এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • নিউনর্মাল করোনাকালীন পর্ব ছাব্বিশ

    Anuradha Kunda লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ০৮ জুন ২০২৩ | ৩৭২ বার পঠিত
  • নিকি কথা বলার কালে একটু ঝুঁকে বসে। সম্ভবত হুইলচেয়ারের জন্য। ওর চোখদুটো অসম্ভব জ্বলজ্বল করে তখন। প্রায় সবসময়ই পোলোনেক। অসুখের জন্য গলার চামড়া কুঁচকে গেছে এবং ঠান্ডা লাগানো অ্যাভয়েড করা, এখন সোয়েটার কুচকুচে কালো। ফলে ওর ফর্সা মোমপালিশ করা মুখটা আরো চকচক করছে।
    - "হোয়াট গ্র্যানি সেইজ অ্যাবাউট লোহরি ইজ পার্শিয়াল ট্রুথ।"
    দেবরূপ ভ্রূ উঁচু করলো। তার মনমেজাজ ঠিক নেই। বাবা হঠাৎ তাকে দেখার জন্য এত ব্যস্ত হয়ে উঠল কেন? অন্তত বলে আসতে পারতো। কোভিডের পরপর ত্রিদিবের সঙ্গে ফোনে অনেকটা সময় কাটতো। কিন্ত তখন মন অন্যরকম ছিল। একটা ফুলছাপ স্কার্ট লহরী তুলে যেত ঘরের এদিক থেকে ওদিক। কুকারে ওয়ান পট মিলের গন্ধ। পুনের ফ্ল্যাটটা আজকে বারবার ভেসে আসছে ঢেউয়ের মত। লোহরি সে কখনো দেখেনি। খুব নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে তাকালো।
    আজকে ঘরের চেহারাটা একটু অন্যরকম। নিকির জ্যাঠতুতো দিদি নয়না এসেছে। সে মূলত ক্যাম্পেই আছে ইউ এস থেকে ফিরে আজকে তার কার্টসি ভিজিট টু আমেলিয়া। এসেই গলা জড়িয়ে চুমু খাবার দিন নেই কোভিড কালে।কিন্ত নয়না অত্যন্ত উচ্ছল প্রকৃতির। তাই সে অন্যভাবে তার উচ্ছাস ছড়াচ্ছে। ঘননীল পালাজো ও সাদা সোয়েটার। তাকে দেখে ঝট করে মনে হয়না সে একজন আইনজীবী। ঈষৎ কটা চোখ, ব্রাউন চুল, হাইলাইট করা।

    - ইট ইজ দ্য ক্লাসিক ওয়ার অব দ্য পিজান্টস। উও যো পীনাট শেলস ফেকতে হো বনফায়ারমে, আসলমে উও আপনে আপকো শুধারনা। থ্রো দ্য ভেরি রুটস অব অ্যাপাথি ইনটু ফায়ার।
    উদ্দম আ, দিলদার যা/ দাল্লিডার দি জারহ্ চুল্লে পা। সমস্ত ঘৃণা আগুন হয়ে জ্বলুক। দেবরূপ ভাবছে আগুনের পরশমণি গানটার সঙ্গে কেমন একটা মিল আছে যেন থিম্যাটিক্যালি!
    নয়নার নাকে একটা হিরে। আমেলিয়ার আদরের বড় নাতনি। প্রচুর চকোলেট এনেছে বাড়ির সবার জন্য। দেবরূপের দিকে বাড়িয়ে দিল।
    - হোয়াট গ্র্যানি সেইড অ্যাবাউট আকবর ইজ নট ট্রু। শি বিলিভস ইন কলোনিয়াল হিস্ট্রি। বাট ইট হ্যাজ টু বি রিডিফাইনড।
    চকোলেট হাতে ধরা। নিকি বকে চলেছে। চশমার ফ্রেমে পিছলে পড়ছে আলো।
    - আকবর ওয়জ নট দ্যাট গ্রেট। দুল্লা ভাট্টি ওয়েন্ট অ্যাগাইন্স্ট হিম।
    নয়না নাকছাবি ঝলসিয়ে সায় দিল। কমন পিপলস হিস্ট্রি।দ্যাট ইজ ইম্পরট্যান্ট। সাধারণ মানুষের জীবন। কোনকালে কোন রাজাবাদশা তার তেমন খবর রেখেছে! দুল্লা ভাট্টি আকবরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। মুসলমান রাজপুত। আবদুল্লাহ ভাট্টি। সন অব পাঞ্জাব। পাঞ্জাবের রবিন হুড।
    - ইউ সি দিস রিপিল অব থ্রি অ্যাগ্রিকালচারাল ল'জ হ্যাজ আ হিস্ট্রি। ডিকেডস অব অ্যাগ্রেরিয়ান ডেসপারেশন অ্যান্ড ডিজেকশন।
    বুকে একটা কুশন নিয়ে গোল হয়ে বসে আছে দেবরূপ। ত্রিদিব বেরিয়েছেন পরমের সঙ্গে। সেইজন্য ও কিছুটা রিল্যাক্স্ড।  ত্রিদিবকে এখানে, এখন ঠিক নিতে পারছে না ও। তবে এই দুই বোন, নয়না আর নিকি যে ভীষণ প্যাশনেট পাঞ্জাব সম্পর্কে সেটা পরিষ্কার। বাঙালিদের মধ্যে কী এই সচেতনতা কমে আসছে? ওর নিজের সার্কল একেবারে অন্যরকম। থিওরি বেসড। এরা কিন্ত মাঠেও আছে।
    আজ সারাদিন সিন্ডরেলার কল আসেনি। অনলাইন ক্লাসে ছিল না সে। আমি কী তাকে মিস করছি? ভাবলো দেবরূপ। নয়নার দিকে তাকিয়ে হাসল।
    - আই নো নাথিং অ্যাবাউট দুল্লা ভাট্টি।
    নয়না আবার হিরের ঝিলিক তুলল।
    - বেঙ্গলিজ আর ভেরি ট্যালেন্টেড। আই থট ইউ আর ইন্টেরেস্টেড ইন আদার কালচারস।
    আমেলিয়া চেয়ারে বসেই ঘুমিয়ে পড়েছেন। নয়না অনেকটা দুরে বসেছে। নিকি দেবরূপের মুখোমুখি। কিন্ত বেশ দুরে। হলটা বিশাল বলে কিছু কৌণিক দুরত্ব তৈরি হয়েছে। কোভিডের পক্ষে আদর্শ। কিন্ত কটা বাড়ি এই দূরত্বর বিলাসিতা করতে পারে! দেবরূপ ফোন চেক করে নিল।
    - হারুন খালিদ পড়েছে?
    নিকি সোজা তাকিয়েছিল। দেবরূপ পড়ে নি। পড়েনি।
    - প্লিজ রিড। আজকে যে আন্দোলন দেখছো সেটা একটা ইতিহাসের অংশ। সম্রাট আকবর। কিছু নতুন আইন তৈরি করেছিলেন। নিউ সেনট্রালাইজড ল্যান্ড রেভনিউ কালেকশন স্কিম। কৃষকদের মধ্যে বিক্ষোভ হয়। আকবর আইনগুলো সিম্পলি চাপিয়ে দিয়েছিলেন। জমিদার আর কৃষকদের  অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতা অনেকটা ছেঁটে দিয়েছিল সেসব আইন। দোজ ল'জ ওয়ের ইমপোজড। অবস্থা খারাপ হচ্ছিল। আকবর একটুও নরম হননি। দুল্লা ভাট্টি এই সিস্টেমের বিরোধিতা করেছিলেন। দুটি মেয়েকে উদ্ধার করেছিলেন আকবরের কবল থেকে, তাদের বিয়ে দিয়েছিলেন।
    নিকির চোখ আরো উজ্জ্বল। যেন ও দেখতে পাচ্ছে।
    ছোটবেলাতে বাবুকে অবন ঠাকুরের রাজকাহিনী পড়ে শোনাতেন মালবিকা। খানিক সেই ফ্লেভার যেন। যদিও বাবু এখন রাজকাহিনীকে নতুন করে ইন্টারপ্রেট করে। তবু সেই শৌর্য বন্দনা ঝিকমিক করছে দুই পাঞ্জাব ললনার মুখে, ওর ভালো লাগছে।
    দুল্লার বাবাও বিদ্রোহ করেছিলেন আকবরের বিরুদ্ধে। বাবার হত্যার চারমাস পরে জন্ম দুল্লার। মা লাধি। তাকে ধাই করে নিয়ে গেলেন আকবর। গণৎকার বলেছেন, রাজপুত ধাইমা চাই সেলিমের জন্য। তবে ছেলে বীর হবে। একইদিনে জন্ম দুল্লা ভাট্টি আর আকবর পুত্র সেলিমের, ভারতের ভাবী সম্রাট জাহাঙ্গির। একই মায়ের স্তন্যপান করেছেন। বড় হয়ে দুল্লার কানে এসেছে আকবরের হাতে তার বাবার মৃত্যুর কথা। দেখেছেন কৃষকদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া আইনের কড়াকড়ি। সেই আশ্রয় জায়গা থেকে বেরিয়ে আসা বড় সহজ কথা নয়। দুল্লা বেরিয়ে এসেছিলেন। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সেই বিদ্রোহের শুরু।
    ইউ নো, দিস লোহরি ইজ আ মিনিংফুল ফেস্টিভ্যাল। আ রুলার ইজ আ রুলার। ডোন্ট থিংক মুসলিম পিজান্টস ওয়ের সেফ আন্ডার দ্য মুঘল এমপেরার।
    দেবরূপ একটা গভীর নিঃশ্বাস ফেলল। ওর ক্লাস টেনের ফিজিক্স টিচার শ্রাবণ বসু বলতেন, ভাইরে, পৃথিবীতে দুটো জাত আছে। গরীব আর বড়লোক। এই অতিসরলীকরণ ছাড়িয়ে অনেক দূর এসেছে সে। আরো অনেক শেডস দেখে ফেলেছে। কিন্ত মোটামুটি ঐ ফর্মূলা টা চলে। অন্তত সারফেস লেভেলে।
    সুনন্দিতার নাচের ক্লাস শেষ হল। তিনি এই শীতের মধ্যেও ঘেমেছেন বেশ। মাথার চুলগুলো টানটান করে টপনট করে নেন ক্লাসের সময়। হলে এসে দেখলেন সিরিয়াস ইতিহাস আলোচনা চলছে। হেসে ফেললেন।
    - বোর হচ্ছো বাবু? আমিও প্রথমে এসব জানতাম না। কিন্ত পাঞ্জাবীরা দুল্লাকে নিয়ে ভীষণ আবেগপ্রবণ। তোমাকে বলেই ছাড়বে। নেচেছেন ঘেমেছেন এবং আনন্দিত। ওঁর মুখের মধ্যে একটা লাবণ্যময় দ্যুতি। মায়ের মধ্যে সেটা হারিয়ে গেল কেন?
    বাবু ভাবছিল। এই দ্যুতিটা অদিতির ছিল। দ্য সেম গ্লো। সেই ব্রাইটনেস। এজ ক্যাননট উইদার ইট। মালবিকার ব্রাইটনেস কী কারণে ধূসর হয়ে গেল! মেনোপজ ইজ নট দ্য কজ। সুনন্দিতা আর মালবিকা একই বয়সী। তবে? সুনন্দিতা এখনও লাবণ্যময়ী। উচ্ছল। মালবিকা যেন ক্লান্ত গাছ এক। শুকিয়ে গেছেন।
    ডাজ ফ্যামিলি ম্যাটার দেয়ার? পাশাপাশি পরমপ্রতাপ আর ত্রিদিবকে দেখার চেষ্টা করল বাবু। পারল না। কোথায় গলদ? সমস্যাটা কোথায়?
    তুমি বলে দেবে, সিন্ডেরেলা?
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ০৮ জুন ২০২৩ | ৩৭২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে প্রতিক্রিয়া দিন