এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • বদল

    ন্যাড়া লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৯ অক্টোবর ২০১৯ | ১৭৭৩ বার পঠিত
  • ছাত্র হয়ে অ্যামেরিকায় পড়তে যারা আসে - আমি মূলতঃ ছেলেদের কথাই বলছি - তাদের জীবনের মোটামুটি একটা নিশ্চিত গতিপথ আছে। মানে ছিল। আজ থেকে কুড়ি-বাইশ বছর বা তার আগে। যেমন ধরুন, পড়তে এল তো - এসে প্রথম প্রথম একেবারে দিশেহারা অবস্থা হত। হবে না-ই বা কেন? এতদিন অব্দি রাস্তায় গাড়ি দেখেছি অ্যাম্বাসেডর আর মারুতি। কন্টেসা দেখলে লোক জমে যেত। সবে বেরোন স্ট্যান্ডার্ড ২০০০ গাড়ি দেখা গেলে বাড়ি থেকে লোক ডেকে এনে দেখান হত। ভেন্ডিং মেশিন দেখিনি কভু - মানে পয়সা ফেললাম আর ঘটাত করে কোকের ক্যান বেরিয়ে এল। ভেন্ডিং মেশিন ছাড়ুন, কোকের ক্যানই দেখিনি। দেহাতিপনার বহরটা বুঝছেন? বম্বে-টম্বের দু'চারটে ছেলে একটু ওপর-চালাকি মারত, হয়ত কোনদিন দুবাই ঘুরে এসেছে, তাই বিদেশী গাড়ি, কোকের ক্যান দেখা আছে। কিন্তু চান করতে ঢুকে ঠান্ডা-গরমের কল চালাতে গিয়ে বিপর্যস্ত হয়নি এমন ছেলের সন্ধান আমি জানিনা।

    কাল্পনিক উদাহরণ দিয়ে কী লাভ। আমার কথাই ধরুন। প্রথমদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় দুপুরের খানা খেতে গেছি। অ্যামেরিকান হ্যামবার্গারের নাম তো অনেক শুনেছি, ভাবলাম সেটাই চেখে দেখা যাক। পড়েছি যখন যবনের হাতে। গিয়ে দেখি দিব্যি ব্যবস্থা। দোকানের সামনে দড়ি দিয়ে লাইন। সেই লাইনে নানাদেশি ছেলেমেয়ে অর্ডার দেবার জন্যে অপেক্ষা করছে। কাউন্টারের পেছনে আলোকোজ্জ্বল বোর্ডে নানারকম খাবারের ছবিসহ নাম-দাম দেওয়া আছে। বোঝার কোন অসুবিধে নেই। ফিরিস্তিটা লম্বা। হ্যামবার্গারের তলায় রয়েছে চিজবার্গার। সে কী চিজ কে জানে! যাকগে, ভাবলাম, আমি তো চোখ বুজে একটা হ্যামবার্গার অর্ডার দিয়ে দিই। হ্যামবার্গারের পাশে লেখা স্যান্ডুইচ - $১.০৯, মিল - $২.১৯। সঙ্গে এক বছরের পুরনো এক পাপী ছিল। সে বুঝিয়ে দিল। বলল, মিলটা নে। তালে সঙ্গে লম্বা ফালি করে কাটা আলুভাজা আসবে। আর আসবে এক গেলাস ঠান্ডা - কোক বা ওই জাতীয় কিছু। তিনটে আলাদা করে কিনতে যা খরচ তার থেকে একসঙ্গে মিল নিলে সস্তা পড়বে। ঠিক আছে। তাই নেব। সস্তায় আমার আপত্তি নেই। অতএব, লাইন ধরে এগিয়ে কাউন্টারের কাছে পৌঁছচ্ছি। এমন সময়ে হঠাৎ হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেল। এই মেরেছে। কাউন্টারের মেমসাহেব তো ইংরিজি বলবে। বুঝব কী করে? এখনও সাহেব-মেমদের ইংরিজি শুনে বোঝা রপ্ত হয়নি। কী যে সুর করে বলে যায়, দুচারটে শব্দ বুঝি, বাকিটা আন্দাজ। পরক্ষণেই আশা জাগল। বোঝার আর আছেটা কী? বলব তো আমি। খুচরো-টুচরো গুণে রেখেছি। চোখ-কান বুজে "ওয়ান হ্যামবার্গার মিল" বলে দামটা হাতে গুঁজে দেব, আবার কী! তারপরে খাবারটা ভেতর থেকে এনে একটা লাল ট্রে-র ওপর সাজিয়ে হাতে ধরিয়ে দেবে। তাই তো দেখছি সবাইকে দিচ্ছে। কথা বোঝার সুযোগটা কোথায়! মিছামিছি কর কেন চিন্তা!

    কিন্তু তারপরে যেটা হল, সেটা আনপ্ল্যানড। কাউন্টারে গিয়ে আমি কিছু বলার আগেই মেয়েটা অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে কী একটা জিগেস করে ফেলেছে। এরকম তো কথা ছিল না! মেয়েটা - ১, আমি - ০।

    আমি কি ডরাই কভু ভিখারী রাঘবে? আমি ততোধিক তৎপরতায় বলেছি "ওয়ান হ্যামবার্গার মিল"। মেয়েটা - ১, আমি - ১।
    মেয়েটা আবার সেই প্রশ্ন করেছে। তার মানে আমি যে ভেবেছিলাম, প্রশ্নটা আদতে "কী চাই", তা নয়। আমি কমপ্লিট ভ্যাবলা। মেয়েটা - ২, আমি - ১।

    মেয়েটা বুঝে গেল আমি দেহাতি, গ্রামদেশ থেকে এসেছি। ভেতরে গিয়ে খাবার এনে লাল ট্রে-তে দিল। তারপরে ঠকাং-ঠকাং করে ক্যাশ রেজিস্টারে কিসব টিপল, সামনের ডিসপ্লেতে দেখলাম দাম এসেছে আমার হিসেবের থেকে প্রায় কুড়ি সেন্ট বেশি। কেন, সে কথা জিগেস করে লাভ নেই। কারণ বললেও বুঝতে পারব না। কাজেই মানে মানে আরও কুড়ি সেন্ট যোগ করে পয়সা দিয়ে খাবার নিয়ে বেরিয়ে এলাম। মেয়েটা - ৩, আমি - ১।

    তারপরে রিসিটে দেখি কুড়ি সেন্ট বেশি যে এসেছে সেটা ট্যাক্সের জন্যে। আর সেই প্রথম প্রশ্ন? পরে বুঝেছি, ওটা জিগেস করেছিল, "এখানে খাবে না নিয়ে যাবে - For here or to-go?" এখানকার ফাস্টফুড কাউন্টারের বাঁধা প্রথম প্রশ্ন। "নিয়ে যাব" বললে কাগজের ঠোঙায় খাবার মুড়ে দেবে, আর নইলে ট্রেতে।

    ঘটনাটা এত ফলাও করে বললাম এই কারণে যে প্রথম-প্রথম পদে পদে এমন বিপদ ওঁত পেতে থাকত। পাকামি করে স্যালাড কিনতে গেছি, জিগেস করে "কী ড্রেসিং দেব?" এক গাল মাছি! একটারও নাম জানিনা। চালাকি করে জিগেস করলাম, "কী কী আছে?" তখন বলে, "সব আছে।" ব্যস, আমি মরি স্বখাত-সলিলে। কদিন পরেই বুঝে গেলাম, ওপরচালাকি করে লাভ নেই। হাত তুলে অনেস্টি ইজ দ্য বেস্ট পলিসি নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

    এইভাবে লোকে আস্তে আস্তে অ্যামেরিকায় অভ্যস্ত হয়। একদিন পাশ করে বেরয়। চাকরি পায়। স্টুডেন্ট ভিসা এফ-ওয়ান থেকে চাকরির এইচ-ওয়ান ভিসায় যায়। নতুন অ্যাপার্টমেন্টে নেয়। প্রথমে আরেকজনের সঙ্গে শেয়ারে, তারপরে একা। বাবা-মা বেড়াতে আসেন। বিয়ের জন্যে চাপ দেন। বিয়ে করে। সন্তান হয়। গ্রীনকার্ড হয়। বাড়ি কেনে। প্রথমে স্টার্টার হোম। টাউনহাউজ হয়তো। তারপরে সিঙ্গল ফ্যামিলি হোম। পেছনে ব্যাকইয়ার্ড। লন মো করতে হয়। দ্বিতীয় সন্তান। গাড়ি লজঝড়ে স্টুডেন্ট কার থেকে সেডান হয়ে মিনিভ্যান হয়। সিটিজেনশিপ হয়। সন্তানের কলেজের জন্যে পয়সা জমানো শুরু করতে হয়। নিজেদের রিটায়ারমেন্টেরও। তৎসহ আধিব্যাধির চিন্তা। ছেলেটা থেকে লোক হয়ে অনাবাসী হয়ে যায়।

    দেশ বদলে যায়।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৯ অক্টোবর ২০১৯ | ১৭৭৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • ন্যাড়া | 236712.158.90056.153 (*) | ১৯ অক্টোবর ২০১৯ ০৭:১২51002
  • #
  • এলেবেলে | 124512.101.780112.71 (*) | ১৯ অক্টোবর ২০১৯ ০৭:২৩51003
  • ন্যাড়াস্যার আফনে আমেরিকায় পড়তে গিয়েছিলেন? ওখানেই থাকেন? আইব্বাপ! না জেনে কী পাপই না করেছি। ক্ষমা করে দেবেন মাইরি। স্যার বলিচি আগেই। একবার ভুল হয়, হয়নাকো আর।
  • তাতিন | 124512.101.780112.71 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:৩৩51004
  • যাদবপুরে আমাদের ব্যাচের ১০ জন পি এইচ ডি বা পোস্টডক করতে আমেরিকা (ও ক্যানাডা) গেছিল। তার মধ্যে ৭ জন চাকরি করতে ভারতে ফিরেছে।
  • আমার | 236712.158.786712.59 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:৩৭51019
  • এক বন্ধু ঐ ফর হিয়ার ওর টু গো শুনে বলেছিল, হ্যাঁ আমি বি১ এ এসেছি, কিছুদিন পরে চলে যাব। মেয়েটা হাসি হাসি মুখে শুনে আবার একই কথা বলায়, সে বুঝ্লে ছড়িয়েছে। তবে ইংরাজী অনেক সোজা, ইউরোপে তো ভাষায় বুঝতে পারি না।
  • মানিক | 236712.158.565623.225 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:০৫51005
  • ট্রাম্প রাজত্বে অবস্থা খারাপ। কিন্তু এই যে শুনি ভারতে শিল্প কমছে, চাকরি কমছে।
  • Inriji | 236712.158.2367.58 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:২৮51020
  • আমার চিরকালই ধারণা ব্রিটিশরা ইনরিজিটা ভালো জানে না, তার থেকে মার্কিন ইনরিজি সহজে বোঝা যায় (যদিও মার্কিন দেশে রেস্টরুমে গিয়ে বাথ্রুম করতে হয়)!
  • তাতিন | 236712.158.565612.211 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:৪১51006
  • সেটা সত্যি, তবে আমরা বেশিরভাগই ১৪র আগে ফিরেছি, আর চাকরির মন্দাটা এই স্তরের জন্যে নয়ও মনে হয়।
  • anandaB | 890112.162.674523.58 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:৪৭51007
  • ন্যাড়া বাবুর এক্সপিরিয়েন্স এক্সাটলি আমারও, তফাৎ শুধু আমি তখন অলরেডি বছর চারেক কর্পোরেট জগতে। কিন্তু সেই বার্গার কিং এর 'here to go' কোনোদিন ভুলবো না
    আমি শেষে মূকাভিনয় করবো কিনা ভাবছিলাম :)
  • lcm | 236712.158.565623.39 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:৫০51008
  • হে হে, কে নাকি একবার উত্তর দিয়েছিল - I will eat here and then go -- তাই শুনে টিনএজার দোকানী একটু ঘাবড়ে গেছিল।
  • lcm | 236712.158.565623.39 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:৫৩51009
  • আমি একজন নিরামিশাষীকে এই প্রশ্ন করতে শুনেছিলান -- can I have a burger without the burger?

    এই প্রশ্নে টিনেজার দোকানি গেল সহকর্মীকে ডাকতে।
  • S | 236712.158.670112.167 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:৫৪51010
  • প্রথমবার আম্রিগায় গিয়ে রাস্তা, গাড়ি দেখে প্রথম দুঘন্টা কথা বলতে পারিনি। একটা গাড়ির দোকানে যত গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে, অতগুলো জীবনেও দেখিনি। দেড় মাইল হেঁটে চুল কাটতে গেছিলাম। আর ঐ অর্ডার দেওয়া নিয়ে গন্ডগোল আমারও হয়েছিলো।

    আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়েছে যে ছাত্রাবস্থায় গেলে যতটা আম্রিগান হওয়া যায়, চাকরী করতে গেলে সেটা হয়্না।
  • S | 236712.158.670112.167 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:৫৫51011
  • হ্যাঁ একটা সময় অবধি ভেজ ব্যাপারটা আম্রিগানরা বুঝতই না। এখন তো ভেজ, ভিগান, কিটো সবই বোঝে দেখি।
  • dc | 237812.68.454512.126 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৬:০৩51012
  • আমার এটা পরিষ্কার মনে আছে যে রাস্তা এমন বিলকুল খালি যে বেশ খানিকক্ষন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভেবেছিলাম লোকজন কই গেল? আজ কি ছুটি নাকি কোন গন্ডগোল হয়েছে?
  • S | 236712.158.670112.167 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৬:০৬51013
  • আমি একবার হেঁটে সিটি সেন্টার যাবো ভেবেছিলাম। তারপরে রাস্তায় লোকজন না দেখে ফিরে এসেছিলাম।
  • lcm | 236712.158.565623.39 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৬:৩৩51014
  • শুরুর দিকে আমি হেঁটে বাজার (স্টপ এন্ড শপ) গেছি, অনেক দিন বেশি মাল হলে ফেরার সময় ট্যাক্সি নিয়েছি। এক মাইল হেঁটে চুল কেটে এসেছি। একবার এক সেলুনে গেছিলাম, সেটায় একজন চুল কাটছে আর দুজন বসে গপ্পো করছে, খানিকটা দেশের সেলুনের মতন, একজন বিশাল সাইজের কালো লোক, আর এক্জন ছোট্ট হাইটের সাদা লোক। পুরো সময় বসে তাদের কথার কিস্যু বুঝতে পারি নি। আমার ধারণা তারা আমাকেও কিছ জিগ্গেস করেছিল বা আমার সঙ্গে কথোপকথন চালানোর চেষ্টা করেছিল।
  • r2h | 237812.69.563412.27 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৭:২৩51015
  • বড় এসের কথাটা আমারো মনে হয়, ছাত্রাবস্থায় তাও একরকম, মাঝবয়সের দোরগোড়ায় চাকরীসূত্রে গিয়ে ফর হিয়ার অর টু গো আর কোন রুটি কোন চিজ কোন ড্রেসিঙের বিড়ম্বনা খুব কঠিন।

    অফিসের কাফেটেরিয়ায় দল বেঁধে সদ্য আগত নতুন টিমের লোকজন লাঞ্চ অর্ডার করার সময় এই ভাষা/ অ্যাকসেন্টের গোলমালে রীতিমত লাইন পড়ে যেত! তবে একটা জিনিস নিজের অল্প অভিজ্ঞতায় মনে হয়, আমেরিকান লোকজন এইসব কনফিউশনে বেশ অভ্যস্ত, সহিষ্ণু ও ধৈর্য্যশীল।
    আমাকে তো যাদবপুর পোস্টাপিসে স্ট্যাম্পকে স্টাম্প বলেছিলাম বলে রীতিমত বকে দিয়েছিল। সদ্য কলকাতা এসেছি, মোটে সড়গড় হইনি।
  • S | 890112.162.674523.130 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৭:৩৩51016
  • আসলে ছাত্রাবস্থায় একটা বড় সময় ইস্কুলের চৌহদ্দির মধ্যেই কেটে যায়। সেটা মোটামুটি হোমলি অ্যাটমোস্ফিয়ার। তাছাড়া কোহোর্টরা মোটামুটি কম্প্যাশনেট হয়। সেটা চাকরীস্থলে না হওয়াটাই স্বাভাবিক। এর ফলে বেশ একটা ট্রেনিং হয়।
  • dc | 237812.69.453412.44 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৭:৪২51017
  • আরও মনে পড়ল স্কিপোল এয়ারপোর্টে প্রথম চলমান ওয়াকওয়ে দেখার ঘটনা। তার আগে অবধি আমি জানতামই না এসক্যালেটার ওরকম লম্বালম্বি পাতা থাকতে পারে। খানিকক্ষন সামনে দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম, অ্যাসিমভের গল্প টল্পও মনে পড়েছিল। তারপর ভাবলাম একবার এটায় উঠে পড়লে যদি এয়ারপোর্ট থেকে বাইরে নিয়ে চলে যায়? সেই ভেবে পাশ কাটিয়ে হাঁটতে শুরু করলাম। খানিক দূর গিয়ে দেখি ও হরি, একটু আগে গিয়ে শেষ হয়ে গেল। ওই প্রথমবার বোকা বনাটা পরিষ্কার মনে আছে। আমি অবশ্য একা জার্নি করেছিলাম, তাই অন্য কারুর সামনে বোকা বনতে হয়নি :d
  • বিপ্লব রহমান | 237812.69.453412.8 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৯ ১২:৩৩51018
  • এপিটাফ দিলা না ন্যাড়া দা? লেখা জোশ হৈছে।

    ম্যারিকার বাঙালি সমাজ নিয়া জানার আগ্রহ ছিল। সুখ-দুঃখ, বিরক্তি, উৎসব ও শোক। পারলে আরেকদিন লেখ। প্লিজ।
  • b | 237812.68.454512.132 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০১:২৪51023
  • আমার আরেক বন্ধু, সব সময় মাথায় ডলার আর টাকার কনভার্শন রেট ঘুরছে। সুপার মার্কেটে গিয়ে সবচেয়ে শস্তা মাংসের ইয়া বড় বড় ডাব্বা নিয়ে এলো, মুখে বিজয়ীর হাসি। এর দু চারদিন পরে টের পেলো ক্যাট ফুড।
  • র২হ | 236712.158.786712.59 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৪৪51024
  • হাহাহা; আমার এক বন্ধু ডগ বিস্কিট কিনে এনেছিল, দুয়েকটা চিবিয়ে ব্যাপারটা বুঝতে পারে। যুক্তি অকাট্য, টাইগার বিস্কিট কি বাঘে খায়? এরা কুকুর এত ভালোবাসে বলে হয়তো ডগ বিস্কিট নাম দিয়েছে।
  • শঙ্খ | 236712.158.676712.216 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:৪৪51025
  • এক সহকর্মী শিখিয়ে দিয়েছিলেন।

    টেক অ্যাওয়ে বলবে না, টু গো
    উইদাউট আইস (ফাউন্টেন কোক কেনার সময়) বললে চাপ, বলতে হবে নো আইস
    এখানে কেউ কিউতে দাঁড়ায় না, লাইনে দাঁড়ায়
    মাটন কিনতে পাওয়া যায় না, গোট মিট চাইতে হবে

    তারপরে চিনে দোকানে গিয়ে 'আও মেয়েপ্পু' মানে কিনা 'হাউ মে আই হেল্প য়ু?'
    বা 'পোপাইরাই', মানে পোর্ক ফ্রায়েড রাইস
  • Atoz | 237812.69.4545.137 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:৫০51026
  • আও মেয়েপ্পু? ঃ-) হি হিহিহি
  • b | 236712.158.786712.59 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৯ ১১:৫৬51021
  • এই প্রসঙ্গে আমার ধর্মভ্রষ্ট হবার গল্পটাও লেখা যাক। বিফ বার্গার তো খাবোই না। দোকানে চিকেনবার্গার আছে।তার চেয়ে শস্তা হ্যামবার্গারও আছে। হ্যাম কি রকম হয় জানি না, কিন্তু ওটা শুওর থেকে হয় জানি। মাসছয়েক পরে এক বন্ধু জ্ঞানাঞ্জনশলাকা প্রদান করলেন। তদ্দিনে হিন্দু হবার সমস্ত আশা শেষ।
  • mandi | 124512.101.780112.71 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৯ ১২:৩০51022
  • সুপার মার্কেটে ট্রলি নিতে এক পাউন্ড টা পাছে ফেরত না পাই সেই ভয়ে প্রথম দিন হাতের শিরা টেনে ধরা মাল ছোটো বাস্কেটে নিয়ে্ছিলাম। তাই বলে ভাববেন না যে খুব বেশি বাজার করার পয়সা টয়সা ছিলো। ৫ কেজি আলু সারা মাস কাবারি বাজারের ব্যাপার টা মাথায় রাখতে হতো
  • AD | 236712.158.786712.59 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:১৯51028
  • ইংলিশ স্পিকিং দেশে এই অবস্থা, তাহলে ইউরোপের অন্য দেশে গেলে কি অবস্থা হবে?
  • mahua | 236712.158.786712.145 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:২৬51027
  • আমি মুস্কিলে পড়ি UK তে।।।জল কিনতে গেছি - বলে ষ্টীল না স্পার্কলিং। আমি তো টোটাল ক্যাবলা
  • lcm | 236712.158.565623.99 (*) | ২৩ অক্টোবর ২০১৯ ০৭:৩২51029
  • ইউরোপের অন্য দেশ - স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া-তে, একজায়গায় মাল্টিস্টোরিড পার্কিং স্ট্রাক্চার, ছোট্ট জায়গার মধ্যে গোল গোল করে (স্ক্রু ড্রাইভারের প্যাঁচের মতন) ঘুরে কয়েক তলা নীচে পার্ক করেছি। বেরোনোর সময় আবার পাকদন্ডী বেয়ে ওপরে উঠে বেরোনোর জায়গায় লাঠি, যেমন হয় ভেবেছি যে পার্কিং রিসিট-টা মেশিনে গুঁজে দেবো, টাকা চাইবে মেশিন, ক্রেডিট কার্ড দেবো, লাঠি উঠে যাবে, আমি বেরিয়ে যাবো। তো দেখি পয়সা দেবার কোনো ব্যব্স্থা নেই, তাড়াহুড়োতে নীচে পে-মেশিন আছে কি না খেয়াল করি নি। কল বাটন টিপে কল করলাম হেল্প লাইনে, এক ভদ্রলোক তেড়ে স্প্যানিশে গাঁক গাঁক করে কিছু বললেন, বললাম স্প্যানিশ জানি না, তবু তিনি বলে যাচ্ছেন। এক সময় 'ওকে' বলে ফোন কেটে দিলেন। গাড়ি থেকে নেমে এদিক ওদিক দেখ্লাম কোথাও পে-মেশিন আছে কি না। আমি তো ভাব্ছি ঐ স্ক্রু বেয়ে আবার পেছিয়ে নামতে গেলে তো হয়েছে কান্ড। ওদিকে অন্য গাড়ি চলে এলে কি হবে। আবার ফোন, আবার সেই লোক। এবার আমি ফোনে গুগল ট্রানস্লেটে স্পিকার অন করে ধরে আছি, গুগল বাব্জি কিস্যু ট্রান্স্লেট করতে পারল না, কি সব হাবিজাবি বুঝল কে জানে। হ্ঠাৎ লোকটি কি একটা বলে লাইন কেটে দিলেন। বসে আছি, আবার বেরিয়ে দেখলাম পুলিশ-টুলিশ কাউকে যদি পাওয়া যায়। তরপরে দেখি একজন স্কুটার চালিয়ে এলেন, ঐ ভদ্রলোক, আমাকে ইশারায় স্কুটারের পিছনে বসতে বললেন, খেয়েছে! কোথায় নিয়ে যাবে, শাস্তি দেবে নাকি, জয়-হরি বলে বসে পড়লাম, একটু দূরে ওপাশে পে-মেশিনের সামনে নামিয়ে দিলেন, পয়সা দিলাম, আবার স্কুটারে বসিয়ে ওপরে আনলেন। এবার রিসিট গুঁজে দিতে লাঠি উঠল। ভদ্রলোক হাততালি দিলেন। আমি ধন্যবাদ জানিয়ে চললুম।
  • b | 237812.69.563412.81 (*) | ২৩ অক্টোবর ২০১৯ ০৮:২২51030
  • দূর, অতো ইউরোপ আম্রিগা ছড়ুন। ট্রেন আসানসোল ক্রস করলেই বাঙালীর পেন্টুল ঢিলে হয়ে যায়। আমার এক সহপাঠি দিল্লিতে পড়তে গেছিলো, সে অনেকদিন জানতো "ভাজপা" হল দিল্লির জাঠ ল্যাঙ্গুয়েজে অটল বিহারী "ভাজপেয়ীর" অন্য নাম। সে অবশ্য কলকাতা থেকে একটা "হিন্দি-বাংলা শিকষা" কিনে নিয়ে গেছিলো। তাতে গরু সম্পর্কে এই অমর লাইনটি ছিলোঃ ইহার বাচ্ছা বড় হইলে বলদ হইয়া যায়/ ইসকি ব্চ্চা আগে চলকর ব্যয়েল হো যাতা হ্যায়।
  • SH | 236712.158.565612.211 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৯ ০৮:৫০51031
  • আমি ২২ বছর আগে প্রথম বার আমেরিকা যাই। JFK তে নেমে trolly র line এ আমার সামনেই অনেক-এ দেখছি নিয়ে যাচ্ছে।। আমি টানাটানি করে বিফল হয়ে ভাবছি কি করা যায়। দুর থেকে এক বিশাল কালো দৈত্য আমার বালখিল্যপনা দেখে মিটিমিটি হাসছিল। শেষে সে-ই এসে দেখাল $ coin দিয়ে কিভাবে trolly খুলতে হয়।

    তার পর-ও আছে ঃ-) trolly ছেডে দেওয়ার সময় টানাটানি করে coin টা বের করতে না পেরে ভেবেছিলাম এটা হয়্ত trolly use করার fees।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন