এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  গান

  • মাচার গান

    Rana
    গান | ০৮ নভেম্বর ২০১৫ | ৩৬৯০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • de | 24.139.119.173 | ১১ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৪:০৩688244
  • এটা আর এগোবে না?
  • Rana | 131.241.218.132 | ১১ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৫:১৭688245
  • এগোবে। সময় পাচ্ছি না। এখনো বেশ কিছু লেখার আছে।

    এমনকি শেষ কিস্তিটা বেশ তাড়াহুড়ো করে লেখা বলে এখন বাজে লাগছে। কেননা, প্রায় দশ বছরের টাইম গ্যাপ হয়ে গেছে।
  • Rana | 131.241.218.132 | ১১ ডিসেম্বর ২০১৫ ২৩:৩৯688246
  • সেটা ২০০১ কি ২০০২ হবে। যাদবপুরের ফেটসুতে আমাদের ব্যান্ড গান গাইবে। এদিকে ড্রামারের সেমিস্টার চলছে হলদিয়াতে। কাজেই তাড়াহুড়ো করে আনা হল এক মাচার প্যাডওলা। একেবারে শেষ মূহুর্তে সব ঠিক হওয়াতে তার সাথে আমাদের কিছু রিহার্সালও হয় নি।

    তাতে তার থোড়াই যায় আসে। সে আমাদের একগাল হেসে বলল, কোনো চাপ নিও না। আমি স্টেজে উঠে বলে দিই, এদিকের অডিয়েন্স আমার। ব্যস্‌, ঐ দিকের অডিয়েন্সকে আমি নিয়ে নি। তাতে যদিও আমরা খুব একটা ভরসা পেলাম না, কেনোনা, ওদিকের অতোগুলি অডিয়েন্সকে কাকা কি করে নেবে সেটা খুব একটা পরিষ্কার হলো না।

    এদিকে আমাদের আগে উঠেছে কুট্টিদারা, মানে অভিলাষা। এই ব্যান্ডটা একদম গোড়ার দিকের ব্যান্ড। এমনকি বোধহয় পরশ পাথরেরও আগের। যাদব্পুরেরই ব্যান্ড আর এদের কভারগুলি বেশ ভালো হতো। বসুন্ধরা বা দরিয়া এদের কাছেই প্রথম শোনা। তো ঘরের মাঠে তারা হৈ হৈ করে খেলছে আর কাকার কনফিডেন্স ক্রমশ কমছে। মুখে বলছে না, কিন্তু ঐ লাল নীল সাইকাডেলিক, গাঁজার ধোঁয়া, শ আষ্টেক ছেলে মেয়ের উদ্দাম নাচ সব মিলে কাকার নার্ভে বেশ কিক মারে। অভিলাষার পরে উঠে ঐ প্যাড নিয়ে খুব চাপ হয়ে গিয়েছিল। যাই গান চলে, দেখি শেষে ঘুরে ফিরে আসে ঐ ঢিগ ঢিগ ঢিগ ঢিগ ঢিস্‌। ঐ রকম রক গোছের গানকে যে কেউ দায়িত্ব নিয়ে ও পি নায়ারে এনে ফেলতে পারে তা প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা দিয়ে মেনে নিতে খুব একটা ভালো লাগে নি।

    মাচার প্যাডওয়ালারা এমনি হয়। এবারেও সম্প্রতি একটা অনুষ্ঠানে, বেশ কিছু রবীন্দ্র সঙ্গীতে স্কোর করেছিলাম। তাতে কোন পুরাতন প্রানের টানে তে শুরুতে একটা সোলো বাস রিফ ছিল, ড্রাম অ্যাকোম্পানিমেন্টের সাথে। আর মাঝে একটা অ্যাকোর্ডিয়ান পিস ছিল। তো একদিন ড্রামের ছেলেটা তখনো আসেনি, প্যাডটা এবারো ভাড়া করা হয়েছিল পারকাশনের জন্য। আমি আসলে হ্যান্ডসোনিক চেয়েছিলাম, কিন্তু আমাদের তল্লাটে ঐ বস্তুটি খুব একটা সহজলভ্য নয়। তো যথারীতি প্যাড বলল আমি বাজিয়ে দিচ্ছি, এবং আবার সেই ও পি নায়ার।

    সত্যি কথা বলতে, মাচাতে যে সব শিল্পীরা, মানে একদম টিপিক্যাল মাচাতেই শুধু, যে শিল্পীরা বাজান, তাঁরা খুব একটা ভালো বাজান না, 'ব্যাপক' তো নয়ই। তাঁদের শিক্ষা সাধারনত অসম্পূর্ণ এবং শুধু মাচার ফর্মুলার গানের পিসগুলি তাঁরা তুলে রাখেন। একজন ভালো যন্ত্রী একজন মধ্যমানের যন্ত্রীর মূল পার্থক্য থাকে পরিচ্ছন্নতায়। শুধু সা রে গা মা বাজালেই তা বোঝা যায়। প্রতিটা স্বর একদম গোটা গোটা, টাইম ইন্টারভ্যাল নিখুঁত, যদি কোনো মিউজিক্যাল রান থাকে তা একেবারে পরিষ্কার ইত্যাদি। গড়পড়তা মাচার শিল্পীদের এই গুনটা থাকেনা।

    তাই বলে কি ভালো শিল্পীরা মাচাতে বাজান না। একশো বার বাজান, কেনো না ওটাই প্রথম সোপান। গত সপ্তাহেই পুলকদাকে (পুলক সরকার - এখন রিদমস্কেপে বাজায় আর প্রচুর অ্যারেজ্ঞমেন্ট করে। একটা খুব ভালো অ্যালবাম ও আছে - ক্যান্ডেল লাইট মেলোডিস বলে) জিজ্ঞাসা করছিলাম কি রকম মাচা করেছে। পুলকদাও বলল প্রচুর। এককালে ওটাই নাকি রুটি মাখন ছিল। কিন্তু তার পরে পরিচিতি বাড়ার সাথে সাথে মাচা থেকেও বেড়িয়ে গেছে।
  • pi | 74.233.173.193 | ১১ ডিসেম্বর ২০১৫ ২৩:৫১688248
  • রাণাবাবুর সাথে যোগাযোগ করা যায় ?
  • ঈশান | ১১ ডিসেম্বর ২০১৫ ২৩:৫১688247
  • রানা, একটা ব্যক্তিগত প্রশ্ন করি? আপনি কী বাজান? আর কোথায়? নাকি গান?

    কৌতুহল হল বলে জিগালাম। কাটিয়ে দিলে কিছু মনে করবনা। :-)
  • pi | 74.233.173.193 | ১১ ডিসেম্বর ২০১৫ ২৩:৫৩688250
  • আরে কী কাণ্ড!
  • শ্রী সদা | 113.16.71.15 | ১১ ডিসেম্বর ২০১৫ ২৩:৫৩688249
  • ঈশানদার প্রশ্ন আমারো। খুব ইনফর্মেটিভ লেখা।
  • কল্লোল | 125.242.134.56 | ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৮:০০688251
  • অভিলাষা সম্ভবতঃ ১৯৯৫/৯৬এর ব্যান্ড। প্রথমদিকে ওদের মূল গাইয়ে ছিলো সুমিত সমাদ্দার আর কুট্টি। পরে সুমিত ব্যান্ড ছেড়ে অভিনয়ে চলে যায়। এখন তো বাংলা সিরিয়াল/সিনেমাতে খুব পরিচিত কমেডিয়ান।
  • PT | 213.110.246.23 | ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৮:১৫688252
  • কল্লোলদা
    স্বরাজ রায়ের নাম করে অনেক কথা মনে পড়ালে। উনি এখন প্রোগ্রাম করেন কিনা জানিনা তবে বছর খানেক আগে আমার ছেলেকে গানের পরীক্ষা দেওয়াতে নিয়ে গিয়ে দেখি পরীক্ষক স্বরাজ রায়!!
    কৈশোরের শোনা "গরীবের মান্না দের" বেসিক ট্রেনিং যে চমৎকার ছিল/আছে সেটা সামনে বসে টের পেলাম।
  • কল্লোল | 125.242.134.56 | ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৯:৩৯688254
  • পিটি।
    দ্যাখো না ভাই, একটু খোঁজ করে। যেখানে পরীক্ষা বা যাদের পরীক্ষা তাদের কাছে নিশ্চই ওনার ঠিকানা বা ফোন্নং আছে। একটু দ্যাখো তো। আসলে কৈশোরে ছুটির দিনে ওনার বাসায় প্রায় পড়ে থাকতাম। আমার গান ভালোবাসার অন্যতম কারন উনি। তখন উনি নিউ থিয়েটার্স দু নং স্টুডিওর গায়ে ইন্দ্রানী পার্কে থাকতেন। ওনার কল্যানেই ওখানে সাগিনা মাহাতোর শুটিং দেখা। এবার কলকাতা গেলে ওনার সাথে দেখা করার খুব ইচ্ছে।
  • ☆★☆★☆ | 127.194.197.214 | ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ ১০:৩৭688255
  • রানার সাথে যোগাযোগের চাপ কি? আমাদের পাড়াতেই থাকে, দুটো বাড়ি পরেই। আর কল্লোলদার সাথেও মেলমেলি আছে। কিন্তু পরিচিতিপর্ব ওর ইচ্ছেমতই হোক। :●)
  • Rana | 131.241.218.132 | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ ২৩:১৮688256
  • উত্তর দিতে দেরি হয়ে গেল। দোকানে আজকাল বেশ চাপ চলছে।

    আমি অল্প স্বল্প সিন্থেসাইজার বাজাই। বাড়িতেই বাজাই। আগে তাও একটু আধটু এদিক ওদিক বাজাতাম, এখন আর সময় পাই না একেবারেই।

    পাই, আমার ফোন নং আপনি সোমনাথের কাছে পেয়ে যাবেন। তবে আমি প্রচন্ড ল্যাদ প্রক্‌তির লোক আর বর্তমানে প্রবল চাপে আছি। কাজেই, এক্ষুনি, হোম বা যজ্ঞ কিছুতেই লাগতে পারবো না। ভবিষ্যতে নিশ্চিত ভাবে আছি।
  • Rana | 131.241.218.132 | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ ২৩:৫৩688257
  • কুমার প্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মজলিসেই বোধ হয় পড়ছিলাম, রামকুমার চট্ট্যোপাধ্যায় ছোট বেলাতে তবলাও বাজাতেন। তো এই রকম এক মাচার জলসাতে তাঁর কোন এক মুরুব্বী যখন জানতে পারেন যে রাম কুমার তাঁর কোন এক প্রতিদ্বন্দীর সাথে সঙ্গত করবেন, তখন তাঁকে আদেশ করেন, ভুলভাল সঙ্গত করার জন্য। ছেলেমানুষ রামকুমার বলে তা কি করে হয়? সেই দাদা একগাল হেসে বলে, তাতে কি আছে। ও যখন কাহারবায় গান গাইবে তুই তখন দাদরা বাজাবি, আর মাঝে মাঝে চার মাত্রার গোঁজ দিয়ে দিবি - অথবা এই রকমই কিছু।

    মাচাতেও কিন্তু এই রকম রেষারেষি প্রচুর। আসলে গান বাজনার লাইনটাই এরকম। তার কারণ, এটা যাকে বলে, "বটম অফ দ্য পিরামিড" , কিন্তু পারিশ্রমিক সত্যিই খুব একটা বেশি নয়। মানে একে বারেই বেশি নয়।

    আজকাল আমাদের তল্লাটে একজন সিন্থেসাইজার বাজানো লোকের ভাড়া গড়্পড়তা প্রতি অনুষ্ঠান ১০০০-১৫০০ টাকা। গীটার ৮০০-১০০০ টাকা। প্যাড ১০০০-১২০০ টাকা। যন্ত্রীদের মধ্যে এই তিনটেই সবথেকে বেশি চলে। আর ভাড়াও বেশি। তবলা এখনো ৫০০-৬০০ টাকাতে পাওয়া যায়। বাঁশী, বেহালা, পারকাশন, বাস গীটার সবই ঐ ৫০০-১০০০ এর মধ্যে। কেউ কেউ যদি খুব ভালো বাজান বা কোনো বড় শিল্পীর সঙ্গে বাজানোর ইতিহাস থাকে, তবে তার রেট আরো কিছুটা বাড়ে। তবে, তা সাধারন দরের থেকে ৩০-৪০ শতাংশ মতো বেশি। ভালো বা খারাপ নির্বিশেষে যন্ত্রীরা নিজেদের সেট আপ ছাড়া মূলত ফ্রি ল্যান্সার গায়ক গায়িকা, নাটক, অসম্পূর্ণ সেট আপের বাংলা ব্যান্ড, বিভিন্ন সস্তার বার প্রভ্‌তির সঙ্গে খেপ খাটেন। তবে এদের প্রত্যেকেরই সাধারনত দুটি বা তিনটি বাঁধা গায়ক বা গায়িকার সাথে সেট আপ থাকে।

    মাচার গায়ক গায়িকারা সাধারনত সম্পূর্ণ প্যাকেজে আসেন। মানে, আপনাকে আলাদা করে যন্ত্রী ভাড়া করতে হবেনা, তারা ওনার সঙ্গেই আসবেন। সাউন্ডটা সাধারনত উদ্যোক্তারাই যদিও ভাড়া করেন। এই সাউন্ডের জায়গাটা হচ্ছে শিল্পীদের মারার আরেকটা মোক্ষম জায়্গা। সাধারনত মাচার শিল্পীরা এলাকার সাউন্ডের কাজ করা লোকেদের সাথে অত্যন্ত সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেন। এক শিবিরের মাচার সাউন্ডের লোক যদি অন্য শিবিরের লোকের সাউন্ড করে তবে তার অনুষ্ঠান বেশ চেপে যায়। মানে শিল্পী বেশ দরদ দিয়ে গাইছেন, অথচ কোনো আওয়াজ আসছে না। বা সিন্থেকে চেপে দিল, কাজেই কোনো মিউজিকই স্পষ্ট নয়।
  • Rana | 131.241.218.132 | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ ২০:৫৭688258
  • যাই হোক, গায়ক বা গায়িকার সাথে বিভিন্ন রকম প্যাকেজ হয়। ১০ -১২ টা গান থেকে, তিন চার ঘন্টার পুরো অনুষ্ঠানের প্যাকেজ ও থাকে। রেট মোটামুটি ৫-৬ হাজার থেকে শুরু হয়। তিন চার ঘন্টার পুরো অনুষ্ঠানের রেট ১২-১৪ হাজার টাকা। তাতে মোটামুটি ২-৩ জন গায়ক গায়িকা থাকেন। তাদের আলাদা আলাদা সোলো প্রোগ্রাম হয় আর তার পরে দু তিন জন মিলে এক সাথেও গান করেন। কোথাও কোথাও এর মাঝে মুখ বদলের জন্য ফিল্মি গানের সাথে নাচ অথবা মীরাক্কেল ফেরত স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ানের চুটকি থাকে।

    এই টি ভি শো গুলিও কিন্তু মাচার শিল্পীদের একটা গুরুত্বপূর্ণ যোগান্দার হয়ে উঠেছে। আজ কাল অনেক জায়্গাতেই শোনা যায়, সা রে গা মা পা খ্যাত বা ড্যান্স বাংলা ড্যান্স খ্যাত শিল্পীরা মাচা মাতাবেন। টিভিতে মুখ দেখানো থাকলে, সেই শিল্পীদের রেট বেশ ভালই বেড়ে যায়। আমাদের পাড়াতে কিছুদিন আগে দুই সা রে গা মা পা আর এক মীরাক্কেল তিন চার ঘন্টা অনুষ্ঠান করে গেলেন। ছেলে ছোকরারা বলল প্রায় তিরিশ মতো নিয়েছে।
  • pinaki | 90.254.154.99 | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ ২৩:৩৯688259
  • একটু অপ্রাসঙ্গিক কথা বলছি। আমার এটা জানার খুব ইচ্ছে আজকালকার দিনে যাঁরা ধরুন টিভিতে নানাভাবে মুখ দেখিয়ে পরিচিতি পেয়েছেন, মানে সেলেব্রিটিই বলা চলে, কিন্তু সেরকম হাইফাই নয়, তাঁদের বিভিন্ন শো, উদ্বোধন, সিরিয়লে অভিনয় - ইত্যাদি থেকে মাসে মোট কিরকম আয় হয়? 'মিরাক্কেলখ্যাত' একজন কমেডিয়ান একটা শো তে তিরিশ হাজার পান? মাসে এরকম কটা শো জোটে? মিরাক্কেল তো গত পাঁচ সাত বছরে কিছু না হলেও ৫০ জন এরকম বেশ পরিচিতি পাওয়া কমেডিয়ান প্রডিউস করেছে। ফলে এই সার্কিটে প্রতিযোগিতাও কম নয়। আবার সিরিয়ালে মোটামুটি নিয়মিত মুখ দেখানো অভিনেতা/অভিনেত্রীর কথা ভাবুন। একটা সিরিয়ালের অভিনয় থেকে মাসে কেমন আয় হয়? এর বাইরে আয় বলতে তো এধার ওধার ফিতে কাটা, যদি না অ্যাড থেকে আয় হয়ে থাকে। তা সবাই তো আর অ্যাড করার সুযোগ পান না। অথচ একবার পরিচিত মুখ হয়ে গেলে কিন্তু রেলেভ্যান্ট থাকার জন্য নিজেকে সেলেব্রিটিসুলভ মেইনটেইন করার খরচা আছে। আমার প্রশ্ন এই সেলেব্রিটিসুলভ ঠাটবাট এর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ আয় কি সত্যিই হয়? নাকি ভেতরের গল্পটা চাপের?
  • Rana | 127.194.194.241 | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ০০:০৮688260
  • না না, মীরাক্কেলের ভদ্রলোক একা তিরিশ পান নি, গোটা ট্রুপটা মিলে তিরিশ নিয়েছে। আট নয় জন ছিল মোট।

    মাচার শিল্পীদের শুধু মাচা থেকে আয় বেশি নয়। পুজো শীতকাল আর নববর্ষ এই কিছু সিজনে এক এক জন গড়পড়তা মাসে ২০-২২ হাজার রোজগার করেন, কিন্তু প্রচুর খেপ খাটতে হয়।মানে মাসে ২৫টা মতো অনুষ্ঠান। বাকি তো অফ সিজন। সেই সময় গুলিতে মাচা থেকে মাসে গড়্পড়তা ১০-১২ ওঠে।

    টিভি সেলিব্রিটিদের আয়ের ব্যাপারে যদিও ধারণা নেই। উপরের হিসেবটা শুধু মাচার শিল্পীদের জন্য।
  • Rana | 127.194.217.111 | ২০ ডিসেম্বর ২০১৫ ২২:২৪688261
  • মাচার শিল্পীরা যদিও শুধু মাচার আয়ের উপরে সাধারনত নির্ভর করে থাকেন না। তাঁদের সঙ্গে এলাকার ছোট ছোট রেকর্ডিং স্টুডিওগুলিরো যোগাযোগ থাকে। আজকাল কম্পিউটারের সঙ্গে নুয়েন্ডো, অ্যাডোব অডাসিটি, ফ্রুটিলুপ, সিবেলিয়াস, প্রভ্‌তি সফ্টওয়ারের হাত ধরে রেকর্ডিং ব্যাপারটার যন্ত্রনির্ভরতা অনেক কমে গেছে। মোটামুটি একটা রেকর্ডিং স্টুডিও খুলতে লাগে শুধু একটা শব্দ নিরোধক ঘর, কিছু মাইক ও টিআরেস তার, একটা ছোটোখাটো মিক্সার বা তারও অভাবে একটা ভালো সাউন্ড কার্ড। শব্দগুলিকে একবার কম্পিউটারে নিয়ে ফেলতে পারলেই হয়ে গেল। বাকি কাজ ওখানেই হয়ে যাবে।

    মাচার শিল্পীদের নিজেদের দলের ভিতরে মিথোজীবিতা বেশ প্রবল। আর আরেকটা লক্ষ্যণীয় ব্যাপার, যতই অন্তঃসলিলা শত্রুতা থাকুক আমি কিন্তু কখনো একজন শিল্পীকে অন্য শিল্পী সম্পর্কে খুব একটা অশ্রদ্ধাশীল মন্তব্য করতে শুনিনি।শিল্পী সমাজের খুব একটা উপরের তলাতে না থাকা, বরং প্রায় প্রান্তিক এলাকায় অবস্থিত, যাঁদের হয়ত প্রথাগত সঙ্গীত শিক্ষাও অতটা নেই, তাঁদের কাছের থেকে এ এক পরম শিক্ষণীয় বিষয়।

    মাচা নিয়ে আর বিশেষ কিছু লেখার নেই। এই লেখার বিশয়বস্তু যাঁদের ঘিরে আবর্তিত হয়েছে, তাঁদের কাছে আমি ব্যক্তিগত ভাবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে উপক্‌ত হয়েছি, নানা জায়গায় অনেক কিছু শিখেছি, আমার মতো অর্বাচীনের প্রতি তাঁদের চরম ধৈর্য্য উৎসাহ আমার সারা জীবনের পাথেয় হয়ে রয়েছে। তাঁদের উদ্দেশে আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম রইল।
  • Ekak | 113.6.157.186 | ২১ ডিসেম্বর ২০১৫ ১১:৪৪688262
  • ভালো লেখা । একটা আস্ত বই হওয়ার উপাদান আছে এই টই তে ।
  • b | 135.20.82.164 | ২১ ডিসেম্বর ২০১৫ ১২:২৫688263
  • এবং সিনেমা।
  • de | 69.185.236.52 | ২১ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৩:৫৩688265
  • খুব ভালো লেখা -
  • S | 90067.146.9004512.46 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৩:১০688267
  • আগের মাচা ভালো আর এখনকার মাচা ভালো না এরকম চিন্তাভাবনা তো থাকবেই, সব কিছুর মতন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের রুচি বদলেছে। একসময় মান্না দে, আশার গান ভালো লাগতো মানে এখনো ঐ গানগুলই শুনতে হবে এইধরনের আশা করাটাও বেশ ইন্টারেস্টিঙ্গ।

    মাচার শো বেশি দেখিনি, তবে এখন তো টলিউডের আর জি বাংলার লোকেরা বেশ গব্ব করেই বলে যে মাচা করি। এখন জি বাংলা বোধয় নিজেরাই মাচা অ্যারেন্জ করে মফস্বলে - একটা অনুষ্ঠানও আছে "জেলায় জেলায় জি বাংলা" বা ঐধরনের।

    শ্রীকান্তকে বসেই গান করতে দেখেছি। আর ইন্দ্রনীলের অনুষ্ঠানের থেকে শ্রীকান্তের প্রোগ্রাম অনেক আলাদা। সুমন, পরশ পাথর, ভুমি, চন্দ্রবিন্দু এদের সবার অনুষ্ঠানের মেজাজ আলাদা। আবার বাংলাদেশের ব্যান্ড মাইলসের প্রোগ্রামের আলাদা আকর্ষণ। ব্যান্ড মানেই সব প্রোগ্রাম একধরনের এরকম ভাবার কোনও কারণই নেই। অনুপম যেমন একটা মধ্যপন্থা নিয়েছে - ব্যান্ড, সোলো, আর ফিল্মি গানের মেজাজের মিক্সচার থাকে ওর প্রোগ্রামে। ওর গান শুনে যে খুব নাচতে ইচ্ছে করে তা নয়, কিন্তু ও বোধয় চায় যে লোক নাচুক।

    বলিউডের কুমার শানু - অলকা ইয়াগনিকের প্রোগ্রাম দেখেছিলাম। আবার কয়েকদিন আগে কোলকাতায় অরিজিত সিংয়ের প্রোগ্রাম দেখলাম। সবকিছু পুরো আলাদা। অরিজিত সিং (এমটিভি অ্যারেন্জ করেছিলো) এর প্রোগ্রামের যা টিকিটের দাম, তার সাথে মানানসই সব ব্যবস্থা। লোকেশান, অ্যাকুইস্টিক, বিশান স্টেজ আর স্ক্রিন, প্রায় ২০-২৫ জন বাজাচ্ছেন (আদ্ধেক বিদেশি), ৩-৪ জন কোরাস, বিশাল ব্যবস্থা। আর শানুদা সেই জনা সাতেক নিয়েই প্রোগ্রাম করতেন। উনি বোধয় গানগুলো যে অলরেডি হিট সেটাই এনক্যাশ করতেন। কিন্তু অরিজিত সিংএর কাছে এক একটা প্রোগ্রাম হলো এক একটা নতুন পারফরমেন্স।

    জনগনের মধ্যে সেগমেন্টেশন আছে। অনেক লোক বাংলা ব্যান্ড শুনলেই মুখ ব্যাকায়। অনেকে সুমনের গান শুনবে কিন্তু নচিকেতার নয়। অনেকে রুপন্কর আর অনুপমের প্রোগ্রাম দেখবে, কিন্তু জীত গাঙ্গুলির গান পছন্দ নয়। আবার আমার মতন অনেকে আছে যারা আলাদা আলাদা এক্সপেক্টেশন নিয়েই এই প্রোগ্রামগুলোয় যায়। শানুদার প্রোগ্রামে নাচবো, কিন্তু অরিজিত সিংয়ের প্রোগ্রামে নয়। মাইল্সের প্রোগ্রামে গলা মেলাবো কিন্তু অনুপমের সঙ্গে নয়। শ্রীকান্ত আর সুমনের প্রোগ্রাম মন দিয়ে দেখবো কিন্তু অন্য অনেকের প্রোগ্রামেই কথা বলবো, মোবাইল চেক করবো। আর লোকে এখন নাচতে চায়, আগে নাচতো না? কারণ আগে লারেলাপ্পা গানের সাথে নাচাটাকে সমাজ অপোসমস্কিতি বলাতো, আশে পাশের লোকজন পরেরদিন কথা বলতো না। এখন লোকে সেসবের পাত্তা দেয়্না।
  • কল্লোল | 670112.220.1223.205 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২০:১৩688268
  • আগেও নাচতে। সে নাচের ধরন আলাদা ছিল। এখনের নাচ, মনে মাচার নাচে মুভমেন্ট খ্যামটার সাথে ডিস্কোর ফিউশন। মনে আমার সীমিত দেখায় তাই মনে হয়েছে। আমার টিনকালে মানে ১৯৬৪-৭০, টুইস্ট আর শেকের রাজত্ব। সে এক ধুন্ধুমার। কেউ টুইস্ট করতে করতে প্রায় শুয়ে পড়তো (শশীর হাসিনা মান জায়েগি - দিলবর দিলবর কহতে কহতে হুয়া দিওয়ানা), কেউ শেক করতো শরীর তির তির করে কাঁপছে একটা হাত আউটের ভঙ্গিতে তোলা স্থির। এটি অবশ্য জমতো বেশী তাসর সাথে। শাম্মি এতে ওস্তাদ ছিলেন। মিঠুনের ডিস্কর চাইতে গোবিন্দের নাচ দেখতে ভালো।
  • কল্লোল | 670112.220.1223.205 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২০:১৮688269
  • হ্যাঁ, এখন সবাই নাচে। তখন কেউ কেউ নাচতে। কারন সবাই ও নাচ নাচতে পারতো না। কঠিন প্র্যাকটিসের বিষয়। পরিবার সাথে না দিলে হবার নয়। তাই---
  • S | 90067.146.9004512.46 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২০:৫৬688270
  • আমাদের সময়ের নাচ ভালো ছিলো, সেখানে সিল্পো ছিলো ভরে ভরে। এখনকার নাচ ভালো না, অশ্লীল ইত্যাদি। তখন যাই করা হোতো তা ছিলো সমোস্কিতির অঙ্গ, এখন সবই অপসমস্কিতি। বিশ্বাস করুন, শুধু আমার আপনার বয়স বাড়া ছাড়া আর কিছুই পরিবর্তন হয়নি। সকলেরই নিজের যৌবন কালের জিনিস বেশি পছন্দ। কারণ সেইসব গান, সেইসব সিনেমা, সেইসব ঘোড়ার ডিম তাকে তার যৌবন ফিরিয়ে দেয় মনের মধ্যে।
  • S | 90067.146.9004512.46 | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২০:৫৮688271
  • শাম্মি কাপুরও নাকি নাচতো? ওর থেকে পাশের বাড়ির ব্যারালের গা ঝাড়ার মধ্যে বেশি রিদমিক মুভমেন্ট আছে।
  • কল্লোল | 7823.59.45.175 | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৫:২৫688272
  • বয়সের ঘোর বলে একটা বস্তু আছে, সেটা বয়সেই বাড়ে। টিন কালের মুগধতা কাটার নয়। এমনটাই তো স্বাভাবিক। যারা বলে বয়স সংখ্যা মাত্র, তারা ঢপবাজি করে। আবাজ দাও আর যাই করো আমার টিন কাল আমারই।
  • কল্লোল | 7823.59.45.175 | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৫:৩২688273
  • এবার আয়। নাচ??? নাচ দেখেছো? ছোটে নবাব-এ মেহমুদের নাচ দ্যাখ। আ ওহ টুইস্ট করে। হ্যা ভালো কথা মান্না দে গেয়েছে। শাম্মি সাদা কালো দ্যাখ। রঙিন তো বুড়ো বয়সে। তোমাদের নাচের জম্ম দিয়েছে জিতেন্দ্র - টিক টিক টিক মের দিল বোলে
  • S | 90067.146.9004512.46 | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৫:৩৫688276
  • হ্যাঁ বলিউডের নায়িকারা চিরকালই ভালো নাচতেন, বিশেষত আগের সিনেমাতে।
  • S | 90067.146.9004512.46 | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৫:৩৫688274
  • জিতেন্দ্র? সেও নাচতো নাকি?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট প্রতিক্রিয়া দিন