এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • গণিত, সৌন্দর্য্য ও অমরত্ব

    সুকান্ত ঘোষ লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ৩১ মে ২০১৪ | ৫৯৬৮ বার পঠিত | রেটিং ৩ (১ জন)
  • আমি গণিতবিদ নই – কিন্তু গণিত ভালোবাসি। গণিতজ্ঞদের দিকে তাকাই সম্ভ্রমের চোখে – আর ঠিক এই কারণেই পাশের গ্রামে ফিরোজ, বন্ধু সুমন এরা ছিল আমার ঈর্ষা মিশ্রিত বিষ্ময়ের পাত্র। তাই এই লেখা শুরু করার আগেই সাফাইটা গেয়ে দিই – বলে রাখি যে এই প্রবন্ধ কোন নতুন তথ্য দেবার জন্য নয়, নয় কোন গালভরা গবেষণার গল্প বলার জন্য। এটা নিছকই সেই সব তথ্য, ঘটনা আর নাম সমৃদ্ধ, যা অনেক সময় আমরা খেয়াল করি না। অর্থাৎ ধরুন আপনি নিজের জামাটি রোজ পড়েন, কিন্তু সেই জামায় কয়টা বোতাম আছে তা কখনো খেয়াল করেছেন কি? এই লেখাও তেমন হবে আর কি! কিছু বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ লিখতে গেলে ভুগতে হয় তথ্যে অপ্রতুলতায় – কিন্তু গণিত নিয়ে লিখতে গেলে ব্যাপারটা উলটো। এখানে তথ্যের প্রাচুর্য্য এতো বেশী যে সংক্ষেপে কিছু লেখাই মুশকিল! প্রচুর বই, রিপোর্ট, জার্নাল ছাড়াও তো আজকাল হাতের কাছে রয়েছে ইন্টারনেট! তাই অনুমান করছি যে এখানে যা লিখব তার অনেক কিছুই আপনারা ইন্টারনেট থেকে যাচাই করে নিতে পারবেন। অনেকের মত আমারও ছিল গণিতবিদদের জীবন নিয়ে একটা কৌতূহল – কেমন করে তাঁরা কাজ করেন, বাস্তবের সাথে তাঁদের যোগ কতখানি বা তাঁদের গবেষণা আমাদের জীবনের সাথে কতটা সরাসরি যুক্ত – এই সব প্রশ্ন ভাবতে ভাবতেই এই লেখার সূত্রপাত।

    কোনখান থেকে শুরু করবে বুঝতে পারছি না। সমস্ত বিজ্ঞানীদের মধ্যে যাঁরা গণিতের সাথে যুক্ত তাঁদের নিয়ে এত উপকথা, এত রটনা যে তার থেকে কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যে খুঁজে বের করাই মুশকিল। তাহলে আসুন একটা গল্প দিয়েই শুরু করা যাক।

    এক মনোরম গ্রীষ্মের সকালে তিন বন্ধু মিলে স্কটল্যান্ডের এক গ্রামের ধার দিয়ে ট্রেনে করে যাচ্ছিলেন। বন্ধুদের মধ্যে একজন ছিলেন জ্যোর্তিবিজ্ঞানী, এক জন পদার্থবিদ ও অপর জন গণিতজ্ঞ। হঠাৎ ট্রেনের পাশে মাঠে চরতে থাকা একটি কালো ভেড়াকে দেখে জ্যোর্তিবিজ্ঞানী বলে উঠলেন – কি আশ্চর্য!, স্কটল্যান্ডের সব ভেড়াই দেখি কালো। এই কথার প্রতিবাদ করে পদার্থবিদ বলে উঠলেন – না, না – স্কটল্যাণ্ডের কেবল কিছু ভেড়ার রঙ কালো। এইসব শুনে তাঁদের গণিতজ্ঞ বন্ধু আকাশের দিকে তাকিয়ে গম্ভীরভাবে বলে উঠলেন – এই ভেড়াটা দেখে আমরা কেবল এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে, স্কটল্যান্ডে একটা মাঠ আছে ন্যূনতম পক্ষে, সেই মাঠে একটা ভেড়া চড়ে বেড়াচ্ছে, যেই ভেড়ার একটি দিক ন্যূনতম পক্ষে কালো।

    গণিতবিদ মানেই খুঁতখুঁতে, বাস্তবের সাথে যোগহীন, আপন ভোলা একটি মানুষের ছবি আমাদের মনে ভেসে ওঠে। এটা অনেক সময় সত্যি – আবার অনেকের ক্ষেত্রে নয়। স্বল্প পরিসরে ইতিহাস বলা সম্ভব নয়, এমন কি বিখ্যাত গণিতজ্ঞদের কেবল নাম মাত্র উল্লেখ করতে গেলেই অনেক জায়গার দরকার হবে। তাই আমরা এই আলোচনতে কেবল ‘সংখ্যাতত্ত্বের’ মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকব। অনেকের মতে গণিতের এই শাখাটাই নাকি সবচেয়ে আকর্ষনীয়। হতেও পারে বা, তবে যেটা অনস্বীকার্য সেটা হল আমাদের জীবনে সংখ্যার অবদান। সেই বিষ্ময়কর সাদৃশ্য নিয়ে আমরা পরে বিস্তারিত আলোচনাতে যাব।

    মানুষ চিরকাল ধরে গণিত সমন্ধীয় দুটি অনন্ত জিজ্ঞাসা নিয়ে বসে আছে – গণিতের প্রকৃতি (Nature of Mathematics) আর গণিতের দর্শন (Philosophy of Mathematics)। বিজ্ঞানের যে কোন শাখার এবং তার সাথে গণিতেরও বিশেষ কোন প্রশ্নের উৎপত্তি জানতে হলে আমাদের সেই প্রাচীন যুগে ফিরে যেতেই হবে। এটা বারবার প্রমাণিত হয়েছে যে, যেই সভ্যতা যত উন্নতি করেছে তার মনে ছিল ততই অনুসন্ধিৎসা আর নতুন কিছু খুঁজে বার করার উদগ্র ইচ্ছা। গণিতের উন্নতিতে সেই রকমই প্রাচীন দুটি সভ্যতা ছিল মিশরীয় এবং ব্যাবিলনীয়। সংখ্যাতত্ত্বেই হোক আর জ্যামিতির কোন বিষয়েই হোক, এদের ভিত্তি এখনও অনেক সময় সেই হাজার হাজার বছর আগেই আবিষ্কৃত তত্ত্বের উপর নির্ভর করে। আর ঠিক এখানেই প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার অবদানও কম নয়। আমার তো মাঝে মাঝে এখনও শূন্য লেখার সময় অবচেতন মনে গর্বিত হয়ে উঠি এই ভেবে যে এটা আমাদেরই দান! সে যাই হোন, আরও অনেক কিছু সাথে মানুষ জিজ্ঞাসা করে এসেছে যে – গণিত কি উদ্ভাবিত (invent) হয়েছিল নাকি মানুষ কেবল সংখ্যাগুলো আবিষ্কার (discover) করেছিল?

    গণিতের উন্নতি কি মানুষের চিন্তাধারার উপর নির্ভর করেই না করেই হয়ে চলেছে? এর উত্তর হয়তো কোনদিনও সম্পূর্ণ ভাবে পাওয়া যাবে না। তবে কোন এক বিখ্যাত মনীষী সুন্দরভাবে বলেছিলেন, “তুমি একজন দার্শনিককে জিজ্ঞাসা কর যে ‘দর্শন’ কি? বা একজন ঐতিহাসিককে ‘ইতিহাস’ কি? এবং তুমি দেখবে যে, এর উত্তর দিতে তাদের কোন অসুবিধাই হচ্ছে না। এদের মধ্যে কেউই তার নিজের বিষয়ে এগোতে পারবে না যদি সে না জানে কিসের সন্ধানে সে ঘুরছে। এবার সেই একই প্রশ্ন কর একজন গণিতবিদকে, ‘গণিত’ কি? সে যদি সত্যিই সৎ উত্তর দেয় তাহলে দেখবে সে বলছে এই প্রশ্নের উত্তর সে জানে না, কিন্তু এই না জানা তাকে গণিত নিয়ে কাজ করতে বাধা দিচ্ছে না। এর থেকে বড় কথা আর কি হতে পারে?”

    আমি হয়তো অঙ্ক তত ভালো জানি না – কিন্তু তাতেও তো এই প্রবন্ধে অঙ্ক নিয়ে ধস্তাধস্তি আটকাচ্ছে না!

