার সংলাপ লিখতে পারেন তো।
  • :-) | 670112.193.780123.228 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩১84184
  • দূর ছাগল! বিজ্ঞানের জায়গায় ধর্ম বসালে একই হয় না সে ধর্ম তোমার যতই পেয়ারের চোদন হোক
  • ঠিক | 5690012.254.453412.194 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৪০84185
  • ধর্ম মানুষ, তাই ধর্ম দূষণ সৃষ্টি করিতে পারে - এ তো জলবত্তরলং।
  • :-) | 670112.193.780123.228 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৪২84186
  • ওহও পালে পালে....
  • dd | 670112.51.0123.2 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:০২84154
  • কর্ণাটকের আগের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া (কংরেস) খুব বিরল জাতির রাজনীতিক। উনি অনেকদিন ধরে চেষ্টা করেছেন কর্ণাটকে একটা "কুসংস্কার বিরোধী বিল" আনবেন, যাতে ঝাড় ফুঁক, ওঝা, ডাইনীতন্ত্র এবং আরো কিছু প্রচলিত কুৎসিত প্রথা যেমন ব্রাহ্মণদের উচ্ছিস্টের উপর গড়াগড়ি দেওয়া - এইসব ব্যান করা যায়।

    কিন্তু মূলতঃ বিজেপি'র বিরোধিতা প্লাস দলেরই এক অংশের বিরোধিতা - কিছুতেই মেজোরিটি সমর্থন যোগার করতে পারেন নি।
  • S | 90067.146.9004512.46 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:১৫84155
  • এতো বড় লেখা পড়ে ওঠা তো মুশকিল। তবুও ঐ সর্ব্ঘটের কাঁঠালিকলার মতন এখানেও কিছু কথা লিখে দিয়ে যাই।

    এক, ধর্মকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার কথা শুনে বেশ ভয়ই পেয়ে গেলাম। কারণ এর পরে আর কি কি নিষিদ্ধ হতে পারে সেটাই ভাবছি। রুশ দেশে ধর্মাচারণ নিষিদ্ধ থাকলেও লেলিল-স্ট্যালিনের মুর্তি কম বানানো হয়নি।

    দুই, "চিকিৎসা সংক্রান্ত বিজ্ঞান স্ট্যাটিস্টিক্স এর ওপর ভিত্তি করেই দাঁড়িয়ে আছে"। আমার সঙ্গে এসেমের যতই ঝগড়া থাকুক না কেন, এই কথাটা অনেকাংশেই সত্যি। যেকোনো মেডিকাল জার্নাল খুলে দেখে নিন।

    তিন, "বিজ্ঞান ক্ষতি করেনা। বিজ্ঞানের অপব্যবহার করে অন্যের ক্ষতি করে ক্ষমতাশালী মানুষ।"
    পিটিদার এই কথাটা পড়ে প্রথমে মনে হইতেই পারে যে উনি বলছেন যে অস্ত্র লোক মারে না, মারে অস্ত্র যে ব্যবহার করছে সে। কিন্তু কথাটা ঠিক তা নয়। "পরমাণু অস্ত্র,বন্দুক, নার্ভ গ্যাস" এগুলো সবই বিজ্ঞানের অপব্যবহার, বিজ্ঞান নয়।
  • PT | 340123.110.234523.10 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:২০84187
  • নাঃ কিস্যু বোঝেননি।
    অযোধ্যা কিম্বা মক্কায় দাঁড়িয়ে ধর্ম সংক্রান্ত কোন প্রশ্ন করে দেখবেন আপনার কি হাল হয়। হার্ভার্ড কিম্বা অক্সফোর্ডে দাঁড়িয়ে কোন বৈজ্ঞানিক তত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন করে দেখবেন আপনার কি হাল হয়।
    চার্চ ও গ্যালেলিও অর্থাৎ কিনা ধর্ম ও বিজ্ঞানের দ্বন্দ্বের গপ্প বিস্মৃত হয়েছেন এর মধ্যেই?
    গ্যালেলিও "ঠিক" এটা মানতে চার্চের ৩৫০ বছর লেগেছে-কেননা না মেনে উপায় ছিল না। কেননা গ্যালেলিওকে ভুল (কিম্বা ঠিক) প্রমাণ করার কোন পদ্ধতিই ধর্মের ধ্বজাধারীদের কাছে নেই।
    সঠিক প্রমাণ দিলে সকলে কালকে সকালেই কিন্তু গ্যালেলিওকে বাতিল করে কলকাতার কেসিপালকে মেনে নেবে।
  • sm | 7845.15.786712.47 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:২৬84188
  • কি মুশকিল!বন্দুক তো আপন পর বিচার করেনা। মানুষ দেখলেই মেরে ফেলে।এই যা তফাৎ।
  • syandi | 230123.78.673423.86 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:২৮84189
  • পিটি, স্পট অন!
  • amit | 340123.0.34.2 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৪২84156
  • S-কে,

