এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  দেখেছি পথে যেতে

  • মুক্ত‌ বন্দী‌শালায় কিছুক্ষণ - ৩ (শেষ)

    সমরেশ মুখার্জী লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | দেখেছি পথে যেতে | ০১ মে ২০২৪ | ১৮২ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • আমাদের কথার মাঝে বাইরে থেকে, ঘর থেকে একে একে উঠোনে এসে জুটলো আরো কয়েকজন :


    মোহনলাল যাদব - মুখে দীর্ঘ দণ্ড ভোগ করে জীবন সায়াহ্নে পৌঁছানো মানসিকভাবে এক শ্রান্ত মানুষের ছায়া। চার বছর আগে ৫৯ বছর বয়সে এসেছেন এখানে। কাগজ কলমে বয়স কম দেখানো ছিল দু‌ই বছর। এখন ৬৫ বছরের প্রবীণ মোহনলালজী আমাদের আলাপকালে একটি কথাও বলেননি - শুধু নীরবে শুনে গেছেন।


    রাজেশ প্রসাদ -  আগে ছিলেন স্কুল শিক্ষক। সাজা পেতে সরকারি চাকরি হারিয়ে‌ছেন। এখনো খবরের কাগজ পড়েন। ইংরেজি‌ও পড়তে পারেন। মুক্ত বন্দী‌শালার সবাই - মায় এখান‌কার সরকারি ইনচার্জ রঘুবীর মীনা - সেও তাকে ডাকে মাস্টারজী বলে। রাজেশ আমায় ভারতীয় বলে উনি‌জী ও বাঙ্গালী বলে মমব‍্যান প্রসঙ্গে আমার মতামত জানতে চান। কবে ছাড়া পাবেন তিনি জানেন না কিন্তু দেশের অবস্থা নিয়ে রাজেশ চিন্তিত।

    অভয় খোলামেলা স্বভাবের। সে আমায় ডেকেছে। তাই তার সাথে বিশদে কথা হয়েছে। সে তার কৃতকর্মের কথা অকপটে জানি‌য়েছে। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও আর কাউকে আমি জিজ্ঞাসা করিনি কে কোন পরিস্থিতি‌তে নরহত্যা‌র মতো কাণ্ড করেছি‌ল। কী দরকার। মনে হবে শহুরে মানুষের অন‍্যের জীবনে উঁকি দেওয়ার অন‍্যায় কৌতূহল। তাছাড়া বিষয়টি স্পর্শকাতর‌ও বটে। এতোদিন পরে হয়তো তারা সেসব দিন, ঘটনা ভুলে থাকতে চায়। সম্পূর্ণ অপরিচিত হয়ে তাদের অতীত ক্ষত নিয়ে নাড়া‌চাড়া করা শোভন মনে হয়নি। 

    একটু বাদে অভয়ের ছেলে নির্মল‌ও এলো বাইরে থেকে। অভয়কে বলি, আপনার একটা ছবি নেবো আপনার ছেলের সাথে? অভয় ছেলেমানুষের মতো হেসে বলে, তাহলে দাড়ি‌টা আগে কামিয়ে নিই। ওর ফোনেও তুলে দেবেন। বাড়িতে গিয়ে ওর মাকে দেখাবে। শেষবার বাড়ি গেছি গত দশেরা‌তে। আপনার তোলা আমাদের বাপ বেটা‌র ছবি দেখে ভালো লাগবে ওর মায়ের।


    হাতে আয়না ধরে দাড়ি কামালো অভয়। পিছনে উঠোনে ছড়িয়ে আছে নয়নার খেলনা, সাইকেল।


     
    দাড়ি কামিয়ে ছেলের সাথে ভব‍্যিচুব‍্যি হয়ে পোজ দিয়েছে অভয়। ছবি দেখে হেসে বলে, এ হে, একটা জামা পরে নিলে ভালো হোতো। আমার এই পালোয়ানি চেহারা‌ই উঠে গেল ছবিতে।

    কথাবার্তা‌র মাঝে এলেন রঘুবীর মীনা। বললাম, এসেছি‌লাম এখানে একটা প্রাচীন কেল্লা দেখতে - কিন্তু তার সাথে বোনাস হিসেবে পেলাম এই সুন্দর অভিজ্ঞতা। আমার একটু লেখালেখির শখ আছে। চলার পথে ইন্টারেস্টিং কিছু দেখলে তা নিয়ে লিখি। এই মুক্ত বন্দী‌শালা, এখানে কয়েকজনের সাথে কথা বলে বেশ লাগলো। এসব নিয়ে কিছু লিখলে পাবলিক ফোরামে দিতে পারি?

