এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • জলযুদ্ধ

    bip
    অন্যান্য | ১০ এপ্রিল ২০১৬ | ৭৪৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বিপ | 81.244.130.85 | ১০ এপ্রিল ২০১৬ ১০:৪০707443
  • (১)
    মহারাষ্ট্রের লাতুর জেলার তীব্র জল সংকট এককথায় অকল্পনীয়। ড্যাম, লেক শুকিয়ে গেছে। গ্রাউন্ড ওয়াটার বহুদিন আগেই লুঠ। ইনকামের এক তৃতীয়াংশ চলে যাচ্ছে জল কিনতে! ভাবা যায়? গরীব লোকেরা মাসে একদিন স্নান করার সুযোগ পাচ্ছে। যাদের মাসিক ইনকাম ৫০,০০০ টাকার ওপরে, একমাত্র সেইসব ফ্যামিলিগুলো স্নান করার জন্য কয়েকশো লিটার জল কেনার ক্ষমতা রাখে। তাতেও স্নানের কোটা সপ্তাহে একদিন।

    ব্যঙ্গালোরের অবস্থা ? মারাথালির মতন নতুন গজিয়ে ওঠা শহরের দিকগুলোতে
    জল নেমে গেছে ১০০০ ফুটের নীচে। ১৯৮০ সালে মাত্র ত্রিশ ফুট নীচেই পাওয়া যেত জল।
    মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই ব্যাঙ্গালোরে জল এত নীচে নেমে যাবে শহরের অধিকাংশ
    অঞ্চল বসবাসের অযোগ্য হবে। যদিও এই আশঙ্কায় ব্যাঙ্গালোরে ওয়াটার হারভেস্টিং এখন জনপ্রিয় । চৈনিক প্রবাদ ক্রাইসিসই সমাধানের জন্ম দেয়। দেখা যায় ব্যাঙ্গালোরের ওয়াটার হারভেস্টিং আস্তে আস্তে শহরটাকে বাঁচাতে পারে কি না।

    দিল্লীতে ফেব্রুয়ারী মাসের শেষের সপ্তাহ ছিল ভয়াবহ। ৭০% দিল্লীবাসি জলকিনে খেতে বাধ্য হয় কারন যমুনা নদীতে আমোনিয়াদূষন। দিল্লির জলে এমোনিয়ার পরিমান চার পি পিএমের বেশী-যেখানে মাত্র এক পিপিএমই দূষনের কারন হতে পারে। দিল্লির পানিপথে কোন কোন স্থানে জলে ৫০ পিপিএমের বেশী এমোনিয়া। দিল্লীতেও ওয়াটার হারভেস্টিং বাধ্যতামূলক হতে চলেছে।

    কোলকাতায় জলের ক্রাইসিস হওয়ার কথা না-কিন্ত হচ্ছে চুরির জন্য। মাটির তলার জল এবং পাইপের জল-দুই টাইপের জলই চুরি হচ্ছে কোলকাতায়। সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে পাইপলাইন থেকে জল চুরি করে বেচার ব্যবসা একমাত্র কোলকাতাতেই সম্ভব। যেজল লোকেদের ফ্রিতে পাওয়ার কথা, কিছু লোক পাম্প বসিয়ে চুরি করে, সেটাই তাদের বিক্রি করছে। কোলকাতায় বেয়াইনি ডিপগটিউবয়েলের সংখ্যা ২০,০০০ এর বেশী। রাজারহাট সহ পূর্বদিকের জলাভূমি বুঁজিয়ে দেওয়ার ফলেও কোলকাতায় জলের লেভেল কমেছে। কোলকাতাতেও ওয়াটার হারভেস্টিং দ্রুত শুরু করা দরকার কারন পূর্বদিকের লেকগুলো যে গ্রাউন্ড ওয়াটার ব্যালান্স করত তা ধ্বংশ করেই উঠেছে সেক্টর ফাইভ।

    (২)
    জলের ও যে ক্রাইসিস হতে পারে -সত্যিকথা বলতে কি আমি সেটা ইদানিং ভারতে গেলে হারে হারে টের পাচ্ছি।

    আমার ছোটবেলা কেটেছে করিমপুরে। এসব এলাকার সব দিকেই নদী। টিপিক্যাল বদ্বীবস্থ এলাকা। বাড়ির সামনেও ছিল নদী। বাড়িতে ছিল দুটো টিউবয়েল। মনে আছে মাত্র দশফুট খুঁড়লেই জল। নদীর ধারে মাত্র চারপাঁচ ফুট খুঁড়লেই জল ওঠে। তবে সেই জল বিশাক্ত হতে পারে বলে, ত্রিশ চল্লিশ ফুট নীচে তৃতীয় লেয়ার থেকে জল তোলা হত।

    জলের ওপর অত্যাচার হতে পারে সেটা প্রথম টের পাই যখন ক্লাস ফাইভ কি সিক্সে পড়ি। হঠাৎ আওয়াজ উঠল এই ডেল্টা বেসিনে নাকি প্রচুর তেল আছে। তাই ওএনজিসি খোঁড়াখুড়ি শুরু করেছে এই এলাকায়। মাঝে মাঝেই মাটির অনেক নীচে ডিনামাইট চার্জে কেঁপে উঠত এলাকা। তারপর থেকেই দেখলাম টিউবয়েলে জলে মাঝে মাঝেই তেল ভাঁসছে। খুব সম্ভবত তেলের লেয়ারের কাছে ডিনামাইট ব্লাস্টে-সেই প্রাকৃতিক তেল গুলো ছড়িয়ে যাচ্ছিল পানীয় জলের লেয়ারে।

    আজকে গোটা আমেরিকাতে তেল তোলার জন্য ফ্রাকিং নষ্ট করে দিচ্ছে পানীয় জলের লেয়ার। তার বিরুদ্ধে এখানেও প্রতিবাদি আন্দোলন । যখনই এসব দেখি, খুব মনে পড়ে করিমপুরের বাল্য অভিজ্ঞতা।

    পশ্চিম বঙ্গে শিল্প না আসা হয়ত একধরনের ব্লেসিং। আশীর্বাদ। ভারতে শিল্পে কোন রেগুলেশন নেই। যা আছে সব পেপারে। ফলে ভারতের যেসব শহরগুলো শিল্পোন্নত হয়েছে-আজকে প্রায় সবগুলোই ধ্বংসের সামনে। গুঁরগাউর অবস্থা গত পাঁচ বছরে এত বাজে হয়েছে যে তা বলার না। শিল্প আসে নি বলে পশ্চিম বঙ্গের অধিকাংশ শহরগুলো অন্তত জলদূষন থেকে অনেকটাই রক্ষা পেয়েছে।

    যেভাবে দূষন বেড়েছে, জলের লেয়ার কমেছে, ভীর বাড়ছে-ভারতের শহরগুলো আর বসবাসযোগ্য না বলেই মনে করি। অবশ্য তাও কোটি কোটি লোকে বাস করছে এবং পঞ্চাশে পার করতেই অসংখ্য রোগে ভুগে টিকে আছে।

    যে শহর রোগে ভুগছে-সেখানে শহরবাসিরা সুস্থ থাকবে-তা অসম্ভব।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন