এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ইস্পেশাল  নববর্ষ ২০১৩

  • শ্যামাপোকা

    রূপঙ্কর সরকার লেখকের গ্রাহক হোন
    ইস্পেশাল | নববর্ষ ২০১৩ | ১৭ এপ্রিল ২০১৩ | ৮০৬০ বার পঠিত
  • - এক থাপ্পড় লাগাব অসভ্য মেয়ে, সিনিয়ারদের সঙ্গে কিভাবে কথা বলতে হয় জাননা ?

    - যাব্বাবা, আমি কোথায় ভাল মনে বলতে গেলাম, তোমার জীন্‌সটা ফ্যান্টা, আর তুমি চমকে দিলে ? দেখ, সিনিয়ার বলে অত এয়ার নিওনা, মোটে তো দুবছরের বড় –

    - চমকে দিলাম আবার কী ভাষা, ঠিক করে কথা বল। আমাকে কী বলে ডাকলে তুমি ? আমার নাম শুচিস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ছোট করে, স্মিতা। বুঝলে ?

    - কী করে জানব দিদিভাই, দুনিয়ার লোক তোমায় শ্যামা বলে ডাকে শুনি, তাই আমিও বললাম, শ্যামাদি। খুব অন্যায় করেছি না? পায়ে ফায়ে ধরতে হবে নাকি?

    নাম জিনিষটা খুব ডেঞ্জারাস। একবার রটে গেলে কোথা থেকে কোথায় চলে যায় কেউ বলতে পারেনা। এই যে সমাদ্দার সাহেব, কোথায় হ্যামিলটনগঞ্জ বলে নর্থ বেঙ্গলের এক প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বদলি হয়ে এলেন। ওঁর বাড়িও ঐদিকেই। কিন্তু এতদূর এসেও নিস্তার নেই। নতুন জায়গায় জয়েন করার পর এক হপ্তাও কাটেনি, কেবিন থেকে হলে বেরোলেই চার দিকে আওয়াজ, ভুতো - ভুতো – প্রথম প্রথম একটু সন্দেহ ছিল, এরা কি আমায় বলছে? যাঃ, সে নাম এতদূরে বারাসতে লোকজন জানবে কী করে – কোথায় উত্তরবঙ্গের হাসিমারা আর কোথায় চব্বিশ পরগনার বারাসত। কিন্তু সন্দেহ নিরসন হল অচিরেই। অবশ্য সমাদ্দার সাহেবের সঙ্গে শুচিস্মিতার কোনও পরিচয় নেই, কোনও সম্পর্কও নেই। একটাই কমন ফ্যাকটর – বারাসত।

    ক্ষুদিরাম পল্লী থেকে বারাসত কলেজ কতই বা দূর, যাতায়াতেরও সুবিধে। কিন্তু সহ্যেরও একটা সীমা আছে। সেদিন ফার্স্ট ইয়ারের মেয়েটার ওপর রেগে গিয়ে দুকথা বলায়, হ’ল আরো বিপদ। চতুর্দিকে এত ‘শ্যামাচরণ’ গজিয়ে গেল, যে কলেজ যাওয়াই এখন মুশকিল। ঐ যে, সেকেন্ড ইয়ারের হিস্ট্রির দেড়েলটা, হৃদয়পুর না কোত্থেকে যেন আসে। সেদিন হেঁড়ে গলায় শুরু করল, নেচে নেচে আয় মা স্যামাআআ – আমি মা তোর সঙ্গে যাব।  স্মিতার কান ফান লাল হয়ে গেল। কিন্তু যেদিন ব্যাটাচ্ছেলে আরও এক ধাপ আওয়াজ তুলে শুরু করল, স্যামা মা কি আমার কালোরে, স্যামা মা কি আমার কালো – কালো রূঊঊপে দিগম্‌বোরি হিদিপদ্‌দো করে মোর আলো – স্মিতা ছুটে কলেজ থেকে বেরিয়ে এল।

    স্মিতা বলল, বাপি, আমায় কোলকাতার কলেজে ভর্তি করে দাও, ইয়ার লস হলে হবে।  বাপি বললেন, সেকিরে, তুই কোলকাতায় যাবি পড়তে ? মরে যাবি মা, ট্রেনে এখন কুম্ভমেলার ভিড়। জনসংখ্যা কী হারে বেড়েছে তুই জানিস ? আবার ট্রেন থেকে নেমে বাস। সরাসরি বাসেও অবিশ্যি যাওয়া যায়, কিন্তু তুই পারবিনা মা। মা বললেন, সব নষ্টের গোড়া তুমি। ‘শ্যামাপোকা’ নামটা কে দিয়েছিল শুনি? এখন সাধু সাজছ ? বাপি বললেন, আহা সে তো আমার আদরের নাম, সেটা সবাই জানবে কেন। কিরে মা, তোকে সবাই শ্যামাপোকা বলে নাকি? স্মিতা বলল, চুপ কর বাপি, পোকা ফোকা বলেনা এখন। কিন্তু বাকিটাই বা বলবে কেন। আমি বারাসত কলেজে পড়বনা ব্যাস।

    মা বললেন, তোমার জন্য মেয়েটার কী সব্বোনাশ হ’ল বল দেখি। ওই রকম বিদ্ঘুটে নাম কেউ দেয় ? বাপি বললেন, কী আশ্চর্য, সে তো কোন ছোটবেলায় ও আলো দেখলেই ছুটে আসত বলে আমি আদর করে ডাকতাম। তোমার মনে নেই, সেবার ভাগলপুর থেকে বড়দি এল। বাংলার তেল মশলা সহ্য হয়নি, রাত্তিরে বারো চোদ্দবার বাথরুম গেছে। তা যতবার ওঘরের আলো জ্বলে আমার শ্যামাপোকা ততবার জেগে উঠে বারান্দায় বেরিয়ে যায়। মা বললেন, থামবে তুমি? আবার সেই অলুক্ষুণে নাম। মেয়েটা এক্ষুণি কেঁদে ভাসাবে। দরকার নেই ওর এখানে পড়ে। ও কোলকাতাতেই পড়বে।