    "চিকিৎসা সংক্রান্ত বিজ্ঞান স্ট্যাটিস্টিক্স এর ওপর ভিত্তি করেই দাঁড়িয়ে আছে" আমার মনে হয় কথাটা অনেকটা অন্ধের হাতি দেখার মতো। স্ট্যাটিস্টিক্স একটা ভেরি ইম্পরট্যান্ট কম্পোনেন্ট ১০০% সত্যি , কিন্তু সেটাই একমাত্র কম্পোনেন্ট নয়। স্ট্যাটিস্টিক্স ওই ডাটার সাথে সেই ওষুধের কেমিকাল এনালাইসিস, সাইড ইফেক্ট এনালাইসিস, কিভাবে সেটা কাজ করে তার ব্যাখ্যা, এই সবকিছু মিলিয়ে একটা ওষুধ এর কার্যকারিতা বা সেটা মার্কেট এ এলাও করার একটা স্ট্যান্ডার্ড পদ্ধতি কাজ করে। সেটা যে চরম সত্য তা নয় , কিন্তু একটা স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন মেথড আছে। অনেক সময়েই সাইড ইফেক্ট এর ক্ষতি বুঝতে অনেক সময় লেগে যায়, তাই অনেক ওষুধ মার্কেট থেকে তুলেও নেওয়া হয়। ইটা একটা বংগোইং প্রসেস, কিন্তু একটা মেথডিক্যাল এপ্রোচ নেওয়া হয়।

    তার সাথে ঝাড় ফুঁককে গুলিয়ে ফেলাটা জাস্ট একটু বাড়াবাড়ি রকমের ছড়ানো।
  • sm | 2345.110.894512.250 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৭84157
  • এবার কিছুটা বুইতে পারছি,দেবাশীষ এর খামতি কোথায়?চিকিৎসা বিজ্ঞান হলো একটি এপ্লায়েড সায়েন্স।এনাটমি, বায়োকেমিস্ট্রি,ফার্মাকোলজি এর কতকগুলি ভাগ মাত্র।
    মূল লক্ষ্য হলো পেশেন্ট কিওর।
    ধরাযাক বায়োকেমিস্ট্রি।এটা কেমিস্ট্রির শাখা।বিভিন্ন বাইওকেমিকাল টেস্ট, এই বিদ্যা থেকে প্রাপ্ত।
    ধরাযাক এলিজা টেস্ট। এটি টিবি,এইডস ডেঙ্গি বিভিন্ন রকম ডিজিস ডাইয়াগ্নোসিস এর জন্য ব্যবহার করা যায়।
    সেনসিটিভিটি,স্পেসিফিসিটি বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে ভিন্ন।অর্থাৎ কোন টেস্ট কতটা ফলদায়ী, আল্টিমেটলি স্ট্যাটিস্টিকস এর ওপর নির্ভর শীল।বোঝা গেল?
    মাইক্রোবায়োলজি ও তাই। ফার্মাকোলজি তো ঔষধের ওপর অধীত বিদ্যা।এর প্রায়োগিক দিকটাও ওই পরিসংখ্যান বিদ্যার ওপর নির্ভরশীল।
    দুই, আমি এলোপ্যাথি,হোমিওপ্যাথি,আয়ুর্বেদ কূটকচালির ওপর ফোকাস করি না। যেকোনো সেন্সিবল লোক ই করবে না। বিজ্ঞান কোন জিনিস কেই তুচ্ছ জ্ঞান করে না।অল্প জলের পুঁটি মাছরাই খলবল বেশি করে।
    মডার্ন মেডিসিন এর অধিকাংশ ঔষধ ই গাছ গাছড়া থেকে নেওয়া। সে মরফিন হোক, ভিনক্রিস্টিন,ডিজিটালিস হোক বা আর্টিমিসিনিন হোক।সুতরাং গাছ গাছড়া খালি আয়ুর্বেদ এর সম্পত্তি বলে মনে করি না।
    এপ্রসঙ্গে বর্তমান যুগে ম্যালেরিয়ার সবচেয়ে কার্যকর ঔষধের নাম করতে চাই। আর্টিমিসিনিন।এটি বহুযুগ ধরে চাইনিজ মেডিসিন হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
    এটিকে পুনরাবিষ্কার করেই, ইও যু ইউ নামক মহিলা বিজ্ঞানী নোবেল পান।যদি চাইনিজ মেডিসিন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হতো বা ওইবিজ্ঞানী শ্রদ্ধাশীল না হতেন,তাহলে আজ ওই ঔষধ আবিষ্কার হতো না বা কোটি কোটি মানুষের প্রাণ বাঁচত না।
    ইনফ্যাক্ট কুইনিন ও গাছ গাছড়া থেকেই এসেছে।
    এবার আর একটা ঘটনা বলি।প্রায় তিনশো বছর আগে জেনার কাউ পক্স রোগীদেরদের গুটির এক্সট্রাক্ট নিয়ে ভ্যাকসিন দিয়েছিলেন।অনেকটা জড়িবুটি দেওয়া বা রোগীকে গাছ পাথর দেবার মতোই ঘটনা।
    বর্তমান দুনিয়ায় এথিক্স কমিটি আছে, এফ ডি এআছে। কোন ঔষধ ব্যবহার করার আগে তাদের এপ্রুভাল নেওয়া হয়।প্রথমে এনিম্যাল ও তার পর হিউম্যান ভলান্টিয়ার এর ওপর প্রয়োগ করা হয়।
    এই প্রায়োগিক দিকটি সব রকম সায়েন্স,সিউডোসাইন্স এর ক্ষেত্রে এপ্লিকেবল হওয়া উচিত বলেই মনে করি।
    তিন, আমার প্রশ্ন ছিল নার্ভ গ্যাস বা বন্দুক বিজ্ঞান কি কি সৎ উদ্দেশ্যে বানাচ্ছিল?
    তা, পিটি দুম করে ক্লোরামবিউসিল এর আবিষ্কার এর কথা এনে ফেললেন।এটাকেই বলে ফোকাস ঘুরিয়ে দেবার চেষ্টা।পিটির এই কৌশল দুর্দান্ত ভাবে করায়ত্ব।
  • syandi | 230123.78.673423.86 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৯84190
  • এসেম, আপনার ভাষ্য অনুযায়ী সো কলড গডম্যানরা হিংসা ছড়ালে দোষটা তখন ধর্মের ঘাড়ে দেওয়া যায় না কারণ গডম্যানরা দোষেগুণে মিলিয়ে মানুষ। আপনি ধর্মপ্রাণ মানুষদেরকে জিজ্ঞাসা করে দেখবেন তো যে ওঁরা নিজের নিজের ধর্মের গডম্যান বা প্রফেটদের কোনো দোষ ছিল বলে স্বীকার করেন কিনা। আপনার যুক্তি অনুসারে আটমবম বা অন্য মাসকিলিং অস্ত্রশস্ত্র- এর জন্যও তাহলে বিজ্ঞানকে দায়ী করা যায় না, সেক্ষেত্রে বরং সংশ্লিষ্ট বৈজ্ঞানিকটিকে বা ঐ বৈজ্ঞানিককে বাধ্য করা পলিটিশিয়ানকে দায়ী করা উচিৎ এবং স্মর্তব্য় যে বৈজ্ঞানিক বা পলিটিশিয়ানও দোষেগুণে মিলিয়ে মানুষ ঃ-)
  • S | 90067.146.9004512.46 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৮84158
  • অমিত, এসেম আপনার কথার উত্তর দিয়ে দিয়েছেন তাঁর প্রথম পয়েন্টটিতে। আপনার শেষ কথাটার সাথে সম্পূর্ণ একমত।

    আপনি লিখেছেন বটে যে "আমার মনে হয় কথাটা অনেকটা অন্ধের হাতি দেখার মতো।" কিন্তু তারপরে একটা প্যারা ধরে স্ট্যাটিস্টিক্স কেন ইম্পর্ট্যান্ট সেটাই লিখেছেন। শুধুমাত্র ওষুধ এর কার্যকারিতাই নয়, ডায়গনস্টিক্সেও তো ব্যবহার হচ্ছে। আপনি আরো ভালো জানবেন।
  • Debasis Bhattacharya | 015612.129.5667.214 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:০৬84191
  • এই থ্রেডে প্রচুর আলোচনা হয়েছে, তার মধ্যেই অনেকই দরকারি কথা ছিল, আবার আরও অনেক কিছুই হয়ত না হলেও চলত। কোনও একটি কথা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবার পরেও সবাই সব সময় তা বুঝতে পারেন না, ফলে যে কথার আর দরকার ছিল না তা চলতেই থাকে, এ এক সমস্যা। যাই হোক, তবু কাজের কথাও কিছু তো হয়েইছে। লম্বা কথোপকথন মোটের ওপর ভাল ব্যাপার, তার সবটাই প্রয়োজনীয় না হলেও।

    একটা দুঃখ থেকেই গেল। আমার মূল আলোচনাটা ছিল আইন নিয়ে, কিন্তু জুরিস্প্রুডেন্সের খুঁটিনাটি নিয়ে প্রায় কিছুই কথা হল না। বিরল দু-তিনজন সে নিয়ে জানতে চেয়েছেন, বোধহয় তাঁদেরকে সন্তুষ্ট করতে পেরেছি। একজনই শুধু বাকি আছেন।

    amit, আপনি জানতে চেয়েছেন মহারাষ্ট্রের কুসংস্কারবিরোধী আইনটি নিয়ে। এটির পুরো পিডিএফ অন্তর্জালে পেয়ে যাবেন। তা ছাড়া, উইকি-তেও এ নিয়ে একটা এন্ট্রি আছে, সেখান থেকে অনেকই তথ্য পাবেন, এবং আরও তথ্যের উৎসও পাবেন। আর আছে নরেন্দ্র দাভোলকর-এর সংগঠন 'মহারাষ্ট্র অন্ধশ্রদ্ধা নির্মূলন সমিতি'-র নিজস্ব ওয়েবসাইট, এটিও অবশ্যই দেখবেন। এই আইনটির নানা দিক নিয়ে 'দেশকাল ভাবনা' পত্রিকায় আমি একটি লেখা লিখেছিলাম, চাইলে তাও পেতে পারেন। আইনটির নির্দিষ্ট নাম --- "Maharashtra Prevention and Eradication of Human Sacrifice and other Inhuman, Evil and Aghori Practices and Black Magic Act, 2013" । এই নামেই গুগল-এ খুঁজবেন ।

    sm, আপনার মাথার মধ্যে সত্যি-মিথ্যে-বিজ্ঞান-বুজরুকি-তুকতাক-পরিসংখ্যান-হুমো-কেমো সব ঘুলিয়ে ঘ্যাঁট হয়ে গ্র্যান্ড ইউনিফায়েড ভাটতত্ত্ব হয়ে এঁটে বসে গেছে, আগামি তিনমাস সকাল বিকেল আর্নিকা থার্টি না খেলে কমবে নাকো। অন্যথায়, মধু ও মকরধ্বজ সহযোগে কাঁঠালপাতাও চলিবেক । অবশ্য, এ কথা বলে আপনাকে থামান যাবে বলে মনে হয় না, খুব সম্ভবত একে আপনি আরও কাঁঠালপাতা চিবোবার অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করবেন । তা চিবোন, আপনার প্রমাণ-রহিত বিবৃতি ও লজ্জারহিত উৎসাহ --- দুটিই অতি অপূর্ব বস্তু। পরে আবার দেখা হবে।

    চলি, সবাই ভাল থাকবেন । এই ব্লগসাইটে ভুয়ো চিকিৎসা নিয়ে একটি বিস্তারিত বড় লেখা দেবার ইচ্ছে রইল।
  • amit | 340123.0.34.2 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৪৭84159
  • S-, আমি ওষুধের ব্যাপারে একদমই কিছু জানিনা, আমার ফিল্ড একদম আলাদা, পুরোপুরি উল্টোদিকে। কিন্তু ইভেন অন্যান্য ফিল্ড এও যে কোনো গবেষণা একটা স্ট্যান্ডার্ড মেথডিক্যাল এপ্রোচ এন্ড ভেরিফিকেশন এর মাধ্যমে এ করা হয়,। স্ট্যাটিসটিক্স তার একটা অংশ মাত্র, অবশ্যি অতি দরকারি পার্ট, কিন্তু সব নয়। জাস্ট ঝাড়ফুঁক করে রোগী সেরে যাচ্ছে,, মনিপুলেটেড স্ট্যাটিসটিক্স দিয়ে সেটা কোনোভাবে দেখানো গেলেও সেটা আদৌ গবেষণা নয়, কারণ কিভাবে সেটা হচ্ছে সেটা প্রমান করা যাচ্ছে না। সেটাই জাস্ট বলার।

    আর অন্যদেরকে খোঁচা না মেরেও বা ছোট না করেও আলোচনা ভালো হয়, সেটা এখানে আপনি এবং মোটামুটি ৯৯-% বাকি সবাই বোঝেন, । বাকি ১ % নিয়ে আর কি বলা যায়। :) খিল্লি তো রেগুলার দেখা যাচ্ছে।
  • S | 90067.146.9004512.46 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৫২84160
  • কজালিটি তো একটা ব্যাপার বটেই। দুটো ইভেন্টের মধ্যে কোরিলেশন আছে মানেই তারা রিলেটেড হবে, এমন কোনো মানে নেই।
  • sm | 7845.15.678912.131 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৫২84193
  • ঠিক আছে একটু বেশি রেস্ট নিয়ে কয়েক দিন পরেই না হয় আসুন।
    উফফ, বাঁচা গেল। কোত্থেকে যে আসে সব!
  • সিকি | 90056.93.128912.17 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৫২84192
  • দেবাশিস, অপেক্ষায় রইলাম।
  • PT | 340123.110.234523.18 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৫৫84161
  • ফোকাস ঘোরানোর মত কন্স্পিরেসি থিওরি বানানোর কোন প্রয়োজন নেই কেননা সেরকম কোন চেষ্টা হয়নি।

    একটু ইতিহাস ঘাঁটা যাকঃ
    Mustard agent was possibly developed as early as 1822 by César-Mansuète Despretz (1798–1863). Despretz described the reaction of sulfur dichloride and ethylene but never made mention of any irritating properties of the reaction product. In 1854, another French chemist, Alfred Riche (1829–1908), repeated this procedure, also without describing any adverse physiological properties. In 1860, the British scientist Frederick Guthrie synthesized and characterized the mustard agent compound and noted its irritating properties, especially in tasting.

    এরা কেউ এই যৌগ দিয়ে মানুষ মারার কথা ভাবেনি। যারা ভেবেছিল তারা নার্ভ গ্যাস না পেলেও সেরেফ লাঠিপেটা করেই মানুষ মারতঃ
    Mustard agent was first used effectively in World War I by the German army against British and Canadian soldiers near Ypres, Belgium, in 1917 and later also against the French Second Army.

    তাহলে তো ইউরেনিয়াম আবিষ্কারকর্তা Martin Heinrich Klaproth-কে হিরোসিমার জন্য দায়ী করতে হয়!!
  • বাঙাল | 676712.137.673412.48 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৫৯84194
  • একটি বৈজ্ঞানিক কৌতূহল -কেসি পালের তত্ত্বে ভুল কোথায়?
  • খিকজ | 5690012.135.4590012.134 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:১২84162
  • "বিশেষ একজনকে কাঠালপাতা সাপ্লাই দিলে কিন্তু লেখা আর এগোবে না, খেউর-ই হবে শুধু। বহু টোয়িতে তেনার বিবিধ মণিমুক্তো ছড়িয়ে আছে, এতো শুধু স্যাম্পল দেখলেন এখানে, একটু খুঁজলেই আরো প্রচুর আবর্জনা পেয়ে যাবেন, এতই সহজলভ্য যে বেশি খুজতেও হবে না :) :) "

    "অন্যদেরকে খোঁচা না মেরেও বা ছোট না করেও আলোচনা ভালো হয়, সেটা এখানে আপনি এবং মোটামুটি ৯৯-% বাকি সবাই বোঝেন, ।"

    :) :)
  • sm | 2345.110.674512.14 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:৪৪84163
  • পিটি, আপনি তো আমার কথাই রিপিট করছেন। মূল প্রতিপাদ্য ছিল ধর্ম ও বিজ্ঞান কাকে নিষিদ্ধ করা হবে সেই নিয়ে।
    আমার বক্তব্য ছিল, কোনোটাকেই নয়।কারণ দুটোই মানুষের সৃষ্টি।দুটোই মানুষ মারে। দুটোতেই প্রয়োগে গন্ডগোল আছে,মাত্র।
    আপনি খালি বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বলেছেন এর কুফলের জন্য কিছু মানুষ দায়ী।কিন্তু ধর্মের ক্ষেত্রে সেটা বলেন নি।
    নার্ভ গ্যাস ও বন্দুক ও এই প্রসঙ্গে আনা। দেখাই যাচ্ছে বেশ কিছু বিজ্ঞানী এর ক্ষতিকারক দিকটি চেপে গেছিলেন।
    অর্থাৎ সেই পুরোনো উক্তি ম্যালেরিয়া, মশা,বিজ্ঞান, বক্তৃতা ও জমাজল।
  • | 670112.220.890123.165 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:৪৬84164
  • খি খি পুরো শালুক চিনেছে গোপালঠাকুর কেস হচ্ছে। আমরা আবার সেই পাখিই সভ্যতার শত্রু বা যে ব্যটা প্রথমে আগুন জ্বালিয়েছিল সেইই সভ্যতার সবচেঅড় শত্রু মোডে চলে যাচ্ছি।

    যাগগে দেবাশীষ, অনেক ধন্যবাদ জানবেন।
  • PT | 340123.110.234523.15 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৬:৪৭84165
  • কি আশ্চর্য!! বাঁশ গজিয়েছিল বাঁশঝাড়ে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের কারণে। এক কেষ্টা ব্যাটা তাই থেকে বাঁশী বানিয়ে জগত মাতাল আর বজ্জাতেরা তাই দিয়ে লাঠি বানিয়ে মানুষ পেটাল।
    দোষ হল প্রকৃতিরঃ কেন সে ব্যাটা বাঁশের জন্ম দিয়েছিল!!

    "নার্ভ গ্যাস ও বন্দুক ও এই প্রসঙ্গে আনা। দেখাই যাচ্ছে বেশ কিছু বিজ্ঞানী এর ক্ষতিকারক দিকটি চেপে গেছিলেন।"
    এক্কেবারে ভুলভাল কথা। "ClCH2CH2SCH2CH2Cl (intensely poisonous)" বাক্যটি ১৯১২ সালের একটি গবেষণাপত্রে প্রকাশিত (Journal of the Chemical Society, Transactions (1912), 101, 1583-90)। খুঁজলে আরো পুরনো গবেষণাপ্ত্র পাওয়া যাবে। অর্থাৎ যারা এটাকে যুদ্ধে ব্যবহার করেছিল তারা জেনেই করেছিল।

    "ইনফ্যাক্ট বাজার চালিত অনেক ওষুধ ই কিভাবে কাজ করে বিজ্ঞানীরা জানে না।"
    সত্যি? এতো এক্কেবারে বাপী বাড়ি যা শট। তবে "ডাক্তারেরা জানে না"-সেটা হতেই পারে।
  • sm | 2345.110.454512.61 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:০৬84166
  • আপনি ছাত্র পড়ান?
    বাজার চালিত বহু ঔষধ এরই একজাক্ট মেকানিজম অফ একশন জানা নেই বিজ্ঞানী দের। ইনফ্যাক্ট ডায়বেটিস , হাইপারটেনশন, ক্যানসার ,ডিপ্রেশন ,রিউমাটোইড আরথরিটিস,এপিলেপসি কিভাবে হয় তাই ই জানা নেই।কিছু বাইওকেমিকাল চেঞ্জ, কিছু সেলুলার, মলিকুলার পরিবর্তন অবসার্ভ করে ধারণা করা হয় মাত্র।সেখান থেকেই নিত্য নতুন ধারণা করা হয় ।যে ধারণা পরিবর্তনশীল ও বিজ্ঞানীরা খুঁজে চলেছেন প্রতিনিয়ত।
    তার পর, একটি ওষুধ মাল্টিপল টার্গেটে কাজ করে।
    অনেকসময় দেখাযায় একটি কার্ডিয়াক প্রবলেম এর জন্য ব্যবহৃত ঔষধ এর সাইড এফেক্ট রক্তে শর্করা কমিয়ে দিচ্ছে। হই হই করে সেটি ডায়াবেটিস এই ওষুধ হিসেবে চালু হয়ে গেলো।
  • PT | 340123.110.234523.15 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:২০84167
  • যা বলছেন তার সব কিছু নিয়েই গুচ্ছ গুচ্ছ বই লেখা হয়েছে molecular level- ব্যাখ্যা করে। ওসব MSc-র বাচ্চারা পড়ে এখন।
    আপনি এব্যাপারে সত্যি কিস্যু জানেন না!!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন