এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • ভোট পর্যালোচনা- ২০১৯, পশ্চিমবঙ্গ

    সোমনাথ রায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২৯ মে ২০১৯ | ১৬৭৯৮ বার পঠিত
  • ক) ঐতিহাসিক ভুল


    আমরা যে পরিমন্ডলে বড়ো হয়েছি, সেখানে এমন একটি দল আছে, যাকে আমরা বেশ কিছুদিন গিলতেও পারি না এবং ওগড়াতেও পারিনা। সেই দলটি ঐতিহাসিক ভুল করে থাকে। প্রধানমন্ত্রিত্ব বিতর্ক থেকে নাগেরবাজার প্যাক্ট বিভিন্ন নিদর্শন তার। তবে দলের মাথারা আত্মসমালোচনা করেন। নিজের সমালোচনা নিজে করার একটা সুবিধের দিক হল তাঁদের অন্যের সমালোচনা স্বীকার  করতে হয় না। ফলে এই দলটির ব্যাপারে আমাদের আর কিছু তেমন এখন বিশেষ লিখে লাভ নেই। তাও শুরুতে গণেশপুজোর মতন রাখা রইল। বাকি উপাচারে এতদাধিপতয়ে শ্রীবিষ্ণবের মতন ফুল দেব মাঝে মাঝে।


    খ) সংঘ নাকি সংগঠন


    যেহেতু আলোচনা পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে আর এই বক্তব্য লোকসভা ভোটের শোকসভায় পাঠের জন্য পাঠানো হচ্ছে, ফলতঃ সুরতহালে কী এল জানতে চাইব বৈ কী! প্রথমে দেখার এই ১৮র ৪২ কি সংঘের কেরামতিতে হতে পারে? সংঘ পরিবার, হিন্দুত্ববাদী এই গোষ্ঠীটি বাংলায় বহুবছর ক্রিয়াশীল, বাকি ভারতের মতন। তবে মধ্যিখানে বাম আন্দোলনের ঘনঘটায় এদের টার্গেট অডিয়েন্স অন্য রেখায় প্রতিসৃত হয়েছিল। কিন্তু কলকাতাকেন্দ্রিকতা থেকে অফ ফোকাস বিভিন্ন অংশে গোকুলে বেড়েছে অবশ্যই। আর, দুম করে ভোটে জেতার থেকে বেশি কিছু তাদের লক্ষ্য থাকায় সামাজিক কাজকর্মে অংশীদার হওয়ার কাজ চালিয়ে গেছে। বিশ্বায়নের আগে আমরা মণিমেলা দেখেছি, বিজ্ঞান জাঠা দেখেছি, এমন কী পাড়ার ক্লাবগুলোর সক্রিয়তা দেখেছি। এখন সেই জায়গায় পোটেনশিয়াল অর্গানাইজাররা অর্কুট-ফেসবুক-টিন্ডার-হোয়াটস অ্যাপ করেন। ফলে সামাজিক পরিসরে সংগঠন ডুবে গেছে, সংঘের আলো উজ্জ্বল হয়েছে। হালে সরস্বতী বিদ্যামন্দির লোকের চোখে টোখে পড়ছে, কিন্তু সক্রিয়তা এক মাত্রায় বহুবছর ধরে থেকেছে। এই দিয়ে ভোটে জেতার সবটা হয়েছে মনে হয় না, কিন্তু কিছুটা হয় নি এমন নিশ্চয়ই নয়। সঙ্ঘারামে নিশ্চিতভাবে সংগঠনের ভিতপুজো হয়েছে। তাহলে বাকি থাকে সংগঠন। একটি সংগঠন ভালো চললে তার ভোট বাড়ে। বিশেষতঃ নতুন খেলতে নামা দল জেতে আর পুরোনো দল হারে ডিফেন্স-মিডফিল্ড-ফরওয়ার্ডের অর্গানাইজেশনের তারতম্য ঘটিয়েই। তার মানে ২ থেকে ১৮য় হেভি অফেন্স। ৩৪ থেকে ২২ এ ডিফেন্স ঝুলেছে, যতই ভোটভাগ বাড়ুক টাড়ুক না কেন। বল পজেশন তখনই কাজের যখন তা গোলে বাড়ে।  মনে রাখা দরকার, আমরা ২৩৫, ওরা ৩০ এর ভোটেও ৩৫% এর বেশি ভোট ওদের ভাগে ছিল।  ভোটকে সিটে পরিণত করার মধ্যে সাংগঠনিক কেরামতি থাকে।


    সিপিএমের ভাগে ২ থেকে শূন্য নিয়ে বেশি কিছু বলব না। তবে প্রকৃতি শূন্যস্থান পূরণ করে বলে শিশুবিজ্ঞানে লেখা ছিল। এটুকু খেয়াল করা অবশ্য যেতেই পারে যে ২০০৯এ বামশক্তি যে ১৬টি আসনে জিতেছিল, তার ১১টি এবার বিজেপির ভাগে পড়েছে। উল্টোদিকে দেখি  ২০০৯এ পাওয়া আসন, যা বিজেপি তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে ২০১৯এ, তা হল হুগলি, ব্যারাকপুর, বনগাঁ আর রানাঘাট। এর মধ্যে ব্যারাকপুর আসনটা দ্রষ্টব্য, সেখানে তৃণমূলের সংগঠনের মূল লোকটি বিজেপিতে গিয়ে জিতেছেন। বনগাঁ আর রানাঘাটে নাগরিকত্ব বিলের ইস্যু ছিল, যা নিয়ে আমরা পরের পর্বগুলিতে আলোচনা করছি। ফলে বিজেপির ভোট এবং আসন দুইই বেড়ে যাওয়া, স্থানীয় সরকারে ক্ষমতাসীন দলের নাকের ডগা থেকে মার্জিনাল ভোটে একাধিক লোকসভা আসন বের করা, প্রার্থী প্রচার করতে পারেন নি, এমন জায়গাতেও ফল উলটে দেওয়া- এইসবই সাংগঠনিক কৃতিত্ব হিসেবে দেখা উচিত।


    গ) আইটি সেলের ভাইটি


    তিনি আমাদের হোয়্যাটস অ্যাপ করে গেছেন। আমরা প্রথমে পড়ি নি, তারপর খুলে দেখেছি মমতা ব্যানার্জির কার্টুন, তারপর স্কুলমেটদের গ্রুপে ফরওয়ার্ড করেছি। তারপর একদিন ট্রেনের তাসের আড্ডায় বিশরপাড়ার রবি বলেছে মেটিয়াবুরুজে অপহরণ নিয়ে একটা হেভি প্রতিবেদন এসেছে, সব কাগজ চেপে যাচ্ছে। বলেছি ফরওয়ার্ড করে দে তো। এই ভাবে বিছন থেকে দই জমেছে। কিছুক্ষণ আগে, আমার অফিসের এক সুইপার দেখলাম আরেকজনকে তার ফোন থেকে রাজনৈতিক খবর পড়ে শোনাচ্ছেন। দ্বিতীয়জনের কাছে স্মার্টফোন নেই মনে হল। তো হোয়াটস অ্যাপের ফরওয়ার্ড আমরা কাকে পাঠাচ্ছি আর কার থেকেই বা পাচ্ছি? কার থেকে নয়? পিসতুতো দিদি-সহকর্মী-মুদির দোকানমেট-স্কুলের বন্ধু ইত্যাদি, প্রভৃতি। আমাদের চেনা লোকজনই এগুলো পাঠাচ্ছে, যাদের রাজনৈতিক আনুগত্য-টত্যও নেই, মিডিয়াওলাদের মতন খবর বেচে খাবার জোটানোর দায় নেই। টিভিতে এক বিশেষ-অজ্ঞ এসে গাঁক গাঁক করে বলে গ্যালো- এন আর সি হওয়ায় নাকি আসামে হিন্দুরাই ক্যাম্পে ঢুকছে, তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সে নিশ্চয়ই তৃণমূলের কমিটিতে আছে, আমি হোয়াটস অ্যাপ পেয়েছি সীমান্ত থেকে যে সব লস্কররা ঢুকে আশেপাশের বস্তিতে থাকছে, এন আর সি হলে তাদের চুন চুনকে তিহার জেলে পোড়া হবে। আমার ভায়রা আমাকে পাঠিয়েছে, সে তৃণমূল বা বিজেপি নয় বরং বামমনস্ক। এইভাবে সাইবার স্পেসে, আমাদের নিজস্ব আলাপচারিতায় এমন এক সংগঠন গড়ে উঠেছে যেখানে নম্বর দিলে বিজেপি ৯৫ তৃণমূল -২০ আর মমতা ব্যানার্জির মিম বানিয়ে সিপিএম সেখানেও বিজেপির খাতায় বাকি ৫ নম্বর উঠিয়ে দিয়েছে। কিন্তু, কথা হল হোয়াটস অ্যাপ কার থেকে পাই? কাকে পাঠাই? আইটির ভাইটি কে বা কারা আমি জানিনা, কিন্তু তাঁর কাজ ভাইরাল হয়ে আমার কাছে আসে আমার চেনাশুনো লোকের থেকেই, পাঠাই ও তাদেরকেই। চেনাশুনো লোক আমাদের জন্য তারাই যাদের সাথে দেখাশোনা হয়। আশেপাশের লোক, এই শহর বা গঞ্জের, নইলে ট্রেনে একটা দুটো স্টেশন, বাসে কুড়ি মিনিট দূরে থাকে এরকম। ফলে এক ভৌগোলিক পরিসরে এই সাইবার স্পেস ক্রিয়ারত থাকে। হোয়্যাটস অ্যাপের সাংগঠনিক ক্ষমতাও ভৌগোলিক। মাটিতে চলা সংগঠন তার কর্মীদের হাত ধরে বুথ-ওয়ার্ড-পঞ্চায়েত-ব্লক ধরে গড়ে ওঠে, শক্তিশালী হয়, শক্তি ক্ষয়ও করে। মেসেঞ্জার-হোয়্যাটস অ্যাপের স্মার্ট সংগঠন, স্থানীয় কর্মীর ভূমি ঊর্ধ্বে ভোটের প্রচার চালিয়ে গেছে সেই ভৌগোলিক পরিসরেই, মূলতঃ।


    ঘ) ভৌগোলিক ঠিক




    চিত্র ১- বিধানসভা ভিত্তিক এগিয়ে থাকার হিসেব (লাল- বিজেপি, নীল- তৃণমূল)


    চিত্র ১ -এ রাজ্যের লোকসভা ভোটের ফল রাখা রইল।  একটু অন্যরকম দেখাচ্ছে, তার মূল কারণ বিধানসভা কেন্দ্রে কে এগিয়ে সেই হিসেব ধরে এই ম্যাপপয়েন্টিং করা হয়েছে। এছাড়া কংগ্রেসের এগিয়ে থাকা বা  কংগ্রেস সিগিনিফিকেন্ট এই এলাকাগুলি আমরা ম্যাপে সাদা রেখে গেছি ধরিনি ( নির্দিষ্ট করে- মালদার দুটো লোকসভা আর বহরমপুর), আর মূল ম্যাপে গা ঘেঁষাঘেঁষি ব্যারাকপুর আর হুগলি কেন্দ্রের বিধানসভাগুলি ভালো করে বোঝা যাচ্ছিল না (এই অঞ্চল জনগনত্বে পৃথিবীর সামনের সারিতে)। মোটের ওপর নীল রঙে তৃণমূলের জেতা আর লাল রঙে বিজেপির জেতা বিধানসভা দেওয়া আছে। যেটা দেখার, উত্তরবঙ্গে দুটো আর দক্ষিণবঙ্গে দুটো নীল প্যাচ ছাড়া, বাকি সমস্ত লাল বা নীল দাগ দলাবেঁধে আছে , মানে বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধরে হয় টানা বিজেপি এগিয়ে, নতুবা তৃণমূল। এই চারটে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া জায়গা নিয়ে আমরা পরে কথা বলব।


    কিন্তু মূল ট্রেন্ড যেটা বিজেপি যেখানে এগোচ্ছে সেখানে আশেপাশের বেশ বড়ো অঞ্চল ধরে বিজেপি এগোচ্ছে, অঞ্চলগুলো এত বড়ো যে তার মধ্যে বিভিন্ন জনগোষ্ঠী, বিভিন্ন ধর্মগোষ্ঠী শহর-গ্রাম ইত্যাদি পড়ছে, মানে ধরুন দেড়খানা বা তিনখানা জেলা ধরে একটা বিজেপি জেতা পরিসর। আবার তৃণমূলও তাই। এই জেতার পরিসরটা একাধিক লোকসভাকে কাটছে। ধরুন ব্যারাকপুরের মধ্যে আমডাঙা তৃণমূল এগিয়ে তার পাশে খড়দা, অশোকনগর, বারাসত অন্য লোকসভাতে হলেও তৃণমূল জিতছে। দমদম আর বারাসতের দুটো বিজেপি বিধানসভা যথাক্রমে রাজারহাট গোপালপুর আর বিধাননগর- গায়ে গায়ে। আবার ঘাটালের ডেবরাতে বিজেপি এগিয়ে তার পাশেই তো পাঁশকুড়া পশ্চিম আর মেদিনীপুর বিজেপির থাকছে। এই ধারাটা গোটা রাজ্য জুড়েই প্রায়। এর উত্তর অধীর চৌধুরীর পকেট দিয়ে হয়। সেখানে কংগ্রেসের খুব ভালো ভোট সব বিধানসভায়, সাতটার চারটেতে এগিয়ে, বাকিগুলোতেও এত ভালো যে কংগ্রেসের ভোট বলে মনেই হয় না, আর তার কারণ কংগ্রেসের অসাধারণ সংগঠন আছে ঐ অঞ্চলে। অধীরবাবুর নিজস্ব সংগঠন। অর্থাৎ, সংগঠন, যা অঞ্চল ভেদে শক্তিশালী হয়, তা যেখানে প্রতিপক্ষের তুলনায় মজবুত, সেখানে মোদি হাওয়া, সারদা দুর্নীতি, টাকা খাটানো সব তুচ্ছ করে জয় এনেছে। নইলে পুরো দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জুড়ে তৃণমূল সব বিধানসভায় এগিয়ে, আর সারদায় ক্ষতি তো ঐ জেলাতে প্রচুর। দক্ষিণ চব্বিশে তৃণমূলের এমন সংগঠন যে ডিএ পেকমিশন ব্যর্থতার পরেও ডায়মন্ড হারবারে পোস্টাল ব্যালটে তৃণমূল এগিয়ে থাকে! তৃণমূল যেখানে ভালো রকম পিছিয়ে সেখানে ১০ বছর আগের ভোটেও সেই অবস্থায় ছিল। বাঁকুড়ায় ২০০৯এ ৩৬% ভোট ছিল, মেদিনীপুরে ৪২%। এখনও কিমাশ্চর্য তাই হয়ে গেছে। অনুরূপ হিসেব বালুরঘাট, বিষ্ণুপুর কিম্বা আসানসোলেও। বামপন্থীদের সংগঠন প্রবলতর ছিল ২০০৯-এ (তখন ভাঙন শুরু হয়ে গেছে), এখন একদমই অনুরূপ প্রাবল্য বিজেপির। তৃণমূলের সংগঠন যেখানে ২০১১র পরে গড়ে উঠেছে সেখানে সেখানে সেটি দুর্বল এবং বিজেপি সম্ভবতঃ পূর্বতন শক্তিশালী অন্য একটি সংগঠনের কাঠামো ধরে এগিয়েছে। ফলে সেখানে তৃণমূলের ভোট ২০০৯-এর হিসেবে প্রায় আটকে আছে এবং বিজেপির ভোট ২০০৯-এ বামদলের ভোটের সমান হয়ে গেছে। আর, আগে যা বলেছি, ২০০৯-এ বামশক্তির জেতা লোকসভা আসনের ১৫র ১১ টিতে এবার বিজেপি জিতেছে। বাকি ৪টি আসন যা তৃণমূল এবার পেয়েছে সেগুলি হল- আরামবাগ (১০০০+ ভোটে কোনও ক্রমে জেতা), পূর্ববর্ধমান, ঘাটাল ও বোলপুর।  তৃণমূলের সংগঠন বীরভূমে অনুব্রত মন্ডলের হাতে শক্তিশালী হয়েছে। ঘাটালে নির্ণায়ক হয়েছে কেশপুর বিধানসভা, ৭৮০০০ ভোটে এগিয়ে দিয়ে। কেশপুরে তৃণমূলের সংগঠন নিয়ে আমরা গত দুদশক ধরে শুনে আসছি। তাছাড়া সংগঠন তো শুধু একটা ব্লকে আটকে থাকে না, আশেপাশের ব্লকেও ছড়ায়। তাই, আশেপাশের বিধানসভাতেও যথাক্রমে লাল বা নীল রঙ ধরছে।