    কোলকাতার কলেজে এসেও কি শান্তি আছে ? সেদিন জিসেক অর্চনাদি বলল, অ্যাই শুচিস্মিতা, তুমি নাচতে পার? এবার আমাদের সোশালে কবিগুরুর ‘শ্যামা’ নৃত্যনাট্য হচ্ছে, তুমি নাচবে তো ? প্রশ্নটা মোটেই ইনোসেন্ট নয়। অর্চনাদির মুখটা যে ফিচেল ফিচেল ছিল, তা ঠিক চোখে পড়েছে। স্মিতা সেদিন বাড়ি ফিরে বলল, বাপি, আমি আর পড়বনা। আমার বিয়ে দিয়ে দাও।

    ব্যানার্জিবাবু বললেন, বিয়ে? সে তো খুব ভাল কথা মা, কিন্তু একটাও পাশ দিবিনা ? না না, তোকে চাকরি করতে হবে তা বলছিনা, তবে ইয়ে, মানে পাত্রপক্ষও তো আজকাল একটু লেখাপড়া চায়। তুই না হয় আবার কলেজ বদল করে – স্মিতা বলল, তুমি আমার বিয়ে দেবে কিনা। হ্যাঁ আর দেখো, পাত্র যেন প্রবাসী হয়। আমি ওয়েস্ট বেঙ্গলে থাকব না।

    সাত সকালে দরজায় টিংটং। ব্যানার্জীবাবু হন্তদন্ত হয়ে দরজা খুলেই দেখেন হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা একটা মোটাসোটা হাসিহাসি মুখ। কে, কী বৃত্তান্ত, এসব জিজ্ঞেস করার আগেই বলে কিনা, ও মশাই, আপনার মেয়েটাকে আমার চাই। ব্যানার্জীবাবু একটু ঘাবড়েই গেলেন, বারাসত আজকাল জায়গা ভাল নয়। প্রায় রোজই কাগজে চোখ কপালে তোলা খবর। ভাগ্যি ভাল মেয়েটা কলেজ যাওয়া বন্ধ করেছে। না ফেরা ইস্তক যা চিন্তা – কিন্তু এরকম মোটাসোটা হাসিমুখ হাফবুড়ো কিডন্যাপার ? লোকটাকে কোনওদিন বারাসতে দেখেছি বলেও তো মনে হচ্ছেনা।

    ব্যানার্জীবাবু ছ’খানা মাদুলি বাঁধা সিড়িঙ্গে হাতে বাইসেপ্‌স খুঁজে পেলেননা। স্যান্ডো গেঞ্জির ফাঁক দিয়ে তেত্তিরিশ ইঞ্চি বুকটাকে ফুলিয়ে ছত্তিরিশ করতে গেলেন, তাও হ’লনা। তবে কথা হ’ল, নিজের বাড়ি, এটা নিজের পাড়া, তার ওপর দিনের বেলা, মামদোবাজি নাকি? – কি ক্কি ক্কি ব্যাপার কী, মেয়েটাকে চাই মানে ? কী ভেবেছেন কী, দেশে আইন কানুন সব উঠে গেছে নাকি? যদিও এ ব্যাপারে খানিক সন্দেহ নিজেরও ছিল, তবু বললেন, সাহস তো কম নয় – মোটা লোকটা বলল, সে আপনি যাই বলেন, মামনিকে আমি নিয়ে যাবই। আজ প্রিলিমিনারি কথাবার্তা বলে গেলাম। আর একদিন আসব চা খেতে।

    আবার চা খেতে আসবে বলছে। শ্যামাকে, থুড়ি স্মিতাকেই বোধহয় মামনি বলল, কিচ্ছু বোঝা যাচ্ছেনা। ব্যানার্জীবাবু বললেন, তা সে চা নাহয় আজই খেয়ে যান, কিন্তু ব্যাপারটা – লোকটা বলল, আমি সমাদ্দার, ব্লক অফিসে সবে চার্জ নিয়েছি। আজ চাপাডালির মোড়ে বাস থেকে নামতে গিয়ে কাদা ভর্তি গত্তে পা পড়ে কি আছাড়টাই না খেলাম। চশমাটা কোথায় চলে গেল, কিচ্ছু দেখতেও পাচ্ছিনা, হঠাৎ দেখি একটা মেয়ে এসে আমায় তুলে ধরল, ওড়না দিয়ে কাদা মুছিয়ে দিল, আবার ডাক্তারখানায় নিয়ে গিয়ে ব্যান্ডেজ – না মশাই এ মেয়ে আমার চাই। তাবলে ছেলে আমার ফ্যালনা নয়, রীতিমত আর্কিটেক্ট, বরোদায় পোস্টেড। এই বৈশাখেই –

    বাড়ি বয়ে সম্বন্ধ ? আবার এই মেয়েই চাই ? ওদিকে মেয়ে যেমনটি বলেছিল, ছেলে ওয়েস্ট বেঙ্গলের বাইরে – কার মুখ দেখে উঠলাম আজ, কিন্তু – কিন্ত, আমতা আমতা করে ব্যানার্জীবাবু বললেন, ইয়ে, মানে আজকাল এগুলো অনেকে মানেনা, তবে আমাদের আত্মীয়স্বজন একটু গোঁড়া বুঝলেন, মানে সমাদ্দার ফমাদ্দার – মোটা লোক রেগে গেল। ফমাদ্দার মানে? এইযে, এটা কী ? বলে জামার তলা থেকে খামচে একটা তেলচিটে পৈতে বের করল। নির্ভেজাল বামুন মশাই, রীতিমত ভরদ্বাজ। আপনি তো শান্ডিল্য, ওহ্‌একেবারে রাজযোটক মশাই। ব্যানার্জীবাবু তবু বললেন, ইয়ে মানে, এদেশি রাঢ়ী ফাঢ়ী নয় তো? সমাদ্দার বললেন, আরে মশাই ঢাকা অর্জিনাল। এই বৈশাখেই কিন্তু –

    সমাদ্দার জুনিয়রের ভাল নাম অলকেন্দু, ডাক নাম আলো। জামাই দেখে তো ব্যানার্জী পরিবার থ। এতো সত্যি আলো করে আছে গো, আমাদের মেয়ের চেয়েও তো জামাই দেখতে ভাল। জামাইয়ের ছুটি শেষ, বরোদায় উড়ে গেল তারা। সেখানে আলোর সারাদিন কাজ আর কাজ, স্মিতার সময় আর কাটতে চায়না। বেশ রাত করেই ফেরে আলো। স্মিতা দৌড়ে গিয়ে বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে আদর খায়। দুষ্টুমি করে জামাই বলে, ও, আলো দেখলেই দৌড়ে আসো, তুমি আমার শ্যামাপোকা।

    - খি ? খি ভললে থুমিঃ ? খি ভললেঃ ? নাকের পাটা ফুলে আছে, স্মিতা ফোঁস ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে – ছিটকে সরে যায়। আমি কালই বারাসত চলে যাব। এক সপ্তাহের মধ্যে উকিলের চিঠি পাবে তুমি – পেছন পেছন আলো দৌড়য়, আরে আরে হ’লটা কী, কী এমন বললাম – দড়াম করে মুখের ওপর দরজা বন্ধ হয়ে গেল। নাও এবার সোফায় ঘুমোও।

    ব্যানার্জীবাবু বললেন, কিন্তু মা, সেই নামটা তো আলোর  জানার কথা নয়, বরোদার লোক বারাসতের নাম জানবে কেমন করে, ওটা ও কিছু না ভেবেই – স্মিতা বলে, তুমি চুপ কর। আমার শ্বশুরের নাম ভুতো তুমি জান ? হ্যামিল্টনগঞ্জের নাম বারাসতের লোক জানল কী করে ? তুমি একটা ভাল উকিল দেখ। ব্যানার্জী বাবু বললেন, কী বিপদ, একটা বিয়ে দিতেই তো প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্ধেক বেরিয়ে গেল। যদি আবার দিতে হয় – আচ্ছা তুই না হয় ক’দিন একটু ভেবে নে। স্মিতা বলল, ভাবার কিছু নেই। তুমি উকিল ডাক, ডিভোর্সের কারণ দেখানো হবে, মেন্টাল টর্চার। ব্যানার্জীবাবু বললেন, কাউকে শ্যামাপোকা বললে মেন্টাল ইয়ের কেস দাঁড়াবে? মানে, আমিও ও তোকে আদর করে শ্যামাপো – স্মিতা দৌড়ে বেরিয়ে গেল।

    আট দিনের দিন একটা ফোন এল স্মিতার মোবাইলে –

    - স্মিতা ফোন অন করল। ওদিক থেকে -

    - হ্যালো – হ্যালো –

    - এদিকে চুপ।

    - হ্যালো, আমি আলো বলছি –

    - হ্যাঁ দেখা যাচ্ছে, নামেই সেভ করা আছে।

    - সাত দিন তো কেটে গেছে, উকিলের চিঠি পাইনি।

    - এদিকে চুপ।

    - ভাল উকিল কি পাওয়া গেছে? আমার চেনা একজন ছিলেন –

    - ইয়ার্কি হচ্ছে? ফোন কেটে দেব কিন্তু –

    - বলছি কি, চলে এলে হ’তনা? এখানে এসেও তো সেপারেশন চাওয়া যায়।

    - আমার ভাল লাগছেনা –

    - ভাল কি আমারই লাগছে –

    - যদি ফিরে যাই, কী নামে ডাকবে আমায় ?

    - ওই যে, আলোর সঙ্গে যে নাম ওতপ্রোত না কি যেন বলে, -শ্যামাপোকা -

    স্মিতা গিয়ে বলল, বাপি আমায় প্লেনের টিকিট কেটে দাও প্লীজ, একটু খরচা হবে তোমার। তা দুবার বিয়ে দেয়ার চেয়ে তো অনেক কম।

     


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ইস্পেশাল | ১৭ এপ্রিল ২০১৩ | ৮০৬০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | 24.97.169.51 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৪:০৪76180
  • ঐ একই। ছা অর্থাৎ সন্তানকে পোষেন যিনি। তাই জন্যই জানতে চাইলাম সন্তানকে পশুপাখীর মত পুষলে আপত্তি নেই?
  • aranya | 154.160.226.53 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৪:১৪76181
  • নিশ্চয়ই আপত্তি আছে। কিন্তু ঐ অর্থে তো ছাপোষা শব্দ-টা এখন ব্যবহার হয় না, মানে পাল্টে গেছে। এখন ব্যবহার হয় 'সাধারণ' অর্থে। আমি 'ছাপোষা' মানুষ মানে আমি 'সাধারণ' মানুষ।
  • | 24.97.169.51 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৪:১৬76182
  • ব্যবহার শুরু করলেই এটারও অর্থ পাল্টে যাবে। ঐ ঐ হবে। :-)
  • aranya | 154.160.226.53 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৪:২২76183
  • নিশ্চয়ই, বছর কুড়ি পর এরও অর্থ হয়ত পাল্টাবে। তবে তদ্দিন কিকি বা ঝুমঝুমি দুঃখ পাবে, এই আর কি।
  • a x | 138.249.1.198 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৪:৪৩76184
  • হুতোকে একটা উত্তর দিই। এত এত নয়েজ আসছে যে মাঝখান থেকে অনেক কিছু হারিয়ে যাচ্ছে, তাই আমি স্পেসিফিক একটা দিক নিয়েই কিছু কথা বলব, যেটুকু বলছি সেটুকুই, নো এক্স্ট্রাপোলেশন। দুর্বলতা এবং সারল্য ইস নো ভার্চু। দুর্বল মানুষ হতেই পারে, পরিবেশ তাকে দূর্বল করতে পারে, নিজের নিয়ন্ত্রণের বাইরে বহু জিনিস মানুষকে দূর্বল করতে পারে। কখনও বিনা কারণেই মানুষ দূর্বল। কিন্তু এই দূর্বলতাকে গ্লোরিফাই করারও কোনো কারণ দেখিনা। অথচ আমাদের সিনেমায়, সাহিত্যে, সংস্কৃতিতে কিছু কিছু দূর্বলতাকে এবং সারল্যকে একটা গুণ বলেই দেখানো হয় বা গ্লোরিফাই করা হয় - এই গ্লোরিফিকেশনে আপত্তি জানানো মানে কি দুর্বলকে অপমান করা?
  • rabaahuta | 172.136.192.1 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৪:৪৬76185
  • না, গ্লোরিফিকেশনকে আপত্তি জানানোটা অপমান নয়, এবং যদি কোন মেসেজ থাকে তহলে সেটা গ্লোরিফিকেশনমূলক হওয়া উচিতও নয় - আমার মতে।
  • dukhe | 212.54.74.119 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৪:৫০76141
  • গল্প ভালো হলে আমার রামদেব, খগম, স্বর্ণপর্ণী, হিটলার, জাতপাত, নিশিকুটুম্ব, লাল সূর্য, পরশপাথর কিসুতেই আপত্তি নাই। সোনামুখ করে খেয়ে নেব। লিস্টি মিলিয়ে এই এইগুলো আছে কিনা দেখে সে গল্পের ভালোত্ব কষে বের করা কি সোজা কম্মো রে দাদা?
    আর উপার্জনের অঙ্কে মানুষ মাপার ট্র্যাডিশন যত পুরোনোই হোক, লীলা মজুমদার তো লিখেই গেছেন - রান্নাঘরের দাসীর মত আপিসঘরের নফরেরও অভাব নেই। কোথাকার গোলামিকে আত্মনিয়ন্ত্রণের বা অকর্মণ্যতার ট্যাগ দেবেন পুরোটাই আপ রুচি।
  • san | 69.144.58.2 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৫:০২76142
  • না হাত নিশপিশাচ্ছে। প্রথমে দুখেদাকেই লিখি। উপার্জনের অঙ্কটা ( অর দ্য ল্যাক অফ ইট) বড়ো কথা নয় পরনির্ভরশীলতার মেন্টালিটি টাই কি ফ্যাক্টর।

    দুই সোসেনদিকে। একজন মহিলা বাই চয়েস ( বাধ্য হয়ে নয়) পরনির্ভরশীল থাকবেন ঠিক করলে সেটা আর 'যার জীবন তার ব্যাপার' থাকে কিকরে, কেননা তখন তাঁর সমস্ত ডিসিশনের ফাইনান্সিয়াল দায় অন্য লোকেদের বহন করতে হয়।

    অর জিংককে ক দেবার ব্যাপারে দে-দি যা লিখে দিয়েছে, ওই একই কথা। রিসেপ্টর ইত্যাদি নিয়ে বিদ্রূপ ভালো লাগেনি। সঙ্গে এটাও অ্যাড করতে হবে ন্যাকাষষ্ঠীপনা যে গল্পের নায়িকাকে বলা , লেখককে নয় সে বুঝেছিলাম , নইলে আপত্তি করতাম।
  • hu | 188.91.253.11 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৫:৫৩76143
  • ঈশানদা, আমি তো আমার আগের পোস্টেই বলেছিলাম কেন লিখেছি। লিখেছি কারণ না লিখলে হয়তো লেখকের মনে একটা ভ্রান্ত ধারনা তৈরী হত যে একটি মাত্র রিসেপটরের কাছেই ঠিক সিগনালটা পৌঁছয়নি। বাকি সবার 'মজার' গল্পটি মজারই লেগেছে।
    এবার অন্য প্রশ্নের উত্তরে আসি। কৈফিয়ত চাওয়া মনে হয়েছিল কারণ তুমি একাধিকবার বাকি যারা জিঙ্কের সাথে একমত হয়েছে তাদের থেকে ব্যাখ্যা চেয়েছিলে। এই বারবার প্রশ্ন করাটা আমার কাছে কৈফিয়ত চাওয়া মনে হয়েছিল। যদি সেটা ভুল হয়ে থাকে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আর আমি তোমার সাথে একমত যে নিজের অবস্থানটা সম্পূর্ণ ভাবে ব্যাখ্যা করার দায় আমারই। সেটা সবাই সবসময় করেনা, তাই আমারও করার কথা মনে হয়নি। কিন্তু করা উচিত ছিল এটা মেনে নিলাম।
    এবার তিননম্বর। সত্যি বলতে কি, গল্পটা পড়ে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না এটা কোন সময়ের। মোবাইল ফোন, ফ্যান্টা জিন্স ইত্যাদি আধুনিক উপসর্গ এসেছে বটে; কিন্তু সংলাপ বা কনটেক্স্ট ঠিক একালের মত নয়। রূপঙ্করবাবু যদিও অনেকবার বলেছেন যে এমন বহু ঘটনা উনি দেখেছেন। যদি উনি ঘটনাগুলো যেযুগে দেখেছেন সেই যুগেই চরিত্র নির্মান করতেন তাহলে হয়তো গল্পটি আরো বিশ্বাসযোগ্য হত। তার মানে এই নয় যে এই যুগে কোন মেয়ে বিয়ে দেওয়া থেকে প্লেনের টিকিট কেটে দেওয়া পর্যন্ত সব বিষয়েই বাবার প্রতি নির্ভরশীল নয়। এমন আছে। তবে আশার কথা সংখ্যাটা কমছে। অতএব ২০১৩ তেও এমন দেখা যায় কিনা এই অবাক বিস্ময়ে আমি জিঙ্কের সাথে একাসনে বসছি না। কিন্তু গল্পটা যে ঠিক ২০১৩-র মত হয়নি সেটা আমারও মত। এখন তর্কের খাতিরে এটা বলাই যায় যে আমার দেখার বাইরেও জগত আছে। সেটা মেনে নেব। আর সেই সাথে বলব গল্পটা ঠিক আমার জন্য জমল না। জিঙ্কের অনেকগুলো পোস্ট পড়ে আমার মনে হয়েছে ও গল্পটাতে মজা পায়নি। বরং ওর বেশ রাগ হয়েছে। আমি মজা না পাওয়ার সাথে একশোভাগ সহমত। রাগ নয়, আমার একটু দুঃখ হয়েছে মেয়েটির কথা ভেবে। ব্যাস, এইটুকুই।
  • DB | 125.187.39.101 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৬:০৯76144
  • ভালো লগোলো গল্পটা
  • sosen | 24.139.199.11 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৬:১৮76145
  • স্যান প্রশ্নটা কিন্তু ও-সব নয়। ওটা অন্য তর্ক। ওটা পরে আলোচনা করা যাক?
    ১। আমার বক্তব্য হলো ওরকম একটা চয়েস সমাজে বিদ্যমান। সেইটা কে কেন্দ্র করে সিরিয়াস কথা বলা যায়, হাসা -ও যায়। লেখক এইমুহূর্তে যা বলছে, সেটা তার অবজারভেশন মাত্র। সেটার সামাজিক অবস্থান নিন্দার্হ , প্রশংসার্হ দু-ই হতে পারে বিভিন্ন লোকেদের কাছে। কিন্তু গল্পে চরিত্রদের অবস্থান থেকে লেখক কোন দলে সাবস্ক্রাইব করছেন সেটা ধরে নেওয়া বায়াসড পঠন।
    ২। যে পড়ছে তার সামাজিক, আর্থিক এবং সময়গত অবস্থান অনুযায়ী রিসেপশন ভিন্ন হয়। সেটা যৌক্তিক। যেমন আজকের দিনে আমাদের মত বেশিরভাগ মেয়েদের একটা জায়গা থেকে পালাবার উপায় আমরা ভাবি একটা চাগ্রি খোঁজা। অন্য জায়গায়। আবার এখনো এমন একটা গ্রুপ আছে যারা বিয়ে করে তদ্গতচিত্তে সংসার করাটাকে একটা কনভেনিয়েন্ট এস্কেপ বলে ভাবেন। আবার আরো একটা গ্রুপ আছে যাদের ওই ভাবনাচিন্তার চয়েসটুকু নাই। তো সবার কাছে এর এফেক্ট ভিন্ন হবে, সে তো স্বাভাবিক।
    ৩। বহুস্তরীয় একটা তর্ক এটা। একচুয়ালি খুব-ই ওয়েলকাম। তবে যেখানে চলে গেছে সেখানে গল্পটা না, একটা সামাজিক অবস্থান নিয়ে তর্ক চলছে। রূপঙ্কর বা তাঁর শ্যামার বিশেষ ভূমিকা এতে নাই। এইটা আমি রূপঙ্করের জন্য বললাম। আপনি লিখে খালাস। এরপর এত বিশ্লেষণের দায় আপনার নেই। তবে উপকারের মধ্যে, আপনার দেখা মেয়েদের দলে এইত আরো ক'জন যোগ হলো। এদের কথাও উঠে আসুক, এদের অন্য ভাবে ভাবা-ও।
    ৪। এই বিষয়টার টই হলে অনেকের অবস্থান জানা যাবে। এমন কি যারা এই ঘরে-থাকা মেয়েদের ফিনান্সিয়াল প্রভাইডার, তাঁরা কি ভাবেন, সেটা-ও। টই হোক। কিম্বা থাকলে তুলে আনা হোক। সেখানে আমি স্যানের প্রশ্নের উত্তর দেব আমার মত করে।
  • sch | 132.160.114.140 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৭:০৭76146
  • গল্পটাকে একটা গল্প হিসেবে পড়লাম। রুপঙ্করদা'র অন্য লেখার মতো অতো জোরালো লাগলো না।

    সোসেন-দিদিকে একটা কথা " যারা এই ঘরে-থাকা মেয়েদের ফিনান্সিয়াল প্রভাইডার, তাঁরা কি ভাবেন, সেটা-ও।" - এ ভাবনা কি মিনিময় থেকে বোঝা যায়? মনে হয় না... বাইরের জগতে সবাই মুখোস পরে থাকে হয়তো ...কোনো একদিন অসতর্ক মুহুর্তে মুখোসটা খসে যায়
  • dukhe | 212.54.74.119 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৭:১০76147
  • স্যানের বক্তব্য বুঝি নাই। রোজগার না করা = পরনির্ভরশীলতা? তাহলে আর "উপার্জনের অঙ্ক (অর দ্য ল্যাক অফ ইট) বড় কথা নয়" বলা কেন? নিজের ঘরের কাজ করে মাইনে পাওয়া যায় না বলে সেটা অকর্মার ঢেঁকিদের এলাকা - এটাই কি বক্তব্য? নাকি নিজের বিয়ে নিজে ঠিক না করাকে পরনির্ভরশীলতা ধরা হচ্ছে? এট্টু কিলিয়ার করেন।
  • Tim | 188.91.253.11 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৭:১৫76148
  • গোটা তর্কটাই দুটো ভুলে শুরু হয়েছে বলে মনে হলোঃ
    ১। লেখককে ধরে এনে জিগ্যেস করা যায়না যে এটা এমন কেন করলেন, এরম করলেন মানে কি এই, আপনি হলে এইরকম করতেন ইত্যাদি প্রভৃতি ।
    ২। পাঠককে বাজে রিসেপশনের জন্য দায়ি করা যায়না, অন্তত লেখকের তরফ থেকে।

    ফলতঃ গোটা থ্রেড জুড়ে বিরক্তিকর চাপান উতোর।
  • san | 69.144.58.2 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৭:১৬76149
  • ১) সোসেনদি আবারো ঠান্ডা জল ঢেলে দিল ঃ-(

    ২) প্রথম পোস্ট নিয়ে যখন এত প্রশ্নই উঠল , আরেকটু ব্যাখ্যা দিই। আগেই দেওয়া উচিত ছিল।
    ক। এই ধরণের ঘটনা এখনও ঘটে , আমার কোনো সন্দেহ নেই।
    খ। এই ধরণের ঘটনাকে এখনও 'মজার গল্প' হিসেবে প্রেজেন্ট করা হয় এবং তাও গুরুচন্ডালির মতো পত্রিকায় , এইটা আমার কাছে বিস্ময়কর। ভুল এক্সপেক্টেশন মনে হয়।
  • de | 69.185.236.52 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৭:২১76150
  • এবং গল্পের নায়িকার নামে ইউজড বিশেষণ নিয়ে এতো বেশী "ঠাকুরঘরে --" দেখতেও বিচ্ছিরি বিরক্ত লাগছে! হাইট অব এক্স্ট্রাপোলেশন -- গল্পের নায়িকা একজন গৃহবধূ, সুতরাং তেনাকে অকম্মার ঢেঁকি বলা = সব গৃহবধূরা অ ঢে -- রাবীন্দ্রিক ছাগলীয় লজিক!
  • kumu | 132.161.158.199 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৭:২২76186
  • বাপ্পোরে বাপ্পা,এত কমেন্ট,এত?
    আমার যা মনে হয়েছে-যে শ্যামা নামটি অন্য জায়গায় শুনলে মেয়েটি অসম্ভব খেপে যেত,বরের মুখেও সেই নাম শুনে সে প্রথমে রেগে গেছে ঠিকই,কিন্তু ভালবাসার(বিরহে যা আরো প্রবল)কাছে রাগ হেরে গেছে,বরের মুখে ঐ বিশেষ নামটি শুনতেও আর তার আপত্তি নেই-এটাই গল্পটির মূল কথা।
    সোসেনের কথা একেবারে ঠিক,
    পাঠকের পছন্দ -অনুযায়ী মেসেজ দেওয়ার দায় লেখকের নাই
  • de | 69.185.236.52 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৭:৩০76151
  • আরেকটা কথা -- সইত্যের খাতিরে -- কালকে ভাটেও দেখলাম -- দূর্বলকে আঘাত ইঃ অভিযোগ উঠলো -- আমার আশ্চর্য্য লাগে যখন দেখি খামোখা একটা গল্পের চরিত্রকে নিয়ে করা কমেন্টকে গায়ে পড়ে নিজের দিকে টেনে আনা হয়!! পোচ্চুর ইন্সিকিওরিটি না থাকলে তো এটা হয় না!

    রুপঙ্কর-দা আরো অনেক অনেক ধানাই-পানাই লিখবেন আশা করি -- স্ট্যান্ডিং ওভেশন দেওয়ার জন্য অপেক্ষায় রইলাম। এখনো অব্দি আমার করা কোন কমেন্ট ওনাকে উদ্দেশ্য করে নয়!
  • de | 69.185.236.52 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৭:৩৩76152
  • *রূপঙ্কর -দা
  • sosen | 24.139.199.11 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৭:৫৯76153
  • দে-দির অবজারভেশন আমারও।
    তবে ইনসিকিউরিটি যখন রয়েইছে, বিভিন্ন লেভেলে, সেটাকে একটু টানাটানি করে দেখা-ই যেতে পারে।
    টই স্যান , টই ।
    Sch যা বলেছেন সেটা-ও আমি কইতে চাই। দেখাই যাক না কজন মুখোসের আড়াল থেকে বেরোবার , ইচ্ছে রাখে।
  • san | 69.144.58.2 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৮:১০76154
  • দুখেদা।
    এক। উপার্জনের অঙ্ক বড় কথা নয় বলতে , কে কতো বেশি উপার্জন করল , সেইটা সে মানুষ হিসেবে কেমন, এইটা দিয়ে বিচার্য নয়।
    কিন্তু মোটারকম আর্ন না করেও, স্বনির্ভর হওয়াটা খুব জরুরি ( বলে আমি মনে করি)।
    দুই। রোজগার না করা পরনির্ভরশীলতা। ঘরের কাজের আর্থিক মূল্য থাকার পরেও। কেননা ঘরের কাজের আর্নিং টা আবার বাড়ির ব্রেডউইনারের আর্নিং এর উপরে প্রচন্ড নির্ভরশীল। অতএব তা কিছুকিছু ঝড় ঝাপটা থেকে বাঁচাবে না। যেমন ব্রেডউইনারের অসুস্থতা , মৃত্যু, লে অফ ইত্যাদি।
    তিন। অকর্মার ঢেঁকি একটি স্পেসিফিক চরিত্রকে বলা হয়েছে। এর কোনো জেনারালাইজড ব্যাখ্যা দেবার প্রশ্ন নেই।
    চার। নিজের বিয়ে ঠিক করা কোত্থেকে এল বুঝিনি।
  • san | 69.144.58.2 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৮:১১76155
  • সরি, আচ্ছা, এখানে আর নয়।
  • রূপঙ্কর সরকার | 126.203.211.179 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৮:১৩76156
  • এইবার সত্যি সত্যি ট্রান্সমিটারে গন্ডগোল ধরা পড়েছে। রেস্পন্ডার/রিসেপ্টরে নয়। আমি অনেকবার ব্যাখ্যা করার পরও যখন ব্যাপারটা পরিষ্কার নয়, তখন খামতি আমার।

    আমি বহু বার বললাম, 'পেছনে লাগার নাম' হচ্ছে গল্পের কেন্দ্রিয় চরিত্র ওরফে 'শ্যামাপোকা'। এই নাম নিয়ে লোককে ভায়োলেন্টলি রিয়্যাক্ট করতে দেখেছি, আত্মহত্যার কথা শুনেছি, খুন করার কথা এই ক'দিন আগে কাগজে বেরিয়েছে। আমার খুব কাছ থেকে দেখা এসব। এই নিয়ে আমার গল্পের একটা সিরিজ আছে, এটা তার মধ্যে একটা।

    বিশ্লেষণ ঃ

    স্মিতা নামের ঠেলায় ব্যতিব্যাস্ত। ফার্স্ট ইয়ারের মেয়েটাকে অত জোর বকা দেয়ার ফলে শ্যামাসঙ্গীত শুরুহল।

    তখন কলেজ বদল। ঐ প্রচন্ড ভীড় ঠেলে কোলকাতায় আসার চেয়ে বিয়ে তো তখনই চাইতে পারত। তবু সে অত কষ্ট করেও পড়তেই চেয়েছিল। কোলকাতাতেও নামটা পৌঁছে গেল। আর উপায় থাকলনা।

    তার বাবা কিন্তু আবার কলেজ বদল করা সাজেস্ট করেছিলেন। স্মিতা রাজি নয়। তবে 'বিয়ে' করে পরনির্ভরশীল করাটা যাঁরা হাইলাইট করছেন, তাঁরা তার কন্ডিশনটা একটু ঠান্ডা মাথায় খেয়াল করুন, প্রিকন্ডিশন ছিল - পাত্র যেন প্রবাসী হয়। তার মানে সে এমন যায়গায় পালাতে চেয়েছিল, যেখান অবধি নামটা না পৌঁছয়।

    বাবা তাতেও রাজী নন। পাত্রপক্ষো পড়াশোনা চায়, এই বলে ডিসসুয়েড করার চেষ্টা করেছেন, সমাদ্দার- ফমাদ্দার বলে কাটাতে চেয়েছেন, রাঢ়ী না বঙ্গজ, সে প্রশ্নও তুলেছেন, কিন্তু ভবি ভোলবার নয়।

    যাঁরা বিপক্ষে লিখেছেন, এবং যাঁরা গল্পটাকে (আমাকে নয়) ডিফেন্ড করেছেন, সব্বাইকে অনুরোধ, ওপরের পয়েন্টগুলো খেয়াল করুন। ধানাইপানাই-এর সঙ্গে তুলনা কীভাবে আসবে, ওটা ডায়ারি, এটা গল্প। এই 'নাম' সিরিজের অনেক গল্প আমার আছে। গুচে পাঠিয়েও দেব। ছাপা হবে কিনা তা ঈশানদা/ পাইদি-র ওপর। তবে আমি এইরিকমই লিখি। এই নাম ধরে ক্ষেপানো ব্যাপারটার সঙ্গে যাঁরা পরিচিত নন, তাঁরা বিয়ে ইত্যাদি সাবসিডিয়ারি প্লট নিয়ে ভাববেন, তাতে আর আশ্চর্য কী। কিন্তু এগুলো তো আমার চোখে দেখা, বারংবার দেখা আর তাই নিয়ে একটা আস্ত সিরিজ লিখে ফেলেছি কতবার বলি। আশ্চর্য, ছপ্পর ফাড়কে আমার টি আর পি বেড়ে যাচ্ছে। একটা পাতি গপ্পো নিয়ে এত্ত আলোচনা ?
  • @#$%^ | 69.160.210.2 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৮:১৫76157
  • লেখার পর থেকে বাকি মিনিময়টাকে টই হিসেবে ট্রীট করা হচ্ছে না কেন? অন্তত শেষ আপডেটেড টপিকের লিস্ট থেকে তো সাইট ডিজাইনারদের তেমনই প্রত্যাশার ছবি ভেসে ওঠে। আলাদা টইয়ের দরকার কি?
    শেষের কথাটায়ঃ "বাপি আমায় প্লেনের টিকিট কেটে দাও প্লীজ, একটু খরচা হবে তোমার। তা দুবার বিয়ে দেয়ার চেয়ে তো অনেক কম।" - এতটাই চমৎকৃত হয়েছিলাম লেখকের সেন্স অফ হিউমার-এ (মানে বরের কাছে ফেরার এই আঁকুপাকু-কে যেভাবে রিপ্রেসেন্ট করা হল সেই ভঙ্গিতে) যে এর নারীবাদী ব্যাখ্যা পড়ে থেকে কুলকুল করে হাসি পাচ্ছে। এইজন্যে মিনিময় আমি এত্ত পছন্দ করি।
  • রূপঙ্কর সরকার | 126.203.211.179 (*) | ০২ মে ২০১৩ ০৮:৩১76158
  • আমি কারো সঙ্গে তুলনায় যাচ্ছিনা, কাউকে ছোটবড় করছিনা। শুধু একটা কথা মনে পড়ছে, কুমু দেবী দিল্লী থেকে কমেন্ট দিলেন - স্মিতাকে বরোদার কলেজে ভর্তি করে দিননা। বড় ভাল লেগেছিল এই রিঅ্যাকশনটা। উত্তরে লিখেছিলাম - আলোকে বলব (স্মাইলি)
  • a x | 118.204.208.30 (*) | ০২ মে ২০১৩ ১২:০৩76159
  • অভ্যুর কথা আমারও মনে হয়। কে বলছে সেটা বড্ড প্রকট হয়ে ফিরে আসে মাঝে মাঝেই এই সাইটে। পাঠপ্রতিক্রিয়ার সাথে একমত যারা সেই সব পাঠকের কাছ থেকে কৈফিয়ত চাওয়া আমার কাছে বেশ ফালতু ঠেকছে। কেন মশাই অমুককে সাপোর্ট করলেন, ক থেকে ঙ সব করলেন না চ ছ জ করলেন। ন্যাকাষষ্ঠিপনা গল্পের ঐ জায়গাটাকে বলা হয়েছিল, লেখককে না। তাও স্ট্রং ওয়ার্ড, আমি হলে হয়ত ব্যবহার করতাম না। কিন্তু এইধরণের স্ট্রং ওয়ার্ড ব্যবহার করে প্রতিক্রিয়া জানানো বেশ কমন এখানে, সেখানে কখনও ঈশানকে কারুর থেকে কৈফিয়ত চাইতে সত্যিই দেখিনি। প্রচণ্ড খারাপ লাগা ব্যক্ত করতেও দেখিনি। "বরে পোষা ঘরে পোষা"-ও যথেষ্ট স্ট্রং এক্সপ্রেশান - সেখানে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখলাম না। বলে রাখা ভালো ন্যাকাষষ্ঠিপনা ও বরে পোষা ঘরে পোষার মধ্যে দিয়ে যে স্পেসিফিক বক্তব্য রাখা হয়েছে, দুটোতেই আমিও একমত। আরো মজার হল, বিরুপ সমালোচনা পেতেই লেখক যখন পাঠকদের বিদ্রুপ করছেন এবং সিকির সাথে নাজ-নাজ-উইন্ক উইন্ক সম পাঠকের গ্রহণক্ষমতা নিয়ে কথা চালাচ্ছেন (বস্তুত যেখানে সিকি পাতি ছড়াচ্ছে), সেটাতেও ঈশানের খারাপ লাগলনা। ইনফ্যাক্ট পাঠ-প্রতিক্রিয়ায় কোনো লেখকের এইরকম রিয়াকশন আমি অন্তত খুব একটা দেখি নাই।
  • a x | 118.204.208.30 (*) | ০২ মে ২০১৩ ১২:০৮76160
  • আর এই পথের পাঁচালী, বিভূতি ইত্যাদি নিয়ে এসে কেমন সৃজিৎ-সত্যজিৎ হয়ে যাচ্ছে, মানে মাঝে মাঝে সন্দেহ হচ্ছে লোকে ইচ্ছে করে খিল্লি করছে কিনা।
  • dukhe | 212.54.74.119 (*) | ০২ মে ২০১৩ ১২:১৬76161
  • a x প্রতিক্রিয়া মিস করে গেছেন । এই ন্যান -

    Comment from kiki on 02 May 2013 08:05:51 IST
    "বাবারে!
    তবে ঘর পোষা, বর পোষা(?), ন্যাকা, অকর্মার ঢেকি , আহ্লাদে হিসেবে আমারো খুব খারাপ লাগে যখন লোকে এদের এই দোষ গুলো নিয়ে চরম অবজ্ঞা ফোটায় তাদের কথাবার্তা, হাবভাবে। "
  • dukhe | 212.54.74.119 (*) | ০২ মে ২০১৩ ১২:৩৫76162
  • স্যান,
    চার। আমি ভাবছিলাম রোজগার না করা নাকি "বাবা আমার বিয়ে দিয়ে দাও" বলা - কোনটার জন্য পরনির্ভরশীলতার মার্কা লাগল। মানে নিজের বিয়ে নিজে ঠিক করলে তো আর বাবা-নির্ভর হতে হত না। তাই আর কি।
    তিন। গল্পের চরিত্র কেন অকম্মার ঢেঁকি আমার রিসেপটরে ধরা পড়েনি। আসলে মানেবই ছাড়া আমি একদম চরিত্র বিশ্লেষণ করতে পারি না। শেষে ভাবলাম বুঝি রোজগার করে না বলে। তা এখন তো মনে হচ্ছে তা নয় - খুবই স্পেসিফিক কিছু কারণ আছে যা আর পাঁচজন অ-রোজগেরে মানুষের ক্ষেত্রে জেনারালাইজ করা যায় না। ওক্কে।

    বাকিগুলো নিয়ে মিনিময় করে লাভ নেই।
  • GPBP | 129.226.173.2 (*) | ০২ মে ২০১৩ ১২:৪২76163
  • ঐ সব "শ্রুতিমধুর" বিশেষণ প্রয়োগ না করেও মতামত দেওয়া যায় আর তাতে তার ধার কমে না, কুমুদি র প্রতিক্রিয়াই তার প্রমাণ।
    এত সামান্য কারণে এত তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখে আবার মনে পড় গেল ....... "এই আক্রোশ, এই ক্রোধ, কোনটাই আকাশ থেকে পড়ে না"...........
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে মতামত দিন