আপনি যদি বুদ্ধিমান হতেন, এই বক্তব্য রাখার আগে একটু কৌশলী হতে পারতেন। আপনাদের নেতারাই বিগ মিডিয়াতে এবং আইটি সেলে ক্রমাগত জাতীয় সংগীত বদলে ফেলার কথা বলে আসছেন। হিন্দিকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রচার করছেন দিবারাত্র। হ্যাঁ, সাহিত্য আপনারা বোঝেন না, এটাই একমাত্র সত্যি কথা আপনি বলেছেন এখানে। বাংলা সাহিত্য বুঝলে বিজেপি করতেন না।
সে ছিল এক অন্যরকম সময়। মুষ্টিবদ্ধ প্রতিবাদের , নিজেদের খুঁজে পাওয়ার, সৃষ্টির রক্তকরবী অঙ্কুরোদগ্মের ....। ★ মহাশ্বেতা দেবীর জন্মদিনে মানুষ আর অরণ্য যেন তাঁদের অধিকার ফিরে পায় ।
প্যারিস। ২০০৬। বৃষ্টিমুখর সকাল। একটি রেস্তোরাঁ। শিল্পীদের ভিড়। চকিতে একটা প্লেট হাওয়া। হিরণ মিত্র
১৯৭৬ সালের ২৬ নভেম্বর। বাঁকুড়ার ছোট্ট মফস্সল শহর বিষ্ণুপুর থেকে বিশ্বভ্রণে বেরিয়ে পড়লেন দুই তরুণ। আফ্রিকা। একজন হাল ছাড়েন কিছু পরেই। অন্যজন চলতে থাকেন—১৭ বছর। ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার কিলোমিটার। ১৫৪ টি দেশ। আজও এ কীর্তিতে তিনি অদ্বিতীয়। এই প্রথম দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে সে পরমাশ্চর্য সফরের অনুপুঙ্খ কাহিনি শোনাচ্ছেন জয় মণ্ডল। আলাপে নীলাঞ্জন হাজরা
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে পাক্কা দেড় মাস ধরে সেখান থেকে একে একে রওনা হলো অভিযানের মোট পাঁচটি কাফেলা। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। তরজমায় স্বাতী রায়
রাজগৃহ। পরিব্রাজনরত গোতম এসে পৌঁছেছেন। বেণুবনে যেখানে কাঠবিড়ালিদের খাওয়ার জায়গা সেইখানে উপবিষ্ট হলেন সন্ন্যাসীসমাগমে। সহসা তাঁর উদরে বায়ু-বিকার দেখা দিল। সন্ন্যাসী আনন্দ দ্রুত সেই রোগের উপশমের লক্ষ্যে এক পথ্য প্রস্তুত করে পরিবেশন করলেন বুদ্ধকে। ভীষণ অসন্তুষ্ট হলেন প্রভু। কিন্তু আমরা পেয়ে গেলাম খিচুড়ির এক সুনির্দিষ্ট পূর্বজ। নীলাঞ্জন হাজরা
সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। ফিরতে হবে এবার। এই আন্দোলন কোনও ভাবেই যে কুলাকের আন্দোলন, বা শিখেদের আন্দোলন নয়, তা এতক্ষণে নিশ্চিত জেনেছি। দেখেছি বিপুল সংখ্যায় ক্ষেত-মজদুররা এসে পৌছেছেন এই আন্দোলনে। কৃষক-ক্ষেতমজদুরদের সমর্থনে এগিয়ে আসছেন দিল্লির আশে পাশে থাকা শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকেরা। এছাড়াও এঁদের পাশে রয়েছেন পাঞ্জাব-হরিয়ানার গোটা সমাজ, যাঁদের অকুণ্ঠ সমর্থন ছাড়া এই আন্দোলন চালানো সম্ভব নয়।
রুথ বেডার গিন্সবার্গ - আদর করে যাঁকে ডাকা হয় 'The Notorious RBG'। সকলের সমান অধিকার নিয়ে সবচেয়ে জোর গলাটি তাঁর, সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ থেকে একের পর এক ঐতিহাসিক রায় দিয়ে আমেরিকানদের নয়নের মণি তিনি। তাঁর হেঁসেল সামলাতেন পতিদেবতা মার্টি গিন্সবার্গ, যিনি নিজেকে গর্বের সঙ্গে বলতেন ফেমিনিস্ট। প্রতিবাদী রুথকে লড়াই করেই প্রতিটি ইঞ্চি এগোতে হয়েছে। কিন্তু ঘরে ফেরার পর তাঁর সবকিছু ভাগ করে নেওয়ার জন্যে একজন মার্টি গিন্সবার্গ অপেক্ষা করতেন। সার্থক হয়ে উঠতো সব সাফল্য, জুড়িয়ে যেত সব ব্যর্থতা। ক'টা মেয়ের এমন সৌভাগ্য হয়? রুথ আর মার্টির রূপকথা-সম প্রেম আর স্বপ্নের সংসারটি কলমে ঠিকঠাক ধরা খুব শক্ত। কতটা পারলাম সে বিচার পাঠকের।
“আপনার নির্বাচনী কেন্দ্রে বিজেপি বিরোধী যার জয়ের সম্ভাবনা বেশি তাকে ভোট দিন”—এই স্লোগানের কার্যকারিতা নিয়েও আমাদের সন্দেহ আছে, সাধারণ মানুষ সেফোলজিস্ট নন জ্যোতিষও নন। তাহলে তাঁরা কীভাবে জানবেন কে জিতবে? গত লোক সভা নির্বাচনে ভাবা গিয়েছিল কংগ্রেস ফিরছে, কিন্তু বিজেপি আরও শক্তি নিয়েই ফিরেছে।
No Vote to BJP - এই স্লোগানের মধ্যে চমক আছে। ভাবনার গভীরতা নেই। বাস্তববুদ্ধি নেই। No Vote to BJP'র উদ্যোক্তারা আবেগের স্রোতে ভেসে গিয়েছেন। কোনও কিছুই তলিয়ে ভাবেন নি। তাই "বিজেপিকে ভোট নয়"- এই স্লোগান বিজেপি বিরোধী শিবিরে একরাশ বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে।
ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পরাস্ত করতে গণআন্দোলনই একমাত্র পথ—একথা ঠিক। কিন্তু ৯৫ বছর ধরে চাষ করে যে ফসল আজ তারা তুলছে এবং যখন দেশের সংসদীয় বামপন্থী দলগুলোর এরকম দুর্বল অবস্থা, তখন কিছু প্রগতিশীল, ধর্মনিরপেক্ষ ও প্রতিবাদী মানুষ একজোট হয়ে মাত্র তিনমাসের প্রচার আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আরএসএস–বিজেপির অগ্রগতির রথ আটকে দেবেন, এমন চিন্তা অবাস্তব বলেই মনে হয়। নির্বাচন যেখানে দরজায় কড়া নাড়ছে, সেখানে আশু কর্তব্য হওয়া উচিত সেই পথের খোঁজ করা কীভাবে আগামী নির্বাচনে বিজেপিকে পরাস্ত করা যায়।
সমস্যা সম্ভবত সিপিএমের দৃষ্টিভঙ্গিতেই লুকিয়ে আছে। কদিন আগে একটা মিম, সিপিএমের লোকজন হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকে ছড়িয়েছে, কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে কোনও এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, কেরালার কোনও এক জায়গায় বিজেপি মিউনিসিপালিটির এক আধটা আসন জিতেছে, কী ভাবছেন বিজয়ন? তিনি নাকি বলেছেন, ঐ এলাকার মানুষের শিক্ষাগত মান বাড়ানোর ব্যাপারটা আমরা চিন্তা করছি। বিজেপির মত এক ফ্যাসিস্ত দল, কেরালায় সামান্য হলেও সংগঠন বাড়াচ্ছে কারণ মানুষ অশিক্ষিত, মানুষের বোধ বুদ্ধি নেই, মানুষ ভুল করছেন। এই ঔদ্ধত্য কোথা থেকে আসে?
ওয়াইসির মতো একজন পোড় খাওয়া নেতা যেখানে হালে পানি পাচ্ছেন না, সেখানে পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির মত নবাগত কিসের জোরে ভোটে লড়ার কথা ভাবছেন? তাঁর জোর তো একটিই— গোটা রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ফুরফুর সরিফের মুরিদরা। পিরের শিষ্য বা ভক্তদের বলা হয় মুরিদ। ফুরফুরা শরিফের পির আবু বকর সিদ্দিকি (১৮৪৫-১৩৩৯) বা দাদাপির সাহেব ছিলেন একজন সুপ্রসিদ্ধ ইসলামি পণ্ডিত ও ধর্মগুরু।
বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের রাজ্য সভাপতি সামিরুল ইসলাম বলেছেন, “কৃষকদের জন্য আইন হলেও কৃষকেরা এই আইন চাইছেন না, এরপরেও কেন বিজেপি সরকার এই আইন প্রত্যাহার করছে না স্পষ্ট, কারণ আইন বানানো হয়েছে আম্বানি-আদানিদের জন্য। এই লড়াই শুধুমাত্র কৃষকদের না, সাধারণ মানুষেরও। কারণ এই আইনের জেরে কৃষকের পাশাপাশি আম-জনতা বিপুলভাবে আক্রান্ত হবেন।”
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে মহিলা ছাত্রদের ভর্তি করা নিয়ে চিন্তাভাবনা ১৮৭৬ সাল থেকে শুরু হয়। সেসময়ের বাংলার লেফটন্যান্ট গভর্নর স্যার রিচার্ড টেম্পল এ বিষয়ে উৎসাহী ছিলেন। ১৮৮১-তে প্রধানত ভর্তি হতে উৎসাহী ছাত্রীদের অভিভাবকদের চাপে এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট মেডিক্যাল কলেজের কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয় “discussing the question of accepting an inferior admission qualification for lady students.” (Centenary Volume, 1935, p.46) এই দলিলের ভাষ্য অনুযায়ী সম্ভবত ১৮৮৪ সালে প্রথম মহিলা হিসেবে কাদম্বিনী গাঙ্গুলি অ্যাডমিশন নেন (বা বলা ভালো অ্যাডমিশনের অধিকার পান)। উল্লেখ করা দরকার যেহেতু অক্সফোর্ড এবং কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলাদের প্রবেশাধিকার ছিলনা সেজন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ মহিলাদের ভর্তির ব্যাপারে গররাজি ছিল।
আমাদের যেতে হবে আরও দু’কোশ পথ। এর মধ্যে যত গাঁয়ের পাশ দিয়ে যাচ্ছি সেখান থেকে ভিড় এসে মিছিলে পা মেলাচ্ছে। কেউ কেউ চালির উপরে ফুল ছড়িয়ে দিচ্ছে। কাল রাত্তিরে বৃষ্টি হয়ে রাস্তায় একটু কাদা। এখন মেঘলা আকাশের ফাঁক দিয়ে কড়া রোদ্দূর । আমাদের পিঠে কপালে চিট চিট করছে ঘাম। কিন্তু আমরা তোয়াক্কা করছি না । এখনও অনেক পথ বাকি। আমার চোখে জল নেই। আমি জানি যে রমেনের আর কিছু চাওয়ার ছিল না ।
অনেকের মনে হচ্ছে একটা বার্তা দেওয়া দরকার যে সব বাঙালি একেবারে সাচ্চা হিন্দু রামভক্ত বিজেপির বানরসেনা হয়ে যায়নি। অতএব শুভ কাজে বিলম্ব না করে কয়েকজন মিলে শুরু করে দেওয়া হোল একটা ছোট্ট উদ্যোগ – বিজেপি বিরোধী বাঙালিদের গ্রুপ – বর্গী এল দেশে।
চেনা দৃশ্য, পরিচিত মানুষজন হয়ে ওঠে বর্ণময়। আর সেই রঙিন মোড়কের আড়ালে রয়েছে এক হিংস্র ও নিষ্ঠুর জীবনের ছবি। পাঠক নিমজ্জিত হন এক চমকপ্রদ মায়াবী জগতের ভিতর। ছোটা ছোটো মোচড়ে পরতে পরতে ফ্যান্টাসি জড়ানো গল্পগুলির মধ্যে বারবার নানা চোরাটান, ঘূর্ণি ও অভিঘাত তৈরি হতে থাকে। একটি গল্পসংকলন। লেখক সুদীপ বসু। পড়লেন রাহুল দাশগুপ্ত
স্বাধীনতা আন্দোলন বলতে আমরা শুধু ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তির আন্দোলনকে বোঝাই, ভারতীয় সমাজের অভ্যন্তরে সামাজিক দাসত্ব থেকে মুক্তি সংগ্রামের কথা মাথায় রাখি না। শ্রমিক-কৃষক-খেটে খাওয়া মানুষের অধিকারের প্রশ্নের মতো দলিত জনগণের মুক্তি, আদিবাসী জনগণের মর্যাদা, নারী স্বাধীনতার প্রশ্নও ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল প্রশ্ন হয়ে ওঠেনি। এবং এই সুযোগেই ভারতে ঘটেছে ফ্যাসিবাদের প্রসার ও উত্থান। একটি সাম্প্রতিক বই। লেখক অরুন্ধতী রায়। পড়লেন দীপঙ্কর ভট্টাচার্য
সম্প্রতি প্রকাশিত তিনটি বইয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনা। লিখেছেন নবকুমার
বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিত মাথায় রেখে রাজ্যের সব রাজনৈতিক দলগুলি এই ধর্নামঞ্চের দিকে যে লক্ষ্য রাখছে সে কথা নিশ্চিত করে বলা যায়। সংগঠকদের কথা মত গ্রাম ও শহরতলি থেকে ক্রমশ কৃষক ও তাঁদের সমর্থক, অন্যান্য সাংস্কৃতিক ও গণআন্দোলনের কর্মীরা নিয়ত আসা-যাওয়া শুরু করলে যে মেলবন্ধন তৈরি হবে, তা অতীব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
'যদি'গুলোকে সব নদীর পাড়ে নিয়ে গিয়ে ভাসিয়ে দেবার সময় এসেছে। কারণ এইগুলিই এদেশের ধর্ষণ সংস্কৃতির শক্ত খুঁটি। গলা তুলে বলতে হবে কোনও যদি নয় আর, সে মধ্যরাত হোক কী ভোরের আবছা, প্রয়োজনে নারী যখন খুশি তখন বাইরে যেতে পারবে। বা ঘরে ফিরতে পারবে। ওড়না নিক না নিক, নারীর পোশাকের কারণে তাকে ধর্ষিতা হতে হয় বলে যারা মনে করে, তারা একান্তই মূর্খের স্বর্গে বাস করছে।
রাজধানীতে প্রতিবাদী কৃষক ও সরকারের মধ্যে অষ্টম দফার বৈঠকও ( শুক্রবার ৮,জানুরারি,২০২১) ব্যর্থ। এই আইন নিয়ে কেন্দ্রকে তুলোধোনা করে সরব হয়েছে নেটিজেনদের একাংশ। চলছে তর্ক-বিতর্ক। এসবের মধ্যেই কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে এবার পথে নামছে শ্রীরামপুরের নাগরিক সমাজ। আগামী ১৩ জানুয়ারি শ্রীরামপুর শহরে বিভিন্ন বাজারে প্রচারপত্র বিলি করা হবে। ২০ জানুয়ারি পথে নামবে সাধারণ মানুষ।
শ্যামলবাবুর সঙ্গে মেশা আমার জীবনের এক মহার্ঘ স্মৃতি। তা ছিল অম্ল এবং মধুরতায় মেশানো। প্রথমে শ্যামলবাবু ধরেই নিয়েছিলেন আমার দ্বারা তেমন লেখা হবে না। বন্ধুরাই বলে। আর শৈবাল বলে। একদিন তো আমাকে বলেই বসলেন, লেখা অভ্যাস করো, প্রতিদিন লেখো, তবে তুমি এদের সঙ্গে মেলামেশার উপযুক্ত হয়ে উঠবে। ভয় করতাম খুব। একদিন তুষার সমীরের সঙ্গে সন্ধ্যায় গিয়েছি শ্যামলদার বাড়ি। ওরাই টেনে নিয়ে গিয়েছিল। পান করা হল। শ্যামলদা আমাকে নিয়ে পড়লেন। আমার কাছে কুলটিকরির খবরাখবর নিলেন। হাটের খবর, চালের দর, সবজির দর ইত্যাদি। সুবর্ণরেখা এবং ডুলং নদীর কথা শুনলেন। তিনি বললেন বিদ্যাধরীর মৃত্যুর কথা। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় যা দেখেছিলেন। তাঁর রাখাল কড়াই, চন্দনেশ্বরের মাচানতলায় ইত্যাদি গল্পে আর কুবেরের বিষয়আশয় উপন্যাসে যা আছে।
শুধু যে ছবি কেউ কেনেনি তা-ই তো নয় ! এতগুলো খবরের কাগজ আর পত্রিকায় নিজে গিয়ে সম্পাদক আর যাদের যাদের চিনতো, উদ্বোধনের দিনে আসার জন্যে নেমন্তন্ন কোরে এসেছিলো তাদের। কোনও কাগজে, কোনও পত্রিকায়, কেউ একটা মন্তব্যও করলো না ! এ ছাড়াও কলকাতায় ওর চেনা-জানা লোক তো কম নেই। শিল্পসাহিত্য মহলে যারা ঘোরাঘুরি করে, যাদের মধ্যে অনেকেই কিছু-না-কিছু লিখেছে-এঁকেছে শাম্বর জন্যে, তাদেরও তো অনুরোধ করেছিলো আসার জন্যে, কতজনই বা এলো ! এমনকি এসেওছিলো যারা, ওর ছবির বিষয়ে ভালোমন্দ মন্তব্যই বা করলো তাদের মধ্যে কতো জন ! জঙ্গল নিয়ে, জঙ্গলে ওর যাওয়া-থাকা-সময় কাটানো, এ সব নিয়েও উৎসাহ দেখালো অনেকে, কিন্তু ছবির বিষয়ে খুব একটা গুরুত্বই কেউ দিলো বলে মনে হলো না।
পলিনেশিয় দ্বীপপুঞ্জ থেকে এখানে আসবার পর মাওরিরা দেখলেন যে এ প্রকৃতপক্ষে এক প্রকাণ্ড দ্বীপভূমি, সরাসরি প্রায় ১৬০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বটে, কিন্তু তটরেখা মিলিয়ে দেখলে প্রায় ১৮ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ এক দেশ, যার প্রায় সর্বত্র বসতি স্থাপন করা সম্ভব। শুধু তাই নয়, ভারি বৈচিত্রপূর্ণ ও বর্ণময় এক দেশ - একদিকে যেমন ঘন সমুদ্রতটের জঙ্গল, অন্যদিকে তুষারমণ্ডিত গিরিশ্রেণী। তুষারশুভ্র গিরিশ্রেণী এঁরা এর আগে দেখেন নি, তার নাম দিলেন “হুকা” (বাং: ফেনা) |
উত্তর প্রদেশ সহ গোবলয়ে ঠাকুররা আক্ষরিক অর্থেই দেবতা। অর্থাৎ ঠাকুর সম্প্রদায়ভুক্তরা। ঠাকুররা উচ্চবর্ণীয়, ফলে হিন্দি বলয়ের হিন্দুস্তানে, ঠাকুররা দেবতার আসনে বিরাজ করেন। এ হেন বুলন্দশহরে অহিন্দু এক দোকানি, নিজের দোকানে বিক্রি করছিলেন ঠাকুর লেখা জুতো। শুধু লেখা নয়, জুতোর সোলে খোদাই করে লেখা ছিল ঠাকুর।
‘না বলা বাণী’র মাঝে শুধু কিছু অনুভূতির প্রকাশ-ক্রমাগত আবেগের অনুপম বর্ণচ্ছটা ছড়িয়ে পড়ে চোখের ভাষায়, মুখের অবয়বে, আকারে ইঙ্গিতে, চালচলনে, দেহ ভঙ্গিমায়; আর এইসব মনোভাবের (অ্যাটিটিউড) অন্তর্নিহিত ছন্দোবদ্ধ প্রকাশই হল নির্বাক অভিনয়ের (বা প্যানটোমাইমে’র) রূপ রস আর ছন্দ!
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে পাক্কা দেড় মাস ধরে সেখান থেকে একে একে রওনা হলো অভিযানের মোট পাঁচটি কাফেলা। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’।এই প্রথম বাংলায়। তরজমায় স্বাতী রায়
ভাষাতত্ত্বের কম্পাস নিয়ে খিচুড়ির পূর্বজর খোঁজ করতে গিয়ে আমাদের পথ আটকে গিয়েছে কৃসর বা কৃসরা-য়। তার চাল আর তিলের পাক। আজকের খিচুড়ির ইভ কে, সে খোঁজ করতে হলে, খেলা ঘুরিয়ে হাতে নিতে হবে রসনাতত্ত্বের কম্পাস। আর তাতেই খুলে যাবে চাল-ডালের প্রথম পাকের আশ্চর্য এক দুনিয়া। নীলাঞ্জন হাজরা
অনেক হয়েছে ভায়া ন্যাকা-নস্টালজিয়া। ‘মায়ের রান্না’, মনে পড়তেই সে কী কান্না। আহা পিসির হাতের সেই চ্যবনপ্রাশ-ভাতে! তার চেয়ে বরং ছেড়ে সব ঢং রেঁধেই ফেলুন তুখোড় ‘পটাটাস মাতাদোর’। কিংবা ছেড়ে আজেবাজে কথা, রাঁধুন ‘চিকেন বনলতা’। ভয় নেই, বলেছি তো সেই কবেই, পড়বে না মোটে ঢিঢি—মিছে ঘাবড়াচ্ছেন, রেসিপি বাতলাচ্ছেন স্বয়ং ডিডি
পশ্চিমবঙ্গের বাঙালির আর সম্মান নিয়ে বাঁচার আর কোনো জায়গা থাকবে না। রবীন্দ্রনাথকে একেবারে একটা গৌণ একটা চেহারা দেবে। জাতীয় সঙ্গীত বদল করে ফেলার কথা ওরা অনেকবার বলেছে, রবীন্দ্রনাথের মূর্তি ভাঙ্গার চেষ্টা করেছে অনেক জায়গাতে, তার জায়গায় নাথুরাম গডসের স্ট্যাচু হবে।
খসড়া প্রস্তাবের বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় এদিনের সভায়। শুরুতেই বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায় একটি বিষয় সম্পর্কে তাঁর সংশয়ের কথা জানান। তিনি বলেন, বিজেপি-কে ভোট দিতে না-বলার ডাক দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, কাকে ভোট দিতে হবে, সে প্রসঙ্গের উল্লেখও জরুরি।
"লাভ জিহাদ এর মানে আমি জানি না। এই শব্দগুলো পাশাপাশি বসতে পারে বলে মনে হয় না। আর প্রেম.... আগুনের মতো প্রেম ও সর্বগ্রাসী। ছাইয়ের কোন অহংকার থাকে না, থাকতে পারে না। যারা ভালোবাসতে জানে, তারা জানে প্রেম ঈশ্বরের প্রতি হোক বা মানুষের প্রতি, সে নিজে দাহ্য, অন্যকে জ্বালায় না"।
দীর্ঘ শীতে আইওয়ার বিস্তীর্ণ চাষের জমির কালো মাটি জমে বরফ। গ্রীষ্ম এলে রোদের তাপে মাটি আস্তে আস্তে নরম হবে, তবেই বীজ বোনা, ফসল ফলানো। কিন্তু মনের মধ্যে যখন বরফ জমে? আইওয়ার বংশানুক্রমিক চাষের কারবারী জর্জ মিলার কুড়িয়ে নিলেন ভালোবাসার উত্তাপ, বরফ গলে ধুয়ে গেল সাদা-কালোর বিভেদ। পনেরোই জানুয়ারি মার্টিন লুথার কিংএর জন্মদিন। তাঁর লড়াই ‘সিভিল রাইটস মুভমেন্ট’এর পথ ধরেই আমেরিকায় কালো মানুষের সমান অধিকার এসেছিল। এ লেখা তাঁর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য।
করোনাকালীন প্রথম ও দ্বিতীয়র পরেও অনেক কথা থেকে যায়। মাথায় ভোরের শিশিরের মত তারা টুপটাপ ঝরে পড়ে। আকন্ঠ পান করে নিতে চাই এ দেশের কথা। অতীত ও বর্তমান।
মির্জা অসদুল্লা খান গালিব। নিজের কালে পরিচিতই ছিলেন ‘মুশকিল-পসন্দ্’ বলে। তাঁর চারপাশে তৈরি হয়েছে এনিগমার কুহেলি। কারণ তিনি আধুনিক, তিনি যুগের থেকে এগিয়ে। উর্দুর মহানতম কবি। কিন্তু শুধু সেইটুকুই নয়, এ কেতাব জুড়ে উঠে এসেছেন এক রক্তমাংসের মানুষ, সব দুর্বলতা, ব্যর্থতা নিয়ে। ইংরেজিতে যাকে বলে—‘আপ, ক্লোজ অ্যান্ড পার্সোনাল’। তাই এ বইয়ের স্বাদই আলাদা। পড়লেন তৃষ্ণা বসাক
দেবীপ্রসাদ রায়চৌধুরী। বিখ্যাত চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর। আর তেমনই বৈচিত্রময় জীবন। কী করেননি? গুরুর জুতো পালিশ, ঘর ঝাঁট দেওয়া, নিজের ছবি ফেরি করা... শিল্পীর নিজের কথায় এবং তাঁর স্ত্রী চারুলতা রায়চৌধুরীর ভাষ্যে সেই চিত্তাকর্ষক জীবনের কথা। একটি বই। পড়লেন শিল্পী কৃষ্ণেন্দু চাকী
সম্প্রতি প্রকাশিত তিনটি বইয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনা। লিখেছেন নবকুমার
কামিং আউট ব্যাপারটি কুইয়ার জনগোষ্ঠীর আন্দোলনের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বর্তমান সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, কামিং আউট এবং এর পরিণাম যে বাংলাদেশের বিভিন্ন সামাজিক স্তরে একেক রকমের সে বিষয়টি কতটুকু ভেবে দেখা হয়েছে? খোদ কুইয়ার সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যেই যখন আমরা এই বিষয়টি নিয়ে মতপার্থক্য দেখতে পাই, সেখানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কামিং আউটের যে অনেকরকম অর্থ দাঁড়াতে পারে সেগুলো ঠিক কী কী? বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক আবহাওয়ায় কামিং আউট করাই কি আমাদের আকাঙ্খিত লক্ষ্য? এই আর্টিকেলটিতে প্রাথমিক কতগুলো ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন লিঙ্গ ও যৌন, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অবস্থানের কুইয়ার জনগোষ্ঠীর মধ্য থেকে ফোনে এবং ইমেইলে মোট ২৩ জন ব্যক্তির ইন্টারভিউ নিয়ে কামিং আউটের রাজনৈতিক বাস্তবতায় তাদের চিন্তাভাবনা ঠিক কী সেটি বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে। কোন মানুষটির কাম আউট করা উচিত আর কার নয় এ বিষয়ে আমরা কোন পরামর্শ বা মতামত দেয়ার জায়গায় নেই; আমরা কেবল একটি বিষয়ই স্পষ্ট করতে চাই যে, কামিং আউট ফলস্বরূপ কুইয়ার কোন মানুষের প্রতি সামাজিক যে বিদ্বেষ, লাঞ্ছনা আর বৈষম্যের আবির্ভাব ঘটে, তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবে নেই।
নিকোলাস পাড়া। নাফাখুম থেকে প্রায় চার পাঁচ ঘন্টা ঝিরি পথ দিয়ে হেঁটে পাহাড় টপকে এক অদ্ভুত জায়গায় পৌছালাম।এই পাড়া প্রতিষ্ঠা করেছে নিকোলাস ত্রিপুরা। পদ্মা নদীর মাঝির হোসেন মিয়ার মত নতুন এক নতুন ঠিকানা তৈরি করেছে নিকোলাস। তার গল্প পুরোপুরি আমি জানি না, আমি যা এখন পর্যন্ত জানি তা হচ্ছে এ এক অদ্ভুত জায়গা। আমরা এসে পৌছাতে পৌছাতে সন্ধা নেমে এসেছিল। তারপর থেকেই জাদুবাস্তবতার জগতে চলে গেছি যেন। এখানে পাহাড়ের কোলে কুসুম গরম সুর্য টুপ করে ঢলে গেল। কয়েক বাড়ি আদিবাসিদের সন্ধ্যা আসল সরল পথে। যে সমাজ আমরা দেখে অভ্যস্ত তার সাথে তুলনা কই? শিশুরা অবাক দৃষ্টিতে আমাদের দেখছে। আমরা আমাদের নিয়ে ব্যস্ত। খাড়া পাহাড় উঠে আমরা ক্লান্ত, তারচেয়ে আসলে আমরা ব্যস্ত নতুন জায়গার চারপাশ দেখতে। এরপরই যেন শুরু হল জাদুর খেলা। শা করে তারা চলে আসল আমাদের কোলে। ঝকঝকে লাখ লাখ তারা যেন আমাদের ঘিরে নেচে চলছে। আমাদের সাথে মজা নেওয়ার জন্যই যেন দুই একটা তারা দৌড়াচ্ছে এদিক ওদিক। হুট করেই খেয়াল করলাম আমাদের সকল কাজের সমাপ্তি হয়েছে। আগামীকাল ভোরে নতুন পথে রউনা হওয়ার আগে আমাদের ঘুম আর খাওয়া ছাড়া কোন কাজ নাই। এই গ্রামের মানুষ অন্য সময়ে কী করে এই সময়ে? সন্ধ্যায় চা নাস্তা খাওয়া মানুষ আমরা। এরপর নানা অকাজে ব্যস্ত থাকা আমরা বুঝেই উঠতে পারছি না এদের জীবন। এই গ্রামে পানির ব্যবস্থা নাই। পানি নিয়ে আসে ওরা অনেক নিচে থেকে। নেই কোন পয়নিস্কাশনের সুস্থ কোন ব্যবস্থা। নেই মানে নেই। বন হচ্ছে এদের ভরসা স্থল। এই সমাজ কীভাবে আমাদের বুঝে আসবে? আসার কোন সম্ভাবনা আছে? আমার মনে হয় না। ছনের ঘর। ঘর উঁচু করেছে বাঁশ দিয়ে খুটি দিয়ে। তাড়াই বাঁশের বেড়া হচ্ছে মেঝে। আমরা যা দেখি তাই মুগ্ধ হই, বা মুগ্ধ হওয়ার ভান করি। কৃত্রিমতায় পূর্ণ জীবন কি জানে সত্যিকার মুগ্ধ হওয়া কাকে বলে?
আজ ঠাকুমা চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে দিয়ে জোলাপাড়ায় ঢুকে যায়। জোলাপাড়ার বাড়িগুলোর উঠোনে উঠোনে চরকি। আর সুতো ভরা লাল নীল নলিগুলো বারান্দায় স্তুপ করা। ও ঠাকুমা, আমার পুতুলের জামায় সুতোর ফুল তুলে দেবে বলেছিলে। দেবো দিদি, ঠাকুমা খেজুর চাচার বাড়ি পেরিয়ে যায়। করিম জোলার বাড়ির উঠোনে মুরগীগুলো খোঁপ থেকে বেরিয়ে আসছে। পেছন পেছন ছানাগুলোও। করিম জোলার বাড়ি ছাড়ালেই কলেজের মাঠ। সে মাঠের ওই কোণায় মান্দার গাছ।
রাগপ্রধান ও রাগাশ্রয়ী গানগুলি শুনলে খুব মনে পড়ে যায় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সেই অ-শিক্ষকদের, যাঁদের সাংগীতিক মধ্যমেধা বাঙালির ঘরে ঘরে ঢুকে রাগ সঙ্গীতের প্রতি সহজাত আগ্রহগুলিকে যত্নে নষ্ট করেছে। বিগত দুই প্রজন্মের এই ‘গানের মাস্টার-নাচের মাস্টার’ দৃষ্টিভঙ্গির এবং উলটো পক্ষের সেই অশ্রদ্ধার কাছে মাথা নোয়ানোর ফলাফল — জাতিগতভাবেই বাঙালির রাগ সঙ্গীতের উৎকর্ষতা তলানিতে এসে ঠেকা।
রেস্ট হাউজের বারান্দায় দুটো চেয়ার পেতে দিয়ে চৌকিদার গেলো সাহেবকে খুঁজতে। বিক্রম বললেন, কনের বাড়িতে আপনি থাকতে চাইবেন তা আমি জানি। কিন্তু সত্যি-সত্যিই থাকা যাবে কিনা আমার সন্দেহ আছে। আপনি আমার নামটা যদি খেয়াল করে থাকেন তা হলে বুঝতে পারবেন আমি ঠিক আপনাদের মতো ভদ্দরলোক সমাজের মানুষ নই, আমিও, যাকে আপনারা বলেন ট্রাইবাল, মুণ্ডা। তবে মুণ্ডা আর সাঁওতালরা সংখ্যায় বেশি, অনেক আগেই ক্রিশ্চান মিশনারিদের সংস্পর্শে এসেছে, অনেকেই লেখাপড়া শিখেছে ওদেরই দয়ায় – ইনক্লুডিং মী। কিন্তু খাড়িয়ারা সংখ্যায় অনেক কম। ওদের মধ্যে আবার তিন রকমের ভাগ আছে। যাদের বলে দুধ-খাড়িয়া আর ধেলকি-খাড়িয়া তারা জঙ্গল ছেড়েছে আগেই, এখন চাষবাস করে, সাঁওতাল-মুণ্ডাদের থেকে ওদের চট করে আলাদা করতে পারবেন না।
জন্মপরিচয়ের উপর এত গুরুত্ব কেন? তার কারণ দারায়ুস সাইরাসের বংশজাত ছিলেন না, আর সাইরাস এবং তিনি একই বংশজাত সেটা প্রমাণ করার দায় তাঁর ছিল। তার জন্য আমাদের দেখতে হবে দারায়ুস কীভাবে সিংহাসনে বসেন। সাইরাসের মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসে তাঁর পুত্র দ্বিতীয় ক্যাম্বিসেস, আর তার মৃত্যুর পর সাইরাসের অন্য পুত্র বরদিয়া। কিন্তু রাজদরবারের সাতজন সম্ভ্রান্ত মানুষ দাবি তোলেন এই বরদিয়া সত্যিকারের বরদিয়া নয়, সে আসলে একজন ম্যাজাই (জাদুকর), যে ছদ্মবেশ ধরে বরদিয়া সেজে বসে আছে- যার আসল নাম গৌমাত। সাতজন সম্ভ্রান্ত মিলে এই গৌমাতকে হত্যা করে- দারায়ুস তাদেরই একজন। ইতিহাস কোনওদিনই জানতে পারবে না এই গৌমাত আদৌ কোনও ছদ্মবেশী বহুরূপী ছিল, না কি সিংহাসনের ন্যায্য উত্তরসুরী বরদিয়াই ছিল, যাকে ছলনা করে সরানো হয়।
ঝিরঝিরে বৃষ্টি, ভোরের আকাশ ঘোলাটে মেঘে ছেয়ে আছে; যেরকম হয়ে থাকে সচরাচর লন্ডনের আবহাওয়া। রাস্তার পাশে পার্ক-করা গাড়িগুলোর বনেট বিন্দু বিন্দু জলে ভরে যাচ্ছে। ছোটো ছোটো ফোঁটা জুড়ে বড়ো হয়ে গড়িয়ে পড়ছে। শহর এখনও পুরোপুরি জাগেনি। রাস্তা, রাস্তার পাশে পেভমেন্ট, বন্ধ ক্যাফে বা পাবের বাইরে বসার জায়গাগুলো — সব আচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে বৃষ্টির ধূসরতায়।
এদিকে সংগঠনের মধ্যে অন্য চিন্তা দানা বাঁধছে। সবাই টের পাচ্ছে যে একটি সর্বভারতীয় পার্টি ধীরে ধীরে রূপ নিচ্ছে। তাহলে আমরা কি বাদ পড়ে যাব? এরা, মানে মিথিলেশ, দীপক, সুকান্ত রমেন ও আরও কয়েকটি ইউনিট বলতে শুরু করল যে আমরা ডাকাতিতে বিশ্বাস করি না । ক্যাল-আপে বিশ্বাস করি না । আমাদের একটি স্পষ্ট রাজনৈতিক লাইন চাই। আমরা সশস্ত্র গণ -সংগঠন গড়তে চাই । আমরা অবিনাশের বা ওল্ড গার্ডের সঙ্গে মুখোমুখি বসতে চাই ।