ঘ্যামা ঘ্যামা বইয়ের বড় বড় ব্যাপার, যেমন গড়ন, তেমনই দাম। ওদিকে নজর না দিয়ে আমরা বানিয়েছি সস্তা কাগজের চটি বই, যা সুলভ ও পুষ্টিকর।
গুরুচণ্ডা৯ চলতে শুরু করল ২০০৪ সালে। প্রথম চটি বই বেরোলো ২০১০-এ। বিজ্ঞাপনের কারবার নেই। নিজেদের লেখা, ছবি, ভিডিও, হাতে গড়া রুটির মতো, সামিজ্যাটের সাইক্লোর মতো ছড়িয়ে রাখি ইতিউতি
জালে (ওয়েব আর কী)। যে খুশি খুঁটে খান। তাতে খুব যে মারকাটারি বিশ্ববিজয় হয়ে গেছে তা নয়। কিছু বইয়ের হাজারখানেক কপি এক বইমেলায় শেষ হয়, কিছু বইয়ের হয় না। প্রথম চটি বইগুলোর কারো কারো
চার-পাঁচটা সংস্করণ হয়েছে, কারো দুটো। ওয়েবে কতজন পড়েন, সঠিক ভাবে মাপা মুশকিল। গ্রুপে কিছু হাজার, সাইটে কিছু। কুড়ি কোটি বাঙালির কাছে এসবই খুব বেশি কিছু না। তবে এই ক’বছরে সস্তায় পুষ্টিকর
চটি বইয়ের ব্যাপারটা বিলক্ষণ বুঝেছি। বিজ্ঞাপনী নেটওয়ার্ক নয়, মডেল সুন্দরীদের মার্জারচলন নয়, ঠোঙা নয়, মোড়ক নয়, লেখা তেড়ে সাইক্লো করুন, সুযোগ পেলে একটু হেঁকে নিন, ব্যস। লেখায় দম থাকলে চুপচাপ
ছড়িয়ে যাবে। ইহাই চটির ম্যাজিক। ঐতিহ্যমণ্ডিত চটি সিরিজ জিন্দাবাদ। জ্জয়গ্গুরু।
চার রঙের উপপাদ্য - ইন্দ্রাণী(১১৮) কেবলমাত্র চারটি রং দিয়ে এঁকে ফেলা যায় অসম্পৃক্ত সমরঙের ভুবন। যৎসামান্য অনুভূতি ও আবেগসমূহের ঝুলি নিয়ে প্রতিটি মানুষ ভেসে বেড়ায় বিচ্ছিন্ন প্রাগৈতিহাসিক দ্বীপের মতো, হিমযুগ কিংবা তার অবসানের অপেক্ষায়। তেমনই সামান্য ক'টি চরিত্রের সামান্য জীবন ঘিরে আবর্তিত হয়েছে এই উপন্যাস।
ছোটগল্পের মাধ্যমে ইন্দ্রাণীর পরিমিত ও গভীর লেখনীর সঙ্গে পাঠকের পরিচয় নতুন নয়। তাঁর প্রথম উপন্যাসে ইন্দ্রাণী সাজিয়ে তুলেছেন এক বৃহত্তর ক্যানভাসকে, যেখানে কলমে রচনা করা রংকে ছোঁয়া যায় আঙুলে আর চেনা পৃথিবীর মিস্টিক কুয়াশা ভেদ করে ছড়িয়ে পড়ে হিমযুগের নির্জন আলো।
চারটি অধুনান্তিক উপন্যাস - মলয় রায়চৌধুরী(১১৭) কী আছে, বলা খুব মুশকিল। ধারণা করতে চাইলে এই উপন্যাসগুলি পড়ে ফেলাই শ্রেয়। কেবল এটুকু বলা যায় জীবনের বিবিধ উত্তেজক ও একঘয়ে বিষয়গুলি, যেমন প্রেম -রাজনীতি-যৌনতা-ইতিহাস-ক্রাইম-ব্যবসা এইসব চারদিক থেকে এসে চচ্চড়ি পাকিয়ে যেতে থাকে এই উপন্যাসগুলিতে। অথচ, কাহিনি তার নিজস্ব শিহরণে টানটান এগিয়ে যায়- এবং শেষ হয় যেখানে সেখানে আবার শুরু হতেই পারে পরের কাহিনির। মলয় রায়চৌধুরীর এই পর্বের সাহিত্য জীবনের বিভিন্ন বাঁক, যা আমরা ক্রমন্বয়ে প্রকাশ করে চলেছি , তাতে অভি নব সংযোজন হবে এই বই। মলয়ের লে খা আপনি পছন্দ করতে পারেন, অপছন্দও করতে পারেন, কিন্তু আপনার সুখের ইডেন অকস্মাৎ হাওয়া হয়ে গেল, এই অনাথবৎ অনুভূতির শিকার যদি না হতে চান, তো পড়ে ফেলুন।
নিজের বিরুদ্ধে - জয় গোস্বামী(১১৬) বগটুই এবং তার পরবর্তীকালে আরও কয়েকটি নারীনির্যাতন, ধর্ষণ এবং হত্যার প্রতিক্রিয়ায় জয় গোস্বামী আরও কিছু কবিতা লিখেছিলেন। সেই সবকটি লেখা নিয়ে আমরা প্রকাশ করতে চলেছি আরেকটি বই – ‘নিজের বিরুদ্ধে’। এলাকার প্রভাবশালীদের হাতে আক্রান্ত অসহায় নির্যাতিতা এবং তার পরিজনদের দুরবস্থার এক দলিল হয়ে থাকবে এই কবিতাগুলি। এই লেখাগুলির প্রেক্ষিত সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা হলেও, পরিসর আরও ব্যাপ্ত। যে শাসনকাঠামোয় আমরা জীবন কাটাচ্ছি, তার সুযোগ-সুবিধাগুলি নিয়ে দুধেভাতে সংসার প্রতিপালন করছি, সেই কাঠামোর নৃশংসতা নিশ্চিতভাবে আমাদের নিজেদের দিকেও আঙুল তুলে দেয়- এই উপলব্ধির আয়না তুলে ধরেছেন কবি।
দগ্ধ - জয় গোস্বামী (১১৫) লেখালিখির এ কোনো উপযুক্ত সময়ই নয়। একদিকে গ্রাম জ্বলে খাক, সারিসারি পোড়া লাশের গন্ধ। অন্যদিকে গর্দভের রাজত্ব। আকচা-আকচি। কোন প্রতিবাদ মাপে মাপ, রেডিমেড, নাকি দর্জির মর্জিমাফিক, তাই নিয়ে তর্জা। পোড়া লাশ, আর মধ্যরাতের এই যাত্রা নিয়েই গুরুচণ্ডা৯ ছাপছে বই। ছাপছে, কারণ, না ছেপে উপায় নেই। কবিও লিখছেন, কারণ না লিখে উপায় নেই। ভূমিকায় কবি বলছেন, "রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে প্রতিশোধের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল একদল নিরপরাধ মানুষ। ঘুমোতে যাওয়ার আগে ওরা কেউ ঘুণাক্ষরেও ভাবেনি, এই ঘুম ভাঙবে না আর। মানুষ পোড়া কটু গন্ধ নাকে নিয়ে যে রাতে ওদের সন্ত্রস্ত প্রতিবেশীরা গ্রাম ছাড়ছে, এই কবিতাগুলি সেই বিনিদ্র রজনীর সন্তান। যে শিশু, যে মা জীবদ্দশায় জানতে পারেনি কোন গোষ্ঠীর হাতে তার বাঁচা-মরার অধিকার ন্যস্ত, এ কবিতাগুচ্ছ তারই নিরুপায় শোকগাথা।"
কুমুদির জন্যে - গুরুচণ্ডা৯(১১৪) কুমুদি চলে গেলেন। কুমুদি রয়ে গেলেন তাঁর লেখায়। কুমুদি রয়ে গেলেন স্মৃতিতে।
স্মৃতিস্তম্ভের স্থবিরতাকে ভালবাসিনি আমরা, চেয়েছি স্মৃতির চলমানতা। অক্ষর বেয়ে বেয়ে পরের প্রজন্মেও পৌঁছে যাক কুমুদি- তারা চিনুক আমাদের কুমুদিকে, ভালবাসুক, লেখা পড়ুক, পড়াক বন্ধুদের।
কুমুদিও তাদের চিনতে চাইবেন- বলাই বাহুল্য। স্মিত সহাস্য মুখে জিগ্যেস করবেন- কই, কী লিখচ, শোনাও দেখি।
এই সব অলীক চেনাজানাকে বাস্তব করতে গুরুচণ্ডা৯ শুরু করল বার্ষিক 'কুমুদি জন্য গল্প' - কিশোর কিশোরীদের বাংলা গল্প লেখার আয়োজন।
প্রথম বছরের অংশগ্রহণকারীদের লেখা গল্প প্রকাশিত হল এই বইয়ে। বইয়ের শেষাংশে থাকল বড়দের স্মৃতিচারণ, কুমুদিকে নিয়ে।
দগ্ধ - জয় গোস্বামী(১১৩) লেখালিখির এ কোনো উপযুক্ত সময়ই নয়। একদিকে গ্রাম জ্বলে খাক, সারিসারি পোড়া লাশের গন্ধ। অন্যদিকে গর্দভের রাজত্ব। আকচা-আকচি। কোন প্রতিবাদ মাপে মাপ, রেডিমেড, নাকি দর্জির মর্জিমাফিক, তাই নিয়ে তর্জা। পোড়া লাশ, আর মধ্যরাতের এই যাত্রা নিয়েই গুরুচণ্ডা৯ ছাপছে বই। ছাপছে, কারণ, না ছেপে উপায় নেই। কবিও লিখছেন, কারণ না লিখে উপায় নেই। ভূমিকায় কবি বলছেন, "রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে প্রতিশোধের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল একদল নিরপরাধ মানুষ। ঘুমোতে যাওয়ার আগে ওরা কেউ ঘুণাক্ষরেও ভাবেনি, এই ঘুম ভাঙবে না আর। মানুষ পোড়া কটু গন্ধ নাকে নিয়ে যে রাতে ওদের সন্ত্রস্ত প্রতিবেশীরা গ্রাম ছাড়ছে, এই কবিতাগুলি সেই বিনিদ্র রজনীর সন্তান। যে শিশু, যে মা জীবদ্দশায় জানতে পারেনি কোন গোষ্ঠীর হাতে তার বাঁচা-মরার অধিকার ন্যস্ত, এ কবিতাগুচ্ছ তারই নিরুপায় শোকগাথা।"
রুনু সাদা না রুনু কালো? - গুরুচণ্ডা৯ এবং বিসংবাদ(১১২) রুণু গুহনিয়োগি সাদা না কালো, এ নিয়ে আমাদের কোনো সন্দেহ থাকার ব্যাপারই নেই। রুনুর নিজেরও তেমন ছিলনা। নইলে একখানা বই লিখে তার নাম কেউ “সাদা আমি কালো আমি” দেয়না। এসব প্রলাপ অবশ্য ২৫ বছরেরও বেশি আগের। যখন রুনুর বইখানা প্রকাশিত হয়। তার পাতায় পাতায় রুনুর বীরত্ববর্ণনা, পাড়ার ছেনোমস্তানের আত্মজীবনীর কিংসাইজ ভারসান যেন। কিন্তু বছর ২৫ পরে দেখা যাচ্ছে, অত সহজে বিষয়টা ছেড়ে দেওয়া ঠিক হয়নি। এখন আরেকটি আধা স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা ঘাড়ের উপর নাচছে। “রুনু সাদা না রুনু কালো?” এই আধারেটরিকাল প্রশ্নের খুল্লামখুল্লা জবাব দিচ্ছেন মহাশ্বেতা দেবী, অশোক দাশগুপ্ত, তুষার তালুকদার, সুজাত ভদ্ররা। বইটা আজকের নয়। রুনুর বইয়ের প্রায় সমবয়সী।বিসংবাদ ২৫ বছর আগেই প্রকাশ করেছিল বইটা। তখন সে বই নিঃশেষিত হয়েছিল। ২৫ বছর পরে কানমলার আবার প্রয়োজন হয়েছে। তাই পুনঃপ্রকাশ হল গুরুচণ্ডা৯ এবং বিসংবাদের যৌথ উদ্যোগে।
রসুই ঘরের রোয়াক - স্মৃতি ভদ্র(১১১) ছ বছরের মেয়েটি ঠাকুমা, ঠাকুদ্দা, পিসি, কাকা, আইনুল চাচা, গোলেনুর দাদি, কোহিনূর দাদি সকলের মধ্যে বড় হচ্ছিল। বড় হওয়া তার ঠাকুমার রসুইঘর দেখতে দেখতে। সেই রসুইঘরের অনুপম বর্ণনা এই বইয়ের সম্পদ। খুব নিচু স্বরে কথা বলেন স্মৃতি। অতি নিবিড় তাঁর কথনভঙ্গি। পড়তে পড়তে বুক ভরে যায়। তাঁদের পরিবারের তাঁত ছিল বাহিরবাড়িতে। ভিতরবাড়িতে এক উনুন, এক উঠান, এক অন্ন। বাবা যতদিন বদলি না হচ্ছেন ততদিন এমনই চলছিল। সেই এক উনুনের পরিবারের প্রধান। এই গ্রন্থ নিছক রান্নাবান্নার বই নয়। আরো অতিরিক্ত যা আছে মন ভরিয়ে দেয়। অপূর্ব এক পরিবার, অপূর্ব এক গ্রাম, মাকুর শব্দ, করতোয়া নদী, এক জীবনের শিকড়বাকড়ের কথা তুলে এনেছেন স্মৃতি। এই রসুইঘরে একছত্র আধিপত্য ঠাকুমার। তিনি ভোরে ওঠেন, স্নান সারেন, চা দিয়ে আরম্ভ হয় পরিবারের দিন। স্মৃতির এই বই আরম্ভ হচ্ছে পালং শাকের সুক্ত দিয়ে।
রুহানি - সুপর্ণা দেব(১১০) পথ আসলে মস্ত গোঁয়ার প্রেমিক, কবি রেহান কৌশিক লিখেছিলেন। সত্যি সে একেবারে নাছোড়! এ সর্বনেশে পথ!
মির্জা গালিবও হাড়ে হাড়ে বুঝেছিলেন। জিন্দগী ইয়ুঁ ভি গুজর হী যাতি / কিঁউ তেরা রাহ গুজার ইয়াদ আয়া?
জীবন তো এমন ভাবেই বেশ কেটে যেত, কেন তোমার পথের কথা মনে এলো? রবিবাবুকে আর নাই বা উল্লেখ করলাম। পথে চলতে চলতে দুটি বিপরীত আকর্ষণ হয়। আসক্তি আর বৈরাগ্য! আর তার মাঝখানে থাকে একটা অচিন পাখি! এই অচিন পাখির ডানায় ভর দিয়ে আসে মায়া!
রুহানির গল্পপথে, কোহরা, মেহরনিগার, আলমিত্রা বা দোলনচম্পা বারবার এসে দাঁড়িয়েছে। বিল্টু দাদুর ছবি আঁকার রং তুলি, হঠাৎ করে হাজির হওয়া ইবন বতুতার ঝোলা, ইউরেশিয়ার তৃণভূমিতে দাস্তানগুরুর জোব্বার ভেতর থেকে মুঠো করে উড়িয়ে দিয়েছে তারা সময় থেকে সময়হীনতার গল্প। হিরামনের ডানার মধ্যে গুটিয়ে থাকা অনন্ত পথকে টেনে এনে নিজেরাই পথিক সেজে বসেছে বারবার।
সমকামিতা ও বিবর্তন - সুদীপ্ত পাল(১০৯) সমকামিতা একটা সময় কার্যত নিষিদ্ধ ছিল। জেল-জরিমানা হত। ঠিক সত্তর বছর আগে, ১৯৫২ সালে বিশ্ববিশ্রুত বিজ্ঞানী অ্যালান টুরিং বিলেতের আদালতে সমকামিতার অপরাধে 'অপরাধী' প্রমাণিত হন। তাঁকে কারাবাস এবং হরমোন-'চিকিৎসা'র মধ্যে, যেটা খুশি বেছে নিতে বলা হয়। টুরিং হরমোন চিকিৎসা বেছে নেন। এবং তারপর এই অত্যাচার সহ্য না করতে পেরে বছর দুয়েকের মধ্যে টুক করে আত্মহত্যা সেরে নেন। নামেই বোঝা যাচ্ছে, বিষয়বস্তুটা কী। তবে একটা কথা বলে দেওয়া ভালো, 'বিজ্ঞান সব জানে, আসুন আপনাকে বুঝিয়ে দিই' এই দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে বইটা লেখা হয়নি। অন্য সমস্ত কিছুর মতোই সমকামিতা প্রসঙ্গেও নানা ব্যাখ্যা আছে। তার কিছু অংশ পরস্পরবিরোধী। ব্যাখ্যা হয়নি, এমন জিনিসও আছে। সবই এসেছে এই বইয়ে। কারণ, ব্যাপারটা একেবারেই এই নয়, যে, 'সমকামিতা বিজ্ঞানসম্মত, তাই একে মেনে নিন'। বরং উল্টো, 'সমকামিতা ঘোরতর বাস্তব, তাই একে স্বীকার করুন, বিজ্ঞানকে দিন ব্যাখ্যা করতে'। মহাবিশ্বের অর্ধেক জিনিসের ব্যাখ্যা আমাদের জানা নেই, তাতে মহাবিশ্বের অস্তিত্ব নিয়ে কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেনা। 'আগে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস বিজ্ঞান সম্মত কিনা জেনে নিই, তারপর প্রশ্বাস নেব' এরকম কেউ আজ অবধি কেউ বলেনি। সমকামিতাকেও সেই ভাবেই দেখতে হবে। এই হল সময়ের দাবী। তার মানে এই নয়, যে, সমকামিতার ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। বা বিজ্ঞানের আলোকে দেখার দরকার নেই। ব্যাপারটা এখানেও উল্টো। সমকামিতা আছে বলেই, বিজ্ঞানের প্রয়োজন অনুসন্ধানের। এই বইটি সেই অনুসন্ধানেরই অংশ।
যে সুচিত্রা সেন কিডন্যাপ হয়েছিলেন - কুলদা রায়(১০৮) কুলদা রায় একজন বিপজ্জনক ব্যক্তি। এই জন্য নয়, যে, তিনি বিপজ্জনক কিছু লেখেন। আসল বিপদ তাঁর দেখার ভঙ্গীতে। কত লোকে কত ভাবে দেখে। কেউ আড়চোখে, কেউ সোজাসুজি। কারও দৃষ্টি ঘোরালো, কেউ চোখ পাকিয়ে তাকায়। কেউ কটাক্ষ করে, কেউ রাখে নজরবন্দী। কিন্তু দেখে একই জিনিস। কুলদা রায় এর মধ্যে থেকে এমন কিছু দেখে ফেলবেন, যা ব্যাকরণে নেই। এ কথা