এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা— এই যোজনায় আপনার কি পাওয়ার কথা? আপনি কি পাচ্ছেন?

    Punyabrata Goon লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ | ২০৮১৯ বার পঠিত
  • ২০০৮-এর ১লা এপ্রিল দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষদের জন্য ভারত সরকার রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা বা RSBY নামে এক স্বাস্থ্যবিমা চালু করেছেন। অন্য স্বাস্থ্যবিমায় যার নামে বিমা তাকে প্রিমিয়াম দিতে হয়। এই বিমায় কিন্তু সরকার সেই ‘প্রিমিয়াম’ দিয়ে দেন, ও গরীব মানুষ বিনামূল্যে একটা নির্দিষ্ট মূল্যমান অবধি অনেক চিকিৎসা সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানেই পেতে পারেন। কিন্তু গরীব মানুষ কি জানেন তাঁর কি পাওয়ার কথা? যা পাওয়ার কথা তা তিনি পাচ্ছেন কি?

    •রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা কাদের জন্য?
    এটা হল গরীব মানুষদের জন্য করা একটা স্বাস্থ্য বিমা। সাধারণত বিমা করলে যিনি বিমা করেন, অর্থাৎ বিমাকারীকে, কিছু টাকা নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিমা কোম্পানিকে দিতে হয়। কিন্তু রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় বিমাকারীকে বিমা কোম্পানিকে কোনও টাকা দিতে হয়না। সরকার সেই টাকাটা দিয়ে দেন। বিমাকারীকে একটা কার্ড করাতে হয়। একে বলে স্মার্ট কার্ড। এই কার্ডে তথ্য সঞ্চিত থাকে—কারা পরিবারের সদস্য, ওই বছরে কতটা টাকা চিকিৎসার জন্য পরিবার ব্যয় করেছে আর কতটা টাকা তাঁরা আরও ব্যয় করতে পারেন, ইত্যাদি সবই ওই স্মার্ট কার্ড থেকে উপযুক্ত যন্ত্র দ্বারা দেখে নেওয়া যেতে পারে।
    •কিভাবে স্মার্ট কার্ড করাতে হয়?
    সরকার এই কার্ড করার জন্য বিভিন্ন গ্রামে শিবির করেন। দারিদ্র-সীমার নীচে থাকা সমস্ত পরিবারকে আগে থেকে করা তালিকার সাহায্যে চিন্হিত করা থাকে। তাঁদের সবাইকে পঞ্চায়েত অফিসের মাধ্যমে শিবিরে ডাকা হয়। সেখানে বিমাকারীকে পরিবার-পিছু এককালীন ত্রিশ টাকা দিয়ে কার্ড করাতে হয়। একটি কার্ডে এক পরিবারের পাঁচজন পর্যন্ত বিমার আওতায় আসতে পারেন। কোনও পরিবারে পাঁচজনের বেশি সদস্য থাকলেও কিন্তু পাঁচজনের বেশি বিমার সুবিধা পাবেন না। কোন পাঁচজন পাবেন সেটা পরিবারের প্রধান ঠিক করে দেন।
    •একটা স্মার্ট কার্ডে ক’টা ফটো থাকে?
    একটিই ফটো থাকে পরিবারের প্রধানের। বাকিদের ফটো তোলা হয়, এবং সরকারি কমপিউটারে সেটি থাকে, যাতে প্রয়োজন হলে বা বিতর্ক হলে দেখা যায় যে অন্যদের সবাই সত্যিই পরিবারের সদস্য কিনা। ফটো ছাড়াও থাকে সবার আঙ্গুলের ছাপ – তারও কাজ ওই একই।
    •স্মার্ট কার্ড করার শিবির অনুষ্ঠিত হবার কতদিনের মধ্যে পরিবারটি স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ পেতে পারেন?
    আগে ফটো তোলার শিবির হবার পরে স্মার্ট কার্ড হাতে পেতে কয়েক মাস লেগে যেত। এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফটো তোলার দিনই ওই শিবির থেকেই স্মার্ট কার্ড হাতে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ পেতে তারপর কয়েকদিনের অপেক্ষা।
    •রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার স্বাস্থ্য বিমার সাহায্যে কী কী চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া যায়?
    যেখানেই হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার দরকার সে সমস্ত ক্ষেত্রেই RSBY-এর স্বাস্থ্য বিমার সাহায্যে চিকিৎসার সুযোগ আছে। হাসপাতাল সরকারি হোক আর বেসরকারি, বা হোক নার্সিং হোম, সবক্ষেত্রেই একই সুযোগ। শুধু বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোমের ক্ষেত্রে তাদের নামটা রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার তালিকায় নথিভুক্ত থাকতে হবে। যেহেতু বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোমগুলো সরকার থেকেই পয়সা পেয়ে যায়, এবং সেই পয়সাটা খুব কম কিছু নয়, তাই আজকাল খুব বড় বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোম ছাড়া অধিকাংশ নার্সিং হোম বা বেসরকারি হাসপাতাল RSBY-এর তালিকায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করার চেষ্টা করছে। ফলে বহু জায়গায় এই বিমার সুবিধা মিলছে।
    •যেসব ক্ষেত্রে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার দরকার হয় না সেক্ষেত্রে বিমাকারী কি খরচ পাবেন?
    বেশ কিছু ক্ষেত্রে হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার প্রয়োজন না হলেও বিমাকারী সম্পূর্ণ সুবিধা পাবেন। একে পরিভাষায় বলা হয় ‘ডে কেয়ার’। যেমন ধরুন ছানি কাটার অপারেশন করে ডাক্তারবাবু রোগীকে একদিন ভর্তি রাখতে না-ও পারেন। সকালে অপারেশন করে সন্ধ্যেয় ছেড়ে দিতে পারেন। তবু রোগী কিন্তু বিমার পুরো সুবিধা পাবেন। এরকম কতকগুলি বিশেষ ক্ষেত্র আছে—যেমন কিডনির রোগীর জন্য ডায়ালিসিস। এইসব নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের একটি তালিকা আছে। এর বাইরে অন্য চিকিৎসার জন্য যদি রোগী হাসপাতালে ভর্তি না হন তো তাঁকে বিমার সুবিধা দেওয়া যাবে না, নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে চিকিৎসা চালাতে হবে।
    •হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে আউটডোর চিকিৎসা অর্থাৎ ডাক্তারের ফি ও ওষুধের খরচ কি তাহলে এই বিমা থেকে পাওয়া যাবে না?
    সাধারণভাবে বলতে গেলে, না, পাওয়া যাবে না। কিন্তু সেখানেও বিশেষ পরিস্থিতিতে এই খরচ পাওয়া যেতে পারে। হাসপাতালে ভর্তি হবার আগে ভর্তি হবার জন্য কিছু পরীক্ষা করাতে হলে বা কিছু ওষুধ খেতে হলে হাসপাতাল সেই বিমাকারীকে সেসব বিনাপয়সায় করিয়ে দিতে পারে – কিন্তু প্রমাণ রাখতে হবে দেখাতে হবে যে তিনি যথাযথ ডাক্তারি পরামর্শক্রমে হাসপাতালে ভর্তি হবার আগের ধাপ হিসেবেই ওই পরীক্ষাগুলি করিয়েছিলেন, এবং পরে নিয়মমাফিক ভর্তিও হয়েছিলেন। আর হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সময় হাসপাতালটি রোগীকে বাড়িতে ব্যবহারের জন্য পাঁচদিনের ওষুধ ইত্যাদি দিয়ে দেবে – সেটার খরচও হাসপাতাল বিমার টাকা থেকেই পেয়ে যাবে।
    •‘প্যাকেজ চার্জ’ ব্যাপারটা কী?
    ‘প্যাকেজ চার্জ’ ব্যাপারটা হল এই যে কিছু বিশেষ চিকিৎসার ক্ষেত্রে সব কিছু হাসপাতাল নিখরচায় করে দেবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ভর্তি হবার আগের ওষুধ, অপারেশন, ভর্তি থাকাকালীন শয্যা, নার্সিং, চিকিৎসা, ওষুধ, খাবার, ও ছেড়ে দেবার পরে দরকারি ওষুধ ও ডাক্তারের কাছে ফলো-আপ – এই সব মিলিয়ে একটা থোক টাকা ধরা থাকে। পুরোটাই হাসপাতাল করে দেবে ও রোগীর কাছ থেকে এক পয়সা নেবে না – পরে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কাছ থেকে পুরোটাই পেয়ে যাবে। ‘প্যাকেজ চার্জ’-এর লিস্টে নেই, কিন্তু প্যাকেজে আসতে পারে, এমন কিছু কিছু চিকিৎসাতেও হয়তো হাসপাতাল আগেভাগে অনুমতি নিয়ে রোগীকে ‘প্যাকেজ চার্জ’-এর সুবিধা দিতে পারে।
    •কোন কোন মেডিকাল রোগের ক্ষেত্রে ভর্তির সুবিধা পাওয়া যাবে?
    ব্যাক্টেরিয়াল মেনিঞ্জাইটিস, ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাস-ঘটিত ব্রংকাইটিস, জল বসন্ত, ডেঙ্গু-জ্বর, ডিপথেরিয়া, আমাশা, মৃগী, ফাইলেরিয়াসিস, খাদ্য থেকে বিষ-ক্রিয়া, হেপাটাইটিস, ম্যালেরিয়া, হাম, প্লেগ, নিউমোনিয়া, সেপ্টিসিমিয়া, সব ধরনের যক্ষ্মা, টিটেনাস, টাইফয়েড, ভাইরাল জ্বর, মূত্র নালীর জীবাণু-সংক্রমণ, শ্বাসতন্ত্রের নীচের অংশের সংক্রমণ, ইত্যাদি যে সব রোগে ভর্তি থাকার দরকার হতে পারে, সে সব ক্ষেত্রে বিমার সুবিধা পাওয়া যায়। কিন্তু প্রতিদিনে সর্বোচ্চ মাত্র ৫০০টাকা খরচ বিমা কোম্পানি দেয়।
    •মেডিকাল রোগী কি কি পাবেন?
    জেনেরাল ওয়ার্ডে বেড ভাড়া, সব ধরনের ডাক্তারের ফি, রক্ত, অক্সিজেন, ওষুধ, এক্স-রে ও অন্যান্য পরীক্ষা, রোগীর খাবারের দাম ধরা থাকে মেডিকাল রোগীদের প্যাকেজে। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তির এক দিন আগে থেকে, হাসপাতাল থেকে ছুটির পাঁচ দিন পর অবধি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধের খরচ হাসপাতালের দেওয়ার কথা। কিন্তু বলা বাহুল্য দিনে ৫০০ টাকা এসবের জন্য একান্তই অপর্যাপ্ত।

    •মেডিকাল রোগী আইসিইউ-তে ভর্তি হলে কি পাবেন?