    উনি বললেন, অবশ্যই লিখতে পারেন। ১৯৭২ সালে রাজস্থান সরকারের নেওয়া ওপেন প্রিজন পলিসি কীভাবে নরহত্যা‌র অপরাধে দণ্ডিত অপরাধীকেও - অবশ্যই যদি তাদের স্বভাব ভালো হয় -  আবার সমাজের মূল স্রোতে ফিরে যেতে সাহায্য করছে তার প্রচার হলে তো ভালো‌ই। এটা তো খুব‌ই ছোট। জয়পুরে যেটা আছে অনেক বড়। তবে এরা এখনো আইনত সাজা কাটছে। তাই এই জায়গার নাম, এদের আসল নাম লেখা‌য় না দিলেই ভালো। এদের ফেসবুক এ্যাকাউন্ট নেই। তবু আপনি এসব নিয়ে লিখলে ফেসবুকে দেবেন না। 

    বলি, নিশ্চিন্ত থাকুন। আমি এমনভাবে লিখবো যাতে এদের তো বটেই, এই শহর‌ও কেউ চিনতে পারবে না। সব নাম বদলে দেবো। আসুন না, আপনাদের একটা ছবি নি‌ই।


     
    কোট পরিহিত এখানকার ইনচার্জ রঘুবীর মীনা

    আচ্ছা, আপনি এদের সাথে গল্প করুন, আমি একটু ঘুরে আসি, বলে চলে গেলেন মীনাজী। আর তখনই দোতলা থেকে নেমে এলো লাল জামা পরা একটি যুবক। নাম তার করণ প্রজাপতি। বয়স বত্রিশ। আলাপ হতে অভয়ের মতোই সাবলীলভাবে কথা বলছি‌ল, হাসছি‌ল সে। তাই ওকে বলি, করণ তুমি কী কারণে এখানে? ওর‌ও দফা তিনশো দো কেস‌। বারো বছর আগে ঘটনার দু বছর আগে বোনের বিয়ের জন‍্য মহাজনের থেকে ধার নিয়ে‌ছিল ওর বাবুজী। আস্তে আস্তে শোধ‌ও দিচ্ছিল। কিন্তু মহাজনের আর তর সয় না। তার চ‍্যালা বাড়িতে এসে প্রায়‌ই হম্বিতম্বি করতো। বাবুজী  বলতো দেরী হলেও সুদ সমেত ধার কিস্তি‌তে শোধ তো করছি।  হাত জোড় করে মহল‍ৎ মাঙতো। 

    তখন করণের মাস তিনেক হোলো বিয়ে হয়েছে। বোনের বিয়েতে খরচ করে বাপু‌জীর এই হেনস্থা দেখে করণ বিয়েতে কোনো টাকাপয়সা নেয় নি। অবশ‍্য ওর বৌয়ের বাবা‌ও ছিল ছোট চাষী। একদিন মহাজনের চ‍্যালার চোটপাটের সামনে বাবুজীর জোড়হাত করে করুণ মুখ দেখে মাথায় আগুন ধরে গেল করণের। একটা মোটা লাঠি ছিল পাশে দে‌ওয়ালে হেলান দে‌ওয়া। তুলে নিয়ে সপাটে চালিয়ে দিলো মাথায়। তখন বাপুর সাথে মাঠে কাজ করতো করণ। বিশ বছরের সুঠাম যুবকের লাঠি‌র এক ঘায়ে চ‍্যালা লুটিয়ে পড়লো মাটিতে। মারবো বলে মারেনি করণ। কিন্তু বেমক্কা মরে গেল লোকটা।

    - এখন কি আফশোষ হয়?

    - হ‍্যাঁ, খুব আফশোষ হয়।

    - কেন?

    - আমি জেলে যেতে বৌ শ্বশুরাল ছেড়ে চলে গেছে। আবার বিয়ে হয়েছে তার। একটা ছেলে‌ও হয়েছে বলে শুনেছি। তার দোষ নেই। তখন ওর অল্প বয়স। উমর কয়েদের মেয়াদ খাটা পতির জন‍্য সে কেন তার জীবন বরবাদ করবে। তবে আফশোষ কেবল আমার জ‌ওয়ানীর বারোটা বছর বরবাদ হয়ে গেল বলে নয়, আমার একটা ভুলের জন‍্য বাপু‌ও বড় একা হয়ে গেল তারপর। গুস্সা ইনসান কো খুদকো খা যাতা হ‍্যায়। ইয়ে এ্যাহসাস বড়া মেহঙ্গা পড় গয়া বাবুজী। ছাড়া পেলে এ ভুল আর হবে না। 

    - কবে ছাড়া পাবে? বয়সে অনেক ছোট বলে তুমি‌ই বলি ওকে।

    - জানি না। জেলে আমার রেকর্ড ভালো ছিল বলে দশ বছর ওখানে কাটিয়ে দু বছর আগে এসেছি এখানে। রাজেশজী, অভয় চাচা আমার আগে থেকে এখানে আছেন। ওনারা হালে রিহাইয়ের দরখাস্ত করেছেন। আমায় বলেছেন আর বছর দুয়েক পরে করতে। কিছুদিনের মধ‍্যে মোহনলাল চাচার রিহাইয়ের আবেদন মঞ্জুর হয়ে যাবে শুনছি। বয়স হয়ে গেছে ওনার। বাকি জীবনটা তাহলে গাঁয়ে গিয়ে পরিবারের সাথে কাটাতে পারবেন।

    - একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো করণ, যদি তুমি কিছু মনে না করো?

    - বলুন না।

    - ছাড়া পেয়ে, নিজের গাঁয়ে ফিরে গিয়ে তোমার কী আবার বিয়ে থা করে সংসার করতে ইচ্ছে হয়?

    লাজুক হেসে মুখ নামিয়ে করণ বলে, আমি চুরি ডাকাতির মতো ছিঁচোড়াপন বা বলাৎকারের মতো ঘিনোনা জুর্ম করে জেলে আসেনি। গাঁয়ে আমায় সবাই ভালো‌বাসতো। এখনো তারা বসে আছে আমার ফিরে আসার পথ চেয়ে। আগের বিবি চলে গেছে বলে তার ওপর কোই গিলা সিকোয়া নেই। যদি কেউ আমায় মেনে নেয়,  করবো তাহলে বিয়ে। মাজী, বাবুজীর তো বহুর সাথ, সেবাযত্ন পাওয়ার খোয়াব অধুরাই রয়ে গেল - সিরফ্ মেরা এক পল কা গলতি কে বজেসে।

    বুঝলাম বেফাঁস প্রশ্ন করে ফেলেছি। একটু ভাবুক হয়ে গেছে করণ। কথা ঘোরানোর জন‍্য বলি, তুমি ওপর থেকে নেমে এলে দেখলাম। তুমি কোথায়, কীভাবে আছো দেখাবে?

    - আসুন না। বলে করণ নিয়ে যায় ওর ঘরে।


     
    ৯x১০ ফুটের সাদামাটা ঘর। একটা জানলা। দে‌ওয়ালে একটা তাকে তিনটে থাক। ঘরে দড়ি টাঙানো। তাতে ঝুলছে জামাকাপড়। সরকার থেকে ঘর, আলো, পাখা, নিঃশুল্ক বিজলী দিয়ে‌ছে। হীটার জ্বালানো বারণ‌। চৌপাই, কুলার, গ‍্যাস, ওভেন, রেশন এসবের ব‍্যবস্থা করার দায়িত্ব মুক্ত বন্দীর নিজের। ও নিজে রান্না করে খায়। সবাই তাই। তাতে খরচ কম হয়। চাইলে তারা দিনের বেলা বাইরে কোথাও কাজ‌ও করতে পারে। 
     
    করণের একটা ছবি নিলাম ওর ঘরে। ও সটান মোবাইলের দিকে তাকিয়ে‌ছিল। জুম করে দেখি ওর দৃষ্টি ‘চোখ’ সিনেমায় ওম পুরীর মতো তীব্র। অভয়ের দৃষ্টি কিন্তু নরম, একটু ভাবুক টাইপের। সটান তাকালে যাদের চোখের মণি পুরো খুলে যায় তাদের এমন খরদৃষ্টি লাগতে পারে।

    ভাবি ওর আর একটা ছবি নি‌ই। বলি, করণ, তোমার আর একটা ছবি নেবো। তবে তোমার ঘরে নয়। চলো নীচে যাই। তুমি ঐ ছোট গেটে ভর দিয়ে দাঁড়াবে। আমার দিকে সরাসরি তাকাবে না। পাশ ফিরে দুরে তাকাবে আর ভাববে একটা ছোট্ট ভুলে কীভাবে তোমার জীবনটা বদলে গেল।

    করণ হেসে বলে, বাবুজী, আপনি তো আমায় সিনেমায় এ্যাক্টিং করার মতো করতে বলছেন। আমি কী পারবো? 
     
    বলি, চেষ্টা করে দ‍্যাখো‌ই না। বেশী চাপ নিয়ো না, এসব আমার নিছক খেয়াল। 
     
    ওদের নিস্তরঙ্গ জীবনে বহুদূর থেকে বেড়াতে আসা এক প্রবীণ বাঙ্গালী‌ আঙ্কলের এহেন খেয়াল দেখে করণ‌ও বেশ মজা পায়। স্পোর্টিং‌লি বলে, চলুন তাহলে দেখি, আপনি যা বলছেন, পারি কিনা। 

    নির্দেশ মতো করণ গিয়ে দাঁড়ায় গেটে হাতের ভর দিয়ে। পোর্ট্রেট ছবির ক্ষেত্রে যার ছবি তোলা হচ্ছে তার সাবলীল‌তা, সহযোগী‌তাও খুব জরুরী। যেমন বলেছি, সেভাবেই করণ পাশ ফিরে দুরের দিকে তাকায়। এখন ওর সামান্য কোটরে বসা চোখের দৃষ্টি নরম লাগে। মুখের একপাশে শীতের সকালের মিঠে রোদ পড়েছে। অন‍্য পাশে ছায়া। এমন ছবি বেশ লাগে দেখতে। ছবিটা তুলে ওকে দেখা‌ই। করণ অবাক হয়ে বলে, সত্যি, তো! আপনার ফটো তোলার হাত কিন্তু বেশক্ ভালো। মোবাইলে‌ই কী সুন্দর উঠেছে। 
     
    বলি, তুমি নেবে ছবিটা? পাঠাবো তোমার ফোনে? 

    করণ লাজুক হেসে পকেট থেকে একটা সস্তা‌র ডাব্বা ফোন বার করে বলে, আমার ছবি দেখার মতো ভালো ফোন নেই। দরকার‌ও নেই। এতে মাঝে মাঝে বাবুজী, মাইজী, বহেন, জীজাজীর ফোন আসে, কথা হয় ওদের সাথে।  তাই এটা রেখেছি। এতে‌ই চলে যায়। ফোন করার মতো আর কেউ নে‌ই‌ও আমার।

    ওদেরকে হাত নেড়ে বিদায় নিই। সুন্দর কাটলো একটি ঘন্টা এখানে। প‍্যালেসে গিয়ে এক কোনে বসে মোবাইলে আবার করণের ছবিটা খুলে দেখি। বেশ উঠেছে। মুখে ধার আছে ছেলেটার। এখন খেয়াল হোলো ওর ডানহাতের মজবুত কবজিতে বাঁধা আপেলের এল‌ইডি ওয়াচ। তবে কোনা খা‌ওয়া আপেল নয় - গোটা। অত‌এব সস্তা‌র মেকী আপেল। স্মার্টফোনের মতোই আসল আপেল ঘড়ি কেনার ক্ষমতা‌‌‌ও ওর নেই। প্রয়োজন‌ও নেই ওর নিত‍্য দিন সময়ের হিসেব রাখা। ও গুনছে বছরের হিসেব। কবে ছাড়া পাবে। ঘড়ি‌টা হয়তো পরেছে নিছক শখে - অলঙ্কারের মতো। 


     
    সমাপ্ত

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ০১ মে ২০২৪ | ১৮২ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    ঢেকুর  - Tanima Hazra
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • যোষিতা | ০১ মে ২০২৪ ০০:৫৬531263
  • এরই নাম ভ্রমন।
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ০১ মে ২০২৪ ০১:০৭531264
  • যে সব লেখা শেষ হলে মন উদাস হয়ে একটা চারপাই টেনে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ে তারপর তাও ভালো না লেগে এমনিই সাইকেল টেনে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে ইচ্ছে করে এ হচ্ছে সেই রকম লেখা। মনে থেকে যাবে অনেক দিন। এবার চুপ করি।
  • বিপ্লব রহমান | ০১ মে ২০২৪ ১০:১২531271
  • প্রতিটি মানুষ মুক্ত জীবনের স্বপ্ন দেখে! 
    এ এক জার্নি বটে!  heart
  • সমরেশ মুখার্জী | ০২ মে ২০২৪ ২১:০১531319
  • যাদের এই লেখার বিষয়টি ছুঁয়ে গেছে বলে জানি‌য়েছেন - তাদের সবাই‌কে জানা‌ই ধন‍্যবাদ। এটা আমার কাছেও ছিল একটা Unique experience. 
     
    একাকী ভ্রমণে এমন অনেক সুন্দর টুকরো স্মৃতি আছে - যার ফলে মনে হয়েছে শহুরে কলুষতা‌র থেকে দুরে, ছোটোখাটো জনপদে, সাধারণ মানুষের মধ‍্যে এখনো অনেক মণিমুক্তো ছড়িয়ে আছে। মন থেকে গল্প লেখা আমার আসে না। বরং সেই সব বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে মন চায় - দেখি - কতটা পারি।
  • kk | 172.58.241.244 | ০২ মে ২০২৪ ২১:১৫531320
  • হ্যাঁ শেয়ার করুন। এই পৃথিবীতে কত যে অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে আছে! একজন মানুষের পক্ষে কটাই আর ছোঁয়া সম্ভব হয়? তার ওপর আবার আমরা বেশির ভাগ মানুষই বেশির ভাগ সময়েই 'অচেতন' থাকি। কতকিছু সামনে দিয়ে চলে যায়, অন্যমনস্কতার কারণে আমরা খেয়ালও করিনা। কিন্তু এইসব গল্প যখন পড়ি তখন সেই অভিজ্ঞতাগুলোকেও মনে হয় ছুঁতে পারলাম। তাদের সাথে পরিচয় হলো, দু দন্ড গল্পগাছা হলো। সেটা একটা বড় ব্যাপার। আমি নিজে যেটার অ্যাকসেস পেতামনা, আপনার থ্রু দিয়ে সেই অভিজ্ঞতার স্বাদ পেলাম।
  • সমরেশ মুখার্জী | ০৩ মে ২০২৪ ০৭:২৩531327
  • kk লান 

    "তাদের সাথে পরিচয় হলো, দু দন্ড গল্পগাছা হলো।" - একদম সঠিক অনুরণন। আমার ভ্রমণবৃত্তান্ত বৈঠকী আড্ডার মতো। তাই আকারে একটু বড় হয়ে যায়। 

    আমার “সেই নেশায় বিদিশা‌য়” পড়ে দীপাঞ্জন‌ লান‌ও বলেছিলেন -  “কেকের সঙ্গে একমত। এই লেখাটা পড়লে বোঝা যায় একটা জায়গাকেই কতরকম ভাবে দেখা যেতে পারে। সমরেশ‌বাবু এনথ্রোপোলজির দিক থেকে দেখেন। কোনো জায়গার সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে তাদের জীবনযাত্রার সঙ্গে সেই জায়গার স্থানীয় ইতিহাসের সম্পর্ক নিয়ে লেখেন। আর আমি মিউজিয়ামে ঢুকতে পেলে খাওয়া ভুলে যাই।”

    ভ্রমণ বিষয়ক ছাড়া আমার অধিকাংশ লেখা‌র ক্ষেত্রে আর একটা বৈশিষ্ট্য‌র কথা dc লান বলেছেন “লক্ষ্মীবাবুর নকলি সোনার টিকলি” লেখা‌র ওপর মন্তব‍্যে - “সমরেশবাবু নানান গল্প, অ্যানেকডোট ইত্যাদি এক জায়গায় যেভাবে মিশিয়েছেন, এটা আমার খুব পছন্দ। আপনার এক্লেকটিক লেখার স্টাইল ভালো লাগলো।”
     
    “এক্লেকটিক” শব্দ‌টা না জেনেই - সামান্য স্ফূলিঙ্গ থেকে শুরু হয়ে - প্রচ্ছন্ন কমন থ্রেড ধরে - গোয়াল থেকে মাঠে বেরোনো গরুর মতো নানা প্রসঙ্গে‌র মাঠে চরে বেড়ায় আমার লেখা। দিনশেষে গরু গোয়ালে ফেরার মতো - লেখার শেষে দেখা যায় শিরোনাম, মধ‍্যবর্তী পংক্তি‌র সাথে সম্পর্কসূত্র। তেমন একটা পোষ্টানো লেখা - “কুলির বুলিতে প্রীতির বিলাপ স্টকহোম সিনড্রোমের পরশ”।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন