ঘ্যামা ঘ্যামা বইয়ের বড় বড় ব্যাপার, যেমন গড়ন, তেমনই দাম। ওদিকে নজর না দিয়ে আমরা বানিয়েছি সস্তা কাগজের চটি বই, যা সুলভ ও পুষ্টিকর।
গুরুচণ্ডা৯ চলতে শুরু করল ২০০৪ সালে। প্রথম চটি বই বেরোলো ২০১০-এ। বিজ্ঞাপনের কারবার নেই। নিজেদের লেখা, ছবি, ভিডিও, হাতে গড়া রুটির মতো, সামিজ্যাটের সাইক্লোর মতো ছড়িয়ে রাখি ইতিউতি
জালে (ওয়েব আর কী)। যে খুশি খুঁটে খান। তাতে খুব যে মারকাটারি বিশ্ববিজয় হয়ে গেছে তা নয়। কিছু বইয়ের হাজারখানেক কপি এক বইমেলায় শেষ হয়, কিছু বইয়ের হয় না। প্রথম চটি বইগুলোর কারো কারো
চার-পাঁচটা সংস্করণ হয়েছে, কারো দুটো। ওয়েবে কতজন পড়েন, সঠিক ভাবে মাপা মুশকিল। গ্রুপে কিছু হাজার, সাইটে কিছু। কুড়ি কোটি বাঙালির কাছে এসবই খুব বেশি কিছু না। তবে এই ক’বছরে সস্তায় পুষ্টিকর
চটি বইয়ের ব্যাপারটা বিলক্ষণ বুঝেছি। বিজ্ঞাপনী নেটওয়ার্ক নয়, মডেল সুন্দরীদের মার্জারচলন নয়, ঠোঙা নয়, মোড়ক নয়, লেখা তেড়ে সাইক্লো করুন, সুযোগ পেলে একটু হেঁকে নিন, ব্যস। লেখায় দম থাকলে চুপচাপ
ছড়িয়ে যাবে। ইহাই চটির ম্যাজিক। ঐতিহ্যমণ্ডিত চটি সিরিজ জিন্দাবাদ। জ্জয়গ্গুরু।
রাজধর্ম - স্বাতী ভট্টাচার্য(১৩৬) গ্রামসভা থেকে আইনসভা, সর্বত্র আলোচনা-বিতর্কের পরিসর কমছে। বিতর্ক ছাড়াই একের পর এক আইন পাশ হচ্ছে। মানবাধিকার কমিশন বা তথ্যের অধিকার কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানও দুর্বল হচ্ছে, তাই ক্ষমতাসীনের ইচ্ছায় রাশ টানা কঠিন হচ্ছে। কোনও এক আইন বা বিধি দেখিয়ে রাষ্ট্র সহজেই দুর্বলের প্রতি নিষ্করুণ হতে পারছে, সমাজের কোনও কোনও অংশও রাষ্ট্রের প্রশ্রয়ে প্রায় দুর্বৃত্তের মতো ব্যবহার করছে। আইনসিদ্ধ অনৈতিক নির্দেশের অজস্র দৃষ্টান্তের সামনে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করতে হয়, কোন নীতির নিরিখে রাজধর্মে শ্রদ্ধাশীল শাসক আপন সিদ্ধান্তের নৈতিকতা-অনৈতিকতা বিচার করবেন? এই সময়ে শুশ্রূষাবাদ আমাদের মনোযোগ দাবি করে, কারণ 'বিধিপালনই নৈতিকতা' - এই অবস্থানের বিপরীতে এর স্থান। এই মত বলে, অন্যের প্রয়োজনের প্রতি সাড়া দেওয়ার কাজই নৈতিক কাজ।
পূর্ব ইউরোপের ডায়েরি - হীরেন সিংহরায়(১৩৫) ইতিহাস সরলরৈখিক নয়, তার ঋতু-পরিবর্তন, নতুন দিনের আশা, বা ঝড়ের পূর্বাভাষ কিছুই জানান দিয়ে আসে না। যেমন আসেনি ঊননব্বইয়ের নয়ই নভেম্বর - পূর্ব বার্লিনের হাজার হাজার মানুষ ছেনি, হাতুড়ি, শাবল - যা পেলেন, তাই নিয়ে যেদিন গুঁড়িয়ে দিলেন লৌহ-যবনিকা। যেমন আসেনি একানব্বইয়ের ছাব্বিশে ডিসেম্বর - কাস্তে-হাতুড়ি-শোভিত সেই নিশানটি যেদিন বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে নেমে গেল ক্রেমলিনের চুড়ো থেকে।
পোল্যাণ্ড, পূর্ব জার্মানি, এবং রাশিয়া - পূর্ব ইউরোপের পালাবদলের এক আশ্চর্য এবং ব্যক্তিগত ইতিহাসের গল্প বলেছেন হীরেন সিংহরায়, মঞ্চে নয়, মঞ্চের বাইরে মাটিতে থেকে। আর তা ধরা আছে এই বইটির পাতায়।
কাদামাটির হাফলাইফ - ইমানুল হক(১৩৪) কাদামাটির হাফলাইফ - নিছক আত্মকথন বা স্মৃতিকথা নয়, সময়ের জীবন্ত দলিল। গ্রাম বাংলার সমবায়িক জীবনের ইতিহাস ও ইস্তেহার। যে জীবন ও উত্তরাধিকার আমরা পরিত্যাগ করেছি, করছি তার ইতিবৃত্ত। ইংরেজি, সংস্কৃত বা আরবি ফারসি রীতি নয় বাংলার নিজস্ব গদ্যরীতিতে লেখেন ইমানুল হক। বাঙালি যেভাবে কথা বলেন, যেভাবে ভাবেন - সেইভাবে বাংলা লেখেন। বাংলার গ্রাম বদলে যাচ্ছে। বলা ভালো, অতি সচেতন প্রয়াসে তাকে বদলে দেওয়া হচ্ছে। বাংলার গ্রাম কেমন ছিল, কী ঐতিহ্য আমরা বহন করি - তার দলিল এই বই। বাংলার জীবন (ছিল) সমবায়িক, ব্যক্তিকেন্দ্রিক গোষ্ঠীকেন্দ্রিক নয়। সেই জীবনের ইতিবৃত্ত এই বই। ১৯৬৬ থেকে বাংলার জীবনের চলচ্ছবি - আদত জীবন, যাপন ও চেতনার পতাকা 'কাদামাটির হাফলাইফ'।
হারানো দেশ হারানো মানুষ - অমর মিত্র(১৩২) আমাদের স্বাধীনতা এসেছিল দেশভাগের হাত ধরে। সিরিল র্যাডক্লিফ নামে এক ইংরেজ রাজ কর্মচারী, আইনজীবী ১৯৪৭ এর জুলাই মাসে ভারতে এসে, ১৯৪৭-এর ১৭-ই আগস্ট, মাত্র পাঁচ সপ্তাহে তাঁর কাজ সম্পূর্ণ করেন দিল্লিতে বসে। আমাদের স্বাধীনতা এল ১৫-ই আগস্ট, দেশ বিভাজন সম্পূর্ণ হলো ১৭-১৮-ই আগস্ট। স্বাধীন দেশ গড়া হয়েছিল কীভাবে, না মানচিত্রে দাগ কেটে। যাঁরা র্যাডক্লিফের উপদেষ্টা ছিলেন তাঁরাও পুবের বাংলা আর পশ্চিমের পাঞ্জাব চিনতেন না। বাংলা তো চিনতেন না-ই। ফলে স্বাধীনতা এল ভয়ানক উচ্ছেদ আর ভ্রাতৃঘাতী দাঙ্গার ভিতর দিয়ে। একটা সত্যকে স্বীকার করতে হয়, স্বাধীনতার আগে কেউ বুঝতেই পারেনি বাস্তবতা কোন দিকে যাচ্ছে। স্বাধীনতা মানে দিল্লির লালকেল্লা আর আগ্রার তাজমহল তোমার নয় মুসলমান, নতুন দেশে যাত্রা করো, স্বাধীনতা মানে হিংলাজ তীর্থ তোমার নয়, ভিন দেশে রয়ে গেল। কপোতাক্ষ বেতনা নদ নদী, পদ্মা মেঘনা ভিনদেশের হয়ে গেল। এই রকম কত কিছু ছিল আমাদের, হয়েছে, তোমাদের, গ্রাম নদী বটতলা, ভিটের উঠোন। সব যেন হারিয়ে গেছে দেশের সঙ্গে সঙ্গে। এই গ্রন্থটির পরিমার্জিত এই সংস্করণে গল্প, উপন্যাস নিবন্ধে দেশভাগকে স্মরণ করা হয়েছে।
দুষ্কালের আখ্যানমালা - দময়ন্তী(১৩০) শিল্পবিপ্লব, কলোনী ও বিশ্বায়ন উত্তর পৃথিবীতে দুঃসময়ের চলনগুলি কৌতূহলোদ্দীপক। সময়ের ক্রীড়নক সামান্য মানুষ ঠাহর করতে পারে না বজ্রাঘাতের আভাস, সমকালের অলাতচক্রে বন্দী মানুষ ধ্রুপদী ট্র্যাজেডির অনিবার্য পার্শ্বচরিত্র হয়ে তলিয়ে যায়। আগামীর ইতিহাস লেখক পরিসংখ্যান বিচার করেন বটে, একাকী মানুষের স্তিমিত হাহাকারের খতিয়ান উপেক্ষিতই থাকে। দময়ন্তী লিখেছেন এই শুষ্ক অশ্রুর আখ্যানমালা।
দময়ন্তী গভীর অভিনিবেশে দেখেছেন মানুষকে। মানুষের মর্মবেদনার যাপন লিখেছেন - তাঁর লেখনীতে জড়ানো হেমন্তের নির্লিপ্তি। সিজনস অব বিট্রেয়ালের পাঠক এই গভীর অথচ উদাসীন সমানুভবের সঙ্গে পরিচিত।
দুঃসময়ের এইসব অমোঘ অনাড়ম্বর এবং অনিবার্য গল্প নিয়ে এই সংকলন।
ধর্মাধর্ম - কিশোর ঘোষাল(১২৯) ব্যাকরণের মূল সূত্রগুলি কীভাবে পেয়েছিলেন পাণিনি? বলা হয় মহেশ্বর শিব এই সূত্রগুলি পাণিনিকে দিয়েছিলেন। তেমনি নাট্যশাস্ত্রও ভরত অধ্যয়ন করলেন শিবের কাছ থেকেই। এমনকি বিজ্ঞান প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয়, যেমন রসায়ন, কৃষি এইসবেরও আদি শাস্তা দেবতারাই। অর্থাৎ, যেখানে ইতিহাস আর ব্যক্তিনামের ভণিতা দেয় না, সেই সবকিছুই সভ্যতা দেবতার নামে অর্পণ করে রেখেছে। কিম্বা আদি উদ্ভাবকরাই দেবতার জায়গা নিয়ে বসে আছেন আমাদের স্মৃতিভাষ্যে।
এইভাবে দেখলে জানা যায়, আমাদের ইতিহাসের ব্যক্তিনামবিহীন ধোঁয়াচ্ছন্ন শূন্যস্থানটায় বসে আছে ধর্ম। খেয়াল করি, ইতিহাসের আকর বলে আমরা যা যা হাতে নিয়ে বসি, তা তো আসলে ধর্মেরই বই।
কিশোর ঘোষাল খুবই প্রাঞ্জল করে ভারত ইতিহাসের ওঠাপড়াকে ধরেছেন ধর্মের বিকাশের ইতিহাস দিয়ে। বলতে গেলে ধর্মের এক ঈশ্বর-নিরপেক্ষ বস্তুবাদী পাঠ তাঁর 'ধর্মাধর্ম' বইটি। এর বিভিন্ন তত্ত্ব পূর্বের পণ্ডিতদের কাজে বিক্ষিপ্তভাবে পাওয়াই যায়, কিন্তু প্রাগৈতিহাসিক থেকে মধ্যযুগ অবধি পুরো ইতিহাসটা একজায়গায় ধরা হয়নি বললেই চলে।
ধর্ম আর ভারতের ইতিহাস, দুটোরই যখন অন্তর্জলি যাত্রা চালানো হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে, তখন এই বই উল্টে দেখা দরকার, পাল্টানোর কথা ভাবতে হলে।
দক্ষিণ দামোদর জনপদ - কৃষ্ণা মালিক(১২৮) জীবনের রূপক হিসাবে নদী সততই দৃষ্টান্তস্বরূপ। এই উপন্যাসের পটভূমি পূর্ব বর্ধমান জেলার দক্ষিণ দামোদর অঞ্চল। দামোদর নদ যেমন বর্ষায় উদ্ভাসিত আর বর্ষান্তরে ম্রিয়মাণ, সময়ের ব্যবধানে এই ক্ষুদ্র ভূখণ্ডটির মানুষের জীবনও সেইরূপ। আপাত বৈশিষ্ট্যহীনতার অন্তরালে এই ভূখণ্ডের একটি অত্যন্ত শ্লাঘনীয় বৈশিষ্ট্য রয়েছেউপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র শান্তা যা অকস্মাৎ উপলব্ধি করেবাংলা ও বাঙালীর গর্বের মঙ্গলকাব্যের মহাকবিগণের অতীত বিচরণভূমি এই অঞ্চল। রাজনৈতিক, সামাজিক, সাহিত্যিক ক্ষেত্রে কিছু নক্ষত্রতুল্য মহামানবের আবির্ভাব নগরজীবন থেকে দূর অন্তরালে থাকা গ্রামীণ এলাকাটিকে অহংকারী করে তুলেছিল একদাবর্তমান সময় ও প্রজন্ম তা বিস্মৃত হয়েছে। শান্তার চিন্তন ও কলমে সেই বিস্মৃতির আবরণ সরিয়ে অতীত উদ্বোধিত হয়, আর তা প্রাসঙ্গিক হয়ে এসে মানুষের ঘরবাড়ি ও জীবনের হাত ধরে আবহমান কাল।
ভৌত খামার - নলিনী বেরা(১২৪) ভূত শব্দের আরেক অর্থ অতীতও। ভূতের মতই ইতিহাস আমাদের ঘাড়ে চেপে বসে, তাকে দেখা যায় না, কিন্তু খাঁচার পাখি ভূত শিয়রে বসিয়ে ছোলা খায় নামতা পড়ে, চারঅক্ষরে গালি দেয়। আবার বিশেষ বিশেষ তন্ত্রে সিদ্ধ হলে ভূত নাচিয়ে দেওয়া যায় শ্রেণিশত্রুর ভিটেয়। সারা ইউরোপ তখন ভূত দেখতে শুরু করে!
এই আখ্যানে সুদূর মেদিনীপুর থেকে ভূতের চারা এনে কলকাতার পাশে, হাওড়ার ডুমুরজলায় বপন করা হবে। ইউরোপ আমেরিকার বাজারে কিম্বা বাংলারই প্রান্তিক জেলার হাটে ভূতের দাম আছে। কিন্তু কে না জানে হাওড়ার নার্সারির মাল কলকাতাতেই বিকোতে হবে, আবার হাওড়ার অতীত জুড়ে থাকে প্রত্যন্ততর জেলার মাঠ থেকে আহৃত শস্যের চালানের সঙ্গেই। তো আধা-কেরানিয়াল, আধা আলোকপ্রাপ্ত কলকাতার বাজারে কি সেই ভূতের দাম উঠবে আদৌ? কলকাতার বাজারে বিজ্ঞাপন দিতে গিয়ে লেখক দেখা পান কে সি পালের, যিনি গাছের মগডালে উঠে ল্যাম্পপোস্টের সানুদেশে লিখে যাচ্ছেন- সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে।
অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার ২০২২ তত্ত্ব, তথ্য ও কিছু কূটকচালি - হীরেন সিংহরায়(১২৩) অর্থনীতির জাহাজের খবরে অনাগ্রহী আদার ব্যাপারী পাঠকের মগজে ভাষার জাদুতে ভুলিয়ে ভালিয়ে খানিক অর্থনীতি ঠুসে দেওয়ার কাজটিতে হীরেন সিংহরায়ের জুড়ি মেলা ভার। তবে পাঠক পুস্তিকাটির পাতা ওলটালেই বুঝবেন এ অর্থনীতি সে অর্থনীতি নয়, যা কালেজের ছেলেপুলেরা তাদের মাস্টারদের থেকে গণ্ডূষ ভরে নিয়ে গলায় ঢালে আর পরম মুহূর্তে পরীক্ষার খাতায় উগরে দিয়ে নিজ নিজ ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করে।
আলির কবিতা - বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়(১২১) আলি বলে কিছু হয়না। কিন্তু আলির কবিতার সঙ্গে আছি নয় নয় করে ৩৩ বছর। আয়নায় যখন নিজের মুখ দেখা যায় না তখন কী হয় আমরা জানি। আলির কবিতা আমার কাছে আয়নায় মুখ দেখার সামিল। বিপজ্জনক কিন্তু অনিবার্য। যারা ঝুঁকি নিতে পছন্দ করেন, তাঁরা, কেউ কেউ আলির কবিতা পড়বেন। এটাই আমার অনুমান।
আট পাঠে এক কবি (শঙ্খ ঘোষ) - সম্পাদনা: অভীক মজুমদার, নীলাঞ্জন হাজরা। (১২০) এই বই কবি শঙ্খ ঘোষের পাঠপ্রতিক্রিয়ার সংকলন। কিন্তু এ ঠিক আমাদের চেনা পাঠ নয়। আমরা বাংলা কবিতার স্থানীয় পাঠ এবং প্রতিক্রিয়ায় অভ্যস্ত। স্থানীয় কবি, স্থানীয় সমঝদার ও সমালোচক নিয়ে সে এক ছোট্টো বৃত্ত। কিন্তু জলে টুপ করে পড়া উপলখণ্ডটি যে ঢেউ তোলে, তার তরঙ্গ তো শুধু এই ছায়াচ্ছন্ন ঘেরাটোপেই আটকে থাকেনা। তা যে ধারণার সীমানা ছাড়িয়ে চলে যায় অনেক বেশি দূরে, এই সংকলন তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ। শঙ্খ ঘোষের কবিতা নিয়ে এখানে লিখেছেন ভারতের নানা ভাষার প্রতিষ্ঠিত কবিরা। লিপিবদ্ধ করেছেন কবি ও তাঁর কবিতা নিয়ে তাঁদের নিজস্ব পাঠ। কেউ কেউ এঁকেছেন ছবি। সেসবই ধরা থাকল, এই দুই মলাটের মধ্যে। শঙ্খ ঘোষের কবিতা যে শুধু স্থানীয় নয়, তার তরঙ্গ যে বহুদূরের বন্দরেও তৈরি করে নিজস্ব অনুরণন, এ বই তারই সাক্ষ্য দেয়।
আমার যৌনতা - দ্বিতীয় খন্ড: ক্যুইয়র কথা কও - সম্পাদনা- ঋষভ(১১৯) সে প্রায় দশ বছর আগের কথা। গুরুচন্ডালি থেকে প্রকাশ পেল ঞ্ছআমার যৌনতাঞ্জর প্রথম খন্ড। কানাঘুষো আর ৩৭৭-এর আড়ালে থাকা কিছু মানুষের আত্মকথন। আত্মার কথন।
তার পরে গঙ্গা-যমুনা-পদ্মা দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল। একে একে ঘটে গেছে নানান আইনি পরিবর্তন। আইনের চোখে একসময়ের 'অপরাধী'-রা এখন আর অপরাধী নন। অস্ফূটে বলা কথারা আজ অনেক স্পষ্ট। অনেক বাঙ্ময়।
কিন্তু, সত্যিই কি পাল্টেছে সময়?
কতটা এগিয়েছে ক্যুইয়র মানুষের জীবন? রাষ্ট্রের আইনি অবস্থানের পরিবর্তনের সাথে সাথে সত্যিই কি পালটেছে সমাজের অন্তর্লীন সুর? না কি এ শুধুই আমাদের ভুলে থাকা?
কথকতার দেশে, ক্যুইয়র জীবনের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি-ভাল লাগা-মন্দ লাগা-স্মৃতিচারণ-স্বপ্ন-আশা-আকাঙ্ক্ষার কথকতা শোনানোর জন্য, আবার বছর দশেক পরে আমরা নিয়ে এলাম 'আমার যৌনতা (দ্বিতীয় খন্ড) - ক্যুইয়র কথা কও'...
আমাদের কথা, আরেকবার, আমাদের ভাষায়।
চার রঙের উপপাদ্য - ইন্দ্রাণী(১১৮) কেবলমাত্র চারটি রং দিয়ে এঁকে ফেলা যায় অসম্পৃক্ত সমরঙের ভুবন। যৎসামান্য অনুভূতি ও আবেগসমূহের ঝুলি নিয়ে প্রতিটি মানুষ ভেসে বেড়ায় বিচ্ছিন্ন প্রাগৈতিহাসিক দ্বীপের মতো, হিমযুগ কিংবা তার অবসানের অপেক্ষায়। তেমনই সামান্য ক'টি চরিত্রের সামান্য জীবন ঘিরে আবর্তিত হয়েছে এই উপন্যাস।
ছোটগল্পের মাধ্যমে ইন্দ্রাণীর পরিমিত ও গভীর লেখনীর সঙ্গে পাঠকের পরিচয় নতুন নয়। তাঁর প্রথম উপন্যাসে ইন্দ্রাণী সাজিয়ে তুলেছেন এক বৃহত্তর ক্যানভাসকে, যেখানে কলমে রচনা করা রংকে ছোঁয়া যায় আঙুলে আর চেনা পৃথিবীর মিস্টিক কুয়াশা ভেদ করে ছড়িয়ে পড়ে হিমযুগের নির্জন আলো।
বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে,
মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা,
কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
আমাদের কথা
আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের
কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি
জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
বুলবুলভাজা
এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ।
দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও
লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
হরিদাস পালেরা
এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে
পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান
নিজের চোখে...... আরও ...
টইপত্তর
নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান।
এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর।
... আরও ...
ভাটিয়া৯
যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই,
সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক
আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক।
অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি।
যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected] ।
মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি
বার পঠিত
সকলকে জানান
উপরে যে কোনো বোতাম টিপে পরিচিতদের সঙ্গে ভাগ করে নিন