এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • আলমগীরের শেষ চিঠি

    dd লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ৩০ নভেম্বর ২০১৫ | ৮৭২ বার পঠিত
  • আলমগীরের শেষ চিঠি

    ঔরঙ্গজীবকে নিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশের অনেক ঐতিহাসিকেরা খুব স্পষ্ট দুটো শিবিরে বিভক্ত। খারাপ এবং ভালো। সাদা এবং কালো। আসলে একটা স্ট্যান্স অন্যটার প্রতিক্রিয়া।

    তাহলে সত্যিটা কি ? কোথাও একটা। যে জন আছে মাঝখানে। কিছুটা সাদা, অনেকটা কালো, আর কিছু ধুসর। জীবন যেরকম হয় আর কি। আমার আপনার মেজোমামা বা আপিসের বস - আদ্যন্ত খারাপ বা ভালো কেউ নয়। পাঁচমিশালী।

    সে সময়কার রাজা রাজরাদের মতন খুব অল্প বয়স থেকেই লড়ে যেতে হয়েছিলো ঔরঙ্গজীবকে । বাবা সাজাহান তার বাবা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অসফল বিদ্রোহ করেছিলেন। তৈমুর বংশে এ ঘটনা নতুন কিছু নয়। তো বাবার "অপরাধে" , ঔরঙ্গজীবকে তার ঠাকুর্দা জাহাঙ্গীরের কাছে অনেকটা যেনো "হস্টেজ' হিসাবেই বড় হতে হয়েছিলো। পিতৃ স্নেহ বঞ্চিত ঔরঙ্গজীবকে এই বঞ্চনা তাড়া করে বেড়াবে অনেক দিন।
    হিন্দুদের ক্ষেত্রে আইনটা খুব সোজা সাপটা। বড় ছেলে পাবে সিংহাসন। ধৃতরাষ্ট্রের ভুবন কেঁপে গেছিলো যখন তিনি জানতে পারলেন দুই ভাই'এর সন্তানদের মধ্যে যুধিষ্ঠির ই জ্যেষ্ঠতম। রামের দাবী নিয়ে ও কোনো সংশয় ছিলো না - কখনো। কিন্তু তৈমুর বংশে এমন কোনো আইন ছিলো না । সবাই জানতো বাবা মারা গেলে যোগ্যতম সন্তান (পড়ুন সবথেকে শক্তিশালী) হবে সিংহাসনের দাবীদার।

    সেই মতন তৈরী হচ্ছিলো চার ভাই। দারা, সুজা, ঔরঙ্গজীব আর মুরাদ। দেশের চার ভাগ চার ভাইকে বাঁটোয়ারা করে দিয়েছিলেন সাজাহান। জ্যেষ্ঠ সন্তান দারার প্রতি তার দুর্বলতাও কারুর অজানা ছিলো না।

    মাত্র সতেরো বছর বয়সেই বাবা সাজাহান তাকে দক্ষিনদেশের গভর্নর করে দিলেন। সে সময় দাক্ষিনাত্য বেশ শান্ত যায়গা। নিরুপদ্রবেই ছিলেন ঔরঙ্গজীব। কুড়ি বছর বয়সে বিয়ে ও হলো। কিন্তু একটা অভিমানের আগুন ছিলো তার বুকে, বাবা যে অনেক বেশী ভালোবাসেন দারাকে। সে তথ্য সবার ই জানা ছিলো।
    তার পঁচিশ বছর বয়সে বোন জাহানরা অগ্নিদগ্ধ হন। বেশ কিছুদিন খুব যমে মানুষে টানাটানি গেলো। সব ভাই ই আগ্রায় ছুটে এলেন - বাদ শুধু ঔরঙ্গজীব। তিনি এলেন ঘটনার এগারো দিন পরে। রেগে আগুন সাজাহান তাকে দাক্ষিনাত্যের গভরনরশীপ থেকে দুর করে দিলেন। পরে ঔরঙ্গজীব বলেছিলেন "দুর,দুর, বাবা আমায় কি স্যাক করবেন ? দারার প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে আমি নিজেই ছেড়ে দিয়েছি "।

    কিন্তু সাজাহান ঔরঙ্গজীবের সম্পর্ক, বা ভাই বোনের মধ্যে স্নেহ ভালাবাসার অভাব - এটা কিন্তু অনেক আগের থেকেই খুব পরিষ্কার ছিলো। বাবার সাথে সম্পর্ক আরো খারাপ হতে থাকে। পরের বছর সাজাহান সাত মাসের জন্য "বহিষ্কার" করে দিলেন তার তৃতীয় পুত্রকে। রাজ সভায় আসবার অনুমতি ছিলো না ঔরঙ্গজীবের।

    যা হোক, এর পরের বছর গুজরাতের শাসনকর্ত্তার পদ পান ঔরঙ্গজীব আর তার পর অকর্মন্য মদ্যপ কনিষ্ঠ পুত্র মুরাদকে সরিয়ে আফগানিস্তান অঞ্চলের দায়িত্ব ও তাকে দেন সাজাহান। অশান্ত অঞ্চলকে বশে আনেন যুদ্ধবিদ ঔরঙ্গজীব, এই সময়েই চারিদিকে লড়াই চলা কালীনই এক ভয়ানক যুদ্ধক্ষেত্রে অকম্পিত হৃদয়ে মাটীতে বসে নামাজ পড়বার পর তার ধর্মবীর হিসাবে খ্যাতি ও খুব হয়।
    ১৬৫৭ তে সাজাহান গুরুতর অসুস্থ হলে দারা সুকো আগে ভাগেই নিজেকে সম্রাট ঘোষনা করে ফেললেন। চার ভাইতে যুদ্ধ শুরু হলো। সুজা পালালো বর্মা দেশে - সেখানেই তার মৃত্যু হলো। যে মুরাদের সাহে হাত মিলিয়ে ঔরঙ্গজীব লড়াই করছেলেন তাকে এক অসতর্ক মুহুর্ত্তে বন্দী ও পরে হত্যা করেন ঔরঙ্গজীব। দারা বন্দী হলেন। প্রকাশ্য লাঞ্ছনার পর তার মুন্ডচ্ছেদ করা হলো - এতো সবাই জানেন। বৃদ্ধ সজাহান হলেন অন্তরীন। তার পাশে তখন শুধু জাহানরা।
    পথের কাঁটা সবাই দুর হলো। এবারে সাম্রাজ্য শুধু তার। ঐতিহাসিক লেনপুল লিখেছিলেন সেকালের ঐটাই রীতি। হয় সিংহাসনে বসো নয়তো নিহত হও। মাঝামাঝি একটা শান্তিপুর্ন সহাবস্তান সম্ভব ছিলো না। সুচ্যগ্র মেদিনী কেউ ছাড়ে নি। ইয়া তখত ইয়া তাবুত - অর্থাৎ হয় সিংহাসন নয় তো মৃত্যু – এই আওয়াজ তুলে চার ভাই ময়দানে নেমেছিলেন – সবাই জানতেন বেঁচে থাকবেন মাত্র একজনই।