    এটাতো আমরা সবাই জানি যে, লক্ষ্য ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না – অনন্ত তার জিজ্ঞাসা আর অনন্ত তার উৎসাহ। সেই কবে থেকেই আমরা চলেছি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে। আগে মানুষ প্রকৃতিকে ঈশ্বর বলে পূজা করেছে, তারপর যত দিন গেছে প্রকৃতির খেয়ালিপনার উত্তর খুঁজতে আমরা নিয়োজিত হয়েছি। প্রকৃতি কি সত্যই কোন সূত্র মেনে চলে? সেই প্রাচীনকাল থেকে আজকের Theory of Everything পর্যন্ত আমরা সেই চরম সত্যের সন্ধানে ব্যপৃত। আর সেই সন্ধানে আমাদের হাতিয়ার হল গণিত। খাতার উপর ছোট ছোট আঁকা আঁকি আমাদের বলে দেয় পদার্থের চরম কাঠামো, গ্রহতারার গতিপথ, এমন কি আমাদের দেহের গঠনও। এগুলো সবই ঘটনা আর তার কারণ হতে পারে, কিন্তু ব্যাখ্যা নয়। কেন মেনে চলবে গ্রহ-তারা, অণু-পরমাণু আমাদের গ্রথিত সূত্র? কেন পৃথিবী নাচবে গণিতের সাথে তাল দিয়ে? এগুলো কি কেবলই ঘটনার সমানুপাত, নাকি অন্য কোন গোপন যোগ সত্যি আছে এদের মধ্যে? বাস্তবের একটা অভ্যাসই হল মানুষের কল্পনার সাথে পাল্লা দেওয়া – আমরা যে পরিকল্পনা করেছি তার থেকে বিচ্যুত হওয়া। কিন্তু একমাত্র গণিতি মনে হয় সেই নিয়মের বিষ্ময়কর ব্যতিক্রম যা কিনা নিয়মটাকেই প্রমাণ করে। গণিতের সূত্র মেনেই চারশো বছর পর ধূমকেতু আবার দেখা যায় তার চিহ্নিত জায়গায়। তাহলে নিয়মটি কি? এই সব ভেবেই কি আমরা আজও এই প্রবাদ বাক্যটি ব্যবহার করি – Mathematics is the finest language in the world?

    পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন সংখ্যা-পাগল গোষ্ঠীর খোঁজ পাওয়া যায় গ্রীসে খ্রীঃ পূঃ ষষ্ঠ ও পঞ্চম শতাব্দীতে। আমরা আধুনিক দুগে কম্পিউটারের সামনে বসেও মাঝে মাঝে সংখ্যার আচরণে ঘাবড়ে যাই, তা হলে সেই প্রাচীনকালে লোকেরা সংখ্যা নিয়ে আদিখ্যেতা করবে এতে আর আশ্চর্য কি? গ্রীসের ঐ প্রাচীন গোষ্ঠীকে বলা হত পিথাগোরিয়ান। এরা সংখ্যার ব্যবহারে এতই চমৎকৃত ছিল যে জীবনের সবকিছুই এরা সংখ্যা দ্বারা চালিত বলে মনে করতে শুরু করে। এদের বিশ্বাস ছিল প্রত্যেক বস্তুই আদতে সংখ্যা এবং এই সব সংখ্যা হল বাস্তবের মূল ভিত্তি। সমস্ত জিনিসই নাকি সংখ্যার সাহায্যে বিশ্লেষণ করা যাবে, কিন্তু সংখ্যাকে আর অন্য কিছু দিয়ে বিশ্লেষণ করা যাবে না! এ সেই অনেকটা ভগবান বিশ্বাসের মত ব্যাপার। সব কিছুই ভগবানের সৃষ্টি – তাহলে ভগবানের সৃষ্টিকর্তা কে? এদের বিশ্বাস মত কেবলমাত্র কোন বিশেষ বস্তু গণিতের সূত্র মেনে চলে তা নয় – সমগ্র জগত, তাতে প্রত্যেক বস্তুই সংখ্যার দ্বারা চালিত। এ পর্যন্ত ঠিক ছিল, কিন্তু এরা এরপর ‘ন্যায়বিচার’, ‘সুযোগ’ – এই সব অ্যাবস্ট্রাক্ট জিনিসও সংখ্যা দিয়ে ব্যাখ্যা শুরু করে। এর পর বলাই বাহুল্য এদের পিথাগোরাস ভ্রাতৃসংঘ বেশীদূর এগোয় নি। যদি সত্যই সবকিছু সংখ্যা স্বারা নির্মিত হয়, তাহলে বাস্তবের সঠিক প্রকৃতি বোঝার জন্য আমাদের দরকার হবে সংখ্যাদের চর্চা, তাদের ধর্ম, তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক ইত্যাদি। এগুলো হতেই পারে আমাদের দৈনন্দিন কাজের সাথে সম্পর্ক-বিবর্জিত, যাকে আজকাল Pure Mathematics বলা হয়। তবে পিথাগোরাস সংঘের মূল দূর্বলতা ছিল সংখ্যাদের জীবিত বস্তুর মত বিচার করা।

    এর পর আসে Platonism – যে মতবাদের প্রবক্তা ছিলেন প্লেটো। এর মূল ভিত্তি ছিল তাঁর বিশ্বাস যে, আমরা গণিতের তত্ত্ব আর সত্যতা কেবল খুঁজে বের করি মাত্র। সংখ্যারা আমাদের আবিষ্কার নয় – তারা আগে থেকেই বর্তমান, সেই কোন দ্বীপ আবিষ্কারের মত। এই সব দেখে শুনেই মনে হয় চার্লস ডারউইন মন্তব্য করেছিলেন, “গণিতজ্ঞ একজন অন্ধ ব্যক্তি মাত্র – যে অন্ধকার ঘরে একটি অস্তিত্ত্ববিহীন কালো বেড়াল খুঁজে বেড়াচ্ছে”।

    তাহলে সংখ্যদের এমন কি বৈশিষ্ট যে প্রাচীনকাল থেকে মানুষ তার উপর এত আকর্ষণ বোধ করে আসছে? কিছু নমুনা দেওয়া যাক বিশ্লেষণ করে। আসুন একটা সংখ্যা শ্রেণী লিখে ফেলি,

    [ক্রমশঃ]
    1, 1, 2, 3, 5, 8, 13, 21, 34, 55, 89 …

    চেনা চেনা লাগছে? এই শ্রেণীটিকে বলা হয় Fibonacci’s series। লিওনার্দো ফিবোনাচি এই শ্রেণীটি প্রথম আবিষ্কার করেন। এই শ্রেণীর একটা সংখ্যা পাওয়া যায় তার ঠিক আগের দুটিকে যোগ করে। যেমন, 1 + 1 = 2, 1 + 2 = 3, 3 + 5 = 8, 5 + 8 = 13 ইত্যাদি।

    দেখতে এমনিতে সাদামাটা, কিন্তু মজা হচ্ছে কোন সংখ্যাকে তার আগেরটা দিয়ে ভাগ করলে পাওয়া যাবেঃ

    2/1=2.0, 3/2 = 1.5, 5/3=1.67, 8/5=1.6, 13/8=1.625, 21/13=1.615, 34/21=1.619, 55/34=1.618, 89/55=1.618

    সংখ্যাদের মান যত বড় হবে, অনুপাত ততই এগিয়ে আসবে নির্দিষ্ট মানে – যেটা হল 1.618 । এই সংখ্যাটাকে বলা হয় Golden Ratio (স্বর্ণ অনুপাত)। এই সংখ্যা আমাদের জীবনে এবং চারপাশের জিনিসের সাথে এমন ভাবে জড়িয়ে আছে যে এটাকে মনে করা হয় ভগমানের সৃষ্টি। গাণিতিক উপায়ে পাওয়া যেতে পারে একটা সরলরেখাকে ভাগ করে। একটা সরল রেখাকে বড় আর ছোট ভাগে ভাগ করা হল। ভাগটা এমন ভাবে হওয়া চাই যেন ছোট ভাগের সাথে বড় ভাগের অনুপাত, বড় ভাগের সাথে সম্পূর্ণ সরলরেখার ভাগের অনুপাতের সমান হয়, অর্থাৎ, a/b = (a+b)/a = 1.618 [দেখুন সাথের ছবি 1A]।

    <[url=

    <

    1.618 সংখ্যাটির মজা হচ্ছে এটি দিয়ে 1 কে ভাগ করলে পাওয়া যায় (1/1.618) = 0.618

    প্রাচীন গ্রীসে এই সংখ্যার আকর্ষণ এতই বেশী ছিল যে স্থপতিরা এটি তাদের কাজে ব্যবহার করতে শুরু করেন। সবচেয়ে বড় উদাহরন হল পার্থেনন। আমরা সবাই এর ধ্বংসাবশেষের ছবি দেখেছি [দেখুন সাথের ছবি 1B]। এখন যদি একটা কল্পিত আয়তক্ষেত্র আঁকা হয় এর সবচেয়ে বাঁ দিকের থাম বা পিলার থেকে ডানদিকের থাম এবং নীচ থেকে চূড়া পর্যন্ত, তাহলে দেখব সেই আয়তক্ষেত্রের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত প্রায় 1.618। এছাড়া পার্থেননের একদম সামনে কিছু আয়তক্ষেত্র দেখা যায় যাদের দৈর্ঘ্য-প্রস্থের অনুপাতও Golden Ratio –র কাছাকাছি।

    শুধু স্থাপত্যশিল্প নয়, চিত্রকলাতেও এই অনুপাতের ব্যবহার অনেক। এমন শোনা যায় লিওনার্দো দা ভিঞ্জি নাকি এই ‘অনুপাত’ একান্তই ভালোবাসতেন। তার প্রমাণ পাওয়া যায় অবশ্য সেই বিখ্যাত ‘মোনালিসা’ ছবিতে। ছবিটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত 1.618 [দেখুন সাথের ছবি 1C]। তাছাড়া যদি একটি আয়তক্ষেত্র আঁকা হয় মোনালিসার ঠিক মুখমণ্ডলে তবে তার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত হবে সেই Golden Ratio। এছাড়া আরো অনেক বিখ্যাত ছবিতেও (যেমন লাষ্ট সাপার, দ্যা সেইন্ট) Golden Ratio ব্যবহার লক্ষণীয়।

    এতো না হয় গেল মানুষের এই অনুপাত ব্যবহারের কথা। প্রকৃতিতেও Golden Ratio এত জায়গাতে চোখে পড়ে যে, মাঝে মাঝে সত্যই ভাবতে ইচ্ছে করে ভগবান একজন গণিতজ্ঞ! Golden Ratio মনে হয় প্রকৃতিরও ভালোবাসার সংখ্যা। আর এটাও ঠিক যে, যে সমস্ত আকার Golden Ratio মেনে চলে – সেগুলি বেশ নয়ন সুখকর হয়। কেন? আমি জানি না – হয়ত বা কেউই না!

    শামুক, শাঁখ দেখেছেন তো? শাঁখের পেঁচানো আকৃতি তো দেখতে বেশ লাগে। আসুন দেখি যে Fibonacchi series থেকে কি করে এমন আকার আসতে পারে। প্রথমে একক দৈর্ঘ্যের একটি বর্গক্ষেত্র আঁকুন। তারপাশে আরেকটা। তাহলে পাশাপাশি দুটি বর্গক্ষেত্রে মোট দৈর্ঘ হল দুই একক। আবার দুই একক বাহু বিশিষ্ট একটি বর্গক্ষেত্র আঁকুন ঠিক ওদের উপর। তাহলে এখন একটি নতুন বর্গক্ষেত্র হল যার বাহুর দৈর্ঘ্য হল তিন একক। এই ভাবেই এঁকে যান। এবার সাথের ছবি 1D এর মতন কোন গুলি পরস্পর যোগ করুন। কি পাচ্ছেন? একটা শাঁখের আদল না?

    আমরা তো পাইন গাছের ফুল দেখেছি (Pine Cone), কেমন সব চক্রাকারে সাজানো থাকে। যদি একটি বিশেষ চক্র (spiral) ধরে গুণতে থাকেন, তাহলে দেখবেন ওরা সংখ্যায় 21, 34, 55 ইত্যাদি – আশ্চর্য্য না? শুধু তাই না – যদি মাছ, ফড়িং, কচ্ছপ, পাখী এদের চারিদিকে একটি আয়তক্ষেত্রে আঁকেন, তাহলে অনেকক্ষেত্রে দেখা যাবে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত 1.618, অর্থাৎ জীবজগতের অনেক প্রাণীর আকারই Golden Ratio অনুযায়ী!
    মানুষের এক প্রিয় সহচর ঘোড়া – তার শরীরে তো Golden Ratio-র ছড়াছড়ি।

    অন্য অনেক প্রাণির মত মানুষের দেহেও Golden Ratio-র ছাপ রয়ে গেছে। সাথের ছবি 1E থেকে বোঝা যায় আমরা কতখানি সংখ্যার দ্বারা চালিত। কিছু কিছু হলিউডের তারকাকে (বা তাদের মুখের) বিশ্লেষণ করে Perfect Face বলা হয়ে থাকে। সেই Perfect Face-এও স্বর্ণ অনুপাত। মুখের লম্বা ও চওড়ার অনুপাত বিষ্ময়কর ভাবে Golden Ratio মেনে চলে।

    কত উদাহরণ দেব? কত সোসাইটি তৈরী হয়েছে যারা এই Golden Ratio-র উপস্থিতি খুঁজে বেড়াচ্ছে আমাদের চারিদিকে এবং আমাদের মধ্যে। যাঁরা এই বিষয়ে বিশদ জানতে ইচ্ছুক তাঁরা কেবল google.com এ গিয়ে Golden Ratio কথাটি টাইপ করে দেখবেন। তথ্যের ঠেলায় অস্থির হয়ে উঠবেন। তবে আন্তরিক পরামর্শ দেব যে, বেশী ঘাঁটাঘাঁটি করবেন না – ভগবানে বিশ্বাসী না হলে এরপর থেকে বিশ্বাসী হতে শুরু করবেন। আমাদের চারপাশ ঠিক ছিল, কিন্তু আমাদের ভিতর নিয়ে টানাটানি করে তাঁরা কি বের করেছেন তার কিছু উদাহরন দেবার লোভ সামলাতে পারলাম না। আমাদের কান টেনে দেখানো হয়েছে কানের স্পাইরালটা Fibonacci series থেকে পাওয়া। DNA-এর প্রস্থচ্ছেদ করেছেন – তাতে নাকি Golden Ratio! তবে হৃদয়ের যে ধাক্কাটি সামলাতে পারি নি, সেটা হল Heart Beat এর বিশ্লেষণ! এতেও Golden Ratio [দেখুন সাথের ছবি 1F]। । এঁরা বনে জঙ্গলে তছনছ করে Golden Ratio-র প্রয়োগ খুঁজছেন। হাতের কাছে সূর্যমুখীর spiraling গুণে গুণে দেখিয়েছেন তাতে হয় 34 নয় 55 টা spiral আছে। বাকি কিছু উদাহরন,

    ৩ পাপড়ি যুক্তঃ লিলি, আইরিস
    ৫ পাপড়ি যুক্তঃ বাটারকাপ, ওয়াইল্ড রোজ, লার্কস্পার
    ৮ পাপড়ি যুক্তঃ ডেল্‌ফিরিয়ামাস
    ১৩ পাপড়ি যুক্তঃ কর্ণ মেরিগোল্ড, সিনেরারিয়া, রোগওয়ার্ট
    ২১ পাপড়ি যুক্তঃ ব্ল্যাক-আইড সুজান, অ্যাষ্টার
    ৩৪ পাপড়ি যুক্তঃ প্ল্যান্টেইন, পাইরেথ্রাম

    এদের বেশীর ভাগই আমি চোখে দেখি নি, আপনিও না দেখে থাকলে ঘাবড়াবার কিছু নেই, তবে এরা সত্যিই আছে। ছবি দেখতে চাইলে চলে যানঃ

    http://www.math.smith.edu/~phyllo/Gallery/Pages/Frameset.htm

    সংখ্যা নিয়ে আলোচনায় আবার পরে ফিরে আসা যাবে – এবার একটু মুখ ফেরানো যাক গণিতবিদদের দিকে। এই স্বল্প পরিসরে কারও জীবনী বর্ণনা করা যাবে না আর সেটাই ইচ্ছেও নেই আমার। তাই আসুন কিছু গালগল্প করে সময় কাটানো যাক। এই ইন্টারনেট প্রসারের সাথে সাথে মানুষের একটা প্রবণতা চলে এসেছে ভোটাভুটি করার। কম সময়ে বেশী লোকের কাছে পৌঁছবার কুফল আর কি! সব বিষয়েই ভোট – শতাব্দীর সেরা অভিনেতা, সেরা খেলোয়াড়, সেরা মণীষী, সেরা সব কিছু বেছে নেবার প্রতিযোগীতা। তাই সেরা গণিতজ্ঞ বিষয়টাই বা বাদ থাকে কেন! কিছু কাল আগে নাকি এই রকম একটা ভোটাভুটি হয়েছিল সর্বকালের সেরা তিন গণিতজ্ঞ বেছে নেবার জন্য। এক বাছাটা বেশ বিতর্কিত হয়ে যেত বলেই মনে হয় এই তিনজন বেছে নেওয়া হয়। অনুপান করতে পারেন এই তিনজন কারা হতে পারেন?

    সবচেয়ে আশ্চর্য হল এই বেছে নেওয়া নিয়ে বেশী বিতর্ক হয় নি – মানে সিদ্ধান্তটা সর্বসম্মতই বলা যায় আর কি! প্রথম দুজনের নাম অনুমান করা খুব একটা কঠিন নয়। প্রথম জন আর্কিমিডিস (২৮৭ খ্রীঃ পূঃ – ২১২ খ্রীঃ পূঃ), দ্বিতীয় জন নিউটন (১৬৪২-১৭২৭) আর তৃতীয় জন হলেন গাউস বা গস্‌ (১৭৭৭-১৮৫৫)। প্রথম দুজনকে আমরা প্রায় সবাই ছেলেবেলা থেকে নাড়াচাড়া করে আসছি। একদম ছোটবেলায় তাদের গল্প আর তার পরে তাদের আবিষ্কৃত সূত্র নিয়ে আমরা কিছু না কিছু মাথা ঘামিয়েছিলাম। তৃতীয়জন হয়ত তেমন পরিচিত নন আপমর জনসধারণের কাছে। আর্কিমিডিস আর নিউটন নিয়ে নতুন করে বলবার মত গল্প আমার কাছে নেই। তাই গস্‌কে নিয়েই একটু ফেনানো যাক। ও হ্যাঁ, শুধ একটা কথা – বই পত্র পড়ে যা জানা গেছে তাতে করে এই প্রমাণিত হয় আমাদের মনের ভিতর আঁকা গণিতবিদের ছবিটা নিউটনের সাথে ঠিক খাপ খায় না! নিউটন আপন ভোলা ছিলেন না, ছিলেন না অগোছালো। বরং তিনি ছিলেন এর ঠিক উলটো! নিজের কাজ সম্পর্কে অনেক সচেতন ছিলেন তিনি। আর তাঁর গোছালো স্বাভাবের জন্য আখেরে আমাদের লাভই হয়েছে! গোছালো না হলে কেউ কি ‘প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা’র প্রথম পান্ডুলিপি দূর্ঘটনা বশতঃ আগুনে পুড়ে গেলে, আবার নতুন করে পুরোটা লেখেন!

    কার্ল ফ্রেডরিক গস্‌ জন্মগ্রহন করেন ১৭৭৭ সাথে এক দরিদ্র পরিবারে। এক কথা প্রায়শই বলা হয়ে থাকে যে যাঁরা পরবর্তী জীবনে অসাধারণ হবেন তাঁরা নাকি ছেলেবেলা থেকেই তার নিদর্শন দিতে শুরু করেন। গস্‌ও এর ব্যতিক্রম নয়। তিনি নাকি মাত্র তিন বছর বয়সেই বাবার হিসাবের ভুল ধরেছিলেন। তবে সবচেয়ে মজার গল্পটা হল গসের যখন ছয়-সাত বছর বয়স তখন স্কুলের ক্লাসে খুব বদমাইশি করেছিলেন। মাষ্টার মশাই বিরক্ত হয়ে বলেন সব ছেলে ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত যোগফল বার করার পর আবার খেলতে যেতে পারবে। তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে এই কঠিন অঙ্ক ঐ বাচ্চাদের অনেকক্ষণ ব্যস্ত রাখবে। তাঁকে অবাক করে দিয়ে গস্‌কে খানিক পরেই মাঠে খেলা করতে দেখা যায়। মাষ্টার মশাই জানতে চান গস্‌ যোগ করেছিলান কিনা? দ্রুত জবাব আসে গসের কাছ থেকে যোগফল হল ৫০৫০। বিষ্মিত হয়ে তখন মাষ্টার মশাই জানতে চান এত তাড়াতাড়ি গস্‌ এটা করলেন কিভাবে! গস্‌ নাকি এটা খুবই সোজা ভেবেছিলেন। তিনি যোগ করেছিলেন এই ভাবে –

    [ক্রমশঃ]

    [url=



    প্রথম একটি লাইন ০ থেকে ১০০ পর্যন্ত লিখে, তারপর ঠিক তলায় ১০০ থেকে ০ পর্যন্ত লিখেছিলেন।

    ০ ১ ২ --- ৯৮ ৯৯ ১০০
    ১০০ ৯৯ ৯৮ --- ২ ১ ০

    এখন প্রতিটি কলামের যোগফল হচ্ছে ১০০। তাহলে ১০১ টি কলামের মোট ১০১*১০০, আর প্রতিটি কলাম পুনরাবৃত্ত হয়েছে, অতএব ২ দিয়ে ভাগ। এই ভাবে মোট যোগফল (১০১*১০০)/২ = ৫০৫০ – খুবই সহজ!

    রহস্যময় আচরণে কিন্তু গস্‌ গণিতজ্ঞ হবার সব শর্তই পূর্ণ করেছিলান। তাঁর মৃত্যুর ৪৩ বছর পর একটি ডায়েরী উদ্ধার করা হয় তাঁর নাতির কাছ থেকে। এই ডায়েরীতে ১৪৬ টি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য লেখা ছিল যেগুলি গস্‌ জীবিত অবস্থায় কোনদিন প্রকাশ করেন নি। পরে দেখা গেছে বিংশ শতাব্দীর অনেক বড় বড় গাণিতিক তত্ত্বই নাকি এই ডায়েরীর সাথে কোন না কোন ভাবে যুক্ত। ডায়েরী প্রকাশ না করে তবে কি গণিতের অগ্রগতি কয়েক বছর পিছিয়ে দিয়েছিলেন গস্‌? তাঁর বিস্তৃত অবদান লেখা এখানে সম্ভব নয় লেখা, হয়ত আরো অনেক বছর লাগবে গস্‌কে পরিপূর্ণ ভাবে জানতে। সব ভেবে দেখেই বোধ হয় এই প্রতিভাবানকে Prince of Mathematician বলা হয়ে থাকে। গণিতের অন্য শাখার মত সংখ্যাতত্ত্বেও গস্‌ এর অবদান অবিষ্মরণীয়।

    এবার তাহলে প্রশ্ন উঠতেই পারে যে বিজ্ঞানের অন্য শাখায় না হয় কৃতিত্বের পুরস্কার স্বরূপ নোবেল পুরস্কার আছে, গণিতের বেলায় তেমন কিছু চালু আছে কি? ছোটবেলায় আমরা সবাই জানতাম নোবেল প্রাইজের তালিকায় গণিত বিষয়টি নেই। একটু বড় হবার পড় জানতে ইচ্ছে করত কেন নেই! অনেক গল্প চালু আছে এই নিয়ে। সেগুলির সংক্ষিপ্ত সার হলঃ

    •আলফ্রেড নোবেল নাকি গণিত বা Theoretical Science নিয়ে বিশেষ উৎসাহী ছিলেন না।
    •নোবেল পুরস্কার কেবল মাত্র সেই সব আবিষ্কারকেই যাদের সঙ্গে মনুষ্য সভ্যতার Practical যোগ আছে।
    •আলফ্রেড নোবেল নাকি প্রেমে ব্যর্থ হয়ে গণিতের উপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছিলান। তিনি যাকে ভালোবাসতেন সেই মেয়েটি নাকি একজন গণিতবিদকে বিবাহ করে। তাই নোবেল গণিতকে পুরষ্কারের তালিকার বাইরে রেখেছিলেন।

    এই সবের সত্য মিথ্যা হয়তো কোন দিনই যাচাই করা যাবে না, তবে লোকপ্রবাদের পাল্লায় তৃতীয় কারণটাই ভারী!

    আর একটু বড় হয়ে জানতে পরেছিলাম যে গণিত শাখায় নোবেল পুরস্কারের সমতূল্য হচ্ছে Field Medal যেটা International Mathematical Union -এর পক্ষ থেকে প্রতি চার বছর অন্তর এক বা একাধিক গণিতজ্ঞকে দেওয়া হয় তাঁদের কৃতিত্বের জন্য।
    এছাড়াও অনেক পুরস্কার চালু আছে যেগুলি পাওয়া যেতে পারে কোন একটি বিশেষ সমস্যা সমাধানের জন্য। যাঁরা উৎসাহি তাঁরা এই ওয়েবসাইটে খোঁজ নিতে পারেনঃ



    এখানে একটি পুরস্কারের তালিকা আছে যেটিকে বলা হয় Clay Institute Millennium Prize Problems. সমস্যাগুলির মধ্যে Riemann Hypothesis –ও আছে। এটি বর্তমান আধুনিক সভ্যতার একটি বিশেষ অঙ্গ কম্পিউটার এর সাথে যোগ রাখে বলে এটিকে নিয়ে আমরা ঈষৎ নাড়াচাড়া করব। কিছু বছর আগে পর্যন্ত যে তিনটি সমস্যা নিয়ে সবচেয়ে বেশী সংখ্যক ব্যক্তি মাথা ঘামিয়েছেন, সেগুলি হল Fermat’s Last Theorem, Riemann Hypothesis আর Goldbach Conjecture। এর মধ্যে Fermat’s Theorem কিছু বছর আগে প্রমাণ করেছেন অ্যান্ড্রু ওয়াইল্‌স। তিনি এই সমস্যা সমাধানের জন্য পেয়েছেন Wolfskehl Prize – যার পুরস্কার মূল্য ১০০,০০০ জার্মান মার্ক। অনেকেই জানেন Fermat Last Theorem কি – এই নিয়ে প্রচুর লেখালিখি হয়েছে, কিন্তু যাঁরা ভুলে গেছেন তাঁদের একটু মনে করিয়ে দেওয়া যাক। দেখতে কিন্তু এই সমস্যাটি নিতান্তই সরল। Fermat –কে বলা হত Prince of Amateurs, কারণ তিনি ছিলেন আদতে একজন ফরাসী আইনজ্ঞ, যিনি আবসর সময়ে অঙ্ক করতেন। যাইহোক সমস্যাটি হলঃ
    Xn + Yn = Zn, যেখানে X, Y, Z, n সবই ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা। n-এর মান 2-এর থেকে বড় হলে (n>2) এর নাকি কোন সমাধান নেই বা উল্টোভাবে বলতে গেলে n>2 হলে X, Y, Z – এর পারস্পরিক সম্পর্কটি সত্যি নয়!

    দেখতে প্রচন্ড সরল। কিন্তু এটাই আমাদের ৩০০ বছরের বেশী সময় ব্যস্ত রেখেছিল। সবাই ভেবেছিল এটার প্রমাণ খুবই সহজ আর তার কারণ ছিল Fermatএর নিজের একটি উক্তি। তাঁর বইয়ের মার্জিনে তিনি লিখে রেখেছিলেন এর একটি চমৎকার সমাধান তিনি পেয়েছেন, কিন্তু জায়গার অভাবে তিনি লিখতে পারছেন না। তাই এই ছোট্ট সমস্যাটি সমাধান করতে ওয়াইলস্‌ নিয়েছিলেন প্রথমবার ১৭০-১৮০ পাতা, আর একবার সংশোধনের পর সেটা দাঁড়িয়েছিল ২০০-এর কাছাকাছি।

    তবে এই পুরস্কার হাতছাড়া হয়েছে বলে আপনি হতাশ হবেন না। কারন হাতের কাছেই রয়েছে Goldbach Conjecture। এর সমাধান করতে পারলে $ 1,000,000 আসবে আপনার পকেটে – আর তাছাড়া এটা দেখতেও বেশ সহজ। আপনাকে শুধু প্রমাণ করতে হবে, যে কোন জোড় পূর্ণ সংখ্যা (Even Integer) – কে দুটি মৌলিক সংখ্যার (Prime Number) যোগফল হিসাবে লেখা যায়। যেমন,

    ৪ = ২ + ২
    ৬ = ৩ + ৩
    ৫০ = ৩১ + ১৯
    ১২০ = ৭৯ + ৪১

    লেগে পড়ুন – শুধু মনে রাখবেন ১৯৯৮ সালে কম্পিউটারের সাহায্যে দেখানো গেছে সম্পর্কটি ৪০০,০০০,০০০,০০০,০০০ পর্যন্ত সত্যি!

    এবার ছোট্ট করে Riemann Hypothesis-এর আলোচনাটি সেরে ফেলা যাক। এটা অপেক্ষাকৃত জটিল। যাঁরা আরো জানতে ইচ্ছুক এর সম্পর্কে তাঁদের জানাই প্রচুর বই পাওয়া যায় – শুধু লাইব্রেরী যাবার অপেখা। না যেতে চাইলে সেই এর আশ্রয় নিতে পারেন। আর যাঁরা বাংলায় পড়তে চান তাঁদের জানাই কিছু বছর আগে পুজো বার্ষীকি দেশ পত্রিকায় পথিক গুহ-র লেখা “সুন্দরী, সুধাপাত্র ও অমরত্ব” – এর এই নিয়ে খুব সুন্দর আলোচনা আছে।

    মৌলিক সংখ্যার আচরণ আমাদের দীর্ঘদিন বিষ্মিত করেছে। এদের আচরণ কি সত্যি অসংলগ্ন – নাকি এরাও মেনে চলে শৃঙ্খলা! অনেকেই চেষ্টা করেছেন এমন কোন সূত্র আবিষ্কার করতে যা দিয়ে মৌলিক সংখ্যা সম্পর্কে পূর্বাভাস করা যায়! গস্‌ নিজেও চেষ্টা করেছিলেন। এমন কোন সূত্র পাওয়া যাবে কি যা দিয়ে আমরা মৌলিক সংখ্যা গঠন করতে পারব যত বড় ইচ্ছা? কিংবা বলতে পারব দুটি নির্দিষ্ট সংখ্যার মধ্যে কতগুলি মৌলিক সংখ্যা থাকতে পারে? তা নিয়ে রিম্যান এমন একটা সূত্রের প্রস্তাবনা করেছিলেন যা দিয়ে নাকি মৌলিক সংখ্যার আচরণ খুব ঘনিষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। সেই Function কে বলা হয় Riemann Zeta Function। এটা প্রমান করা গেলে নাকি সংখ্যাদের তুঘলকি আচরন সব ঠান্ডা করে দেওয়া যাবে।

    তা রিম্যান হাইপোথিসিস নিয়ে এত হৈ চৈ করার কি আছে? আসলে Prime Number আর Cryptography পরস্পর নির্ভরশীন। Cryptography নামটা চেনা চেনা লাগছে? এটা আর কিছুই নয়, এটা একটি পদ্ধতি যা দিয়ে গোপনীইয় তথ্যের আদান প্রদান করা হয়। এবং শুধু মাত্র তথ্যের প্রপাকই তার উদ্ধার করতে পারবেন। অর্থাৎ বাকিদের কাছে এটা থাকবে লুকানো। এই যে আমরা ইন্টারনেট-এ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করি তার সুরক্ষাও নির্ভর করে মৌলিক সংখ্যার উপর। ১৯৭৭ সালে তিনজন ছাত্র Ron Rivest, Adi Shamir, আর Leonard Adleman এই ইন্টারনেট সুরক্ষার জন্য Algorithm আবিষ্কার করেছিলেন। এই পদ্ধতিতে দুটি বৃহৎ মোউলিক সংখ্যাকে গুণ করে একটা সংখ্যা পাওয়া যায়, যাকে বলা হয় চাবি (Key)। এই বড় সংখ্যাটাই আমরা ইন্টারনেটে আদানপ্রদান করি। আর এই মৌলিক সংখ্যাগুলি আপনার ক্রেডিট কার্ড বা অন্য কোন তথ্যের সংকেত বহন করে। তাহলে বুঝতে পারছেন পুরো বিষয়টির সুরক্ষা নির্ভর করে কত সহজে ঐ বড় সংখ্যাটিকে (Key) উৎপাদকে বিশ্লেষণ করা যাচ্ছে। যত বড় সংখ্যা হবে, তার উৎপাদক বিশ্লেষণ হবে তত কঠিন, অর্থাৎ আপনি তত সুরক্ষিত! তবে আমাদের নিশ্চিত হতে হবে, যে দুটি মৌলিক সংখ্যা আমরা প্রথমে গুণ করেছিলেন তারা আদৌ মৌলিক কিনা! কি ভাবে পরীক্ষা করব না? আমাদের গর্বের বিষয় যে ভারতের Indian Institute of Technology, Kanpur এর প্রফেসর আগরওয়াল এবং তাঁর ছাত্র নীরজ আর নীতিন এমন একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন যা দিয়ে কোন সংখ্যা মৌলিক কিনা যাচাই করা যাবে। কিন্তু মনে রাখবেন এই পদ্ধতিতে মৌলিক সংখ্যা তৈরী করা যাবে না কিন্তু!

    আর বেশী লিখতে পারছি না – তাই এবার আমাদের বাস্তব জীবনে গণিতের বিষ্ময়কর ব্যবহারের উদাহরন দিয়ে লেখা শেষ করব ভাবছি। যাঁরা বিশদে জানতে চান তাঁরা এখানে খোঁজ করতে পারেন - সত্যই অসাধারনঃ



    ধরুণ আপনি যখন বাজার করেন, তখন কোন দ্রব্যের দাম লেখা থাকে তার উপর কয়েকটি সাংকেতিক দাঁড়ির (Bar Code) সাহায্যে এখানে ব্যবহার করা হয় Modular Arithmatic। তারপর এই যে চোখ স্ক্যান করে ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার সময়েও এই গণিত। Probability Theory – র সফল প্রয়োগ। আবার ভাবুন সেই Travelling Sales এর সমস্যাটির কথা। মনে করুন আপনি কতগুলি বিশেষ শহর ভ্রমন করতে চান পৃথিবী জুড়ে। তাহলে কিভাবে ভ্রমন করলে আপনি সব শহরগুলিতেই একবার করে যাবেন, কিন্তু সবচেয়ে কম দূরত্ব অতিক্রম করবেন। সেখানেও গণিত। মানচিত্রে কত রঙের বাহার দেখি আমরা – এক দেশের এক রঙ। তাহলে কতগুলি বিভিন্ন রঙ ব্যবহার করলে পাশাপাশি দুটি দেশ কখনো এক রঙের হবে না। আমরা যে কাগজ দিয়ে নানা জিনিস বানাই খেলার ছলে (Origami) সেখানেও জ্যামিতিক ভাঁজের খেলা। মহাকাশে বিশাল আয়তনের টেলিস্কোপ পাঠানোর সময় কিভাবে সবচেয়ে ছোট আয়তনে ভাঁজ করা যাবে – উদাহরন দিয়ে শেষ করা যাবে না।

    তবে শেষ করা যেতেই পারে এক বিখ্যাত ব্যক্তির উক্তি দিয়ে। কার উক্তি আমি বলব না – এটা আপনার গুগুলের সাহায্য না নিয়ে কার হতে পারে সেটা ভাবুন – কে বা কারা করতে পারে এমন উক্তিঃ

    Poets do not go mad, but chess players do; mathematicians go mad, and cashiers; but creative artists very seldom. I am not, as will be seen, in any sense attacking logic; I only say that this anger lie in logic, not in imagination.
    সংখ্যা নিয়ে খেলা করলেই কি গণিতবিদ হওয়া যায়? আমরা সবাই তো সংখ্যা নিয়ে নাড়াচাড়া করি, তাহলে আমরা সবাই কি গণিতজ্ঞ? তা আমি বলতে পারব না, তবে আপনি নিশ্চয় গণিতজ্ঞ যদিঃ

    •পাই-এর (Pi) মান পঞ্চাশ দশমিক স্থান পর্যন্ত আপনার মুখস্থা থাকে
    •আপনি কোন না কোন সময় Fermat’s Theorem প্রমাণের চেষ্টা করে থাকেন
    •আপনি অন্ততঃ দশ রকম ভাবে পিথাগোরাসের উপপাদ্য প্রমাণ করতে জানেন
    •আপনার টেলিফোন নম্বর দুটি মৌলিক সংখ্যার যোগফল
    •যদি আপনার স্ত্রীকে আপনি কোন ঘনিষ্ট মুহুর্তে বলেন যে তাঁর চুলগুলি সোজা এবং পরস্পর সমান্তরাম
    •গাড়ি কিনতে গিয়ে যদি বিক্রেতাকে বলেন, আমি লাল গাড়িটা অথবা নীল গাড়িটা নেব। এবং তার সাথে যোগ করেন, তবে দুটো গাড়ি একসাথে নয়!

    তথ্যসূত্রঃ
    1.Men of Mathematics – E.T. Bell
    2.Of Men and Numbers: The Story of the Great Mathematicians – Jane Muir
    3.Fermat’s Last Theorem – Amir Aczel
    4.On the Shoulder of Giants – Stephen Hawking
    5.The Emperor’s New Mind – Roger Penrose
    6.Pi in the Sky – John D Barrow
    7.The Last Problem – E.T. Bell
    8.Mathematical Scandals
    9.পথিক গুহর লেখা আনন্দবাজার ও দেশে প্রকাশিত প্রবন্ধ সকল।

    [ক্রমশঃ - দেব কিনা বুঝতে পারছি না]
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ৩১ মে ২০১৪ | ৫৯৬৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • haaramoniyaam | 122.79.39.165 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ০১:৫৯72755
  • সেকন্ড অর্ডার পাটীগণিতের একটা রেফারেন্স হবে?
  • T | 24.139.128.15 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ০২:১২72756
  • প্রিন্সিপল সব জায়গায় 'খাটে' ধরে নিয়ে আপনি তার কোনো প্লেটোনিক অস্তিত্ব আছে কিনা প্রশ্ন করছেন। আমি বলছি এই 'খাটছে' ব্যাপারটা ইনভ্যালিড। এখানে 'খাটছে' ব্যাপারটা দিয়ে প্রিন্সিপলের ইন্সট্যান্সিয়েশন হচ্ছে না। এটা বাস্তব নিরপেক্ষ একটা স্ট্রাকচারকে আরো বৈধতা প্রদান করছে কিন্তু তাকে প্রমাণ করছে না। যেহেতু প্রমাণ করা হচ্ছে না তাই এই খাটছে ব্যাপারটা দিয়ে অ্যাক্সিওম্যাটিক স্ট্রাকচারের পিছনে মূল চরিত্র কিছু আছে বলে শনাক্ত করা যায় না।

    এবার এই প্রিন্সিপলের কোনো সত্যিই মূল প্লেটোনিক অস্তিত্ব আছে কিনা, সে বড়ো প্রশ্ন। আরো গভীর কোনো অ্যাবস্ট্রাক্ট থিয়োরী অব এভিরিথিং এর একপ্রকার ইন্সট্যান্সিয়েশন কিনা, ইত্যাদি। এই ভাবে আরো নানা প্রশ্ন এসে পড়ে এবং গুটি গুটি ঢুকে পড়ে অ্যানথ্রোমর্ফিক প্রিন্সিপল। অ্যাক্সিওম্যাটিক স্ট্রাকচারের এই ফর্ম ও তার পিছনে অবসার্ভারের ভূমিকা। হয়তো অস্তিত্ব এগজিস্ট করে এবং ফলস্বরূপ এই স্ট্রাকচারের নির্মাণ একপ্রকার অবশ্যম্ভাবী ছিল জাগতিক বাস্তব ব্যাখ্যার প্রয়োজনে। হয়তো অস্তিত্ব এগজিস্ট করে না কারণ, এই অ্যাক্সিওমস গুলোই হয়তো লোকাল লেভেলে বেসিক বিল্ডিং ব্লক, সে কোনো সুপ্রীম অবসার্ভারের কেয়ার করে না, কোনো মনোলিথিক শেপ নিতে ইউনিভার্সের বয়ে গ্যাছে ।

    জানি না, কোনোদিন ভেবে দেখি নি। অদ্দুর দৌড়তে পা ব্যাথা করে।
  • haaramoniyaama | 122.79.38.187 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ০২:৩৬72757
  • ও খুঁজে দেখলাম ছাত্রাবস্থায় অ্যানালিসিস নামে শুনেছি। রেফারেন্সের দরকার নেই। সুকান্ত বাবু মনে হয় সংখ্যা তত্ত্ব বলতে পিয়ানো অ্যারিথমেটিক বোঝাচ্ছেন।
  • haaramoniyaama | 122.79.38.187 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ০২:৩৭72759
  • ও খুঁজে দেখলাম ছাত্রাবস্থায় অ্যানালিসিস নামে শুনেছি। রেফারেন্সের দরকার নেই। সুকান্ত বাবু মনে হয় সংখ্যা তত্ত্ব বলতে পিয়ানো অ্যারিথমেটিক বোঝাচ্ছেন।
  • N | 208.7.62.204 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ০২:৩৭72758
  • সেকেন্ড অর্ডার পাটিগণিত নিয়ে এই লেখাটা দেখতে পারেন, ছোট করে আর সহজ করে বুঝানো আছেঃ

    http://ncatlab.org/nlab/show/second-order+arithmetic

    আরেকটু এগোতে চাইলে এটা পড়ে দেখতে পারেনঃ

    A Mathematical Prelude to the Philosophy of Mathematics, লেখক Stephen Pollard

    T সুন্দর লিখলেন। তবে অ্যানথ্রোপোমর্ফিক প্রিন্সিপল আর প্লেটোনিক তত্ত্বের সেরকম কোন সম্পর্ক নেই, এই প্রিন্সিপল দিয়ে মহাবিশ্বের সৃস্টি সম্পর্কিত কিছু রহস্যের সন্ধান খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। গাণিতিক ফর্মালিজম আর প্লেটোনিক দ্বন্দ নিয়ে যদি পড়তে চান তো এই আর্টিকলটা পুরোটা পড়ে দেখতে পারেন, অল্প কথায় কিছুটা বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছেঃ

    http://www.scientificamerican.com/article/why-math-works/
  • N | 208.7.62.204 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ০২:৩৯72760
  • *অ্যানথ্রপিক প্রিন্সিপল
  • N | 208.7.62.204 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ০২:৪০72761
  • সুকান্ত বাবুর লেখাটা ভালো, দ্বিতীয় ভাগের অপেক্ষায় আছি।
  • T | 24.139.128.15 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ০৩:৪০72762
  • N, অন্থ্রপিক প্রিন্সিপলের ব্যাপারটা আমি এই অর্থে এনেছি যে প্লেটোনিক তত্ত্বে অবশ্যই পার্সেপশনের ভূমিকা আছে। অ্যাবস্ট্রাক্টের এগজিস্টেন্স এবং বাস্তবে তার ইন্সট্যান্সিয়েশন কি অবসার্ভার ইন্ডিপেন্ডেন্ট? যদি অবসার্ভার ডিপেন্ডেন্ট হয় তবে অ্যাবস্ট্রাক্টের পিওরিটি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। যদি না হয় তবে প্লেটোনিক তত্ত্ব কোনো মনোলিথিক রিয়েলটির দিকে নির্দেশ করে যা সন্দেহের উপরে নয়, অন্ততঃ অ্যাক্সিওমসের ইত্যাদির ক্ষেত্রে।

    এই রকমই কিছু একটা বলতে চেয়েছি মনে হচ্ছে। অবশ্যই লেখার সময় থট প্রসেস একটু কন্ডিশনড করে নিয়ে লেখা উচিত।

    লিংক এর জন্য ধন্যবাদ, সময় করে পড়ে দেখব।
  • Suddha Satya | 127.194.235.128 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ০৮:০৩72763
  • বেশ লাগলো। ঝরঝরে, বুনে দিয়ে যাচ্ছে। অপেক্ষায় রইলাম।
  • কল্লোল | 125.242.254.139 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ০৯:১৫72746
  • সঙ্গে আছি। ভালো লাগছে। লিখতে থাকুন।
  • Avik | 125.253.119.128 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ১০:৩৪72747
  • আমি গণিত নিয়ে পড়েছি, তাই পছন্দের বিষয় ভাল লাগছে।
  • N | 208.7.62.204 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ১০:৪৬72748
  • যারা গণিত নিয়ে পড়েছেন তাদের ভয়ে ভয়ে একটা প্রশ্ন করি - সবসময়ে সবকিছু গণিতের সূত্র মেনে চলে কেন? এমন কেন হয়্না যে কখনো কখনো কোন কোন জায়্গায় কিছু বা কোন সূত্র খাটবে না, পরে বা অন্য কোন জায়্গায় আবার খাটবে?
  • সুকান্ত ঘোষ | 212.160.18.33 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ১১:০৭72749
  • যেহেতু আমি গণিত নিয়ে পড়ি নি তাই 'N' এর প্রশ্নের উত্তর দেবার এক্তিয়ার আমার নেই - তবে সূত্র সিলেকটিভ রেঞ্জ মেনে চলার অনেক উদাহরণই তো আছে মনে হয় - এই যেমন ধরুণ নিউটনের বলবিদ্যার সূত্র, এই সূত্র গ্রহ-নক্ষত্রের ভিতর খাটে যেখানে বস্তুর দূরত্ব অনেক বেশী। কিন্তু সেই সূত্র পরমাণুর নিউক্লিয়াসের ভিতর কণাগুলি মেনে চলে না - এই কণাগুলির মধ্যে দূরত্ব অনেক কম। এরা কি সূত্র মেনে চলে তা জানার জন্য আবার রিচার্ড ফাইনম্যানের দারস্থ হতে হবে।
  • কল্লোল | 116.66.137.232 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ১১:১০72750
  • আমি গণিত নিয়ে পড়িনি। ক্লাশ ৬য়ে অঙ্কে ৫ পেয়েছিলাম। কিন্তু আমার এক গণিতজ্ঞ বন্ধু (কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার) বলেছিলো দুই আর দুই এ চার হয় ক্লাশ ৮ পর্যন্ত। তাপ্পরে আর হয় না।
  • N | 208.7.62.204 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ১১:২৬72751
  • উঁহু আমি পদার্থবিদ্যার সূত্রের কথা বলিনি, গণিতের সূত্রের কথা বলেছি। মাধ্যাকর্ষন পদার্থবিদ্যার একটি সূত্র, কিন্তু সূত্রটি দাঁড়িয়ে আছে গণিতের কিছু নিয়মের ওপর ভর দিয়ে। ধরে নেওয়া হয় এই নিয়মগুলো সব জায়গায় সব সময়ে খাটে, এর কোন ব্যাতিক্রম আমরা এখনো দেখিনি। কিন্তু কেন? যেমন শুধু অ্যারিথমেটিক যদি দেখেন, তাহলে বলা যায় দুই আর দুয়ে চার। গণিতের অন্য ধারায় যাচ্ছিনা, শুধু পাটিগণিতের মধ্যেই থাকছি। কিন্তু শুধু পাটিগণিতের মধ্যেও সব সময়ের জন্য দুই আর দুয়ে চার হয় কেন, অল্প একটু সময়ের জন্য বা ছোট্ট একটা কোনায় পাঁচ হয়্না কেন?
  • T | 24.139.128.15 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ১২:১৩72752
  • অঙ্কের সূত্র বা ইকোয়েশন কোন কজ এফেক্ট ইত্যাদি বর্ণনা করে না। বাস্তবতার সাথে কোন সম্পর্ক নেই। এবং "এই নিয়মগুলো সব জায়গায় সব সময়ে খাটে" এমনও নয়। যেকোন অংকের ভিত্তি তার অ্যাক্সিওম্যাটিক স্ট্রাকচার। কোন একটি অ্যাক্সিওম্যাটিক স্ট্রাকচার 'ধরে' নিয়ে পরপর সূত্রগুলি গড়ে ওঠে। স্ট্রাকচারকে হতে হবে কনসিস্টেন্ট। সাধারণ পাটিগণিতের মূল অ্যাক্সিওম্যাটিক স্ট্রাকচার অনুযায়ী দুয়ে দুয়ে চারই একমাত্র হতে পারে, পাঁচ হয় না।
  • N | 208.7.62.204 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ১২:৩০72753
  • আপনি গাণিতিক ফর্মালিজমের কথা বললেন। কিন্তু প্লেটোনিক তত্ত্ব উল্টো কথা বলে। যেমন ধরুন সাধারণ পাটিগণিতের (বলা ভালো সেকেন্ড-অর্ডার পাটিগণিতের) মূল অ্যাক্সিওম্যাটিক স্ট্রাকচার হলো গিয়ে হিউমের প্রিন্সিপলঃ এফ-জিনিসের সংখ্যা জি-জিনিসের সংখ্যার সমান হবে একমাত্র তখনই যখ্ন এই দুটোর মধ্যে এক-থেকে-এক করেসপন্ডেন্স থাকবে। এর থেকেই যাবতীয় "দুই আর দুয়ে চার" ধরনের নিয়মগুলোর উত্পত্তি। এই যে প্রিন্সিপল, এটা সব সময়ে সব জায়্গায় খাটে কেন? মানে এটার কি কোন প্লেটোনিক অস্তিত্ব আছে?
  • N | 208.7.62.204 (*) | ৩১ মে ২০১৪ ১২:৪৩72754
  • আর ইয়ে ফ্র্ম্যালিজম নিয়ে পুরোটা এগনো মুশকিল। অ্যাক্সিওম্যাটিক সিস্টেম -- হিলবার্ট -- গোডেল ইত্যাদি। তাই পিওর সেম্যান্টিক্স এর ওপর এখন আর অতোটা জোর দেওয়া যায় না।
  • PM | 213.172.127.103 (*) | ০১ জুন ২০১৪ ০১:০৭72776
  • ভালো লাগছে। অংকের ব্যাপারে অমিও কল্লোলদার দলে। এককালে খুব অপছন্দ করতাম বিষয়টাকে। বুড়ো বয়েসে এসে বিষয় টার প্রেমে পড়তে ইচ্ছা করে ঃ)

    এই সংক্রান্ত টই বোধ হয় এখানে প্রথম
  • T | 24.139.128.15 (*) | ০১ জুন ২০১৪ ০১:৩১72777
  • হে হে হে, আমাকে জ্ঞানী বলছে, এদিকে নিছকই চ্যাংড়া। বয়স আঠারো এবং ফিক্সড।

    নিশ্চয়ই, প্লেটোনিক রিয়েলিসম বিশুদ্ধতার কথা বলে, যেটি অ্যাবস্ট্র্যাক্ট। বিভিন্ন রূপে তার ইন্সট্যান্সিয়েশন হচ্ছে। এবার দেখুন অ্যানথ্রোমর্ফিক প্রিন্সিপল অনুযায়ী মোদ্দা ব্যাপার যা দাঁড়ায় তা হল এই ইন্সট্যান্সিয়েশন ও তার প্রকৃত অ্যাবস্ট্র্যাক্ট ফর্ম এগজিস্ট করছে কোনো এক অবসার্ভার সেটিকে ডিসকভার করবে বলে। অতএব এই পিওর ফর্ম সরাসরি বা ইন্ডাইরেক্টলি কোনো ভাবে অবসার্ভারের পার্সেপশনের সঙ্গে লিংকড। এইটি প্লেটোর বেসিক আর্গুমেন্টের অ্যাসাম্পসনের উল্টো।

    এবার যদি অ্যানথ্রোমর্ফিক প্রিন্সিপল না মানেন, তাহলে দাঁড়াচ্ছে যে অ্যাক্সিওমস গুলোর ক্ষেত্রে কোনো এক বিশুদ্ধ ফর্ম এগজিস্ট করছে যেটি অবসার্ভার ইন্ডিপেন্ডেন্ট। কিন্তু এইবার প্রশ্ন আসছে প্রথমেই কোনো ক্লাসিফিকেশন বা শ্রেণীবিভাগ করা হচ্ছে না তো! একটি আপেল এবং একটি সাইকেলের মধ্যে কোনো সাধারণ বিশুদ্ধ ধর্ম বা চরিত্র আছে কিনা সেইটি কি বিচার্য হতে পারে? অবজেক্টের বিশুদ্ধ চরিত্রের খোঁজ বা ধর্মের খোঁজে অবসার্ভারের পার্সেপশন অনুযায়ী প্রাথমিক ক্লাসিফিকেশন কিন্তু ফের সেই প্লেটোর প্রাথমিক অ্যাসাম্পসনের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। প্রাথমিক ক্লাসিফিকেশন যদি না থাকে তাহলে এটি 'খন্ডাখন্ড তত্ত্ব' (ঃ)) এবং আরো মৌলিক কোনো কিছুর খোঁজ। তখন এটা বেসিক্যালি ঈশ্বর নিরাকার এবং সমস্ত কিছুতেই বিরাজমান এই ধারণার কাছাকাছি চলে যায় যা আদতে অ্যাক্সিওম্যাটিক। কিন্তু এর বিরুদ্ধে বলা যায় যে তাহলে এর ফলে মহাবিশ্ব জুড়ে সিমেট্রি বড় বেশী করে অনুভূত হত। (এইখানে গুরুর রেসিডেন্ট পদার্থবিজ্ঞানীদের মঞ্চে আসতে অনুরোধ করা হচ্ছে, কারণ আমার দৌড় ফুরোচ্ছে)

    প্রাথমিক বিশুদ্ধতা একটি অতি আকর্ষণীয় বস্তুঃ এবং ঈশ্বরবিশ্বাসীদের খুব প্রিয়। শীর্ষেন্দুর গল্পে সরাসরি প্লেটোনিক রিয়েলিসমের রেফারেন্স রয়েছে, যেমন গোঁসাইবাগানের ভূত উপন্যাসে। বুরুন মাস্টারমশাইকে প্রশ্ন করছে একের সাথে এক যোগ করলে দুই কেন হয়, কোনো দুটো গাছের পাতা তো এক নয়। বা পটাশগড়ের জঙ্গলে, যেখানে ভুতু নিউমারেলস কে প্রশ্ন করছে, আলফাবেট সাহেব কে? এবং উত্তর পাচ্ছে যে তিনি একটা 'অঘটন'। জানতে পারছে সেই নির্ধারিত অংকটি প্রাণ (বিশুদ্ধ ফর্মের হদিস) পেয়ে গ্যাছে, এবার সে নিজেই নিজেকে কষতে থাকবে। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার স্যাপার।

    আর লিখতে পারছি না।
  • gabeT | 122.79.36.166 (*) | ০১ জুন ২০১৪ ০১:৪৫72778
  • আচ্ছা ওপরে দেখলাম লেখা আছে দুই এ দুই এ চার এটা সব সময় সব জায়গায় ঘটে কেন? এখানে সময় জায়গা ঘটা এসবের মানে কি?
  • N | 208.7.62.204 (*) | ০১ জুন ২০১৪ ০২:০৫72779
  • "নিশ্চয়ই, প্লেটোনিক রিয়েলিসম বিশুদ্ধতার কথা বলে, যেটি অ্যাবস্ট্র্যাক্ট। বিভিন্ন রূপে তার ইন্সট্যান্সিয়েশন হচ্ছে। এবার দেখুন অ্যানথ্রোমর্ফিক প্রিন্সিপল অনুযায়ী মোদ্দা ব্যাপার যা দাঁড়ায় তা হল এই ইন্সট্যান্সিয়েশন ও তার প্রকৃত অ্যাবস্ট্র্যাক্ট ফর্ম এগজিস্ট করছে কোনো এক অবসার্ভার সেটিকে ডিসকভার করবে বলে। অতএব এই পিওর ফর্ম সরাসরি বা ইন্ডাইরেক্টলি কোনো ভাবে অবসার্ভারের পার্সেপশনের সঙ্গে লিংকড। এইটি প্লেটোর বেসিক আর্গুমেন্টের অ্যাসাম্পসনের উল্টো।"

    এখানে কি একটু ভুল হচ্ছে? আপনার আর ঈশানের পোস্টগুলো ভালো করে আরেকবার পড়লাম। মাফ করবেন, কিন্তু মনে হচ্ছে প্লেটোর "থিওরি অফ ফর্মস" আর "গাণিতিক প্লেটোনিজম" যেন কোথাও গুলিয়ে যাচ্ছে।

    "থিওরি অফ ফর্মস" এ অবসার্ভারের ভূমিকা অনস্বীকার্য্য। বলা হচ্ছে যে আমরা, বা কোন অবসার্ভার, চরপাশে যে জগত দেখি, সেটা হলো একটা বিশুদ্ধ কনসেপ্টের ছায়ামাত্র। এটা ঈশানও লিখেছেন। কিন্তু এটাও লিখেছেন, "প্লেটোর গণিত সংক্রান্ত ধারণা মূলতঃ থিয়োরি অফ ফর্মসের উপরে দাঁড়িয়ে।" এটা ভুল। "গাণিতিক প্লেটোনিজম" তিনটে কনসেপ্টের ওপর ভিত্তি করে নির্মিতঃ

    এক্সিসটেন্স - গাণিতিক বস্তুসমূহ।

    অ্যাবস্ট্র্যাক্টনেস - এই বস্তুগুলি অ্যাবস্ট্র্যাক্ট।

    ইন্ডিপেন্ডেন্স - এই বস্তুগুলি কোনরকম অবসার্ভার বা তাদের চিন্তাসমূহের বা ভাষার ওপর নির্ভর করেনা।

    এটা যেহেতু গণিত সম্পর্কিত আলোচনা, তাই আমি এখানে মূলত "গাণিতিক প্লেটোনিজম" নিয়ে বলার চেষ্টা করছি। নিচের লেখাটা পড়তে অনুরোধ করলামঃ

    http://plato.stanford.edu/entries/platonism-mathematics/

    বিশেষ করে এই জায়্গাটা, এটা পড়ে নিলে বোধায় আমি কি বলতে চাইছি সেটা ধরতে সুবিধে হবেঃ

    Not only is the platonism under discussion not Plato's, platonism as characterized above is a purely metaphysical view: it should be distinguished from other views that have substantive epistemological content. Many older characterizations of platonism add strong epistemological claims to the effect that we have some immediate grasp of, or insight into, the realm of abstract objects. (See e.g., Rees 1967.) But it is useful (and nowadays fairly standard) to reserve the term ‘platonism’ for the purely metaphysical view described above.
  • N | 208.7.62.204 (*) | ০১ জুন ২০১৪ ০২:১৪72780
  • "দুই এ দুই এ চার এটা সব সময় সব জায়গায় ঘটে কেন? এখানে সময় জায়গা ঘটা এসবের মানে কি?"

    বলতে চেয়েছিলাম যে আমরা মনে করি সব সূত্রগুলো স্পেস ও টাইম ইনভ্যারিয়্যান্ট। মনে করার কারনও আছে, এর কোন ব্যাতিক্রম আমরা এখনো কোথাও খুঁজে পাইনি। আমাদের জগত্টা এরকম কেন তার কোন উত্তরও এখনো পাওয়া যায়নি।
  • gabeT | 122.79.36.166 (*) | ০১ জুন ২০১৪ ০২:২৭72781
  • আপনি কি বলছেন কন্টিনিউয়াম হাইপোথেসিস স্পেস টাইম ইন্ডিপেন্ডেন্ট? নিশ্চয়ই নয়। তাহলে ঠিক কি বলছেন। আর স্পেস টাইম এরাই বা কি?

    ঐ ইন্স্ট্যানশিয়েশনের ব্যাপারটা কোন সহজ উদাহরণের (গ্রুপ থিওরি) আলোয় বলা যায় কি?
  • N | 208.7.62.204 (*) | ০১ জুন ২০১৪ ০২:৩০72782
  • CH নিয়ে কিছু বলিনি তো! মোটামুটি সহজ করেই তো বলার চেষ্টা করলাম!
  • N | 208.7.62.204 (*) | ০১ জুন ২০১৪ ০২:৩৫72783
  • মানে আমি যা বলতে চাইছি তার সাথে CH এর কি সম্পর্ক তাও বুঝলাম না। একটু বিস্তারিত লিখলে ভালো হয়।
  • ঈশান | 60.82.180.165 (*) | ০১ জুন ২০১৪ ০২:৫৪72764
  • লিংটা পুরোটা পড়া যাচ্ছেনা। সাবস্ক্রিপশন চাইছে। কেউ যদি পুরোটা দেন, তো ভালো হয়। ইন্টারেস্টিং লাগছে।
  • ঈশান | 60.82.180.165 (*) | ০১ জুন ২০১৪ ০৩:১৯72765
  • লিখলামই যখন আর দুলাইনও লিখি। যদিও আমি অঙ্কে তেরো। কিন্তু প্লেটো নিয়ে খানিক উৎসাহ আছে। সেই ভরসাতেই।

    প্লেটোর গণিত সংক্রান্ত ধারণা মূলতঃ থিয়োরি অফ ফর্মসের উপরে দাঁড়িয়ে। সেটা কী বস্তু? ছোটো করে বলতে গেলে, পৃথিবীতে কোনো দুটি বস্তুই একরকম নয়। দুটো একই রকম আপেল কোনোদিন এ পৃথিবী দেখেনি। বা দুটো একইরকম মনুষ। তবুও মানুষকে মানুষ বা আপেলকে আপেল বলে আমরা চিনতে পারি। কোনো অসুবিধে ছাড়াই। কীকরে পারি? প্লেটোর বক্তব্য হল, কোথাও একটা সাধারণ ধর্ম আছে, যা, ছোটোখাটো বিচুয়্তি সত্ত্বেও একটা আপেলকে আপেল বলে চিনিয়ে দেয়। বা পেয়ারা গাছকে পেয়ারা গাছ বলে। কোনো গছের একটা ডাল ডানদিকে কারো বাঁ দিকে, কোনো আপেল একটু হলদেটে কোনো আপেল একটু লাল, এসব দিয়ে সেই সাধারণ বিশুদ্ধ ধর্মের কিছু এসে যায়না। কারণ কোথাও একটি "আদর্শ আপেল" আছে। পারসেপশন ও স্পেসিফিসিটির ঊর্ধ্বে।

    এইরকম আদর্শ আপেলের মতো "আদর্শ" বস্তু ও ধারণায় জ্প্লেটোর অগৎ ভরপুর। তার মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাতটা হল প্লেটোনিক প্রেম। তাতে স্পেসিফিসিটি নাই। স্পেসিফিক শরীর নাই। শুধু "বিশুদ্ধ প্রেম"।

    গণিত, বিশেষ করে সংখ্যা এরকম এককটি "বিশুদ্ধ" অস্তিত্ব। প্লেটোনিক জগতে। প্লেটোনিক প্রেমের মতই, তারাই "আসল" বা "বিশুদ্ধ" বা জগতের সারাৎসার।
  • gabeT | 122.79.39.51 (*) | ০১ জুন ২০১৪ ০৩:২১72784
  • CH এসেছে উদাহরণ হিসেবে যখন আপনি বলছেন, সূত্র স্পেস টাইম ইন্ডিপেন্ডেন্টলি ভ্যালিড, তার প্রতিদৃষ্টান্ত হিসেবে। অঙ্কে কি অ্যাবসলিউট ট্রুথ বলে আদৌ কিছু হয়?

    আর এই আলোচনায় ঐ স্পেস টাইম এরাই বা কি?
  • gabeT | 122.79.39.51 (*) | ০১ জুন ২০১৪ ০৩:২২72785
  • CH এসেছে উদাহরণ হিসেবে যখন আপনি বলছেন, সূত্র স্পেস টাইম ইন্ডিপেন্ডেন্টলি ভ্যালিড, তার প্রতিদৃষ্টান্ত হিসেবে। অঙ্কে কি অ্যাবসলিউট ট্রুথ বলে আদৌ কিছু হয়?

    আর এই আলোচনায় ঐ স্পেস টাইম এরাই বা কি?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত মতামত দিন