সক্কলে জানে, যে, সুচিত্রা সেনকে যখন দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার দেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হল, তখনতিনি লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গেছেন। কাউকে দেখা দিচ্ছেন না। শোনা যায়, সুচিত্রা সেন তার দরজার নিচে দিয়ে একটি চিরকুট পাঠিয়েছিলেন। লিখেছিলেন, না, তিনি এ পুরস্কারটি নিতে পারেন না। সুচিত্রা সেন সেজে থাকতে তার আর ভালো লাগছে না। ফিনিস। এখান থেকে কুলদা রায় প্রত্যক্ষ করেন, যে, উনি আসলে সুচিত্রা সেন নন। সেজে ছিলেন মাত্র। আসল সুচিত্রা সেন তবে কোথায়? জানার জন্য কুলদার লেখা গল্প পড়তে হবে। তাতে যাই থাক, মোদ্দা কথা এই, যে, সেটা আম পাবলিকের নজরে পড়ে নি। কুলদা বাংলায় গল্প লেখেন। কুলদার বিপজ্জনক দৃষ্টির কারণে, সে গল্প ভারত না বাংলাদেশের, বোঝা ক্রমশ দুষ্কর হয়ে যায়। তার মধ্যে আবার দুমদাম ঢুকে পড়ে ফেসবুক।
অনুদানের লজ্জা - স্বাতী ভট্টাচার্য(১০৭) রূপশ্রী, সবুজসাথী, আনন্দধারা, লক্ষ্মীশ্রী। যেন সিরিয়ালের নাম। আসলে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নানারকম অনুদানের প্রকল্প হলে কী হবে, তা নিয়ে যা চলছে তা মেগাসিরিয়ালের চেয়ে কম কিছু না।। ঘোষণার পর থেকে হট্টগোল, আর তর্জা। সে তর্জার একদিকে আছে, "এ তো ভিক্ষের দান"। লাইন দাও, নাম লেখাও, পয়সা পাও। ক্লাবদের পুজোর পঞ্চাশ হাজার টাকা পাইয়ে দেবার সঙ্গে তুলনা চলছে। পারলে বেল-আউটের সঙ্গেও মিলিয়ে দেওয়া হয় আর কী। আর অন্যদিকে আছে, "সরকারের কাজই মানুষের সেবা করা। অনুদান ভিক্ষে কেন হবে, ও তো জনসেবার অংশ।" যেন, জনসেবা মানেই অনুদান। আর এটাই সরকারের একমাত্র কাজ। অনুদানের ব্যাপারটা ঠিক সরলরেখায় চলেনা। তার নানা নৈতিকতা আছে। বিভিন্ন মাত্রার ঔচিত্য অনৌচিত্য আছে। সেসব নিয়েই স্বাতী ভট্টার্যের বই, অনুদানের লজ্জা। এটি আসলে একটি বক্তৃতা। লিখিত আকারে বই হয়ে বেরোচ্ছে এই প্রথম।
গুল্মদের গল্পসল্প - কমলেশ পাল (১০৬) এই সংকলনের সাতাশটি গল্পে জীবনের বয়ে চলা - মূলত প্রান্তিক। প্রতিটি গল্পই যেন আপন মুদ্রাদোষে একলা - কোথাও নরনারীর সম্পর্কের বিচিত্র নকশা, কোথাও প্রান্তিক মানুষের অদৃশ্য শক্তিকে উপরতলার মানুষের গোপন ভয়, কখনও বা তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব গল্পের চেহারা নিয়েছে। কোথাও গল্প সাদামাটা শুরু হয়ে শেষে বিস্ফোরক, কোথাও বা অগ্রজ লেখকের কোনো গল্পের ছায়া চকিতে উঁকি দিয়েই একদম মিলিয়ে গেছে অনন্য ট্রিটমেন্টে। গল্পের শেষ কবিতার রূপ নেয় কোথাও, চিরন্তন সত্যি কথা আশ্চর্য সব উচ্চারণে বলা হতে থাকে বারবার, রোদ-রক্তের বাস্তব থেকে জ্যোৎস্নার মায়ায় ঢুকে পড়ে গল্পের মানবমানবী, আবার নাটকের কুশীলবের দৈনন্দিন ছাপিয়ে স্বপ্নে মঞ্চ আসে - সে নাটকেও মুশকিল আসান হয় না - মঞ্চ অদৃশ্য হয়ে ফিরে আসে ভাঙা আয়না, নায়ক নিজেকেই ভেংচি কাটে। লেখক কমলেশ পাল। এই বিশিষ্ট বর্ষীয়ান কবি প্রচার-উজ্জ্বল হ্যালোজেন বৃত্তের বাইরে মেদুর আলোবাসী। কবিতায় সমর্পিত যাপনের হাত গলে যে কটি গল্প, প্রতিটিই অনন্য। তাদের একত্রে গ্রন্থনা এই প্রথম।
সফেদ গাধাটি একা - শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়(১০৫) শেষ কয়েক বছর তিনি অল্প সংখ্যক কবিতা লিখেছেন। বিনয়ের বিতর্কিত 'ভুট্টা সিরিজ' ভাব, অর্থ ও অস্থিরতা সহ শুভেন্দুকে অন্য কবিতা লেখার নির্বাসন দিয়েছে। উৎস এটুকু; রূপক, প্রতীক ও ইমেজারি, সর্বোপরি নতুন ভাষা ও সংকেতে রচিত কবিতাগুলো স্বতঃস্ফূর্ত ও মৌলিক। অক্ষরবৃত্ত অটুট, কখনো ভাঙচুর, তবু স্বীয়।
সেক্সুয়ালিটি বিষয় করে লেখা কবিতার কপালে দুর্ভোগ অনেক। সবদিকে প্রতিকূল, সর্বার্থে ঝুঁকিপূর্ণ এই পরিসরে শুভেন্দু সওয়ার হয়ে স্থির। তাঁর যাত্রা আপাত-সুগম নয়।
অরূপ বৃন্দাবন ও অন্যান্য পদ - সোমনাথ রায়(১০৪) মধ্যযুগ ছিল অন্ধকার, তারপর জল পড়িল, পাতা নড়িল, ফুল ফুটিল এবং সিরাজ বধ করিয়া, সগর্বে য়ুরোপ আসিয়া বাংলাকে গ্লোবাল করিয়া জ্ঞানের আলো দেখাইল, সোমনাথ এইসব ঢপেচ্চ্পেও বিশ্বাস করে না। সে রামপ্রসাদের ভক্ত। প্রগতি নামক লিনিয়ারিটিকে এন্তার দুচ্ছাই করে, বোধহয় একটু বেশিই করে। ইংরেজ এসে বাংলায় স্বর্গের সিঁড়ি বানিয়ে দিয়েছিল, সেই পাশ্চাত্য সিঁড়ি দিয়ে আমরা ক্রমাগত উপরে উঠে একদিন মেঘ ও ইনস্যাট ছাড়িয়ে সুখের সপ্তম স্বর্গে পৌঁছব, এতে সে বিশ্বাস করে না। মধ্যযুগের বাংলার সমৃদ্ধি শুধু সাংগীতিক বা আধ্যাত্মিক ছিল না। আমরা জানি পৃথিবীর অর্থনীতির সামনের সারিতে ছিল চৈতন্যমণ্ডিত বাংলাদেশ। উৎপাদনের শীর্ষে উঠতে রাষ্ট্র-সমাজের দ্বন্দ্ব, জাতিদ্বেষ, ব্যক্তিগত লোভ হিংসা এইসব সমস্যার সমাধান তাকে করতে হয়েছিল নিশ্চয়ই। যেমন আবশ্যিকভাবে এসেছিল এলিয়েনেশন, কমোডিটি ফেটিশ প্রভৃতি প্রশ্নগুলির উত্তর খোঁজা। হরিবিরহের বাংলা উপলব্ধি করেছিল না-পাওয়াও এক বড় অর্জন এবং সেই অর্জন সমন্বয়ের। সেই অর্জন তাকে দিয়েছিল বৃন্দাবনের উপাসনার অধিকার। এইসকল আলোচনা পাওয়া যাবে প্রকাশিতব্য বই "অরূপ বৃন্দাবন ও অন্যান্য পদ"-এ।
করোনাকালীন - অনুরাধা কুন্ডা (১০৩) করোনা চলছে। জীবনও। এই ভয়ানক অতিমারী কালেও, লাখে লাখে পরিযায়ী শ্রমিকের ঘরে ফেরার দিনেও, অজস্র মৃত্যুমিছিল, অনন্ত লকডাউন, পেরিয়েও চলছে নয়া স্বাভাবিকতা। নিউ নর্মাল। মুখোশ যেখানে অঙ্গভূষণ, কিন্তু থেকে যায় চোখের ইঙ্গিত। সিনেমাহল বন্ধ, প্রেক্ষাগৃহে লালবাতি, কিন্তু কোন অনন্ত সময়ের পিছন থেকে উঁকি দিয়ে যায়, সেই কবে মরে যাওয়া দিব্যা ভারতী। বাড়ি থেকে পালিয়েছিল জুহি। তার শরীর ভারি, কিঞ্চিৎ বাতিল হওয়া দিব্যার মতো। হিরোইন হওয়া কপালে নেই, প্রেমিক সটকেছে, কিন্তু ক্লায়েন্ট আছে এই করোনাকালেও। বন্ধ আছে উড়োজাহাজ, রিসর্ট কিন্তু খোলা। এই হোটেলের মালিক নাকি সুনীল শেট্টি। তাকে কখনও দেখা হয়নি, কিন্তু ভাইরাস দেখা হয়ে যায় জুহির। জ্বর আসে ধুম। অসমাপ্ত কনস্ট্রাকশানের নিচে জ্বরে হাত পা কাঁপে। ঘোরের মধ্যে ভাত আর সর্ষের তেলের গন্ধ পায়। কাউকে ফোন করার কথা মনে পড়ে না। শুধু মায়ের গন্ধ পায়। মায়ের চোখদুটো শ্যামাদিদির মত। অনুরাধা কুন্ডা করোনাকালের এই জীবন এবং মৃত্যুকে লিপিবদ্ধ করেছেন।
হননকাল - প্রতিভা সরকার(১০২) এ এক অদ্ভুত সময়। এ এক হননকাল। পৃথিবীতে কালান্তক করোনার আক্রমণের বাইরেও ঘটে চলেছে একটানা প্রাণঘাতী হননযজ্ঞ। না, ভাইরাস না। ভাইরাস মানুষের নিয়ন্ত্রণে নেই। কিন্তু এখানে যার কথা বলা হচ্ছে, তা রীতিমতো আনুষ্ঠানিকভাবে মানুষেরই নিয়ন্ত্রণে। রাজনৈতিক নেতৃত্বে, সম্পূর্ণ পরিকল্পনামাফিক ভাবে নিত্যদিন ধ্বংস করা হচ্ছে, জল, জঙ্গল আবাসভূমি। এ এক অদ্ভুত সময়, যখন সাড়ম্বরে ধ্বংসসাধনের নাম দেওয়া হয়েছে উন্নয়ন, বন্যাকে চিরস্থায়ী করার নাম হয়েছে বন্যানিয়ন্ত্রণ, উচ্ছেদকে বলা হচ্ছে নগরায়ন, আর কর্পোরেট শকুনের নাম বেদান্ত। ঢাকঢোল পিটিয়ে এইসব নিত্যনতুন নামের আবাহন চলছে। চলছে ডিজে সহযোগে লাগাতার ভাসানগীতির উদযাপন। আর এই মহাধামাকার নিচে চাপা পড়ে যাচ্ছে, প্রান্তজনের মিহি আর্তনাদ। উন্নতির উৎসব চলছে দিগ্বিদিকে। প্রতিভা সরকার, ধবংসের এই রাজসূয় যজ্ঞের কথা লেখেন। কর্পোরেট বুটের নিচে চাপা পড়া আর্তনাদের কথা লেখেন। তিনি নিয়মগিরির লুঠেরাদের কথা লেখেন। মানুষ, পরিবেশ, সরকার, কর্পোরেটকে ঘিরে, যে ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, এবং চলেই যাচ্ছে, প্রতিভার এই বই তারই বিবরণ। কিছুটা তথ্য, কিছুটা অভিজ্ঞতা মিলিয়ে-মিশিয়ে তৈরি হয়েছে, উন্নয়নের নিচে যে অন্ধকার, যে ডালে বসে আছি, সেই ডালই কেটে ফেলার বাহারি আহাম্মকির বিজ্ঞাপনের যে আড়ম্বর, নিজের আবাসস্থল নষ্ট করে ফেলার বাহাদুরির যে আস্ফালন, তারই আখ্যান।
বাঙালির খাপছাড়া ইতিহাস - সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়(১০১) এই বইটিতে চারটি লেখার সমাহার। খুব গোদাভাবে বললে, দুটি রাজনীতির ইতিহাস প্রসঙ্গে, অন্য দুটি সংস্কৃতির রাজনীতি প্রসঙ্গে। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ও সুভাষ চন্দ্র বসুর রাজনৈতিক মতপার্থক্য, বাংলা ভাগ, হিন্দি সিনেমার সফলতা ও বাংলার বিফলতা এবং টিভি সিরিয়ালের হাল - এই বিষয়গুলিকে এমনভাবে দেখা হয়েছে, যা বস্তুত বাংলা ভাষায় আগে কখনও হয় নি। উপরোক্ত পংক্তিটি বিজ্ঞাপনমূলক নয়, পরিচিতিমূলক। আর, এই বইটিতে সুখপাঠের হদিশ মিলবে না।
দিল্লি হত্যাকান্ড ২০২০ - সোমনাথ গুহ(১০০) সিএএ আইন প্রবর্তনের পর শাহীনবাগ এবং তৎপরবর্তী যে 'দাঙ্গা' হয়েছিল মাত্র দুবছর আগে, ২০২০ সালে, পরবর্তী দুবছরের করোনা পরিস্থিতিতে সেকথা অনেকটাই চাপা পড়ে গেছে। অথচ ভয়াবহতার নিরিখে এই ঘটিয়ে তোলা 'দাঙ্গা' অন্যান্য গণহত্যাগুলির চেয়ে কম কিছু নয়। 'দাঙ্গা' চলাকালীন, ২৭শে ফেব্রুয়ারি, কিছু সমাজকর্মী দিল্লির কিছু ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। তাঁরা দেখেন, যে, পদ্ধতি এবং প্রকরণে নির্দিষ্ট সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করে তোলা হয়েছিল দিল্লিতে, তা ২০০২ এর গুজরাত বা ১৯৮৪ র দিল্লির 'দাঙ্গা'র থেকে পৃথক কিছু নয়। হত্যার সংখ্যা নিঃসন্দেহে অনেক কম, কিন্তু পদ্ধতি এবং নৃশংসতা একেবারে এক। এইসব টুকরো-টুকরো রিপোর্ট, ধারাবিবরণী এবং আরও অনেক কিছু জুড়ে সোমনাথ গুহ ধরেছেন দিল্লির দাঙ্গার ইতিহাসকে। যা মাত্র দুবছর আগে ঘটলেও, মনে হয় যেন অনেক আগের কথা। সেই কারণেই এই ইতিহাস বারংবার পড়া দরকার।
৪৬ হরিগঙ্গা বসাক রোড - শক্তি দত্ত রায়(৯৯) ডিহং, ডিবং, গাবরু বাংলা সাহিত্যে তত বিখ্যাত নয়। ক্ষীণতোয়া মনু নদীর নাতি পুতিও বর্তমান, তাই বা কে জানত? সেসব নদীর জলে সময়ের ছায়া কেমন ভাবে পড়েছিল তাও আমরা সম্যক জানি না। ময়মনসিংহের ঠুনকি, মানকি বা আৎকা পীরের বিষয়েও আমাদের জ্ঞান সীমিত। ভারত ভূখন্ডে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে ত্রিপুরা, আসামের বাঙালীদের জীবন কেমন ছিল? আমরা জানিনা। ঈশান কোণের ভারতবর্ষ, আমাদের ভূগোলের বাইরে, তার ইতিহাসও দশম শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ে পাওয়া যায়না। আমরা 'মেঘে ঢাকা তারা' জানি, পশ্চিমবঙ্গের উদ্বাস্তু কলোনির বেদনা জানি। গ্রাম বাংলার পথের পাঁচালি জানি, নাগরিক টানাপোড়েনের সাত-পাকে-বাঁধা জানি। কিন্তু উত্তর-পূর্বের আখ্যান জানিনা। সেখানে ষাট সত্তরের দশকে মফস্বলের স্কুলে চাকরি নিয়ে আসা একটি মেয়ের জীবন আবর্তিত হত কোন অক্ষের চারদিকে? কেমন করে চলতো জীবন, বেঁচে থাকা? পূর্বনারীর স্মৃতিতে খোদাই করা থাকলেও সেসব আখ্যান ইতিহাস বইয়ে সুলভ নয়। '৪৬ হরিগঙ্গা বসাক রোড' এই অভাব কিছুটা কমাবে বলেই আমাদের আশা। প্রবীণা লেখিকা বলেছেন "ব্যক্তিজীবনে যদি সময়ের ছায়া পড়ে, তাহলেই আর, নাহি মা ডরি শমনে"।
বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে,
মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা,
কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
আমাদের কথা
আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের
কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি
জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
বুলবুলভাজা
এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ।
দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও
লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
হরিদাস পালেরা
এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে
পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান
নিজের চোখে...... আরও ...
টইপত্তর
নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান।
এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর।
... আরও ...
ভাটিয়া৯
যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই,
সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক
আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক।
অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি।
যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected] ।
মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি
বার পঠিত
সকলকে জানান
উপরে যে কোনো বোতাম টিপে পরিচিতদের সঙ্গে ভাগ করে নিন