এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ‘দাদাগিরি’-র ভূত এবং ভূতের দাদাগিরি

    Debasis Bhattacharya লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৭ নভেম্বর ২০১৯ | ২১৮২৮ বার পঠিত
  • রণে, বনে, জলে, জঙ্গলে, শ্যাওড়া গাছের মাথায়, পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে, ছাপাখানায় এবং সুখী গৃহকোণে প্রায়শই ভূত দেখা যায়, সে নিয়ে কোনও পাষণ্ড কোনওদিনই সন্দেহ প্রকাশ করেনি । কিন্তু তাই বলে দুরদর্শনে, প্রশ্নোত্তর প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানেও ? আজ্ঞে হ্যাঁ, দাদা ভরসা দিলে এই একুশ শতকেও ভূতের ‘কামব্যাক’ সম্ভব । দাদা বার বার পাহাড়প্রমাণ বাধা ঠেলে ভারতীয় ক্রিকেট দলে ‘কামব্যাক’ করেছেন, আর আমরা সব অধীর উত্তেজনায় আপিস কাচারি কামাই করে সে সব দেখেছি । তাহলে, তাঁর অঙ্গুলি হেলনে যে হাই ডেফিনিশন টিভির পর্দায় ভূতেরা ফিরে আসবে, সে কি আর খুব বেশি কথা হল ?

    গতকাল ভর সন্ধেবেলাতেই ‘জি বাংলা’ চ্যানেলের ‘দাদাগিরি’ অনুষ্ঠানে সঞ্চালক সৌরভ গাঙ্গুলির সামনে হাজির হলেন এক মহিলা, তিনি ভুত খুঁজে বেড়ান, এবং এই আশ্চর্য কর্মকাণ্ড সুসম্পন্ন করার জন্য তাঁর নাকি একটি গোটা দলই আছে ! তিনি ওঝা-গুণিনদের মতন গেঁয়ো তন্ত্রমন্ত্রের ভরসায় থাকেন না, দস্তুরমত ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে ভুত খোঁজেন । যদিও সৌরভ গাঙ্গুলি, মানে আমাদের দাদা, বারবারই তাঁকে ভরসা দিয়ে বলেছেন যে ভূতের অস্তিত্ব নিয়ে তাঁর মনে বিন্দুমাত্র সংশয় নেই এবং কোনওকালে ছিল না, তবু সেই অকুতোভয় মহিলা ভূতের ‘প্রমাণ’ হিসেবে বিস্তর যন্তরপাতি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন, আমাদের মত অজ্ঞ অকিঞ্চনকে প্রাজ্ঞ ও রোমাঞ্চিত করে তোলবার জন্য । তা, বন্ধুদের তরফে তীব্র প্ররোচনা-কবলিত অবস্থায় প্রাজ্ঞ ও রোমাঞ্চিত হবার চেষ্টায় ত্রুটি রাখার উপায় আমার ছিল না । সে চেষ্টার ফলাফল শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়াল সেটা বলবার জন্যই এই লেখা, তবে তার আগে একটু ভাল করে দেখে নেওয়া যাক, এই মহিলা ওই অনুষ্ঠানে ক্যামেরার সামনে ঠিক কী কী বললেন এবং করলেন । মহিলার নাম ‘ঈশিতা দাস সান্যাল’, এবং আমরা এরপর থেকে সাধারণত তাঁকে সে নামেই ডাকব ।

    আমরা টিভির পর্দায় যা দেখলাম, তার মোদ্দা কথাগুলো এই রকম । এই ঈশিতা দাস সান্যাল জানালেন, কোথাও ভূতের উপদ্রব হচ্ছে খবর পেলেই তিনি তাঁর ভূতান্বেষী বন্ধুদের নিয়ে সেখানে ছুটে যান এবং তাঁদের বিচিত্র সব যন্ত্রপাতি দিয়ে ভূত খুঁজে দেখেন । এ রকম দুটি ‘অভিজ্ঞতা’-র কথা তিনি ওই অনুষ্ঠানে বর্ণনা করলেন । প্রথমটি কার্শিয়াং-এর ‘ডাওহিল’ অঞ্চলের কথা, যেখানে রয়েছে ‘ডেথ রোড’ নামে একটি রাস্তা, যার নাকি ভূতের উপদ্রবের ব্যাপারে ভীষণই বদনাম । সেখানে নাকি তাঁরা তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্র এবং তাপমাত্রা মাপার বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি নিয়ে গেছিলেন, এবং সে সব যন্ত্রে অস্বাভাবিক ‘রিডিং’ পেয়েছেন, যা নাকি ভূতের অস্তিত্বেরই প্রবল ইঙ্গিত । ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড বা তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্র নাকি সেখানে অস্বাভাবিকরকম জোরালো, এবং তাপমাত্রা যা হওয়া উচিত তার চেয়ে বেশি । তাছাড়া, সেখানে আরও অনেক ‘অস্বাভাবিক’ ঘটনা ঘটে । যেমন, বারবারই তাঁরা গাড়ি থেকে নামলেই বৃষ্টি পড়তে থাকে এবং গাড়িতে উঠলেই থেমে যেতে থাকে, হঠাৎ করে তাঁদের ক্যামেরা বন্ধ হয়ে যায়, আলো নিভে যায়, এবং তাঁর এক সঙ্গীর পিঠের ওপরে নখের জোরালো আঁচড় পড়ে রক্তপাত হয়ে যায়, গায়ে পোষাক পরা অবস্থাতেই ! আরেকটি ঘটনা ঘটে ইছাপুরের এক ‘প্রেত-উপদ্রুত’ ফ্ল্যাটবাড়িতে, যেখানে ওই আবাসনের জমিটির পুরোনো মালিক, যিনি কলহপ্রবণ ছিলেন এবং জলে ডুবে মারা যান, তাঁর ‘আত্মা’ নাকি এসে কলহ সৃষ্টি করতে থাকে আবাসনের বাসিন্দাদের মধ্যে । তার ‘প্রমাণ’ হিসেবে অনুষ্ঠানে দেখানো হয় একটি ভিডিও, যেখানে ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা বসে আছেন একটি ছোট্ট যন্ত্রের সামনে, যার মাধ্যমে তাঁরা নাকি আত্মাকে কিছু প্রশ্ন করছেন এবং উত্তর পাচ্ছেন (আমার মনে হল যন্ত্রটি একটি সাধারণ স্মার্টফোন মাত্র, যাতে বিশেষ একটি ‘অ্যাপ’-এর সাহায্যে প্রশ্নকর্তার কথাগুলোরই উদ্ভট প্রতিধ্বনি হয়, এবং তা বানানো মোটেই কঠিন নয়) । ঈশিতার বলা নিছক গল্পগুলো বাদ দিলে ‘প্রমাণ’ হিসেবে যে দুটো ভিডিও দেখান হল তার দুটোই সম্পূর্ণ অকাজের । কার্শিয়াং-এর রাস্তায় তাঁর সঙ্গীর পিঠের আঁচড় যখন দেখানো হল, তখন অন্ধকারের মধ্যে শুধু পিঠটাই দেখানো হল, কারুর মুখ দেখা গেল না, আহত হবার মুহূর্তটির কোনও বিস্তারিত বর্ণনাও স্বয়ং আহতের মুখ দিয়ে শোনানো হল না । ঘটনাটি যে ঠিক ওই অঞ্চলেই ঘটছে, সে ব্যাপারেও ভিডিও-তে কোনও ইঙ্গিত রাখা হল না (যেমন, ঘটনাটি ঘটবার মুহূর্তেই তাকে ক্যামেরা দিয়ে ফলো করা, বা, পিঠের ক্লোজ আপ দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে ক্যামেরা জুম আউট করে গোটা চিত্রটি তুলে ধরা বা ওই জাতীয় কিছু) । আর, ইছাপুরের ফ্ল্যাটের ঘটনায় শোনা গেল কিছু কষ্টশ্রাব্য উদ্ভট অবোধ্য প্রতিধ্বনি, যার আসলে কোনও মানেই হয়না । ‘ঘটনা’-র দশা যদি এই, তো তাহলে দেখা যাক ‘যন্ত্রপাতি’-গুলোর দশাটা ঠিক কেমন ।

    কী কী বৈদ্যুতিন যন্ত্র ঈশিতা দেখিয়েছেন, সে দিকে একটু তাকানো যাক । প্রথমত, একটি যন্ত্র যা দিয়ে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড বা তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্র-র প্রাবল্য মাপা যায় (‘ই এম এফ মিটার’) । এ দিয়ে আসলে দেখা হয় মূলত কোনও বৈদ্যুতিক যন্ত্রের কাছাকাছি অঞ্চলের বিকিরণ (বেতার তরঙ্গের বিকিরণ), যাতে বোঝা যায় যন্ত্রটি ঠিকঠাক চলছে কিনা । আমাদের বাড়িতে সব সময়ই নানা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি চলে, কাজেই সেখানে ওই মিটার নিয়ে নানা জায়গায় ঘুরঘুর করলে নানা রকম ‘রিডিং’ আসবে, সেটাই স্বাভাবিক । রাস্তাতেও ইলেক্ট্রিকের লাইন বা ওই ধরনের জিনিসের ধারকাছ দিয়ে গেলে মিটারের রিডিং বেড়ে যাবে, তার সঙ্গে ভূতের মোটেই সম্পর্ক নেই । দ্বিতীয়ত, তাপমাত্রা মাপার গোটা দুই যন্ত্র । এক্ষেত্রেও, বনে-জঙ্গলে বা বাড়িতে যেখানেই থাকুন না কেন, বাড়ির বিশেষ গঠন, জানলা-দরজা-গাছপালা থেকে দূরত্ব, ফ্যান বা এয়ার কন্ডিশনার বা অন্যান্য যন্ত্রপাতির দুরত্ব, ঠিক কোন দিক থেকে রোদ কীভাবে এসে পড়ছে বা হাওয়া বইছে তার খুঁটিনাটি, এইসবের ওপর নির্ভর করে তাপমাত্রা ওঠানামা করতেই পারে, তাতেও ভুত বেচারার দোষ নেই । তৃতীয়ত, একটি লেজার ও একটি ইনফ্রা-রেড ‘প্রক্সিমিটি ডিটেক্টর’, যা যথাক্রমে লেজার ও ইনফ্রা-রেড রশ্মি বিকিরণ করে এবং সামনে কিছু থাকলে সে রশ্মি প্রতিফলিত হয়ে যন্ত্রে ফিরে গিয়ে কাছাকাছি থাকা কোনও কিছুর অস্তিত্বের সংকেত দেয়, দূরত্বও জানিয়ে দেয় (মনে রাখবেন, কঠিন বস্তুর অস্তিত্ব, ভূতের নয় মোটেই)। চারপাশের বাধা এড়িয়ে ধাক্কা না খেয়ে নিজে নিজেই চলাফেরা করতে পারে এমন স্বয়ংক্রিয় রোবট-এ প্রায়শই এ ধরনের ‘সেন্সর’ ব্যবহার করা হয়, তবে কিনা, তারা ভূত দেখতে পায় এমন দাবি রোবট বিশেষজ্ঞরা আজ পর্যন্ত করেননি । আর তবে যন্ত্র বলতে বাকি রইল সেই প্রতিধ্বনি-অ্যাপওয়ালা প্ল্যাঞ্চেট-প্রবণ অত্যাশ্চর্য স্মার্টফোন, যাতে বিনোদন বলতে উদ্ভট প্রতিধ্বনি, আর ‘প্রমাণ’ বলতে লবডঙ্কা ! ভূতুড়ে বাণী যদি শোনাতেই হয়, তো তার মধ্যে বেচারা প্রশ্নকর্তার কথার বিকৃত প্রতিধ্বনি ঢোকালে তাতে যে কী ছাই সুবিধে হয়, সে বোধহয় শুধু ভূতপ্রেমীই জানে !

    কিন্তু, ভূতাকাঙ্খীদের আসল গণ্ডগোল ভূতুড়ে আঁচড় বা আগড়ম বাগড়ম যন্ত্রপাতিতে নেই, আছে তাঁদের কথাবার্তার মধ্যে, ভূতুড়ে কর্মকাণ্ডের ‘বৈজ্ঞানিক’ ব্যাখ্যার মধ্যে । এঁরা ‘ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড’, ‘এনার্জি’, এইসব কথা এমন অনায়াসে এবং এমন নিপাট অর্থহীনতার সঙ্গে বলতে পারেন, যেগুলো শুনলেই বোঝা যায়, এগুলো খায় না মাথায় মাখে সে ব্যাপারে তাঁরা বিন্দুবিসর্গও জানেন না । ঈশিতার বক্তব্য, আমাদের শরীর মন ও তার কাজকর্মের মধ্যে যেহেতু প্রচুর ‘এনার্জি’ থাকে, এবং ‘এনার্জি’ যেহেতু সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না, অতএব আমরা মরে গেলেই নাকি সেই এনার্জি ধ্বংস না হয়ে ভূত হয়ে যায়, এবং পিঠে আঁচড় দেওয়া থেকে শুরু করে অন্য নানা বিচিত্র বেয়াদবি করে ভদ্রলোকেদের কাজকর্মে অত্যন্ত অসুবিধের সৃষ্টি করে । আচ্ছা, তাই নাকি ? কিন্তু, তাহলে কয়েকটা সহজ সরল প্রশ্নের উত্তর দিন দেখি ! সকালবেলা গাড়ির ট্যাঙ্কে তেল ভর্তি করে বেরিয়ে সারাদিন ঘোরাঘুরির পর দিনের শেষে যখন তেল পুড়ে শেষ হয়ে গিয়ে আবার পেট্রোল পাম্পে হাজির হতে হয়, তখন আগের তেলটা কি মোটরগাড়ি-দেহ থেকে বেরিয়ে ‘তেলভূত’ হয়ে ঘুরে বেড়ায় ? টর্চের ব্যাটারি পুড়ে শেষ হয়ে যাওয়ার পর তার ভেতরকার শক্তি বুঝি ‘ব্যাটারিভূত’ হয়ে নিশুতি রাতে আপনার ছাদে হাঁটাহাঁটি করে ? কালীপুজোয় পুড়ে যাওয়া লাখো লাখো বাজি কি তবে সবই ‘ফুলঝুরি ভূত’ আর ‘চকলেট বোমা ভূত’ হয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তাদের মাথায় গিয়ে চাপে ? নাঃ, এ যে অবাস্তব সে কথা বোধহয় সকলেই বুঝবেন ।

