এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • রণক্ষেত্র সুন্দরগড়

    Atindriyo Chakrabarty লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ | ৯৩৯৫ বার পঠিত
  • ওড়িশা রাজ্যের জেলা সুন্দরগড়। একদিকে ছত্রিশগড়ের রায়গড় জেলা, আরেক দিকে খাণ্ডাধার পাহাড় দিয়ে নেমে এসেছে খাণ্ডাধার ঝরণা। পাহাড়ের একটা অংশ সুন্দরগড় জেলায়, আরেকটা অংশ কেওনঝর জেলায়। ঝরণাও নালা হয়ে দুটো জেলাকেই জল দেয়।

    ১) বৈতরণীর তীরে
    কেওনঝরে অজস্র আকরিক লোহা আর ম্যাঙ্গানীসের খনি। শক্ত মাটির নীচে অনেক খনিজ পদার্থ থাকলে মাটির গভীরের ফাটল হয়, ফাটলে অন্ধকারের অনু-উদ্ভিদ ইত্যাদি থাকে, তাই দীর্ঘাবয়ব গাছের শিকড় মাটির গভীরে যেতে পারে। গুগুল ম্যাপ থেকে দেখা যায় যে কেওনঝরের অনেকটা অংশ ঘন জঙ্গল, শুধু মাঝে মাঝে খাবলা খাবলা জায়গায় ফাঁকা। সেগুলো খনি অঞ্চল। কেওনঝর জেলার ৩০% জঙ্গল-অঞ্চল।
    ইণ্ডিয়ান ব্যুরো অফ মাইনসের ২০০৫-এর একটা হিসেব অনুযায়ী সমস্ত ওড়িশায় যতো আকরিক লোহার ডিপোসিট রয়েছে তার ৩০ শতাংসই রয়েছে কেওনঝরের মাটির নীচে। জঙ্গল ছাড়াও সে মাটির উপরে প্রাণের অঢেল বিস্তার। জেলার মধ্যে দিয়ে বইছে বৈতরনী নদী। তার জলাভূমি ও অববাহিকা জুড়ে আঞ্চলিক ধীবরদের জীবন ও জীবিকা। আবার জঙ্গল ঘিরে আদিমকাল ধরে বাস করছেন বাথুড়ি, ভুঁইয়া, গোঁড়, হো, জুয়াং, কোলহা, মুণ্ডা ও সাঁওতাল জাতীর অরণ্যসন্তানেরা। জেলা কেওনঝর আদিবাসী-অধ্যুষিত, অতএব সেটি সংবিধানের ভাষায় পঞ্চম তফসীল-ভুক্ত অঞ্চল। অতএব এইখানকার গ্রাম-গঞ্জে গ্রাম পঞ্চায়েত তথা গ্রাম সভা-কেন্দ্রিক প্রাশাসনিক কাঠামো-নির্মাণ ১৯৯৬ সালে দ্য পঞ্চায়েত এক্সটেনশান টু শেড্যুলড এরিয়াস অ্যাক্ট সক্রিয় হওয়ার পর থেকে আরম্ভ হয়।

    শেষ দশ বছরের বিভিন্ন কেসকামারী দেখে বোঝা যায় যে ম্যাঙ্গানীস আর আকরিক লোহার উৎখনন হুহু করে বাড়ছে। এইসব খোঁড়াখুঁড়ির ক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদিত লিমিটসমূহের তোয়াক্কা করা হয় না। সরকার সমস্ত চোমড়া সুটকেসবাবুদের অ্যাপ্লিকেশানে পার্মিশান দিয়ে দেয়, সময় নেয় সুটকেসের মাপ-অনুপাতে। ই-আই-এ রিপোর্ট হ্যানোতুশুক পরিবেশ-মন্ত্রকের বিধিসমূহের বিড়ম্বনা ফেস করতে হয় না সুটকেসবাবুদের বিশেষ।

    সুটকেসবাবুরা এদিকে তাদের সুটকেসের হিসেব কষে নেয় এমন ভাবে যাতে সেটির উত্তরোত্তর exponential শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। ফলে অনেক লোহালক্কড় আর জ্বালানীর প্রয়োজন হয়। খনিজের তাই মারাত্মক চাহিদা এদের, আর চাহিদা মেটানোর গলতাগুলো মূল জোগানের কাছেপিঠেই হয়। মাটির নীচে এত ধাতু নিয়ে কামড়াকামড়ি তীব্রবেগে চলেছে বৈতরণীর তীরে। কারণ সেখানে অনেক লোহা। অনেক ধাতু।

    দ্য নিউস লণ্ড্রিতে প্রকাশিত একটা কামিকে সুমিতবন্ধু একটা মোক্ষম কথা লিখেছেন – ‘নীচে মাল, উপর কাঙ্গাল’। এবার কলকতা বইমেলায় একজন বন্ধু তাঁর পরিচিত ঝাড়সুগুড়ার কাছেপিঠে মাইনিংরত সুটকেসের পাসকিপার-পদস্থ ম্যানেজারবাবু বলেছেন যে এই সব আদিবাসীদের একদিন করে NGO গুলো বিস্কুট দিয়ে নাচায়, একদিন করে কোম্পানীগুলো।

    সুটকেসগুলোর নামগুলো নির্ভর করে বিভিন্ন ডেমোগ্রাফির উপর। এসব জায়গার লোকাল প্রশাসন, পুলিশ, অরণ্যবিভাগ বা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ শাখার পেয়াদাদের এবং কোর্টে ভিড় করা কিছু সুটকেসপ্রসাদে গরীয়ান নানান পোষাকে পোষাকিত দালালদের। মাইনিং অঞ্চলের এটাই নিয়ম এখন দেশে। যে সুন্দরগড় জেলাটার একপাশে অবস্থিত কেওনঝর জেলার ভিতর দিয়ে বয়ে চলেছে বৈতরণী, সেই জেলারই আরেকপাশে ছিল আরেকটা ঘন জঙ্গল। তার নীচে ছিলো অনেক কয়লা, আর উপরে অনেক মানুষ, অনেক গাছপালা। কেলো নদী বয়ে যেতো তার মধ্য দিয়ে। কয়লার রঙে কালো। তারপর কয়লার জন্য হাঁ করে ধেয়ে এলো – প্রথমে রাষ্ট্র নামে একটা নতুন ব্যাপার, তারপর সুটকেসবাবুর দল। কাঙাল হটিয়ে মাল তোলা হতে লাগল। কোলবাজারির জেল্লায় টাউন হল এক-দেড় খান, আর তার দাপটে সেই নদীর ধারে অনসন করতে করতে মরে গেলেন সত্যভামা, গত শতাব্দীর আশির দশকে।

    এসব ক্ষেত্রে প্রথমবারের ট্র্যাজেডি দ্বিতীয়বারে ফার্সে পরিণত বা প্রতিভাত নাও হতে পারে, আশঙ্কা। এরই মধ্যে খবর পেলাম যে বৈতরণীর তীরে জঙ্গলের কোর জোনে আকরিক লোহার জন্য সুটকেসের দাপটে আটশ’ জন মানুষের জীবনের উপর খাঁড়া ঝুলছে। উন্নত প্রযুক্তির ও চাহিদা তথা উপভোক্তা-বাজারের exponential হারে বৃদ্ধির ফলে এই সময়টায় হুহু করে কোম্পানিগুলির জোগান বাড়িয়ে দিতে হচ্ছে। আর সেইজন্য যে লোহালক্কড় লাগে সেসব তৈরীর মূল ধাতুগুলো যেসব মাটির নীচে রয়েছে, সে সকলের উপরেই হয় এখনো ঘন জঙ্গল আছে, অথবা, অধুনা ছত্তিসগড়স্থ রায়গড় জেলাটির মতো, নব্বইয়ের দশকের আগে অবধি ছিলো।

    বৈতরণী-তীরের এই যে জঙ্গলটায় আটশ’জন মানুষের উপর খাঁড়া ঝুলছে, সেই খাঁড়াটা ঝুলিয়েছে দুইদল মিলে। প্রথম দলটির নাম রাখা হোক সরকারপক্ষ। টীম মেম্বার্স –
    ১) অরণ্যমন্ত্রক,
    ২) পরিবেশমন্ত্রক,
    ৩) রাষ্ট্রযন্ত্রের ধুলোচন্দনে লেপালেপি ক্ষয়াটে ফাইলরাজ্যে লাইসেন্সপ্রাপ্ত দূষণ-নিয়ন্ত্রক যন্ত্রাংশ,
    ৪) অরণ্যদপ্তরের লোকাল উর্দিবাবু এবং
    ৫) কলেকটরেটের মসনদাসীন অফিসবাবুটি

    দ্বিতীয় গোষ্ঠীর নাম রাখা যাক সুটকেসপক্ষ। টীম মেম্বার্স –
    ১) কলকাতার বেণ্টিঙ্ক স্ট্রীটস্থ একটা কোম্পানী। এর সুটকেসের মাপ অতিবিশাল নয়, আর দুর্জনে হয়তো বলেন যে এদের সুটকেটস্থ অনেককিছুরই ব্যাঙ্কে বা সরকারী সারস্বতে নকশা-কাটা নয়
    ২) বারবিল শহরে অফিস-অলা এক আর্থ মুভার্স কোম্পানী। এদের সুটকেসও নাতিবৃহৎ, যদিও সেই সুটকেসের খুঁট বাঁধা আছে অপর একটি চোমড়াসাইজ সুটকেসের সঙ্গে
    ৩) কেওনঝরের বারবিল শহরে অফিস-সমেত মোটাসোটা সুটকেস-অলা রুংতা মাইনস
    ৪) উপরোক্ত সুটকেসবাবুর চেয়ে বৃহত্তর সুটকেসওয়ালা এসেল কোম্পানী। এদের অফিস মহারাষ্ট্র রাজ্যে এবং এদের মাইনার-রূপী অবতারের কথা সংবাদমাধ্যমে বিশেষ আলোচিত না হলেও এদের আরেক অবতার জী-টিভি আমাদের পরিচিত। হাওয়ায় ভাসে এদের আরো নানাবিধ মাইনিঙ-লিপ্সার কথা, এমনকি সুন্দরগড়ের অন্য পিঠে অবস্থিত রায়গড়েও এতদিনের কয়লারাজা জিন্দালের আসন টলানোর উদ্যোগের বিষয়ে উক্ত টিভি-র নানান জিন্দাল বিরোধী আলোচনাচক্রের মাধ্যমে আঁচ করা সম্ভব হয় বছর দুইয়েক আগে।
    ৫) টাটাবাবু। এরা পরিচিত, এদের সুটকেসের তালাচাবি স্বামী বিবেকানন্দের আশীর্বাদধন্য।

    দুই দলেই পাঁচজন করে তাবড় খিলাড়ি। যদিও এই ব্যাপারটা কাবাডির মতো একে অপরের বিরুদ্ধে নয়, ওরা একসাথে খেলছে আট’শ-জন আদিবাসীর বিরুদ্ধে। আর একটা মজার ব্যাপার হল এই খ্যালাটায় দুই পক্ষের ট্রফির ধরণ আলাদা ধরণের। সরকার-কোম্পানীর যুগলবন্দী জিতলে তাদের যৌথখামারে অনেক আকরিক লোহা আর ম্যাঙ্গানীস উঠবে। আর সেই আটশ’ জন যদি ভানুমতীর-খেলের কৃপায় জিতে যায় কোনোদিন, বাস্তুভিটার সাথে তাদের শিকড় জুড়ে থাকবে কিছুকাল।

    এ বিষয়ে আমাদের দুষ্টুমিষ্টি বন্ধু ন্যাশানাল গ্রীণ ট্রাইবিউনাল মাথা দোলাতে দোলাতে ফ্রেমে ঢুকে পড়ছে। দিল্লীস্থ সেণ্ট্রাল বেঞ্চের এক জজসায়েব (যে সময়ে মামলাটা রুজু করা হয় তখনো কলকাতাস্থ ইস্টার্ন জোনখানি চালু হয় নাই) ২০১৪ সালের অক্টোবর মাসে মাইনিং প্রকল্পটির উপর অন্তর্বর্তী স্থগনাদেশ জারি করলেন। তবে মোকদ্দমা চলেছে ঢিমে তেতালায়, কারণ যদিও গত বছর অর্থাৎ ২০১৪-র সেপ্টেম্বর থেকেই খাতায় কলমে ন্যাশনাল গ্রীণ ট্রিব্যুনালের ইস্টার্ণ জোনাল বেঞ্চি বসছে কলকাতায়, তবু সমস্ত কেস এখনো দিল্লি থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছে উঠতে পারে নি। এর কারণটা খতিয়ে দেখতে হলে পাঠিকাকে অনুরোধ, যদি দমদম আর সল্টলেকের মধ্যিখানের এয়ারপোর্টগামী রাস্তা ধরে চলতে চলতে আপনি পৌঁছে যান একটা ইকোপার্ক অঞ্চলে, তাহলে দয়া করে একবার ডানদিকে ধূ ধূ মাঠঘাটের ভিতর ফাইন্যান্স সেণ্টার নামক বিরাট দালানটার দিকে তাকান, বা সেটির ভিতরে ঢুকে সুন্দর মোমের প্রদর্শনীশালা মাদার্স ওয়াক্স মিউজিয়মে। টিকিট কেটে ঢুকলে ভিতরে অমিতাভ বচ্চন প্রমূখের মোম প্রতিকৃতি থাকার সম্ভাবনা আছে। তবে আপনার গন্তব্য সেখানে নয়, আপনি চলে যান সিধে লিফটে চেপে পাঁচতলায়। যদি সোম থেকে শুক্রবারের মধ্যে সকাল সাড়ে এগারোটা থেকে দুপুর দেড়টার মধ্যে পৌঁছতে পারেন তবে দেখবেন সেইখানে কোর্ট চলছে একখানা। আপনার নিজেকে K বলে ডাকতে ইচ্ছে করবে কি করবে না তখন সেইটা তো মক্কেল আপনার ব্যাপার; আমার কারবার নেহাৎ তথ্যকুলির। তথ্য অনুসারে, এই ইকোপার্কের উল্টোদিকের কোর্টখানার অঞ্চল অনুসারে এক্তিয়ারের বিস্তার এই সকল রাজ্যে –
    ১) উড়িষ্যা
    ২) বিহার
    ৩) ঝাড়খণ্ড
    ৪) পশ্চিমবঙ্গ
    ৫) আসাম
    ৬) মেঘালয়
    ৭) মনিপুর
    ৮) মিজোরাম
    ৯) নাগাল্যাণ্ড
    ১০) সিকিম
    ১১) ত্রিপুরা
    এই সবকটা রাজ্যের সমস্ত জঙ্গল, বন্যপ্রাণ, অরণ্যচারী মানুষ, নদীমাতৃক বেসিন অঞ্চলের মানুষ, নদী, নালা, খাল, বিল, প্রকৃতির খেয়ালে তৈরী দীঘি, চর, জলাভূমি, বঙ্গোপসাগরের উপকুলবর্তী প্রাণজ সম্পদ, জঙ্গলমহলী ছোটোনাগপুর মালভূমি ঘিরে খনিজ-সমৃদ্ধ মহীরূহময় অরণ্যঅঞ্চল এই সবের উপর ন্যায়বিচারের দায়বদ্ধতা যে কোর্টের উপর সেটি বয়সে নবীন হলেও তার ধ্যান ভাঙে এন আই অ্যাক্টের ছুটিগুলো বাদ দিলে ফী হাফতায় পাঁচ দিন করে, দিনে ঘণ্টা দুয়েক।
    তুলনামূলক ভাবে, ভোপালস্থ ন্যাশানাল গ্রীন ট্রাইব্যুনালের সেণ্ট্রাল-বেঞ্চির ঘুম ভাঙে এন আই অ্যাক্টের ছুটিগুলো বাদ দিলে ফী হাফতায় পাঁচ দিন করে, তবে দিনে ঘণ্টা তিনেক। এই সব ক্ষেত্রে জজ বদলালে হিসেবগুলো হাল্কাপাতলা পালটায়, তবে এই বেঞ্চিগুলি আরেকটুক্ষণ জেগে ঠেগে থাকলে অনেক গরীব মানুষের উপকার হয় আর কি। আর তার চেয়েও বাজে ব্যাপার হোলো এই যে তাদের এত গভীর গম্ভীর ধ্যানের কারণে বেশ কিছু গরীব লোকের বেজায় ক্ষতি হওয়ার জো’। দিল্লিস্থ বেঞ্চিগুলো সমস্তদিন জেগে থাকে। আর এই মাথার উপর ড্যামোক্লসের খাঁড়া ঝোলা আটশ’-জনের বিষয়টিতে যে জজসায়েব অন্তর্বর্তী স্থগনাদেশ জারী করেন তিনি মানুষ ভালো। তবে এইবার তিনিই মামলাটি দেখবেন না ফাইলসমূহ কলকাতায় আসবে একদিন সেবিষয়ে আইনি ধোঁয়াশা। চুড়ান্ত বিচারে ন্যাশানাল গ্রীন ট্রাইবিউনালের থেকে কোনো ন্যায়বিচার মিলবে না ওই আটশ’জনকে দাদা-পরদাদের ভিটেমাটি ছাড়তে হবে এইসকল স্প্যেক্যুলেশান অবান্তর, এবং, দুর্জনে কানাঘুষো করে চলেছে যে ন্যাশানাল গ্রীন ট্রাইব্যুনাল উঠে যেতে পারে এবং সেক্ষেত্রে এই সব মামলাগুলো আরো আরো অনেক দিন সময় নিয়ে ফাইলসুদ্ধু স্ব-স্ব রাজ্যের হাইকোর্টে ফেরত যাবে। তবে এসব কানাঘুষোর আইন-সংস্কৃতির পরিসরে মূল্য অপরিসীম হলেও, আইনের যন্ত্রচোখ ট্যাঞ্জিবিলিটি, ক্রেডিবিলিটি, অথেনটিসিটি প্রভৃতি বিরাট বিরাট মেঘ মেঘ বিষয়েই মধ্যে নিহিত। বৈতরণী তীরের জঙ্গলের আটশ’জন মানুষের ভবিষ্যতের সীলমোহর আঁটা ফাইলটি আপাতত ২০১৫ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারিতে দিল্লি বা কলকাতা বা মধ্যবর্তী কোথাও ঘুরে চলেছে।

    এবার ঐ ফাইভ প্লাস ফাইভ ভার্সেস এইট হাণ্ড্রেড খেলাটা ছাড়িয়ে আরেক ধাপ এগোনো যাক। ২০১১ সালের সেনসাস অনুসারে কেওনঝরের জনসংখ্যা ১,৮০২,৭৭৭, যার মধ্যে ৪৪.৫ শতাংশ মানুষ সংবিধান অনুসারে তফশীলভুক্ত, অর্থাৎ আদিবাসী। এঁদের মধ্যে অধিকাংশের বাস বনাঞ্চলে, এবং এঁদের অরণ্যের অধিকারের স্বীকৃতিসূচক আইন ২০০৫ সালে বলবৎ করে কেন্দ্রীয় সরকার – দ্য শ্যেড্যুল্ড ট্রাইবস অ্যাণ্ড আদার ট্রেডিশানাল ফরেস্ট ডোয়েলার্স (রেকগনিশান অব ফরেস্ট রাইটস) অ্যাক্ট, ২০০৬, এক কথায় ফরেস্ট রাইটস অ্যাক্ট। এই আইনের পথে চলে অরণ্যের অধিকার সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমার এক্তিয়ার রাজ্যগুলোর হাই-কোর্টে, অথচ অরণ্যনাশের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচারের কাগুজে রাস্তা কেবলমাত্র ন্যাশাল গ্রীন ট্রাইব্যুনালের এক্তিয়ারসিদ্ধ।

    প্রাশাসনিক-ভাবে, দশটা তহসীল ছাড়াও কেওনঝর জেলায় রয়েছে তিনটে সাব-ডিভিশন – আনন্দপুর, চম্পুয়া এবং কেওনঝর। জীবিকার জন্য এই অঞ্চলের মানুষজন মূলত জঙ্গল এবং কৃষিতে নির্ভরশীল। উৎখননের কারবারের জন্য আইন বলে যে খননোদ্যগী সুটকেসবাবুদের পরিবেশগত ছাড়পত্র নিতে হবে সরকারের থেকে, এবং তার জন্য গণ-শুনানী তথা জন-সুনওয়াই তথা পাব্লিক হিয়ারিং এবং যে’ সকল অঞ্চলে খননকার্য হবে সে’ সকল অঞ্চলে অবস্থিত গ্রাম সভার ছাড়পত্র প্রয়োজনীয়। আইন এও বলে যে যখন ফরেস্ট রাইটস অ্যাক্ট অনুসারী অরণ্যযাপী মানুষদের প্রাপ্য অধিকারসমূহের স্বীকৃতিদানের পর্ব চলে আঞ্চলিক ফরেস্ট রাইটস কমিটির প্রাশাসনিক তত্বাবধানে, ততদিন মাইনিং বা অন্য কোনো কাজে জঙ্গলের জমি ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু ২০১৫ সালে এসে বিকল্পের জগন্নাথী-রথ যখন প্রবলে গড়গড়ায়মান, তখন স্মরণ করে নেওয়া যাকে প্রাচীণ সায়েবি চর্চায় বিধৃত রোমান সাম্রাজ্যের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রথম ‘বর্বর’ (বারবেরিয়ান) দার্শনিক অ্যানাকার্সিসের একখান সরেস টিপ্পনী –
    ‘লিখিত আইন মাকড়সার জালের মতো - বড় বড় জানোয়ারেরা ছিঁড়ে বেরিয়ে যায়, ছোটো ছোটো পোকামাকড়েরা আটকা পড়ে থাকে’। টিপ্পনীখানা প্লুটার্কের ‘প্যারালেল লাইভস’-এ সজৌলুসে বিরাজমান।

    এহ বাহ্য, গণশুনানীর প্রবল আপত্তিসমূহ গ্রাহ্য করে না এইসব অঞ্চলের স্থানীয় নথিপত্রসমূহ, এবং পার্মিশানের দানপত্র সুটকেসবাবুদের হাতে তুলে দেওয়ার সময়ে দাতাকর্ণ সরকারবাহাদূরের হিসেব দ্যাখায় – ‘উৎখননের প্রস্তাব জনগণ সাদরে সমর্থন করেছে’। এই গণশুনানীরও আবার নানান ভানুমতী। ছত্তিসগড়ের রায়গড় জেলার গাড়ে পেলমা কয়লাঞ্চলে ২০০৮ সালের পাঁচই জানুয়ারী ন্যাশানাল গ্রীন ট্রাইব্যুনাল চোমড়া সুটকেসের মালিক জিন্দাল কোম্পানীর সেই সময়ে কব্জাধীন অঞ্চলের জন শুনানী ক্যান্সেল করে দেয়, কারণ, আদালতভাষ্যে, সেটা ছিলো একটা ফার্স। আবার একই অঞ্চলে একই সুটকেসবাবুর বদান্যতায় হওয়া আরেকটি গণশুনানী একই কারণ দর্শিয়ে। টিহলি-রামপুর-গাড়ে-কোসাম্পালি-ডোঙ্গামোহা প্রভৃতি গ্রাম একের পর এক নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে বা যাওয়ার মুখে। গণশুনানীর দিন পাব্লিক সিক্যোরিটি কারণ দেখিয়ে, কিছুটা নকশাল-জুজু দেখিয়ে এবং অনেকটাই উপস্থিত সুটকেসবাবু ও সরকারবাবুদের সুরক্ষার খাতিরে অজস্র উর্দি পরা বন্দুকধারী সি-আর-পি-এফের জওয়ান এবং উর্দিপরা বন্দুকধারী সুটকেসরক্ষার উদ্দেশ্যে নিযুক্ত প্রাইভেট সিক্যোরিটি গার্ডে ছয়লাপ হয়ে যায় শুনানীর জন্য নির্দিষ্ট স্থান। তার মধ্যে দাঁড়িয়ে গ্রামবাসীদের পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য প্রয়োজনীয় ও আইনানুগ ভাবে যথাযথ পয়েণ্টসমূহ বাৎলাতে হয়। প্রিয় পাঠিকা, আপনি বোধ হয় কৈশোরে সোভিয়েত দেশে টিনটিন পড়েছেন।

    আবার দৈনিক ভাস্কর নামধারী সুটকেসবাবুরা যখন তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের চক্করে ক্যাপ্টিভ কোল-মাইন, অর্থাৎ যে খনির কয়লার উপযোগিতা কেবলমাত্র সুটকেসের স্ফীতিবর্ধন, বানাতে কোমড় বাঁধেন, তখন আবার গণশুনানীর অন্যরকম ভানুমতী। ২০১১-১২ সাল নাগাদ রায়গড় জেলার ধরমজয়গড় টাউনে দৈনিক ভাস্করের প্রকাশিত সংবাদপত্র বহুলপ্রসিদ্ধ। সেই প্রসিদ্ধি মারফৎ একটি বিবৃতির মাধ্যমে বার্তা রুটি গেল ক্রমে যে টাউন অঞ্চলে খননকার্য্য হবে না, তাই মানুষজন মাইনিং-বিষয়ে বিশেষ আপত্তি জানালো না। অথচ যখন খোঁড়াখুঁড়ির আয়োজন আরম্ভ হয়, তখন টাউনের গণবসতিপূর্ণ একনম্বর ওয়ার্ডের বাঙালী বাসিন্দাদের কাছে উচ্ছেদ নোটিস এলো, কোনো রকম ত্রাণ ও পুনর্বাসন (রিলিফ অ্যাণ্ড রিহ্যাবিলিয়েশান)-এর উদ্যোগ ছাড়াই। কিছু মানুষ অক্লান্ত ছোটাছুটির ফলে ভাস্করের সুটকেস থেকে প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া মাইনিং প্ল্যান যেটা বেরোলো তার অন্তর্ভুক্ত টাউনের একনম্বর ওয়ার্ড।