    একটু মধ্য বয়সে এসে- ঔরঙ্গজেব ক্রমশঃ আরো বেশী করে ধর্মের দিকে ঝুঁকে পড়লেন। তার দ্বিতীয় বারের দাক্ষিনাত্যের গভরনরশীপের সময় থেকেই তিনি “রাজার চোখে সবাই সমান” নীতি থেকে সরে আসলেন। হিন্দুদের উপর বাড়তি কর বসানো – এইসবের শুরু তখন থেকেই। দেবদাসীদের নাচ বন্ধ করলেন ও প্রথম হিন্দু মন্দির ধ্বংশ এখানেই শুরু –যদিও একটা এজেন্ডা হিসাবে মন্দির ভাংতে আরো একটু দেরী হবে তার।
    তবে মন্দির ভাঙা , বিগ্রহের অবমাননা সব ক্ষেত্রেই (আবার লিখছি সব ক্ষেত্রেই) নিছক পরধর্ম বিদ্বেষ নয়। এটা একটা রাজনৈতিক দাদাগিরি। ঔরঙ্গজীবের ক্ষেত্রেও এটা ব্যতিক্রম নয়।
    দক্ষিনাত্যে সুদীর্ঘ ২৬ বছর লড়াই করেছেন কিন্তু সেখানকার দেবালয়গুলিকে মোটামুটি অক্ষতই রেখেছিলেন আলমগীর, তুলনায় উত্তর ভারতে দেবালয় ধ্বংশের সংখ্যা অনেক বেশী। কেননা দাক্ষিনাত্যের বিরোধী পক্ষ ছিলো সহধর্মী মুশলমান - তাই সেখানে মন্দির গুঁড়িয়ে দিয়ে কোনো প্রতিহিংসা চরিতার্থ হতো না, আর আলমগীর সেটা করেননো নি।

    দুটো প্রতিকী ঘটনা উল্লেখ করি , ১৫৭৯ সালে গোলকোন্ডার সেনাবাহীনির নেতৃত্ব ছিলো মুরহরি রাওএর হাতে। তিনি ছিলেন মারাঠী ব্রাহ্মন - কিন্তু যুদ্ধ জয়ের পর পরাজিত রাজা কৃষ্ণদেবরায়ের অধীষ্ট অহিবিলোম মন্দিরের বিগ্রহ ভেঙে দেন।

    অথবা যে কাহীনি আমরা বাঙালীরা গর্বের সাথে স্মরন করি, কাশ্মীরের রাজা ললিতাদিত্য পরিহাস কেশব বিগ্রহকে সাক্ষী রেখে গৌড়াধীশকে গুপ্তহত্যা করলে ,"প্রভুহত্যার প্রতিশোধকল্পে " কিছু গৌড়বাসী কাশ্মীর যান। সেখানে পরিহাস কেশবের মন্দির ঠিক না চিনতে পরে রজতময় রামস্বামীর "বিগ্রহ উৎপাটিত করিয়া ,রেনুরুপে পরিনত করিল ও তিল তিল করিয়া চতুর্দিকে নিক্ষেপ করিল"। অন্য পরে কা কথা, ঐতিহাসিক কল্হন পর্য্যন্ত লিখেছিলেন " "রামস্বামীর মন্দির অদ্যাপি বিগ্রহ শুন্য , কিন্তু গৌরীয়গনের যশোরাজিতে জগৎ পুর্ণ রহিয়াছে "।
    একে তো মন্দির ইত্যাদি সব সময়েই মনি মুক্তায় ভর্তি থাকতো, লুট করার এ তো একটা বড় কারন , আরেক কারন একশো ভাগ রাজনৈতিক, সেখানে ধর্মের সাথে কোনো যোগাযোগ নেই মন্দির বা বিগ্রহ ধ্বংশের। তুর্কী সৈন্যরা ধেয়ে আসছে শুনে খাজুরাহোর মন্দির পরিত্যক্ত করে চান্ডোলা বংশের রাজারা চলে গেলেন, কোনো রাজনৈতিক ফায়দা নেই বলে তুর্কী সেনরাও খাজুরাহোর মন্দির অক্ষত রেখে দিয়েছিলো।

    রিচার্ড ইটন সাহেব দেখিয়েছেন গোটা দাক্ষিনাত্য জুড়েই রাজ, রাজেন্দ্র, চোলা, পল্লবী বংশের রাজারা একে অন্যের মন্দির ভেঙেছেন আর বিগ্রহ লুট করেছেন ।

    ঔরঙ্গজেব হিন্দু মন্দিরকে জমি ও অর্থ সাহায্য করেছেন এমন দলিল ও পাওয়া যায়। তবু শেষ কথা এই যে, সব ক্ষেত্রেই ঔরঙ্গজীবের আচরন শুধু রাজনীতি দিয়ে সমাধান করা যায় না। কাশী ও মথুরার মন্দির অবমাননা নেহাৎ ই পরধর্মসহিষ্ণুতার অভাব। সেটা মানতে কোনো বাধা নেই।

    যেহেতু ঔরঙ্গজেবের পরধর্মবিদ্বেষ বর্তমান রাজনীতির সাথেও জড়িয়ে পরে তাই স্মরন করা যায় রমেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কথা। “ভারতের ইতিহাস রচনা প্রনালী” বইতে উনি লিখেছিলেন ঔরঙ্গজেবকে ,শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারনে উদার ও সহিষ্ণু বলে আঁকবার যে মিথ্যাচার চলছে সেটা যেমন বর্জনীয় তেমন ই তাকে শুধু হিন্দুবিদ্বেষী বলে দেখানোর একমাত্রিক অপচেষ্টাও দায়িত্বহীন অপলেখন মাত্র।
    আরো মনে করুন ব্রিটিশ রাষ্ট্রমন্ত্রী জর্জ হ্যামিলটন যা বলেছিলেন তৎকালীন গভরনর জেনারেল লর্ড কার্জনকে ‘পাঠ্য বই গুলি এমন ভাবে রচনা করা উচিৎ যাতে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ আরো বেড়ে যায়।’ লর্ড ডাফেরিনকেও বলা হয়েছিলো পাঠ্য পুস্তকের উপর নজর রাখতে – যাতে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিবাদের আগুন জ্বালিয়ে রাখা যায়। প্রায় তিনশো বছরের পুরোনো ইতিহাস তাই খুব পরিকল্পিত ভাবেই অস্পষ্ট।

    আসলে হিন্দু মুসলিম সম্পর্কের সমীকরন খুব সরল ছিলো না…। জ্যামিতির সহজ সমীকরন দিয়ে সেটা বোঝা সম্ভব নয়। শতকরা হিসাবে শাজাহানের মন্ত্রী সভায় যত হিন্দু ছিলেন ,তার থেকে বেশী ছিলেন ঔরঙ্গজীবের সভায়। একসময় তার বারোজন প্রধান মন্ত্রীর মধ্যে এগারো জনই ছিলেন হিন্দু। এমন কি আফঘানিস্তানের মতন মুসলিম প্রধান প্রদেশেও।
    সেনাবাহীনির অধিনায়ক ছিলেন রাজপুত মান সিং।(তুলনীয় শিবাজীর সেনাবাহিনীতে নিয়োজিত মুস্লিম আফগান মার্সেনারীর দল)।

    প্রতি বছরেই রাজ্যাভিষেকের দিন প্রোমোশনের লিস্ট বার হতো। তাতেও প্রতি বছরই থাকতো হিন্দুদের নাম। শিবাজীর ছেলে শম্ভাজী, শিবাজীর কাকা ও তার ছেলেরা ,ঠাঁই পেয়েছিলেন এই তালিকায়। শম্ভাজী বিদ্রোহ শুরু করলে তার সাথী হন বিজাপুরের মুস্লিম নবাব। আসলে এটাই সত্য। তখনকার সমাজে এটাই প্রচলিত – দুই ধর্মের মানুষ একই সাথে সংঘাত ও সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে চলতো। একমাত্রিক পরিচয় কারোরই ছিলো না।
    হিন্দু থেকে মুসলিম হলে রাজসভায় আখেরে লাভ হতো। কিন্তু সেটাই একমার সর্ত্ত ছিলো না । ধর্মান্তরিত হলে শাল, দোশালা ও নানান উপহার মিলতো, কিন্তু ঔরঙ্গজীবের বিরুদ্ধে,গায়ের জোর খাটিয়ে ধর্মান্তরিত করার অভিজোগ খুব জোর গলায় কেউ তোলেনি কখনো। সর্বান্তঃকরনে চাইতেন এক অখন্ড মুসলিম দেশের সম্রাট হবেন – কিন্তু তরোয়াল দেখিয়ে কাউকে মুসলিম করেন নি। জিজিয়া কর বসিয়েছেন, হিন্দু ব্যবসায়ীদের উপর ট্যাক্স বসিয়েছেন ,লাল কেল্লার সামনে সেই নিয়ে বিক্ষোভ উঠলে হাতি দিয়ে সেই আন্দোলন ভেঙে দিয়েছেন – এ সবই তর্কাতীত সত্য। তার সাথে সাথে আমলা, সেনাপতি হিসাবে হিন্দুদের রমরমাও কম ছিলো না।

    হিন্দুধর্ম বিদ্বেষী অউরঙ্গজীব তাই কখনই হিটলার হয়ে ওঠেন নি। “ফাইনাল সলিউশন” তার এজেন্ডায় ছিলো না।
    আসলে ঔরঙ্গজেবকে বুঝতে হলে চিনতে হবে তার দাদা, তার পরমশত্রু দারা শুকোকে।

    ………………………………………

    কেমন মানুষ ছিলেন দারা সুখো ? আকবরের পরে সব থেকে বড় ব্যক্তিত্ব যিনি শুধু ইসলামিক নয়,বরং সব ধর্মের হিন্দুস্তানের সম্রাট হবার চেষ্টা করেছিলেন। দু জনেই বুঝতেন আর ভাবতেন কী ভাবে হিন্দু ও ইসলাম ধর্মকে এক খাতে বইয়ে দেওয়া যায়। তিনি বই লিখলেন ‘মজমা উল বাহ্রিন’ অর্থাৎ মহাসগরদের মিলন। তুলনা করুন তার সাথে ঔরঙ্গজীবের ৩৩ খন্ডে “সম্পাদনা” করা ‘ফতোয়া এ আলমগিরি - শরিয়তী আইনের উপর টীকা। ছবি আঁকা, ক্যালিগ্রাফি, দর্শন - এ সব কিছুতেই উৎসাহী দারা, পার্সী ভাষায় অনুবাদ করছেন উপনিষদের – আর অন্য মেরুতে ঔরঙ্গজেবব , যিনি সব চারুকলা ও সংগীতের বিরোধী ছিলেন। এ যেন শুধু সিংহাসন নিয়ে দুই ভাইএর লড়াই ই নয় - অসুখ যেন আরো গভীরে। দুটি পথের লড়াই।

    ঐতিহাসিক এব্রাহাম এরালী বলেছিলেন “আকবর ছিলেন এক সম্রাট ,আর ঘটনাচক্রে তিনি ছিলেন সর্ব ধর্ম সমন্বয়ে গাঢ় অনুরাগী, তুলনায় দারা সুকো ছিলেন এক সর্ব ধর্ম সমন্বয়ী , যুবরাজ হয়ে তাঁর জন্মগ্রহনটা নেহাৎই ঘটনাচক্র “। দারা উপনিষদের অনুবাদ করছেন ,অন্য ধর্ম নিয়ে আলোচোনা করছেন। এই নেশাতেই বুঁদ হয়ে থাকতেন তিনি। বাবার প্রিয় সন্তান। তাকে ভালোবাসতেন নগরের লোকেরাও।

    সেই শৈশব থেকেই ঔরঙ্গজেব ছিলেন একা, বড় একা। বাবা তাকে পছন্দ করতেন না। বার বার তাকে অপমান করেছেন, তিরষ্কার করেছেন। অনুযোগ করেছেন শুধু রাজস্বের ব্যেপারেই কারচুপি নয় , আমের বাগানের সেরা আমের ফসল নিজের জন্য রেখে বাবাকে দিয়েছেন বাজে ফলগুলি !! দ্বিতীয়বার দাক্ষিনাত্যের গভর্নর হিসাবে ঔরঙ্গজীব গোলকোন্ডা আর বিজাপুর – এই দুই শিয়া রাজ্যকে প্রায় হারিয়ে দিয়েছিলেন – কিন্তু ঠিক জিতে নেবার মুহুর্ত্তেই সাজাহানের নির্দেশ আসে যুদ্ধ বন্ধ করবার। সবাই জানতো – ঔরঙ্গজেব ও – যে এই নির্দেশ এসেছিলো দারাশুকোর পরামর্শেই। যখন দুই ভাই সমরাঙ্গনে মুখোমুখী তখন সাজাহান একশো ভাগই দারার সমর্থক। এ সেই যুদ্ধ যেখানে মাত্র একজনই বেঁচে থাকবে। এ কথা জানিতে তুমি ভারত ঈশ্বর সাজাহান। কিন্তু তুমি ছিলে দারার পাশে।

    কী ভয়ানক ছিলো এ লড়াই সেটা বোঝা যায় যখন দারার জেষ্ঠ্য পুত্র সুলেইমান লড়াইতে হেরে গিয়ে পালালেন গাঢ়োয়ালে । এক বছর পর তাকে বন্দী করে আনা হোলো । কাকা ঔরঙ্গজেবের হাতে তার মৃত্যু অনিবার্য্য , সুলেইমান সেটা জানতেন । ঐ তরুন, বারবার অনুনয় করেছিলেন , তকে যেনো সরাসরি মেরে ফেলা হয় । সবথেকে অসম্মানের মৃত্যু , জোর করে ‘পৌস্ত” খাইয়ে ( আফিমের এক সরবৎ, কিছুদিন খেলেই মানুষে সম্পুর্ন জড়বুদ্ধি পিন্ডে পরিনত হয়। বড় অপমানের ,বড় দুঃখের সেই মৃত্যু)।ঔরঙ্গজেব আশ্বাস দিয়েছিলেন তার তরুন ভাইপোকে – কিন্তু তিনি কথা রাখেন নি। বন্দী করবার পর ঐ ভাবেই জোর করে পৌস্ত খাইয়ে এক বোধ বুদ্ধিহীন জড়দ্গবে পরিনত করে তাকে হত্যা করেছিলেন ঔরঙ্গজীব। নৃসংশ ? নিশ্চয়ি। কিন্তু মুখোমুখী লড়াইতে যখন নেমেছিলেন দুইজনে – দুজনেই জানতেন । বেঁচে ফিরবেন একজন।

    ভীম একেক করে তার একশো ভাইকেই মেরেছিলেন, দুঃশাসনের রক্তপান করে উল্লাসে বলেছিলেন “পৃথিবীর সব থেকে স্বাদু পানীয় আজ পান করলাম “।দুর্যোধনের এক ভাই , ধার্মিক বিকর্ণ, যিনি বরাবর পান্ডবদের সমর্থন করেছিলেন – তিনি ও রেহাই পান নি । তাকে হত্যা করে ভীম বিলাপ করেছিলেন , অনুতাপ করেছিলেন - কিন্তু বিকর্ণও বেঁচে ফেরেন নি। এটাই ক্ষত্রধর্ম। তাই বন্দী করে দারা শুকোকে পায়ে বেড়ী পরিয়ে হাতির পিঠে চড়িয়ে ঘুড়িয়ে ছিলেন দিল্লী নগরীর রাজপথে। নগরীর লোকে যত হায় হায় করেছিলেন সেটা ঔরঙ্গজীবকে আরো ক্রুদ্ধ করেছিলো সন্দেহ নেই।
    বিজিত সাজাহনকে প্রানে মারেন নি ঔরঙ্গজীব। কিন্তু আগ্রা দুর্গে যতদিন বন্দী হয়ে বেঁচে ছিলেন – দীর্ঘ আট বছর , ঔরঙ্গজেব আর তার বাবার মুখদর্শন করেন নি। এমন কি আগ্রা শহরেও পদার্পন করেনি নি। সাজাহান মারা জাবার পরেও তার কোনো চিত্ত বৈকল্য ঘটে নি। ধর্ম মেনে কোনো শেষকৃত্যেও অংশগ্রহন করেন নি ঔরঙ্গজেব।
    বোনেদের মধ্যে রুপসী, বিদুষী জাহান আরা প্রথম থেকেই ঔরঙ্গজীবের বিরোধী ছিলেন, আর অসুন্দরী সাদামাটা রোশোনারা কোনো পক্ষেই ছিলেন না। পরে অবশ্য রোশোনারা খুবই ঔরঙ্গজেবের কাছের মানুষ হবার চেষ্টা করেছিলেন। তবু তিনিও বাঁচতে পারেন নি , মানুচ্চি লিখেছিলেন পরে ঔরঙ্গজেব, বিষ খাইয়ে রোশেনারাকে মেরে ফেলেন – তবে সেটার প্রামান্যতা নিয়ে সংশয় আছে।

    তার সারা জীবনের সব থেকে বড় শত্রু ছিলো দারা শুকো। মৃত্যুর পরেও যার জনপ্রিয়তা নিশ্চয়ি আউরঙ্গজীবকে তাড়া করে বেড়াতো। জানতেন এই ভাইয়ের জন্যই তিনি পিতৃস্নেহ থেকে বঁচিত ছিলেন , সারা জীবন। প্রবল অভিমানে মৃত্যুর পরেও বাবাকে ক্ষমা করেন নি। প্রিয় বোনও রইলেন তার থেকে দুরে দুরে।

    অন্যান্য মুঘল সম্রাট ,বিশেষতঃ বাবা সাজাহানের যে স্থাপত্যের নমুনা রেখে গেছিলেন , ঐ পথে পা বাড়ান নি উনি। সামান্য কয়েকটি মসজিদ গড়েছেন – তেমন উল্লেখযোগ্য কোনাটাই নয়।

    বাদশাহী প্রতিকৃতিতে দেখি বৃদ্ধ আউরঙ্গজেব, মাটীর উপর আসনে লুটিয়ে প্রার্থনা করছেন। শুষ্ক চোখ, ভাঙ্গা গাল। শেষ বয়সে স্বেচ্ছায় বেছে নিয়েছিলেন দরিদ্রের জীবন। শেষ জীবনে অবসর সময়ে কোরানের প্রতিলিপি লিখেছেন, হজ যাত্রীদের জন্য নামাজের টুপী সেলাই করে বিক্রী করেছেন – চেষ্টা করেছেন শুধু সেই অর্থে নিজের সামান্য খরচা চালাতেন।কিন্তু তার সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ছিলো।

    কাউকে ভালোবাসেন নি। নিজের ছেলেমেয়েদের সাথেও সম্পর্ক গড়ে উঠলো কই ?

    জেষ্ঠ্য পুত্র সুলতানকে মাত্র একুশ বছর বয়সেই জেলে পাঠান। ষোলো বছর বন্দী থেকে ৩৭ বছর বয়্সে মারা যান সুলতান – ঔরন্গ্জীবের প্রথম সন্তান।

    দ্বিতীয় পুত্র মুয়াজ্জাম তৈরী ছেলে। জালিয়াতির অভিযোগে তাকে আট বছর বন্দী রাখেন আলমগীর। যা হোক , এই ছেলেই পরে ,বাবার মৃত্যু হলে , হিন্দুস্তানের সিংহাসনে বসেন – বাহাদুর শাহ নাম নিয়ে।

    তার চতুর্থ পুত্র আকবর ছিলো ঔরঙ্গজেবের প্রিয় সন্তান। কিছুটা ভালোবাসা ঔরঙ্গজেব তার জন্যই তুলে রেখেছিলেন। কিন্তু শিবাজীর ছেলে শম্ভাজীর সাথে হাত মিলিয়ে বাবার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করেন এই আকবর। যুদ্ধে হেরে পালিয়ে যান পারস্যে – সেখানেই মৃত্যু।

    বিদূষী কন্যা জেব উন্নিসা , এই পিতৃদ্রোহী ভাই আকবরের প্রতি সহানুভুতিশীল ছিলেন – এই অপরাধে তার জীবনের শেষ একুশ বছর এক দ্বীপে বন্দী হয়ে থাকেন।
    এই স্নেহ ভালোবাসাহীন মৃত্যুপুরীতে কাকে শাসন করতে তুমি আলমগীর ?

    তার মৃত্যুর পর মুঘল সাম্রাজ্য আর টেঁকে নি। নব্বই বছর ধরে তেরো চোদ্দোবার রাজা বদল করে অবশেষে বৃটীশ রাজের কাছে আত্মসমর্পন করে মুঘল সাম্রায্য।

    চরিদিকেই বিদ্রোহের আগুন – শিখ, মারাঠা, দক্ষিনের শিয়া নবাবেরা। ঈলাহী যুদ্ধের আয়োজন – প্রায় একটা পুরো শহর চলতো তার সাথে।প্রায় তিরিশ বর্গমাইলের অস্থায়ী তাঁবুর শহর চলতো তার সাথে – যুদ্ধক্ষেত্রে। পঞ্চাশ হাজার উট, তিন হাজার হাতী, পাঁচ লক্ষ লোক । তার কঠোর ধর্মনীতি , সারা ভারতবর্ষকে বিদ্রোহী করে ত্রুলেছিলো। বিরামহীন যুদ্ধে তামাম হিন্দুস্থান বিক্ষত, রাজ ভান্ডার নিঃস্ব।

    প্রায় পঞ্চাশ বছরের রাজত্বে শুধুই শত্রু বেড়ে চলেছে। সেষ পঁচিশ ছাব্বিশ বছর শুধুই যুদ্ধক্ষেত্রে। সেই যুদ্ধ যতো না রক্তক্ষয়ী ,তরো চেয়ে বেশী তারো চেয়ে বেশী ইলাহী। প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ যেতো যুদ্ধে। অনুমান করত্রে পারি অশিতীপর বৃদ্ধ বড় ক্লান্ত। তার চারিদিকে জীবনের সফেন সমুদ্রে তিনি এক হাল ভাঙা নাবিক। প্রিয় উত্তরাধিকারী কেউ নেই। অলস, ইন্দ্রিয়াসক্ত বাহাদুর শহ দুপুরে বেলা বরোটার আগে নাকি ঘুম থেকে উঠতেই পারতেন না। আর কেউ নেই তার পাশে।
    সারাজীবন, দীর্ঘ জীবন শুধু লড়াই করে যেতে হয়েছে তাকে দারা শুকোর সাথে। সেই দীর্ঘদেহী দারা, লোহার জিন্জির পড়ে হাতীর পিঠে বসে,গায়ে পড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শতছিন্ন ভিখারীর পোষাক, হাতীর হাওদায় নেই রাজছত্র।পিছনে বসে খোলা কৃপান হাতে জহ্লাদ।

    রাজপ্রাসাদে অন্তঃপুরে, নগরীর পথে সবাই দেখছে পরাজিত অবমানিত বন্দীকে।

    ঐতিহাসিক মানুচ্চি দিয়েছেন সেই মর্মস্পর্শী বিবরন। দিল্লীবাসীদের হাহাকারে যত না সম্মানিত হয়েছেন দারা , তরো চেয়ে বেশী অপমানিত হয়েছেন আলমগীর। বোধহয় সারা জীবন জ্বললেন সেই আগুনে, আর বার বার দুনিয়াকে দেখাতে চাইলেন আমি দারা শুকোর মতন নই। আমি অনন্য, স্বেচ্ছায় বেছে নিয়েছি সেই পথ যেটি দারার হেঁটে চলা পথের থেকে সবথেকে দূরে। শাজাহানকে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন “দারা শুধু আমার শত্রু নয়, সে ছিলো ইসলামের শত্রু”। এই দারা যিনি বলেছিলেন “স্বর্গ হচ্ছে সেই স্থান যেখানে কোনো মুল্লা নেই’।গুঁড়িয়ে দেওয়া মন্দিরের মাঝে কি তাই আলমগীর খুঁজে পেয়েছেলেন দারার উপর তার অন্তিম প্রতিশোধ ?
    আত্মীয় স্বজন হীন, নিরবান্ধব পুরীতে তার ভালোবাসা পাওয়ার বা দেবার কেউ নেই। প্রায় নব্বই বছর বয়সে মার যাবার আগে লিখলেন তার শেষ চিঠি, তার ইচ্ছাপত্র।

    “একাকী এসেছি এই দুনিয়ায় আমি এক অচেনা আগুন্তুক, একাকীই চলে যাবো অপরিচিত আগন্তুক হয়েই।”আলমগীর লিখে গেলেন ভবিষ্যতের উদ্দেশ্যে “ জানি না আমি কে ? কী রয়েছে লেখা আমার কপালে ? “ তিনি লিখলেন। “বড় পাপ করেছি। কী শাস্তি রয়েছে আমার জন্য তা অমার জানা নেই।’
    “আমার নাতির জন্য রইলো আমার শেষ প্রার্থনা”হঠাৎ জেনো উঁকি দিলো এক স্নেহের ভিখারী। “আমি পারি নি আমার সাম্রাজ্যকে রক্ষা করতে।”

    তিনি কি অনুভব করেছিলেন দারা শুকোর প্রতিশোধ? ছিন্ন মস্তকের শেষ হাসি ? যে প্রেতাত্মার সাথে আজীবন লড়ে গেলেন ,বিজয়ী হয়ে আলমগীর হয়ে – পারলেন কি বিজয় মুকুট মাথায় পড়তে ?