    ভূতুড়েবিজ্ঞানীদের কথায় গণ্ডগোলটা ঠিক কোথায় ? ‘এনার্জি’ যে সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না, এ তো বিজ্ঞানেরই কথা, একে তো আর অস্বীকার করা যায় না । ভুলটা তবে কোথায় হচ্ছে ? ভুলটা হচ্ছে ‘প্রসেস’ আর ‘ফাংশন’ জাতীয় ধারণার সাথে ‘সাবস্টেন্স’ আর ‘কোয়ান্টিটি’ জাতীয় ধারণাকে গুলিয়ে দেওয়ার মধ্যে । উদাহরণ দিয়ে বোঝার চেষ্টা করা যাক । একটা মোটরগাড়ি ও তার তেলটা হচ্ছে ‘সাবস্টেন্স’ বা বস্তু, তেলের ভেতরে আছে শক্তি নামক একটি বস্তুধর্ম বা ‘কোয়ান্টিটি’ যাকে আমরা বস্তুর কর্মক্ষমতা হিসেবে মাপতে পারি, মোটরগাড়ির ভেতরে বিশেষ ব্যবস্থায় তেলটা ক্রমাগত পুড়ে পুড়ে শক্তি সরবরাহ করে যেভাবে ইঞ্জিনটাকে চালু রাখছে সেটা হচ্ছে ‘প্রসেস’ বা প্রক্রিয়া, আর এই প্রক্রিয়ায় মোটরগাড়িটি যে আমাদেরকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় অনায়াসে বয়ে নিয়ে যেতে পারছে সেটা হচ্ছে তার ‘ফাংশন’ বা ক্রিয়া । ঠিক তেমনিই, আমাদের দেহ ও খাবারদাবার হচ্ছে ‘সাবস্টেন্স’ বা বস্তু, খাবারের ভেতরে নিহিত আছে শক্তি নামক একটি বস্তুধর্ম বা ‘কোয়ান্টিটি’, আমাদের দেহের ভেতরে বিশেষ ব্যবস্থায় খাবারটা ক্রমাগত হজম হয়ে শক্তি সরবরাহ করে যেভাবে শরীর ও তার কাজকর্মকে চালু রাখছে সেটা হচ্ছে ‘প্রসেস’ বা প্রক্রিয়া, আর এই প্রক্রিয়ায় আমাদের শরীর ও মস্তিষ্ক যেভাবে এক অসাধারণ ছন্দে আমাদেরকে অনায়াসে বাঁচিয়ে রাখতে পারছে সেটা হচ্ছে তার ‘ফাংশন’ বা ক্রিয়া । আমাদের আহার-নিদ্রা-মৈথুন-চিন্তা-ভালবাসা-ক্রোধ-ঘৃণা সবই এই ‘ফাংশন’ । জটিলতা ও সূক্ষ্মতায় অবশ্যই আমাদের সাথে মোটরগাড়ির কোনও তুলনা হয়না, কিন্তু তা সত্ত্বেও দুয়ের মধ্যে এই মিলগুলো ভীষণ মৌলিক ও বাস্তব । কাজেই, এখন নিশ্চয়ই পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে, ‘প্রসেস’ এবং ‘ফাংশন’ চালু রাখার জন্য ‘এনার্জি’ বা শক্তি অপরিহার্য, কিন্তু দুটো জিনিস মোটেই এক নয় । আমাদের শ্বাসনালী রুদ্ধ হয়ে গেলে, বা মোটরগাড়ির ইঞ্জিনে তেল আসবার নলটি বন্ধ হয়ে গেলে, দেহ বা গাড়ির পঞ্চত্বপ্রাপ্তি ঘটতে পারে, ভেতরে খাদ্য বা তেল রূপে শক্তিভাণ্ডার সম্পূর্ণ অটুট থাকলেও । আবার উল্টোদিকে, সে ভাণ্ডার শেষ হয়ে গেলেও ভেতরের ব্যবস্থাটি অটুট থাকলে ‘প্রসেস’ এবং ‘ফাংশন’ আবারও চালু করে দেওয়া যায়, খাদ্য বা তেল পেটে পুরলেই । এই কথাগুলো মাথায় রাখলে কেউ আর নিশ্চয়ই এমনটা বলবেন না যে, আমরা (বা মোটরগাড়ি) শেষ হয়ে গেলে আমাদের (বা মোটরগাড়ির) ‘এনার্জি’ বেরিয়ে গিয়ে ভূত হয়ে ঘুরে বেড়ায়, বা ভূতবিজ্ঞানীর পিঠ চুলকোয় ।

    তাছাড়া, ‘থার্মোডিনামিক্স’ বা তাপগতিবিদ্যার আরও একটি নিয়ম বা প্রাকৃতিক সত্য এ প্রসঙ্গে স্মর্তব্য । এ বিদ্যার অনেকগুলো নিয়ম আছে, তার মধ্যে দ্বিতীয় নিয়মটি হল, শক্তিকে একবার কাজে লাগিয়ে নিলে সে ধ্বংস না হলেও আর কর্মক্ষম অবস্থায় থাকে না, তাপ হিসেবে বস্তুর মধ্যেকার এক রকমের বিশৃঙ্খলা হয়ে থেকে যায়, তখন আর তাকে মোটেই কাজে লাগানো যায় না, ভূতুড়ে বাড়ির অন্ধকার ছাদে হাঁটাহাঁটি করে নিরীহ গেরস্তের কাজ বাড়ানোর তো প্রশ্নই ওঠে না । এ যদি না হত, তাহলে আর বারবার আমাদের তেল কয়লা পোড়াতে হত না, একই জ্বালানিতে চিরকাল কাজ চলত ।

    আসলে, ভূত বা 'আত্মা'-র ধারণাটি হল 'প্রসেস' বা ‘ফাংশন’-কে 'সাবস্টেন্স' বা বস্তু বলে ভুল করবার একটি চমৎকার দৃষ্টান্ত । জীবিতের তুলনায় সদ্যমৃত মানুষের (বা অন্য প্রাণির) দৈহিক তফাৎ কিছুই বোঝা যায় না, অথচ সে আর সাড়া দেবে না, কথা বলবে না, ভালবাসবে না, এমনকি রাগও করবে না । তাহলে নিশ্চয়ই কোনও এক রহস্যময় সূক্ষ্ম বস্তু আছে, যার নাম দেওয়া যাক 'আত্মা' --- দেহের মধ্যে তার থাকা বা না থাকাটাই তবে তফাৎ গড়ে দিচ্ছে ! আধুনিক মানুষ জানে যে বাইরে থেকে দেখতে এক হলেও আসলে জীবিত ও মৃত দেহের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ, এবং ওই দৈহিক তফাতটাই হল প্রাণ-মন থাকা বা না থাকারও কারণ । দেহ পচতে শুরু না করলে তফাত বোঝা যায় না, মনে হয় মানুষটা বুঝি ঘুমিয়ে আছে, এখুনি জেগে উঠতেও পারে, কিন্তু আসলে মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই বিপাকীয় ক্রিয়া থেমে যায়, কোষগুলো মরে যেতে থাকে, রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়, হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়, শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়, মস্তিষ্কের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায় । অথচ, আদিম মানুষের পক্ষে তা বোঝা অসম্ভব ছিল । তারা না জানত শব-ব্যবচ্ছেদবিদ্যা, না বুঝত আধুনিক শারীরবিদ্যা ও কোষতত্ত্ব, না ছিল তাদের হাতে মাইক্রোস্কোপ । তারা তাই বুঝতে পারে নি যে, প্রাণ-মন হল আসলে 'দেহ' নামক এক মহা জটিল বস্তু-সমবায়ের 'ফাংশন' বা ক্রিয়া --- জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তার পারিপার্শ্বিকের সাথে বিভিন্ন স্তরে অবিরাম চলতে থাকা এক আশ্চর্য মিথষ্ক্রিয়া । এই অতি গভীর ও সমৃদ্ধ প্রক্রিয়াকেই প্রাচীন মানুষ দেখেছিল এক সূক্ষ্ম বস্তু রূপে । এমন নয় যে তারা আমাদের চেয়ে বোকা ছিল । তারা জানত, ভেতরে ঢুকে থাকা বস্তু অন্য বস্তুর ধর্মকে পালটে দিতে পারে । কলসীর ভেতরে জল ঢাললে তার ওজন বেড়ে যায়, আবার তা বার করে নিলে সে ওজন কমেও যায় । জলের মধ্যে নুন বা চিনি মেশালে স্বাদ নোনতা বা মিষ্টি হয়ে যায়, আবার নানা প্রক্রিয়ায় আলাদা করে নিলে সে স্বাদ চলেও যায় । কাজেই, 'আত্মা' নামক সূক্ষ্ম বস্তু ঢুকে পড়ে দেহে প্রাণ-মন সঞ্চার করবে আর বেরিয়ে গিয়ে তাকে মড়া বানিয়ে দেবে, এ চিন্তা তাদের কাছে খুব বেশি অসম্ভব বলে মনে হয় নি । প্রাচীন মানুষের ক্ষেত্রে এইসব ভুল দোষের ছিল না, বরঞ্চ এগুলো তাদের চিন্তাশীলতা, অনুসন্ধিৎসা ও কল্পনাশক্তিরই প্রমাণ ।

    কিন্তু, আজকের দিনেও যারা এই প্রাচীন ভুল কাজে লাগিয়ে লোক ঠকায়, টেলিভিশনের মত আধুনিক বিজ্ঞাননির্ভর প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে কুসংস্কার প্রচারের গণ-আয়োজন করে, তারা কেমন লোক ?

    আঙুলটা তাই উঠুক এদের বিরুদ্ধেই ।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৭ নভেম্বর ২০১৯ | ২১৮২৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • avi | 236712.158.676712.140 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০৮:৫৪48707
  • ন্যাড়াদা, তার মানে মোদ্দা কথাটা হচ্ছে, বুড়ো কর্তা বেঁচেও নেই, মরেও নেই, ভূত হয়ে আছে। দেশটাকে সে নাড়েও না, অথচ ছাড়েও না।
    দেশের মধ্যে দুটো-একটা মানুষ, যারা দিনের বেলা নায়েবের ভয়ে কথা কয় না, তারা গভীর রাত্রে হাত জোড় করে বলে, 'কর্তা, এখনো কি ছাড়বার সময় হয় নি।'
    কর্তা বলেন, 'ওরে অবোধ, আমার ধরাও নেই, ছাড়াও নেই, তোরা ছাড়লেই আমার ছাড়া।'
    তারা বলে, 'ভয় করে যে, কর্তা।'
    কর্তা বলেন, 'সেইখানেই তো ভূত।'
  • একক | 236712.158.455612.114 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০৯:১৩48708
  • মামলা টামলা হলে হোক :) আপাতত একটা ছোট প্রশ্ন ভূতের কুসংস্কার বিষয়ে ।

    রাজ্যে যে রিপোর্টগুলো আপনারা পাচ্ছেন ভূত সংক্রান্ত ; সেখানে কোনধরনের ঘটনা কী হারে , তার প্রেক্ষিতে কোনো কাজকর্ম হচ্ছে কী ?

    মানে ধরুন : কয়েক রকম ভূতের সমস্যা চারপাশে শোনা যায় ঘুরেফিরে ।

    নম্বর ১ : ভুতুড়ে কান্ড । এমন কিছু ঘটে এমন কোনো অঞ্চলকে ঘিরে যার সন্তোষজনক ব্যাখ্যা এডমিনিস্ট্রেশনের কাছে থাকেনা । তার সুযোগ নিয়ে ভুতুড়ে ব্যাখ্যা ছড়াতে থাকে ।

    নম্বর ২ : ভূতের উৎপাত । এগুলো ক্রিমিনাল একট । হত্যার চেষ্টা , ষড়যন্ত্র আওতায় পরে । পুলিশ চাইলেই সমাধান করতে পারে ।

    নম্বর ৩ : ভূতের ভর । এটা মানসিক রোগের আওতায় পরে । চিকিৎসক এবং স্বাস্থকেন্দ্রের একসেস জরুরি ।

    তো , আমার এখনো খুব সরল প্রশ্ন । পশ্চিমবঙ্গে কুসংস্কার বাড়ছে -ভূত বাড়ছে এসব বলছেন যাঁরা তাঁদের কাছে নিশ্চই ডেফিনিট তথ্য আছে যে কোন কোন ক্ষেত্রে এগুলো ছড়াচ্ছে এবং কিভাবে এডমিনিস্ট্রেশনের সাহায্য নিয়ে -আইনি সমাধান পৌঁছে দিয়ে বা মনোচিকিৎসকের সঙ্গে যুক্ত করে দিয়ে মানুষগুলোকে যার যেমন দরকার সেইভাবে সমস্যার সমাধান করার ।

    কুসংস্কারকে আমি একটি সোশ্যাল মার্কার হিসেবে দেখছি ; সিস্টেমের ফেইলিওর যেখানে সেখানে লোকে কুসংস্কারের কারণে সাফার করছে । তো আমি , সিস্টেমের ফেইলিওরগুলো মিটিগেট করবো নাকি অন্য কিছু ??

    যেখানে সিস্টেম ঠিকমতো কাজ কছে সেখানে কুসংস্কার নেই ? আছে ।সেখানে রকেট পাঠানোর আগে গণেশপুজো হচ্ছে । কিন্তু -বাই পোলার ধরা পড়লে গোমূত্র খাওয়াচেছেনা বাইরে যতই ঢপাক । এই ডুবিয়াস বাট হাইলি প্রটেক্টেড সেকশনটাকে আমরা লোকশিক্ষে দেওয়ার ভার নেবো কেন ?? এরা কি আদৌ প্রায়োরিটি ? বরং -

    যেখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি , দেশের গরিব মানুষের কুসংস্কারজনিত ভোগান্তি আদতে আধুনিক সমাধানের একসেস না থাকার ফল । সেইটে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা জরুরি মনে হয় । তার পাশাপাশি ক্লাসরুমে ভূতের মিথ -খণ্ডন চললে তবে কাজ দেবে । নইলে ওসব , যারে কয় " ভূতের গল্প " :)
  • Atoz | 237812.69.4545.147 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০৯:২০48709
  • আরে অভি ডাক্তার, ব্যাখ্যা তো না, প্রমাণ চায় তো! স্বপ্নের প্রমাণ। ঃ-)
    এই যে লাল গানে নীল সুর হাসিহাসি গন্ধের স্বপ্নটা এইমাত্তর দেখে উঠলুম, মাথায় নানা স্কোপ ফিট করে সেই স্বপ্নটা যে সত্যিই দেখেছি, তার প্রমাণ দিতে পারেন?
    আপনাদের সেই স্লিপ ল্যাব, গাঁজার বাগানের পাশে, সেখানে কত পেশেন্ট আসেন, তাঁদের স্বপ্ন দেখার প্রমাণ তো আপনাদের স্কোপে ধরা পড়ে। পড়ে না?
  • avi | 237812.69.453412.170 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৯ ১০:০৪48710
  • নাহ। আরইএম স্তরে ঘুম চলছে, এইটুকুই শুধু ধরা পড়ে। স্বপ্ন দেখছে, ভাবা যেতে পারে। কী স্বপ্ন, তার প্রমাণ হবে না।
    একক হক কথা বলেছেন। তবে আমাদের প্রশাসন বা বিচার সবই বিশ্বাসের হাতে। বিশ্বাস বা অনুভূতি আহত হয়, এমন কিছু করাই মুশকিল। তবে ওই ভূতের ভর বা জ্বিন ধরা খুব সহজে সেরে যায়, এই যা বাঁচোয়া।
  • Atoz | 237812.69.4545.147 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৯ ১০:৫৭48711
  • একটা গানও ছিল এই নিয়ে।
    "বাড়ির লোকে কয় আমায় ওষুধ করেছে
    পাড়ার লোকে কয় জ্বিনে ভূতে ধরেছে
    কী করে বলি ওদের -
    কেউ আমায় ভালোবেসে এ এ এছে"
    এই ধরণের লিরিক ছিল গানে। ঃ-)
  • Kaju | 237812.69.563412.21 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৯ ১১:১১48675
  • কবি ও লেখক অনুপম মুখোপাধ্যায়ের লেখা। এঁর কথাগুলো আমাকে বেশ ভাবায়।

    https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2838426109523531&id=100000685081539

    "।। ভূত আছে কি নেই, সেটা ব্যক্তিগত বিশ্বাস নয়। সেটা ব্যক্তিগত আস্থা। আস্থা আর বিশ্বাসের পার্থক্যটা বুঝুন। কেউ তার ব্যক্তিগত আস্থা বা অনাস্থায় লোকের মুখে শুনে উপস্থিত হয়। যেমন অনেকেই ছেলেবেলা থেকে বৃদ্ধাবস্থা অবধি রাতের বেলায় একলা বাথরুম যেতে পারে না। আবার কেউ আজীবন ভূত নিয়ে ভাবলই না, কারণ তার বাপ-মা ওটা নিয়ে তাকে ভাবতে শেখায়নি। কেউ কেউ নিজের আস্থায় বা অনাস্থায় ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে উপস্থিত হয়। বিশেষ কোনো অভিজ্ঞতা থেকে একজন আস্থাহীন মানুষ ভূতের প্রতি আস্থাশীল হতে পারেন, আবার আস্থা হারাতেও পারেন। এগুলো বিশ্বাসের প্রশ্ন নয়, এগুলো আস্থার প্রশ্ন।

    ব্যক্তিগত আস্থা নিয়ে একজন মানুষ দ্বিতীয় মানুষের সঙ্গে আলোচনা না-ও করতে পারেন।

    বিশ্বাস একটা সামাজিক ঘটনা। সেটা নিয়ে দুজন বা দুশ বা দুহাজার বা দু-লক্ষ মানুষের মধ্যে আলোচনা হতে পারে। সেটা যাচাই করার ব্যাপারও থাকতে পারে। গবেষণা হতে পারে। গবেষণা মানে গরু খোঁজা নয়, জ্ঞানের অন্বেষণ। যেমন হোমিওপ্যাথি একটা বিশ্বাস। যেমন জ্যোতিষ একটা বিশ্বাস। তেমনই ভূত একটা বিশ্বাস। এই বিষয়গুলো নিয়ে মানুষের কথা বলার অধিকার আছে। কারণ যুগে যুগে অগণিত মানুষ একসঙ্গে এ নিয়ে ভেবেছে, আলাপ করেছে। আজ যদি আপনি বলেন মিডিয়ায় দাঁড়িয়ে কেউ ভূতে বিশ্বাস নিয়ে কেন কথা বলবে, বলা চলবে না, বলতে দেব না, তাহলে সবার আগে বাক্‌-স্বাধীনতা বিপন্ন হয়। যেমন একসময় টিভিতে কন্ডোমের বিজ্ঞাপন দিলে কিছু লোক ক্ষেপে যেত। হয়ত মামলা করার কথাও ভাবত। তারা মনে করত এর ফলে সামাজিক বা পারিবারিক স্থিতাবস্থা বিচলিত হবে।

    কিন্তু, আপনি যদি ভূত নিয়ে কোনো কথা বলতে বা শুনতে নাও চান, অজস্র মানুষ সেটা চান। এবং ভূত আছে কি নেই, এ ব্যাপারে আপনি কোনো অথরিটি নন। সেটা রবীন্দ্রনাথ যেমন নন, কার্ল মার্ক্স বা ফ্রয়েডও নন। এ নিয়ে কথা হওয়া উচিত। এবং বিজ্ঞানের কথা যদি বলেন, বিজ্ঞান অনেকরকমের হয়। আপনি মেইনস্ট্রিম বিজ্ঞানের বাইরে কোথাও পা দেবেন না, এটা যদি সাব্যস্ত করেন, তাহলে তো আপনি নিজেও কুসংকারাচ্ছন্ন! আপনি এই পৃথিবীর ৯৯।৯৯ % ঘটনাকে মেইনস্ট্রীম বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করতেই পারবেন না। আজ থেকে একশ বছর পরেই আমাদের স্মার্টফোন আর কম্পিউটারগুলোকে কাটারি আর কোদাল গোছের কিছু মনে হবে, এটাও ঘটনা। বিজ্ঞান আজও তার আদিম স্তরেই আছে, যদি আর ৫০০ বছর পরের কথা ভাবেন। তা নিয়ে গর্ব চলে না।

    মুক্তমন কাকে বলে? সেই মনই মুক্ত যা ভূত হোক বা কোয়ান্টাম তত্ত্ব, সবকিছুকেই জানতে চায়, বুঝতে চায়। আগে থেকেই মাথায় অনাস্থা বা আস্থা পুষে রেখে জানলা বন্ধ করে দ্যায় না। বিনা প্রমাণে যপনি যদি ভূতে বিশ্বাস করতে রাজি না থাকেন, বিনা প্রমাণে অবিশ্বাসটাই করছেন কী করে? উড়িয়ে দেওয়ার আগে কোনো কুখ্যাত কবরখানা, স্মশান বা পোড়ো বাড়িতে মশার ধূপ, কার্বলিক অ্যাসিড আর একটা কোনো আত্মরক্ষার অস্ত্র সঙ্গে নিয়ে একটা অমাবস্যার রাত কাটালে হয় না? পুরোপুরি একা? সেখান থেকে নাহয় ফেসবুকে লাইভে থাকুন, আমরা সবাই দেখি আপনাকে।

    আমার সেটা করার ইচ্ছা নেই। সাহসও নেই। আমার কিছু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আছে। সেগুলো শেয়ার করার অধিকার আমার নেই। আর, অনাস্থাও নেই। ব্ত্ব বামুনের ছেলে হলেও আমি কিন্তু পৈতে নিইনি, কারণ ব্রাহ্মণ হওয়ার যোগ্যতা আমার হয়েছে বলে বিশ্বাস করি না। গোমাংসও ভক্ষণ করি।।"
  • Kaju | 237812.69.563412.229 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৯ ১১:১৬48676
  • "অবিশ্বাস জিনিসটা হল যুক্তি ও বিজ্ঞানের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, সেটা অনুগ্রহ করে মাথায় রাখবেন ।"

    vs

    "মুক্তমন কাকে বলে? সেই মনই মুক্ত যা ভূত হোক বা কোয়ান্টাম তত্ত্ব, সবকিছুকেই জানতে চায়, বুঝতে চায়। আগে থেকেই মাথায় অনাস্থা বা আস্থা পুষে রেখে জানলা বন্ধ করে দ্যায় না। বিনা প্রমাণে যপনি যদি ভূতে বিশ্বাস করতে রাজি না থাকেন, বিনা প্রমাণে অবিশ্বাসটাই করছেন কী করে?" - এটাই তো আমারও কথা। সলিড প্রুফ দিন অবিশ্বাসের পক্ষে, একেবারে নির্জলা, তাহলেই মিটে যায়।
  • T | 124512.101.780112.191 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৯ ১১:৩৩48677
  • ক্লেমটা যদি হয় 'আছে' বা কোনো কিছুর অস্তিত্ব আছে, তবে তার স্বপক্ষেই প্রমাণ দিতে হয়। আপনি প্রমাণ করে দেখান যে সেটি নেই, এরকম দাবী হয় না।

    আর সেদিন ভিডিওটা দিয়েছিলাম, কী কারণে লোকে অ্যামন কিছু দেখতে পারে বা শুনতে পারে তার একটা ব্যাখ্যার জন্য। দাদাগিরির কোনো এপিসোডে কী দেখিয়েছে তা এক্সপ্লেন করা নিয়ে নয় তো।
  • b | 236712.158.786712.69 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৯ ১১:৩৮48678
  • ভুত নিয়ে তো হচ্চিলো। সেখানে বামুন, পৈতে, গোমাংস এসব এলো কোথা থেকে?
  • র২হ | 237812.69.563412.229 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৯ ১১:৫৮48679
  • ‘নেই’এর পক্ষে আবার যুক্তি কী? কোন কিছু ‘আছে’ সেটা যুক্তি দিয়ে প্রমান করতে হয়। যুক্তি না থাকা মানে নেই।

    আর ভুত ভগবান পক্ষীরাজ সুপারম্যান যার ওপর খুশি আস্থা বিশ্বাস যা ইচ্ছে থাকুক, এই কুসংস্কার অন্ধবিশ্বাস ইত্যাদিতে আচ্ছন্ন সমাজে একজন সেলিব্রিটি, বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছে যার মতামতের গুরুত্ব আছে (অকারন বা মিসপ্লেসড হলেও), তিনি যখন একেবারে সত্যের মোড়কে এইসব ঢপবাজি প্রোমোট করেন, তার যথাসম্ভব বিরোধিতা হওয়াই দরকার।

    আর ঠাকুরমার ঝুলি, বা এমনকি গ্রহরত্নের বিজ্ঞাপনের সঙ্গেও এর একটা তফাত আছে। একটা ফিকশন, আরেকটা আপফ্রন্ট বিজ্ঞাপন। এটা সত্যের মোড়কে, যার জন্যে, মিথ্যে বলে ওঁর কী লাভ ওসব প্রশ্ন আসে। মিথ্যে বলে লাভ টিআরপি, স্ক্রিপ্ট বলে লাভ এপিসোড। এ আর জটিল হিসেব কী।
    আর এসবকে উনি যদি সত্যি ভেবেও থাকেন, তবু এগুলো এমনভাবে প্রচার করাটা ক্ষতিকর। সৌরভ তীক্ষ্ণবুদ্ধি মানুষ, এসবের প্রভাব জানেন না বলে তো মনে হয় না।
  • Kaju | 236712.158.566712.177 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৯ ১২:০৭48680
  • আমি একটা অন্য অ্যানালজি দিই।

    এই সেবার চিল্কা গেলাম, বাইরে তো ডলফিনের লাফ দেবার বড় বড় ছবি, ওঃ গেলেই ডলফিন দেখা যাবে। তো নৌকোয় বসে ক্যামেরা তাগ করে আছি। ডলফিনবাবুরা বহুদূরে র‌্যান্ডম নানা দিক থেকে মাথা তুলছে আর ডুবিয়ে নিচ্ছে। অনুমান করাই সম্ভব না যে কোথায় আবার উঠবে আর ডুববে। তো ক্যামেরা বিফল হল। এবার আমি এসে বলতে পারি ডলফিনের এই কেস। এবার যে দেখেনি সে বলবে ঢপ দেবার জায়গা নেই? এতবার দেখা গেল তো ছবি কই? অতি প্রম্পট ক্যামেরাম্যান-ও তুলতে পারবে না ঐ fraction of second-এ। তো আই দেখেছি সেটা তো সত্যি, কিন্তু প্রুফ ছাড়া কে মানবে? মিথ্যেবাদী তুমি, ঢপবাজ। কেউ আমাকে হঠাৎ এসে শাসিয়ে গেল, লাইফ থ্রেট দিল, পুলিশ বলবে প্রুফ কই? আমি কি ভয়েস রেকর্ড অন করে বেড়াব? হ্যাঁ আর না -এর সাদা কালোর মাঝখানে "হতেও পারে" বলে একটা ধূসর জায়গা আছে, সেটা মানাকেই মুক্তমন বলে। থাকলে কার কী, না থাকলেই বা কার কী? টিভিতে দেখালেই লোকের মনে একেবারে বিষ ঢুকে গেল? সবাই কচি খোকা এত? সেই নিয়ে এত লাফালাফি করে কী হবে? যে যার মত মানবে বা মানবে না। কদিন পর ভুলে যাবে। যে বলেছে তার গলা টিপতে যাব, কেস করব, হোয়াট দ্য হেল ! সৌরভ বললেই সবাই হ্যাঁ তাই তো ঠিক ঠিক করে মেনে নেবে? মূর্খ সবাই?

    যুক্তি প্রমাণ হয় সত্যের পক্ষে। কখনো আছে টা সত্য, কখনো নেই টা। আছের জন্যে হয়, নেই-এর জন্যে হয় না, বোঝালেই হল? যেটা "ঢপ" দেখানো হয়েছে, সেটা প্রমাণ দিয়ে বোঝাও যে এটা এই জন্যে হয়েছে। সেটাই বলা হল।
  • Kaju | 236712.158.566712.177 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৯ ১২:১২48681
  • যেটা কোট করলাম অনুপম মুখো-র সেটা নিয়ে কথা হোক, আমার এক লাইন নিয়ে সবাই লিখে লাভ নেই। আমি তর্ক করতে উৎসাহী নই, সময়ও নেই বারবার দেখার আর লেখার। হঠাৎ পেলাম পোস্টটা আজকে, তাই শেয়ার করলাম, খুব গোছানো লেখা, যে ঐ সাপেক্ষে কিছু বলা হোক।
  • র২হ | 237812.69.453412.44 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৯ ১২:১৬48682
  • দক্ষ ফোটোগ্রাফার অথবা একটু বেশী শাটার স্পিড হলে ডলফিনের ব্যাপারটার সুরাহা হবে। কিন্তু ভূতের যন্ত্রটা গোলমেলে।

    যাগ্গে।
    সৌরভের নামে আদৌ মামলা হবে কিনা কে জানে, হলেও কচুপোড়া হবে সেটা সবাই জানে, এক এপিসোডের পয়সা ফি নিয়ে আদালতে অনেক রাত দিন হয়ে যায়, এ তো কুসংস্কারে মদত। এই অভিযোগ হাকিম শুনলে আজকের আর্ধেক নেতা মন্ত্রীর জরিমানা হতো।
  • Irrational | 236712.158.8912.15 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৯ ১২:৩২48683
  • Question: Show that there does not exist a rational number t such that t^2=2.
    Answer: আপনি প্রমাণ করে দেখান যে সেটি নেই, এরকম দাবী হয় না। কোন কিছু ‘আছে’ সেটা যুক্তি দিয়ে প্রমান করতে হয়। যুক্তি না থাকা মানে নেই।
  • Kaju | 236712.158.786712.69 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৯ ১২:৩৬48684
  • নাঃ ভূতের যন্ত্র আমিও মানিনি, দেখে ভাবলাম একি এটা? ওটা ধরিনি সিরিয়াসলি, কেউই অত সহজে মানবে না। ভাবাবে আঁচড়ের কেসটা আর সৌরভের ঐ ছেলেটার গাব গাছের সরু পাতায় ভেসে থাকা। নিজের চোখে তো দেখেছেন ক্লাস সিক্সে। হ্যালু হিস্টিরিয়ার পাবলিক বলে কী করে ওড়াই? তাই বলে বিশ্বাসের দিকেও নেই আমি, রিয়েলি কনফিউজড। আমার কথা হল এই কনফিউসন টা অন্ততঃ থাকুক মনে। জগতের সব কিছু কে জেনে বসে আছে? পরে হাওয়া ঘুরলে গোটা ব্যাপারটাই মন থেকে মুছে যাবে। ২ দিন যাক না। মুছেই যেত এত ফেবু টেবু গরম না করলে।

    কিন্তু একটা জিনিস আমি খালি ভাবি, যে লোকটা ৮০-৮৫ বছর ধরো বাঁচল এই পৃথিবীতে, বড় হল বুড়ো হল, চুল্লীর ভেতরে দেড় সের ছাই হয়ে বা কবরে পুঁতে দিয়েই সে জাস্ট wiped out, ব্রেন হার্ট স্টপ হতেই তার যাবতীয় এনার্জি ভ্যানিশ করে গেল? এনার্জির কি নাশ আছে, সে কনভার্ট হয় অন্য এনার্জিতে। সেটা কোথায় যায়? বাতাসে পরিপার্শ্বে যে মিশছে কি মিশছে না সেটা কে দেখেছে? এটা জেনুইন প্রশ্ন আমার চিরকাল। আর খুন হলে বা অপঘাতে বা দুর্ঘটনায় টপ লেভেলের এনার্জি ভর্তি প্রাণ যে থেমে গেল, সেটাও ওরম লোপ পেয়ে গেল?
  • aranya | 347812.245.2356.158 (*) | ২১ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৩৫48712
  • দেবাশিষ, সমস্যা তো ছিল না কখনো, এগুলো মজার ঘটনা, জীবন-কে বৈচিত্র্যপূর্ণ করে :-)
  • | 237812.69.453412.116 (*) | ২১ নভেম্বর ২০১৯ ০৮:১২48713
  • হাহাহাহাহাহাহাহা
    শেষের দুটো পাতা তো খনি পুরো!

    ওহে বি,
    এই যে পাঁঠা বা ইলিশ নিজের পেটের মাপের চেয়ে বেশী খেয়ে ফেললে পাঁঠাভুত ইলিশভুতরা পেটের মধ্যে দাপাদাপি করে এনার্জির মুক্তি ঘটাবার চেষ্টা করে দ্যাখেন নাই নাকি?
  • কোশ্ন | 236712.158.9005612.43 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:২৯48718
  • অন্য গ্রহে কি তবে অন্যরকম ঈশ্বর আর অন্যরকম ভূতও থাকবে? নাকি প্রাণী যেরকমই সব যেকোনো গ্রহের যত আলোকবর্ষ দূরেই হোক, ঈশ্বর আর ভূত একইরকমের হবে? উদ্ভিদেরও তো প্রাণ আছে। তাদেরও তো এনার্জি ভরা দেহ। তাদেরও কি ভূত হবে?
  • ?? | 236712.158.895612.162 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৯48719
  • এই মুহূর্তে সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং হল মানুষের মন। তার চিন্তা ভাবনা কল্পনা (স্বপ্ন যাকে বলছেন, এই বর্গের মধ্যেই পড়ে)। যেদিন বিজ্ঞান বলে দিতে পারবে সামনের মানুষটা কি ভাবছে, সেদিন বিজ্ঞান কন্ট্রোলও করতে পারবে সামনের মানুষটা কি ভাববে। সেদিন থেকেই পৃথিবীটা একেবারে ম্যাড়ম্যাড়ে হয়ে যাবে।
  • sm | 236712.158.455612.90 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৫২48720
  • ওই জন্যই তো লিংকটা দেখতে দিলুম।যেখানে ইন্টারভিউ য়ার প্রথম কয়েক সেকেন্ড এর মধ্যেই বলছেন মোস্ট অফ দা ফিজিসিস্ট কি কি সম্মন্ধে আগ্রহী?
    প্রশ্ন হচ্ছে তারা এই ঈশ্বর বা ঈশ্বর ও ইউনিভার্স সম্পর্কে এতো আগ্রহী কেন?
    এই কোয়েস্ট ই হলো বিজ্ঞান।
    এটাকে জাস্ট দুম করে স্টপ করানো যায় না।
    যতো জিজ্ঞাসা হবে, ততো সত্যি টা বেরিয়ে আসবে।
  • আমড়াগাছি | 236712.158.676712.140 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:১৬48721
  • ভূত সম্বন্ধেও একই রকম আগ্রহী নয় বিজ্ঞানীরা আই মীন মোস্ট অফ দা ফিজিসিস্ট? নাকি সেরকমটা কোনো ইন্টারভিউয়ে বলেনি?
  • sm | 124512.101.780112.35 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:৫৩48722
  • আরে সেই কথাই তো বলছি।কোয়েস্ট এর কথা। বিজ্ঞানীরা আগ্রহী হলেই না,ওই জিনিসটি নিয়ে নাড়া চারা হবে। আরও ডিপ থিঙ্কিং চলবে।সত্য বেরিয়ে আসবে।
    ভিন গ্রহে প্রাণী কেউ দেখে নি। তাবলে কি আগ্রহ বা জিজ্ঞাসা হারিয়ে যাবে?যতো চর্চা চলবে ততই সত্য বেরিয়ে আসবে।একদিন হয়তো তেনাদের সঙ্গে টেলি যোগাযোগ হবে বা তেনাদের থাকার প্রমাণ মিলবে।এখানে তেনাদের বলতে; ভিনগ্রহী প্রাণীর কথা বলা হচ্ছে।এই আগ্রহ থেকেই বিজ্ঞানীরা আশাবাদী ;ইওরোপা উপগ্রহে ,দজলের অস্তিত্বের সম্ভাবনা প্রচুর।
    এই জিজ্ঞাসা থেকেই মানুষ ইওরোপের হুইচ সম্পর্কে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।
    একদিন এমনি করে ভূত সম্পর্কেও হয়তো আগ্রহ হারাবে।
    এমন কি ভগবান সম্পর্কেও।
    আবার এই বিজ্ঞান ই হয়তো একদিন ঈশ্বরের স্বরূপ ব্যক্ত করবে।
    ফাইনম্যান এর বক্তব্য মনে পড়ছে।
    মানুষ বরফে আছাড় খায়।এটা সাধারণ মানুষ জানে।তাই সাবধানে চলা ফেরা করে।
    কিন্তু বিজ্ঞানীর প্রশ্ন,কেন বরফে আছাড় খায় ;কিন্তু পাথরে খায় না?অর্থাৎ বরফ পিচ্ছিল কেন?
    কারণ চলার সময় পায়ের চাপে ও তাপে বরফ বিন্দু বিন্দু জলে পরিণত হয়।এবং পিছল হয়।
    ব্যাস ভালো উত্তর।কিন্তু বিজ্ঞানীর জিজ্ঞাসা কেন বরফ জল হয় বা সো অন।চলতেই থাকে। ভেরি ইন্টারেস্টিং।
    যেমন সবাই জানে নিউটন ভেবেছিল গাছ থেকে আপেল কেন নীচে পড়লো?এটাই ছিল তাঁর জিজ্ঞাসা।
    কিন্তু নিউটন একটি দ্বিতীয় কশ্চেন করেছিলেন।তাহলে মুন বা চাঁদ কেন পৃথিবীর ওপর আছড়ে পড়ছে না?
    উত্তর হলো,মুন এর ও ফ্রী ফল হচ্ছে।কিন্তু একটা এলিপটিক্যাল অ্যাঙ্গেল এ ঘুরতেই থাকছে।
    এই অঙ্ক কষার জন্য, তাঁকে ক্যালকুলাস তৈরী করতে হয়।বিজ্ঞান ও মানবজাতির অগ্রগতি হয়।
  • খ্যাঁচানো পাবলিক | 237812.69.563412.229 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০৭:০৫48723
  • ঠিকঠাক তথ্য সহকারে ঠিকঠাক যুক্তিতর্ক করুন । কাকু বা দাদুর ভিডিও দেবেন না ।
  • :) | 237812.69.453412.116 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০৭:২০48724
  • ইংরিজিটা কি এতই কঠিন বলল?
  • lcm | 237812.69.2323.25 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০৭:৪৪48725
  • এসেম,
    ভিন্ন গ্রহে কেউ প্রাণী দেখে নি, কিন্তু তা বলে কি চেষ্টা করছে না।
    কেউ কোনোদিন ভূত দেখে নি, কিন্তু তা বলে কি লোকে চেষ্টা করবে না।

    এই দুটো জিনিস কি করে একই ব্রাকেটে ফেলা যাবে।

    প্রাণ কী করে তৈরি হয়, জল বাতাস এবং যেসব উপাদান লাগে প্রাণ-এর অস্তিত্বের জন্য সেগুলি অন্য গ্রহে আছে দেখা যাচ্ছে, কিন্তু সব মিলিয়ে প্রাণী থাকার উপযুক্ত কন্ডিশন আছে কি না, থাকলেও প্রাণের সঞ্চার কোনোদিন হয়েছিল কি না - এগুলো তো ডিডাকশন বে্‌স্‌ড্‌ - মানে ঠিক র‌্যান্ডম বা অবেগ বশত কিছু নয়।

    অবশ্য আপনি যদি, ভিন্ন গ্রহে কেউ ভূত দেখে নি, তা বলে চেষ্টা করবে না -- এই লাইনে যান, তাহলে তো কোনো কথাই নেই/ আগে ভূত দিয়ে শুরু করা যাক, পরে দেখা যাবে প্রাণী আছে কি না।
  • Debasis Bhattacharya | 236712.158.566712.177 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৯ ১০:৩১48714
  • মাননীয় 'kaju',

    একেই কাজু খুব ভালবাসি, তার সঙ্গে তক্কে মন সরে না । আর তার ওপর, শিক্ষিত বয়স্ক লোকজনকে বারবার 'আসলে ভূত-টুত কিছু নেই কিন্তু, জানেন তো?' বলে বিরক্ত করতে ভাল লাগে না, কেমন লজ্জা লজ্জা লাগে ।

    মূল লেখায় যা লিখেছি লিখেছি, সে সবের পুনরাবৃত্তির দরকার নেই । আমি বরং আপনার তর্কের যুক্তিশাস্ত্রীয় নকশাটি নিয়ে কিছু বলি । এই যে বলছেন, আমরা অনেক কিছুই জানিনা, এবং সেইজন্যই ভূতপ্রেত মানতে হবে, এ রকম তর্ক আসলে যুক্তিশাস্ত্রে নিষিদ্ধ । এর কাঠামোটা হচ্ছে --- 'ক' সত্যি কিনা আমি জানিনা, অতএব 'খ' সত্যি । এ রকম সিদ্ধান্ত আসলে অসম্ভব । না, যুক্তিশাস্ত্রের পণ্ডিতেরা বিশেষভাবে আপনাকে বাঁশ দেবার জন্যই যে ষড়যন্ত্র করে এ সব নিয়ম বানিয়েছেন, তা নয় । এ নিয়ম না মানাটা বিপজ্জনক, সেই জন্যই চিন্তাভাবনা করে বানিয়েছেন, সকলেরই ভালর জন্য । মনে করুন, এ রকম যুক্তি যদি গ্রহণযোগ্য হত, এবং আমি যদি আপনাকে গিয়ে বলতাম, 'মদনপুরের সাহাবাবুর বগলে বিষফোঁড়া আছে কিনা আমি জানিনা, অতএব আমার কাছে আপনার লাখখানেক টাকা ধার ছিল, তাহলে আপনাকে বিনা বাক্যব্যয়ে সে কথা মেনে নিয়ে টাকাটা দিয়ে দিতে হত । কাজেই, ও রকম যুক্তি কখনও দেবেন না, ওটা ভাল নয় ।
  • Debasis Bhattacharya | 237812.68.674512.43 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৯ ১০:৫৬48715
  • ওপরে অনেকে সঠিক ভাবেই বলেছেন, কেউ যদি কিছু দাবি করে তো তাকেই তার নিজের দাবিটা প্রমাণ করতে হবে, আর সেটা না পারলে সে দাবি মিথ্যে বলে ধরতে হবে । সেটা না করে তিনি যদি প্রশ্নকর্তার ওপরই প্রমাণের দায় চাপিয়ে দিয়ে বলেন, অমুকটা যে নেই প্রমাণ করুন দেখি (ভূত বা ভগবান বা ইউনিকর্ন বা কুমড়োপটাশ), সেটা কোনও কাজের কথা নয় ।

    সম্ভবত এর জবাবে, কেউ কেউ গণিতের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, গণিতে অনেক কিছুর অস্তিত্বকেই 'ডিসপ্রুভ' করতে বলা হয়, যেমন, t^2=2 সমীকরণটির যে কোনও মূলদ বীজ নেই এইটা প্রমাণ করতে বলাটা গণিতে মোটেই নিষিদ্ধ নয় । এ রকম উদাহরণ অবশ্যই আরও অনেক আছে । যেমন, বিশেষ বিশেষ কিছু দ্বিঘাত সমীকরণের যে বাস্তব সংখ্যায় কোনও সমাধান নেই এইটা প্রমাণ করতে বলা যায়, বৈধভাবেই । কিন্তু গণ্ডগোলটা হচ্ছে, এই সমস্ত ক্ষেত্রে দুই বা বর্গ বা দ্বিঘাত সমীকরণ ইত্যাদি চিহ্ন বা কথাগুলোর সুনির্দিষ্ট অর্থ আছে, ভুত বা ভগবানের তা নেই । এই দুটো জিনিস ঠিক কী, সেটা পরিষ্কার করে বললে তাদের অস্তিত্ব-অনস্তিত্ব নিয়ে অর্থপূর্ণ আলোচনা সম্ভব হতেও পারে । যতক্ষণ না তা বলা হচ্ছে, ততক্ষণ এই দুটো শব্দ যুক্তি আর বিজ্ঞানের কাছে 'এম্পটি ওয়ার্ড্‌স্‌', অর্থাৎ অর্থহীন ছদ্ম-শব্দ ।
  • sm | 236712.158.895612.198 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৯ ১১:১৪48716
  • ধরা যাক, আমি বললাম,গ্রহান্তরে মানুষ বা ওইরকম উন্নত প্রাণী রয়েছে।
    এক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক দের যুক্তি কি হবে?
    আমি মিথ্যা বলছি?বা,এরকম কিছুই নেই!
    এটাই কি আধুনিক বিজ্ঞান?এভাবেই কি বিজ্ঞান সচেতন মানুষ ভাবে?
  • sm | 236712.158.895612.162 (*) | ২২ নভেম্বর ২০১৯ ১১:৩১48717
  • খুব মন দিয়ে শোনা দরকার,একজন বিখ্যাত থিওরিটিক্যাল ফিজিসিস্ট কি বলেন।
  • S | 236712.158.780112.176 (*) | ২৩ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৪১48746
  • দাদা এখন বিজেপিতে না?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত মতামত দিন