    এই যে বিন্যাসটা, যেখানে তৃণমূল এগিয়ে সেটা এবং তার আশেপাশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল নীল আর যেখানে বিজেপি এগিয়ে, আশেপাশের অঞ্চল লাল, যাদের জ্যামিতির পরিভাষায় হয়ত বা ম্যানিফোল্ড হিসেবে দেখা যাবে, সেটা এই নির্বাচনের মূল ধারা। একটা মাপক হিসেবে এখানে ভোটে জেতাকে ধরা হয়েছে, শুধু জেতা হারা দিয়ে অবশ্য সবটা ব্যাখ্যা হয় না। কিন্তু, লক্ষ্যণীয় বিষয় যেখানে একটি ম্যানিফোল্ডের সীমানা আর আরেকটি শুরু, তার কাছাকাছি দিয়ে একদলের ভোট শেয়ার কমে আসছে আরেকজনের বাড়ছে এরকম। অর্থাৎ একটা ভূমিগত বিন্যাসের ধারা মেনে ভোট ভাগ হচ্ছে, বিশেষতঃ বিজেপি আর তৃণমূলের মধ্যে। লোকসভা কেন্দ্রের বদলে বিধানসভা কেন্দ্রের নিরিখে ম্যাপ দেওয়া এইটা বুঝতেই যে এই ম্যানিফোল্ড-গুলি স্থানীয় সাংগঠনিক শক্তির হেরফেরে ভোটের ফলাফলের পরিণতির ইংগিতই দিচ্ছে। আমাদের হাতে বুথ ভিত্তিক তথ্য নেই, কেউ পেলে করে দেখতে পারেন সেইখানেও এই বিন্যাস দেখা যাচ্ছে কী না!


    ঙ) মিথ-মিথ্যে-মিথোজীবিতা


    বলা হচ্ছে এস সি ও এস টি রা তৃণমূলের দিক থেকে সরে গেছে। আমরা মালদা মুর্শিদাবাদ বাদে ৬৪টির মত এস সি সংরক্ষিত বিধানসসভা দেখলাম, তার ৩১টিতে তৃণমূল এগিয়ে।  যে এস সি বিধানসভাগুলি বনগাঁ রানাঘাট বা আলিপুরদুয়ারে গায়ে গায়ে লেগে আছে, সেইগুলির প্রায় সবকটিতেই বিজেপি এগিয়ে। তার আশেপাশের অসংরক্ষিত বিধানসভার ট্রেন্ড রঙ ও কিন্তু অনুরূপ। আবার যে সংরক্ষিত আসনগুলি দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায়, তার সবগুলিতে তৃণমূল এগিয়ে। অর্থাৎ তপশিলি জাতিভুক্ত মানুষের আধিক্য সংশ্লিষ্ট বিধানসভাগুলিতে আলাদা করে ফলের তারতম্য ঘটাচ্ছে না, এবং সারা বাংলা জুড়ে তপশিলি জাতির আলাদা করে বিজেপিকে বেছে নেওয়ার সাধারণ কোনও রীতি এই ভোটে উঠে আসেনি। তবে, একথা অনস্বীকার্য যে রাণাঘাট আর বনগাঁয় বেশিরভাগ বিধানসভাই তপশিলি সংরক্ষিত। এবং গত দুটি লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটে তৃণমূলকে বিপুল সমর্থনের পরে এইখানকার মানুষ এবার বিপুলভাবে বিজেপির সঙ্গে গিয়েছেন। তার পিছনে একটা বড় ফ্যাক্টর অবশ্যই নাগরিকত্ব বিলের প্রতিশ্রুতি। আসামের এর আর সি-র উদাহরণ হাতের সামনে থাকলেও সেখানে বিজেপির প্রচারকে কাউন্টার করতে পারে নি বাকি দলগুলি। এছাড়াও আগে আলোচনা করা সংগঠনের শক্তির তারতম্যের ব্যাপারটা এসেই যাবে। রাণাঘাটের কৃষ্ণগঞ্জে একটি বিধানসভা উপনির্বাচন হয়েছিল এইবারই। সেখানে পূর্বের তৃণমূল এম এল এ-কে হত্যা করা হয়, সন্দেহের তীর বিজেপির দিকে থাকে। প্রায় সমস্ত প্রিসিডেন্স সরিয়ে রেখে সেই আসনে বিজেপি জেতে! দলিত এম এল এ হত্যা যেখানে জাতীয় রাজনীতিতে নির্ধারক পয়েন্ট হতে পারত, সেখানে সেই আসনের উপনির্বাচনেই সেই এম এল এ-র দল হেরে যায়, এ সাংগঠনিক বিচ্যুতি ছাড়া হতেই পারে না।


    যাই হোক, আমাদের চিত্র-১ এ চারটে পকেট আছে, যা তৃণমূলের দিকে থাকা বিধানসভা, চারদিক থেকে বিজেপি দিয়ে ঘেরা। উত্তরবঙ্গে সিতাই ও রাজগঞ্জ, দুটোই এস সি। দক্ষিণে মানবাজার ও বিনপুর, দুটিই এস টি। এর কাছাকাছি দুটো বিজেপির জেতা এস টি বিধানসভা রায়পুর ও রানিবাঁধ, যেখানে তৃণমূলের পিছিয়ে থাকা এবং সিপিএমের প্রাপ্ত ভোটের হিসেব মিলে যায়।


    এবার, তপশিলি উপজাতি সংরক্ষিত সিটের হিসেব যদি দেখি- ১৫ টির ৩ টি তৃণমূল পেয়েছে। অর্থাৎ এখানে একটা শক্তিশালী ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে যে তপশিলি উপজাতির মানুষজন বিজেপিকে বেছে নিচ্ছেন। তবে এর মধ্যে লক্ষ্যণীয়, ঐ পূর্বোল্লিখিত দুটি পকেট বাদ দিয়ে আর যে এস টি আসনে  তৃণমূল এগিয়েছে, সেই সন্দেশখালির আশেপাশের সব আসনই কিন্তু তৃণমূলের। আবার বাঁকুড়া-পশ্চিম মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রামের এস টি আসনগুলির আশেপাশে সব আসন প্রায় বিজেপির। তবে, এই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না যে তপশিলি উপজাতির মানুষ তো আর শুধু সংশ্লিষ্ট বিধানসভাতেই থাকেন না, আশেপাশে ছড়িয়ে থাকেন আর তাঁদের ভোট অঞ্চলের অন্যান্য বিধানসভাতেও প্রভাব ফেলেছে।


    এইখানে একটা মিথোজীবিতার তত্ত্ব আনা যায়। মানুষ একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল। সম্প্রদায়, পেশা ব্যতিরেকে একে অন্যের সঙ্গে আদানপ্রদান করে। আমার প্রতিবেশী কী ভাবছে, বাজারের সবজিওলা কী বলছেন, ছেলের গৃহশিক্ষক কী চাইছেন এইসব আমার সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে। আর, এই হাইপোথিসিসকে আমরা রাখছি আরেকটা হাইপোথিসিসের প্রতিতুলনায়। সেটা হল যে- মুসলিম ভোট প্রায় সর্বাংশে তৃণমূলে গেছে এবং সেইটাই তৃণমূলকে যেটুকু অক্সিজেন দেওয়ার দিয়েছে। বাংলার মুসলিম জনশতাংশ সবচেয়ে বেশি, দুটি জেলায়- মালদা আর মুর্শিদাবাদ। জনবসতির ৫০% এর বেশি মুসলমান। তার মধ্যে মালদায় একটিও আসন তৃণমূল পায় নি, মুর্শিদাবাদে তিনটির দুটি আসন পেয়েছে। আরও একটি মুসলিম সংখ্যাগুরু জেলা উত্তর দিনাজপুর। এখানে মুসলিম ৪৯% এর বেশি। এই জেলার ৯টি বিধানসভার ৫ টিতে তৃণমূল এগিয়ে, চারটিতে বিজেপি। এবং কোনও আসনেই ৪৯% এর কাছাকাছি ভোট তৃণমূলের নেই বরং কয়েকটি আসনে কংগ্রেস-সিপিএম ভালো ভোট পেয়েছে। অর্থাৎ, মুসলিমরা সংখ্যাগুরু এমন অঞ্চলে তৃণমূলকে তাঁরা সম্প্রদায় বেঁধে ভোট দিয়েছেন এরকম মোটেই নয়। এরপরে যে দুটি জেলায় মুসলিম বসতি বেশি, মানে ১/৩ এর বেশি, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা এবং বীরভূম, দুটিতেই লোকসভার সব আসন তৃণমূলের, বিধানসভার প্রায় সব আসনও। দক্ষিণ চব্বিশের প্রায় সমস্ত বিধানসভায় ৫০% এর বেশি ভোট তৃণমূলের, কোথাও কোথাও তা ৭০-৮০ ছুঁয়েছে। এর মধ্যে তপশিলি জাতি অধ্যুষিত বিশাল এলাকাও রয়েছে। সিপিএম কংগ্রেসের ভোট অনেক কম, এস ইউ সি আইয়ের গড় যে দুটি কেন্দ্র, সেখানে উল্লেখযোগ্য ভাবে বিজেপির ভোট বেশ কিছুটা বেশি। বীরভূমেরও বহু কেন্দ্রে ৫০%এর বেশি ভোট তৃণমূলের। অর্থাৎ এই সমস্ত কেন্দ্রে ভোটের সোজা ধর্মীয় বিভাজন হয় নি, মুসলিম ভোট তৃণমূল আর হিন্দু ভোট বিজেপি এমন ভাবে ভোট ভাঙে নি। বরং উলটো ইংগিত পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও দেখা যাচ্ছে সেখানে ২০-২৫% মুসলমান, যেমন বর্ধমান হাওড়ার বিধানসভাগুলি, তার অনেকগুলিতে তৃণমূলের ভোট বেশ ভালো এসেছে, ৫০%এর কাছাকাছি। আবার উত্তরবঙ্গে ঐধরণের মুসলমান বিন্যাসে তৃণমূলের ভোট অত ভালো হয়ও নি। উত্তর চব্বিশ ও নদীয়ায় মিশ্র ফল, বিভিন্ন অঞ্চলে। এর মধ্যে যেখানে তৃণমূলের ভোট ভালো, সেখানে তপশিলিপ্রধান আসনেও তৃণমূল অনেকটা এগিয়ে। আবার সেটা হচ্ছে না বলে উত্তর চব্বিশ পরগণা ও নদীয়ার কিছু এলাকায় ফল ততটা ভালো হচ্ছে না। পশ্চিম মেদিনীপুরে ১০% মুসলিম, সেখানে একটি আসন তৃণমূল পাচ্ছে। একদমই পাচ্ছে না বাঁকুড়া পুরুলিয়া দার্জিলিং এ, সেখানে মুসলিম জনশতাংশ দশের নিচে।


    বিজেপির গ্রহণযোগ্যতা মুসলিমদের কাছে ভালো নয়, এখন অবধি এটা প্রতিষ্ঠিত। ফলে মুসলিম ভোট বিজেপির বিরুদ্ধেই যাওয়ার সম্ভাবনা। যে অঞ্চলে মুসলিমরা সংখ্যাগুরু, তাঁরা একাধিক দলকে বিজেপির বিরুদ্ধে বেছে নিচ্ছেন। যে অঞ্চলে সংখ্যালঘু কিন্তু উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আছেন, সেখানে সম্ভবতঃ তৃণমূলকে বেছে নিচ্ছেন এবং মুসলিমদের বিজেপিজনিত আশংকা একভাবে তাঁদের প্রতিবেশী হিন্দুকে প্রভাবিত করছে, তাঁদের ভোট একতরফা বিজেপিতে যাচ্ছে না। বরং তৃণমূল আরও কিছুটা এগিয়ে যাচ্ছে। তপশিলি জাতির ভোটেও সেই প্রভাব আসছে। ব্যতিক্রম মতুয়া অঞ্চলগুলি, সেখানে নাগরিকত্ব ইস্যুতে তপশিলি ভোট একধারে বিজেপিতে গিয়েছে, হিন্দু-মুসলিম মিথোজীবিতার তত্ত্ব টেঁকে নি। যেখানে মুসলিম নেই, সেখানে বিজেপির মুসলিম-বিরোধিতার অভিযোগ তার ভোট হিন্দুদের কাছেও কমায় নি, কারণ হিন্দু জনগণ প্রতিবেশীর সহমর্মী হতে পারে নি।


    এর উল্টোদিকে আসছে তৃণমূলের মুসলিম তোষণ, ইমামভাতা প্রভৃতি 'পশ্চাদপট' জনগণের মধ্যে তার ভোট বাড়িয়েছে, কদিন বাদে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পরিস্থিতি তৈরি হবে রাজ্যে। মুসলিম ধর্মীয় রাজনৈতিক দল এসে এই ভোট নিয়ে তৃণমূলকে অপ্রাসঙ্গিক করে দেবে এই সব বক্তব্য। বিজেপির পাশাপাশি বাম-লিবারেলরাও যার প্রচারে নেমেছেন। কমরেড নরেন্দ্র মোদী তো বলেইছেন, মানুষ দুধরণের- যাঁরা ওনাকে সমর্থন করেছেন আর যাঁরা ওনাকে সমর্থন করবেন। কিন্তু ধর্মীয় ভোট বিভাজনের জনপ্রিয় হয়ে ওঠা তত্ত্ব ১০-৩৫% মুসলিম জনবহুল এলাকায় বহুলাংশে তৃণমূলের ৫০% বা তার বেশি ভোটের হিসেব মেলায় না। হিন্দু-মুসমিল সম্পর্ককে শুধুমাত্র বৈরিতার আলোয় দেখলে হিসেবে অনেকটা ফাঁক থেকে যাবে।


    চ) নটেগাছ


    নোটের গাছি ছাগলে খেয়েছিল কিন্তু তা সত্তেও দেশব্যাপী বিরোধী হাতে পেনসিলও প্রায় রইল না। আরবান এলিট নোটাবিপ্লবীরাও উড়ে গেলেন মোদি হাওয়ায় আর গ্রামে বন্দরে তো কথাই নেই। পশ্চিমবঙ্গে আরও অনেক কিছুর সাথে ঝামরে পরল সেই হাওয়া। কিছু রাজনৈতিক সমীকরণ পাল্টালো। একমাত্র যে সব জায়গায় (দাগ দিয়ে আবার বলা, জায়গা, অঞ্চল, ভৌগোলিক বিভাজন) তৃণমূলের সংগঠন শক্তিশালী, হাওয়া বাঁক নিল সেখানে এসে। চলে গেল সেইসব জায়গায়, যেখানে তৃণমূলের সংগঠন শক্তিশালী নয়, নতুন এবং বামপন্থীদের সংগঠন যেখানে কদিন আগেও শক্তিশালী ছিল। এর পাশাপাশি এল সংঘের হাতে গড়ে ওঠে বিজেপির সংগঠন, যা আদিবাসী অঞ্চলে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। বিজেপির সংগঠন সম্ভবতঃ বাম সংগঠনের জীর্ণানি বাসাংসিতে পুনঃ প্রাণিত হল। এই লেখাটির সংশোধনপর্বে বন্ধুরা বললেন তৃণমূলের দুর্নীতি, অগণতন্ত্র, বিরোধীদের উপর অত্যাচার এই বিষয়গুলি পর্যালোচনা করতে। কিন্তু, আমরা দেখতে পাচ্ছি, সারদা উপদ্রুত দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায় একাধারে তৃণমূল জিতছে, অনুব্রত মন্ডলের পাঁচনবাড়ির হুমকি সত্তেও বীরভূমে জিতছে, আবার উন্নয়ন হয়েছে লোকে মেনে নিলেও ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়ায় হারছে। মুকুল রায়ের হাত ধরে মমতার সরকারের থেকে অধিক উন্নয়ন হবে, সৌমিত্র খাঁ বা অর্জুন সিংহ দল বদলানোয় তাঁদের পারফরমেন্স পালটে যাবে, এ মনে হয় সাধারণ ভোটাররা বিশ্বাস করেন না। তবে যেখানে বিজেপির সংগঠন বেশি সক্রিয় হয়েছে সেখানে তৃণমূলের বিরুদ্ধে জনমত ভোটবাক্সে পড়ার বন্দোবস্ত করা গেছে। অন্যত্র, যেখানে তৃণমূল শক্তিশালী, স্থানীয় মানূষের অভাব অভিযোগকে ভোটে নির্ণায়ক হতে দেয় নি। এ কথা অনস্বীকার্য, ছোট স্তরের নেতার দুর্নীতি অত্যাচার সারদা বা রাফালের থেকে কম প্রভাব ফেলে না মানুষের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে, কিন্তু সংগঠনের স্ট্রাকচারটি ক্রিয়াশীল থাকলে, সেইগুলিকে অ্যাড্রেস করা বা তার প্রতিশ্রুতি দেওয়া সহজ হয়ে যায়।


    তাই, ধর্ম নয়, মতাদর্শ নয়, উন্নয়নও নয়,  ম্যাচ শেষে দেখা গেল জিতল সংগঠনই, কারণ ভোট হয়ে যায় না, ভোট করানো হয়- যুদ্ধের মতনই।


    ছ) কী করিতে হইবে


    আমাদের কথা কেউ শোনে না। তাও এত কিছু লেখার পর একটু উপদেশ-সার ও লিখে যাই। এমনিই তৃণমূলকে আজকাল সকলেই বলে যাচ্ছে কী কী করা উচিত। আমরা বরং বলব, তৃণমূলের কী করিতে হইবে না! যেটা ২০০৯ এ সিপিএম করেছিল, সেইটা না করলেই মনে হয় হবে। স্থানীয় স্তরে সংগঠনকে ধরে রাখা আর মজবুত করা ছাড়া আর খুব কিছু করার নেই। আত্মসমালোচনার বদলে অন্যের সমালোচনা বিচার করে সেই অনুসারে কাজ করা, স্থানীয় রাজনীতির সুবিধা ভেবে রাজ্য রাজনীতি চালানো, ইত্যাদি। সব দোষ নিচুতলার কর্মীদের একাংশের নামে না চালিয়ে, নিচুতলার কর্মীদের পাশে উঁচুতলার দাঁড়ানো। কিছু নেতা বিজেপিতে যাবে, কিছু জেলেও হয়তো বা যাবে। কিন্তু অঞ্চল ধরে রাখার কাজে সরকারের সাহায্য এক্সটেন্ড করতেই হবে, অন্ততঃ ২০২১ অবধি। একচুয়ালি  মমতা ব্যানার্জি সরকারের বদলে পার্টিতে মন বেশি দিলে ভালোই হবে। ভোট শুধু সরকারি প্রকল্প দিয়ে আসে না। ডিএ মাইনর ইস্যু, তবে সরকারি চাকরিতে, স্কুল কলেজে নিয়োগ দরকার। সংগঠনের সার ওখানে জমে।


    আর বিজেপিকে? ২০০৯ এর পর তৃণমূল যা করেছিল, তাই। লোকের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখা। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প ইত্যাদি পাওয়ানো। বাংলা থেকে মন্ত্রী। বুদ্ধিজীবীদের চাকরি দেওয়া থাকলে কিছু উটকো ঝামেলা কম হয়, সেইসব।


    আমাদের? গ্যালারি আসলে খেলারই অঙ্গ। ইমোশনাল অ্যাটাচমেন্ট কাটিয়ে খোরাক নিন। সব কিছুই আসলে ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন। আর, নাহলে মাঠে নেমে ইস্যুভিত্তিক লড়াই করুন, কিম্বা আইটি সেলের মতন ব্যক্তিগত মেসেজ ভাইরাল করার উপায় করুন। আমার মতন আত্মপ্রসাদ পেতে চাইলে আলাদা কথা, নতুবা ফেসবুকে বেশি লিখবেন না, ও কেউ সিরিয়াসলি নেয় না।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৯ মে ২০১৯ | ১৬৭৯৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • PT | 671212.193.563412.84 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৮:১৮78304
  • 06 September 2016 22:58:52 IST 11.39.38.30 (*) #
    এটাতে কোন প্রশ্ন নেই তো!!
  • এলেবেলে | 230123.142.9001212.193 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৮:২৫78305
  • পিটি, ৬ নম্বর পাতায় আছে।

    দেখুন আমি এমনিতে কেটে উঠি না টই থেকে। কিন্তু কেউ যদি নিজেকে বিশাল কেউকেটা ভেবে তাঁর সঙ্গে ইনিয়ে-বিনিয়ে বিনিময় না করতে পারলে আমার জীবন ব্যর্থ হয়ে যাবে টাইপের কলার তোলা মানসিকতায় ভোগেন তো আমি সেসব জায়গা থেকে কেটে উঠি। আপনি কোনও দিন আমার সঙ্গে ওই আচরণ করেননি বলেই ফিরে এসেছি। আবার ওইরকম বিরক্তি উৎপাদন হলেই কেটে উঠব। সিম্পল।
  • PT | 671212.193.563412.84 (*) | ০৪ জুন ২০১৯ ০৮:৩৬78306
  • আমি কেউ নই। আর কেটা তো নইই। ঐজন্যেই কে যেন আপনাকে বলেছিল পিটিকে ইগ্নোর করতে।
    তবে আপনি যে আমাকেও উত্তরদাতাদের মধ্যে ধরেছিলেন তা জেনে আমি আপ্লুত, অভিভূত।
  • এলেবেলে | 230123.142.1278.203 (*) | ০৬ জুন ২০১৯ ০২:০১78313
  • পিটি

    আপনি বড্ড একা হয়ে গেছেন টইটায়। আর কেউ লিখছেন-টিখছেনও না। বেটার এটাকে ছেড়ে দেওয়া। তবুও বলি 'while an area admeasuring 290 acres will be leased to the vendors to this Automobile Project approved by TML (ancillary and component manufacturing units)' অংশটায় আমার আপত্তি আছে। একটা কোম্পানি নাফা করতে আসছে রাজ্যে, দানছত্র খুলতে আসছে না। সে কেন ডিকটেট করবে তার নাফা বাড়ানোর জন্য সহায়ক অ্যান্সিলিয়ারি ইউনিটে কারা থাকবে এবং কতটা জমি তাদের দিতে হবে? যদি দিতেও হয় তর্কের খাতিরে, তবে তা তিন-ফসলি জমিই কেন? সারা দুনিয়ায় মানে সিঙ্গুরেরই আশেপাশে আর জমি ছিল না? একেবারে প্রোজেক্ট এরিয়াতেই লাগবে? বিশেষত বাংলায় ঘনবসতির কথাটা ভাবাই হবে না? এ কি সানন্দের ঊষর জমি নাকি? মামদোবাজি?

    তিনো প্রকাশ করবে বলেছিল, করেনি। তার ধান্দা মিটে গেছে। বামেরা তো তা প্রকাশ করতে পারত। এত ঢাকঢাক গুড়গুড়ের দরকার কী? করে ফেলুক।
  • PT | 340123.110.234523.19 (*) | ০৬ জুন ২০১৯ ০৫:৪১78314
  • আমি বরাবরই একা। স্রোতের উল্টোদিকে যাই তাই একা হওয়াটা স্বাভাবিক। দেখেন না যারা তাপসী ,মালিকের জন্য অশ্রু-সমুদ্র বইয়ে দিয়েছিল তাদের ঐ মামলার ফলাফল সম্পর্কে বিন্দুমাত্র উৎসাহ নেই?

    "বামেরা তো তা প্রকাশ করতে পারত"-হয়্ত।কিন্তু যতদূর মনে পড়ছে টাটারা কোর্টে গিয়ে তিনোদের চুক্তি প্রকাশের ইচ্ছা আটকে দিয়েছিল। তাই আমার বিশ্বাস বামেরাও পারত না।

    "তবে তা তিন-ফসলি জমিই কেন? সারা দুনিয়ায় মানে সিঙ্গুরেরই আশেপাশে আর জমি ছিল না? " এর সঠিক উত্তর আমার জানা নেই। তবে কট্টর বাম-বিরোধী কয়েকজন ইন্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি যে কলকাতা থেকে দূরত্ব এক্ষেত্রে একটা বড় বিষয় ছিল।

    ন্যানোবিরোধীদের একটা প্রিয় জায়গা ছিল ঊষর খর্গপূর। আপনি ২০০৬-এর আগে কখনো খর্গপুর থেকে গাড়ীতে কলকাতা গিয়েছেন? বিশেষতঃ রাতে-৯ টার কাছাকাছি সময়ে? তাহলে আলোচনাটা করা যায়।

    ২০০১-এ ট্রেনে KGP-HWH পৌনে তিন ঘন্টায় যাওয়া যেত। ২০১৯-এ সেটা সাড়ে-তিন থেকে চার যা খুশী লাগতে পারে। আগ বাড়িয়ে এসব বলে দিলাম কেননা এই দূরত্ব নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে। আর HWH-গামী এক্ষপ্রেস ট্রেনগুলো (বেশীর ভাগই)-১-২ ঘন্টা যা খুশী সময়ে আসে।

    আর নরক-কুন্ড হাওড়া সম্পর্কে যত কম বলা যায় ততই ভাল।
  • এলেবেলে | 230123.142.1278.203 (*) | ০৬ জুন ২০১৯ ০৬:২৭78315
  • আজ সারাদিনে এত টাইপ করেছি যে আঙুলে ব্যথা করছে! আমার অ্যাপও নেই, ল্যাপও নেই। পাতি ডেস্কটপে খটখট। তবুও লোকটা যেহেতু আপনি এবং আই আই টি-র অধ্যাপক তাই ব্যথা হজম করেই বলি অ্যান্সিলিয়ারি ইউনিটের জন্য পতিত জমি চেষ্টা করলেই বার করা যেত। সিঙ্গুরের আশেপাশেই। দূরত্বের ব্যাপারটা মাথায় রেখেই। সেটা দুর্ভাগ্যজনকভাবে হয়নি।

    এই যে 'টাটারা কোর্টে গিয়ে তিনোদের চুক্তি প্রকাশের ইচ্ছা আটকে' দিল এর ভেতরেই ঘাপলাটা লুকিয়ে আছে। আমার এখনও ধারণা (কারণ লিংক নেই) টাটার বিশ্বাসঘাতকতার জন্যই শেষ অবধি কারখানাটা হয়নি। তিনোর ঘাড়ে বন্দুক রেখে সে বেটার অপশন পেয়ে পালিয়েছে। তিনো এটাকে ব্যবহার করেছে তার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ পূরণ করতে। আর জনগণের চোখে 'ভিলেন' হয়ে গেছেন বুদ্ধবাবু। কিচ্ছু বলতে পারেননি মুখ ফুটে। শিল্পপতির বিশ্বাসঘাতকতা নিয়ে তাই আমার আর কোনও মোহ অবশিষ্ট নেই।
  • এলেবেলে | 230123.142.0189.234 (*) | ০৬ জুন ২০১৯ ০৬:৫৯78311
  • পিটি

    'সেটাতো তিনোরা ক্ষমতায় আসার ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রকাশ করে দেবে বলেছিল। তো আমি এখনো প্রতিক্ষায় আছি।' তিনোরা অপদার্থ সে নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই। কিন্তু যে শর্তের লোভে টাটা বুদ্ধবাবুর পিঠে ছুরি মেরে সানন্দে পালান তা সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়, হতে পারে না। সিঙ্গুর তবুও চলছিল, বিধানসভা ভাঙচুরের পরেও, কিন্তু নন্দীগ্রাম কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেয়। নন্দীগ্রাম এবং দিনহাটায় পুলিশের গুলিতে যদি একজনও মারা যান, আমি সেটাকেও সমর্থন করি না।

    এইবারে আলিমুদ্দিনকে গড় করা কমরেডদের জন্য সীতারাম ইয়েচুরির স্টেটমেন্টটা এখানে রেখে গেলাম। আলো ক্রমে আসিতেছে বলেছিলাম। তা পূর্ণ হল। জানি তবুও মায়া রহিয়া যাইবে।

    https://www.anandabazar.com/state/cpm-sounds-alarm-bell-on-bjp-1.1001657
  • PT | 340123.110.234523.15 (*) | ০৬ জুন ২০১৯ ০৭:৩৩78312
  • "কিন্তু যে শর্তের লোভে টাটা বুদ্ধবাবুর পিঠে ছুরি মেরে সানন্দে পালান তা সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়, হতে পারে না।"

    আমার ধারণা সরকারের সঙ্গে যে কোন কম্পানির এই জাতীয় চুক্তি হয়েই থাকে-অন্ততঃ ভারতীয় আইন ব্যব্স্থায়। তিনোদের অপদার্থ বলে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। তারা আইনতঃ বাধ্য ছিল চুক্তি অপ্রকাশিত রাখতে। অথবা চুক্তিতে এমন কিছুই ছিল না যেটা তারা রাজনৈতিক ফয়দা তোলার কাজে ব্যবহার করতে পারত।

    এই কি সেই চুক্তি? এতে তো দেখছি টাটারা ৬৫০ একর পেয়েছিলঃ
    "Out of this (997.11 acres), ......645.67 acres will be leased to TML ...... while an area admeasuring 290 acres will be leased to the vendors to this Automobile Project approved by TML (ancillary and component manufacturing units), 14.33 acres will be handed over by WBIDC to WBSEB only for construction of 220/132/33 KV substation and the balance admeasuring 47.11 acres will be used by WBIDC for rehabilitation activities ......
    https://www.wbidc.com/images/pdf/Agreement%20between%20TML,%20WBIDC%20and%20Government%20of%20West%20Bengal.pdf

    "সীতারাম ইয়েচুরির স্টেটমেন্টটা এখানে রেখে গেলাম"
    বিজেপি ঘোষিত রাজনৈতিক শত্রু। কিন্তু ভোটাররা নিজেদের আলিমুদ্দিনে বেঁধে রাখেনি। আর এখ্ন দখল হয়ে যাওয়া পার্টি অফিসের খবর চাউর হওয়াতে বোঝা যাচ্ছে যে তিনোদের অত্যাচারটা কোন পর্যায়ে গিয়েছিল।

    কিন্তু আমরা তো নেতাই কান্ড সমর্থন করিনা। করি কি? তাহলে সাধারণ মানুষ নিজের বাঁচার রাস্তা বার করে নিলে, অগনতান্ত্রিক শাসন ব্যব্স্থায় হয় নেতাই নয় বাম ভোট রামে জাতীয় ঘটনাই ঘটবে।

    ** ভুল মানে করবেন না দয়া করে। নেতাই-এর সময়ে নন্দীগ্রাম অঞ্চলে সম্পূর্ণ অগনতান্ত্রিক অব্যব্স্থা চালু ছিল। সেটা বাম সরকারের ব্যর্থতা হলেও সত্যি।
  • S | 458912.167.34.76 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০১:০৩78374
  • ঐ লিস্টের দুচারটে ছাড়া বাকি সব জায়্গারই তো নাম জানি। লিস্টটা দেখে তো বোঝাই যাচ্ছে যে অ্যানসিলিয়ারির জন্য ক্লাস্টারিং হয়েছে।
  • sm | 2345.110.673412.200 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০১:১১78375
  • লকেট দিদিমনি তো বলেই দিয়েছেন,সিঙ্গুরে বানিয়ে ছাড়বেন।খড়্গ পুরেও আর একটা হোক।দুটো হবে।

    সান্টা-বানটা গেছে লন্ডন ও প্যারিস এর মধ্যে ইংলিশ চ্যানেল এর তলা দিয়ে যে টানেল হবে তার টেন্ডার দাখিল করতে।
    অফিসার -আপনারা দুজন মিলেই টানেল বানাবেন?কি করে?
    সান্টা- বানটা-কেন,লন্ডনের দিক থেকে আমি সুড়ঙ্গ খুঁড়বো আর প্যারিস এর দিক থেকে বানটা।মাঝপথে আমাদের দেখা হবে।সুড়ঙ্গ ফিনিশ।
    অফিসার-বাঃ।চমৎকার।আর যদি দুজনার মধ্যে দেখা না হয়,তাহলে?
    সান্টা -বানটা,তো ক্যা হোগা।আপকো দো টানেল মিল যায়েঙ্গে।বাই ওয়ান,গেট ওয়ান ফ্রি।
  • sm | 2345.110.673412.200 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০১:১৫78377
  • আপনি যদি এতসব জায়গার নাম জানেন ই।তো বলেদিন,ক্যাপিটাল সিটি থেকে এদের দূরত্ব কতো আর মালপত্র কিভাবে পৌঁছয়?
  • S | 458912.167.34.76 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০১:১৫78376
  • "লন্ডনের দিক থেকে আমি সুড়ঙ্গ খুঁড়বো আর প্যারিস এর দিক থেকে বানটা।মাঝপথে আমাদের দেখা হবে।"

    চ্যানেল টানেল বোধয় এইভাবেই তৈরী হয়েছিলো।
  • S | 458912.167.34.76 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০১:১৮78378
  • আপনিই দেখে বলুন যে এর মধ্যে কটি বড় শহর (ফান্কশনাল পোর্ট বা এয়ারপোর্ট আছে) থেকে ১০০ কিমির বেশি দুরত্বে তৈরী হয়েছে?
  • sm | 2345.110.783412.218 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০১:২৩78379
  • আপনার উত্তর বোঝা গেছে।আপনি টাটার ভূতপূর্ব পরামর্শদাতা দের মতন বলছেন।
    টাটাদের খিদির পুরের আসে পাশে জমি দিতে হতো বা রাজার হাট -নিউটাউনে।
  • PT | 340123.110.234523.10 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০১:৪০78380
  • "ঠিক দু ঘন্টার কয়েক মিট আগে খড়্গ পুর পৌঁছে যেতো।পিটি ঠিক বলছেন না।"

    সব সময়েই অর্ধ সত্যের চাষ।
    ফলকনামা কেজিপি-তে আসার পরে ২ ঘন্টায় হাওড়া ঢোকে। আর হাওড়া থেকে কেজিপি আসতে দেরি করেনা কেননা সেটা সবে যাত্রা শুরু করেছে। কিন্তু হাওড়াগামী ফলকনামা সহ অন্যান্য এক্স্প্রেস বেশ নিয়মিত ভাবে দেরিতে কেজিপিতে আসে। তাই লোকে লোকালে যায়-যেটা সাড়ে তিন থেকে চার ঘন্টা লাগিয়ে দেয়।

    আরেকটা ট্রেন সময়ে যায়। সেটা শতাব্দী। সাধারন ট্রেনে যে দূরত্বের দাম ৩০ টাকা সেটা শতাব্দীতে ৫৫০ টাকা। ফলকনামা বা গীতাঞ্জলীতে স্লিপার ক্লাসে তার দাম ১৭০ টাকা।

    গাড়ীতে এয়ারপোর্ট প্রায় ৩৫০০/- টাকা কেননা গাড়ী ফাঁকা ফেরত আসবে বলে দুদিকের ভাড়াই দিতে হয়।

    আর কেজিপি কোলকাতা কোন বাস সার্ভিস নেই।

    real India-র সঙ্গে কত মানুষের যে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সেটা যুক্তির ধরণ দেখেই বোঝা যায়। আমার ধারণা একজন গড়পত্তা বাঙালীর চাইতে টাটাবাবু কেজিপির খবর অনেক বেশী রাখেন।
  • মানিক | 78900.84.6767.126 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০১:৪৮78382
  • বাতেলা করবেন বিজনবাবু আর বানাবে লকেট!
  • dc | 232312.164.562312.42 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০১:৪৮78381
  • sm এর লিস্টে তামিল নাড়ুর যে কারখানাগুলো দেখলাম সেগুলো সবই চেন্নাইয়ের বেশ কাছে। আর কয়েকটা ব্যতিক্রম আছে, যেমন হোসুর বা এন্নোর। হোসুর আলাদা ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি।

    তবে এগুলো দিয়ে ঠিকমতো প্রমান কিছু হয়না। বিএমডাব্লু যদি বলতো আমরা হোসুরে প্ল্যান্ট বানাবো, চেন্নাইতে না, তাহলে হোসুরেই বানাতো। প্ল্যান্টের লোকেশান সাধারনত সেই কোম্পানিই ডিসাইড করে। টাটারা খড়গপুরে বানাবে না সিঙ্গুরে সেটা তাদের প্রেরোগেটিভ ছিল।
  • sm | 2345.110.9003412.104 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০১:৫৫78383
  • এতো মহামুস্কিলে পড়া গেলো।দুঘন্টায় ফলকনামা বা শতাব্দী পৌঁছয় এটা তো সত্যি কথা।এবার যদি ফ্যাক্টরি হয়,একটা স্পেশাল ইন্টারসিটি দ্রুতগামী ট্রেন চালু করতে বিশেষ তদ্বির করতে হবে না,মনে হয়।এটি হবে উপভোক্তার ট্রেন।জন সাধারণ 3 ঘন্টার লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করুক না কেন।যে দেশে যেটা সত্যি।তার জবাব ভারত সরকার দেবে,রেল মন্ত্রক দেবে।কেন জরা জীর্ন ট্র্যাক,কেন ট্রেন লেট,কেন ভাড়া বেশি,কেন ট্রেনে আরশোলা ঘুরে বেড়ায়,ইত্যাদি ইত্যাদি।

    আর বড় এস কে প্রশ্ন।ন্যানো দুটো জায়গায় ফ্যাক্টরি খুলেছে।পন্থ নগর আর সানন্দে।দেখিয়ে দিন খড়্গ পুর কোন অংশে কম?অন্যান্য কারখানার জায়গা নিয়ে পরে আলোচনা করা যাবে খন।
    মনে রাখবেন, খড়্গ পুরে একটা আস্ত আই আই টি আছে।
  • sm | 2345.110.9003412.104 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০১:৫৮78384
  • সেটা তো বলছে না।টাটা রা প্রথমে খড়্গপুর এ কারখানা গড়তে রাজি হয়ে গিয়েছিল।
    পরে লোকেশন বদলে যায়।সেটা টাটা মত বদলে ছিল না বুদ্ধদেব সরকার,আজ ও অজানা।
    এর কোন যুক্তিগ্রাহ্য কারণ ও দেওয়া হয় নি।
  • dc | 232312.164.562312.42 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০২:০০78385
  • আচ্ছা কি মুশকিল, টাটারা খড়গপুরে প্ল্যান্ট বানাবে কিনা সেটা S কি করেই বা বলবে? S এর কি টাটাদের প্যাসেন্জার ভেহিকল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশানের সাথে কোনভাবে যোগাযোগ আছে? তাহলে অবশ্য বলতে পারেন।
  • PT | 340123.110.234523.10 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০২:০১78386
  • "এবার যদি ফ্যাক্টরি হয়,একটা স্পেশাল ইন্টারসিটি দ্রুতগামী ট্রেন চালু করতে বিশেষ তদ্বির করতে হবে না"

    নতুন সরকারের প্ল্যানিং কমিশনে একটা পোস্ট খালি আছে!!

    "খড়্গ পুরে একটা আস্ত আই আই টি আছে"
    তো?
  • এলেবেলে | 230123.142.9001212.70 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০২:০২78387
  • পিটি, কালই আমি বলছিলাম র‍্যাদার দুঃখ করছিলাম টইটাতে আপনি বড্ড একা হয়ে গেছেন। আমি-আপনি আর কত টানব? নিন, এই আকাশে আমার মুক্তি আলোয় আলোয়! প্রচুর কৃতবিদ্য ব্যক্তি জুটে গেছেন আপনার চারপাশে। আমি এলেবেলে এ সুযোগে মহানন্দে কাটলাম। খটখটের পরিশ্রমটাও বাঁচল! সবাই গুছিয়ে মরা গরুর দাঁত দেখুক!!
  • dc | 232312.164.562312.42 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০২:০৩78388
  • "টাটা রা প্রথমে খড়্গপুর এ কারখানা গড়তে রাজি হয়ে গিয়েছিল।
    পরে লোকেশন বদলে যায়।সেটা টাটা মত বদলে ছিল না বুদ্ধদেব সরকার,আজ ও অজানা"

    টাটারা প্রথমে খড়্গপুর এ কারখানা বানাতে রাজি হয়েছিল কি? এটা আমার আর মনে নেই। তবে এই ডিসিশান কিন্তু পরে চেঞ্জ হয়, এরকম অনেক উদাহরন আছে যে প্রথমে এক জায়গায় গড়ার কথা ভেবেছিল আর পরে অন্য জায়গায় গড়েছিল। শুধু ইন্ডিয়াতে না, বহু দেশেই এরকম হয়েছে। কারনটা অনেক সময়েই আর জানা যায়না, হয়তো নানারকম ইকোনমিক আর অপারেশনাল প্যারামিটার কনসিডার করে ডিসিশান চেঞ্জ করে।
  • dc | 232312.164.562312.42 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০২:০৪78389
  • এলেবেলে :d

    গরু বলবেন না, গৌমাতা বলুন। গরু বললে ওরা দুঃখ পায়।
  • PT | 340123.110.234523.10 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০২:১১78390
  • "আমি এলেবেলে এ সুযোগে মহানন্দে কাটলাম।"
  • sm | 2345.110.9003412.104 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০২:১২78391
  • তাহলে তো আরো মুশকিল।একটা কোম্পানি বার বার লোকেশন চেঞ্জ করতে থাকবড় আর পরিবর্তিত লোকেশনের জমি উর্বর চাষ যোগ্য হলেও,আমাকে ছিনিয়ে দিয়ে দিতে হবে?
    এটা কোন সলিড যুক্তি হলো?
  • dc | 232312.164.562312.42 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০২:১৪78392
  • তা কেন? ফাইনালি যে জায়গাটা সিলেক্ট করবে সেখানে জমি নেবে।
  • S | 458912.167.34.76 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০২:১৭78393
  • "পন্থ নগর আর সানন্দে।দেখিয়ে দিন খড়্গ পুর কোন অংশে কম?"
    সানন্দের থেকে আমেদাবাদের দুরত্ব কোলকাতা থেকে সিঙ্গুরের দুরত্বেরও কম। পন্ত নগরে ন্যানো তৈরী হয়্না। তাছাড়া পন্তনগর উত্তরান্চলের অটোহাব।

    "খড়্গ পুরে একটা আস্ত আই আই টি আছে"
    এটার মানে কি?
  • S | 458912.167.34.76 (*) | ০৭ জুন ২০১৯ ০২:২৪78394
  • উৎসাহ থাকলে অ্যামাজনের রিসেন্ট সেকেন্ড হেড কোয়ার্টারের লোকেশান সিলেকশান করা নিয়ে যে কেউ ইন্টারনেট থেকে পড়তে পারেন। ৫ বিলিয়ন ইনভেস্টমন্টের জন্য জার্সি ৭ বিলিয়ন ট্যাক্স ব্রেক দিতে রাজি হয়েছিলো।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ প্রতিক্রিয়া দিন