    জেনেরাল ওয়ার্ডের মত সব কিছুই পাবেন। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দিনে ৭০০টাকা অবধি বিমা কোম্পানি দেবে।

    •সার্জিকাল রোগীর কি কি সুবিধা পাওয়ার কথা?

    অধিকাংশ অপারেশনের প্যাকেজ নির্দিষ্ট আছে। এই প্যাকেজে জেনেরাল ওয়ার্ডে বেড ভাড়া, নার্সিং-এর খরচ, শল্যচিকিৎসক, অজ্ঞান করার চিকিৎসক ও অন্যান্য চিকিৎসকের ফি, অজ্ঞান করার গ্যাস ও ওষুধ, রক্ত, অক্সিজেন, ওটি ভাড়া, শল্যচিকিৎসায় প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, ওষুধ-পত্র, প্রস্থেসিস ও ইমপ্ল্যান্টের দাম, এক্স-রে ও অন্যান্য পরীক্ষা, রোগীর খাবারের দাম ধরা থাকে। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তির এক দিন আগে থেকে, হাসপাতাল থেকে ছুটির পাঁচ দিন পর অবধি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধের খরচ হাসপাতালের দেওয়ার কথা। সার্জিকাল প্যাকেজগুলোতে অর্থের পরিমাণ কিন্তু পর্যাপ্তই।

    কি অপারেশন?কত দিন ভর্তি থাকবেন?প্যাকেজে অর্থের পরিমাণ (টাকায়)
    ড্যাক্রাওসিস্টোরাইনোস্টমি (নেত্রনালীর অপারেশন)১ ৯০০০
    টনসিল অপারেশন (দুইদিকের)১৭০০০
    টনসিল অপারেশন (একদিকের)১৫৫০০
    অ্যাপেন্ডিসেক্টমি২৬০০০
    অ্যাপেন্ডিক্সের ফোঁড়ার পূঁজ বার করা ২৭০০০
    স্তন কর্তন৩১২,২৫০
    স্তনের টিঊমার কেটে বাদ দেওয়া (একদিকের)২৫০০০/৬২৫০
    পেট কেটে পিত্তথলি বাদ দেওয়া ৩১৩,২৫০
    মলদ্বারের ফিসার কেটে বাদ দেওয়া২৭০০০
    মলদ্বারের পাশে ফিসচুলা অপারেশন২৭৫০০
    এপিগ্যাস্ট্রিক হার্নিয়া ৩১০,০০০
    অপারেশন পরবর্তী ইনসিশনাল হার্নিয়া৩১২,২৫০
    আম্বিলিকাল হার্নিয়া ৩৮৪৫০
    ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া৩৭০০০
    একদিকের হাইড্রোসিল২৩৭৫০/৪০০০
    দুদিকের হাইড্রোসিল২৫০০০
    অর্শ ২৫০০০
    সিবেসিয়াস সিস্ট ভর্তি হবে না১২০০
    পেট কেটে জরায়ু কর্তন৫১০০০০/১২৫০০
    যোনি পথে জরায়ু কর্তন ৫১০০০০
    স্বাভাবিক প্রসব২২৫০০
    সিজারিয়ান সেকশন৩৪৫০০
    ল্যাপ অ্যাপেন্ডিসেক্টমি২১১০০০
    ল্যাপ কোলিসিস্টেক্টমি৩১০০০০
    ছানি (একচোখের)ভর্তি হবে না ৩৫০০
    ছানি (দুই চোখের) ভর্তি হবে না ৫০০০
    বাচ্চাদের ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া (একদিকের)৩৭০০০
    বাচ্চাদের ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া (দুইদিকের) ৩১০,০০০
    মূত্রনালীপথে প্রস্টেট-কর্তন৩১৪,২৫০
    পেট কেটে প্রস্টেট-কর্তন২১৫,৭৫০
    মূত্রনালীকে বাড়ানো (ইউরেথ্রাল ডায়লেটেশন)১২২৫০
    সব প্যাকেজের সাম্প্রতিক অর্থমূল্যের জন্য ওয়েবসাইট দেখুন।

    •হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে গিয়ে রোগী কার সঙ্গে কথা বলে এইসব সুবিধা সম্পর্কে জানবে?
    যে সব হাসপাতাল বা নার্সিং হোম রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় নথিভুক্ত, সেখানকার কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হল RSBY-এর জন্য একটি নির্দিষ্ট কাউন্টার রাখা। সেখানে এইসব সুবিধা কিভাবে পাওয়া যায় সেব্যাপারে রোগীকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে। এমনকি যদি সেখানকার স্মার্ট কার্ড মেশিনটি কোনও কারণে কাজ না করে, সেই অজুহাতে রোগীকে ফেরানো বা টাকা চাওয়া চলবে না; হাসপাতালের দায়িত্ব হল যেভাবে হোক ওই কার্ডটির ব্যবহার করা। রোগীর দায়িত্ব কেবল যথাযথ কার্ডটি সঙ্গে নিয়ে পৌঁছানো। পরিবারে নথিভুক্ত যে কোনও সদস্যের হাতের ছাপ দিলেই কার্ডটি মেশিনে নথিভুক্ত হবে, কার্ডে কত টাকা আছে জানা যাবে, এবং তত টাকার চিকিৎসা হাসপাতাল বা নার্সিং হোম (ভর্তি রোগীর ক্ষেত্রে) বিনা পয়সায় করাতে বাধ্য। তার চাইতে বেশি টাকা লাগলে সেটা আগেভাগে জানিয়ে রোগীর কাছ থেকেই সেই অতিরিক্ত পয়সাটা নিতে হবে।
    •তার মানে স্মার্ট কার্ড থাকলেও হাসপাতালে ভর্তি রোগী পকেট থেকে খরচা করবে?
    আগেই বলা হয়েছে, পরিবারের সর্বোচ্চ পাঁচ সদস্য পিছু বছরে সর্বোচ্চ ত্রিশ হাজার টাকা। ধরুন পরিবারে বাবা, মা, দুই মেয়ে ও এক ছেলে। ছেলের হাইড্রোসিল চিকিৎসার জন্য চার হাজার টাকা খরচ হয়েছে, এক মেয়ের পিত্তপাথুরির জন্য দশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, মায়ের গর্ভাশয় কেটে বাদ দিতে গেছে চোদ্দহাজার টাকা। তাহলে মোট আটাশ হাজার টাকা একবছরে খরচ হয়েই গেছে। এবার বাবার চোখ অপারেশনের জন্য যদি সাড়ে তিন হাজার টাকা লাগে তো রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার স্মার্ট কার্ড থেকে দুহাজার টাকার বেশি দেবেনা, বাকি দেড় হাজার টাকা পকেট থেকে দিতে হবে। কিন্তু এই অপারেশনটা যদি সেই বছরের পরে করা যায় তো কার্ডে আবার ত্রিশ হাজার টাকা জমা করবেন সরকার, এবং বাবার চোখ অপারেশনের জন্য সাড়ে তিন হাজার হাজার টাকা পুরোটাই সেখান থেকে পাওয়া যাবে। কার্ডের হিসেবে কবে নতুন বছর শুরু হবে সেটা জানতে হবে। সেটা কার্ড দেবার সময়ে বলে দেওয়া হয়, তাছাড়া হাসপাতালে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কাউন্টার থেকেও সেটা জেনে নেওয়া যায়।
    •যে সব অসুখ আগে থেকে আছে সে ক্ষেত্রে কি রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার সুবিধা পাওয়া যাবে?
    সাধারণত স্বাস্থ্যবিমা করার আগে থেকে কোনও অসুখ থাকলে বিমা কোম্পানিগুলো সেই অসুখ বা তার ফলে উদ্ভূত কোনও অসুখের চিকিৎসার জন্য টাকা দেয় না। ধরা যাক কোনও ডায়াবেটিস রোগী সাধারণ কোম্পানির কাছে পয়সা খরচ করে স্বাস্থ্যবিমা করালেন – বিমা কোম্পানি দেখে নিল বিমা করার আগে থাকতেই তাঁর ডায়াবেটিস রোগ আছে। এবার ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসার জন্য তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে খরচ করলে বিমা কোম্পানি একপয়সাও দেবে না। শুধু তাই নয়, ধরা যাক তাঁর ডায়াবেটিস-এর ফলে কিডনি নষ্ট হয়ে গেল, ডায়ালিসিস করতে হল। বিমা কোম্পানি ডায়ালিসিস-এর জন্যও একপয়সাও দেবে না। এদিক থেকে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার সুবিধা অনেক বেশি, কেননা বিমা করার আগে থাকতে কোনও অসুখ থাকলেও সেব্যাপারে চিকিৎসার খরচ এই বিমাতে পাওয়া যাবে। তাই এই বিমা করার সময়ে বিমাকারীর কোনও অসুখ আছে কিনা সেসব পরীক্ষাও করা হয়না।
    •প্রসবকালীন খরচ কি রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার থেকে পাওয়া যায়?
    হ্যাঁ। আগেই বলেছি স্বাভাবিক প্রসবে প্যাকেজ ২৫০০ টাকার, জটিল প্রসব বা সিজারিয়ান সেকশনে ৪৫০০ টাকা।
    •RSBY-তে রাহা খরচ পাওয়া যায়?
    একটা খরচ রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার থেকে পাওয়া যায়, যা আর কোনও বিমায় পাওয়া যায় না। তা হল হাসপাতালে ভর্তির জন্য যাতায়াতের খরচ, বা রাহাখরচ। প্রতিবার হাসপাতালে ভর্তির জন্য বিমাকারী যাতায়াতের খরচ হিসাবে ১০০ টাকা পান। তবে একটি বিমা চালু থাকা অবস্থায় বিমাকারী পরিবার সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ ১০০০ টাকার বেশি রাহাখরচ পাবেন না, তারপর হাসপাতালে ভর্তি হলেও নিজের খরচে যেতে-আসতে হবে। এই রাহাখরচ পাবার জন্য কোনও ট্রেন-বাসের টিকিট বা ওইরকম কোনও প্রমাণপত্র দেখাতে হয়না।
    পরিষেবা-প্রদানকারী হাসপাতাল/নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে কাকে জানাবেন?
    নথিভুক্ত হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে দেখবেন রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবীমা যোজনার একটি বোর্ড বা ব্যানারে RSBY-কার্ড হোল্ডারদের দায়িত্ব ও কর্তব্য/ হাসপাতালের দায়িত্ব ও অধিকার লেখা আছে। সেখানে জেলার কিয়স্কের নম্বর পাবেন। টোল ফ্রি একটি নম্বর আছে ১৮০০-৩৪৫-৫৩৮।
    এছাড়া রাজ্যের সর্বোচ্চ নোডাল এজেন্সি-র কথা জেনে রাখুন—
    Director, ESI (MB) Scheme,
    Govt. of West Bengal,
    P-233, C.I.T. Scheme-VIIM, Bagmari Road, Kolkata-700054
    Contact No: (033)2355-6385 /6162 , 033-23556384(RSBY Cell)

    বাস্তবে RSBY-এর সুযোগ গরীব মানুষ কতটা পাচ্ছেন?
    •মাস খানেক আগে কুলপি-তে এক সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক এক ওয়ার্কশপে গিয়ে দেখা গেল। উপস্থিত RSBY-কার্ড হোল্ডারদের অধিকাংশকে নিজের পকেট থেকে অতিরিক্ত খরচ করে চিকিৎসা পেতে হয়েছে। অ্যাপেন্ডিসেক্টমি বাবদ কার্ড থেকে কাটা হয়েছে ৬০০০ টাকা, ওষুধ-পথ্য-নার্সিং খরচ ইত্যাদি দেখিয়ে আরও হাজার সাতেক খরচ পকেট থেকে। সিজারের খরচ কার্ড থেকে এসেছে, সঙ্গে লাইগেশনের খরচ নেওয়া হয়েছে দেড় হাজার টাকা। ইত্যাদি, ইত্যাদি...।
    •কার্ড রিনিউয়ালের জন্য অনেকের কাছ থেকে ৫০টাকা করে নেওয়া হচ্ছে, যদি এটা বিনামূল্যে করার কথা।
    •মুর্শিদাবাদের নিয়মিত সামাজিক কাজে যান এমন এক সিনিয়ার স্ত্রীরোগবিদের পর্যবেক্ষণ—প্রচুর বেড়ে গেছে জরায়ু-কর্তন অর্থাৎ হিস্টেরেক্টমির হার, স্ত্রীরোগবিদরা দিনে ২-৩টে করে হিস্টেরেক্টমি করছেন—অধিকাংশই যথোপযুক্ত কারণ ছাড়া। (গত বছর প্রচারিত আমির খানের সত্যমেব জয়তের চতুর্থ এপিসোড মনে করুন। সেখানেও দক্ষিণের বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চলের কথা বলা হয়েছিল যেখানে মহিলাদের জরায়ু নেই।)
    • একশ দিনের কাজের নিশ্চয়তা প্রকল্প ও রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-র সুযোগঃ ২০১২ সাল থেকে এই রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের আর একটি প্রকল্প RSBY-এর সাথে যুক্ত হয়ে পড়েছে। মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট তথা MGNREGA – এর একশ দিনের কাজের নিশ্চয়তা প্রকল্পে বেশিদিন কাজ করেছেন (১৫ দিন বা তার বেশি) তাঁর ও তাঁর পরিবারকে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-র সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। যারা বছরে ১৫ দিনের বেশি MGNREGA – তে কাজ করেছেন তাঁদের অধিকাংশই গরীব সেটাও ঠিক। কিন্তু এদের আলাদা করে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-তে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে সে ব্যাপারটা গ্রামের গরীব মানুষেরা এখনও বুঝে উঠতে পারেন নি, ফলে এই সুযোগে গ্রামের করিতকর্মা মাতব্বরেরা বেশ কিছু বাবুলোকের নামও এই নিখরচায় স্বাস্থ্য বিমাতে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। মাতব্বরেরা অন্যায়ভাবে এইসব বাবুলোকের একশ দিনের কাজের প্রকল্পের ‘জব কার্ড’ করিয়ে দিয়েছিলেন, তারপর সেগুলো বাৎসরিক আর্থিক চুক্তিতে ভাড়া নেন, আর গ্রামের সব কাজের প্রকল্পেই এদের কার্ডগুলো ব্যবহার করেন। ফলে রেকর্ড অনুযায়ী, ওই কার্ডগুলোর মালিকরা বছরে ১৫ দিনের বেশি MGNREGA – তে কাজ করেছেন। যদিও এঁরা সত্যিকারের কাজ কিছু করেন নি, ভারপ্রাপ্ত অফিসারকে চাপ দিয়ে কম কাজকে বেশি কাজ বলে জবরদস্তি করে দেখিয়ে সরকারের MGNREGA – র টাকা মেরে দিয়েছেন। কিন্তু খাতায়-কলমে তাঁরা ১৫ দিনের বেশি কাজ করেছেন বলে দেখানো আছে, ফলে তাঁরাই আবার নিখরচায় স্বাস্থ্য বিমার অধিকারী হয়ে যান!
    রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-র কার্ড ও তার সুবিধাভোগীদের নানা অভিজ্ঞতাঃ
    রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা প্রকল্পের জন্য প্রত্যেক প্রাপকের নামে ছাপানো স্লিপ আসে ও সেগুলো তাঁদের দিয়ে দেওয়া হয়। পরদিন তাঁরা পরিবারের সব সদস্যদের নিয়ে যেখানে এজেন্সিটি ক্যাম্প করেছে সেখানে এসে ফটো তোলার জন্য লাইন দেন। সকালের দিকে তুলনায় ফাঁকা থাকে, কেননা গ্রামের মানুষ তখন রুজি-রোজগারের ধান্দায় ক্ষেতে খামারে। এখানে প্রথমে ত্রিশটাকা দিয়ে রসিদ নেওয়া, তারপর ঘরের মধ্যে ক্যামেরার সামনে পরিবারের পাঁচজনের ছবি তোলা, পাঁচজনের বুড়ো আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া – পরিবারের কাজ শেষ। গ্রাম-পঞ্চায়েতের একজন কর্মচারী তাঁর বুড়ো আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে পরিবারটিকে সনাক্ত করতে সাহায্য করেন। ব্যাস - সঙ্গে সঙ্গেই পরিবারের কর্তার হাতে কার্ডটি তুলে দেওয়া হয়। কার্ডে পরিবার-প্রধানের মুখের ছবি ও নাম থাকে। বিগত বছরগুলোতে কিন্তু কার্ড পরে দেওয়া হতো। অনেক সময় ফটো তোলার পরে কার্ড মিলতে বছর গড়িয়ে যেত। তাই এখন সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহ বেড়েছে। যেমন পাট ছাড়ানোর সময়ে মানুষ সকালে আসতে পারেন না, তিনটের পর থেকে ভিড় জমান, আর রাত্রি আটটা পর্যন্ত কাজ করেও শেষ করা যায় না।
    কার্ড করতে আসা পরিবারগুলোর কথা থেকে জানা যায়, গত বছর কোনও পরিবার অপারেশন করিয়েছে, টাকা লাগেনি। কেউ হয়তো এসেছেন - কার্ড করানোর পরে তবে তাঁর বাবার চোখের ছানি কাটাতে পারবেন। কিন্তু ছুবান ভাই, পানসুন্দুরী বেওয়ারা অন্য কথা বলেন। কার্ড করে তাঁরা পরিবারের মানুষকে তালিকাভুক্ত নার্সিং হোমে ভর্তি করিয়েছেন, অপারেশন হয়েছে। তারপর ছুটির সময়ে নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ কার্ডটি নিয়ে দুঃখ-দুঃখ মুখ করে বলেছেন – আঙ্গুলের ছাপ মিলছে না, জাল কার্ড? নাকি আঙ্গুলের ছাপটা ভালো করে নেয় নি? যাহোক, তাঁদের তো টাকাটা দিতে হবে। তখন তাঁরা ধার-কর্জ করে টাকা দিয়ে এসেছেন। আসলে নার্সিং হোম কার্ড নিয়ে টাকা বের করে নিল, আর নিরক্ষর মানুষগুলোর কাছ থেকেও টাকা নিল – তাঁরা বুঝতেই পারলেন না।
    রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা – সব ঠিক আছে কি?
    MGNREGA –তে গ্রামের মাতব্বরেরা অন্যায়ভাবে নানা বাবুলোকের একশ দিনের কাজের প্রকল্পের ‘জব কার্ড’ করিয়ে দেন, তারপর সেগুলো বাৎসরিক আর্থিক চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে গ্রামের সব কাজের প্রকল্পেই এদের কার্ডগুলো ব্যবহার করেন, রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনাতেও সেরকম দুর্নীতি ঘটছে। সরকারের টাকা মারা যাচ্ছে, গরীবের কার্ড হচ্ছে না, হলেও অনেক নার্সিং হোম টাকা লুটেপুটে খাচ্ছে। এটা একটা চিন্তার বিষয়। বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোমের রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কাউন্টারে কিভাবে কত টাকা নেওয়া হল সেটা সরল গরীব গ্রামীণ মানুষ, যাঁদের অনেকে আবার নিরক্ষর, তাঁরা ধরতেই পারেন না।
    কিছু দক্ষিণ ২৪ পরগণা ও মুর্শিদাবাদের কিছু অভিজ্ঞতার কথা আগেই বলেছি।
    •এছাড়া আপনি কার্ড নিয়ে দেখাতে গেলেন—ভর্তির প্রয়োজন নেই তবু ভর্তি করে নেওয়া হল। নামমাত্র চিকিৎসা করে মিথ্যা নথিপত্র দিয়ে বেশি টাকা তুলে নেওয়া হল—এমনটা হচ্ছে।
    •ছোট কোন অপারেশন হল, যার প্যাকেজ-মূল্য কম। নথিপত্রে দেখানো হল বড় অপারেশন হয়েছে। বেশি টাকা কার্ড থেকে কেটে নেওয়া হল। আপনার পকেট থেকে টাকা গেল না বটে, কিন্তু এ বছরের মধ্যে পরিবারের কাউকে যদি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, তখন বরাদ্দ কিন্তু কম হয়ে থাকবে।।
    মানুষকে সচেতন করার জন্য এ লেখা যাতে তাঁরা RSBY-এর সুবিধা নিতে পারেন, কিন্তু একটা প্রশ্ন থেকেই যায়—RSBY-ই কি সমাধান? গরীব মানুষের চিকিৎসার জন্য সরকার খরচ করছে, কিন্তু সেটা সরকারি ব্যবস্থাপনায় নয়, বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিং হোমে। সরকার যে খরচ করছে তা কিন্তু জনসাধারণের করের-ই টাকা। তাহলে টাকার অভাবে সরকার ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এই লক্ষ্যপূরণের উদ্দেশ্যে এগোতে পারছেন না, এটা তো বলা যায় না।
    সরকারই যখন টাকা খরচ করছে, তখন সরকার সরকারি হাসপাতালের উন্নতি ঘটাচ্ছে না কেন, যাতে সেখানেই উন্নত পরিষেবা দেওয়া যায়, রোগীকে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যবস্থায় যেতে হয় না? উলটে সরকার সরকারি হাসপাতালে যেটুকু ফ্রি ছিল সেসব বন্ধ করে দিচ্ছে, সেখানে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের নাম করে সব লাভ ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিচ্ছে, এমনকি গোটা হাসপাতালটাই দিয়ে দিচ্ছে......।
    দ্বাদশ পরিকল্পনার আগে যোজনা কমিশন ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’-এর লক্ষ্যে কি কি করণীয় সে বিষয়ে সুপারিশ করতে এক উচ্চ-স্তরীয় বিশেষজ্ঞ দল গঠন করেন। ডা শ্রীনাথ রেড্ডির নেতৃত্বাধীন সে দলের সুপারিশ ছিল সরকার স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় সামান্য বাড়িয়ে প্রাথমিক, দ্বিতীয় ও সর্বোচ্চ স্তরের চিকিৎসা বিনামূল্যে সমস্ত নাগরিককে দিক। তাঁরা স্বাস্থ্যবিমার বিরুদ্ধে বলেন, স্বাস্থ্যপরিষেবার বেসরকারিকরণের বিরোধিতা করেন। যোজনা কমিশন বিশেষজ্ঞ দলের সুপারিশ মানে নি। ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ বাক্যবন্ধটুকু রেখে দিয়ে তারা বলছে সরকার পরিষেবা-প্রদানকারীর ভূমিকা থেকে সরে এসে ব্যবস্থাপনার কাজ করবে। তাদের প্রস্তাব কেবল গরীব মানুষদের জন্য RSBY নয়, সব নাগরিকের জন্যই এমন বিমা ব্যবস্থা থাকবে, যেখানে প্রিমিয়াম (জনগণের পয়সায়) দেবে সরকার, একটা নির্দিষ্ট সীমা অবধি খরচ কার্ডধারী পাবেন, তার ওপরে খরচ করতে হবে নিজেকে।
    স্বাস্থ্যবিমা সমাধান হতে পারে না, সবার জন্য স্বাস্থ্যের সবটুকু প্রয়োজন সরকারকে মেটাতে হবে এই আমাদের দাবী হওয়া উচিত। কিন্তু যতক্ষণ না তা হচ্ছে, ততদিন RSBY-এর যতটা সুবিধা আপনার প্রাপ্য বুঝে নিন—আপনার প্রাপ্যে যেন ভাগ না বসায় স্বাস্থ্য-ব্যবসায়ী।

    এই রচনায় অফুরান সাহায্য নিয়েছি ডা জয়ন্ত দাসের। তিনি যে পত্রিকার কার্যকরী সম্পাদক সেই ‘স্বাস্থ্যের বৃত্তে’ পত্রিকার দশম সংখ্যায় প্রকাশিত বাবু সাহার রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা বিষয়ক একটি প্রবন্ধের প্রচুর সাহায্য নিয়েছি আমার রচনায়।

    দুর্বার ভাবনা পত্রিকার সেপ্টেম্বর ২০১৩ সংখ্যায় প্রকাশিত।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ | ২০৮১৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • π | 118.12.173.94 (*) | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ ০২:০৯47030
  • 'গরীব মানুষের চিকিৎসার জন্য সরকার খরচ করছে, কিন্তু সেটা সরকারি ব্যবস্থাপনায় নয়, বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিং হোমে। সরকার যে খরচ করছে তা কিন্তু জনসাধারণের করের-ই টাকা। তাহলে টাকার অভাবে সরকার ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এই লক্ষ্যপূরণের উদ্দেশ্যে এগোতে পারছেন না, এটা তো বলা যায় না।
    সরকারই যখন টাকা খরচ করছে, তখন সরকার সরকারি হাসপাতালের উন্নতি ঘটাচ্ছে না কেন, যাতে সেখানেই উন্নত পরিষেবা দেওয়া যায়, রোগীকে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যবস্থায় যেতে হয় না? উলটে সরকার সরকারি হাসপাতালে যেটুকু ফ্রি ছিল সেসব বন্ধ করে দিচ্ছে, সেখানে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের নাম করে সব লাভ ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিচ্ছে, এমনকি গোটা হাসপাতালটাই দিয়ে দিচ্ছে......।'

    এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। শুনেছিলাম, এই প্রোজেক্টের জন্য সরকার যে পরিমাণ খরচ করছে, বাস্তবে চিকিৎসায় তার চেয়ে অনেক কম খরচ হবার কথা। হচ্ছেও। ( ফিগারগুলো ভুলে গেছি, পুণ্যদা বা আর কেউ লিখলে ভালো হয়) ।অর্থাৎ টাকাটা বিমা কোম্পানি বা বেসরকারি হাসপতালগুলোর পেটে যাচ্ছে। এনিয়ে কেউ বিস্তারিত লিখলে ভাল হয়।
  • π | 118.12.173.94 (*) | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ ০২:১৮47031
  • বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতাল থেকে শ্রমিক সুরক্ষা যোজনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমীক্ষা করে কিছু খুব দরিদ্র পরিবারকে সেই যোজনায় কার্ড দেওয়া হয়েছে, যাঁরা বিপিএল বা RSBY এর কার্ড পাননি। এঁদের কাছ থেকে RSBY এর মতই খরচ নেওয়া হবে, বাকি খরচ চাঁদা, অনুদানের সাহায্যে তোলা হয়েছে। এটা একবছর চললে বোঝা যাবে, চিকিৎসার খরচ বাস্তবে ঠিক কত হচ্ছে। সরকার যে পরিমাণ টাকা ঢালছে, সেটা যথাযথ চিকিৎসার পিছনেই যাচ্ছে নাকি অন্যদের হাতে । এটা দেখা খুব দরকার।
  • ঈশান | 60.82.180.165 (*) | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ ০২:৩৪47021
  • আমার এখানে একটা, কি বলব, সেমি অ্যাকাডেমিকই বলি, প্রশ্ন আছে। "বাস্তবে RSBY-এর সুযোগ গরীব মানুষ কতটা পাচ্ছেন?" -- এর উত্তর, এই নিবন্ধ থেকে যা বুঝলাম, তেমন পাচ্ছেন না। দ্বিমতের বিশেষ জায়গাই নেই, স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার শূন্য, তবুও নেই, কারণ, সরকারি স্তরে আমলাতান্ত্রিক গাফিলতি আর বেসরকারি জায়গায় বিমার ঘাপলা দুটোই স্রেফ উপভোক্তা হিসেবে চোখে দেখা। সিস্টেমটাই এরকম, সে নিয়ে সন্দেহ নেই।

    কিন্তু কথা হল, অতঃপর করণীয়টা কি? মানে ধরুন, আপনি এখানে লিখলেন, আমি জানলাম, আরও পাঁচটা লোক জানল, এভাবে অনেক লোক জানবে এবং জনসচেতনতা বাড়বে, তারপর বীমার সুবিধে সবাই চাইবে, বা সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যব্যবস্থা সম্পর্কে একটা চেতনা তৈরি হবে, এটা একটা পন্থা নিশ্চয়ই। কিন্তু এটা তো কেবলই নীচতলা থেকে চাপ বাড়ানোর চেষ্টা। উপরতলা থেকেও পলিসি লেভেলে এমন একটা কিছু করা জরুরি নয় কি, যেটা শুধু বীমার সিদ্ধান্ত নিয়েই ক্ষান্ত দেবেনা, "বাস্তবে" কি হচ্ছে, সেটা দেখা এবং মাপাও পলিসির অংশ হবে?

    এইটা নিয়ে একটু আলোচনা চাইছি। এই একই বক্তব্য আমার NREGEA নিয়েও। আমি নেহাৎই আধা-তাত্ত্বিক স্তরে এ নিয়ে খানিক বলতেই পারি, কিন্তু আপনার মতামতটা জানতে চাই।
  • Dr. Jnan Sil | 127.194.72.18 (*) | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৩:৪৭47032
  • "মুর্শিদাবাদের নিয়মিত সামাজিক কাজে যান এমন এক সিনিয়ার স্ত্রীরোগবিদের পর্যবেক্ষণ—প্রচুর বেড়ে গেছে জরায়ু-কর্তন অর্থাৎ হিস্টেরেক্টমির হার, স্ত্রীরোগবিদরা দিনে ২-৩টে করে হিস্টেরেক্টমি করছেন—অধিকাংশই যথোপযুক্ত কারণ ছাড়া। (গত বছর প্রচারিত আমির খানের সত্যমেব জয়তের চতুর্থ এপিসোড মনে করুন। সেখানেও দক্ষিণের বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চলের কথা বলা হয়েছিল যেখানে মহিলাদের জরায়ু নেই।)"।
    আমার মনে হয় যদি ঘ্ট্নাটি সি বি আই বা সে ধরনের কোনো অথরিটি কে দিয়ে তদন্ত করানো যায় তাহলে এই জেনোসাইড বন্ধ হবে। দৈনিক কাগজে লেখানো যায়? বি টি এ নিয়ে আমি কাউকে পাশে পাইনি। ইতিমধ্যে আমাকে তারা প্রশাসক ও ডাক্তারের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। আমি এখন কেবল টি বি সীল বিক্রেতা।
  • aka | 22.207.104.59 (*) | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:০১47022
  • ইন্টারেস্টিং বিষয়।

    কর্মসূত্রে এই নিয়ে আমেরিকায় কাজ করার অভিজ্ঞতা হয়েছে। তার খানিকটা শেয়ার করি।

    আমেরিকায় একেই বলে মেডিকেইড ইন্সিওরেন্স বা দরিদ্রের জন্য ইন্সিওরেন্স।

    ফান্ড আসে মূলত ফেডারাল গভর্নমেন্ট থেকে। বাকিটা স্টেট গভর্নমেন্টের দায়। নির্দিষ্ট এলিজিবিলিটি থাকলে সকলেরই ইন্সিওরেন্স ফ্রি। এলিজিবিলিটি নির্ধারিত হয় একটা নির্দিষ্ট গাইড লাইন মেনে। স্টেটের দায়িত্ব পুরো ব্যপারটাকে এক্সিকিউট করার।

    প্রতি স্টেটের কিছু প্রেফার্ড ফর-প্রফিট ও নন-প্রফিট হেল্থ ইন্সিওরেন্স কোম্পানি আছে যারা মেডিকেইড পপুলেশনকে হেলথ ইন্সিওরেন্স দেয়। এদের বলে ম্যানেজড কেয়ার অর্গানাইজেশন। আমি কাজের সূত্রে দুটি ফর-প্রফিট ম্যানেজড কেয়ারের সাথে কাজ করেছি। একটি বোস্টনে আর একটি ক্যালিফোর্নিয়ায়।

    কিভাবে কাজ করে? স্টেট এই ম্যানেজড কেয়ার কোম্পানিগুলোকে একটি থোক টাকা দেয়। যা আগে থেকে নেগোশিয়েশন করে ঠিক করা। ম্যানেজড কেয়ার অর্গানাইজেশনগুলো স্টেট গাইড লাইন মেনে হেল্থ ইন্সিওরেন্স প্ল্যান ডিজাইন করে। যার অধিকাংশই ফ্রি, কোন কো পে নেই, কোন ডিডাকটেবল নেই, কোন কো-ইন্সিওরেন্স নেই। কিভাবে লাভ করবে? সে কোম্পানির নিজের দায়িত্ব। তাই এই ধরণের কোম্পানিতে প্রো-অ্যাকটিভ মেজারস খুব বেশি। সেটা বলছি।

    তার আগে ছোট্ট করে বলি ঠিক কি ভাবে কাজ করে। এলিজিবল মেম্বারদের কাছে বিভিন্ন ম্যানেজড কেয়ার কোম্পানি তাদের প্রোডাক্ট নিয়ে মার্কেটিং করে। কারুর ডাক্তারের নেটওয়ার্ক খুব বেশি, কারুর সেলিং পয়েন্ট হল তাদের প্রেজেন্স, কারুর আবার হসপিটাল নেটওয়ার্ক ইত্যাদি। নেটওয়ার্কের কনসেপ্ট হল যে মেম্বার নেটওয়ার্কের বাইরের ডাক্তার বা হসপিটালে যেতে পারবে না। এর পরেও প্রতি মেম্বারের একজন প্রাইমারি কেয়ার ফিজিশিয়ান (পিসিপি) থাকবেন যিনি মূলত জিপি এবং যিনি ঐ নেটওয়ার্কের মধ্যে। মেম্বারের স্বাস্থ্যের দায়িত্ব ওনার। কিছু হলে মেম্বারকে আগে ওনার কাছে যেতে হবে। তিনি মনে করলে স্পেশালটি ডাক্তারকে রেফার করতে পারেন। যদি স্পেশালটি ডাক্তারকে রেফার করেন তাহলে ওনার অথোরাইজেশন নিয়ে নেটওয়ার্কের মধ্যে কোন স্পেশালটি ডাক্তারকে দেখানো যেতে পারে। পিসিপি বা স্পেশালটি ডাক্তার বা হসপিটাল বিল যাই হোক না কেন সেই বিল প্রথমে যায় হেল্থ ইন্সিওরেন্স কোম্পানির কাছে। একে বলে ক্লেম। সেই ক্লেম ডাক্তারের সাথে তাদের প্রেফারড রেট, মেম্বারের এলিজিবিলিটি ইত্যাদি আরও অনেক কিছু দেখে তারপরে পেইড হয়।

    ম্যানেজড কেয়ার অর্গানাইজেশনদের কোয়ার্টলি স্টেট গভর্ণমেন্টকে বিভিন্ন রিপোর্ট জমা দিতে হয়। যাতে স্টেট ভেরিফাই করতে পারে যে জন্য তাদের টাকা দেওয়া হচ্ছে সেই কাজটা ঠিক মতন হচ্ছে। সে ভারি কঠিন কঠিন রি কনসিলিয়েশন রিপোর্ট। একেবারে ঘোড়ার মুখের কথা, সেই রিপোর্ট মেলাতে জীবন জেরবার হয়ে যায়।

    ম্যানেজড কেয়ার অর্গানাইজেশন ধরা যাক বছরে ১০ মিলিয়ন ডলার পেল। যা তাদের কতজন মেডিকেইড মেম্বার আছে তার সাথে ডাইরেক্টলি কোরিলেটেড। এবারে সেই ১০ মিলিয়ন তাদের রেভিনিউ। সেই দিয়ে তাদের নিজেদের অপারেটিং কস্ট সামলাতে হবে, মেম্বারদের ক্লেমের টাকা দিতে হবে, এর ওপরে ফর-প্রফিট হলে প্রফিট করতে হবে, নন-প্রফিট হলে অ্যাট লিস্ট ব্রেক ইভেন করতে হবে। খুব সোজা কাজ নয়। তাই তারা বিভিন্ন কাজ করে।

    যেমন, মেম্বারদের হেল্থ এডুকেশন ইত্যাদি, যাতে কম সংখ্যক মেম্বার অসুস্থ হয়। তেমনই যে ক্লেম জমা পড়ে তাদের অডিট - টেকনলজি লাগিয়ে। কেউ ফ্রড করছে কিনা ইত্যাদি দেখার জন্য। যেমন ধরা যাক কারুর ব্লাড সুগার টেস্ট হল, তাতে রক্ত পরীক্ষার জন্য একবার চার্জ হল, আবার সিরিঞ্জ, ছুঁচ ইত্যাদির জন্য চার্জ করা হল। এটি ফ্রড, নিয়ম অনুযায়ী পুরোটাই একটাই প্রসিডিওর। একে বলে আনবান্ডলিং অফ ক্লেম। এটা খুব বেসিক লেভেল চেকিং। আরও অনেক সফিস্টিকেটেড অ্যানালেটিকস লাগানো হয়। যেমন ডাক্তারদের ক্লাস্টার অ্যানালিসিস ইত্যাদি। ম্যানেজড কেয়ার কোম্পানিরাই করে, কারণ এটা তাদের জীবন মরণ সমস্যা। নইলে লাভের গুড় পিঁপড়েয় খেয়ে যাবে।

    এই করেই চলছে আমেরিকায়। মূলত সরকার নীতি নির্ধারণ করেছে, কিন্তু এক্সিকিউশন অন্যের ঘাড়ে চাপিএয়েছে, সেটাকে সাকসেসফুল করা তাদের দায়িত্ব।
  • aka | 22.207.104.59 (*) | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:০৯47023
  • ইন জেনারাল। ভারতে যে স্বাস্থ্য নিয়ে অব্যাবস্থা চলছে সে দরিদ্রদের জন্যই হোক কি শাইনিং ইন্ডিয়ার তেল চকচকে বাবুদের জন্যই হোক। এসব রুখতে অনেক কিছুই হওয়া দরকার। কিন্তু প্রথমে যেটা একেবারেই নেই এবং হওয়া দরকার তাহল কোডিফিকেশন। দুই ধরণের কোডিফিকেশন, এক, কি হয়েছে, দুই, কি চিকিৎসা হল। তাহলেই বহু বিধ ফ্রড খুব সহজে ধরা যায়। আর দরকার প্রথমে দরিদ্রদের জন্য স্বাস্থ্যের ডিসেন্ট্রালাইজেশন। সরকারের ক্ষমতা নেই, তাই প্রপার গাইডলাইন মেনে উচিত সেই দায়িত্ব অন্যদের হাতে ছেড়ে দেওয়া।
  • debu | 82.130.151.116 (*) | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:১৩47024
  • RSBY
    ১। পার্টি তে নাম লেখালে BPL কার্ড পাবেন
    ২।লোকাল প্রাইভেট হেল্থ সেন্টার খুব ভালো ভাবে জানে কি করে NIC থেকে টাকা টা পাবে
    ৩।treatment তো ভগবান এর হাতে
    ৪।Chain এর সবাই কাট মানি পায়
  • h | 213.99.212.54 (*) | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:৩১47025
  • "সরকারই যখন টাকা খরচ করছে, তখন সরকার সরকারি হাসপাতালের উন্নতি ঘটাচ্ছে না কেন, যাতে সেখানেই উন্নত পরিষেবা দেওয়া যায়, রোগীকে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যবস্থায় যেতে হয় না? উলটে সরকার সরকারি হাসপাতালে যেটুকু ফ্রি ছিল সেসব বন্ধ করে দিচ্ছে, সেখানে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের নাম করে সব লাভ ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিচ্ছে, এমনকি গোটা হাসপাতালটাই দিয়ে দিচ্ছে......।"

    এই ব্যবস্থাটার যেই সব ইনএফিশিয়েন্সী গুলোর কথা ডঃ গুণ বলছেন, সেটার মূল ব্যাপারটা এই একটা অদ্ভুত সার্কুলার লজিকে লুকিয়ে আছে। ডঃ গুণ কে অনেক ধন্যবাদ বাংলা কথা বাংলায় বলার জন্য।

    সরকার মনে করছে, পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ডেলিভার করা তাদের পক্ষে সম্ভব না, তাই তারা একাধারে হেল্থকেয়ার অর্গানাইজেশন গুলো এবং ইনশিওরেন্স কোং গুলোর সাহায্য নিচ্ছে, বা তাদের একটা নতুন সার্ভিস ক্যাটিগোরি তৈরি করছে। অথচ নিজেরা শস্তার পাবলিকলি ওন্ড হাসপাতালের ব্যাবস্থা বাড়াচ্ছে না। এবং বাড়াচ্ছে না বলে প্রাইভেট সেকটর এর উপরে নির্ভরতা আরো বার্চছে। অথচ সব মিলিয়ে টাকা কম খরচ হচ্ছে না।

    এই বিচিত্র লজিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে বিলেতের এন এইচ এস কে ডিসম্যান্টল করার জন্য। একটাই পার্থক্য, কতগুলো সেন্টার অফ এক্সেলেন্স করেছে বড় শহরে, যেটা ছাড়া আর কেউ ফান্ডিং পায় না, প্লাস সার্জারি র পেপারোয়ার্ক অ্যায়সা বাড়িয়ে দিয়েছে, লোকে শুধু হেল্থ কেয়ার পেপার ওয়ার্ক করে দেওয়ার অসংখ্য কোং খুলে ফেলছে।