    বৈতরণী তীরের অরণ্যে যে সুটকেসের তোড়জোড়ে আটশ’ জন মানুষ ও অগুনতি গাছপালা, উদ্ভিদ ও চলনশীল প্রাণের অস্তিত্বসংকট সেখানেও গণশুনানী আলবাত হয়েছিলো। ওই অঞ্চলে দারিদ্র্য অপরিসীম, ঐ ‘নীচে মাল, উপর কাঙ্গাল’ থিয়োরি অনুসারেই। ব্যাপক অরণ্যনাশের ফলে একদিকে বন ও বনোপজের উপর নির্ভরশীল সেই আটশ’ মানুষের জীবন ও জীবিকা বিপন্ন। এঁদের কেউ কেউ কৃষিকার্য্যের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন। অনবরত মাইনিঙের কারণে মাটিতে অজস্র রাসায়নিক বিষ ঢুকে গেছে, মাটির ভৌত ও রাসায়নিক প্রাকৃত স্বভাব এতটাই বিকৃত হয়ে গেছে যে ঐ অঞ্চলে কৃষিকাজ প্রায় অসম্ভব। এ বিষয়ে জাতীয় সংবাদপত্র দ্য হিন্দু-তে একটা প্রতিবেদনও বের হয়।
    দূষণ ছড়িয়েছে গভীরে। সেই আটশ’জন ছায়ামানুষেদের ধরেছে নানান ব্যামোয়। সুটকেসবাবুদের আকরের ক্রমবর্ধমান খাঁই ক্রমাগত মিটিয়ে যাওয়ার মাশুল দিচ্ছে ঐ মালের উপরের কাঙালেরাই।

    কৃত্রিম ও অজৈব রাসায়নিক বিষ ও দূষণের প্রকোপে সর্বাধিক বিষাক্ত হয় স্তনদায়িনী মা-দের দুধ। মা-রা ভুগছে অপুষ্টিতে, এবং শিশুমৃত্যুর হার তুঙ্গে। মাইনিঙের কারণে ওড়িশার রাজ্যের শিশুমৃত্যর হার অত্যাধিক এবং আদিবাসী শিশুদের মধ্যে ৮৪.২% এক বছরের জন্মদিনের আগে মরে যায়। ওড়িশ্যা রাজ্যের আদিবাসী শিশুদের মধ্যে ১২৬.৬% শিশু পাঁচ বছরের জন্মদিন আসার আগেই মরে যায়। এই পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায় যে আদিবাসী জনজাতিদের সংখ্যা কি বিপুল ভাবে হ্রাস পাচ্ছে। এবং এই পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে রাষ্ট্রযন্ত্রের-ই অংশ প্ল্যানিং কমিশান থেকে প্রকাশ হওয়া একটি রিপোর্ট থেকে। ২০১০ সালে প্রকাশিত এই রিপোর্টটির নাম ‘Research Study on Changing Socio-Economic Condition on Livelihood of Geographically Isolated Tribal Community in Khandamal and KBK Districts of Orissa’। রিপোর্টটি ২০১৫ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি সকাল ছটা বেজে দুই মিনিটে এখনো গুগললব্ধ। তবে এখন প্ল্যানিং কমিশানের কার্যকারিতা হ্রাস করে দিয়েছে ভারতসরকার এবং আসন্ন ভবীকালে সে কমিশন সাংবিধানিক স্বীকৃতির প্রসাদটুকু থেকেও বঞ্চিত হবে – এ হ্যানো জল্পনা কান পাতলে শোনাযায় আজকাল। নিয়ত সংবাদমাধ্যম ও অন্যান্য নাগর-পরিসরে এই সুটকেসওয়ালাদের ঢাকঢোলময় উপভোগ-মোচ্ছবের মায়াকাননে মরে যাওয়া আদিবাসী-বাচ্চাদের নিয়ে খবর বিকোয় না। তাই নাগর চেতনায় মধ্যভারতের মালভৌম ও ক্রম-অপসৃয়মাণ মহারণ্যের আদিবাসী মানে মহুয়ার মৌতাত, মাদলের বোল, পাহাড়ে পাহাড়ে জুম। হিসেবটা পরিস্কার; যত বেশী রেটে আদিবাসী বাচ্চা মরবে, তত তাড়াতাড়ি জনজাতিগুলো অবলুপ্ত হবে, প্রাণ বাঁচাতে সর্বস্ব খুইয়ে পাড়ি দেবে অন্য কোনোখানে, যেখানে জঙ্গল নেই। আর যত তাড়াতাড়ি সেটা হবে, তত বেশী বেশী করে আকরিক ধাতু ও খনিজ উঠিয়ে নেওয়া যাবে উপভোক্তা নামক এক নাগরদানোর উপভোগ্য সেবাসমূহের উদ্দেশ্যে। এই সব মৃত শিশুর হিসেব এখনো সরকারী রেজিস্ট্রী বা কম্পিউটারে রাখা হয় না, মৃত শিশুরা ভোট দিতে পারে না বলে রাখার বিশেষ প্রয়োজনও নেই। শিশুমৃত্যুর হারের সঙ্গেই বুঝি পাল্লা দিয়ে উঠছে মাতৃমৃত্যুর হার।

    অপুষ্টির কারণে এঁদের মধ্যে রক্তাল্পতার প্রভাব লক্ষণীয়। আবার রক্তে ব্যারাম-প্রতিরোধক কণিকাসমূহের অল্পতার কারণেই অন্যান্য অসুখবিসুখের বালাই লেগেছে ধুম। যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, গ্যাসের ব্যামো, হাম, হুপিং-কাশী, চর্মরোগ স্কেবিস – এই সবই কেওনঝরের মানুষদের মধ্যে ভীষণভাবে ছড়িয়েছে।
    এর কারণগুলো খতিয়ে দেখতে হলে কেওনঝরের সামগ্রিক দূষণ-পরিস্থিতির একটা প্রেক্ষণ প্রয়োজনীয়। ওড়িশার দূষণ-নিয়ন্ত্রন বোর্ড সম্পুর্ণ রাজ্যটাকে ১৬টা খাদান-অঞ্চলে বিভক্ত করেছে। তার মধ্যে দুটো অঞ্চল পড়েছে কেওনঝর জেলায়। সরকারী হিসেব অনুসারে ওড়িশার সর্বাধিক দূষিত অঞ্চলগুলি হল – জোড়া, বরবিল, জোড়া-বরবিল অঞ্চলের উত্তর পুর্বে অবস্থিত খণ্ডবাঁধ-মতঙ্গলি, দক্ষিণে কোলি নদী ও বরশুয়ঁ-কলতা অঞ্চল। জোড়া এবং বরবিল অঞ্চলেই কেওনঝর জেলার বিস্তার। এই সব অঞ্চলেই মাটির নীচে অজস্র আকরিক লোহা ও ম্যাঙ্গানীস, এবং তাই জঙ্গল সাফ করে আদিবাসীদের নির্মূল করে অনবরত চলেছে খননকার্য্য। বাজারের চাহিদা মেটাতে সুটকেসবাবুরা ছুটে চলেছেন খুড়ো হয়ে, পিঠে কল এঁটে। শৈশবে তারা ‘গুঙ্গা’ বলে কেঁদে উঠেছিলো কি না জানা নেই তবে তাদের বয়সকালের কার্যকলাপের ঠেলায় এইসব জায়গার হিসেবহীন সংখ্যক আদিবাসী শিশু সেইরকম কোনো আওয়াজ করতে সক্ষম হয়ে ওঠার আগেই সক্ষম ভারতের দাপটে মারা যায়। ডায়নামাইটে শক্ত মাটি ও জঙ্গুলে পাহাড় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় নিয়ত, চারিদিকে ধূলো ওড়ে সর্বক্ষণ, চব্বিশ ঘণ্টা ধরে অজস্র লরি ও বড় বড় চলমান মাইনিং-মেশিন চলাচল করে পথে। ধুলোর প্রকোপ কমানোর জন্য জল ঢেলে মুনাফার অংক কমাতে নারাজ সুটকেসবাবুরা, এবং তাতে সরকারবাবুদের বিশেষ আপত্তি দেখা যায় নি অদ্যবধি। লাল-কালো ধোঁয়ায় মাটি আর বাতাস ভরন্ত। কেওনঝরের জলেও প্রবল বিষ। নদী, নালা, কুঁয়ো, জলসত্র, পুকুর, টিউবওয়েল – সমস্ত জলাশয়ে আয়রন অক্সাইড আর ধুলো পড়ে জল বিষিয়ে দিয়েছে প্রবল ভাবে। বৈতরণী নদীর জলও আজ পানের অযোগ্য। জাল আর হাওয়ার বিষ শুধু মায়ের দুধে প্রবেশ করে শুধু যে শিশুমৃত্যুর কারণ ঘটছে তাই নয়, এর থেকে এখানকার বাসিন্দাদের ফুসফুসে, যকৃতে বাসা বাঁধছে দূরারোগ্য সব ব্যাধি, যেগুলো নিরাময়ের চিকিৎসা যে সকল হাসপাতালে হয় সেই সব বেসরকারি বাণিজ্যিক স্থানের খরচাপাতি দিতে আঞ্চলিক অধিবাসীদের অধিকাংশ অক্ষম। আঞ্চলিক হাসপাতালগুলোয় স্বল্প খরচে এইসব জটিল ব্যামোর চিকিৎসা করার যন্ত্রপাতি ওষুধপত্তর কিছুই নেই। বৈতরণী নদী বয়ে চলেছে সুন্দরগড় ও কেওনঝর জেলার ভিতর দিয়ে। দুই জেলাকেই সমৃদ্ধ করেছে সে। দুই জেলায় নদীর দুই অববাহিকায় রয়েছে দুইটি ক্যাচমেণ্ট অঞ্চল। ওড়িশ্যা রাজ্যের ছয়টি মুখ্য নদীর মধ্যে একটি সে। অথচ ক্রমাগত বিষাক্ত জল বয়ে বয়ে সে আজ বিষিয়ে দিচ্ছে বিস্তীর্ণ নদীখাত, তার আশপাশের খেতখামার, বনজঙ্গল। রায়গড়ের কেলো নদীর মতোই সুন্দরগড়-কেওনঝরের বৈতরণী নদীও আজ মৃত্যুপথযাত্রী।

    সুপ্রীম কোর্ট এবং ন্যাশানাল গ্রীন ট্রাইবিউনাল একাধিক রায় দেওয়ার সময় উল্লেখ করেছে যে অ্যান্থ্রোপোসেন্ট্রিক অর্থাৎ মানবকেন্দ্রিক পন্থাই নয়, ন্যায়পীঠগুলিকে পরিবেশ বিষয়ক মোকদ্দমায় ইকোসেণ্ট্রিক অর্থাৎ প্রাণপ্রাকৃত পন্থায় বিচার করতে হবে। কিছুটা সেই উদ্দেশ্যেই সংবিধানের মানবকেন্দ্রিক অধিকার-পন্থায় বিচার্য্য পথ পরিত্যাগ করে ট্রাইব্যুনালের মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে পরিবেশ-বিষয়ক মোকদ্দমাগুলি।

    বৈতরণী তীরে প্রাণপ্রাকৃতের প্রাচুর্য্য বিপুল। বনস্পতিশোভিত ঘন অরণ্য নদীর চরা ছাড়িয়ে রুক্ষ মালভৌম অঞ্চলে মাটির গভীরের মিনারেলাশীর্বাদধন্য ফাটলের আঁধারযাপি জীবকরস পুষ্ট বিপুল ও অতিদীর্ঘজীবি বনস্পতি, যাদের ডেসিডুয়াস পাতা থেকে দিনময় সুর্যকরধন্য সালোকসংশ্লেষের বিপরীতে রিভার্স অস্মোসিস জেগে ওঠে জংলা রাতে। রাতের আবছায়া ধরে ধোঁয়াকুণ্ডলী বাষ্প বেরিয়ে পাক খেতে খেতে মেঘ হয়, বৃষ্টি আনে। রেনফরেস্ট বৃষ্টিতে ভরে ওঠে উদ্ভিদ-প্রাণে। সেই টানে প্রাকৃত খাদ্যচক্রের অমোঘ নিয়মে উদ্ভিদজীবি প্রাণী, এবং তাদের টানে একই চক্রের নিয়মমাফিক আসে মাংসাশী বহুপদ, পক্ষপদ ও শ্বাপদের দল। যে অঞ্চলে সরকার ও সুটকেসবাবুদের দাপটে আটশ’ জন অরণ্যচারী মানুষের জীবন বিপন্ন, সেই অঞ্চলের গভীর জঙ্গলেই রয়েছে বাঘ, চিতাবাঘ, হাতির পাল, গয়াল বাইসন, সম্বর হরিণ, হনুমান, বাঁদর এবং অজস্র ভালুক। উপরোক্ত টীম সরকার ও টীম সুটকেসের মাইনদাপটে প্রচুর হাতির মৃত্যুসংবাদ বহন করে এনেছে ২০১৪ সালে প্রকাশিত কিছু সংবাদপত্র। জোড়া-বার্বিলের অতিদূষিত ও অজস্র মাইনমণ্ডিত অঞ্চলে একদা ছিলো অজস্র হাতির বিচরণভূমি এবং চলাচলক্ষেত্র, বনদপ্তর ও বনমন্ত্রকের পরিভাষায় ‘এলিফ্যাণ্ট করিডোর’। বর্তমানে অনবরত মাইনিং এবং তজ্জনিত দূষণ তথা সম্পদহ্রাসের কারণে হাতির সংখ্যা ভীষণভাবে হ্রাস পেয়েছে। আরণ্যজ সম্পদ অর্থাৎ জীবনধারণের প্রয়োজনীয় রসদসমূহ সীমিত হয়ে পড়েছে বলে অরণ্যে আদি-অনন্তকাল ধরে বসবাস করে আসা মানুষ ও হাতির মধ্যে অস্তিত্ব সংরক্ষণের লড়াই লেগে গেছে। সীমিত আহার্য্য-সম্পদের কারণে ফুড চ্যে’নের বিপর্যস্ত হওয়ার মূলেও রয়েছে এই সুটকেসবাজারী, মুনাফামুখী ভোগ্যসম্পদ-উৎপাদন প্রক্রিয়া।

    উদ্ভিন্ন জীবক-সম্পদের উপর প্রহার তীব্রতর। ধানক্ষেত, সবজিক্ষেত জুড়ে থিকথিকে ধূলোর লাল-কালো পরত। ফসল ছাড়াও মাইন-অঞ্চলে পথের দুইধারে ১০০ মিটার অবধি গাছপালাতেও সেই পরত। এই ধরণের ধুলোমাখা পাতা না পায় সালোকসংশ্লেষের জন্য পর্যাপ্ত সুর্যকর আর না দিতে পারে রিভার্স অস্মোসিস-মাধ্যমে পর্যাপ্ত মেঘ যা বৃষ্টি এনে মাটি ও নদী থেকে ধুয়ে দিতে পারবে এই বিষাক্ত রাসায়নিক ধূলো।

    বৃষ্টিও বিষ নিয়ে আসে মাটির আর নদীর জন্য। আকরিক লোহার বিষে ক্লিন্ন মাটি বর্ষায় ধুয়ে যে তীব্র রাসায়নিক কাদা বা লীচেতে পরিণত হচ্ছে তার থেকে মাটি ও মাটির জৈব-সম্পদের ক্ষতি অপরিমেয়। তাছাড়াও খেতে খামারে নাগাড়ে জমা হচ্ছে মাইন থেকে নির্গত অ্যাসিড, এবং নদী যে বিষাক্ত পলিমাটি জমা দিচ্ছে তার দুইধারের ক্যাচমেণ্ট অঞ্চলে সেই মাটিও ঐ রাসায়নিক কাদা বা লীচেত বৈ আর কিছু নয়। এই বিষকাদা রৌদ্রতাপে শক্ত হয়ে এঁটে বসে মাটির সাথে। এসবের ফলে কৃষিকার্য্য সম্পাদন প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠছে এই অঞ্চলের অজস্র কৃষিজীবী বাসিন্দাদের।

    শুধু মানুষের আহারের জন্য কর্ষিত মাটির দানগুলোই যে ফুরিয়ে আসছে তা-ই নয়, অরণ্যের উদ্ভিদ-সম্পদসমূহ হ্রাস পাচ্ছে দ্রুতগতিতে। মাইনিং-এর জন্য কাটা হয়েছে অঢেল গাছ-গাছালি, বনস্পতি। ২০০৬ সালের একটা ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক-পরিচালিত সমীক্ষা থেকে প্রতিভ, লাগামছাড়া মাইনিঙের ফলে জোড়া এবং কেওনঝর সদরে যথাক্রমে ৫০% এবং ৭০% অরণ্য-আচ্ছাদন হ্রাস পেয়েছে, কারণ অরণ্যনাশ অনুপাতে বনসৃজন হয়েছে নগন্য হারে। সুটকেসের উদরহ্রাস করে বনসৃজনের ধার সুটকেসবাবুরা ধারেন না এবং সেই ব্যাপারটা সরকারবাহাদুর ক্ষমাঘেন্নার চোখেই দ্যাখেন।

    ইতিহাস বলে যে বিংশ সতকের সত্তর-আশির দশক অবধি রায়গড় জেলাও ছিলো গহন অরণ্যে আবৃত। তার পর থেকে উৎখনন-উৎপাতে লোপ পায় সমস্ত জঙ্গলটাই, বিষিয়ে যায় নদী। তারও আগের, উনবিংশ শতাব্দীর ধূসর ইতিহাস জানান দিচ্ছে যে অধুনা ঝাড়খণ্ডের জামশেদপূর-টাটানগর অঞ্চলে টাটাবাবুরা এবং রানীগঞ্জ-ঝাড়িয়া অঞ্চলে ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর সায়েবী সুটকেসবাবুরা গেঁড়ে বসার আগে সেইসব অঞ্চলও নাকি ছিলো নানাবিধ আরণ্যক সম্পদে প্রাচুর্য্যমণ্ডিত। নীচে মাল আছে জানার সাথে সাথেই বুঝি উপরের মানুষগুলোর সাথে সাথে গাছপালা পশুপাখিগুলোও কাঙাল হয়ে যেতে থাকে। একবিংশ শতাব্দী তার চলিষ্ণু বার্তা নিয়ে আর নাগরিক উপভোগ-মোচ্ছবের জয়ডঙ্কা বাজিয়ে সুটকেসসুদ্ধু হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ছে কেওনঝড়ে, খাণ্ডাধারে।

    উপরে উল্লিখিত সেই আটশ’ জন অরণ্যসন্তানের মাথার উপর খাঁড়াটা এখনো ঝুলছে কারণ ন্যাশানাল গ্রীন ট্রাইব্যুনালের বদান্যতায় অন্তর্বর্তী স্থগনাদেশ জারি আছে এখন অর্থাৎ ০৮-০২-২০১৫ অবধি, এবং আরও বেশ কিছুদিন জারিই থাকবে, কারণ উক্ত কোর্টের স্থানপরিবর্তন ও তৎসংক্রান্ত কেস-ট্র্যান্সফারের অজস্র অঢেল ফাইল চালাচালির হুল্লোড়ে কেসটাও ঝুলে থাকবে বেশ কিছুদিন। ২৮শে অক্টোবর ২০১৪-এ সেই অন্তর্বর্তী স্থগনাদেশটি ঘোষিত হয়, তখনো ন্যাশানাল গ্রীন ট্রাইবিউনাল-কর্তৃক প্রদত্ত অর্ডারসমূহ ট্রাইবিউনালের ওয়েবসাইটে পাওয়া যেতো। এখন আর যায় না, তাই এখন খুঁজলে পাওয়া যাবে না। কিন্তু পুরোনো কস-লিস্ট গুলো এখনো সেই সাইটে রয়েছে। খুঁজলে তাই পাওয়া যাবে উপরোক্ত তারিখে দুই নম্বর কোর্টরূমে ঐ তারিখে শুনানি হওয়া একটি মামলার হদিশ। সেই মামলায় নিহিত রয়েছে একটা নদী, অসংখ্য মানুষ, পশুপাখি, উদ্ভিদ, গাছ আর বনস্পতির ক্রমমৃত্যুগাথা।

    বাঙলা আর ইংরেজি দুটোই পড়তে লিখতে জানেন এরকম কোনো সহৃদয় সুহৃদ যদি এই বিষয়গুলো ইংরেজিতে অনুবাদ করে অবাংলাভাষী বন্ধুদের মধ্যে এইসকল খবর পৌঁছে দেয়, মনে হয় যেন বড়ো ভালো হয়।

    কলকাতা
    ০৮/০৮/২০১৪
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ | ৯৩৯৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • pi | 132.163.47.154 (*) | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:১১68723
  • এই লেখাগুলো আরো আসুক।
  • anirban | 172.238.29.100 (*) | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:৫৬68724
  • ভালো লাগল।
  • dc | 213.187.246.23 (*) | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৫:১৫68725
  • "এবার কলকতা বইমেলায় একজন বন্ধু তাঁর পরিচিত ঝাড়সুগুড়ার কাছেপিঠে মাইনিংরত সুটকেসের পাসকিপার-পদস্থ ম্যানেজারবাবু বলেছেন যে এই সব আদিবাসীদের একদিন করে NGO গুলো বিস্কুট দিয়ে নাচায়, একদিন করে কোম্পানীগুলো।"

    যথার্থ :d
  • Atindriyo Chakrabarty | 24.99.6.15 (*) | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১০:১১68726
  • @piবন্ধু - থ্যাঙ্কুট। আসিবেক বটে!
    @anirbanবন্ধু - থ্যাঙ্কুট
    @dcবন্ধু - থ্যাঙ্কুট বললেই বিস্কুট। এই বিস্কুট নিয়ে যে কত কি। কাশ্মীরে নাকি কিছু অঞ্চলে বন্যাত্রাণে হেলিকপ্টার থেকে মানুষদের জন্য ডগ-বিস্কুট পড়েছিলো। শোনা কথা, তবে সেই দেশের এক বন্ধুর মুখেই। আর কোম্পানির বিস্কুট হোক আর NGOর, দিনের শেষে দুটোই তো ঐ কোম্পানির সুটকেসের CSR নামের খোপ-টা থেকেই বেরোয়! যে দিকে তাকাই, সে দিকেই বিস্কুট!

    3:-)
  • Atindriyo Chakrabarty | 24.99.6.15 (*) | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১০:২৮68727
  • corrigendum - তলায় ডেটটা ঘুমচোখে ০৮/০৮/২০১৪ লিখেছি, ঐটে হবে ০৮/০২/২০১৫
  • dc | 213.187.246.59 (*) | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১১:০৬68728
  • ঠিক বলেছেন, সবাই যে যার নিজের প্রয়োজনে বিস্কুট ছুঁড়ছে :d

    তবে একটা কথা, ডগ বিস্কুট খেতে মন্দ না। চায়ে ডুবিয়ে খেতে আমার ভালোই লাগে। (এর সাথে কাশ্মীরে বন্যাত্রানের কোন সম্পর্ক নেই, শুধু আপনি কথাটা তুললেন বলে বল্লাম)
  • !! | 59.207.215.54 (*) | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:১১68732
  • NGO এর নামে টাকা মারে যারা তারা কি সহজে অন্যকে না জেনেই ড্গ বিস্কুট খাওয়ার অপবাদ দেয়। যাই হোক আমি ২৫ বছর ধরে ঐ অঞ্চলের কথা জানি, আদিবাসীরা যে দুর্দশায় থাকেন , তাতে পুনর্বাসনে লাভ বই ক্ষতি নেই।
  • I | 192.66.63.232 (*) | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৩৮68733
  • তার সাথে জন্তু জানোয়ার গাছপালা পোকামাকড় বৃষ্টিমেঘ এদেরও যে পুনর্বাসন হবে , সে তো জানা কথাই। তবুও ব্যাগড়াবাদীরা.....
  • Atindriyo Chakrabarty | 24.99.129.205 (*) | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৭:৩৪68734
  • পুনরবাসনে বাল হয়। বস্তি এলাকায় রাজীব গান্ধী আবাস যোজনার ঘরগুলিতে জন্তু জানোয়ার গাছপালা পোকামাকড় বৃষ্টিমেঘ পড়বে বৈ কি। আর দুর্দশা শব্দটার মধ্যে ধ্বন্যাত্মক টেক্সটাত্মক সমস্তেই জিবচুকচুক শোনা যায়। ওর'ম করলে ডগবিস্কুট তো আসবেই হে!
  • a x | 138.249.1.198 (*) | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৭:৪০68735
  • দরকারী লেখা। ভালো লাগল।
  • !! | 59.207.215.54 (*) | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৯:২৬68729
  • বাজে লেখা -সুটকেশ বাবু নাম দেওয়া থেকেই বোঝা যায় কোন দিকে সাপোর্ট। ৮০০ জন্য লোককে পুনর্বাসন দিলে যদি অত আকরিক লোহা পাওয়া যায় তাতে অনেক বেশি লোকের উপকার। আমি ঔ অ্ঞ্চলে ছিলাম তাই জানি ওঁদের জীবনযাত্রা কত খারাপ। এদের ভাল পুনর্বাসন দিয়ে যদি কল কারখান করা যায় তাতে ব্যগড়াবাবুদের ছাড়া কারুর অসুবিধা হবে না।
  • Atindriyo Chakrabarty | 132.163.98.136 (*) | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১০:৩৭68730
  • ডগবিস্কুট খাওয়ার অভ্যেসটা দিকে দিকে বাড়ছে।
  • jyanagyan | 125.112.74.130 (*) | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১১:৩৯68731
  • কেউ NGO দের দেওয়া ডগ বিস্কুট খায় আর কেউ অন্য কারুর :-) ডেমোক্রেসি তে পসন্দ আপনা আপনা ।
  • প্রাক্টিকাল | 125.112.74.130 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:১৫68746
  • "তবে দিনের শেষে ওটাই আবার বলতে চাই - আপনি বাঁচলে বাপের নাম।" - একদম , আর যোগ করি সারভাইভাল অফ দা ফিটেস্ট ।
    " চেতনার স্তরেই কোথাও এই সেণ্ট্রিস্ট মডেলটা ক্রমে পরিহার করে চিন্তা ও চিন্তনকে আরো ব্রড-বেসড করা" ইত্যাদি পৃথিবীর কোন দেশে ভাবা হয় জানলে সুবিধা হত - সর্বত্র মেজরিটি-র স্বার্থ ই তো দেখা হয় - সে চীন সোভিয়েত হোক বা আমেরিকা । ইউটোপিয়া তে বাস করে লাভ নেই ওসব গান গল্পেই চলে ।
  • !! | 59.207.205.188 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৩৯68747
  • যে আদিবাসী দের সন্তান এখনই মারা যাচ্ছেন - জল জঙ্গল থাকা সত্ত্বেও , তাদের পুনর্বাসন দিলে ভাল হবে না -একমাত্র ব্যগাড়াবাদী বিদেশের পয়সা খাওয়া লোকই বলবে।
  • pi | 192.66.1.183 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৪৪68748
  • এই ব্যাগড়াবাদী বিদেশের পয়সা খাওয়া লোকগুলোকে যে আবার লোকজন খুবই সমর্থন করছে দেখা যাচ্ছে !
  • dc | 213.187.246.125 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৫৬68749
  • পাই, আপনি কি কোনভাবে দিল্লীতে আপএর জেতাকে মেধা পাটকার বা উদয়কুমারের প্রতি সমর্থন হিসেবে ধরে নিচ্ছেন? আমি ঠিক শিওর না, তাই জানতে চাইছি। আমি নিজেও দিল্লীতে আপের জয়ে বেশ খুশী হয়েছি, অথচ এই জয়ের সাথে পাটকার বা উদয়কুমার বা অন্য "ব্যাগড়াবাবু"দের কি রিলেশন একেবারেই বুঝতে পারছিনা। আর পাটকার আর উদয়কুমার নিজেরা ইলেকশনে দাঁড়িয়ে হেরে গেছেন, তাই আপের জয়ে ওনাদের কি কন্ট্রিবিউশন হলো তাও বুঝলাম না। এমনকি দিল্লীর প্রচারেও এইসব অ্যাক্টিভিস্ট এনজিওদের কোন কন্ট্রিবিউশন ছিল বলে জানিনা। দিল্লীর ইস্যুগুলো একেবারেই আলাদা ছিল।
  • dc | 213.187.246.125 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৫৭68750
  • বিদেশের পয়সা টয়্সা অবান্তর। দিশী পয়সা আর বিদেশের পয়সার আমার কাছে কোন ফারাক নেই।
  • pi | 192.66.1.183 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:০০68751
  • প্রচুর ব্যাগড়াবাদী এনজিও করা লোক আআপের মুখ। দেখাই যাচ্ছে, তাদের জন্য লোকে আআপের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়নি, যেমনটি আপনারা ক্লেইম করেছিলেন। মেধা পাটেকর কি উদয়কুমারকে সমর্থন করা দিল্লির লোক আআপের অ্যাক্টিভ সমর্থক, প্রচারক এরকমও জানি।
  • Atindriyo Chakrabarty | 24.99.227.22 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:০৭68753
  • দ্যাখেন, আপনি, আপনারা, আমি, আমরা সকলেই বেঁচে আছি, তরিবৎ আছি আর কম্প্যুটারের বা ফোনের সামনে বাঙলা ফণ্টে আদিবাসী উদ্ধার করছি। শুধু শুধু বুড়ো বাপকে নিয়ে টানাটানি ক্যানো?

    কোনো দেশে এসব হয় না, এগুলি মানুষের ভিতর হয়, কারণ 'দেশ', 'মহাদেশ', এইসব ম্যাপের মার্কাগুলি সায়েবদের করে যাওয়া, এবং রাষ্ট্রচেতনাও ইওরো-মডেলেরই অবদান। এই চিন্তাগুলো মানুষের ভিতরে হয়, বোধি-সত্ত্বা কিন্তু মানুষের ভিতরেই থাকে, দেশ, কাল স্বগুণে নির্বোধ, বোধ আসে যখন আমরা ভাবি, অথবা ভাবা প্র্যাক্টিস করি, অথবা জানি, অথবা জানা প্রাক্টিস করি, অথবা বুঝি, অথবা বোঝা প্র্যাক্টিস করি।

    আর কোনো দেশে হয় নি বলে এখানেও হবে না গোছের চিন্তাধারা ক্ষতিকারক। আমি 'দেশ' ব্যাপারটা বুঝি না, বুঝতে চাইও না, তবে এই ধরণের চিন্তার ফলেই কাছেপিঠের বেশ কিছু দেশ-দেশ ব্যাপার-গুলো মোটামুটি উঞ্ছবৃত্তি ছাড়া আর সব পরিসরেই পৃথিবীর সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর একটা বা কয়েকটা হিসেবে ধার্য্য হয়।
  • pi | 192.66.1.183 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:০৭68754
  • আআপের ভিশন ডকুমেন্টটা পড়েছেন ? সমর্থক বলছেন যখন ধরে নিচ্ছি পড়েছেন।
    এই অংশটা খেয়াল করেছেন ?
    Present economic policies victimizes farming, farmers and villages. This
    victimization is under several guises. Land from many villages is
    procured against the wishes of the owners and given to big industrialists
    and builders. Villagers who lose their land, become unemployed and
    keep lamenting to no avail. Recently several scams have come to light
    where nexus of leaders and industrialists bought land very cheaply from
    farmers in the name of development, got the land use changed and sold it
    for enormous profit.
    Aam Aadmi Party believes this practice should be stopped. No land
    should be acquired without the permission of the Gram Sabha of that
    village. Only the Gram Sabha will have the right to decide if any land can
    be sold and at what price and terms. The right to change the Land Use
    will rest only with the Gram Sabha or Mohalla Sabha. This will ensure
    that farmers and other poor people of the village will be able to have
    stake in development and progress

    ঃ)
  • শ্রী সদা | 126.75.65.125 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:১০68755
  • ইয়াপ। ব্যাগড়াবাবুদের কাজকম্মো অনেকসময়ই আমার তেমন লজিক্যাল লাগে না, কিন্তু এই বিদেশের পয়সা ইত্যাদি ফালতু যুক্তি।
    এবার ব্যাগড়াবাবুদের একটা অংশ আপ এর সমর্থক/প্রচারক/কর্মী - এতেও কী প্রমাণিত হয় বুঝলাম না। আপ আপাততঃ বিজেপিকে বাঁশ দিচ্ছে এই উল্লাসেই তো অনেকে সমর্থন করছেন। বেশ করছেন।

    জমি অধিগ্রহণ, উচ্ছেদ, পাহাড়-জঙ্গল-জলাভূমির বারোটা বাজিয়েই এতদিন উন্নয়ন হয়ে এসেছে, এই উন্নয়নের মডেলে ভবিষ্যতেও এটাই হবে। আমাদের উচিত অহেতুক বাগড়া না দিয়ে পরিবেশের যতটা সম্ভব কম ক্ষতি করে সেটা করা যায় সেটা দেখা এবং অবশ্যই ক্ষতিপূরণ/পূনর্বাসন ইত্যাদির ক্ষেত্রে ফেয়ার নেগোশিয়েশন নিশ্চিত করা।
  • Atindriyo Chakrabarty | 24.99.227.22 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:১০68756
  • 'যে আদিবাসী দের সন্তান এখনই মারা যাচ্ছেন - জল জঙ্গল থাকা সত্ত্বেও , তাদের পুনর্বাসন দিলে ভাল হবে' - এইটা বোধ হয় একমাত্র মাঝেমধ্যে কণ্ডাক্টেড ট্যুর মারফৎ আদিবাসী-অবসার্ভ করতে যাওয়া মধ্যবিত্ত সমাজসচেতন বাঙালীরাই বলবেন হয়তো। কি ভাগ্যিস আজ সন্ধ্যে বেলা 'আপ' টা হট নিউজ, নৈলে আলোচনার মোড় এতক্ষণে মদন মিত্রর দিকে ঘুর খেতো হয় তো।
  • dc | 213.187.246.125 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:১০68757
  • আপের থেকে মুখ ফেরানোর কথা আমি অন্তত বলিনি। উল্টে আমার মত ছিল আপকে আরেকবার চান্স দেওয়া হোক। আর আপের এই ইলেকশন ক্যাম্পেনের ইস্যু আর এনজিও অ্যাক্টিভিসমের ইস্যু, এগুলো একেবারেই আলাদা মনে হয়েছে। ইলেকশানে এনজিও ইস্যু আসেওনি। ধরুন আপের কোন ক্যান্ডিডেট আমার কাছে ভোট চাইতে এল, আমাকে বলল ভোটে জিতলে আমি করাপশন কমানোর চেষ্টা করব, বেটার সার্ভিস দেব - আমি স্বচ্ছন্দে সেই ক্যান্ডিডেটকে ভোট দিতে পারি। যে ইস্যু সামনেই নেই সেটা নিয়ে ভাবব কেন? দিল্লীর লোক যেসব ইস্যুতে ভোট দিয়েছে তার সাথে আপনি এনজিও অ্যাক্টিভিসম এক করে দিচ্ছেন কেন?এটাতো কিছুটা বিজেপি স্টাইল হয়ে গেল। বিজেপি জিতল উন্নয়ন ইস্যুতে, আর আরেসেস বললো তার মানে লোক হিন্দুত্ব চাইছে।
  • pi | 233.176.11.197 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:১৫68758
  • আর হ্যাঁ, কদিন আগে মোদী সরকারের যে ল্যান্ড অর্ডিন্যান্সের এত প্রশংসা করছিলেন, এই নির্বাচনেই আআপ ঘুরে ঘুরে তাকে ধুয়ে দিয়েছে। যোগেন্দ্র যাদভের লেখাগুলো পারলে পড়বেন।
  • dc | 213.109.107.237 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:১৭68736
  • আমার মনে হয় পুনর্বাসন যাতে ঠিকমতো হয় তার জন্য সুটকেসওলা আর সরকারওলা, এই দুপক্ষের ওপরেই চাপ তৈরী করা উচিত। মাত্র আটশো জন মানুষ, এনাদের প্রত্যেককে উপযুক্ত পরিমানে ক্ষতিপূরন দেওয়া উচিত। এরকমও করা যেতে পারে যে প্রত্যেকের জন্য একেকটা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে মোটা টাকার ফিক্সড ডিপোজিট করে দেওয়া হলো। এনজিওওলারা বেশী টাকা দেওয়ার জন্য, টাকাগুলো ব্যাংকে দেওয়ার জন্য, ওই আটশো জনকে টাকার ব্যবহার শেখানোর জন্য আন্দোলন করতে পারে। আর উপযুক্ত ক্ষতিপূরন দিয়ে আকরিক মাইনিং করতেও অসুবিধে নেই।
  • pi | 233.176.11.197 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:১৭68759
  • আআপের ভিশন ডকুমেন্টে যে জমিনীতির কথা লেখা, অধিকাংশ ব্যাগড়াবাদীদের সেটাই বক্তব্য।
  • pi | 233.176.11.197 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:১৯68760
  • এই যে। কিছু ব্যাগড়ার নমুনা।
    The Aam Admi Party (AAP) continued with public meetings against the ordinance amending the Right to Fair Compensation and Transparency in Land Acquisition, Rehabilitation and Resettlement (LARR) Act 2013 all over the country. The party's State units submitted memorandum to District Collectors with letters addressed to the Prime Minister opposing the ordinance's provisions in more than 200 districts all over the country, said party leaders.

    On January 4, AAP leader Arvind Kejriwal had held a “Village Dialogue” in Chhatarpur in Delhi saying 20 to 25 lakh people in Delhi's rural areas would be affected adversely by the ordinance. Similar meetings were held in Haryana, Rajasthan, Goa, Gujarat, Tamil Nadu, Kerala, Telangana, Madhya Pradesh on January 5, and more meetings are scheduled in Punjab on January 7 and later in the week in Andhra Pradesh.

    “We submitted memorandum to District Collectors in seven districts including Panchkula, Yamuna Nagar, Sonepat, Kurukshetra. We have constituted village teams to discuss the ordinance with farmers. BJP has left farmers' rights in a perpetual state of Emergency and will allow land to be acquired for even golf courses, private schools with this ordinance,” said Paramjeet Katyal, secretary, AAP Haryana.

    In Madhya Pradesh, meetings were held in 35 of 51 districts and over 100 party cadre were detained by the police in Khanwa district, said Alok Aggarwal, AAP convenor in MP.

    “The ordinance dilutes the retrospective clause which said that land will go back to the land owner if compensation has not been paid or acquisition is not complete even after five years. In Andhra, 200 Special Economic Zones (SEZs) have been notified since 2007 and thousands of acres of land have been allotted but no work has happened on it and these have become private land banks,” said Kiran Vissa, AAP State committee member in Andhra Pradesh. “A day after the ordinance, the Telugu Desam Party notified over 7,000 sq km as Capital Region, most of which lies in the Krishna Delta which is fertile and irrigated land. The 2013 Act had said that irrigated land will be acquired only as demonstrable last resort, but the ordinance has diluted this too,” he added.

    “Ëvery positive feature of the original Act (which was passed with BJP's active support) has been annulled. This Ordinance must be opposed by all those who respect democracy and who care for the farmers,” noted AAP leader Yogendra Yadav.

    “Finance Minister Arun Jaitley addressed live on media stating that the higher compensation to farmers after the changes in Land Acquisition Act will continue and the interest of farmers have been taken care of. However State Government of Haryana headed by BJP has illegally changed the 'Multiplication Factor for Rural Areas from 2 to 1 on 4-Dec-2014” thereby ensuring that the farmers of rural areas get a minimum of 50% less compensation,” noted the party in its statement.

    The ordinance exempted land acquisition for industrial corridors, defence including preparation and production, rural infrastructure, affordable housing, infrastructure and social infrastructure, including private health and educational institutions, from requirements of consent clause and Social Impact Assessment in which an expert group would check if land was really being acquired for a public purpose, if it was the minimum land required. It says “private entity” in public private projects includes “a proprietorship, partnership, company, corporation, non-profit organization or any other entity under any law for the time being in force.” It exempts these five categories of projects from the 2013 Act's requirement that if land remains unutilised for five years, it can be claimed back by the original land owner as well as the clause that multi-crop, irrigated land will be acquired only as a demonstratable last resort.

    এই ল্যান্ড অর্ডিন্যান্সকে সমর্থন করা নিয়ে আপনি আশা করি আপনার বক্তব্যে এখনো দাঁড়িয়ে আছেন।
  • dc | 213.187.246.125 (*) | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:২১68761
  • পাই বোধায় দুয়েকটা ভুল করছেন। আমি কোন পার্টিকে একেবারে সব ইস্যুতে সমর্থন করিনা, কারন কোন পার্টির সাথে সব বিষয়ে আমার মতের মিল হয়না। মতের মিল না হওয়াটাকেই আমি স্বাভাবিক বলে মনে করি।

    আপের ইমেজটা মেইনলি যেটা প্রোজেক্ট করা হয়, করাপশন কমাদে, মোর এফিসিয়েন্ট গভরনেন্স কমাবে, আর ডায়লগবাজি কমাবে। এগুলো আমি সমর্থন করি। তার মানে এই না যে আপের বিভিন্ন লিডার যা বলে বা আপের ম্যানিফেস্টোতে যা থাকে তার সবটাই সমর্থন করি। তার মানে এটাও না যে শুধু আপকেই ভোট দিয়ে যাব। যদি দেখি যে অন্য কোন পার্টি এসেছে যাদের সাথে আমার ভিউজ মিলে যাচ্ছে তো তাকেই ভোট দেব।

    এবারঃ

    Villagers who lose their land, become unemployed and
    keep lamenting to no avail. Recently several scams have come to light
    where nexus of leaders and industrialists bought land very cheaply from
    farmers in the name of development, got the land use changed and sold it
    for enormous profit.

    এই পয়েন্টে আপকে পুরো সমর্থন করি। আমি মনে করি জমি নিলে প্রকৃত ক্ষতিপূরন দিয়ে নিতে হবে। তার জন্য যে প্রোজেক্ট কস্ট বাড়বে, সেটা ফ্যাক্টর হিসেবে ধরতে হবে।

    Aam Aadmi Party believes this practice should be stopped. No land
    should be acquired without the permission of the Gram Sabha of that
    village. Only the Gram Sabha will have the right to decide if any land can
    be sold and at what price and terms. The right to change the Land Use
    will rest only with the Gram Sabha or Mohalla Sabha.

    একদম বিরোধীতা করি। আমি মনে করি বড়ো প্রোজেক্ট হলে একসাথে অনেকের লাভ। ইকনমিক লাভ তো আছেই। শুধু গ্রাম সভার হাতে এই অধিকার ছেড়ে দেওয়ার আমি বিরোধী।

    This will ensure
    that farmers and other poor people of the village will be able to have
    stake in development and progress

    সমর্থন করি। যাদের জমি নেওয়া হচ্ছে তাদের যেন ক্ষতিপূরন বা পুনর্বাসন দেওয়া হয় সেটা দেখা উচিত। তার মানে এই নয় যে তারা জমি দিতে না চাইলে নেওয়া যাবেনা।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট প্রতিক্রিয়া দিন