    ***********************************************************
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ৩০ নভেম্বর ২০১৫ | ৮৭২ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    চম - dd
    আরও পড়ুন
    ও শানওয়ালা - dd
    আরও পড়ুন
    দ্রোণ পর্ব - dd
    আরও পড়ুন
    কর্ণসংহার - dd
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Atoz | 161.141.84.176 (*) | ৩০ নভেম্বর ২০১৫ ০৭:৫৭67054
  • ভালো লাগলো।

    দারাশুকোর ব্যাপারে একটা প্রশ্ন মাঝে মাঝে আমার কেবলই মনে হয়, উনি রাজ্যশাসন ও পরিচালনার ব্যাপারে কেমন ছিলেন? ঐ যে যখন গভর্ণর ছিলেন, তখন?
    আর যুদ্ধ পরিচালনার ব্যাপারে? এত সমর্থক, স্বয়ং সাজাহানের সাহায্য, নির্ঘাৎ ফান্ডিং ও- সব পেয়েও ইনি যুদ্ধে জিততে পারলেন না কেন?
  • Juthachyuta | 55.124.7.253 (*) | ৩০ নভেম্বর ২০১৫ ১০:২৭67055
  • খুব ই মর্মস্পর্শী ভাবে লেখা কিন্তু আরো একটু বিশদ হলে ভালো হত মনে হয়। যাই হোক সুন্দর।
  • PM | 37.97.244.255 (*) | ০১ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:১৭67056
  • কি লেখার হাত!!!!
  • b | 135.20.82.164 (*) | ০১ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:২৯67057
  • ডিডিদা, কিংচিৎ অগোছালো লাগলো।
  • d | 144.159.168.72 (*) | ০১ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:৫৮67058
  • হুঁ খানিক অগোছালো।
    তবে চারিদিকে এই প্রচন্ড পোলারাইজেশানের মধ্যে এই কথাগুলো খুব দরকারী।
    আরো একটু বড় করে হলে আরো ভাল লাগত ডিডি।
  • san | 11.39.33.105 (*) | ০১ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৫:২২67059
  • @এতোজ - শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় এর 'শাহজাদা দারাশুকো' মনে পড়ছে। সেখানে দারাশুকো সম্পর্কে - মানুষ হিসেবে খুব উঁচুদরের হলেও শাসক হিসেবে খুব কমপিটেন্ট নন - এরকম ইঙ্গিত দেওয়া। কবি , ভাবুক , দার্শনিক। ইমপ্র্যাকটিকাল , বাস্তববুদ্ধি কম। এবং তার পরেও যুবরাজ হিসেবে সম্রাট পিতার চোখের মণি। আওরঙ্গজেব তুলনায় দক্ষ শাসক , প্রতিটি জমি লড়ে জিতেছেন কিন্তু পিতার আনুকূল্য পাননি একেবারেই।
  • hu | 140.160.143.220 (*) | ০১ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৭:১৫67062
  • ভালো লাগল।
  • Atoz | 161.141.84.176 (*) | ০১ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৭:২৯67063
  • স্যান, যে এত লড়ে লড়ে নিজের জায়্গা নিয়েছে, তাকে একটা জায়্গায় স্যালুট দিতেই হয়।
    দারাশুকোর তো যা মনে হয় অনেক আগেই ফকীরী নিয়ে বেরিয়ে পড়া উচিত ছিল, ভদ্রলোক বেঁচে যেতেন, আমরাও অনেক অনেক মরমীয়া লেখা টেখা পেতাম।
    যিনি অন্তরে কবি ও সাধক, তাঁর কি বসে বসে অ্যাডমিনের কাজ করা, যুদ্ধের কূটকচালি সামলানো, প্রাসাদের নানা ষড়যন্ত্র রাদ্দিন সামলানো পোষায়?

    (হিন্দু রাজবংশেও কিন্তু বড় ছেলে সন্ন্যাস নিয়ে চলে গেছে, এরকম দেখা যায়। কাশীরাজ অলর্কের দাদারা সব সন্ন্যাস নিয়ে চলে গেলেন তো! সেইজন্য তো অলর্ক রাজা হলেন। )
  • de | 69.185.236.51 (*) | ০১ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৯:৫৮67060
  • সুন্দর! খুবই সময়োপযোগী -
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 212.78.234.106 (*) | ০১ ডিসেম্বর ২০১৫ ১০:৩৮67061
  • খুব তথ্যপূর্ণ বিষয় ! পড়তে খুব উৎসাহ জাগে ! - কেন জানিনা - অউরংজেব সম্বন্ধে আমাদের একটু অন্য ধারনা ছিল নাটক দেখে !

    আমিও আগে পড়েছিলাম - অউরংজেব খুব ধর্মান্ধ ছিল না । কিন্তু নিজে খুব ধার্মিক ছিল ! - কোরান কপি করে সেই পয়সায় নিজের ভরন পোষণ চালাত ! - রাজকোষ থেকে কোনও পয়সা নিজের স্বার্থে ব্যয় করত না !

    যাই হোক, লেখাটা খুবই ভালো !

    মনোজ
  • b | 135.20.82.164 (*) | ০২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:০৫67064
  • ফকিরি নিলেও মরতেন। কেউ না কেউ মেরে দিতো।
  • saikat | 190.215.76.244 (*) | ০২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৬:২০67065
  • যদুনাথ সরকারের বই থেকে, আওরঙ্গজেব সম্বন্ধেঃ

    The ruler was free from vice, stupidity and sloth. His intellectual keenness was proverbial, and at the same time he took to the business of governing with all the ardour which men usually display in the pursuit of pleasure.In industry and attention to public affairs he could not be surpassed by any clerk. His patience and perseverence were as remarkable as his love of discipline and order. In private life he was simple and abstemious like a hermit. He faced the privations of a campaign or a forced march as uncomplainingly as the most seasoned private.No terror could daunt his heart, no weakness or pity melt it. Of the wisdom of the ancients which can be gathered from ethical books, he was a master. He had, besides, undergone a long and successful probation in war and diplomacy in his gather's reign.

    And yet the result of fifty years' rule by such a soverign was failure and chaos !

    আজকেই বইটা হাতে এল, আওরঙ্গজেবকে নিয়ে অরিজিনাল পাঁচ ভল্যুমের বইটা নয়, সংক্ষেপিত সংস্করণ, যদুনাথ সরকারের নিজেরই করা।
  • Atoz | 161.141.84.176 (*) | ০২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৬:৩৬67066
  • যদুনাথ্কথিত আওরঙ্গজেবকে যেন এলিয়েন- টাইপ লাগছে, অনেকটা "ভালকান"দের মতন, যারা যুক্তির দ্বারা পরিচালিত ,আবেগকে টোটালি সাপ্রেস করে। সমস্ত রকম ব্যক্তিগত দুর্বলতা পরিত্যাজ্য তাদের কাছে, কতগুলো কোড অব কন্ডাক্ট মেনে চলে। প্রচন্ড স্ট্রিক্ট, অনেকেই প্রচন্ড মেধাবী, যান্ত্রিক দক্ষতায় কাজ করে।
    কিন্তু শেষ পর্যন্ত মহা মুশকিল হয়ে যায়, ভালো ভালো আবেগ(যেমন কিনা মায়ামমতা, করুণা, এমপ্যাথি ইত্যাদি ) ছাড়া অনেক সময় প্রচন্ড গন্ডগোল হয়ে যায়, শুধু যুক্তি আর গণিত দিয়ে কাজ করতে গেলে এমন সব সিদ্ধান্ত বেরোয়, যা কিনা ডিসাস্ট্রাস। অপরদিকে এইসব করুণা মমতা ভালোবাসা যাদের আছে, সেই হিউম্যানদের আবার অন্য ঝামেলা, এগুলো এমনি বেছে বেছে ভালো ভালো থাকে না, এগুলোর সঙ্গে নিষ্ঠুরতা, ঘৃণা, প্রতারণাপ্রবৃত্তি এইসব বিস্তর বাজে জিনিস থাকে। তাই হিউম্যানে ভালকানে মিলেমিশে কাজ করে দুই দিক ঠ্যাকনা দেওয়া হয়।
    ঃ-)
  • Atoz | 161.141.84.176 (*) | ০২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৬:৪৪67067
  • @b,
    ভালো করে নোটিশ দিয়ে সমাজ সাক্ষী রেখে উত্তরাধিকার ছেড়ে দিয়ে ফকিরি নিয়ে আশ্রমে টাশ্রমে চলে গেলে হয়তো বেঁচে যেতেন দারা। তবে অনিশ্চয়তা তখনও থাকতো, সে আর কবেই বা না থাকে?

    কিন্তু মনে হয় মুশকিল অন্যত্র হতো, সাজাহান হার্টফেল করতেন দারার ফকিরি নেবার প্রস্তাব শোনামাত্র। আর তখন আমীর ওমরাহ জাহানারা সব মিলে ধরে বেঁধে জোরজার করে তখতে বসিয়ে দিতো বেচারা দারাকে।
  • hu | 140.160.143.220 (*) | ০২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৬:৫৮67068
  • শ্যামল গঙ্গোপাধ্যয়ের "শাহাজাদা দারাশুকো"তে যদ্দুর মনে পড়ে দারাকে বেশ প্রেমিক স্বামী হিসেবেই দেখানো হয়েছে। বউ নিয়ে ফকিরি নেওয়া যায় কিনা কে জানে! আর নিলেও উত্তরাধিকার জন্মানোর সম্ভাবনা থেকে যায়। এবং সেক্ষেত্রে কোতল অনিবার্য। সাধে কি গুপি গেয়েছিল - "আহা রাজা, বাহা রাজা, বেচারা রাজার বড় দুখ"।
  • ranjan roy | 24.99.148.54 (*) | ০২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৭:০৬67069
  • ডিডির লেখাটি একটু ছড়ানো ছিটোনো মনে হলেও সত্যিই ভাল পর্যবেক্ষণ। নতুন করে কিছু বুঝলাম।

    দারা ও অউরংগজেবের ব্যাপারে এতোজের বিশ্লেষণ বেশ ভালো লাগল।
  • Atoz | 161.141.84.176 (*) | ০২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৭:১০67070
  • সেই তো। সাজাহান সেই কোন্‌কালে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন দারাকে! মনে হয় টীনেজ পার হতে না হতেই শাহজাদাদের বিয়ে দিয়ে দিতো। কারুকে কারুকে একাধিকবার। তার উপরে প্রাসাদ জুড়ে সেবাদাসী। কী অবস্থা!
    দারার ছেলেপুলেরাই তো অনেকে বড় বড় হয়ে গ্যাছে উত্তরাধিকারের যুদ্ধের সময়।
  • hu | 140.160.143.220 (*) | ০২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৭:২৬67071
  • দারার অবস্থা যুধিষ্ঠিরের মত। আগ্রহ জ্ঞানচর্চায়। কিন্তু জন্মে ফেলেছে ভুল ঘরে। তলোয়ার তাকে ধরতেই হবে।
  • Tim | 140.126.225.237 (*) | ০২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৭:৫১67072
  • শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের দারাশুকো পড়তে পড়তে প্রথম এই রাজনীতিগুলো জানতে পারি একটু। ডিডিদার লেখাতেও মোটের ওপর একই তথ্য আছে, কিন্তু আরো সহজ কথায়, আরো সংক্ষেপে। ভালো লাগলো। শাহজাদা দারাশুকোর আসল সম্পদ কবিতার অংশগুলো। মৃদু আলোর মত লেখার ভেতরে কবিতা লুকিয়ে থাকে।
  • Atoz | 161.141.84.176 (*) | ০২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৮:২৫67073
  • যুধিষ্ঠিরের অবস্থা তো আরো পন্ডিচ্চেরী। চার ভাই, দ্রৌপদী, কুন্তী, ব্যাস আর কৃষ্ণ মিলে যাকে বলে একেবারে কড়া পাহারায় রেখে বকে মেরে জোর জার করে যাকে তারাপদ কয়েছেন "আট মামায় নাকি বাবার আট শালায়/ ভর্তি করে দিলে আমায় হরি ঘোষের পাঠশালায়।"
    সে বেচারা বনবাস নিয়ে জ্ঞান শাস্ত্র কবিতা ইত্যাদি চর্চা করে বক টকের সঙ্গে কথা কয়ে সন্ধ্যাবেলা গরম ভাত আর শাকচচ্চড়ি খেতে চায়, তাকে এনে ফেল্লো কুরুক্ষেত্রে!
  • dd | 116.51.26.96 (*) | ০৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:৪০67075
  • indra বলাতে আমিও একটু সাহস পেলাম। যদুনাথ সরকারের বই প্রায় একশো বছর আগে লেখা - যদিও একেবারে ক্যাননিক্যাল- কিন্তু তার পরে অনেকানেক রিসার্চ হয়েছে,এবং নতুন তথ্য সামনে এসেছে।

    @সৈকত। আমি এব্রাহাম ইরালীর খুবই ফ্যান। মানে নন সিরিয়াস পাঠকদের জন্য খুবই উপাদেয়। আপনার হয়তো শ্যালো লাগতে পারে, তবুও পড়ে দেখতে পারেন। ওনার গোটা সাতেক বই আছে।
  • indra | 132.248.183.22 (*) | ০৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৫:৫৮67074
  • যদুনাথ সরকারের কিছু মত পরে ভুল প্রমানিত হয়েছে। রাজপুত রাজারা ঔরঙ্গজেব কে সমর্থন করেন দারা কে না করে। হিন্দু দের উপর যে অত্যাচার তার বেশ কিছু স্থানীয় শাসকদের কাজ।
  • saikat | 126.203.135.37 (*) | ০৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৬:৫৪67076
  • ডিডিদা, হ্যাঁ, ইরালীর বই কিনলাম The Mughal World, যদুনাথ সরকারের বইটার সাথে। এই বইটা মনে হয় মুঘল আমলের সাধারণ মানুষের কথা, মুঘল সম্রাটদের নিয়ে অন্য একটা বই আছে মনে হয় (peacock throne ?), সেইটা নয়। এইটাই কিনলাম। সত্যি কথা বলতে কি, ইরালীর বইগুলোর গেট আপ দেখে, বেশ কিছু দিন ধরেই কিনতে ইচ্ছে করছিল, অবশ্য উল্টে পাল্টে দেখে এটাও মনে হয়ে্ছিল যে ঐ একটু গল্পচ্ছলে ইতিহাস টাইপের, অনুমান যদিও। দেখা যাক। তবে হ্যাঁ, যদুনাথ সরকার কিনলাম, ঐ ক্যাননিকাল আর আজকাল ওনার নাম পড়ে গেছে বলে ঃ-) আর তথাকথিত জাতীয়্তাবাদী ঐতিহাসিক এবং একই সাথে আওরঙজেবকে নিয়ে বিশাল বইটা আর শিবাজীকে নিয়েও কাজ আছে বলে। পড়ে দেখি। তবে হ্যাঁ, এসব করতে গিয়ে আবার সাধ জাগছে, manucchiর বইটাই পড়ে দেখার Study de Mogor !!
  • ভজহরি মুখুজ্যে | 126.202.192.7 (*) | ০৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৭:৩৬67077
  • সৈকদ্দা একটি আস্ত... মানে যাকে ফরাসীতে বলে ডি লা গ্রান্ডি মেফিস্টোফিলিস।
    আমরা টেলিফোনের এসেমেস পড়ার সময় পাচ্ছি না, ওদিকে সে স্টোরিয়া দি মোগোরা পড়ছে। খুবই অন্যায়, মানে যাকে বলে পুদুচ্চেরী ব্যাপার....
  • dd | 116.51.29.14 (*) | ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫ ০২:২৪67078
  • একটা পাবলিশিং হাউস আছে দিল্লীতে। নাম Low priced Publications। তাতে মানুচ্চির বইটা আছে। একচুয়ালি এই পাবলিশার্সের কলেকশন বেশ ভালো। William Irvine নামে এক সাহেবের The army of the Indian Moghuls বলে একটা বই - আমার খুব প্রিয়। সেটাও পড়তে পারেন। মনে হয় ভালো লাগবে।

    তবে এরা ডাকযোগে পাঠায় কি না জানা নেই।
  • dd | 116.51.29.14 (*) | ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫ ০২:৪৪67079
  • আরে,দ্যাখো কান্ডো।

    সাইটের ঠিক ঠাক ঈ ঠিকানা হচ্ছে
  • হুঁ | 192.69.243.8 (*) | ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫ ০২:৪৬67080
  • সিকি আছে তো দিল্লিতে। ডাক দিলেই ডাকযোগে পাঠিয়ে দেবে।
  • saikat | 212.54.74.119 (*) | ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৭:১৬67081
  • এসব ব্যাপারে আমি খুবই, যাকে বলে challenged !! ভজহরি মুখুজ্যে যে কে, তাকে এখানে কি নামে জানি, সে আমার বোধগম্য নয়। আর হুঁ কি সিকি ? বই বললেই পাঠিয়ে দেবে ? আর ডিডিদাও যে আমাকে কেন তখন থেকে আপনি আপনি করছেন তাও বুঝছি না। কিন্তু ধন্যবাদ, সাইটটার জন্য !!

    যাকগে, আমি কিছুই পড়ছি না, পড়ব ভাবছি, সে manucci হোক বা যদুনাথ সরকার। ডিডিদা যে Irvine সাহেবের নাম লিখেছেন, সেই ভদ্রলোকই মনে হয় manucciর লেখার ইংরজী অনুবাদ করে্ছিলেন। এও আবার নজরে এলো ভারতবর্ষের সামরিক ইতিহাস নিয়ে যদুনাথ সরকারেরই একটা বই আছে। ডিডিদা পড়েছেন নিশ্চয়।
  • dd | 116.51.225.239 (*) | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৫:৩৩67083
  • যদুনাথ সরকারে মিলিটারী হিস্ট্রী অব ইন্ডিয়া পড়েছি। পুরু আর আলেকজান্ডারের যুদ্ধের বিবরনী খুবই ভালো। কারন গ্রীক ইতিহাস চর্চাও খুব পরিপাটী ছিলো।

    যদুনাথ বিভিন্ন যুদ্ধের নানান ট্যাকটিকাল ধারা বিবরনী দিতে দিতে স্বচ্ছন্দে বিশ্বের নানান যুদ্ধের কথা এনেছেন । বোঝাই যায় মিলিটারী হিস্ট্রী ওনার প্রিয় বিষয় ছিলো। যদি আধুনিক ঐতিহাসিকদের কথা বলেন, মনে ইরফান হাবিব, রোমিলা থাপার ইঃ। এঁনারা যুদ্ধর বিষয়ে অসম্ভব কম লেখেন। সমাজতত্ব, অর্থনীতি, নৃতত্ব- এইসব নিয়েই ওনাদের উৎসাহ।

    একটা ইন্টার্ভু দেখেছিলাম এক সাহেবের সাথে ইরফান হাবিবের। সাহেব (নাম মনে নেই)যখন পানিপথের যুদ্ধে বাবুর কেনো জিতেছিলো প্রশ্ন করলেন তখন হাবিব একেবারে ভ্যাবাচাকা খেয়ে গেলেন। "ঐ কামান টামান হবে" গোছের একটা আনকনভিন্সড উত্তর দিলেন। মনে হয় এদের কছে যুদ্ধের ব্যাপারটা একটু ছেলেমানুষী গোছের মনে হয়।
  • samit | 24.139.109.214 (*) | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৬:৫৬67082
  • ভালো লাগলো । এ প্রসঙ্গে হিস্টরিকাল নভেল The Crimson Throne
    by Sudhir Kakar পড়েও ভাল লেগেছিল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত মতামত দিন