    এর পরের ধাপের সার্কুলার লজিকটিও প্রেডিকটেবল। সেটা হল ডাইরেক্ট ক্যাশ ট্রান্সফার ঃ-)) আমার বাজি হল আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ইনশিয়োরেন্স কোম্পানীর হাতে গোটা ব্যাপারটা চলে যাবে, এবং হেল্থ কেয়ার অর্গানাইজেশন নেক্শাস টা আরো বাড়বে এবং জেলা হাসপাতাল বা ব্লক হাসপাতাল গুলো আরো লোকহীন মেশিনহীন হবে, অথচ এই গ্রেভী ট্রেন এ চড়ে এই তথাকথিত সার্ভিস সেকটর বড়লোক হবে এবং গুটি কয়েকের মোনোপোলাইজেশন টা আরো বাড়বে।

    আমাদের দেশে এই হল পিপিপি দর্শনের মূল কথা।
  • h | 213.99.212.54 (*) | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:৩৪47026
  • আমরা অলরেডি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গুলোর নিজস্ব ইনশিওরেন্স কোম্পানী খুলতে দেখছি। সেটা তে কর্পোরেটাইজেশন হচ্ছে ঠিক ই, কিন্তু চিকিৎসার অস্বাভাবিক খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
  • cm | 127.216.42.27 (*) | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:৫০47028
  • ইহা পিরামিডের ধর্ম মাথায় বসে স্লোপ বাড়াবার চেষ্টা করুন যদি দেখেন ভাঙ্গো ভাঙ্গো হাল তখন একটু ছাড় দেবেন। আমাদের দেশের জনতার পক্ষে এক হয়ে কিস্যু করা সম্ভব নয় রক্তপান চলতে পারে।
  • h | 213.99.212.54 (*) | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:৫০47027
  • আকা, এই যে মডেল টা, ফেডেরাল গভমেন্ট খালি পলিসি আর স্ট্যান্ডার্ড করবে, এবং একজিকিউশন থেকে প্রয়োজনে প্রসিকিউশন সব ই লোকাল এজেন্সী করবে, রেভিনিউ ডিস্ট্রিবিউশন টা প্রজেক্ট বেস্ড হবে, এবং প্রায়োরিটি নির্ধারণ টা কোন প্রভিন্স (বা স্টেট) করতে পারবে না, এটা আমাদের দেশের যুক্ত রাজ্য কাঠামোর দুর্বলতার কারণে অনেক বেশি চেপে বসেছে।
  • দ্রি | 116.66.199.211 (*) | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:০৬47033
  • এটা পৃথিবীব্যাপী ইউজেনিক্স প্রোগ্রামের সাথে কনসিস্টেন্ট। গরীবগুর্বোদের জেনেটিক লাইন বেশী বাড়তে দেওয়া চলবে না। এখন তো আবার অটোমেশানের দৌলতে গরীবদের ইউনিকলি আইডেন্টিফাই করা সম্ভব হয়েছে। আরো সুবিধে। এককলে আমেরিকাতেও ফোর্সড স্টেরিলাইজেশান প্র্যাকটিস্‌ড হয়েছে। এখন সেটা অনেক সফ্‌ট আকার ধারণ করেছে, অ্যাবর্শান।

    যাই হোক, আমার মনে হয় যেসব মেডিক্যাল প্র্যাকটিশানার, যথেষ্ট কারন ছাড়া ওভারি কেটে বাদ দেন, তারা কোন ধরনের মনিটারী ইন্সেটিভ পান, হয় সরকার থেকে, নয় এন জি ও থেকে বিদেশী টাকা। এর প্রপার ইনভেস্টিগেশান হওয়া দরকার। সরকারও মনে হয় পার্টি টু দা হোল গেম। ওভারি কেটে বাদ দেওয়ার কাভারেজও খুব বেশী, অ্যাজ ইফ দিস ইজ বিয়িং এনকারেজ্‌ড। এলিটদের অনেকেই ইউজেনিক্সে বিশ্বাস করেন (উদাঃ সঞ্জয় গান্ধী)।
  • সে | 203.108.233.65 (*) | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:৪০47029
  • এই বিমার সুযোগ পাচ্ছেন এমন অনেকজনকে চিনি। তাঁদের সঙ্গে কথাও বলেছি। ভালো ব্যবস্থা। ESI হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করান। BPL কার্ড এনার নেই। প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেন এমন কর্মী।
  • ঈশান | 202.43.65.245 (*) | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৯:০৯47034
  • আমেরিকার যে পদ্ধতি, সেটা ভালো বা খারাপ যাই হোক, এই মুহূর্তে দেশে চলবেনা। অডিট ফডিট সব করলেও।

    মানে ধরুন, আমি একজন গরীব লোক। আমি বীমার আওতায় পড়ি। আমার বাবদে একটি হাসপাতাল বছরে দশ হাজার টাকা (কথার কথা) পায়। এবার আমি একদিন হাসপাতালে গেলাম। বললাম আমার পেটে ব্যথা। রিসেপশনিস্ট বাবু বা বিবি দেখে অন্য একজনের কাছে পাঠালেন। তিনি গম্ভীরভাবে আমাকে দেখে বললেন, "বাপু তোমার যা অসুখ তার জন্য সরকার আমাদের পয়সা দেয়না"।

    কল্পিত উদাহরণ। কিন্তু এরকম নানা স্তরে হয়েই থাকে। এবার এরকম ফাঁকি দেবার আরও অনেক উপায় থাকতে পারে। প্রশ্ন হল, এইটা আটকানো যাবে কিকরে?

    বীমার ক্ষেত্রেও একই প্রশ্ন। লোকটির আইডি আমি নিলাম। চিকিৎসা রিফিউজ করলাম। এবং বিল করলাম (বেসরকারী ক্ষেত্রে)। সরকারি ক্ষেত্রে "এখন হবেনা পরে আসুন" বএ কাটিয়ে দিলাম। কীকরে আটকাবো? চেক পয়েন্টটা কোথায় হওয়া উচিত? সচেতনতা, নাকি অন্যত্রও?
  • aka | 80.197.87.155 (*) | ০৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৯:৪৯47035
  • ছোট্ট কথাঃ

    পয়েন্ট অফ সার্ভিস কে ডাইরেক্ট টাকা দেওয়া হয় না আমেরিকায়। ইশানের উদাহরণে আমেরিকায় টাকা পায় কিছু ইন্সিওরেন্স কোম্পানি -ফর প্রফিট বা নন প্রফিট। তারা লোকজনকে ইন্সিওরেন দেয়। লোকজন দরকার পড়লে হাস্পাতালে যায়। হাসপাতালের সার্ভিস না দেবার কারণই নেই, তারা সার্ভিস দিলে টাকা পায়। টাকা পায় ইন্সিওরেন্স কোম্পানির কাছে ক্লেম ফাইল করে। ইন্সিওরেন্স কোম্পানি টাকা দিতে বাধ্য আইনত। আর একজন দারিদ্র কে ফেরানো যত শক্ত একটি হসপিটালকে ফেরানো তত নয়। আর ঝামেলা করলে হসপিটাল মামলা করতে পারে সেস্টকে কমপ্লেইন করতে পারে। ইন্সিওরেন্স কোম্পানির ব্যবসা লাটে উঠবে।

    এবার ভারতে এগুলো ফেল করতেই পারে বিশেষত করাপশনের কথা মাথায় রাখলে। সেতো শুধু সচেতনতা বাড়িয়েও লাভ নেই। আমি খুব ভালো করে জানি হাসপাতালে আমার কি কি পাওয়া উচিত আর কি কি আমার সাথে হওয়া উচিত না। তাও হয়, খুব সচেতন হয়েও রোখার কোনো জায়গাঅ নেই। কোথাও একটা শুরু করতে হবে। সেটা আমার মনে হয় একটা সেল্ফ সাস্টেইনিং প্রসেসই করতে পারে। জনগণের সচেতনতা তো ওভারনাইট হতে পারে না। জাম্প স্টার্ট চাই।
  • Rana Alam | 111.219.113.164 (*) | ০৪ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:২৮47037
  • এই স্বাস্থ্যবীমা নিয়ে প্রান্তিক এলাকাগুলোতে প্রচুর দূর্নীতি চলে।বেসরকারি নার্সিঙহোমগুলো সরকারের কাছে ভুয়ো বিল দাখিল করে একগাদা কামিয়ে নেয়।এই প্রক্রিয়ার সাথে প্রচুর ডাক্তার জড়িত আছেন যারা শুধুমাত্র টাকার জন্য এটাকে প্রশ্রয় দেন।কলকাতা বাদ দিন,জেলার শহরগুলোতে বেশীরভাগ নার্সিঙহোমের পর্যাপ্ত পরিকাঠামো নেই।ডাক্তারদের সাথে প্যাথলজি সেন্টারের আঁতাত থাকে,একটার জায়গায় চারটে টেস্ট করতে দেয়।ওষুধ কোম্পানি'র লাভের জন্য অপ্রয়োজনীয় দামী ওষুধ লেখে।এদের নিজেদের এথিকসের বালাই নেই।উত্তরবঙ্গে একজন প্রখ্যাত সার্জেন আছেন,যার অধীনে হাসপাতালে একটি স্কুলে পড়া বাচ্চাকে ভর্তি করা হয়েছিল।বছর চারেক আগের কথা বলছি।বাচ্চাটি বেড এ পড়ে কাতরাচ্ছে,এদিকে ডাক্তারবাবু ভিজিট করার সূযোগ পাচ্ছেন না তার নিজের চেম্বার আর নার্সিঙহোম সামলে।বাধ্য হয়ে একটু কড়া গলায় কথা বলতে হল।ডাক্তারবাবু এসেই একনজর দেখে বাচ্চাটিকে কলকাতায় ট্রান্সফার করে দিলেন।বাচ্চাটির বাবা দিনমজুর।আমরা টাকা তুললাম,বাচ্চাটির বাবা ধার করলেন।পিজি'তে নিয়ে গেলাম।সেখানকার ডাক্তার আমাদের ধমকালেন এই সামান্য সমস্যার জন্য এতদূর আনার জন্য।খুব মাইনর লিভার ফাংশানিং এর প্রবলেম।সামান্য কিছু মেডিকেশনেই সেরে গেল।ফিরে ডাক্তারবাবু কে জিজ্ঞেস করলাম যে এটা উনি ক্যানো করলেন।নিজের মত ব্যখ্যা দিলেন।মাথা গরম হল।পিটিয়ে দিলাম।আমাদের বিরুদ্ধে এফ আই আর হল।স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ব্যাপারটা মিটিয়ে দিলেন।কিন্তু ওই জানোয়ার ডাক্তারের কোন শাস্তি হলনা।সে এখনও চুটিয়ে প্র্যাকটিস করে যাচ্ছে।
  • aka | 80.197.90.28 (*) | ০৪ অক্টোবর ২০১৩ ১২:৪২47036
  • ওপরের পোস্টে দু একটা ভুলভাল আছে নিজ গুণে পড়ে নিন।

    যদি ঠিক করে দেখা যায় আপাতত ভারতে কোনটাই চলবে না। সবকিছু সরকারের হাতে ছেড়ে দিন, সরকারী দপ্তরের হাল আমরা সবাই জানি। সার্ভিস দিয়ে উদ্ধার করে দিচ্ছে ভাঅব, ওয়ার্ক এথিকস জিরো, তার ওপর করাপশন। কি চলবে এভাবে?

    সব কিছু প্রাইভেটের ওপর ছেড়ে দিলে আর দুর্বল সরকার হলে অবস্থা আরও খারাপ।

    আমার মনে হয় মাঝামাঝি কিছু সম্ভব। কিছু জিনিষ প্রাইবেহেটের হাতে ছেড়ে দাও। আর সরকার তাদের কাজ ঠিক করে করার ইন্সেটিভ ম্যানেজ করুক। মানে কাজ করলে প্রাফিট পাবে নইলে বাঙ্লা বাজার। এক্ষেত্রে অ্যাজাম্পধন হল এমন একটা প্রসেস ডিজাইন সম্ভব যাতে সরকার পক্ষের মিনিমাম হিউম্যান ইন্ট্যার‌্যাকশনে কিন্তু কড়া ভিজিল্যান্সে ইম্প্লিমেন্ট করা সম্ভব। আরও একটা অ্যাজাম্পশন হল সরকার পক্ষে কিছু শুভবুদ্ধিসম্পন্ন অ লোক আছে।
  • জয়ন্ত | 127.194.84.28 (*) | ১০ অক্টোবর ২০১৩ ০১:৩০47038
  • রানা আলম সমস্যার একটা দিক দেখেয়েছেন। ডা জ্ঞান শীল আরেকটা। ডাক্তাররা কী করছেন বা করছেন না। রানা লিখেছেন, সরকারী ডাক্তার রোগীর দায়িত্ব নিলেন না, অথচ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সময় দিচ্ছেন তিনি, পয়সা পাচ্ছেন নগদে। ডা জ্ঞান শীল লিখেছেন, ডাক্তাররা ইউটেরাস কেটে বাদ দিচ্ছে পয়সার জন্য, কারো কিছু করার ক্ষমতা নেই। এইটা থেকেই বোঝা যায়, আমাদের এথিকস কোথায় দাঁড়িয়েছে। এরকম তো নয়, বদের ধাড়ি ছেলেমেয়েরাই ডাক্তারি পড়তে আসে, বাকিরা সব ধৌত তুলসীপত্র। ব্যাপারটা -- "বাধ্য হয়ে একটু কড়া গলায় কথা বলতে হল" আর "মাথা গরম হল।পিটিয়ে দিলাম।" করে আত্মতুষ্টি পাবার মতো ব্যাপার নয়। জনসচেতনতা সস্তা ব্যাপার নয়, সহজে আসে না। এলে দাভোলকরকে মরতে হত না। কী কী করতে হবে সেটা বলার এলেম আমার নেই, কিন্তু এইটা করে ক্ষতি হবে।

    ঈশান লিখেছেন, "আমেরিকার যে পদ্ধতি, সেটা ভালো বা খারাপ যাই হোক, এই মুহূর্তে দেশে চলবেনা। অডিট ফডিট সব করলেও।" সেটা একদম ঠিক। আমাদের সাধারণ মানুষ ঠকবেন। ইনসুরেন্স কোম্পানি মাঝে থাকলে, যেমন আকা বলেছেন, কিন্তু ইনসুরেন্স কোম্পানি ঠকাবে। আমাদের মধ্যবিত্তরা সাধ্যের বাইরে গিয়ে ইনসুরেন্স করে আসেন। কিন্তু কাজের সময় দেখা যায়, কোম্পানি এটা ওটা করে অধিকাংশই দিচ্ছে না। যা দিচ্ছে তার জন্য হয়রান করছে। ক্রেতা সুরক্ষা এখানে মুখের কথা।

    কিন্তু সবথেকে বড় কথা হল, মানুষ RSBY কে বেশ ভালই ভাবছেন। কারণটা এরকম। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা হবে, তেমন ভরসা উবে গেছে। আর আজকাল সেখানেও পয়সা নেওয়া শুরু হয়েছে। এমন সময় RSBY এর আবির্ভাব কোনও নিছক সমাপতন নয়। প্রথমে মানুষ দেখবেন, তাঁদেরও খাতির আছে। এতদিন দুচ্ছেই করা থেকে বদলে এখন নার্সিং হোম তাঁদের আসুন বসুন করছে। তাঁর চিকিৎসা করতে গিয়ে ডাক্তারবাবু মেডিক্যাল রেপ-এর সঙ্গে কথা বলতে ব্যস্ত থাকছেন না। এভাবে প্রাইভেট ভাল, গরমেন্ট খারাপ, এটা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে। এরপর এঁরা কোন দুঃখে দাবি তুলবেন, সরকারি হাসপাতালে সুবন্দোবস্ত হোক? তুলবেন না। পার্টির নেতার কাছে RSBY কার্ডের জন্য ধর্না দেবেন। সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার গঙ্গাযাত্রায় বাধা থাকবে না। সঙ্গে সঙ্গে সরকারি ডাক্তারি শিক্ষাব্যবস্থাটাকেও বিসর্জন দেওয়া যাবে।

    আমরা চলি ডালে ডালে, কিন্তু আমাদের শাসকবর্গ, পাতায় পাতায়। আন্ডারএস্টিমেট করে অনেকে ভাবছেন, এটা পাবলিক সেক্টরের অপদার্থতার নমুনা। মোটেও না। এইটা পূর্বনির্ধারিত অ্যাজেন্ডা। "মাথা গরম হল।পিটিয়ে দিলাম।" এই ক্রোধের ওপর এই অ্যাজেন্ডা ভরসা করে। আপাতত সে পিটিয়ে দেবার পুরো লাইসেন্স দেবে না, কিন্তু মোটের ওপর সেটাকে আটকাতে ঝাঁপাবেও না। ব্যবস্থাটা থাকল, সেটা খুব আস্তে আস্তে নিজের কাজ হাসিল করছে।

    বোঝাতে পারলাম বলে ভরসা করি না। সেটা আমার বরাবরের মুদ্রাদোষ অবশ্য।
  • π | 118.12.173.94 (*) | ১০ অক্টোবর ২০১৩ ০১:৪৮47039
  • উপরের মন্তব্যটা থেকে অনেক কিছু স্পষ্ট হল। কিন্তু এখন কী করণীয় ?
  • Punyabrata Goon | 151.0.9.78 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ০২:৩৩47040
  • আমি ব্যক্তিগতভাবে ও সংগঠনগত ভাবে মনে করি rsby কোনও সমাধান নয়। universal health care ছাড়া জনসাধারণের স্বাস্থ্যের সমস্যার কোন সত্যিকারের সমাধান হতে পারে না।
    তবু rsby-এর সুবিধার জন্য আমরা দাবী জানাবো নিচ থেকে চাপ তৈরী করার জন্যই।আমরা বিভিন্ন জায়গায় rsby নিয়ে গণ সংগঠনের সদস্যদের ওয়ার্কশপ করছি, লেখালিখি করছি।
    সেটাই আমরা করতে পারি, পলিসি লেভেলে ইন্টারভেনশন করার অবস্থায় তো আমরা নেই।
    rsby-তে বেশির ভাগ জায়গাতেই মানুষ ঠকছেন, সব সময় নিজের পকেট থেকে পয়সা যাচ্ছে না বলে বুঝতে পারছেন না। যেখানে মানুষ সচেতন সেখানেই কেবল rsby-এর সুবিধা তাঁরা আদায় করে নিতে পারছেন।
    esi আর rsby এক রকমের বীমা নয়। esi তে খরচের কোনও উর্ধসীমা নেই। rsby-তে বীমাৃতকে প্রিমিয়াম দিতে হয় না, esi-তে প্রতি বেতনে শ্রমিকের বেতন থেকে টাকা কাটা যায়, নিয়োগকর্তাকেও টাকা দিতে হয়, বাকীটা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার দেয়।
  • aka | 81.91.98.87 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ০৩:০১47041
  • জয়ন্ত, একটু এক্সপ্লেইন করবেন ইন্সিওরেন্স কি করে ঠকাবে?
  • ঈশান | 202.43.65.245 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ০৩:৫৭47042
  • ইনসিওরেন্সের জালি করার বহু রাস্তা আছে। সবচেয়ে সহজ রাস্তা হল, একটা ক্লেমে খুচরো একটা সমস্যা দেখিয়ে বলা, যে, এটা আমরা কভার কর্নিনা। এবার যান, আদালতে যান।
    এর বিপক্ষে মার্কেট ইকনমিওয়ালাদের যুক্তি হল, ইনসিওরেন্স এরকম জালি করতে থাকলে লোকে সেই ইনসিওরেন্স কিনবেনা। জানাজানি হলে তাদের ব্র্যান্ড ইমেজের ক্ষতি হবে, মুখে চুনকালি পড়বে, ইত্যাদি।
    এমনিতে এগুলো শুনতে ভালই, কিন্তু কার্যক্ষেত্রে চলবে বলে মনে হয়না। ইনসিওরেন্সই যেখানে একমাত্র চয়েস, নইলে পথে বসতে হবে, সেখানে ইনসিওরেন্স কিনতেই হবে। আর সব কোম্পনিগুলিই একই লেভেলের জালিগিরি করলে (দেশে সর্বক্ষেত্রেই যেটা হয়), তাদের মধ্যে থেকে একটাকে বাছতেই হবে। যাবেন কোথায়।
    এরপর আছে হাসপাতালের জালি। সে বাদই দিলাম।
  • aka | 81.91.98.87 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:২৪47043
  • মেডিকেডে মানে দরিদ্রদের জন্য ইন্সিওরেন্স পাওয়ার পরে এক পয়সাও দিতে হয় না কোন দরিদ্র লোককে।

    ক্লেম ডিনায়েড বা পার্শিয়াল পেইড হলে সেটা ইন্সিওরেন্সের সাথে সরকারের বোঝাপড়া। মেম্বারের কোন দায় নেই।

    পাঠে ভুল হচ্ছে।
  • ঈশান | 214.54.36.245 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:৫৫47044
  • পাঠে কেন ভুল হবে? এটা পাতি ইনসিউরেন্স কিভাবে জালি করতে পারে তার উদাহরণ। মেডিকেডের মতো ব্যবস্থা হলে অন্যরকম জালি হতে পারে। সেটা হল, হাসপাতাল এক টাকার চিকিৎসা করে বা রিফিউজ করে তেত্রিশ টাকার বিল করবে ইনসিওরেন্সকে। ইনসিওরেন্স দরাদরি করে সেটা তেইশ টাকায় নামিয়ে আনবে। তারপর হাসপাতালকে টাকা দিয়ে দেবে।
    এতে ইনসিওরেন্সের কী লাভ? একেবারেই কোনো চিকিৎসা না হলে সরকার স্কিম তুলে দিতে পারে। ইনসিওরেন্স কোনো পয়সাই পাবেনা। তাই হাসপাতাল কিছু চিকিৎসা করছে দেখানো দরকার। তাদের কিছু পয়সাও দেওয়া দরকার। খালি মাত্রাতিরিক্ত না হলেই হল। তাতে হাসপাতালেরও রইল, ইনসিওরেন্সেরও রইল। রোগির কিছু রইলনা, সে অবশ্য অন্য কথা।

    "রোগী কে ফেরানো যাবেনা" এবং "জাত-ধর্ম-অর্থনৈতিক অবস্থা নির্বিশেষে সৎ ও যথার্থ পরিষেবা দেওয়া হবে" -- এইটা আগে সুনিশ্চিত না করতে পারলে সব সিস্টেমই ফেল করবে।
  • aka | 81.91.98.87 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:০১47045
  • তা মেডিকেইডের আলোচনায় জেনারাল ইন্সিওরেন্স যা কিনা ভারতে অলরেডি হুহা করে চলছে না সেই ইন্সিওরেন্স ভারতে কেন কিভাবে ফেল করবে সেই আলোচনা আনার কি মানে বুঝি নাই।

    যাইহোক, ব্যবস্থাটা সেইজন্যই ভালো যে সাধারণ মানুষকে মারামারিটা করতে হয় না। করে হাসপাতাল আর ইন্সিওরেন্স কোম্পানি। দুতরফেই দুজনকে ঠকাতে পারে, কিন্তু দুজনেই দুজনের এগেইন্স্টে লড়তেও পারে। দুই বড় কোম্পানি একে অপরের বিরুদ্ধে লড়লে কারই বা কি এসে গেল। যেমন ইন্সিওরেন্স কোম্পানি এসব রোখার জন্য লক্ষ লক্ষ ডলার দিয়ে ফ্রড ডিটেকশন সিস্টেম বানায়। ভারতে হয়ত মাসলম্যান রাখবে বা অন্য কিছু জানি না।

    এবার এই ব্যবসায় কেউ নামবে কিনা মানে সরকার এরকম কোন প্রস্তাব দিলে কোন ইন্সিওরেন্স কোম্পানি নামবে কিনা সেটা কোম্পানিরাই বুঝবে। তবে এতে করে সাধারণ লোক যারা দারিদ্রসীমার নীচে তাদের অসুবিধা হবে না। কারণ ইন্সেটিভগুলো সেইভাবে অ্যালাইনড।
  • ঈশান | 214.54.36.245 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:০৬47046
  • এই তো লিখলাম, জালিটা কিভাবে করা সম্ভব। যাতে ইনসিউরেন্স, হাসপাতাল দুজনেরই থাকে, আর রোগির চিকিৎসা হয় শুধু খাতায় কলমে। হাসপাতাল, ইনসিউরেন্স মারামারি কাটাকাটি আদৌ করবেনা। সেটা আকা একটু পড়ে উত্তর দিলে ভালো হয়।
  • π | 172.129.44.87 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:১৮47047
  • এখনি তো ইন্সিওরেন্স এর প্রচুর লাভ হচ্ছে। আর যাচ্ছে সরকারের। গত এক বছরে সরকার যে পরিমাণ টাকা ইন্সিওরেন্স বাবদ দিয়েছে, আর যা চিকিৎসা র খরচ হয়েছে, তার মধ্যে বেশ ভালোই তফাত আছে শুনেছিলাম। মানে চিকিৎসার খরচ অনেক কম হয়েছে শুনেছিলাম। সরকার যে পরিমাণ টাকা এর পিছনে খরচ করলো, সেটা সরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পিছনে দিয়ে সেখান থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া নয় কেন ?
  • aka | 81.91.98.87 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:৫০47048
  • হাসপাতাল আর ইন্সিওরেন্সের মধ্যে একজন পাওনাদার আর একজন টাকা দেয়।

    দুজনের মধ্যে আঁতাত সম্ভব নয় বাই ডিজাইন। হাসপাতাল টাকা পায় ইন্সিওরেন্স কোম্পানি থেকে, আর ইন্সিওরেন্স কোম্পানি পায় স্টেট থেকে। ইন্সিওরেন্স হাসপাতালকে দানছত্র করলে তার স্টেট থেকে পাওয়া টাকা থেকে কমবে, প্রফিট কমবে।

    আবারও মনে হচ্ছে পাঠে ভুল হচ্ছে।
  • aka | 81.91.98.87 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ০৯:১৩47049
  • যাক, এরপরেও বহু ভাবে টাকা জলে যেতে পারে সরকারের।

    ভারতের ক্ষেত্রে যেকোন প্রসেসেই লক্ষ্যাধিক গলতা বের করা যেতে পারে। যেমন বিনা পয়সার চিকিৎসা ক্ষেত্রে। সরকার টাকা দিয়ে লোকজন নিয়োগ করল। তারা হপ্তায় দুই দিন সেটা খোলে বাকি পাঁচদিন নিজেদের অন্য কাজ করে। যে দুইদিন খোলে সেই দুইদিনেও লোক এলে পাত্তা দেয় না। বেড নেই বলে তাড়িয়ে দেয়।

    কোথাও শুরু করতে হবে। সেটা শুধু আইডিওলজি দিয়ে হয় না, ভালো ইন্টেনশন দিয়েও হয় না, সেটার জন্য এমন একটা প্রসেস ডিজাইন চাই যা ভারতের ক্ষেত্রেও কিছুটা হলে কাজ করবে। বাই।
  • ঈশান | 202.43.65.245 (*) | ১১ অক্টোবর ২০১৩ ০৯:১৮47050
  • নানা ভুল হবে কেন? :)

    অর্থনীতি দিয়েই বলি। আকার বক্তব্যের মূল ভিত্তিটা হচ্ছে ক্রেতা আর বিক্রেতার মধ্যে আঁতাত সম্ভবই নয়। সেটা মোটেও ঠিক না। ক্রেতা আর বিক্রেতা দরাদরি করে একটা জায়গায় আঁতাতে আসে, সেটাকে আমরা ইকুইলিব্রিয়াম বলি। প্রচুর ক্রেতা ও বিক্রেতা থাকলে ইকুইলিব্রিয়ামটা একজন ক্রেতা ও একজন বিক্রেতার নিয়ন্ত্রণের বাইরে, কম থাকলে অনেকটাই নাগালের অনেকটাই মধ্যে, কিন্তু দুই ক্ষেত্রেই সমঝোতা বা আঁতাত একটা হয়ই। বাধ্য হয়েই হোক, বা হাসিমুখে।

    এবার, ক্রেতা, এই দরাদরিতে নিজের স্বার্থ দেখে, বিক্রেতা নিজের। এখানে এরকম দুই পক্ষ হল, হাসপাতাল আর বীমা কোম্পানি। উভয়ের স্বার্থই হল প্রফিট ম্যাক্সিমাইজেশন। কিন্তু একজনের প্রফিট বাড়লে অন্যজনের কমবে। কিন্তু দুননের কোনো একজন যদি মার্কেট থেকে উঠে যায়, তাহলে দুজনেরই প্রফিট গোল্লা হয়ে যাবে। ফলে দুজনেই নিজের স্বার্থে একটু বা বেশি কমপ্রোমাইজ করে একটা সমঝোতায় আসবে। যেখানে দুজনেরই কিঞ্চিৎ লাভ হয়। এবারে দড়ি টানাটানিতে যে বেশি জিতবে সে জিতবে।

    কিন্তু মজা হল, এই পুরো গল্পেই স্বার্থ মানে শুধু প্রফিট। দুই পক্ষের প্রফিট। প্রকৃত ক্রেতা যিনি, অর্থাৎ, রোগি, তাঁর স্বার্থ বা সুরক্ষা কারোরই টিকিয়ে রাখার দায় নেই। সেটা চিত্রের বাইরের প্যারামিটার। ফলে মার্কেটের নিয়মেই হাসপাতাল বা বীমা কোম্পানি যতটুকু না করলে কারবার লাটে উঠবেনা, ঠিক ততটুকুই করবে। মানে হেলথ ইনস্পেকটরকে ঘুষ দেওয়া, জালিয়াতি সব। এই মডেলে সেসব কিছুই আটকানো যায়না।

    এবার এইটা রুখতে গেলে, হয় বহিরাগত একটি কোয়ালিটি কন্ট্রোল সিস্টেম দরকার। অথবা আরেকটা মার্কেট/প্রশাসনিক মেকানিজম, যেটা জালিয়াতি ঠেকাবে। ভারতবর্ষের ক্ষেত্রে সেই মেকনিজমটি কী?

    পুঃ দেশে মেডিকেড সেভাবে দেখিনি, ইনসিওরেন্স নিয়ে কী পরিমান জালি হয়, সেটা দেখেছি। ফলে এটা একেবারেই শুধু অর্থনৈতিক গপ্পো নয়। অভিজ্ঞতা সমর্থিত, যারে কয়। চাইলে অভিজ্ঞতার উদাহরণও দিতে পারি।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে প্রতিক্রিয়া দিন